মেজর জিল্লুর রহমান অবঃ
আমেরিকার পত্রিকার সম্পাদক বেন ব্রেডলির উক্তি দিয়ে শুরু করলাম বুঝার সুবিধার্তে। হায়রে সেই উৎসবের ভোটের দিনের আমেজ ! বড় নেতা মেঝ নেতা সেঝ নেতা নোয়া নেতা , চ্যালা চামুন্ডারা কি যতনে সম্মানে ঘাড়ের উপর হাত সযত্নে রেখে কানের কাছে মুখ লাগিয়ে ভোটের মাঠে সমার্থন ভিক্ষা করছে । সাথে নিশ্চয়তা দিচ্ছে আপনার জমির আইল নিয়ে যে ঝামেলা আছে নেতার নলেজে আছে আগামীকালই আপনার কষ্ট বিসমিল্লাহ বলে শেষ করে আপনার সাথে বাড়িতে ডাল ভাতের নাস্তা খাব।
ভোটের মাঠে কত কদর কত জামাই আদর । ১৪ সালে এক ধাক্কায় সে মালিকানার স্বত্ব অক্কা পেয়ে শ্মশানে শুব্র বস্ত্র উরাচ্ছে। সেই যে ভোটারের কপাল পুড়ল সে কপাল আর ভাল হল না। এখন ভোটেরদিন কেন্দ্রে যেতে বাধা। কেউ বলে কষ্ট করে আপনার যাওয়া লাগবে না আপনার দায়িত্ব আমরা সেরে ফেলেছি কাকা।
আগে রাতে ঘুম ভাঙ্গায় ঘরে ঢুকে চরন ধরে বলত ক্ষমা করেন আমার বাবা নাই আপনি আমার আব্বা কথা দেন এতিমকে সন্তানের স্নেহ দিবেন কথা দেন ভোট আমায় দিবেন। সেই ছেলে এখন আমারে দেখে ষাঁড়ের মত কুন্দায়, আর কয় আমি নৌকা মার্কা কিনে আনছি ভোট না দিলেও আমি নির্বাচিত। দেশের মালিক হওয়ার গৌরবের সেইদিন খুশি আর অপমানের সাগরে ফেলে গেলি কই ।
সেবার নির্বাচনে প্রার্থিদের বাড়িতে ঘন ঘন রাতবেরাত হানা দেওয়ায় বিরক্ত হয়ে রজব ভাই ভাবী হাতের খড়ের তৈরি কাথার নিচে ডুব মেরেছে অতিস্ট হয়ে। জির্ন কাঠের দরজায় উপরের চৌকাতে জং ধরা লোহার শিকল ঝুলন্ত ছিল। পালাক্রমে কয়েকজন প্রার্থি সজরে ঝাকিয়ে ডেকে তাদের সাড়া না পেয়ে চলে যায়। শেষবার নাছোড়বান্দা ক্যান্ডিডেট ইয়াহিয়া শিকল ঝাকাতে লাগল ও কাকি ও কাকা দরদের সুরে মায়াবী ডাক শিকল আছড়ানো তালে তালে বেশ সঙ্গিত উপভোগ করলাম । হায়রে !! মিনিট দশেক পর খড়াত করে আমার সেকল ছিড়ে গেলে বুঝতে পারলাম । ছেড়া শিকল ইয়াহিয়া হাতে নিয়ে সে কেটে পড়ে। সকালে আমার কাছে বিচার আনে। ইয়াহিয়াকে বল আমার শিকল গুতাতে গুতাতে ছিড়ে নিয়ে গেছে গত রাতে । ইয়াহিয়া নতুন শিকল কিনে মিস্ত্রি দিয়ে লাগিয়ে দিল। রজব মিয়া বলল তোমারে ভোট দেব , তুমি জিতবা যে মানুষ বাইশ মিনিট বিরামহীন শিকল ঝাকাতে পারে ভোটের জন্য সে ভোট পাওয়ার যোগ্য তোমার অসীম ধৈর্য । এই ছিল ভোটার আর নেতার সম্পর্কের কেমিস্ট্রি ।
