Logo
শিরোনাম

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বললেন তামিম

প্রকাশিত:শনিবার ১১ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল হঠাৎ করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। আজ (শুক্রবার) রাতে দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এই কথা জানিয়েছেন। এর আগে ২০২৩ সালের জুলাইতে বাংলাদেশের ক্রিকেটভক্তদের চমকে দিয়ে প্রথমবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন তামিম। নাটকীয়ভাবে একদিন পরই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে তিনি ফের ক্রিকেটে ফেরার ঘোষণা দেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরলেও এরপর আর খেলা হয়নি তামিমের। সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের দল থেকে তিনি সরিয়ে নেন নিজেকে। এরপর থেকে তার জাতীয় দলে ফেরার সময় নিয়ে অনিশ্চয়তার পেন্ডুলাম দুলছিল। আসন্ন আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে ঘিরে তামিমের জাতীয় দলে ফেরার তোড়জোড় শুরু হয় আবারও। সেই পরিস্থিতিতেই দ্বিতীয় দফায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটি জানিয়ে দিলেন দেশসেরা এই ওপেনার।

অবসরের ঘোষণা দিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে তামিম লিখেছেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে আছি অনেকদিন ধরেই। সেই দূরত্ব আর ঘুচবে না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমার অধ্যায় শেষ। অনেকদিন ধরেই এটা নিয়ে ভাবছিলাম। এখন যেহেতু সামনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় একটি আসর, আমি চাই না আমাকে ঘিরে আবার অলোচনা হোক এবং দলের মনোযোগ ব্যাহত হোক।’

তামিমের পোস্টের বাকি অংশ হুবহু তুলে ধরা হলো– ‘এটা অবশ্য আগেও চাইনি। চাইনি বলেই অনেক আগে নিজেকে বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে সরিয়ে নিয়েছি। যদিও অনেকেই বলেছেন, অনেক সময় মিডিয়ায় এসেছে, আমিই নাকি ব্যাপারটি ঝুলিয়ে রেখেছি। কিন্তু বিসিবির কোনো ধরনের চুক্তিতে যে নেই, এক বছরের বেশি সময় আগে যে নিজ থেকে সরে দাঁড়িয়েছে, তাকে পরিকল্পনায় রাখা বা তাকে নিয়ে আলোচনারও তো কিছু নেই। তারপরও অযথা আলোচনা হয়েছে। অবসর নেওয়া বা খেলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত একজন ক্রিকেটার বা যেকোনো পেশাদার ক্রীড়াবিদের নিজের অধিকার। আমি নিজেকে সময় দিয়েছি। এখন মনে হয়েছে, সময়টা এসে গেছে।’

‘অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আন্তরিকভাবেই আমাকে ফেরার জন্য বলেছে। নির্বাচক কমিটির সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। আমাকে এখনও উপযুক্ত মনে করার জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। তবে আমি নিজের মনের কথা শুনেছি।’

‘২০২৩ বিশ্বকাপের আগে যা হয়েছে, আমার জন্য তা বড় ধাক্কা ছিল, যেহেতু ক্রিকেটীয় কারণে আমি দলের বাইরে যাইনি। তারপরও আমি যেখানেই গিয়েছি, ক্রিকেট ভক্তদের অনেকে বলেছেন, আমাকে আবার জাতীয় দলে দেখতে চান। তাদের ভালোবাসার কথা ভেবেছি আমি। আমার ঘরেও একজন অনুরাগী আছে। আমার ছেলে কখনও আমাকে সরাসরি বলেনি, কিন্তু তার মাকে বারবার বলেছে, বাবাকে আবার দেশের জার্সিতে খেলতে দেখতে চায়। ভক্তদের হতাশ করার জন্য আমি দুঃখিত। ছেলেকে বলছি, ‘‘তুমি যেদিন বড় হবে, সেদিন বাবাকে বুঝতে পারবে।


আরও খবর



রিয়াল মাদ্রিদের নতুন কোচ জাভি আলোনসো

প্রকাশিত:সোমবার ২৬ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

নতুন কোচ হিসেবে জাভি আলোনসোর নাম ঘোষণা করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। তার সঙ্গে তিন মৌসুমের চুক্তি করেছে লস ব্লাঙ্কোসরা। কার্লো আনচেলত্তি রিয়ালের দায়িত্ব ছেড়ে ব্রাজিলের দায়িত্ব নিয়েছেন। তার জায়গায় ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে কাজ শুরু করবেন জাভি আলোনসো।

