Logo
শিরোনাম

বাংলায় ইসলাম প্রচারে সুফিদের অবদান

প্রকাশিত:রবিবার ২০ মার্চ ২০22 | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ মে ২০২৩ | ১১৩০জন দেখেছেন

Image

ইসলাম প্রচারমুখী ধর্ম। বিশ্বের যে প্রান্তেই ইসলামের পদচারণা হয়েছে সেখানেই ধর্মটি ধর্মান্তরিতদের মধ্যে দ্রুত সমপ্রসারিত হয়েছে। ঐতিহাসিক অবিভক্ত বাংলায়ও একই ঘটনা ঘটেছিল। উপনিবেশ আমলে ১৮৭২- সর্বপ্রথম লোকগণনায় দেখা গেল, সারা বাংলায় মুসলমানদের সংখ্যাভিত্তিক অনুপাত ৪৮ ভাগ। তথ্যটি তখন বিস্ময় সৃষ্টি করলেও তার যুক্তি প্রমাণভিত্তিক ব্যাখ্যা ছিল। সারা উপমহাদেশের মধ্যে বাংলায় অধিবাস ছিল সামাজিকভাবে বঞ্চিত নিগৃহীত অধিক মানুষের; তারাই ইসলামের উদার কল্যাণমুখী আবেদনে সাড়া দিয়ে ধর্মান্তরিত হয়েছিল। কেন এবং কীভাবে ব্যাপক ধর্মান্তরণ হয়েছিল তা ইতিহাসের এক চমকপ্রদ বিতর্কের বিষয়। যেমন পশ্চিমের অনেক গবেষক বলতে চেয়েছেন, ইসলাম বিস্তৃত হয়েছে মুসলিম শাসকদের তরবারির জোরে।  কিন্তু লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, দিল্লি আগ্রা ছিল দোর্দণ্ড মুসলিম প্রতাপের কেন্দ্র, কিন্তু যেখানে ধর্মান্তরিত মুসলমান মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশও ছিল না। অন্যদিকে তুলনামূলকভাবে বাংলায় মুসলিম শাসন ছিল দুর্বল। সেকারণে অধ্যাপক পিটার হার্ডি যথার্থই বলেছেন, Those who argue that Indian Muslims were forcibly converted generally failed to define either force or conversion&_ leaving us to presume that a society can and will change its religious identity simply because it has a sword at its neck
তাহলে বাংলায় ইসলাম-বিস্তৃতির ব্যাখ্যা কী? প্রথমত, ইতিপূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে ইসলামের অন্তর্লীন মানবতাবাদী আবেদনের কথা। দ্বিতীয়ত এবং প্রধানত, এমন ইসলামের ধারক, বাহক প্রচারক সুফিদের অবদান। সুফিবাদী ইসলামের দুটো মৌল বক্তব্য বা ধারণা আছে। এক, ইন্নামাল আমানু বিন্নিয়্যাত। অর্থাৎ মনোবাঞ্ছার ওপর ধার্মিকতা বা ঈমান নির্ভরশীল। আরো উল্লেখ্য, এমন ইসলামে অন্তরের শুচিতা বড়; এবং তার সঙ্গে সংযোজিত হবে আবশ্যকীয় আচার-আনুষ্ঠানিকতা, তবে যা কখনই আচার-অনুষ্ঠানসর্বস্বতায় পর্যবসিত হবে না। দুই, মান আরাফা নাফসাহু ফাকাদ আরাফা রাব্বাহু- নিজকে জানলে স্রষ্টাকে চেনা হয়।

অনুপুঙ্খ বিচারে বাংলায় ইসলামের আবির্ভাব, প্রচার প্রসার মুসলিম রাজনৈতিক শক্তি থিতুকরণে পাটাতন হিসেবে কাজ করেছে। অন্যভাবে বললে ইসলামের গতিময় ব্যাপ্তি রাজশক্তি বিকাশের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছিল। বাহ্যিক আনুষ্ঠানিকতাসর্বস্ব নয়, বরং অন্তর্লীন প্রণোদনায় প্রাণিত উদারপন্থী ইসলাম প্রচারিত হয়েছিল এমন ইসলামী মননসমৃদ্ধ সুফিকুল দ্বারা। তাদের মানবিক প্রণোদনা-উৎসারী ইসলামী আবেদন স্থানীয় বিভিন্ন ধর্মানুসারী মানুষের মধ্যে সহজ ক্রমবর্ধমান গ্রাহক পেয়েছিল। অতীতের আচার-অনুষ্ঠানক্লিষ্ট ধর্মে বীতশ্রদ্ধ স্থানীয় হিন্দু (নমশূদ্র), বিশেষ করে ধর্মের কারণে সমাজচ্যুত সংক্ষুব্ধ আমজনতা যেন উদারপন্থী মানবিক ইসলামের মধ্যে এক অচলায়তন ভাঙার ইঙ্গিত পেয়েছিল।

ইসলাম প্রচারধর্মী হলেও বাংলায় ধর্মটির প্রচারকৌশল পদ্ধতি যে মানবিক অনুভূতিসমৃদ্ধ ছিল তা বিশেষ আলোচনার দাবি রাখে। বাংলায় মুসলমানরা ক্ষমতা দখল করেছিল তেরো শতকের শুরুতে; কিন্তু সুফিবাদী ইসলামের আগমন হয়েছিল আট শতকেই। অর্থাৎ মুসলিম রাজনৈতিক বিজয়ের পূর্বসূরি হিসেবে কাজ করেছিল ধর্মবিজয়। এটাও তো বলা অত্যুক্তি হবে না যে, রাজনৈতিক বিজয়পূর্ব ধর্মবিজয় রাজনৈতিক বিজয়ের পথ সুগম করেছিল।
পারসিক সুফিদের ইসলাম প্রচার-কৌশলের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল সংশ্লেষণমূলক (syncretic) দৃষ্টিভঙ্গি। ইসলাম গ্রহণের সময় স্থানীয় ধর্মান্তরিতদের ঐতিহ্যবিচ্যুত হতে হয়নি। কারণ ধর্মপ্রচারক সুফিরা তা করতে বলেননি। ফলে বাংলার সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে ইসলাম হয়েছে সংশ্লেষণবাদী। সুতরাং স্থানীয়দের পক্ষে ইসলামে ধর্মান্তরণ সহজ হয়েছিল। উল্লেখ্য, খোদ আরবেই ইসলাম স্থানীয় অনেক ঐতিহ্যকে আত্মস্থ করে বিকশিত হয়েছিল। উপরন্তু লক্ষণীয়, বিশ্বের যে প্রান্তেই ইসলাম সমপ্রসারিত হয়েছে সেখানেই অভিন্ন ঘটনা ঘটেছে। ধর্ম প্রচারের এমন পদ্ধতি নিঃসন্দেহে শুধু বিচক্ষণই নয়, মনস্তাত্ত্বিকভাবে মানবিকও বটে।

অন্যদিকে সুফি-সাধক পরিচালিত তিনটি প্রতিষ্ঠান বাংলায় ইসলাম প্রচারে পরিপূরক ভূমিকা পালন করেছিল। প্রথম প্রতিষ্ঠানটি ছিল লঙ্গরখানা। লঙ্গরখানায় ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সব অন্নহীন মানুষকে সমাদরে এবং বিনামূল্যে আপ্যায়িত করা হতো। অর্থের জোগান আসতো মুসলিম শাসকদের রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে। ব্যবস্থার ফলে সবচেবেশি উপকৃত হয়েছিল কট্টর হিন্দুত্ববাদী সেন শাসনে (১১৬১-১২০৪) নিগৃহীত জাতিভেদ প্রথার শিকার হয়ে সমাজচ্যুত নমশূদ্ররা। জাত-পাতের পার্থক্যহীন সব মানুষের এমন সম্মিলন ছিল বাংলায় দৃষ্টান্তরহিত। বলা যায়, এক ধরনের সামাজিক বিপ্লবই ঘটে গিয়েছিল। আর এমন বিপ্লব যারা আস্বাদন করেছিল সেই স্থানীয়রা এমন এক উপলব্ধিতে প্রাণিত হয়েছিল যে, নতুন ধর্ম ইসলাম সামাজিকভাবে সমতাবাদী (socially egalitarian), যা বৌদ্ধ ধর্মে থাকলেও কট্টর হিন্দুত্বে ছিল না। কাজেই নিম্নবর্গের হিন্দু অভাজনদের কাছেই ইসলামের আকর্ষণ ছিল বেশি; এবং তারাই কালক্রমে মুসলমান সমাজের গরিষ্ঠ অংশ হয়েছিল। অবশ্য কিছু সংখ্যক বৌদ্ধও পরিস্থিতির চাপে মুসলমান হয়েছিল।

