Logo
শিরোনাম

বাংলাদেশে শেখ হাসিনার কোনো জায়গা হবে না

প্রকাশিত:বুধবার ৩০ অক্টোবর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২১ মে ২০২৫ |

Image

বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কোনো জায়গা হবে না বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে (এফটি) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। বুধবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে

তিনি বলেন, তারা জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করেছে, তারা (রাজনৈতিক) মেকানিজম তৈরি করেছে, তারা নিজ স্বার্থে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করেছে। নিশ্চিতভাবেই স্বল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে তার (শেখ হাসিনা) কোনো জায়গা হবে না, আওয়ামী লীগের কোনো জায়গা হবে না

ড. ইউনূস বলেছেন, এখনি ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইবে না সরকার। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ তার বড় প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক উত্তেজনা এড়াতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলার রায় ঘোষণার পর ভারতের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। আমি মনে করি না যে, রায় হওয়ার আগে এটা করার দরকার আছে

প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সম্ভবত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে, তবে অন্তর্বর্তী সরকার দলটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে না, কারণ এটি কোনো রাজনৈতিক সরকার নয়। ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতির ভিত্তিতেই নেওয়া হবে

আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এ বিষয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাদেরকেই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক স্থান নির্ধারণ করতে হবে

এ সময় ড. ইউনূস জানান, আমার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার বা রাজনৈতিক দল গঠনের কোনো ইচ্ছা নেই। সরকার এখন পর্যন্ত নির্বাচনের রূপরেখাও চূড়ান্ত করেনি। আমাদের কাজ সবকিছু স্বাভাবিক করা এবং সংস্কার সম্পন্ন করা। নির্বাচনের সব প্রস্তুতি শেষ হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করব

শেখ হাসিনাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার পর সরকার হাসিনাকে ফেরত চাইবে বলে জানিয়েছেন ড. ইউনূস

তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলার রায় ঘোষণার পর ভারতের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। আমি মনে করি না যে, রায় হওয়ার আগে এটা করার দরকার আছে

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ড. ইউনূসের সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রায় ৮০০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে হিন্দুদের ওপর ব্যাপক নৃশংসতা নিয়ে ভারত যে অভিযোগ করছে, তার কোনো সত্যতা নিশ্চিত করেনি মানবাধিকার সংস্থাগুলো

ড. ইউনূস ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, হিন্দুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার কিছু ঘটনা ঘটেছে এবং খুব অল্প সংখ্যক প্রাণহানি হয়েছে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, তাদের ধর্মের ভিত্তিতে নয়, আওয়ামী লীগের অনুসারী হিসেবে টার্গেট করা হয়েছে

তিনি বলেন, (আগস্টে হামলার শিকার) অধিকাংশ হিন্দু আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলেন। এটাকে ভিন্ন রূপ দেওয়া হচ্ছে। আমরা প্রতিবেশী। আমাদের একে অন্যের প্রয়োজন। আমাদের মধ্যে অবশ্যই সবচেয়ে ভালো সম্পর্ক থাকতে হবে, যেমনটি দুই প্রতিবেশীর থাকা উচিত

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারত সরকার জানিয়েছে, তিনি এখন দিল্লিতেই অবস্থা করছেন


আরও খবর



শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার বিচার শুরু

প্রকাশিত:বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 |

Image

চাঞ্চল্যকর শিশু আছিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল চার্জ গঠন করেছে। আগামী ২৭ এপ্রিল শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত। এর মাধ্যমে মামলাটির বিচারকাজ শুরু হলো।

২৩ এপ্রিল সকালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি হয়।

রাষ্ট্রপক্ষকে আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী গণমাধ্যমকে বলেন, প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে মামলার যেসব ডকুমেন্টস আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে সন্তুষ্ট হয়ে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছেন।

তিনি জানান, ওই আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে তিনি নিজেই আজ এ মামলার শুনানিতে অংশ নিয়েছেন।