এক বিবৃতিতে রিয়াল জানিয়েছে, ‘আগামী তিন মৌসুমের জন্য রিয়াল মাদ্রিদের পরবর্তী কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে জাভি আলোনসোকে। আগামী ১ জুন থেকে ২০২৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত তিনি রিয়ালের সাথে থাকবেন।’

বেশ কিছুদিন ধরেই আনচেলত্তির চলে যাওয়া নিয়ে গুঞ্জন ছিল। যে কারণে নতুন কোচের সন্ধানে নেমে সাবেক মিডফিল্ডার আলোনসোর দিকেই নজড় পড়েছিল রিয়ালের। শেষ পর্যন্ত তারা সফল হয়েছে।


আরও খবর



করোনা বাড়ছে সতর্কতা জরুরি এখনই

প্রকাশিত:শনিবার ১৪ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

অধ্যাপক ডা. মুহাম্মাদ সিদ্দিক :

বিগত সময়ের মতো আবারও কড়া নাড়তে শুরু করেছে COVID-19. COVID-19 Omicron XBB 1.5 সাবভেরিয়েন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত সতর্কতা এবং নির্দেশিকাগুলো জানা দরকার।

এবারে করোনা ভিন্ন : COVID-19-এর একটি নতুন রূপ- Omicron XBB সাবভেরিয়েন্ট দ্রুত বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। এ রূপটি পূর্ববর্তী রূপগুলোর চেয়ে বেশি সংক্রামক এবং অনেক ক্ষেত্রে এটি সাধারণ লক্ষণ না দেখিয়েই ছড়িয়ে পড়ে। অতএব স্বাস্থ্য সতর্কতা অনুসরণ করা এবং মাস্ক পরা আবারও অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।

Omicron XBB কী এবং এটি কীভাবে আলাদা : Omicron XBB হলো একটি রিকম্বিন্যান্ট সাবভেরিয়েন্ট, যা দুটি Omicron স্ট্রেনের সংমিশ্রণে গঠিত। গবেষণা অনুসারে, এটি: পূর্ববর্তী রূপগুলোর চেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কখনও কখনও স্ট্যান্ডার্ড পরীক্ষায় শনাক্তকরণ এড়িয়ে যায় (মিথ্যা নেতিবাচক)। ক্ল্যাসিক্যাল COVID লক্ষণ না দেখিয়ে ব্যক্তিকে সংক্রামিত করতে পারে।

নতুনভাবে পর্যবেক্ষণ করা লক্ষণ : অনেক রোগীর কাশি বা জ্বরের মতো সাধারণ লক্ষণ দেখা যায় না। এর পরিবর্তে যে লক্ষণগুলো ক্রমবর্ধমানভাবে রিপোর্ট করা হচ্ছে তা হলো- জয়েন্টে ব্যথা, মাথাব্যথা, গলাব্যথা, পিঠব্যথা, ক্লান্তি ও ক্ষুধা কমে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, হালকা থেকে মাঝারি নিউমোনিয়া। অনেক ক্ষেত্রে নাকের সোয়াব পরীক্ষা ভাইরাস শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়। তবে বুকের এক্স-রে বা সিটি স্ক্যানের মতো ইমেজিং পরীক্ষায় ফুসফুসের সংক্রমণ প্রকাশ করে। লক্ষণগুলো হালকা হলেও অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিপজ্জনক রূপ : বর্তমান তথ্যের ওপর ভিত্তি করে (যদিও XBB দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, তবু এটি উচ্চ মৃত্যু বা বিষাক্ততার কারণ কিনা) সে সম্পর্কে এখনও কোনো বৈজ্ঞানিক ঐক্যমত্য নেই। তবে, বয়স্ক ব্যক্তি, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি অথবা অন্তর্নিহিত অবস্থার (যেমন- ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ) রোগীরা আরও গুরুতর জটিলতার সম্মুখীন হতে পারেন।

যেভাবে সুরক্ষা পাবেন : জনাকীর্ণ স্থান এড়িয়ে চলুন। সঠিকভাবে মাস্ক পরুন (নাক ও মুখ উভয়ই ঢেকে রাখুন)। ঘনঘন হাত ধোয়া বা স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। কমপক্ষে ১.৫ মিটার শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন। যদি কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আপনার কোভিড ভ্যাকসিন ও বুস্টার ডোজ গ্রহণ করুন (যদি সময় থাকে)।

