Logo
শিরোনাম

আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে বেনজীর সর্বশক্তি নিয়োগ করেছেন

প্রকাশিত:বুধবার ০৫ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২০ এপ্রিল ২০25 |

Image



ডিজিটাল ডেস্ক:


আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে বেনজীর সর্বশক্তি নিয়োগ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।


 আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের গতকাল মঙ্গলবারের এক বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। 


গতকাল এক অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, আমরা পরিষ্কার বলে দিয়েছি, বেনজীর আমাদের দলের লোক নয়। সিনিয়রিটি মেধা নিয়ে সে আইজিপি হয়েছে। আজিজও আমাদের দলের লোক নয়।


 সেনা প্রধান হয়েছে তার যোগ্যতায়, তার সিনিয়রিটি নিয়ে। আমরা তাদের বানাইনি। এখন ভেতরে তারা যদি কোনো অপকর্ম করে, এটা যখন সরকারের কাছে বিষয়টি আসে, তখন এদের বিচার করার সৎ সাহস শেখ হাসিনা সরকারের আছে।



এর পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগে ওনার নাম ছিল কি না জানি না; আওয়ামী লীগকে ডিফেন্ড করার জন্য, ক্ষমতায় রাখার জন্য তিনি সর্বশক্তি নিয়োগ করেছেন।  নির্বাচনের সময় তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন যে, সেই সরকারকে ভোট দেবেন যারা উন্নয়ন করছে, উন্নয়ন করতে যাচ্ছে। 


আমরা উন্নয়নের পক্ষে আছি। তার এই কথাগুলো বলার কথা না কিন্তু কথাগুলো বলেছে। যত রকম করে পারে বিরোধী দলকে নির্যাতন-নিপীড়ন করেছে। বেআইনিভাবে হত্যা করেছে, জুডিশিয়াল কাস্টডিতে হত্যা করেছে, গুম-খুন করেছে এবং মিথ্যা মামলা—এই গায়েবি মামলা সেই সময় তৈরি সব।


বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে মাঠে নামতে দেওয়া হচ্ছে না উল্লেখ করে ফখরুল আরও বলেন, আমাদের লাখ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা; ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।


 ২৮ অক্টোরের পরে দুই-তিন দিনের মধ্যে ২৭ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যখনই আমরা আন্দোলন করি, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় নামি, তখনই তারা একেবারে হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে। পুলিশ-র‌্যাব আক্রমণ করে।



তিনি বলেন, বেনজীর সাহেব ছিলেন পুলিশ বাহিনী, র‌্যাবের প্রধান। সব পত্রিকায় যখন তার অপকীর্তি, চুরি-দুর্নীতি বেরিয়ে আসছে, তখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেব বলছেন, সে কি আওয়ামী লীগ করে?


বিএনপির এ শীর্ষ নেতা বলেন, আরেকজন সাবেক সেনা প্রধান আজিজ। তাকে তারা (আওয়ামী লীগ) অনেককে ডিঙ্গিয়ে, তার দুই ভাই চিহ্নিত সন্ত্রাসী জেনেও সেনা বাহিনীর চিফ করেছিল। তাদের যে কাজ, তারা সেটা করে দিয়েছিল—নির্বাচন পার করে দিয়েছিল।


সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক বক্তব্য উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী কয়দিন আগে বলেছেন সাদা চামড়ার লোকরা নাকি তাকে বলেছে যে, কোনো একটা দেশের এয়ারবেজ করতে দেওয়ার জন্য। সেখানে তাদের জঙ্গি বিমান নামবে। আর বাংলাদেশের একটি অংশ চট্টগ্রাম ও মিয়ানমারকে নিয়ে নতুন একটি খ্রিষ্টান রাষ্ট্র তৈরি করার তারা চেষ্টা করছে।


বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উচিত হবে এই মুহূর্তে জনগণের কাছে এর প্রকৃত ব্যাখ্যা তুলে ধরা। কারা এটা চাইছে? কেন চাইছে? আর আপনারা কেন এতদিন পর প্রকাশ করছেন? এটা আমরা জানতে চাই। কারণ আমাদের বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন।


নতুন শিক্ষা কারিকুলামের মাধ্যমে ধর্মহীন রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করা হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে ফখরুল বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্য বইয়ে এমন এমন কারিকুলাম আনছে যা আমার কালচারের বিরুদ্ধে, আমার কৃষ্টির বিরুদ্ধে, আমার ধর্মের বিরুদ্ধে।


