Logo
শিরোনাম
শেষ হয়নি বিচারকার্য্য: হতাশ ও ক্ষুব্দ নিহতদের স্বজনরা

১৬ জুন নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগ অফিসে বর্বোরোচিত বোমা হামলার ২১বছর

প্রকাশিত:বুধবার ১৫ জুন ২০২২ | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 |

Image

বুলবুল আহমেদ সোহেল; নারায়ণগঞ্জঃ

আজ নারায়ণগঞ্জের ভয়াল ১৬ জুন। ২০০১ সালের এই দিনে চাষাঢ়ায় আওয়ামীলীগ অফিসে বর্বরোচিত বোমা হামলায় প্রাণ হারায় ২০জন। ঘটনার দীর্ঘ ২১বছর পেরিয়ে গেলেও গত প্রায় নয় বছর আগে তদন্ত সংস্থা মামলাটির চার্জশিট প্রদান করে। বিচারকার্য্য চলছে ধীর গতিতে। নিহতদের পরিবারের দাবি তারা বেঁচে থাকতে এই ঘটনার কারণ জানাসহ দোষীদের বিচার দেখে যেতে চান।

২০০১,সালের ১৬জুন রাতে পৌনে ৯টায় নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় অবস্থিত আওয়ামীলীগ অফিসে বর্বরোচিত এ বোমা হামলা চালানো হয়েছিল। সেদিনের নৃশংস বোমা হামলার ঘটনায় নিহত হয়ে ছিলেন ছাত্রলীগ নেতা সাঈদুল হাসান বাপ্পি ও অজ্ঞাত নারীসহ ২০জন। তৎকালিন সংসদ সদস্যসহ আহত হয় অর্ধশত। অনেকেই চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করেন। চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তার চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেন। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে এ মামলাটি পূণরুজ্জীবিত করা হয়। দুটি মামলায় ১৪ বছরে ৭বার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন এবং  ৮ম বার ১৩ বছর পর ২০১৩ সালের ২ মে মামলার তদন্ত সংস্থা ৬ জনের নাম উল্লেখ করে সিআইডি আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। বর্তমানে আদালতে মামলাটির স্বাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। চার্জশীট ভুক্তদের মধ্যে মুফতি হান্নানকে ২০১৭ সালে অন্য একটি মামলায় ফাঁসি দেওয়া হয়। মামলার অপর ২ আসামী জমজ সহোদর আনিসুল মোরছালিন ও মুহিবুল মোত্তাকিন ভারতের কারাগারে আটক রয়েছে। ওবায়দুল্লাহ রহমান নামে অপর এক আসামী পলাতক রয়েছেন। আরেক আসামী নাসিকের ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু জামিনে এবং শাহাদাৎ উল্লাহ জুয়েল কারাগারে রয়েছেন।

বোমা হামলায় নিহত নিধুরাম বিশ্বাসের পরিবারের সঙ্গে কথা হলো। তারা জানালো ছেলে মেয়ে সহ ছয় জনের সদস্যের পরিবারের একমাত্র উপার্জন ক্ষম ব্যাক্তি ছিল নিধিরাম।  ঘটনার পর থেকে দিন কাটাচ্ছে অনাহারে-অর্ধাহারে। ঘটনার পর পর প্রধানমন্ত্রী ছেলের চাকরীসহ আর্থীক সহযোগীতা সহ  অনেক আশ্বাস দিলও সেটির কোন সুফল পায়নি তারা। তারপরও এত বছরেও বিচারটা পর্যন্ত পেলনা বলে আক্ষেপ করেন তারা। 

এ ঘটনার বিচারকার্য নিয়ে হতাশ প্রকাশ করেন এ ঘটনায় দু’পা হারানো রতন কুমার দাশ। আর সময়ক্ষেপন না করে দ্রুত যাতে বিচার কার্য শেষ করা হয়,  তিনি এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।  