ইসলাম প্রচার-সহায়ক দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠানটি ছিল খানকাহ। লঙ্গরখানা ছিল সামাজিক ইসলামের বাস্তব দৃষ্টান্ত; আর খানকাহ তাত্ত্বিক ইসলামের প্রশিক্ষণকেন্দ্র। সুফিরা ছিলেন প্রশিক্ষক। লঙ্গরখানায় হার্দিকভাবে তৃপ্ত উন্নতজীবন প্রত্যাশী শোষিত-বঞ্চিত মানুষ খানকাহ- গিয়ে যে আগ্রহী ঐকান্তিক প্রশিক্ষণার্থী হবে সেটাই ছিল স্বাভাবিক। দুটো প্রতিষ্ঠানই তাদের ইসলামে দীক্ষা গ্রহণের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করেছিল। এমন পরিপ্রেক্ষিতে বাংলায় সুফি-প্রয়াসলগ্ন ইসলাম-বিস্তৃতির বাস্তবানুগ ব্যাখ্যার জন্য একটি উদ্ধৃতির সাহায্য গ্রহণ করা যেতে পারেঃ The foremost consideration appears to be an intent to find a refuge where there would not be a social stratification and discrimination as these people had been going through under the Senna rule; and Islam appeared to be a refuge of such specification. Moreover, there had been clear material considerations uppermost in the psyche of the converts and the background to which was the way which the Sufis welcomed these people first by the Langerhans, and then Khanna (দ্রষ্টব্য Syed Anwar Husain, Human Rights in Bengal: Atash Dipankar to Sufis)

বাংলায় ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করা তৃতীয় প্রতিষ্ঠানটি ছিল দরগাহ। দরগাহে সমাবেশ হতো সব ধর্মের মানুষের, যে রীতি আজও চালু আছে। দেখা যায় যে, ক্রমাগতভাবে দরগাহ খানকাহ- স্থান দখল করে নিয়েছে। দরগাহ- এমন প্রাধান্যের সূচনা বাংলায় হুসেইন শাহী শাসনামলে (১৪৯৩-১৫৩৮) তবে দরগাহ- কিছু ইসলামি চেতনাপরিপন্থী আনুষ্ঠানিকতাও দৃশ্যমান হয়েছিল, যার রেশ আজও দেখা যায়।
বরেণ্য ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আবদুল করিম মন্তব্য করেছেন,  Bengal, not to speak of the big cities but even not a small city or a hamlet will be found where the Dervishes have not come and settled অর্থাৎ বাংলার বড়-ছোট সব শহর এমন কী গ্রামেও তারা পদার্পণ করেছিলেন, এবং স্থায়ীভাবে থেকে গিয়েছিলেন। কাজেই বাংলার সমগ্র ভূখণ্ড জুড়েই তারা ইসলাম প্রচার করেছিলেন। মুসলমান রাজশক্তি ইসলাম প্রচারে সুফিদের সহায়ক হয়েছিল, কিন্তু এমন শক্তির প্রভাবে ইসলাম বিস্তৃত হয়নি। বাংলায় ইসলামের আলো ছড়িয়েছিলেন সুফিরাই।


আরও খবর

রুহ এবং মানুষ : একটি তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ

রবিবার ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩




ব্রিটিশ রাজের রাজ্যাভিষেক

প্রকাশিত:শনিবার ০৬ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ মে ২০২৩ | ৯৮জন দেখেছেন

Image

ব্রিটেনের ৪০তম রাজা হিসেবে সিংহাসনে আরোহণ করবেন তৃতীয় চার্লস। ৭০ বছর পর শনিবার (৬ মে) সকালে লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে জাঁকজমকপূর্ণ এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রাজার এ অভিষেক হচ্ছে। ইতোমধ্যেই ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি কনসোর্ট ক্যামিলা। খবর বিবিসির।

স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় শুরু হয় অভিষেকের আনুষ্ঠানিকতা। তার আগে রাজাকে বহনকারী গাড়িবহর বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে অভিমুখে যাত্রা শুরু করবে। প্রায় ২ ঘণ্টা সময় নিয়ে চলবে এই অভিষেক অনুষ্ঠান। প্রায় ২৩০০ অতিথি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন ।

স্মৃতিকথা প্রকাশের পর এই প্রথম প্রিন্স হ্যারিকে জনসমক্ষে তার ভাই প্রিন্স উইলিয়াম, প্রিন্স অব ওয়েলসের সঙ্গে দেখা যাবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে অনুষ্ঠানের কয়েক ঘণ্টা পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যেতে পারেন। সেখানে গিয়ে তিনি তার স্ত্রী মেগানের সঙ্গে পুনরায় যোগ দেবেন।

রাজা চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানে বিশ্বের ১০০ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানসহ ২০৩টি দেশের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকছেন। বিশ্বনেতাদের মধ্যে রাজা চার্লসের অভিষেকে থাকছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ, জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক-ওয়াল্টার স্টেইনমায়ার, পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেং প্রমুখ। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক, তার স্ত্রী অক্ষতা মূর্তিসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরাও এতে উপস্থিত থাকবেন।