জেলার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গিয়ে শিশুটি ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয় বলে পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়। গত ৬ মার্চ যখন শিশুটিকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল তখন তার জ্ঞান ছিল না। পরে এ নিয়ে দেশজুড়ে আলোড়ন হলে তাকে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আনা হয়। সেখানেই ১৩ মার্চ শিশুটি মারা যায়।

গত ৮ মার্চ শিশুটির মা চারজনকে আসামি করে ধর্ষণ মামলা করেন। পরে তার সঙ্গে হত্যার অভিযোগও যুক্ত হয়। মামলার আসামিরা এখন কারাগারে আছেন।


আরও খবর



ফুলবাড়ীতে গ্রাম আদালত বিষয়ক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন

প্রকাশিত:শনিবার ১৭ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২১ মে ২০২৫ |

Image

উত্তম কুমার মোহন্ত ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম):

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে গ্রাম আদালত বিষয়ক তিনদিনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। উপজেলার ভাঙ্গা মোড়, শিমুলবাড়ি ও বড়ভিটা এই তিন ইউনিয়নের মোট ৩৬ জন ইউপি সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য এ প্রশিক্ষণে অংশ গ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ গ্রাম আদালত সক্রিয় করণ(তৃতীয় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সরকার বিভাগ ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসন এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করেন। শনিবার ১৭ (মে) সকাল সাড়ে দশটায় উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিক ভাবে এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম। এসময় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সোহেলী পারভীন, উপজেলা সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আব্দুর রহমান, বিভিন্ন ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ সহ-বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদ কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রশিক্ষণটি পরিচালনা করেন গ্রাম আদালত সক্রিয় করণ (তৃতীয় পর্যায়) প্রকল্পের রাজার হাট (কুড়িগ্রাম) উপজেলার সমন্বয়কারী রুকুনুজ্জামান। আয়োজকরা জানান,স্থানীয় বিরোধ নিষ্পত্তিতে গ্রাম আদালতের ভূমিকা কার্যকর ভাবে বাস্তবায়নের জন্য ইউপি সদস্যদের দক্ষ করে করে তুলতেই এ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।


আরও খবর



দ্রুতই শিশু আছিয়া হত্যা মামলার রায় পাবো

প্রকাশিত:সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 |

Image

আওয়ামী লীগ সরকার ছিল ফ্যাসিস্ট। তারা বিচার বিভাগ নিয়ে কি করছে না করছে সেটি বিষয় নয়। আমরা উচ্চ আদালতের স্বাধীনতার ওপর অনেক বেশি শ্রদ্ধাশীল বলে মন্তব্য করেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ।

এসময় তিনি শিশু আছিয়া হত্যার ঘটনায় নিম্ন আদালতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিচার করা হচ্ছে বলেও জানান। তিনি বলেন, খুব একটা ব্যত্যয় হবে। মনে হয় আমরা খুব দ্রুত শিশু আছিয়ার ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় পাবো।

জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপন উপলক্ষে সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

সম্প্রতি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে একটি সংগঠন সংবাদ সম্মেলন করে মেজর সিনহা মামলায় দীর্ঘসূত্রতা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন একইসঙ্গে অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনার জন্য এক মাসের আলটিমেটাম দিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, মেজর সিনহা হত্যা একটা পাশবিক হত্যা ছিল। এতে আমরা সবাই বিচার চেয়েছি। এটাও বুঝতে হবে কোনো মামলা উচ্চ আদালতে বা হাইকোর্টে থাকে তখন এটা সম্পূর্ণভাবে হাইকোর্টের এখতিয়ারভুক্ত বিষয়। এটা কার্যতালিকায় কত নম্বরে আসবে, কবে বিচার হবে সেটা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে হাইকোর্ট ঠিক করে। এখানে আইন মন্ত্রণালয়ের কোনো ভূমিকা রাখার অবকাশ নেই।

তিনি বলেন, কাউকে দোষী করার আগে ভালো করে জেনে করতে হয়। আপনাদের মতো আমিও আশা করি যাতে এটার বিচার দ্রুত সম্পন্ন হয়। যারা দোষী সাব্যস্ত হবেন তাদের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি হয়।