মামলার বাদী অ্যাডভোকেট খোকন সাহা জানান, মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। অন্যান্য সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ না হওয়ায় নিজেও হতাশা প্রকাশ করেন। মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি চান তিনি।

বোমা হামলার ঘটনার দায়ের করা মামলা নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এমামলায় ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে।  যারা সাক্ষ্য গ্রহণ করেনি তাদের বিরুদ্ধে আদালত সমন ও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। সকল সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি হবে বলে জানা রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী মনিরুজ্জামান বুলবুল। 

এদিকে, দিবসটি উপলক্ষে সকালে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া শহীদ মিনারের পাশে অবস্থিত স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কোরআনখানী ও কাঙ্গালি ভোজের আয়োজন করেছেন বিভিন্ন সংগঠন ও নিহতের স্বজনরা।

ভারত থেকে মোরছালিন ও মুত্তাকিমকে দেশে এনে প্রকৃতভাবে জিঞ্জাসাবাদ করলে এ ঘটনায় কোন বড় শক্তি, বড় দল, বড় নেতানেত্রী জড়িত ছিল তা বেড়িয়ে আসবে---- শামীম ওসমান

নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় আওয়ামীলীগ অফিসে শক্তিশালী বোমা হামলায় ঘটনায় আহত নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান দৃঢ়তার সাথে দাবী জানিয়ে বলেন, ভারত কারাগারে আটক দুই সহোদর আনিসুল মোরছালিন ও মাহাবুবুল মুত্তাকিমকে দেশে এনে প্রকৃতভাবে জিঞ্জাসাবাদ করা গেলে এ ঘটনা পিছনে কোন কোন বড় শক্তি বা কোন কোন বড় দল কিংবা কোন কোন বড় নেতানেত্রী জড়িত ছিলেন তা বেড়িয়ে আসবে। আর এটা হওয়া উচিত ভবিষ্যতে ঘটনা থামানোর জন্য। তিনি বলেন, বোমা হামলার টার্গেট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার প্রমান হলো একটি পত্রিকায় মোরছালিন ও মুত্তাকিম বলেছিল শামীম ওসমান আমাদের প্রাথমিক ও শেখ হাসিনা স্থায়ী টার্গেট।

আওয়ামীলীগ অফিসে বোমা হামলার দ্রুত বিচারের দাবি করে বুধবার বিকেলে নগরীর চাষাঢ়ায় নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

২০০১ সালের ১৬ জুন নগরীর চাষাঢ়া শহীদ মিনার সংলগ্ন আওয়ামীলীগ অফিসে শক্তিশালী বোমা হামলায় ৪ নারীসহ ২০ জন প্রাণ হারায়। আহত হয় তৎকালিন সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী। অনেকেই চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করেন।


আরও খবর



ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা অংশে ধীরগতি

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে গতকাল থেকেই ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে। এবারের ঈদযাত্রায় যাত্রীরা প্রশান্তি পাবে বলা হলেও বিভিন্ন মহাসড়কজুড়েই চলছে ভোগান্তি। ট্রেন যাত্রায় স্বস্তি মিললেও মিলছে না সড়কপথে।

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ছোট ছোট শিল্প কারখানা ছুটি ঘোষণা করে দেওয়ায় চন্দ্রা এলাকাজুড়ে যাত্রী ও গণপরিবহনের চাপ বেড়েছে। মহাসড়কে থেমে থেমে চলছে যানবাহন।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) ভোর থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের এলাকাজুড়ে এমনই চিত্র দেখা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, উত্তরবঙ্গের ২২টি জেলার মানুষের প্রবেশ মুখ চন্দ্রা। এখানে ছোট-বড় অসংখ্য শিল্প কারখানা রয়েছে। এসব শিল্প কারখানা ছুটি হলেই চন্দ্রাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। অপরদিকে সরকারি অফিস আদালত বন্ধ থাকায় ও ছোট ছোট অনেক শিল্প কারখানা ছুটি ঘোষণা করায় চন্দ্রা এলাকাজুড়ে যাত্রী ও গণপরিবহনের চাপ বেড়েছে।

