Logo
শিরোনাম

বাংলাদেশকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল আরব আমিরাত

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

শারজাহতে রূপকথার মতো রাত নেমে এলো যেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে প্রথমবার বাংলাদেশকে হারের স্বাদ দিলো সংযুক্ত আরব আমিরাত। সেটাও ২০৫ রান তাড়া করে। বাংলাদেশ এই প্রথম দুইশ রানের লক্ষ‍্য দিয়ে হারল কোনো ম‍্যাচে।

রুদ্ধশ্বাস ম্যাচের ভাগ্য পেন্ডুলামের মতো দুলছিল। শেষ দৃশ্যে বাজিমাত স্বাগতিক দলের। সফরকারী বাংলাদেশও প্রতিপক্ষকে জয় উপহার দিতে কম চেষ্টা করেনি! গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ওভার থ্রো থেকে চার রান, ম্যাচজুড়ে বাজে বোলিং কিংবা ফিল্ডিং মিস বাদ যায়নি কিছুই।

শেষ দুই ওভারে আমিরাতের প্রয়োজন ছিল ২৯ রান। আক্রমণে এসে প্রথম বলেই উইকেট শরিফুলের। তবে এরপরের গল্পটা একরাশ হতাশার। ৫ বলে গুণে গুণে খরচ করেছেন ১৭ রান। ম্যাচ ঘুরতে শুরু করে ১৯ তম ওভারের ৫ম বলে। ছক্কা মেরে দেন হায়দার আলি। পরের বলে অনায়াসে রান আউট হতে পারতেন তিনি। কিন্তু শরিফুল থ্রো রাখতে পারেননি স্টাম্পে, উল্টো হয়ে যায় বাউন্ডারি!

শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১২ রান। তানজিম সাকিব শুরু করেন ওয়াইড দিয়ে। হায়দার সিঙ্গেল নেওয়ার পর ফুলটসে ধ্রুভ পারাশারের ব‍্যাটে ছক্কা হজম করেন তরুণ পেসার।

৪ বলে তখন স্বাগতিকদের প্রয়োজন ৪ রান। পরাশারকে বোল্ড করে আশা জাগান তানজিম। পরের বলে নতুন ব‍্যাটসম‍্যান মাতিউল্লাহ নেন সিঙ্গেল। এক নো বলে সমীকরণ আরও সহজ হয়ে যায় আরব আমিরাতের। পরের বলে দুই রান নিয়ে দলকে অভাবনীয় জয় এনে দেন হায়দার। ঠিক সময়ে তাওহিদ হৃদয় থ্রো করলে টাই করার সুযোগ হয়তো পেতে পারত বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ২ উইকেটের হারে ৩ মাচের সিরিজে ফিরল ১-১ সমতা। আগামী শনিবার হবে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি।

বাংলাদেশের দেওয়া ২০৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ ওয়াসিমের ৮২ রানের ফলে মূলত জয় সহজ হয়ে যায় আমিরাতের। পরবর্তীতে শেষ দিকে হায়দার আলির ৬ বলে ১৫ রানের কার্যকরী ইনিংসে ভর করে সিরিজে সমতায় ফিরল আমিরাত দল।

বড় রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে এদিন বাংলাদেশি বোলারদের ওপর শুরু থেকেই তাণ্ডব চালাতে থাকেন আমিরাতের দুই ওপেনার ওয়াসিম-জোয়াইব। নাহিদ রানা-তানজিম সাকিবরা যেন কিছুতেই কূল কিনারা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। তবে ৩৮ রানে থাকা অবস্থায় জোয়াইবকে ফিরিয়ে শুরুর ব্রেক-থ্রু এনে দেন স্পিনার তানভীর ইসলাম।

তখনো ব্যাট হাতে রীতিমত চার-ছয়ের ফুলঝুরি ছোটাতে থাকেন ওয়াসিম। পরে শরিফুলের বলে ৮২ রানে বিদায় নিলে টাইগারদের দিকে ঝুঁকে যায় ম্যাচ। পরবর্তীতে ম্যাচের গতিপথ কেবল পেন্ডুলামের মতো পরিবর্তন হয়েছে। শারজাহ স্টেডিয়ামজুড়ে শেষ ওভার পর্যন্ত ছিল অন্যরকম আমেজ। যে আমাজে শেষ হাসি হেসেছে আমিরাতের দর্শকরা।