আরও খবর



৪ শতাধিক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করল যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত:সোমবার ০৭ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ২০ এপ্রিল ২০25 |

Image

পাঁচ বাংলাদেশিসহ চার শতাধিক বিদেশি শিক্ষার্থীর স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের অপরাধ ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া। তারা ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছিল। এসব শিক্ষার্থী গত ২ বছর ফিলিস্তিনে ইসরাইলিদের বর্বর হামলা ও হত্যাযজ্ঞবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট (পররাষ্ট্র মন্ত্রী) মার্ক রুবিও এ তথ্য প্রকাশ করেছেন।

 

তিনি বলেছেন, ভিসা বাতিলকৃত বিদেশি শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলন করতে গিয়ে সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছিল। প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের চিহ্নিত করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

 

এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি। এমন কি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হবার পরও ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভ করার অপরাধে চাকরি পাবার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।

 

গত ৭ দিনে চার শতাধিক বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হওয়াদের মধ্যে মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশি পাঁচ জন শিক্ষার্থী। তাদের ২ জনের বাড়ি সিলেট জেলায়, ২ জন ঢাকা ও ১ জন বগুড়া জেলার। এ তথ্য ছড়িয়ে পড়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতি তৈরি হয়েছে।

 

উল্লেখ্য, গত বছর ফিলিস্তিনে ইসরাইলের গণহত্যার প্রতিবাদে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত মিছিলে শতশত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩০ হাজার বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রী স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে লেখাপড়া করছেন।

 

বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরীর দৃষ্টি আর্কষণ করলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আমি নির্দিষ্টভাবে একজন ছাত্রের কথা শুনেছি। তার স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল হয়েছে। তাকে আইনগত সহায়তাও দিচ্ছি। ভিসা বাতিলের বিরুদ্ধে ছাত্রটি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে। প্রাইভেসির কথা বিবেচনা করে তার নাম ও পরিচিতি দিতে পারব না। তবে সময়টি ভালো যাচ্ছে না। বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রী যারা এখানে লেখাপড়া করছেন তাদের সর্তকতার সঙ্গে চলাফেরা করতে হবে। কোনো ধরনের আইন ভঙ্গ করা যাবে না। ক্রাইমে লিপ্ত হওয়া যাবে না। স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ যেন শেষ না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সময় মতো নবায়ন করতে হবে।

 

গেল সপ্তাহে ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বখ্যাত হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ জন ছাত্র ও ২ জন সদ্য গ্রাজুয়েটের ভিসা বাতিল করেছে। তাদের গ্রেফতার করে ডিপোর্টেশনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

 

হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করে শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল ও গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ৪ জনের ভিসা গত শনিবার বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

 

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেবার আগে সরকার বিষয়টি আমাদের নজরেই আনেনি। একইভাবে ইউনিভার্সিটি অব অ্যাক্রন এর ২ জন ছাত্রের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। গেল সপ্তাহে ডিপার্টমেন্ট হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মিনেসোটার স্টেট ইউনিভার্সিটির ৫ জন শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে। তাদের আগামী ৬০ দিনের মধ্যে সেল্ফ ডিপোর্ট হবার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বার্কলি বিশ্ববিদ্যালয়সহ  ক্যালিফোর্নিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮ জন শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে। অনেককে গ্রেফতার করে ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যাডভোকেসি গ্রুপগুলো গণহারে বিদেশি ছাত্রদের ভিসা বাতিল করে তাদের ভবিষ্যৎ জীবন অন্ধকারে ঠেলে দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছেন, ফিলিস্তিনের পক্ষে মিছিল করার অপরাধে এ ধরনের পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের পরিপন্থি।


আরও খবর



জন্মদিনে দুই ছেলের সঙ্গেই সময় কাটালেন শাকিব খান

প্রকাশিত:শনিবার ২৯ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খানের জন্মদিন ছিল গতকাল শুক্রবার। দিনটিকে ঘিরে ছিল নানা আয়োজনও। আর বিশেষ এদিনে বড় ছেলে আব্রাম খান জয় ও ছোট ছেলে শেহজাদ খান বীরের সঙ্গেই কেক কেটে উদযাপন করলেন সিনেমার এই সুপারস্টার। আর সেসব ছবি গতকাল রাতেই ফেসবুক শেয়ার করেছেন অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলী।