ভুল তথ্য থেকে সাবধান : ইন্টারনেটে অতিরঞ্জিত বা বিভ্রান্তিকর বার্তা ছড়িয়ে পড়ছে। সঠিক তথ্যের জন্য বিশ্বস্ত উৎসের ওপর নির্ভর করুন।

সচেতনতাই সবচেয়ে শক্তিশালী ঢাল : ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কিন্তু অসাবধানতারও কোনো সুযোগ নেই। আপনি যদি সতর্ক থাকেন, নিয়মিত মাস্ক পরেন এবং স্বাস্থ্য নির্দেশিকা অনুসরণ করেন, তবে নিজে যেমন সুস্থ ও ভালো থাকবেন, তেমনি আপনার প্রিয়জনদের জন্যও ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারবেন।

লেখক : চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্যবিষয়ক লেখক

ওয়াশিংটন ডিসি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র


আরও খবর



পার্বত্য এলাকার শতকরা ৫০% মানুষ সুচিকিৎসা পায় না

প্রকাশিত:শনিবার ৩১ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

পার্বত্য এলাকার শতকরা ৫০% মানুষ সুচিকিৎসা পায় না। বিশেষ করে উপজেলার মানুষরা সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়। সেখানে ওজা ও বৈদ্য দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা করা হয়' এমন মন্তব্য করেছেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার।রাঙামাটি শহরের বিজন স্মরণী এলাকায় রাঙামাটি পুপুলার ডায়াগনস্টিক এন্ড হসপিটাল এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রথমে হসপিটালের প্রাঙ্গণে বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন করেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার। পরে আলোচনা সভা ও কেক কাটা হয়।

আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক কর্ণেন কীর্তি রঞ্জন চাকমা, সাবেক সিভিল সার্জন ডা: উদয় শংকর দেওয়ান, পুপুলার ডায়াগনস্টিক এন্ড হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমরান হোসেন, পুপুলার ডায়াগনস্টিক এন্ড হসপিটালের চেয়ারম্যান ডা: বিজন চন্দ্র তালুকদারসহ অন্যান্য প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষিবীদ কাজল তালুদার বলেন, পার্বত্য এলাকায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র যে জাতি সত্তা আছে তাদের মধ্যে অনেকে চিকিৎসা সেবা বোঝে না। বিশেষ করে উপজেলাতে এসব হয়ে থাকে। যেমন দেখা গেছে, জুরাছড়িতে এক মহিলার বাচ্চা হবে। সেখানে ডাক্তার নাই। দুই ঘন্টা ধরে সেখানে রাখা হয়। পরে তার মৃত্যু হয়। শুধু জুরাছড়ি নয়। মাত্র একজন ডাক্তার দিয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। শুধু জুরাছড়ি নয় বরকলসহ বিভিন্ন জায়গাতে এরকম দেখা যায়। আধুনিকভাবে চিকিৎসা সেবা প্রদানে পার্বত্য এলাকায় এভাবে উন্নতমানের ডায়াগনস্টিক এন্ড হসপিটাল গড়ে উঠা প্রয়োজন। বক্তব্যের আরেক পর্যায়ে ডেপুটেশন থাকা ডাক্তারদের চিকিৎসা সেবা প্রদান বিষয়েও উপস্থাপন করেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার।


আরও খবর



জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে বাজেটে

প্রকাশিত:শনিবার ৩১ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৯ জুন ২০২৫ |

Image

চাপের মধ্য দিয়ে চলা ব্যবসা-বাণিজ্যের কাঁধে আরও চাপানো হচ্ছে করের বোঝা। একদিকে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটে হাঁসফাঁস করছে শিল্প-কারখানা; আরেকদিকে কম মুনাফায় টিকে থাকা প্রতিষ্ঠানের ওপরও বসছে অতিরিক্ত কর। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে শুল্ক কাঠামোয় বড় ধরনের সংস্কার আনতে যাচ্ছে সরকার। এই সংস্কারের ফলে দেশীয় শিল্প অতিরিক্ত সুরক্ষা থেকে বের হয়ে আসবে। এতেই বাড়তি চাপে পড়বে স্থানীয় শিল্প। ফলে উৎপাদন খরচ বাড়বে। এতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়ও বাড়বে। ২ জুন সোমবার জাতীয় সম্প্রচার মাধ্যমে উপস্থাপন করা হচ্ছে নতুন অর্থবছরের বাজেট।

বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্রগুলো জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রেসক্রিপশনের পাশাপাশি আগের সরকারের মতোই কর বাড়িয়ে রাজস্ব বাড়ানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে আসন্ন বাজেটেও। তারই প্রতিফলন ঘটতে যাচ্ছে আমদানিপণ্যের শুল্কস্তর পুনর্গঠন ও শুল্কহার বাড়ানো-কমানোর মধ্যে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে প্রায় ৫০০ ধরনের পণ্যে ২০ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত আরোপিত সম্পূরক শুল্ক (এসডি) ও নিয়ন্ত্রক শুল্ক (আরডি) কমানো বা পুরোপুরি তুলে নেওয়া হতে পারে নতুন অর্থবছরের বাজেটে। এ ছাড়া স্থানীয় শিল্পকে দেওয়া প্রতিরক্ষণ সুবিধা তুলে নেওয়ার অংশ হিসেবে ১৪ ধরনের শিল্পের কাঁচামাল আমদানির শুল্ক বাড়তে পারে দ্বিগুণ পর্যন্ত। কসমেটিক্স, ডোর লকসহ ২১ ধরনের পণ্যের ন্যূনতম মূল্য দ্বিগুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে। ন্যূনতম মূল্য হলো, আমদানিকারক যে দামেই কোনো পণ্য আমদানি করুক, সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম মূল্যের নিচে ওই পণ্যের শুল্কায়ন হবে না।

কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার আগের মতোই মানুষের ওপর করের হার বাড়িয়ে রাজস্ব আদায়ের চেষ্টা করছে। এর বাইরে আইএমএফেরও রাজস্ব বাড়ানোর দিকে একটা চাপ ছিল। সব মিলিয়ে সরকার আগের ধারাই অনুসরণ করছে। এতে চাপে পড়বে স্থানীয় শিল্প। ফলে রাজস্ব আহরণ, কর্মসংস্থানের ওপরও প্রভাব পড়বে। আমরা আশা করেছিলাম, অন্তর্বর্র্তী সরকার স্বতন্ত্রভাবে কিছু একটা করবে। মানুষের ওপর করের চাপ বাড়বে না। কিন্তু সেই আশায় গুড়েবালি, মানুষ হতাশ। আমরা দেখছি বিভিন্নভাবে করের বোঝা বাড়ানো হচ্ছে। মানুষের আয় বাড়েনি, খরচের পাল্লা বাড়ছে। মানুষ আর নিতে পারছে না। কর্মসংস্থানও হচ্ছে না। বিপুল পরিমাণ বেকার। একদিকে বেকারত্ব বাড়ছে, অন্যদিকে খরচ বাড়ছে।

স্থানীয় ১৪টি উৎপাদন খাত যেমন বেভারেজ বা পানীয়, এলইডি বাল্ব, ওয়াটার পিউরিফায়ার, ফ্যান, সিগারেটের কাগজ, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের কাঁচামালে শুল্ক তিনগুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে। প্রভাবিত পণ্যের মধ্যে রয়েছে শিশুদের জন্য ব্যবহৃত মল্ট এক্সট্র্যাক্ট ও আটাভিত্তিক খাদ্যপণ্য, গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীদের পুষ্টি উপাদান বা সাপ্লিমেন্ট।

বেভারেজ কনসেন্ট্রেট আমদানিতে কাস্টমস শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হতে পারে। সয়া প্রোটিন-ভিত্তিক খাবার ও তামাকশিল্পে ব্যবহৃত সিগারেট পেপারের ওপর সম্পূরক শুল্ক ৬০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০০ শতাংশ করা হতে পারে। স্যাটিন ফিতা তৈরিতে ব্যবহৃত ওভেন কাপড়ের ওপরও একই ধরনের শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব রয়েছে। তা ছাড়া, ফ্যান উৎপাদনে ব্যবহৃত নন-অ্যালয়ড

অ্যালুমিনিয়াম শিট, ওয়াটার পিউরিফায়ারের যন্ত্রাংশ এবং টেলিভিশন তৈরির জন্য ব্যবহৃত এলইডি বাল্ব ও ওপেন-সেল প্যানেলের ওপরও শুল্ক বাড়তে পারে। এলইডি ল্যাম্পের ওপর শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হতে পারে। বাণিজ্যিকভাবে আমদানিকৃত সিগারেট পেপারের ওপর শুল্ক হতে পারে ৩৫০ শতাংশ পর্যন্ত।