আওয়ামী লীগের আমলের মতো বিচার বিভাগের ওপর একটা হস্তক্ষেপের কথা আপনারা বলেছেন, আপনাদের কি সেটা নেই সেটা বলতে চাচ্ছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, উচ্চ আদালতের ওপর আমাদের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই। এখন আগের সরকার কি করেছে, তারা তো একটা ফ্যাসিস্ট সরকার ছিল তাদের তো কোনো নীতি ছিল না। তারা চিফ জাস্টিসকে পর্যন্ত গলা ধাক্কা দিয়ে দেশ থেকে বের করে দিয়েছে। আমরা সে সরকার না। উচ্চ আদালতের স্বাধীনতার ওপর আমরা অনেক শ্রদ্ধাশীল।

আছিয়া হত্যা মামলা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আছিয়া হত্যা মামলার বিচার কাজ গত বুধবার শুরু হয়েছে। অভিযোগপত্র পেতে একটু দেরি হয়েছে। এটা ছাড়া তো বিচার কাজ শুরু হতে পারে না। আগামী বুধবার হবে ষষ্ঠ কার্যদিবস এবং আগামী রোববার হবে সপ্তম কার্যদিবস। আমি সপ্তম কার্যদিবসের মধ্যে শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলাম। এটা নিম্ন আদালতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিচার করা হচ্ছে। আমার মনে হয় না খুব একটা ব্যত্যয় হবে। আমার মনে হয় আমরা দ্রুত একটা রায় পাবো।


আরও খবর



মাভাবিপ্রবির কৃষ্ণচূড়া লেন প্রেম, প্রকৃতি আর প্রশান্তির অনন্য প্রতীক

প্রকাশিত:বুধবার ০৭ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 |

Image

মো: হ্নদয় হোসাইন, মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি :

গ্রীষ্মকাল মানেই বাংলার প্রকৃতিতে রঙের বিস্ফোরণ। সেই রঙিন উৎসবের প্রাণভোমরা যেন কৃষ্ণচূড়া ফুল। আর এই কৃষ্ণচূড়ার জাদুতে মোড়ানো একটি পথ মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) প্রাণকেন্দ্রে দাঁড়িয়ে আছে ‘কৃষ্ণচূড়া লেন’ নামে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমপ্লেক্স থেকে দ্বিতীয় একাডেমিক ভবনের দিকে যেতে যে পথ ধরে প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী, শিক্ষক আর কর্মচারী চলাচল করেন, সেই পথের দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো যেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জীবন্ত গহনা। লেনটির পাশে বয়ে গেছে শান্ত এক খাল, যার জলে প্রতিবিম্বিত হয় চারপাশের সবুজ আর ফুলের রঙিন ছটা।এখন গ্রীষ্মে গাছগুলোর ডালপালায় লাল-কমলালার এক অভাবনীয় দ্যুতি ছড়িয়ে পড়েছে। মনে হয়, আকাশ ভেঙে যেন আগুনরাঙা ফুলের বৃষ্টি নেমেছে।

এই রাস্তাটির নাম ‘কৃষ্ণচূড়া লেন’ হলেও এর পেছনের গল্প আরও গভীর এবং আবেগঘন। ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অষ্টম ব্যাচের কিছু শিক্ষার্থী নিজেদের উদ্যোগে ও অর্থায়নে রোপণ করেন কৃষ্ণচূড়ার চারা। সময়ের সঙ্গে সেই চারাগুলো বড় হতে থাকে, শাখা ছড়ায়, আর গ্রীষ্মকালের আগমনে ফুটে ওঠে কৃষ্ণচূড়ার ঝাঁকড়া রূপ। ধীরে ধীরে সেই রাস্তাটি রূপ নেয় এক অনন্য প্রাকৃতিক লেনে। শিক্ষার্থীরাই ভালোবেসে রঙিন অক্ষরে লেখেন ‘কৃষ্ণচূড়া লেন’ নামটি, যা আজ মাভাবিপ্রবির সাংস্কৃতিক পরিচয়ের অংশ হয়ে উঠেছে।

প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এই পথে হেঁটে যান, কিন্তু হাঁটার অভিজ্ঞতা কখনও একঘেয়ে নয়। প্রতিটি পদক্ষেপ যেন নতুন এক আবিষ্কার। পাতার ফাঁক গলে সূর্যের সোনালি রশ্মি ঝরে পড়ে ফুলে, রঙিন ছায়ায় ভেসে যায় পথ। এখন গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ওপরে তাকালে মনে হয়, লাল ফুলে মোড়া এক বিশাল তোড়া মাথার ওপর ঝুলে আছে।


টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান রাকিব বলেন, এই পথ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মনে হয়, প্রকৃতি তার নিজস্ব ভাষায় কথা বলছে। এই রঙিন দোল খাওয়া ফুলগুলোর সৌন্দর্য হৃদয়ে প্রশান্তি এনে দেয়।

শুধু শিক্ষার্থীরা নয়, মাভাবিপ্রবির এই কৃষ্ণচূড়া লেন পর্যটকদের কাছেও এক বিশেষ আকর্ষণ। অনেকেই পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে আসেন এখানে। ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা পর্যটক ঊর্মি আক্তার বলেন, আমি যখন প্রথম এই লেন দিয়ে হেঁটে যাই, মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। কৃষ্ণচূড়ার লাল ফুল যেন প্রকৃতিকে এক জীবন্ত ক্যানভাসে রূপ দেয়। আমার কাছে এই ফুল ভালোবাসার প্রতীক, এক রকম আবেগেরও।

অর্থনীতি  বিভাগের শিক্ষার্থী কামাল  বলেন, ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশে নানা ফুল ফুটলেও কৃষ্ণচূড়ার জন্য যে বিশেষ এক প্রতীক্ষা থাকে, তা মনে করিয়ে দেয়। এই গ্রীষ্মে কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙে সেজেছে পুরো ক্যাম্পাস, আমার কাছে এখন মনে হয় উৎসব শুরু হয়েছে প্রকৃতির আপন ঘরে।”

এ যেন শুধুই ফুল নয়, একটি আবেগ, একটি গল্প, এবং প্রকৃতিপ্রেমের প্রতিচ্ছবি। কেউ কেউ বলেন, কৃষ্ণচূড়া লেন হলো ‘ক্যাম্পাসের হৃদস্পন্দন’। বসন্ত শেষে গ্রীষ্ম এসেছে আগমনী বার্তা নিয়ে, কৃষ্ণচূড়া লেন হয়ে উঠেছে ভালোবাসার বার্তাবাহক। এখানে প্রেমিক-প্রেমিকার দেখা হয়, বন্ধুরা বসে আড্ডায় মেতে ওঠে, কেউ হয়তো একা হেঁটে নিজের ভেতরের ক্লান্তিকে প্রকৃতির কোলে রেখে আসে।

পর্যটক ইউসুফ সরকার বলেন, “এই ক্যাম্পাসে আমি মাঝে মাঝে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসি, শুধু এই কৃষ্ণচূড়ার রঙ দেখার জন্য। আমার কাছে এটি শুধু একটা রাস্তা নয়, বরং এটি পুরো মাভাবিপ্রবির সবচেয়ে মুগ্ধকর জায়গা।”

জীবনের ব্যস্ততা, ক্লান্তি আর যান্ত্রিকতার মাঝেও এই পথটি যেন এক নীরব আশ্রয়। কৃষ্ণচূড়ার ছায়ায় হাঁটা মানে প্রকৃতির সঙ্গে আত্মার এক নিবিড় সংযোগ। অনেক শিক্ষার্থীরই প্রিয় স্মৃতি গাঁথা এই লেনকে ঘিরে—ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে হাঁটা, কবিতা লেখা, কিংবা নীরবে কারও অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা।