এদিকে কোনাবাড়ি থেকে চন্দ্রা, চন্দ্রা থেকে মির্জাপুর ও চন্দ্রা থেকে বাইপাল পর্যন্ত ধীরগতিতে চলছে গণপরিবহন।

আগের মতো এবারও যানজট নিরসনে হাইওয়ে পুলিশের থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা। তবে মহাসড়কের চন্দ্রাজুড়ে রয়েছে অসংখ্য বাস কাউন্টার। যত্রতত্রভাবে গাড়ি পার্কিংসহ ফুটপাতে রয়েছে দোকানপাট, যার ফলে প্রতি বছর ঈদ আসলেই ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চন্দ্রা এলাকাজুড়ে চরম যানজটের সৃষ্টি হয়।

হাইওয়ে পুলিশের ওসি শাহাদাত হোসেন জানান, এবার মহাসড়ক পর্যবেক্ষণ করতে ড্রোনসহ ৩২টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। চন্দ্রা এলাকাজুড়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। কোনো ধরনের যাত্রীদের যেন হয়রানি না করতে পারে তার জন্য সকল প্রস্তুতি রয়েছে।


আরও খবর



দেশজুড়ে তীব্র লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা

প্রকাশিত:বুধবার ১০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 |

Image

ভেস্তে গেল বিদ্যুৎ বিভাগের সব পরিকল্পনাই। গ্রাম থেকে নগর- সবখানেই লোডশেডিং চরমে। গরমে সর্বোচ্চ চাহিদা দাঁড়াতে পারে প্রায় ১৮ হাজার মেগাওয়াট, এমন পূর্বাভাস থাকলেও ১৫ হাজার মেগাওয়াট চাহিদা মেটাতেই হিমশিম অবস্থা। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সামনে দিনগুলোতে আরও তীব্র হতে পারে পরিস্থিতি।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, দিনে কয়েকবার লোডশেডিং সইতে হচ্ছে নগরবাসীকে। তবে শহরের পরিস্থিতি যাই হোক, গ্রামের চিত্র আরও নাজুক। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে অনেক এলাকার মানুষকে।

চলতি মৌসুমে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা প্রাক্কলন করা হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার মেগাওয়াট, কিন্তু এখন পর্যন্ত চাহিদা ১৫ হাজার মেগাওয়াটের ঘরে উঠতেই ঘাটতি ছাড়িয়েছে দুই হাজার মেগাওয়াট।

এবারের গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ বিভাগের বড় নির্ভরতার জায়গায় রাখা হয়েছিল, গ্যাস ও কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলোকে। কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনে দৈনিক ন্যূনতম ১৫৪ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা থাকলেও মিলছে মাত্র এর দুই-তৃতীয়াংশ। আবার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ৪ হাজার মেগাওয়াট বেশি রাখার লক্ষ্য থাকলেও এখনো আটকে আছে সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াটের নিচে।

বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্যমতে, জ্বালানি সংকটে ধুঁকছে ৬০টির বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র, আর কারিগরি ত্রুটি ও রক্ষণাবেক্ষণের কারণে বন্ধ আছে ৩০টির বেশি কেন্দ্র। এতে সক্ষমতা থাকার পরও উৎপাদন করা যাচ্ছে না সাড়ে ৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আমদানি নির্ভর পরিকল্পনার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবেই প্রকট হচ্ছে লোডশেডিং। শঙ্কা রয়েছে সংকট আরও তীব্র হওয়ার।

কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, বর্তমানে বিদ্যুতের যে পরিস্থিতি, সেটা কদিনে আসেনি। নানা ধরনের ভুল, বিভ্রান্তি, অপরিকল্পনা, অদূরদর্শিতা থেকে এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এখন আমদানি করার মতো ডলারও নেই। কাজেই যে সংকট তৈরি হয়েছে, সেটা আরও প্রকট হবে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড ১৭ হাজার ৫০০ মেগাওয়াটের কথা বলছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, ১২ হাজার মেগাওয়াটের ওপরে তারা যেতে পারছে না। এই যে বিরাট একটা গ্যাপ, এই গ্যাপটা তো সহজে তারা কভার করতে পারবে না। ডলারের যে সংকট, এ অবস্থায় আমরা একেবারে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে পারবো না।

তবে বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানাচ্ছে, দিনকয়েকের মধ্যে রক্ষণাবেক্ষণ শেষে সামিটের ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল আবারও সচল হলে বাড়বে গ্যাস সরবরাহ, আর তাতে স্বস্তি মিলবে বিদ্যুতেও।


আরও খবর



নেত্রকোনা অঞ্চলের পানি সংকট বিষয়ে শিশুদের চিত্রাংকন

প্রকাশিত:শুক্রবার ২২ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

নেত্রকোনা প্রতিনিধি:

'শান্তির জন্য পানি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষ্যে নেত্রকোনা অঞ্চলের পানি সংকট বিষয়ে শিশুদের চিত্রাংকন চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

আজ শুক্রবার(২২ মার্চ) জেলা শহরের সাতপাই কালীবাড়ি এলাকার নেত্রকোনা আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক।

এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা, সংস্কৃতি, পরিবেশ ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি’র সভাপতি জনাব নাজমুল কবীর সরকার, নেত্রকোনা আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব লুৎফর রহমান প্রমুখ। আলোচনা শেষে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

এ সময় অতিথিরা বলেন, হাওর—পাহাড় আর বৈচিত্রের লীলাভূমি নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী মানুষের পানি সংকট দীর্ঘদিনের। কখনো পাহাড়ি ছড়া থেকে, কখনো বালু খুঁড়ে, কখনো বা কয়েক কিলোমিটার ঘন ঝঙ্গল পাড়ি দিয়ে সীমান্তবর্তী বাসীন্দাদের যেতে হচ্ছে ব্যবহার্য পানি সংগ্রহের জন্য। দিনকে দিন সে সংকট আরো তীব্রতর হচ্ছে। অন্যদিকে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে দিন দিন ভূর্গভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। ফলে সেখানেও দেখা দিচ্ছে খাবার পানির সংকট। দিন দিন দূষণে—দখলে বিপর্যস্ত হয়ে উঠছে প্রাকৃতিক জলাশয়গুলো। নেত্রকোনা অঞ্চলের পানি’র সংকট ও সম্ভাবনার এই দৃশ্যগুলোই ফুটিয়ে তুলেছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। বিশ্ব পানি দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় এ সমস্ত দৃশ্য অংকন করে শিক্ষার্থীরা। 


আরও খবর



নওগাঁয় কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ৩ পদে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ

প্রকাশিত:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁর বদলগাছীতে নিয়োগ বোর্ডের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ৩ পদে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দাউদপুর ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার সেকেন্দার আলীর বিরুদ্ধে। পার্শ্ববর্তী প্রতিষ্ঠান প্রধান, উপজেলা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে নিরাপত্তা কর্মী, আয়া ও সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার নিয়োগ দেখান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এটিএম জিল্লুর রহমান। 

অনুসন্ধানে যানা যায়, গত ২০২০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নিরাপত্তা কর্মী, আয়া, সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার সহ অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। এরমধ্যে উপরের ৩টি পদ শুন্য হলেও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে আসাদুজ্জামান নামের একজন কর্মরত আছেন। পরবর্তীতে ঐ বছরের ১৮ মার্চ তারিখ দেখিয়ে নিয়োগ এর কাগজ-পত্র তৈরি করা হয়েছে। সেই কাগজ পত্রে দেখা যায় পার্শ্ববর্তী গয়ড়া তেতুলিয়া ডি এ ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আবদুল রশিদ সেই নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হিসাবে স্বাক্ষর করেছেন। কিন্তু তিনি ২০১৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারী মারা যান। এরপর ঐ বছরের মে মাসের ৫ তারিখে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন আ.ন.ম. লুৎফর রহমান। 