সরকার লিপস্টিক, আই মেকআপ, ম্যানিকিউর পণ্য, ফেস পাউডার, কসমেটিকস, ফেসওয়াশ, খেলনা এবং বিভিন্ন ধরনের তালাসহ এসব পণ্যের ন্যূনতম কাস্টমস মূল্যও বাড়াতে পারে, যার ফলে ঘোষিত মূল্যের ওপর ভিত্তি না করে নির্ধারিত মূল্যের ওপর কর পরিশোধ করতে হবে আমদানিকারকদের।

আরও যেসব পণ্যের ওপর নতুন বা বাড়তি শুল্ক আসতে পারে, তার মধ্যে রয়েছে তামাক বীজ (২৫ শতাংশ), সয়াবিন মিল (৫ শতাংশ) এবং কাগজ উৎপাদনে ব্যবহৃত কাওলিন ক্লে। গ্রানাইট ও মার্বেলের ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করা হতে পারে। সিমেন্ট শিল্পে ক্লিংকার আমদানির ওপর নির্ধারিত শুল্ক বাতিল করে ২৫ শতাংশ অ্যাড ভ্যালোরেম শুল্ক আরোপের প্রস্তাব রয়েছে, যা রাজস্ব বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।

রেফারেল হাসপাতালের জন্য আমদানিকৃত চিকিৎসা সরঞ্জামের শুল্ক ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হতে পারে। কম্পিউটার অ্যাক্সেসরিজ আমদানির ওপর চলমান কর রেয়াত বাতিলের পরিকল্পনাও সরকারের রয়েছে, যার ফলে প্রযুক্তি খাতে খরচ বাড়তে পারে। এসব পরিবর্তনের লক্ষ্য মূলত বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণকে সামনে রেখে শুল্ক কাঠামোর যৌক্তিকীকরণের অংশ, যার লক্ষ্য স্থানীয় শিল্পকে অতিরিক্ত সুরক্ষা দেওয়া বন্ধ করে বাণিজ্যে বৈশ্বিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য স্থাপন করা।

অন্যদিকে স্টিলের কাঁচামালে বিদ্যমান কাস্টমস শুল্ক প্রত্যাহার করে, কৌশলে তার চেয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি ভ্যাট ও অগ্রিম আয়কর (এআইটি) মিলিয়ে শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে, যার ফলে প্রকৃত কর বাড়বে ৪০ শতাংশের বেশি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, আইএমএফের শর্তের জালে ১৭২টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক কমানো হচ্ছে। এ ছাড়া রপ্তানির প্রধান গন্তব্য দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে তুষ্ট করতে ১৩৫টি পণ্যের কাস্টমস শুল্ক কমানোর পরিকল্পনা সরকারের। এতে আমদানিনির্ভরতা বাড়বে। দেশীয় শিল্পের অসম প্রতিযোগিতায় পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জানা গেছে, বড় আঘাত আসছে নির্মাণ উপকরণে। এই খাতের বেশকিছু দরকারি পণ্যে শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব থাকছে। যেমন- সিমেন্ট, রড, বার, অ্যাঙ্গল, টাইলস, স্ক্রু, নাট, বোল্ট ও নির্মাণসামগ্রীর দাম আকাশ ছুঁতে পারে। সিমেন্ট তৈরির মূল উপকরণ ক্লিংকারের শুল্কায়ন হয় নির্ধারিত মূল্যে। বর্তমানে প্রতি মেট্রিক টনে ৭০০ থেকে ৯৫০ টাকা কাস্টমস শুল্ক আছে। তবে এখন বাজারমূল্যে নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাতে শুল্ক ধরা হয়েছে ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ। ডলারের ঊর্ধ্বমুখী দর ও বাজারের ওঠানামায় ব্যয়বহুল হতে পারে সিমেন্ট।

রড, বার ও অ্যাঙ্গেল তৈরির কাঁচামালের ওপর বসানো হয়েছে বাড়তি শুল্কের বোঝা। বিভিন্ন ধরনের স্ক্রু, নাট ও বোল্ট কিনতে গেলে এখন প্রায় তিনগুণ অর্থ ব্যয় করতে হবে। এসব পণ্যে মোট করভার ৩৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৮৯.৩২ শতাংশ করা হয়েছে। টাইলস ও নির্মাণসামগ্রীর মূল উপকরণ মার্বেল ও গ্রানাইট বোল্টারের সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করা হচ্ছে। ফলে এর মোট করভার ৮৯.৩২ শতাংশ থেকে বেড়ে হবে ১২৭.৭২ শতাংশ।

