বড়দিন এবং সাপ্তাহিক ছুটি মিলে
টানা তিন দিনের ছুটিতে কক্সবাজারে লাখো পর্যটকের ঢল নেমেছে। টানা তিন দিন লাখো
পর্যটকের পদভারে মুখর থাকবে বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত।
একইসঙ্গে এখানকার চার শতাধিক হোটেল মোটেল গেস্ট হাউসেও কোনো কক্ষ
ফাঁকা নেই। এই সময়ে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটের
পর্যটকবাহী ৮টি জাহাজের টিকিটও অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজার
সৈকতের লাবণী পয়েন্টে দেখা গেছে, হাজারো পর্যটকের ভিড়। কেউ বালিয়াড়িতে দৌঁড়ঝাপ,
কেউ সমুদ্রস্নানে ব্যস্ত। যে যার মত করে আনন্দে মেতেছেন পর্যটকরা।
চট্টগ্রামের চকবাজার থেকে সপরিবারে ভ্রমণে আসেন মনির আহম্মদ। কেমন কাটছে সমুদ্র
সফর, প্রতিক্রিয়ায় জানালেন, এক কথায়
অসাধারণ! একটু শীতের প্রকোপ বেশি, পর্যটকের কোলাহলও বেশি
তবুও সব মিলিয়ে খারাপ লাগছে না।
এই শীতের সকালেও এতগুলো মানুষ
সমুদ্র স্নান করছেন,
এই দৃশ্য দেখেই বোঝা যায় কক্সবাজার মানুষের কাছে কতটা প্রিয়’-
এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানালেন, খাগড়াছড়ি থেকে
আসা পর্যটক বিনিতা চাকমা। কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ
সম্পাদক মুকিম খান বিডিটুডেসকে বলেন, কক্সবাজারের প্রায় ৫শ
হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউসে প্রায় দেড় লাখ পর্যটকের রাত যাপনের সুবিধা রয়েছে। আগামী তিন দিনের জন্য শতকরা প্রায় নব্বই ভাগ
কক্ষ আগাম বুকিং রাখা হয়েছে, বাকি ১০ ভাগ কক্ষ ‘বিশেষ’ অতিথিদের জন্য
খালি রাখা হয়েছে। টানা সরকারি ছুটি উপলক্ষে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত
মেরিন ড্রাইভের হোটেলগুলোতে কোনো কক্ষ খালি নেই। পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার
চেষ্টা করছি আমরা।
টানা তিন দিনের ছুটিতে
সেন্টমার্টিনের জাহাজ ও হোটেলগুলোতেও আগামী তিনদিন পর্যন্ত প্রায় শতভাগ বুকিং হয়ে
গেছে। তিনি আরও বলেন,
প্রতিবছর দুই ঈদ, দুর্গাপুজা ও ইংরেজি নববর্ষে
কক্সবাজারে সর্বোচ্চ পর্যটকের ঢল নামে। তবে, করোনার কারণে
গতবছর মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ৫ মাস বন্ধ ছিল কক্সবাজারের পর্যটনকেন্দ্র।
আগস্টের মাঝামাঝি সময় থেকে সীমিত পরিসরে পর্যটন শিল্প খুলে দেওয়ার পর গত ইংরেজি
নববর্ষে কক্সবাজারে পর্যটক সমাগম অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। এসময় একদিনেই
কক্সবাজারে ১০ লক্ষাধিক পর্যটক সমাগম ঘটে বলে জানান পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তাদের
ধারণা, করোনার টিকা চালু হওয়ায় এ বছর পর্যটকদের ঢল আরও তীব্র
হতে পারে।
কক্সবাজার
টুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান জানান, ছুটিতে অবকাশ যাপনের জন্য ভ্রমণ
পিপাসু লাখো পর্যটক এখন কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। আর তাদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত
করতে টুরিস্ট পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখেই
টুরিস্ট পুলিশ সদস্যরা পর্যটন কেন্দ্র ও সড়ক মহাসড়কগুলোতে টহল জোরদারের পাশাপাশি
সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবে।