Logo
শিরোনাম

৫ সংগঠনের আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি

প্রকাশিত:সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

পাঁচটি সংগঠনের নেতারা বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। স্মারকলিপিতে তারা জুলাই গণহত্যার বিচার, ফ্যাসিবাদী অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টার বরাবর এই স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স; অ্যান্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিশন; প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ; স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি; জাবি, জবি, ঢাবি, ঢাকা কলেজ এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিনিধিরা এই স্মারকলিপি দেন।

স্মারকলিপিতে তারা জানিয়েছেন, সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে, অনতিবিলম্বে আওয়ামী লীগ এবং তাদের অঙ্গসংগঠনকে নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। আওয়ামী লীগ, তার অঙ্গসংগঠন এবং ১৪ দলের যেসব নেতা বিগত তিন নির্বাচনে ক্ষমতায় ছিলেন তাদের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে।

আগামী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানে সংগঠিত গণহত্যার বিচার, শাপলায় সংঘটিত গণহত্যা, পিলখানা, ২৮ ফেব্রুয়ারি এবং ২৬ মার্চসহ সব হত্যাকাণ্ডের দ্রুত নিরপেক্ষ তদন্ত ও দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রম শুরু করার দাবি জানিয়েছেন পাঁচ সংগঠনের নেতারা।

স্মারকলিপিতে এখনো গুম থাকা ব্যক্তিদের সন্ধান দিতে হবে এবং আয়নাঘর ও গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।

গত জুলাই আন্দোলনে করা ষড়যন্ত্রমূলক মামলাগুলোসহ গত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনামলে করা ষড়যন্ত্র, প্রহসন এবং রাজনৈতিক হয়রানিমূলক সব মামলা বাতিল করতে হবে। একই সঙ্গে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে স্মারকলিপিতে।


আরও খবর



ঢাকা ও এর আশপাশে তীব্র গরমের আভাস

প্রকাশিত:শনিবার ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ১৪ মে ২০২৫ |

Image

রাজধানী ঢাকা এবং আশপাশের অঞ্চলে আজও তীব্র গরম অনুভূত হতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজকের দিনটিতেও বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই এবং আবহাওয়া থাকবে একেবারে শুষ্ক। ফলে গরমের তীব্রতা থেকে রাজধানীবাসীর স্বস্তি মিলবে না।

২৬ এপ্রিল সকালে দেওয়া ছয় ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আকাশ থাকবে পরিষ্কার। এসময় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। সেইসঙ্গে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যেখানে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৭৯ শতাংশ। এসময় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল সর্বনিম্ন ২৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্য উঠবে ভোর ৫টা ২৭ মিনিটে। এছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় কোনো ধরনের বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়নি বলেও জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে, গতকাল রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত সারা দেশের আজকের সম্ভাব্য পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, আজ ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। একইসঙ্গে রাজশাহী বিভাগসহ দিনাজপুর, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলাসমূহের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে বলেও পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।


আরও খবর



ঝালকাঠির খাল থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশিত:সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

হাসিবুর রহমান ,ঝালকাঠি প্রতিনিধি:

ঝালকাঠিতে মিজান হোসেন (২৮) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

সোমবার (২৮) এপ্রিল সকালে সদরের কলেজ খেয়াঘাট সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় জামে মসজিদ সংলগ্ন খাল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। 

মিজান শহরের পূর্ব চাঁদকাঠি পূবালী সড়কের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে।


স্থানীয়রা জানান, খালে কাদায় লেপটানো একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে  পুলিশকে খবর দেই। 

পরে পুলিশ ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের পাঠায়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত চিহ্ন দেখা যায়।

ঝালকাঠি সদর থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, নিহতের পরিবার থেকে কোনো অভিযোগ করা হয়নি, এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরও খবর



আমাকে হোটেল থেকেও বের হতে দেয়নি

প্রকাশিত:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন রাজধানীর মিরপুরে গুলিতে বিএনপি কর্মী মাহফুজ আলম শ্রাবণ হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অভিনেতা ইরেশ যাকেরসহ ৪০৮ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর এই অভিনেতার বিরুদ্ধে হত্যা মামলার খবর সামনে আসতেই ক্ষোভে ফুসছে শোবিজ দুনিয়া।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পক্ষে থাকার পরও কেন ইরেশ যাকেরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা- জানতে চেয়েছেন নেটিজেনরাও। এই অভিনেতার হয়ে কথা বলেছেন অনেকেই। সেই তালিকায় আছেন উপস্থাপক ও অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়ও।

ইরেশ যাকেরের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে তুলে ধরেছেন নিজের জীবনের কথাও। তিনি জানিয়েছেন, মাসখানেক আগে তার বিরুদ্ধে যখন মামলা হয় তখন কিভাবে হেনস্তার শিকার হতে হয়েছিল তাকে।

আজ সোমবার এক ফেসবুক পোস্টে জয় লিখেছেন, অভিনেতা ইরেশ যাকেরের নামে মামলা দেওয়ায় সকল শিল্পী সমাজের সাথে আমিও তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আজ থেকে আট মাস আগে আমার বিরুদ্ধেও এরকম একটি হয়রানিমূলক মামলা হয়েছিল। একমাত্র আশফাক নিপুণ ছাড়া আর কাউকে পাশে পাইনি। বরং বাদ পড়েছি বিভিন্ন কাজ থেকে।

তিনি আরও বলেন, আমেরিকায় শো করতে গিয়ে দুই একজন অতি উৎসাহী কলিগের কারণে মঞ্চে উঠা তো দূরের কথা আমাকে হোটেল থেকেও বের হতে দেয়নি। মামলার কারণে সামাজিকভাবে হেনস্তা হয়েছি। অনেক অতি উৎসাহী আত্মীয় আত্মীয়তা ভঙ্গ করেছে। অনেক কলিগ ফোনও ধরেনি। যোগাযোগ করেনি।

জয়ের বিরুদ্ধে যে ব্যক্তি মামলা করেছেন তিনি বর্তমানে থানায় আছেন জানিয়ে অভিনেতা বলেন, শুনেছি, আমার বিরুদ্ধে যে মামলা করেছিল সেই বাদী এখন থানায় আটক আছে। বিভিন্ন জনের নামে মামলা দিয়ে টাকা খাওয়ার অপরাধে। আমার বিরুদ্ধে পুলিশ সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে আমার কোনো সম্পৃক্ততা পায়নি। পুলিশ এবং রাষ্ট্র কোনো হয়রানি করেনি। বরং হয়রানি করেছে আমার পরিচিত কাছের স্বজনেরা এবং চিরকালের বন্ধুরা।

সবশেষ জয় লিখেছেন, যাক আমি কারো প্রতি দোষারোপ করছি না। সকলকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আমার নিজের ছোটখাটো ভুলের জন্য বারবার ক্ষমা চেয়েছি। বড় অপরাধী এবং অপরাধকে ছোট করে ফেলে এই ধরনের মামলা। যেখানে এমন একজন সেলিব্রেটির নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয় যে মামলার চেয়ে সেলিব্রেটিকে নিয়ে চর্চা হয় বেশি। তখন আসল অপরাধীরা মুচকি হাসে। মামলাটাকে হাস্যকর মনে করে। এতে বিচার প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায়। আমরা চাই অপরাধীর বিচার হোক। যে যার জায়গা থেকে নতুন বাংলাদেশে ভুল সংশোধন করে নতুন করে বাচুক। সকলে সকলের প্রতি সহানুভূতিশীল হোক।


আরও খবর



মরদেহ দাফনের ৬ দিন পর জীবিত ফিরলেন রহিম!

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ১৪ মে ২০২৫ |

Image

চট্টগ্রাম অফিস :

চট্টগ্রাম মহানগরীর চাক্তাই খাল থেকে গত শনিবার এক অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। পরদিন রবিবার ভোলার উবায়দুল্লাহ এসে লাশটি নিজের ছেলে আব্দুর রহিমের লাশ দাবী করে গ্রহণ করেন এবং ভোলায় নিয়ে গিয়ে দাফন করেন।

তবে ঘটনার মোড় ঘুরে যায় গতকাল বৃহস্পতিবার। সেদিন রহিমের মোবাইল নম্বর সচল পেয়ে পিবিআই কর্মকর্তারা খোঁজ নিয়ে তাকে জীবিত উদ্ধার করেন। 

জানা যায়, পাওনাদারদের ভয়ে মোবাইল বন্ধ করে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি।

উবায়দুল্লাহ জানান, তার ছেলে চট্টগ্রামে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন। পহেলা মে সকালে এক ফোন পেয়ে বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন। তিনি ধারণা করেছিলেন, অনলাইন জুয়াড়িদের হাতে খুন হয়েছেন তার ছেলে। পুলিশও লাশটি তার কাছে হস্তান্তর করে।

পিবিআই কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম মেট্রো পুলিশের পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা জানান, রহিমের মোবাইল চালু হলে তারা যোগাযোগ করেন এবং জীবিত রহিমকে খুঁজে পান। পরে বাবা-ছেলেকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রহিম পাওনা টাকা দিতে না পেরে গা-ঢাকা দিয়েছিলেন।

তিনি আরো বলেন, 'লাশ শনাক্তের সময় বিকৃত হওয়ায় উবায়দুল্লাহ ভুল করে সেটিকে নিজের ছেলের লাশ ভেবেছিলেন। তদন্তে অন্য কোনো অসৎ উদ্দেশ্যের প্রমাণ মেলেনি।'

রহিমের ফুফাতো ভাই মো. নোমান গত জানান, 'লাশ শনাক্তের সময় ঘাড় ও পেটের পুরনো কাটা দাগ দেখে তারা নিশ্চিত হয়েছিলেন। তার ভাষায়, ২০১৪ সালে নির্মাণস্থলে পড়ে গিয়ে রহিমের পেটে রড ঢুকে যায় এবং অস্ত্রোপচারের ফলে ওই দাগগুলো পড়ে।'

পিবিআই জানায়, 'যাকে দাফন করা হয়েছে, সেই অজ্ঞাত ব্যক্তির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে দাবিদার এলে তা মিলিয়ে দেখা হবে।


আরও খবর



আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস নিয়ে মাভাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ভাবনা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০১ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ১৪ মে ২০২৫ |

Image

মো: হ্নদয় হোসাইন,মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি :

যুগে যুগে দেশ ও জাতির উন্নয়নে শ্রমিক শ্রেণির অবদান অনস্বীকার্য। আজকের এই সভ্য সমাজের উঁচু অট্টালিকা, শিল্প-কারখানা কিংবা প্রযুক্তিগত উন্নয়ন—সবকিছুর পেছনেই মেহনতি মানুষের ঘামঝরা শ্রম নিহিত।

এই দিবসটির ঐতিহাসিক ভিত্তি রয়েছে ১৮৮৬ সালের শিকাগো শহরের ‘হে মার্কেট’ আন্দোলনের মধ্যে। সেখানে শ্রমিকেরা দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন। এ দিনে  অকুতোভয় কিছু শ্রমিক তাঁদের আত্মদানের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শ্রমিকদের অধিকার, যা পরবর্তীতে বিশ্বজুড়ে শ্রম আইন ও ন্যায্য মজুরির আলোচনার পথপ্রদর্শক হয়। এই অবদানের স্বীকৃতি দিতেই প্রতিবছর ১ মে বিশ্বব্যাপী পালিত হয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস, যা মে দিবস নামেও পরিচিত।

এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে শ্রমিক শ্রেণি। দেশের কল-কারখানা, নির্মাণশিল্প, পরিবহন খাত কিংবা কৃষি—প্রতিটি ক্ষেত্রেই শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রমই গতি এনে দেয় অর্থনীতিকে। অথচ দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এই শ্রমিকরাই সমাজে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত ও উপেক্ষিত। প্রতিনিয়ত তারা শোষণ, বঞ্চনা ও বিভিন্ন প্রকার নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। অনেক সময় তাদের ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত করা হয়, কর্মপরিবেশ থাকে অমানবিক, এবং নিরাপত্তার অভাবে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। পরিতাপের বিষয় হলো, এখনো শ্রমিকদের নিজেদের ন্যায্য মজুরি ও উপযুক্ত কর্মপরিবেশের জন্য রক্ত দিতে হয়। 

শোষণহীন সমাজ গঠনে শ্রমিকদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে কী ভাবছেন মাভাবিপ্রবি  শিক্ষার্থীরা? এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত তুলে ধরেছেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও  ক্যাম্পাস সাংবাদিক মো. হ্নদয় হোসাইন।

ফুড টেকনোলজি অ্যান্ড নিউট্রিশনাল সায়েন্স বিভাগের ২০২২-২৩ বর্ষের  শিক্ষার্থী সমাপ্তি খান  বলেন, শ্রমিকরা আমাদের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তারা তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। মে দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সমাজে সব শ্রেণির মানুষের প্রতি ন্যায্যতা ও মর্যাদা থাকা প্রয়োজন। যারা কঠোর পরিশ্রম করেন, তাদের কষ্ট যেন আমরা বুঝি। আমি বড় হয়ে এমন কিছু করতে চাই, যাতে নারী শ্রমিকরা ন্যায্য বেতন ও সম্মান পান।

অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্স ২০২০-২১ বর্ষের শিক্ষার্থী  তৌকির  আহমেদ বলেন, ১লা মে—আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। এটি কেবল একটি তারিখ নয়, এটি এক ঐতিহাসিক আন্দোলনের প্রতীক, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের দিন।

এই দিনে আমরা গভীর শ্রদ্ধা জানাই বিশ্বের সকল শ্রমিকদের প্রতি—যারা রোদে-পুড়ে, ঘামে-ভেজা শরীরে দেশের উৎপাদন ব্যবস্থাকে সচল রাখেন। যারা নির্মাণ করেন রাস্তা, ব্রিজ, ভবন—যাদের হাতে গড়ে ওঠে এক একটি জাতির অগ্রগতির ভিত। অথচ আজও আমাদের সমাজে অনেক শ্রমিক বঞ্চিত হচ্ছেন ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও সামাজিক নিরাপত্তা থেকে।

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে আমাদের অঙ্গীকার হোক—

১. শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় নীতিনির্ধারক ও নাগরিক সমাজ সক্রিয় থাকবে।

২. শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক হবে দায়িত্বশীল ও সম্মানভিত্তিক।

৩. শিশু শ্রম, জোরপূর্বক শ্রম ও শ্রমিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখানো হবে।

আমরা যেন ভুলে না যাই—শ্রমের মর্যাদা মানে মানুষের মর্যাদা। সমাজের প্রতিটি স্তরে শ্রমজীবী মানুষের প্রতি সম্মান ও সহানুভূতির মনোভাব গড়ে তুললেই শ্রমিক দিবসের তাৎপর্য পূর্ণতা পাবে।

শ্রমিকের ঘামে গড়া সমাজে কোনো বৈষম্যের জায়গা নেই।

আসুন, এই দিনে আমরা সমতার সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাই।

টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের  ২০২০-২১ বর্ষের  শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান রাকিব বলেন,আমি একজন শিক্ষার্থী। পড়াশোনার ফাঁকে যখন দেখি রোদে-পুড়ে, ঘামে ভিজে কাজ করছেন শ্রমিকরা—তখন মনে হয়, এ সমাজের সত্যিকারের নায়ক তো এঁরাই। আমরা যে ভবনে ক্লাস করি, যে রাস্তায় চলি, তা তো তাঁদের ঘামে গড়া।

তবু কেন তাঁরা থেকে যান প্রান্তে? কেন আজও ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হন? কেন নিরাপদ কর্মপরিবেশ কিংবা সামাজিক সুরক্ষা তাঁদের প্রাপ্য হয়ে ওঠে না?

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস আমাকে শেখায়—শ্রম মানেই সম্মান। শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়, আমাদের সবার। আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন দরকার—শ্রমিক বললেই যেন সম্মান ঝরে পড়ে মনে।

শিক্ষার্থী হিসেবে আমি স্বপ্ন দেখি এক এমন সমাজের, যেখানে শিশুশ্রম থাকবে না, কেউ জোর করে শ্রমে বাধ্য হবে না, শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক হবে সৌহার্দ্যপূর্ণ।


ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের মাস্টার্স ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী  আক্তারুজ্জামান সাজু বলেন, শ্রমিক দিবস উপলক্ষে সকল শ্রমিক ভাইদের প্রতি শুভেচ্ছা জানাই। আমি নিজেও একজন শ্রমিকের সন্তান। আমি মনে করি, সভ্যতা নামক জাহাজ শ্রমিকের ঘামের উপর দিয়েই চলে। লক্ষ্যণীয় যে, গত জুলাই বিপ্লবের সময় তথাকথিত সুশীল ও বুদ্ধিজীবীদের আগেই রিকশাওয়ালা, দিনমজুররা রাস্তায় নেমেছিল; তরুণদের প্রতি আস্থা রেখেছিল।

তারুণ্যের এই নতুন বাংলাদেশে আমরা এমন এক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চাই, যেখানে শ্রমিকের মান-মর্যাদা ও ন্যায্য মজুরি সংরক্ষিত থাকবে।


আরও খবর