স্থানীয় শিল্প অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়বে এই অজুহাতে জিপসাম বোর্ড ও শিট আমদানিতে দ্বিগুণ করা হয়েছে সম্পূরক শুল্ক। এখন শুল্কহার হবে ২০ শতাংশ। ঢাকা শহরের অন্যতম বিরক্তিকর পরিবহন ব্যাটারিচালিত রিকশার দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই রিকশার ১২০০ ওয়াটের ডিসি মোটরের কাস্টমস শুল্ক ১ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। তামাকবীজে আগে শূন্য শতাংশ কাস্টমস শুল্ক থাকলেও এখন তা ২৫ শতাংশ করা হচ্ছে। সয়াবিন মিলের কাস্টমস শুল্ক শূন্য থেকে ৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এই পণ্যগুলোর দাম বাড়লে ব্যয় বাড়বে সাধারণ মানুষের। বাজেটে উড়োজাহাজের কাস্টমস শুল্ক শূন্য থেকে ১ শতাংশ এবং হেলিকপ্টারে মোট করভার ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ করা হচ্ছে।

বাজেটে কিছু পণ্যের শুল্ককর কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু এর নেতিবাচক দিকও রয়েছে। যেমন এসব পণ্যের বেশি আমদানি হলে স্থানীয় শিল্পের মাধ্যমে উৎপাদিত এসব পণ্য আবার অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে পারে।

পিভিসি পাইপ, কপার ওয়্যার, মোটরশিল্প, ব্যাটারিশিল্প, লিফটম, এলইডি বাতি, রাইস ব্র্যান ওয়েল, টায়ার-টিউব দেশে উৎপাদন করা হয়। পিভিসি পাইপ দেশে উৎপাদন করা হলেও এর উপকরণ আমদানি করতে হয়। এবার উপকরণের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। একই পদক্ষেপ কপার ওয়্যারেও। এই পণ্যের উপকরণ আমদানিতে কাস্টমস শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

এ ছাড়া শুল্ক ফাঁকি রোধে কিছু পণ্যের শুল্কহার বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে ফাঁকি রোধ করা গেলেও ওইসব পণ্যের দামও বাড়বে স্থানীয় বাজারে। দেশে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ন্যায্য দাম ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিতে কৃষিপ্রধান এলাকায় কোল্ড স্টোরেজ দরকার। তবে উৎপাদনমুখী শিল্প না হওয়ায় রেয়াতি সুবিধায় আমদানি করতে পারছেন না এ খাতের উদ্যোক্তারা। এবার কোল্ড স্টোরেজের যন্ত্রপাতি ১ শতাংশ কাস্টমস শুল্ক দিয়েই আমদানি করতে পারবেন উদ্যোক্তারা।


আরও খবর

কালো টাকা বৈধ করার পথ বন্ধ

রবিবার ২২ জুন ২০২৫




বুলবুল ক্রিকেট বোর্ডের নতুন সভাপতি

প্রকাশিত:শনিবার ৩১ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ২২ জুন ২০২৫ |

Image

জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হলেন। দীর্ঘদিন আইসিসির গেম ডেভেলপমেন্টে কাজ করা আমিনুল এবার হাল ধরেছেন দেশের ক্রিকেটের। প্রজ্ঞাপন জারি করে আমিনুল ইসলামকে বিসিবির পরিচালক হিসেবে মনোনয়ন দেয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)।

এদিন ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালকদের সভায় পরিচালকদের প্রত্যক্ষ ভোটে ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নির্বাচিত হন দেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল।

উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে কোটা সংস্কার নিয়ে ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে পড়ে দেশ থেকে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর সরকারের বিভিন্ন মহলে পরিবর্তন ঘটে। তারই ধারাবাহিকতায় পরিবর্তন হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেও।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদকে ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক হিসেবে মনোনয়ন দেয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কোটায় বিসিবির পরিচালক হয়ে পরিচালকদের প্রতক্ষ ভোটে প্রথমবারের মতো ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নির্বাচিত হন ফারুক আহমেদ।

কিন্তু ৯ মাসের মাথায় পরিচালকদের অনাস্থার কারণে ২৯ মে ফারুক আহমেদের পরিচালক পদ প্রত্যাহার করে নেয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। আর তাই তিনি বিসিবির সভাপতি হিসেবে থাকার যোগ্যতা হারালেন। তার পরিবর্তে ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল।


আরও খবর