মাদ্রাসার রেজুলেশন ও নিয়োগ বোর্ডের ফলাফল সীটে আবদুল রশিদ ছাড়াও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এটিএম জিল্লুর রহমান ও ডিজির প্রতিনিধি হিসাবে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ মোবারুল ইসলামের স্বাক্ষর রয়েছে। সেই নিয়োগ বোর্ডের সম্পর্কে এই কর্মকর্তাগণ কিছুই জানেন না বা কোন কাগজ পত্রে স্বাক্ষর করেননি। অথচ নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্রে দেখা যায়, নিরাপত্তা কর্মী পদে উপজেলার দাউদপুর গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে মোঃ ইসাহাক আলী, আয়া পদে দাউদপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম মাস্টারের মেয়ে মোছাঃ শারমিন সুলতানা ও সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার পদে নিয়োগ পেয়েছেন মাধবপাড়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে আবু মুস্তাকিম। যারা এখন পর্যন্ত মাদ্রাসায় কোন দিন যাননি বা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরও করেননি। এরমধ্যে আয়া পদে শারমিন সুলতানার বেতনের জন্য অনলাইনে আবেদন করেছেন মাদ্রাসার সুপার। 

এবিষয়ে তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এটিএম জিল্লুর রহমান বলেন, আমি ওই উপজেলায় থাকতে এই পদ গুলোতে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে গত বছর তারা আমার কাছে এসেছিলো ব্যাকডেটে স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য। আমি তাদের ফিরিয়ে দিয়েছি এর বেশি আর কিছু জানিনা।

এবিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার পদে নিয়োগ আবু মুস্তাকিম বলেন, আমি কোন নিয়োগ বোর্ডে বসিনি। আমার কাছে টাকা আর কাগজ পত্র চেয়েছিলো সেগুলো আমি দিয়েছিলাম। আমি শুধু যোগদান পত্রে স্বাক্ষর করেছি। সেই যোগদান পত্র সুপার আমাকে বানিয়ে দেন। 

এবিষয়ে জানতে চাইলে মাদ্রাসার তৎকালীন সভাপতি, আয়া পদে নিয়োগ প্রাপ্ত শারমিন সুলতানার বাবা পাশ্ববর্তী উপজেলা পত্নীতলা উপজেলার বামনকুড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি এই ব্যাপারে কিছুই জানিনা। আমরা ডিজির প্রতিনিধি নিয়ে এসেছিলাম। পরবর্তীতে সেই সময় নিয়োগ বোর্ড বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে আমার স্বাক্ষর কে জাল করেছে তা আমি জানিনা।

মাদ্রাসার সুপার মোঃ সেকেন্দার আলী বলেন, আমার স্বাক্ষর জালিয়াতি করা হয়েছে। কে বা কাহারা তা করেছে সেটা আমি জানিনা। তবে এবিষয়ে আমি থানায় জিডি করেছি।

জানতে চাইলে বর্তমান উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, এবিষয়ে আমাকে কেউ অভিযোগ দিলে বা আমার উর্ধতন কেউ আমাকে নির্দেশ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

নওগাঁ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ লুৎফর রহমান বলেন, এ বিষয়টি আমি জানিনা খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আরও খবর