এর আগে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০৫ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৯ রান করেন তানজিদ তামিম। পাওয়ার প্লেতে এদিন কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬৬ রান করে বাংলাদেশ। প্রায় এক বছর আর ১৪ ইনিংস পর টি-টোয়েন্টিতে উদ্বোধনী জুটিতে ফিফটি পায় দল।

পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই ব্যক্তিগত ফিফটি করেন তামিম। তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এমন কীর্তি গড়েন। ২৫ বলে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। তবে এর পর আর বেশি দূর এগোতে পারেননি। ৩৩ বলে ৫৯ রান করে ফিরে যান এই ওপেনার।

তিনে নেমে দারুণ ব্যাটিং করেন শান্তও। তার স্ট্রাইকরেট নিয়ে বেশ সমালোচনা হলেও এদিন উইকেটে এসেই শট খেলেন। তবে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১৯ বলে করেন ২৭ রান। একই পথে হেটেছেন তাওহীদ হৃদয়ও। দারুণ ব্যাটিং করা এই মিডল অর্ডার ব্যাটার সাজঘরে ফিরেছেন ফিফটি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে। তার ব্যাট থেকে আসে ২৪ বলে ৪৫ রান।

বাকিরা আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করলেও এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করার চেষ্টা করেন লিটন। ৩২ বলে ৪০ রান করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এ ছাড়া শেষদিকে দারুণ ক্যামিও খেলেছেন জাকের আলি। এই উইকেটকিপার ব্যাটারের ব্যাট থেকে ৬ বলে ১৮ রান এসেছে।


আরও খবর



ঘুরে আসতে পারেন ‘প্রকৃতির কন্যা’ হিসেবে খ্যাত জাফলং

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৩ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট বিভাগের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটনস্থল জাফলং। সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায়, ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষা খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এই অপূর্ব স্থানটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ।

সিলেট শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জাফলংয়ে পাহাড় আর স্বচ্ছ নদীর অসাধারণ সম্মিলন পর্যটকদের মোহিত করে। এখানকার প্রধান আকর্ষণ পিয়াইন নদী, যা ভারতের ডাউকি থেকে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

স্বচ্ছ পানির এই নদীতে নৌকা ভ্রমণ পর্যটকদের অন্যতম প্রিয় অভিজ্ঞতা। জাফলংয়ের অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো এখান থেকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের উঁচু পাহাড়গুলো চোখে পড়ে। বর্ষাকালে এসব পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্ণার জলরাশি নদী হয়ে প্রবাহিত হয়ে যায়। সেই দৃশ্য অসাধারণ ও মনোমুগ্ধকর।

এছাড়া ডাউকি নদীর উপর ঝুলন্ত সেতু দর্শনার্থীদের বাড়তি আকর্ষণ যোগ করে।

 

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
এক সময় জাফলং ছিল খাসিয়া-জৈন্তা রাজার রাজত্বাধীন বনভূমি। জমিদারী প্রথা বিলুপ্তির পর বহু বছর এই এলাকা পতিত ছিল। পরবর্তীতে পাথরের জন্য খ্যাতি লাভ করে, এবং পাথর ব্যবসার মাধ্যমে এখানে গড়ে ওঠে নতুন জনবসতি।

জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ
জাফলং অঞ্চলে সুপারি, নারিকেল গাছে বসবাসকারী বাদুড়ের দেখা মেলে, যদিও বৃক্ষনিধনের কারণে এখন সেই সংখ্যায় হ্রাস ঘটেছে। এখানকার নদীতে পাওয়া যায় কঠিন শিলার নুড়ি এবং বর্ষায় পাহাড় থেকে ভেসে আসে বড় বড় পাথর।

ভ্রমণের সেরা সময়
জাফলং ভ্রমণের জন্য বর্ষাকালকে আদর্শ সময় বলা হয়। তখন পাহাড়ি ঝর্ণা ও নদীর স্রোত থাকে প্রাণবন্ত। শীতকালেও এখানকার মেঘে ঢাকা পাহাড় ও শান্ত পরিবেশ পর্যটকদের মুগ্ধ করে।