মাভাবিপ্রবির কৃষ্ণচূড়া লেন আজ আর কেবল কিছু গাছের সমষ্টি নয়, এটি হয়ে উঠেছে একটি  সৌন্দর্যের প্রতীক, যেখানে প্রকৃতি তার শিল্পশৈলীর শ্রেষ্ঠ উদাহরণ গড়ে তুলেছে। ফুলে ফুলে গড়ে ওঠা এই লেন যেন জানিয়ে দেয়—প্রকৃতির কোলে এখনও রয়ে গেছে ভালোবাসা, প্রশান্তি আর কিছুটা স্বপ্নময়তা। আর তাই, মাভাবিপ্রবির কৃষ্ণচূড়া লেন এখন শুধু একটি রাস্তার নাম নয়, এটি হয়ে উঠেছে সৌন্দর্যের এক জীবন্ত নিদর্শন।


আরও খবর



মহাসড়কে তিন চাকার দাপট, শঙ্কা বাড়ছে দুর্ঘটনার

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 |

Image

সিরাজগঞ্জ মহাসড়কের ১০৫ কিলোমিটার অংশে তিন চাকার অবাধে ছুটে চলছে সিএনজি, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ভ্যান। এ কারণে বেড়েই চলেছে দুর্ঘটনা। এতে ঝরে যাচ্ছে তাজা প্রাণ। আবার অনেকে আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করে অভিশপ্ত জীবন পার করছেন। মহাসড়কে কাগজে কলমে তিন চাকার বাহন চলাচল নিষিদ্ধ থাকলেও বাস্তবে এই চিত্র উল্টো। ফলে সমস্যায় পড়ছেন বাস, ট্রাকসহ বড় যানবাহনের চালকরা।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানা সূত্রে জানা গেছে, গত দুই মাসে সিরাজগঞ্জ মহাসড়কে প্রায় ২৫টি দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় বেশ কয়েকজন গুরুতর আহতও হয়েছেন।

মহাসড়কে দেখা যায়, অবাধে চলছে সিএনজি, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ভ্যান। আবার কোথাও কোথাও প্রকাশ্যেই চলছে নছিমন ও ভটভটি। জমি চাষের ট্রাক্টরের পেছনে ট্রলি লাগিয়েও মহাসড়ক দাবড়ে বেড়াতে দেখা গেছে।

মহাসড়কের নলকা ও ভুইয়াগাঁতী অংশে দেখা দেখা গেছে, দ্বিমুখী লেনেই উল্টো পথে চলছে এই তিন চাকার যান। এ কারণে বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লরিসহ বড় গাড়িগুলোর চালকদের হঠাৎ ব্রেক কষে গতি নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে।

জানা গেছে, ২০১৫ সাল থেকে দেশের মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এরপর ২০১৯ সালে উচ্চ আদালত মহাসড়কে তিন চাকার বাহন না চালানোর নির্দেশ দেয়। এরপর একই বছরের আগস্ট থেকে মহাসড়কে তিন চাকার যান নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। আজও এই সিদ্ধান্ত শুধু কাগজে-কলমে আছে বাস্তবে নেই।

নাটোরগামী ট্রাকচালক হামিদ সরকার বলেন, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহনের দৌরাত্ম্যে তাদের অনেক সমস্যা হয়। ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয় তাদের।

সিরাজগঞ্জ থেকে পাবনার পথে চলাচলকারী একটি পরিবহনের চালক হামিদুল ইসলাম বলেন, নিষিদ্ধ এসব যান হঠাৎ করেই সংযোগ সড়ক থেকে মহাসড়কে উঠে পড়ে। তখন জরুরি ব্রেক করলে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। আমরা এই সমস্যার সমাধান চাই।

সিরাজগঞ্জের আইয়ুব আলী নামক একজন শিক্ষক জানান, কদিন আগে ঢাকা-পাবনা মহাসড়কের পূর্বদেলুয়া ব্রিজ এলাকায় ট্যাংক লরি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে শরিফুল ইসলাম (৩৫) ও আব্দুল মমিন (৩৫) নামের দুজন নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হয়েছিলেন আরও চারজন। সড়কে তিন চাকার অরাজকতার কারণেই এসব দুর্ঘটনা ঘটছে বলে তিনি দাবি করেন।

এ প্রসঙ্গে হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ বলেন, পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাঝে মাঝে তিন চাকার যান মহাসড়কে উঠে যায়। তারপরও আমরা এসব নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল শূন্যের কোটায় আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।


আরও খবর