অগ্নিনির্বাপন বিধিমালা মানছে না কেউ

প্রকাশিত:রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

সম্প্রতি ভয়াবহ কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের মুখোমুখি হয়েছে দেশবাসী। কোনও ঘটনা থেকেই পরবর্তী দুর্ঘটনা রোধে তেমন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি কর্তৃপক্ষকে। সর্বশেষ গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সমালোচনার পর নড়েচড়ে বসেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। যথাযথ অগ্নিপ্রতিরোধব্যবস্থা না রাখায় রাজধানীর অনেক প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে এসব সংস্থা। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা পাওয়ায় সিলগালাসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে।

কোনও অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক হতাহত হওয়ার পর অভিযানে নামে সিটি করপোরেশন ও রাজউক। কয়েক দিন চলার পর এসব অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। গত বছর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের পর ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন বিভিন্ন ভবনে মার্কেটে অভিযান চালিয়েছে। অগ্নিকাণ্ড নীতিমালা যারা মানেনি, তাদের সতর্ক করে নোটিশ দিয়েছিল। কয়দিন পর অভিযান বন্ধ করে দেয়।

এবার আবার বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের দুই দিন পর একযোগে আবার অভিযানে নামে বিভিন্ন সংস্থা। তিন দিন অভিযান চালিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। এখন আর কোনও সাড়াশব্দ নেই। এভাবেই একটা ঘটনা ঘটে আর সংস্থাগুলো তৎপর হয়; তা-ও খুব অল্প সময়ের জন্য।

ফায়ার সার্ভিস বলছে, বিভিন্ন ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তদন্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশ আমলে নেয় না রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্টরা। রাজধানীতে দুর্ঘটনা ঘটলেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত ভবন-মার্কেটের অনুমোদন না থাকা বা ঝুঁকিপূর্ণ থাকার বিষয়টি সামনে আনে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।

তারা বলছে, ফায়ার সার্ভিস সরেজমিনে অগ্নি-সতর্কতা নোটিশ দিলেও তা আমলে নিতে চান না অধিকাংশ মার্কেট দোকান মালিক প্রতিষ্ঠান ও ভবনের মালিকরা। নানাভাবে ম্যানেজ করে অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা ছাড়াই ভবনগুলোয় কার্যক্রম রাখা হচ্ছে বছরের পর বছর ধরে।

ফায়ার সার্ভিসের সূত্র বলছে, যথাযথ জবাবদিহি ও সতর্কতার অভাবেই ঘটছে ভয়াবহ এসব অগ্নিকাণ্ড। সংস্থাটি জানায়, তাদের কাজ হলো, কোনও ভবনে প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা না রাখা হলে নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নোটিশ দেওয়া। এরপরও যদি ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে ফের নোটিশ দেয় ফায়ার সার্ভিস।

তবে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কেউ যদি নীতিমালা অমান্য করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার ফায়ার সার্ভিসের নেই। ফলে সংস্থাটি যেন নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত চালাতে পারে, এ জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা করা উচিত।

২০২৩ সালে রাজধানীর ৫৮টি বিপণিবিতান পরিদর্শন করে ফায়ার সার্ভিস। পরিদর্শন শেষে তাদের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সব কটি বিপণিবিতানই অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে ৯টি বিপণিবিতান অগ্নিকাণ্ডের জন্য অতি ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করে ফায়ার সার্ভিস। বাকি ৪৯টির মধ্যে ৩৫টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ১৪টি মাঝারি মাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ।

গত বছরের ৪ এপ্রিল বঙ্গবাজার মার্কেটে আগুন লেগে প্রায় পাঁচ হাজার দোকান পুড়ে যায়। সেই আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল পাশের মার্কেট মহানগর কমপ্লেক্স পর্যন্ত। এমন ভয়াবহু অগ্নিকাণ্ডের পরও ওই মার্কেটের ব্যবসায়ীরা এখনও সতর্ক হননি। টিন আর কাঠ দিয়ে তৈরি করা দ্বিতীয় তলাবিশিষ্ট ওই মার্কেটটিতে অগ্নিঝুঁকি নিয়েই ব্যবসা করে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। মার্কেটিতে যেমন রয়েছে সরু পথ, তেমনি নেই কোনও ধরনের অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা। এ ছাড়া বঙ্গবাজারে এনেক্সকো টাওয়ারের বেসমেন্টে দোকান খুলে এখনও দেদার চলছে ব্যবসা।

শুধু মহানগর কমপ্লেক্স, এনেক্সকো টাওয়ারই নয়, সরেজমিনে দেখা যায়, অগ্নিঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা করছে রাজধানীর আরও কয়েকটি মার্কেট। এর মধ্যে রয়েছে নিউ মার্কেটের নূর ম্যানশন ও গাউছিয়া মার্কেট। দোকান খুলে ব্যবসা করছে নিউ মার্কেটের গ্লোব শপিং সেন্টারের আন্ডারগ্রাউন্ডেও।

জানতে চাইলে এনেক্সকো টাওয়ারে নিচতলার আকসান ফাহিম ফ্যাশনের ব্যবস্থাপক সোলেমান বাদশা  বলেন, এত বড় অগ্নিকাণ্ডের পরও অগ্নিঝুঁকি বিষয়ে কোনও প্রশিক্ষণ আমাদের দেওয়া হয়নি। অগ্নি প্রতিরোধের তেমন কোনও ব্যবস্থা আমরা পাইনি। আমি প্রতি মাসে সার্ভিস চার্জ দিচ্ছি। তাহলে আমি কেন সুবিধাটা পাচ্ছি না? আমরা সব হারিয়ে এখন নতুন দোকান শুরু করেছি। এসব দায়িত্ব তো মার্কেট সমিতির!

এ বিষয়ে এনেক্সকো টাওয়ারের পরিচালক আল-মামুন বলেন, অগ্নিকাণ্ডের পর মার্কেটে অনেক কাজ করা হয়েছে। বসানো হয়েছে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র। তবে আমাদের এখনও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আরও কী কী সুবিধা বাড়ানো যায়, মার্কেটকে কীভাবে নিরাপদ রাখা যায়, সে জন্য আমরা কাজ করছি। সম্প্রতি ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম আমাদের মার্কেট এসে ভিজিট করে গিয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে গেছে। সে অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। প্রশিক্ষণের বিষয়ে যেটি বলা হচ্ছে, সেটিও আমরা দ্রুত ব্যবস্থা করবো।

শুধু কমিটির দোষ দিলেই হবে না মন্তব্য করে প্রশ্ন রাখেন তিনি, কতজন দোকানদার অগ্নি বিষয়ে সচেতন? কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করবে, অথচ সামান্য টাকা দিয়ে দোকানে একটি অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র বসাবে না? সেটির ব্যবস্থা রাখবে না তারা?

রাজধানীর কয়েকটি মার্কেটের ব্যবসায়ীর ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের মধ্যেও অগ্নিনিরাপত্তা বিষয়ে আগ্রহ কম। এ বিষয়ে অনেকের জ্ঞান শূন্য। বছর পর বছর ব্যবসা করছে, অথচ অনেক দোকানমালিক ও কর্মচারীর অগ্নি প্রশিক্ষণের বিষয়ে কোনও ধারণাই নেই। এমনই দুজন মহানগর কমপ্লেক্সের রিম গার্মেন্টসের মালিক মো. মামুন ও গাউছিয়া মার্কেটের ফিমা ফ্যাশনের পরিচালক নাসিরু উদ্দিন বাবু।

নাসিরু উদ্দিন বাবু বলেন, সব মার্কেটের একই অবস্থা। কোনও কিছু ঠিক নেই। প্রশিক্ষণ কারা দেবে? আমরা এ বিষয়ে কিছুই জানি না। সব তো মার্কেট সমিতির কাজ।

এ প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া) শাজাহান শিকদার বলেন, ফায়ার সার্ভিসের কাজ হলো কোনও ভবনে প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা না রাখা হলে নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নোটিশ দেওয়া। এরপরও যদি ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে ফের নোটিশ দেওয়া হয়। তবে কেউ যদি নীতিমালা না মানে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার নেই সংস্থাটির।