যাতায়াত ব্যবস্থা
ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়া যায় বাস, ট্রেন ও বিমানে। বাস ভাড়া ৬৫০ থেকে ২০০০ টাকা, ট্রেন ভাড়া ৩৫০ থেকে ১৫০০ টাকা এবং বিমানের টিকিট ৩৫০০ থেকে ১০০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে। সিলেট শহর থেকে জাফলং যেতে সময় লাগে প্রায় ২ ঘণ্টা। লোকাল বাস কিংবা রিজার্ভ গাড়িতে করে আপনি যেতে পারেন।

সিলেট শহরের জিন্দাবাজারে পানসী, পাঁচ ভাই ও পালকি রেস্টুরেন্টের খাবার ভীষণ জনপ্রিয়। থাকার জন্য সিলেট শহরের হোটেলগুলোই উপযুক্ত যেমন দরগা গেট ও কদমতলী এলাকার আবাসিক হোটেল। তবে জাফলংয়ে থাকতে চাইলে জাফলং ইর বা জাফলং গ্রিন রিসোর্টে থাকতে পারেন।

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম রত্ন জাফলং, যেখানে পাহাড়, নদী, ঝর্ণা ও ইতিহাসের অপূর্ব সম্মিলন। পরিবার, বন্ধু-বান্ধব বা একান্তে প্রকৃতিকে উপভোগ করতে চাইলে জাফলং হতে পারে আপনার পরবর্তী গন্তব্য।


আরও খবর



বিশ্বজুড়ে কমে যাচ্ছে ফসল উৎপাদন

প্রকাশিত:সোমবার ০৯ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

বিশ্বজুড়ে তীব্র গরমের কারণে কমে যাচ্ছে ফসলের উৎপাদন। নতুন এক গবেষণায় এমনটাই দাবি করেছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা।তারা বলছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও খরার কারণে ধীরে ধীরে বিশ্বে ফসলের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। 

স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির নতুন ওই গবেষণা বলছে, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি শুকনা আবহাওয়া বৈশ্বিক ফসল উৎপাদনের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে, বিশেষ করে গম, যব ও ভুট্টার মতো গুরুত্বপূর্ণ শস্যের বেলায়।

গবেষণায় দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি বড় কৃষি অঞ্চলে ৫০ বছর আগে যে তাপ ও শুষ্কতা ছিল, বর্তমানে এসব অঞ্চলে তাপ ও শুষ্কতা সে সময়ের চেয়ে বেশি। এসব পরিবর্তন নীরবে গোটা বিশ্বের খাদ্য উৎপাদনে প্রভাব ফেলছে, যার ফলে কমে যাচ্ছে উৎপাদিত ফসলের পরিমাণ।

স্ট্যানফোর্ডের খাদ্য নিরাপত্তা ও পরিবেশ বিষয়ক কেন্দ্রের পরিচালক ডেভিড লোবেলের নেতৃত্বে এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, জলবায়ু পরিবর্তন না ঘটলে বিশ্বজুড়ে এসব গুরুত্বপূর্ণ শস্যের উৎপাদন বর্তমানে যে পরিমাণ হচ্ছে, তার চেয়ে ৪ থেকে ১৩ শতাংশ বেশি হতো।

বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ এক প্রতিকবেদনে জানায়, বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার ফলে কখনো কখনো গাছপালা দ্রুত বাড়লেও গরম ও শুষ্ক মৌসুমে ফসলের যে ক্ষতি হচ্ছে, তা পুষিয়ে দেওয়ার জন্য এই উপকার যথেষ্ট নয়। 

ডেভিড লোবেলের বলেছেন, তাকে প্রায়ই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়, ফসলের ক্ষতি কি ধারণার চেয়েও দ্রুত ঘটছে? এ কৌতূহল থেকেই বিশ্বজুড়ে মাঠপর্যায়ের পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি ও তার গবেষণা দল। তাদের গবেষণা বলছে, কিছু জলবায়ু মডেল বৈশ্বিক উষ্ণতার সামগ্রিক চিত্রের সঠিক পূর্বাভাস দিতে পারলেও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় বাদ থেকে গেছে সেখানে। আর সেটি হচ্ছে শুষ্কতার মাত্রা, বিশেষ করে ইউরোপ ও চীনের মতো মৃদু অঞ্চলে।

বিজ্ঞানীদের ধারণার চেয়েও অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে উঠেছে এসব অঞ্চল, যার ফলে ফসলের ওপর আরও বেশি চাপ পড়ছে। অন্যদিকে, পূর্বাভাস করা মডেলের চেয়ে কম তাপ ও শুষ্কতার মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন খামার, বিশেষ করে মধ্য পশ্চিম অঞ্চলের খামারগুলো। এ পার্থক্যটি গবেষকদের চমকে দিয়েছে এবং উন্মোচন করেছে জলবায়ু মডেলিংয়ের একটি বড় ত্রুটি।

গবেষণার তথ্য বিশ্লেষক ও এ গবেষণার সহলেখক স্টেফানিয়া ডি টমাসো বলেছেন, গবেষণার এসব অপ্রত্যাশিত ফল বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু মডেলগুলোর এসব ত্রুটি সংশোধন করা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সঠিকভাবে পূর্বাভাস দেওয়া এবং আরও স্মার্ট কৃষি কৌশল পরিকল্পনা করার জন্য অনেক জরুরি।

লোবেল বলেছেন, প্রধান শস্যের ওপর জলবায়ুর প্রভাবের পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষেত্রে অসাধারণ কাজ করেছে জলবায়ু বিজ্ঞান। তবে এখনও কিছু অঞ্চল রয়েছে, বিশেষ করে কফি, কোকো, কমলা এবং জলপাইয়ের মতো বিশেষ ফসলের ক্ষেত্রে। এসব শস্য খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ততটা গুরুত্বপূর্ণ না হলেও এগুলো ভোক্তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং সরবরাহের চ্যালেঞ্জের কারণে এসব পণ্যের দাম বাড়ছে।

গবেষকরা বলছেন, নীতিনির্ধারক ও কৃষকদের জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করছে এ গবেষণা, যা উষ্ণায়িত পৃথিবীতে বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহ রক্ষায় উন্নত জলবায়ু মডেল ও লাগসই বিভিন্ন অভিযোজন কৌশলের জরুরি প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরেছে।


আরও খবর



বিশেষ সুবিধা পাবেন চাকরিরত ও পেনশনভোগীরা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

আগামী ১ জুলাই থেকে সরকারি-বেসামরিক, স্বশাসিত এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো, ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও পুলিশ বাহিনীতে চাকরিরতদের বিশেষ সুবিধা হিসেবে ন্যূনতম এক হাজার টাকা ও পেনশন ভোগীদের ন্যূনতম ৫০০ টাকা দেবে সরকার।

মঙ্গলবার (৩ জুন) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগ প্রবিধি-৩ শাখা থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব দিলরুবা শাহীনা স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ১৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জাতীয় বেতনস্কেলের আওতাভুক্ত সরকারি-বেসামরিক, স্বশাসিত এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো, ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও পুলিশ বাহিনীতে নিয়োজিত কর্মচারী এবং পুনঃস্থাপনকৃত পেনশনাররাসহ পেনশনভোগী ব্যক্তিদের জন্য ১ জুলাই ২০২৫ তারিখ থেকে বেতনগ্রেড ভেদে (গ্রেড ১ এবং তদূর্ধ্ব থেকে গ্রেড ৯ পর্যন্ত) ১০ শতাংশ এবং (গ্রেড ১০ থেকে গ্রেড ২০ পর্যন্ত) ১৫ শতাংশ হারে ‘বিশেষ সুবিধা’ প্রদান করা হলো। এ ‘বিশেষ সুবিধা’ চাকরিরতদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১০০০ টাকা এবং পেনশন ভোগীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫০০ টাকা হারে প্রদেয় হবে।

এ বিশেষ সুবিধা নিম্নরূপভাবে কার্যকর হবে:

(ক) ০১ জুলাই ২০২৫ তারিখ থেকে প্রতিবছর ০১ জুলাই তারিখে প্রাপ্য মূল বেতনের ওপর গ্রেড ১ ও তদূর্ধ্ব থেকে গ্রেড ৯ এর অন্তর্ভুক্ত চাকরিরত কর্মচারীরা ১০ শতাংশ হারে এবং গ্রেড ১০ থেকে গ্রেড ২০ এর অন্তর্ভুক্ত চাকরিরত কর্মচারীরা ১৫ শতাংশ হারে ‘বিশেষ সুবিধা’ প্রাপ্য হবেন।

(খ) অবসর-উত্তর ছুটিতে (পিআরএল) থাকা কর্মচারীরা পিআরএল গমনের পূর্বকালীন সর্বশেষ প্রাপ্ত মূল বেতনের ভিত্তিতে উপর্যুক্ত (ক) অনুচ্ছেদে বর্ণিত গ্রেডভিত্তিক হারে ‘বিশেষ সুবিধা’ প্রাপ্য হবেন।

(গ) পেনশন পুনঃস্থাপনকৃত কর্মচারীরাসহ সরকার থেকে পেনশন গ্রহণকারী কর্মচারীরা পেনশনের বিদ্যমান অংশের ওপর উপর্যুক্ত (ক) অনুচ্ছেদে বর্ণিত গ্রেডভিত্তিক হারে ‘বিশেষ সুবিধা’ প্রাপ্য হবেন।

(ঘ) যেসব অবসর গ্রহণকারী কর্মচারী তাদের গ্রস পেনশনের ১০০ শতাংশ অর্থাৎ সম্পূর্ণ অংশ সমর্পণ করে এককালীন আনুতোষিক উত্তোলন করেছেন এবং এখনো পেনশন পুনঃস্থাপনের জন্য উপযুক্ত হননি, তাদের ক্ষেত্রে এ ‘বিশেষ সুবিধা’ প্রযোজ্য হবে না।

(ঙ) জাতীয় বেতনস্কেলে নির্ধারিত কোনো গ্রেডে সরকারি কর্মচারী চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অব্যবহিত পূর্বে সর্বশেষ আহরিত তার মূল বেতনের ভিত্তিতে এ সুবিধা প্রযোজ্য হবে। তবে শর্ত থাকে যে এরূপ চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত ব্যক্তি পেনশনভোগী হলে পেনশনের বিদ্যমান অংশ অথবা চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত হওয়ার অব্যবহিত পূর্বের সর্বশেষ আহরিত মূল বেতনের ভিত্তিতে যেকোনো এক ক্ষেত্রে এ সুবিধা প্রাপ্য হবেন।

(চ) সাময়িক বরখাস্তকৃত কর্মচারীরা সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার তারিখের অব্যবহিত পূর্বের মূল বেতনের ৫০ শতাংশ (অর্ধেক) এর ওপর উপর্যুক্ত (ক) অনুচ্ছেদে বর্ণিত গ্রেডভিত্তিক হারে ‘বিশেষ সুবিধা’ প্রাপ্য হবেন; এবং

(ছ) বিনা বেতনে ছুটিতে (লিভ উইদাউট পে) থাকাকালীন কর্মচারীরা এ ‘বিশেষ সুবিধা’ প্রাপ্য হবেন না।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারের রাজস্ব বাজেট থেকে প্রদত্ত অনুদানে পরিচালিত প্রতিষ্ঠান ব্যতীত অন্যান্য স্বশাসিত সংস্থা ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মচারীদের ক্ষেত্রে যারা জাতীয় বেতনস্কেল ২০১৫ এর আওতাভুক্ত, এ ‘বিশেষ সুবিধা’ প্রদান বাবদ প্রয়োজনীয় ব্যয় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব বাজেট থেকে মেটাতে হবে।

অর্থ বিভাগের আদেশ নং ০৭.০০.০০০০.১৬১,৯৯.০১০,২৩-১৩২, তারিখ: ১৮/০৭/২০২৩ বাতিল করা হলো বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জনস্বার্থে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হলো এবং ১ জুলাই ২০২৫ তারিখ থেকে এটি কার্যকর হবে।


আরও খবর

৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা

মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫




এক কাপ চায়ের দামে ছাগলের চামড়া

প্রকাশিত:রবিবার ০৮ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে কোরবানির ঈদের পর চামড়ার বাজারে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। সরকার নির্ধারিত মূল্যে কোনো চামড়াই বিক্রি হচ্ছে না। গরুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩০০ থেকে ৭০০ টাকায়, আর ছাগলের চামড়ার দাম নেমে এসেছে মাত্র ১০ টাকায়, যা স্থানীয়ভাবে এক কাপ চায়ের দামের সমান।

এমন অবস্থায় অনেকে ছাগলের চামড়া নদীতে ফেলে দিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। চামড়ার এমন বেহাল বাজারে সাধারণ মানুষ, চামড়া সংগ্রহকারী এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে।