অপুর পোস্ট করা ছবিতে দেখা যায়, ছেলে আব্রামের সঙ্গে খুনসুটিতে মেতে উঠেছেন শাকিব খান। নায়কের জন্য আনা হয়েছে একটি সুন্দর লাল কেক। সেখানে আব্রামের তরফ থেকে লেখা- হ্যাপি বার্থডে, মাই কিং-পাপা।

বাবার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ শুধু কেকের ওপরেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। নিজের হাতে একটি ক্যানভাসে বিশেষ উক্তি লিখে রাখে আব্রাম। সঙ্গে থাকে ছোট্ট হাতের আঁকিবুঁকি।

ছবিগুলো শেয়ার করে অপু লিখেছেন, সন্তানের কাছে তার বাবা সুপারস্টার কিংবা সেলিব্রিটি না। বাবা ছেলে এই এক অন্যরকম বন্ধন যাকে বলে আত্মার বন্ধন। শুধুমাত্র দোয়া আর ভালোবাসায় ভরিয়ে দিন। বাবা ছেলে খুনসুটিতে মেতে ছিল জন্মদিনের সারাটা দিন।

এদিকে, বুবলীর পোস্ট করা ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, বীরের সঙ্গে খুনসুটিতে ব্যস্ত শাকিব খান। বীরকে নিয়ে একটি নীল-সাদা রঙের সুন্দর কেক কাটেন শাকিব। কেকের ওপরে বীরের তরফ থেকে লেখা- হ্যাপি বার্থডে ড্যাডি, আওয়ার মহারাজা।

বিশেষ এই মুহূর্তের ছবি শেয়ার করে বুবলী লিখেছেন, পুরো মার্চ মাসটাই বাবা ছেলে নিয়ে নিয়েছে জন্মদিনের সেলিব্রেশনে, মনে হয় যেনো এস কে মাস।

অন্যদিকে, জন্মদিনে শাকিব খানের প্রশংসা করে শুভেচ্ছা জানিয়ে অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলী দুজনেই। অপু যেখানে প্রাক্তন স্বামীকে তুলনা করেছেন বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের সঙ্গে, সেখানে বুবলীর কাছে শাকিব মহারাজা


আরও খবর



আশার আলো দেখছেন রোহিঙ্গারা

প্রকাশিত:শনিবার ০৫ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয়ে থাকা আট লাখ রোহিঙ্গার তালিকা থেকে আংশিক যাচাই-বাছাইয়ে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য যোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করার কথা জানিয়েছে মিয়ানমার সরকার। আরও ৭০ হাজার রোহিঙ্গার চূড়ান্ত যাচাই-বাছাইয়ের অংশ হিসেবে ছবি ও নাম মিলিয়ে দেখার কাজ চলছে। ওই তালিকার বাকি সাড়ে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গার যাচাই-বাছাই কাজও দ্রুত সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মিয়ানমার।

এদিকে, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে ক্যাম্পের অধিকাংশ রোহিঙ্গা আশার আলো দেখছেন। দীর্ঘদিন পর নিজের জন্মভূমিতে ফেরার তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে স্বপ্ন বুনছেন তারা। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার খবরে ইতোমধ্যে অধিকাংশ ক্যাম্পে হুলুস্থুল কাণ্ড বয়ে যাচ্ছে, অনেকে আনন্দ উল্লাসে মেতেছে। তবে উদ্বিগ্ন ও ভয়ের কারণও দেখছেন অনেক রোহিঙ্গা। এছাড়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিজ দেশে ফেরানোর ক্ষেত্রে জটিল সমীকরণও দেখছেন বিশ্লেষকরা।

কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা ফয়েজ উল্লাহ বলেন, দীর্ঘদিন পর একটা সুসংবাদ পেলাম। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে আরাকানে ফিরে যেতে। আরাকান আমাদের দেশ আমাদের চিরস্থায়ী বসবাস সেখানে হবে৷ রোহিঙ্গা ফয়েজ উল্লাহ আরও বলেন, আমাদের সম্মানজনক প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।

রোহিঙ্গা বাসিন্দা আব্দুল মালেক জানান, জন্মভূমি আরাকানে ফিরতে পারবো খবরটি শুনে খুব ভালো লেগেছে। জানি না কবে সেটি কার্যকর হবে। তবে দাবি থাকবে আরাকানে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। জীবন জীবিকার নিশ্চয়তা দিতে হবে। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে আজকেই আমরা (রোহিঙ্গা) মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাই।

রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা সালাউদ্দিন বলেন, আরাকান আমাদের জন্মভূমি, সেখানে ফিরতে পারলে আমাদের সকলের জন্যে ভালো। কিন্তু এই প্রত্যাবাসন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে কি না! সেটিও ভাবতে হচ্ছে। বর্তমানে আরাকান আর্মি ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে লড়াই তীব্র আকার ধারণ করেছে। ইতিমধ্যে মিয়ানমারের অনেক রাজ্য আরাকান আর্মি দখলে নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের (রোহিঙ্গা) প্রত্যাবাসন সঠিক প্রক্রিয়ায় হবে কি না সেটি নিয়েও ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে।

উখিয়া-টেকনাফের স্থানীয় নাগরিকেরা জানান, অনেক হয়েছে এবার রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়া উচিত। তাদের কারণে স্থানীয়রা অনেক হয়রানি, বিড়ম্বনা ও ঝুঁকির মধ্যে আছে। এসব রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজারের বনভূমি, কৃষিজমি, শ্রম বাজার নষ্ট হয়ে গেছে। বেড়ে গেছে খাদ্য পণ্যের দাম। রোহিঙ্গাদের বর্জ্যের কারণে শত শত একর কৃষিজমি অনাবাদি পড়ে আছে। রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রা জন্মসনদ ও জাতীয়তা সনদ নিতে হিমশিম খাচ্ছেন। স্থানীয় এবং দেশকে ঝুঁকিমুক্ত করতে রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমার ফেরত পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।

উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এত সহজ হবে না। কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এই প্রক্রিয়াটি আলো'র মুখ দেখতে পারে। অধিকাংশ রোহিঙ্গা আরাকানে ফিরতে ইচ্ছুক। তবে কিছু এনজিও সংস্থার 'প্রেসক্রিপশন' এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া থামিয়ে দিতে পারে। এতদিন রোহিঙ্গাদের ভুলভাল বুঝিয়ে কিছু এনজিও সংস্থা ফায়দা নিয়েছিল। কারণ রোহিঙ্গারা যতদিন বাংলাদেশে থাকবে, ততদিন তাদের (এনজিও) লাভ। দেশ এবং কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ রক্ষায় দ্রুত সময়ে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হোক। তারা যতদিন থাকবে, ততদিন বাংলাদেশ ঝুঁকির মধ্যে থাকবে বলে মনে করেন এই জনপ্রতিনিধি।

বাংলাদেশের একজন সাবেক কূটনীতিক মুন্সী ফয়েজ আহমদ জানান, রোহিঙ্গা ইস্যুতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ইতিবাচক অগ্রগতি। তবে, এখনই কোনো উপসংহারে পৌঁছানো উচিত হবে না বলে মনে করছেন তিনি। নিঃসন্দেহে এটি একটি পজিটিভ ডেভেলপমেন্ট। কিন্তু, এর মধ্য দিয়ে কনক্লুসিভ ডেভেলপমন্টে পৌঁছানো সহজ হবে না। কারণ রোহিঙ্গাদের আবাসভূমি ও রাখাইনের বর্তমান পরিস্থিতি এখন ভিন্ন। সময়টা একটু জটিল। রাখাইন এখন প্রধানত আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। সেখানে জান্তা সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে। ফলে, জান্তার তৎপরতার পাশাপাশি অন্যদের সম্পৃক্ততা জরুরি। যেহেতু এক লাখ আশি হাজার রোহিঙ্গার একটা আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি মিললো, আজ হোক কাল হোক প্রত্যাবাসনের জন্য একটা প্রামাণ্য দলিল হিসেবে কাজ করবে এই স্বীকৃতি। তবে, রাখাইনে জান্তা বাহিনী নিয়ন্ত্রণ ফিরে না পেলে, সেগুলো নিছকই দলিল হয়েও থেকে যেতে পারে। আর যদি জান্তা বাহিনী বা কেন্দ্রীয় সরকার কখনো নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়ও, স্থানীয় প্রশাসনে রাখাইনদের আধিপত্য থাকবেই। সেক্ষেত্রে, তাদের সঙ্গেও একটা বোঝাপড়া কিংবা আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে বলে মনে করেন সাবেক এই কূটনীতিক।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব নয়। রাখাইনের পরিস্থিতি অত্যন্ত অস্থিতিশীল, যেখানে নিরাপত্তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। সম্প্রতি জাতিসংঘের মহাসচিবও বলেছেন, রাখাইনে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই প্রত্যাবাসনের কথা বিবেচনা করা হবে। এখন সেখানে রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য বাড়িঘর নেই। দ্বিতীয়ত, যেসব এলাকায় রোহিঙ্গাদের বসতি ছিল, সেসব এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে? কখন, কীভাবে, কার ক্লিয়ারেন্সে তা সম্ভব হবে এসবই অনিশ্চিত।