ফলে যেহেতু বাধ্যবাধকতা নেই, সেই সুযোগটাই নিচ্ছেন ভবনমালিকরা মন্তব্য করে তিনি বলেন, তাদের মধ্যে অগ্নিনীতিমালা মানার উদাসীনতা রয়েছে। আমরা বারবার ভবন পরিদর্শন যাচ্ছি, নোটিশ দিচ্ছি; যারা না মানছে, তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও ব্যবস্থা চাইলেও নিতে পারছি না। তবে মাঝেমধ্যে প্রশাসনের অনুমোদন নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। সেটিও অল্প সময়ের জন্য।

মানবাধিবার কমিশন চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, রাষ্ট্রীয় সংস্থা হিসেবে রাজউক, ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন তাদের ভূমিকা কি কেবল নোটিশ দেওয়া? বেইলি রোডের ভবনটিতে বাণিজ্যিক অনুমোদন নেওয়ার ক্ষেত্রেও প্রভাবশালী মহলের চাপ ছিল বলে শোনা যাচ্ছে। যে কারণে ভবনটিকে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনায় শর্ত সাপেক্ষে অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে বাণিজ্যিক ব্যবহার ও রেস্তোরাঁ পরিচালনা দুটি ভিন্ন ব্যবহার। যেখানে মাত্র একটি সিঁড়ি, এমন একটি ভবনে রেস্তোরাঁ চলতে পারার কথা নয়।

ধারাবাহিক অগ্নিকাণ্ডে সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, যারা প্রভাবশালী, তারা কি এতগুলো মানুষের জীবনের চেয়েও প্রভাবশালী? তারা কীভাবে দিনের পর দিন এগুলোর পুনরাবৃত্তি করছে? এত দুর্ঘটনার পরও কি রাষ্ট্রের টনক নড়বে না?

এদিকে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) বলছে, ইস্যু করার ক্ষেত্রে যেসব নথিপত্র প্রয়োজন হয়, তার ভিত্তিতেই ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হয়। পরে ব্যবসায়ীরা নিজেদের সুবিধামতো ব্যবসার শ্রেণি পরিবর্তন করলেও তা আর জানায় না।

ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, অনেক ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়ার সময় ব্যবসায়ীরা যে ঠিকানা ও ব্যবসার শ্রেণি উল্লেখ করে, পরে তা পরিবর্তন করে ফেলে। নিয়মিত অভিযান চালালেও সব ক্ষেত্রে তা আমাদের নজরে আসে না।

ফায়ার ও দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ মেজর এ কে এম শাকিল নেওয়াজ বলেন, অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ করতে হলে সংশ্লিষ্ট সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। শুধু ফায়ার সার্ভিস একা তা পারবে না। ফায়ার সার্ভিসের নিজস্ব কোনও আইন নেই। অগ্নিনীতিমালা তাদের সুপারিশ যেন মানতে বাধ্য হয়, সেই ক্ষমতা ফায়ার সার্ভিসকে দিতে হবে। যারা অনিয়ম করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

তিনি আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট সংস্থা যেমন সিটি করপোরেশন, রাজউক, এফবিসিসিআই, ব্যাংকসবাই যদি তাদের কাজটি যথাযথভাবে পালন করে, ভবন নির্মাণের ছাড়পত্র, ব্যবসার লাইসেন্স ও ব্যাংকঋণ দেওয়ার আগে ভবন বা ওই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অগ্নিনীতিমালা মানছে কি না, এসব যাচাই-বাছাই করে তারপরই অনুমতি দিতে হবে। এককথায় ভবন মালিকদের নিয়মের জালে আনতে হবে। তাহলেই অগ্নিকাণ্ড কমানো সম্ভব।


আরও খবর