আজ রবিবার ঈদের দ্বিতীয় দিন সরেজমিন ফুলবাড়ী পৌর শহরের নিমতলা মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশে চামড়া বিক্রির ভিড়। আশপাশের গ্রামাঞ্চল থেকে অনেকেই চামড়া নিয়ে এসেছেন। তবে সরকার নির্ধারিত দাম তো দূরের কথা, ন্যূনতম মূল্যও পাচ্ছেন না বিক্রেতারা।

এক বিক্রেতা আহসান হাবিব বলেন, সরকার ঢাকঢোল পিটিয়ে চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে। কিন্তু সেই দাম কেবল কাগজে কলমেই আছে। বাস্তবে কোনো প্রয়োগ নেই। আমি একটি গরু ও একটি ছাগলের চামড়া এনেছিলাম। গরুর চামড়া ৫০০ টাকায় বিক্রি করেছি। কিন্তু ছাগলের চামড়ার কোনো দাম না থাকায় নদীতে ফেলে দিতে বাধ্য হয়েছি।

একই অভিযোগ করেন আরেক বিক্রেতা মুজাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, চামড়ার কোনো ক্রেতা নেই। স্থানীয় মাদ্রাসার হুজুরকে ফোন দিয়েছি, তিনিও আসেননি। তাই চামড়ায় লবণ দিয়ে রেখে দিয়েছি। ইউটিউব দেখে চেষ্টা করব বাড়িতে বসেই কিছু তৈরি করতে পারি কিনা।

প্রসঙ্গত, সরকার ২০২৫ সালে ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর প্রতি বর্গফুট চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করেছে ৬০-৬৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৫৫-৬০ টাকা। ছাগলের চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২০-২২ টাকা প্রতি বর্গফুট, আর খাসির জন্য ২২-২৭ টাকা। যদিও এই মূল্যতালিকা কোরবানি দাতাদের কিছুটা আশার আলো দেখালেও, বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।

ফুলবাড়ীর স্থানীয় বাজারে কোনো ক্রেতাই ওই দামে চামড়া কিনছেন না। গরুর একটি চামড়া ৩০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে, যা সরকার নির্ধারিত মূল্যের অনেক নিচে। আর ছাগলের চামড়া বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০ টাকায়তাও সবাই কিনতেও আগ্রহী নন।

স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ী কোরবান আলী বলেন, আমরা চামড়া কিনছি কম দামে, কারণ ট্যানারিরা সরকার নির্ধারিত দামে কিনছে না। তারাও বলছে, অতিরিক্ত চামড়া তাদের প্রয়োজন নেই, সংরক্ষণের সুবিধাও নেই। আমরা আকারভেদে গরুর চামড়া ৩০০ থেকে ৭০০ টাকায় এবং ছাগলের চামড়া মাত্র ১০ টাকায় নিচ্ছি।

তিনি বলেন, লবণের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বছর প্রতি মণ লবণ ছিল ৪৭০ টাকা। এবার তা বেড়ে ৬৫০ টাকায় পৌঁছেছে।

গত বছরের তিক্ত অভিজ্ঞতায় তিনি বলেন, গত বছর সরকারী দামে চামড়া কিনে অনেক লোকসান করেছি। অনেক চামড়া সংরক্ষণ করতে না পেরে ফেলে দিতে হয়েছে। তাই এবার সাবধানে মাত্র ২০০টি গরুর চামড়া কিনেছি।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মতে, সরকারকে চামড়ার বাজার ব্যবস্থাপনায় আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কার্যকরভাবে মূল্য নির্ধারণ বাস্তবায়ন, সংরক্ষণের ব্যবস্থা, লজিস্টিক সাপোর্ট এবং মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলোর মাধ্যমে চামড়া সংগ্রহে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা দরকার।

চামড়ার বাজারে এমন ধস কেবল অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণই নয়, ধর্মীয় দিক থেকেও অনেক মুসলমানের জন্য হতাশার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা চেয়েছিলেন কোরবানির চামড়া দান করে সওয়াব হাসিল করতে, কিন্তু মূল্য না পেয়ে কেউ ফেলে দিচ্ছেন, কেউবা অসহায়ের মতো অপেক্ষায় বসে আছেন। এ অবস্থায় সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান এখন সময়ের দাবি।