সরকার প্রধানের দফতর জানিয়েছে, শুক্রবার ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে এক বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সঙ্কট ও সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমানকে এ তথ্য জানান মিয়ানমারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উ থান শিউ। বাংলাদেশ ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ছয়টি ধাপে ওই আট লাখ রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারকে দিয়েছিল।

প্রধান উপদেষ্টার দফতর বলছে, মিয়ানমার প্রথমবারের মতো ‘প্রত্যাবাসনের যোগ্য’ রোহিঙ্গাদের এমন তালিকা দিল, যা দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গা ঢলের শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট। এরপর কয়েক মাসের মধ্যে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে ওই এলাকার ক্যাম্পে বসবাস করছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।

বাংলাদেশ সীমান্ত খুলে দেওয়ার পর থেকে কক্সবাজার ও উখিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বাঁশ আর প্লাস্টিকের খুপড়ি ঘরে বসবাস শুরু করে রোহিঙ্গারা। উখিয়ার কুতুপালং পরিণত হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে।

আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০১৭ সালের শেষ দিকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয় মিয়ানমারের অং সান সু চি সরকার। ওই বছর সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতেও সই করে।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা চলার এক পর্যায়ে ২০১৯ সালে দুই দফায় প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু মিয়ানমার সরকারের প্রতিশ্রুতিতে রোহিঙ্গারা আস্থা রাখতে না পারায় সেই চেষ্টা ভেস্তে যায়।

এরপর আসে কোভিড মহামারী; রোহিঙ্গাদের ওপর থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগেও ঢিল পড়ে। বিশ্বজুড়ে সেই সংকটের মধ্যেই ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সু চির সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেন সামরিক জান্তা জেনারেল মিন অং হ্লাইং। তাতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় আসে নতুন ধাক্কা।

এর মধ্যে চীনের মধ্যস্থতায় ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগের অংশ হিসেবে কয়েকবার রোহিঙ্গাদের ফেরানোর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের যুদ্ধের তীব্রতার মধ্যে প্রত্যাবাসনের আলোচনা কমে আসে। উল্টো রাখাইনে যুদ্ধের কারণে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরু হয়।

এর মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে আরও ৮০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের তথ্য দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

মিয়ানমারের জাতিগত সশস্ত্র সংঘাতের মধ্যে বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া সব এলাকা বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি দখলে চলে যাওয়ার মধ্যে নেপিদোর সঙ্গে যোগাযোগেও ভাটা পড়ে ঢাকার।

এর মধ্যে গত ১৪ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কক্সবাজারে গিয়ে রোহিঙ্গাদের কষ্ট নিজের চোখে দেখেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে তিনি সেদিন ইফতারও করেন।

প্রত্যাবাসনই যে রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র সমাধান, সে কথা তুলে ধরে জাতিসংঘ প্রধান সেদিন বলেন, “শেষমেষ মিয়ানমারেই সমাধান পেতে হবে আমাদের। এখানে থাকা সব শরণার্থীর স্বেচ্ছা, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ তৈরি না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্ষান্ত হব না।


আরও খবর



ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়াতে চায় না

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়ানোর ইচ্ছা নেই ভারতের। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝে ভারতের একাধিক সরকারি সূত্র এমন দাবি করেছে।১৭ এপ্রিল ভারতের ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ঢাকা বাণিজ্য বিষয়ক যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটির বদলে কোনো পাল্টা ব্যবস্থা দিল্লি হয়ত নেবে না বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

ভারতীয় সরকারি সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিজেদের বিমানবন্দর ও স্থল বন্দরের জট কমাতে বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের কোনো প্রভাব পড়বে না বলে ভারত সরকার আশ্বস্ত করেছে।