প্রতিবার ভোটের আগে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা দাঙ্গা। অবস্থা দিষ্টে প্রমান করে লুটপাটের অংশী হতে ভাগ বাটোয়ারায় ভাগ বসাতে দল গুলো মরনপণ লড়াই চালায় । এবার অবস্থা বেগতিক। রাজনৈতিক সংঘাত দিব্যি ছড়িয়ে পড়ছে দু ধারায় । নির্দলিয় সরকারের অধিন নির্বাচন চায় সকল বিরোধী দল এক ধারা । শুধু সরকারী ধারা সংবিধান নিদেন রক্ষা কবচ কামড়ে তাদের কমান্ডে রথ পাড়ি দিতে চায় । ক্ষমতা হারা দলের নিরাপদ প্রস্থান তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত্তের গ্যারান্টি দিতে পারলে গনতান্ত্রিক সকল প্রক্রিয়া সমাধান সহজ হবে।
ভোট বড় সকলের বালাই কাকে ভোট দিয়া উচিৎ ভোটারের ভাবনায় কুলায় উঠে না। তারা মিডিয়া দ্বারা, দলের দ্বারা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। জনজীবনে কে নেতা হবে না হবে জনগণ আজ গ্রাহ্য করে না । এখন মাইকে ডেকে কেন্দ্রে ভোটার ভিড়ানো যাচ্ছে না । ভোট সে তো দেশের খাজাঞ্চি নিয়ন্ত্রণ এবং প্রভাব-প্রতিপত্তি জাহির করার স্বার্থে ক্ষমতা দখলই ভোটের রাজনীতির প্রধান আদি কথা।
জনহিতের কথা নিছক ভাঁওতাবাজি কেতাবি বুলি। গায়ের জোরে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ভোট কেটে আখের গোছাতে গিয়ে যদি জন কল্যাণ হয়ে যায়, তাই প্রকৃতির দয়ায় মানুষের লাভ। বেহুদা উন্নয়নের কাজগুলো ভোটের আগে ভাগে করতে পারলে সব দিক দিয়ে লাভ হয় । যে প্রকল্প না করলে কর্মির, নেতার দলের লাভ নেই তা চড়া গলায় বক্তৃতায় পুষিয়ে দেওয়া হয়। ধাপ্পা বাজীর রাজনীতি জনগণ বুঝে । কিন্তু প্রশ্ন হল এর প্রতিরোধ করার উদ্যোগ কে করবে? প্রার্থী একটু এ দিক-ও দিক করতে পারলে জিতে যাওয়ার সম্ভাবনা নিশ্চিত । প্রশাসন, কমিশন, পুলিশ সেভাবে সাজানো থাকে । এমনই মন মেজাজ থেকে প্রার্থীরা ও তাঁদের দলবল লাঠিয়াল মাঠে অতিসক্রিয় হয়ে ওঠে। এই ভোটের পরিণাম মৃত্যু পর্যন্ত গড়ায় তাতে কি ।
গত দুই টার্ম ইলেকশনের কারিশমা নিয়ে অভিজ্ঞ রাজনিতিক দির্ঘকাল মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এক স্বাক্ষাতকারে লজ্জিত হয়ে বললেন আমার এলাকার মানুষ আমাকে জিজ্ঞাসা করে আপনি নাকি এম পি হয়েছেন? যারা আমাকে ভোট দিয়ে এম পি নির্বাচিত করবে খোদ তারাই জানে না কিভাবে এম পি হলাম । তিনি ক্ষেদের সাথে বললেন জনগণের সমর্থন এড়িয়ে এম পি হব এই জন্য দেশ স্বাধীন করা হয়নি।
অধিকাংশ মানুষ মনে করেন, যাঁরা রাজনীতি করেন, তাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে ছলে বলে কলে কৌশলে বিচিত্র আবরনে যুক্ত। ফলে তাঁরা প্রার্থীদের সরাসরি প্রশ্ন করে, “আপনাকে ভোট দিলে আমি কী পাব?” ভোটে জয়ী হওয়ার জন্য আজগুবি প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন ব্র্যান্ড নিউ প্রার্থীরা। একটা পরিবারের যত সদস্য আছে, সবাইকে কিছু না কিছু দিতে হবে। তাঁর সত্যিই চাকরি পদোন্নতি সাহায্য পাওয়ার যোগ্যতা রয়েছে কি না, তা নিয়ে কথা বলতে গেলেই বিপদ। এমন জোড়াতালি দিয়ে ক্ষমতায় এসে প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির বিস্তর ফারাগ ফেরাস্তাও সীমাহীন চাহিদা মিটাতে পারবে না তাই সরকার তাদের দলীয় প্রার্থির আকাম কুকর্ম অন্ধ হয়ে না দেখার ভান করে ।