আরও খবর



বিশ্ব বাবা দিবসে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অনুভূতি

প্রকাশিত:রবিবার ১৫ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

‎মো. হৃদয় হোসাইন‎, মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি :

‎পৃথিবীর অধিকাংশ ভালোবাসা উচ্চারিত হয় শব্দে, আবেগে, চোখের জল আর হাসিতে। কিন্তু কিছু সম্পর্ক আছে, যা প্রকাশিত হয় নিঃশব্দে—অভিনয়ের বাইরে, নিঃস্বার্থ আর নিরব ভালোবাসায়। এমনই এক সম্পর্ক—বাবা আর সন্তানের। বাবা, যিনি হয়তো আবেগপ্রবণ নন, কিন্তু তার জীবনের প্রতিটি সিদ্ধান্তে, প্রতিটি পরিশ্রমে সন্তান থাকে সবচেয়ে বড় প্রেরণা।

‎বিশ্ব বাবা দিবস উপলক্ষে দেশের চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে  খোঁজার চেষ্টা করেছেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাস  সাংবাদিক মো. হৃদয় হোসাইন। 

‎বাবা আমার জীবনের প্রথম হিরো

‎বাবা আমার জীবনের প্রথম হিরো। আমি যখন হাঁটতে শিখিনি, তখনও তিনিই আমার পথের দিশারি ছিলেন। আজ আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি, কিন্তু এখনো কোনো সমস্যায় পড়লে প্রথম মনে পড়ে বাবার কথা। তার নীরব ত্যাগই আমার জীবনের ভিত্তি। বাবার অনুপ্রেরণায় আমি এতোদূর আসতে পেরেছি। বাবা নামটিই নিরব এক ভালোবাসার উচ্চারণ। 

‎তামান্না

‎শিক্ষার্থী, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়  

‎বাবা আমার ছায়ার মতো সঙ্গী

‎আমার বাবা কখনো আমাদের সামনে আসেন না, নিজের আবেগ প্রকাশ করেন না। কিন্তু যখন প্রয়োজন হয়, তিনি ঠিক আমার পেছনে ছায়ার মতো দাঁড়িয়ে থাকেন। তিনি হয়তো বলেন না ‘ভালোবাসি’, কিন্তু তার প্রতিটি কাজই সে কথাটাই বলে দেয়, আরও দৃঢ়ভাবে। বাবারা খুব একটা প্রকাশ করেন না। তারা ফুলের তোড়া, কার্ড বা স্ট্যাটাসের ভাষায় নিজেদের ভালোবাসা বোঝাতে পারেন না। কিন্তু তাদের নিঃশব্দ পরিশ্রম আর ছায়ার মতো উপস্থিতিই সন্তানের জন্য সবচেয়ে বড় আশ্রয়।

‎ মীর মাহফুজারা রহমান

‎শিক্ষার্থী, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

‎আত্মবিশ্বাসের ভিত্তি

‎বাবা হচ্ছেন আমার আত্মবিশ্বাসের উৎস। যেকোনো ব্যর্থতায় আমি যখন ভেঙে পড়ি, তিনি খুব অল্প কথায় আমাকে আবার নতুন করে দাঁড়াতে শেখান। জীবনে বহুবার হেরেছি, কিন্তু বাবার মুখটা মনে করে আবার উঠে দাঁড়িয়েছি।

‎রাকিবুল বাপ্পি

‎শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় 

‎বাবা হলেন আমার প্রথম শিক্ষক ‎

‎বাবা শুধু  আমার অভিভাবক নন, আমার জীবনের শিক্ষকও। তিনি শিখিয়েছেন কীভাবে সম্মান করতে হয়, দায়িত্ব নিতে হয়, মানুষ হতে হয়। এখন বুঝি, তার শাসনের আড়ালে ছিল অগাধ ভালোবাসা। বিশ্ব বাবা দিবসে বাবাকে বলতে চাই, বাবা, আপনি আমাদের জীবনের নায়ক। আপনার অবদান কোনো দিবসে সীমাবদ্ধ নয়, তা আমার প্রতি নিঃশ্বাসে জড়িয়ে থাকে।

‎মো: ইথারুল ইসলাম‎, শিক্ষার্থী, বুয়েট


আরও খবর