যদিও দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যমে এর আগে বেশ ফলাও করে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ভারতের সেভেন সিস্টার্স নিয়ে মন্তব্য করার পর ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে তাদের সরকার।

টাইমস অব ইন্ডিয়া দাবি করেছে, ভারত সরকার ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের আগেই গত মার্চ মাসে বাংলাদেশ তিনটি বন্দর বন্ধ ও স্থল বন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যদিও সুতা আমদানি সংক্রান্ত নির্দেশনা কেবলই গত সপ্তাহে জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার।

এছাড়া গত জানুয়ারিতে বেনাপোল কাস্টমস হাউজে বাংলাদেশ সতর্কতা বাড়ানোর যে ঘোষণা দিয়েছিল সেটিও দুই দেশের বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত করতে করা হয়েছিল বলে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ মনে করে বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

‘ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত করতে বাংলাদেশ পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্য শুরু করেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান ট্রেডিং কর্পোরেশনে মাধ্যমে ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করা হয়েছে’- উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।


আরও খবর



বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে বড় ধাক্কা

প্রকাশিত:শনিবার ০৫ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প দেশের মোট রফতানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি জোগান দেয় ও প্রায় ৪০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে। এ ছাড়া দেশের জিডিপির প্রায় ১০ শতাংশ এ শিল্প থেকে আসে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ নতুন শুল্ক দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের এ বিপর্যয় ভারতের জন্য সুযোগ তৈরি করতে পারে।

বৃহস্পতিবারের ঘোষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন, যা এশিয়ার এ স্বল্পোন্নত দেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি খাতকে কঠিন সংকটে ফেলতে পারে।

সকালে এ ঘোষণা শুনে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার শাহিদুল্লাহ আজিম বলেন, আমরা জানতাম যে কিছু একটা আসছে, কিন্তু এত বড় ধাক্কা আসবে তা কল্পনাও করিনি। এটি আমাদের ব্যবসার জন্য ও হাজার হাজার শ্রমিকের জন্য ভয়ংকর খবর।

শাহিদুল্লাহ আজিমের প্রতিষ্ঠান উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন খুচরা বিক্রেতাদের জন্য পোশাক সরবরাহ করে।

তিনি জানান, এ নতুন শুল্কের কারণে বিদেশি ক্রেতারা বিকল্প বাজারের দিকে ঝুঁকতে পারে, যা বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানকে দুর্বল করবে।

বাংলাদেশের বাজার ও অর্থনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের এ শুল্কনীতির প্রভাব দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

ট্রাম্পের ঘোষণার পরপরই বাংলাদেশের পোশাক শিল্প উদ্যোক্তারা সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন। বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) একজন প্রতিনিধি বলেছেন, আমরা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি ও তারা বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে দেখছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশকে এখন কৌশলগত পদক্ষেপ নিতে হবে। সবার আগে প্রয়োজন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা বাড়ানো। সেই সঙ্গে বিকল্প বাজার খোঁজা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন ও মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি বাড়ানোর কৌশল নিতে হবে। আবার রপ্তানিকারকদের জন্য সরকারকে বিশেষ সহায়তা প্রদান করতে হবে, যাতে তারা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে।

বাংলাদেশের পোশাক শিল্প নেতারা বলছেন, এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার, ব্যবসায়ী ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অংশীদারদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় প্রয়োজন।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বিষয়ক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি ও আশা করছি যে আলোচনা এ শুল্ক ইস্যু সমাধানে সহায়ক হবে।

পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ইভিন্স গ্রুপের প্রধান আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী বলেন, গত বছর বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার পর থেকেই মার্কিন ক্রেতারা ভারতকে বিকল্প হিসেবে দেখছিল। এখন নতুন শুল্কের কারণে এ প্রবণতা আরও বাড়বে।

ভারতীয় পোশাক রপ্তানির ওপর ট্রাম্পের শুল্ক হার ২৭ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, যা বাংলাদেশের তুলনায় কম।

এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ৩০টি পোশাক ব্র্যান্ড বাংলাদেশ থেকে ভারতমুখী হওয়ার পরিকল্পনা করছে, যা বাংলাদেশের জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানির মাত্র ৬-৭ শতাংশ আসে ভারত থেকে, যা বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের তুলনায় কম। তবে নতুন পরিস্থিতিতে ভারত এই বাজারে আরও বড় অংশ দখল করতে পারে।


আরও খবর