আমরা আর কত দিন ভোটের নামে এই প্রহসন সন্ত্রাস, ক্ষমতায় যেয়ে দুর্নিতি, অর্থ পাচার, ব্যাংক লুট দেখব । মেগা প্রজেক্টে হরিলুট মুখ বুজে সহ্য করে যাব? বিকল্পের রাস্তা আমাদেরই খুঁজে বের করতে হবে। এই দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে, সৎ প্রার্থি দরকার। দলীয় প্রতিক বাতিল সহ ভোটগ্রহণ পদ্ধতির অবিলম্বে পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন। দু’টি আধুনিক ও অভিনব পদ্ধতির শরণাপন্ন হওয়া যেতে পারে। অনলাইনে মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটার থেকে নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত পোর্টালে লগ ইন করে ভোট প্রদান করা যেতে পারে। বর্তমানে জনসংখ্যার একটি বড় অংশ স্মার্টফোন ব্যবহারে পারদর্শী। নির্ভয়ে তাঁরা তাঁদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে সক্ষম হবে। নির্দলিয় সারকার ভোট পরিচালনা করবে।
চিরাচরিত ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় যে বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয় হয়, তার থেকেও অনেকটাই মুক্তি পাওয়া যাবে । এ ব্যবস্থায় মাস্তানি গুণ্ডামি লোপ পাবে ।
গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি হল ভোটাধিকার এবং স্বাধীন মতপ্রকাশ। কিন্তু ভোটাধিকার প্রয়োগ যদি শেষ পর্যন্ত নির্বোধ জনগণের সামনে খেল তামাশা হয়ে দাঁড়ায়, তা হলে আর গণতন্ত্রের থাকে কী! নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল থেকে শুরু করে নির্বাচন পর্যন্ত চলে লাগামহীন সন্ত্রাস। এমনকি ভোটের পরেও সে সন্ত্রাসের অবসান হয় না। যে দল যখন ক্ষমতায় থাকে, পুলিশ-প্রশাসনকে কব্জা করে ভিন্ন মত বা দলকে আটকাতে সব রকম অগণতান্ত্রিক কলাকৌশল প্রয়োগ করে। তাই আমাদের দেশে সন্ত্রাস, রক্তপাত আর মৃত্যু নির্বাচনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছে। সর্বশক্তি খাটিয়ে জনবিচ্ছিন্ন দলের অথর্ব লোকটির নামে সিল মেরে বাক্স ভরে পেশি শক্তিধারীরা তাই ভোট নামক জনপ্রিয়তার পরিক্ষায় মানুষ ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে । এখন আমরা নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ার মাধ্যমে, বিশেষ করে ডিজিটাল সামাজিক মাধ্যমের দৌলতে ‘গণতন্ত্র নিধনের মহোৎসব’ ঘরে বসে প্রতিনিয়ত দেখতে পাচ্ছি।
নির্বাচন কমিশনের আশ্বাস, কোর্টের কড়া নির্দেশ, এ সব উপেক্ষা করে গণতন্ত্রের হত্যালীলা চলতেই থাকে। ভোটে সন্ত্রাস, বেনিয়ম এ সব নিয়ে কিছু দিন আলোচনা, তর্কবিতর্ক, এক সময় তা থিতিয়ে যায়। ভোট ‘লুট’ করে ছিন্তাই করে জেতা প্রার্থীরাও ‘নির্বাচিত’ শংসাপত্র নিয়ে দিব্যি কোনও না কোনও পদ আলোকিত করে বেসরমের মত বসে পড়েন। সব দেখে-শুনেও ঠুঁটো জগন্নাত নির্বাচন কমিশন বা আদালতকে আর তেমন টু শব্দ করতে দেখা যায় না। এ ভাবেই চলছে আমাদের আবিষ্কৃত গণতন্ত্র এবং চলবেও।
একজনের বংশীর সুরে হেলা দুলা চলছে দেশের শব কাঠামো।
সরকার ও তাদের চেলা চামুণ্ডারা ধরাকে সরা জ্ঞান করে কি হনু রে তত্তে ভর করে চলছে!! ক্ষমতার উত্তাপে দিশেহারা দলবাজরা যেদিক তাকায় একান্ত অনুগত প্রজারা জি হুজুর শব্দ উচ্চারণের উদগ্র বাসনায় গলা খাকড়া দিয়ে আওয়াজ দিতে সদা প্রস্তুত দেখে । সন্ত্রাসীরা দখল বানিজ্যের বণিক নেতা, চাঁদাবাজ নেতা, দুর্নিতিবাজ নেতার ইশারায় দিন শেষে পকেটে ভাগ পায়।
বিনা পরিশ্রমে পকেটে টাকা আমদানি হলে সেই জাত পায়ে দাড়াতে পারে না। আশা জাগায় ভরসা জাগায় এমন কথা শুনা যায় না। দম্ভের গনতন্ত্র অসীম ক্ষমতার বিরামহীন আস্ফালন উদ্বেগের বার্তা মনে ঘুরপাক খাচ্ছে আমজনতার । জনগনের শাসনই গনতন্ত্র সে কথা জাতি ভুলে যেতে বাধ্য হয়েছে। ক্ষমতায় আসিনরা এক এক জন প্রাচীন সম্ম্রাজ্জের রাজতন্ত্রের বহুদা ক্ষমতার সম্রাট ভয়ঙ্কর প্রতীক। তাদের চাটুকারিরা নির্লজ্জ আবিজাবি সুত্র ধরে নেতাদের তাদের পোষ্যদের পর্যন্ত শুভেচ্ছে বাণীর প্লাবনে ভাসিয়ে দেয় নেট দুনিয়া। ঘুনে ধরা সমাজ দাড়াতে পারবে না ঘুনের লেশমাত্র অবশিষ্ট থাকতে। আপাদামস্তক সংস্কার আমাদের এখন দরকার।
সরকার সত্যের মুখমুখি হতে ডরায় । তাই সত্য প্রকাশের উদ্দত হলে গলাটিপে শ্বাস রোধ করে ধরে। শাসকের বিরোধিতা করাকে অনুগত মিডিয়া দিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহ বলে নির্বিচারে প্রচার চালাচ্ছে । কয়েদ খানায় ভরছে প্রতিবাদি কন্ঠ । কতদিন কতদূর এক পরিবার কেন্দ্রিক শাসন পদ্ধতি চালান যায় । দুর্নিতি গনতন্ত্র, দেশের মানুষের পছন্দমত ভোটোধিকার, মানব্ধিকার, অর্থ পাচার নিয়ে দেশে বিদেশে এখন বাংলাদেশ নিয়ে প্রবল দুর্নামের আলোড়ন । জাতি সঙ্গের ডেমোক্রাসি কাউন্সিল থেকে বাংলাদেশকে বহিষ্কারের চিঠি বিশ্ব মিডিয়ায় ।
বিরোধিরা এককাট্টা নির্দলিয় সরকারের অধিন নির্বাচনের দাবীতে। দু দলের মুখমুখি সমরে গন মাধ্যম নিরব, সুশীল সমাজ মুখে কুলুব এঁটেছে। উচ্ছিষ্ট ভোগী স্বঘোসিত বুদ্ধিজীবী চাপা চালিয়ে যাচ্ছে যার যার দলের পক্ষে । এফ বি সি আই এর সভায় তাজা তাজা বণিক নেতারা যা বললেন তাতে মনে হল তারা সকলে আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য , তৃপ্তির সাথে প্রধানমন্ত্রীর স্থুতি গাইলেন। প্রশ্নাতীত ভক্তি প্রতিযোগীতা করে কে কার আগে স্তুতির ছোপে প্রধানমন্ত্রীর নেক নজরে আসন সংরক্ষিত করতে পারে তার মহড়া দেখাল।
চ্যানেল গুলি আছে সরকারের বন্দনা ডালি সাজিয়ে। বিরোধীদের প্রতিবাদ সমাবেশর তীব্রতা ঘোমটা পরাতে ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায় । বিরোধীদের শক্তি মত্তা জাহিরের জানালা খিড়কি দিতে মোলায়েম কন্ঠে সকল কূটপন্থা জারি থাকে বিলম্ব অনুমতি হাজার শর্ত । পত্রিকা টি ভি চ্যানেল সরকারের অধিনস্থ একান্ত বাধ্যগত ছাত্র বুঝাই যায়। প্রধান বিচারপতিকে দেশ ছাড়া করেছে এক নেতা ঘোষনা দিলেন কি আর বাকি আছে সর্বনাশের।
সংবাদ মাধ্যম নিজেদের ভুমিকা পালন না করে জনতার অনাস্থার সৃস্টি করছে এখন তারা টোপা শ্যালারমত জনতার অবিশ্বাসের দিঘীতে ভাসছে । সরকারের সত্যি ভাল ভাল কাজ প্রচার করলেও এখন তা বিশ্বাস করাতে তাদের বেগ পেতে হচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের দোষ ত্রুটি দুর্নিতি লুটপাট স্বজনপ্রীতিসহ সকল অপকর্ম চোখের আড়াল করতে সংবাদ মাধ্যম মায়ের আচঁলে ঢেকে রাখছে এমন ধারনা উৎপাদন করে যাচ্ছে । বাংলার বানী, দিনকাল, জঙ্কন্ঠ মানুষ ছুয়ে দেখে না পড়েও না। অতি তোষামোদির ফলে পত্রিকা চলার শক্তি হারিয়েছে মনে রাখতে হবে।
নেতারা কর্মিরা চাটুকাররা অনেক পেয়েছে আর কত নিজের বিবেকের বিরুদ্ধে কাজ করে মানুষকে কষ্ট দেওয়া। শাসকের জিগির গাইতে বড় বড় পত্রিকার সম্পাদক সরকার বসিয়েছে। তাদের হাল চাল কর্ম সব ক্ষমতাসিন্দের তোয়াস করা তাদের কর্মে প্রকাশ পায়। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে ঘোড়ার মত হটাত উলটা লম্পপ দিয়ে সোস ফেলে দিবে। ঘোড়া বেশী দুরত্তে দেখতে পায় না তাই দ্রুত গতিতে চলার সময় সামনে খানা খন্দক খাল বিল যখন হঠাত চোখে পড়ে তখন আর ব্রেক করে নিজের দেহ সাম্লাতে পারে না তাই উলটা পিছনে ডিগবাজী খায় ।
অবস্থা এমনি হবে জনগণের জানার অধিকার কার্পেটের নীচে চেপে রাখলে ঘোড়ারমত ডিগবাজী সরকারকে দিতে হবে । নির্লজ্জ তেল মর্দন এমন পরিস্থিতি করবে। সাগরিকা সিনেমায় কেদার দা অনেক আগেই বলে গেছে তেল মারা যার অভভাস সে চরকা পেলেই তেল মারে আপন পর দেখেনা। এরা বাতাশের গতিবিধি দেখে পাল তোলে । তেল চরকায় মারা শুরু করে। গলার সুর অনেকের পরিবর্তন হওয়া শুরু হয়েছে।
সরকার সহি চেস্টা করলে কষ্ট জনগণ মেনে নেয়। কিন্তু নেতা কর্মিদের লুটপাট দলীয় দাপট মানুষের প্রতিহিংসার ক্ষোভ তৈরি করে।
টক শোর উপস্থাপক অনেকে সরকারী দলের নয়া কাডারদেরমত বাকবাকুম রবে দলীয় প্রপাগান্ডা চালান যা শ্রুতি কটু।
সংবাদ মাধ্যম নেতাদেরা নৈতিক শিক্ষার ঘাটতি কেটে উঠতে অনুকরন করতে পারেন অনেক বিশ্বনন্দিত প্রবাদ পুরুষ সম্পাদকের নীতি। অনেক প্রাতঃ সরণীয় সম্পাদক লোভ মোহ ভয় উপেক্ষা করে পৃথিবিতে অনুকরণীয় নজির তৈরি করে রেখেছে। আমেরিকার কথাই ধরুন ।
ভিয়েতনাম যুদ্ধ সংক্রান্ত গোপন নথি যা পেন্টাগন পেপারস নামে পরিচিত । ঐ গোপন নথী প্রকাশ করার দায়ে ওয়াশিংটন পোস্টকে সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে যায় তৎকালিন আমেরিকার সরকার । রিপোর্ট আলোয় আসবে কি না তা নিয়ে সংবাদপত্রের সম্পাদকের মধ্যে বিতর্ক চলে।
দি পোস্টের প্রবাদ প্রতিম সম্পাদক বেন ব্রাডলি ঐ নাজুক পরিস্থিতে মেরুদণ্ড সোজা রেখে সরকারকে ছবক দিয়ে বলেছিলেন ,” ওদের ক্ষমতার লাগাম পরানোর কাজটা তো আমাদের” আমাদের সংবিধানে গণতন্ত্রে আমাদের নিজেদের ভুমিকা যথাযথ পালনের ক্ষমতা দেওয়া আছে সংবাদ মাধ্যমকে । গন মাধ্যমের কাজ শাসকের গুনাগুন করা আর দোষ ত্রুটি ঢেকে চলা নয় বরং দোষ গুলি যথাযথ প্রচারের আলোতে আনা চাই, যাতে গণতন্ত্র সঠিক পথে চলে ।
গণতন্ত্রে সংবাদ পত্রের গুরুত্ব অপরিসীম , সংবাদ মাধ্যমের কাছে প্রত্তাশাও অনেক বেশী। প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে ডাকা হয় চিহ্নিত তোসামোধকারি সুবিধাবাদীদের । তারা মাইক্রোফোন হাতে প্রশংসায় বলে ফেলেন এত উন্নতি কি করে করলেন কি ম্যাজিক বাক্স আপনার আছে । এসব বলবে তো দলীয় নেতারা তেলমারা সাংবাদিকের কাজ না। সংবাসদ সম্মেলন না বলে প্রধানমন্ত্রীর বন্দনা সভা বললে সঠিক হবে। কি বিপরীত নিতি দুই দেশের সাংবাদিকদের মধ্যে।
পছন্দমত নেতা নির্বাচন করার সুজগ দিতে আমেরিকা মাজায় গামছা বেঁধে নেমেছে। মানব ধিকার ভটাধিকার গণতন্ত্র নামে এবার খেল তামাশা কেউ করতে পারবে না । জনতার ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে পারলে ভাল। পশ্চিমারা আমেরিকা জাতিসংগ গুস্রা প্রকাশ করছে । কৌশলে এদের অভিযোগ অনুযোগ সুরাহা করতে হবে দেশের স্বার্থে। এদের যত দূরে রাখা যায় ততই ভাল।
। আমাদের সংবাদ মাধ্যম কি সেই পথে হাটতে পারছে চাইলেও কি পারে ? ঠ্যাঙ ভেঙ্গে দিবে গুঙ্কির্তন ছাড়া বেসুরা কির্তন ছাপালে। জেনে শুনে এই ঝুকি নিতে পারলেই একজন নন্দিত বেন ব্রাডলি বাংলাদেশ পাবে।
লেখক, মেজর জিল্লুর রহমান নিরাপত্তা বিশ্লেষক
[email protected]