বৃষ্টির পূর্বাভাস সত্ত্বেও মিছিলের রুটে ইতিমধ্যেই ভিড় জমাতে শুরু করেছে। ৭০ বছরের মধ্যে প্রথম এ অভিষেক সরাসরি দেখতে সেন্ট্রাল লন্ডনের মল, হোয়াইট হল এবং পার্লামেন্ট স্কোয়ার ঘিরে হাজার হাজার জনতা এবং রাজপরিবারের ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষী ভিড় করেছেন। অনেকেই গতকাল থেকেই তাঁবু টানিয়ে অবস্থান করছেন অভিষেক দেখার জন্য।

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ গত বছরের সেপ্টেম্বরে মারা যাওয়ার পর চার্লস রাজার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ব্রিটিশ রাজা কমনওয়েলথেরও প্রধান। ৫৬টি স্বাধীন রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর জনসংখ্যা প্রায় ২৫০ কোটি। শনিবার তৃতীয় চার্লস অভিষেকের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা, ব্রাহামাস, বেলিজ, গ্রেনাডা, জ্যামাইকা, পাপুয়া নিউগিনি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, টুভালো, সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড গ্রেনাদাইনসের রাজারও দায়িত্ব নিচ্ছেন।


আরও খবর



জায়গা দখলে লাঠিসোটা,দা-বটি দিয়ে মাদ্রাসার ছাত্রদের পাঠালেন অধ্যক্ষ

প্রকাশিত:রবিবার ২১ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ মে ২০২৩ | ১১৫জন দেখেছেন

Image

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ এলাকায় চর মটুয়া মাদ্রাসার মাদ্রাসায় কিশোর শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে প্রতিবেশির উপর হামলা করে জমি দখল করার অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার পরিচালক ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। হামলার ঘটনায় নারী-পুরুষসহ ৬ জন আহত হয়ে হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। ঘটনার তিন দিনেও মামলা নেয়নি থানা পুলিশ অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্ত আহত কৃষক আব্দুল মতিনের। 

তিনি জানান, এর আগে বুধবার বিকালে সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ এলাকায় তার জমি দখল করার জন্য চর মটুয়া মাদ্রাসার কিশোর শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দিলেন অধ্যক্ষ মাওলানা আবু তাহের। শিক্ষার্থীরা নির্দেশ পেয়েই সবার হাতে তুলে দিলেন লাঠিসোটা, দা-বটিসহ দেশিয় অস্ত্র। তার জমিতে গিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা তার গাছপালা কেটে লন্ড ভন্ড করে দেয়। এসময় তিনি তার পরিবারো লোকজন এগিয়ে এসে বাধা দিলে ছাত্র ও মাদ্রাসার শিক্ষকরা মিলে নারী-পুরুষের উপর হামলা চালায়। ওই হামলায় তিনিসহ ইয়াছিন,রহিম,আল আমিন ও গৃহিনী হিনজুনী বেগম আহত হয়। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এর মধ্যে রহিমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়। অন্যদের চিকিৎসা চলছে সদর হাসপাতালসহ প্রাইভেট ক্লিনিকে। 


এদিকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু তাহের এমন কাজে সমালোচনা করে অভিভাবকরা বলেন, মাদ্রাসায় সন্তান দিয়েছি লেখা-পড়ার জন্য। কিন্তু অধ্যক্ষ তাদের হাতে লাঠিসোটা, দা-বটিসহ দেশিয় অস্ত্রদিয়ে তাদেরকে সন্ত্রাসী বানাচ্ছে এবং অন্যের জমি জোর করে দখল করছে। 

ওই গ্রামের গৃহিনী সালেহা, হিনজুনী বেগম জানান, চর মটুয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষের এ ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও মাদ্রাসার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে প্রতিবেশিদের জমিদখলে কাজ সেরেছেন অধ্যক্ষ আবু তাহের।

সমাজে তারা শান্তিচাই উল্লেখ করে একই এলাকার আল আমিন জানান,জমি নিয়ে বিরোধ থাকলে আইন আদালতের মাধ্যমে তা সমাধান করা যায়। কিন্তু মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের হাতে অধ্যক্ষ দেশীয় অস্ত্র তুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়ার পরিবর্তে সন্ত্রাসী বানাচ্ছে এমনটা কোন পিতা মাতা চায় না। প্রশাসনের নিকট এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন তিনিসহ এলাকাবাসী। 

এ বিষয়ে চর মটুয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও পরিচালক মাওলানা আবু তাহের জানান,মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের হামলা করার চেষ্টা করলে অপর শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ধার করতে যায়। এসময় মাদ্রাসার একজন শিক্ষার্থীও আহত হয়। 

শিক্ষার্থীদের হাতে লাটি কেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সহপাটি ছাত্রদের মারধর করবে আর অপর শিক্ষার্থীরা তাদের রক্ষা করতে যাবে না এটা কেমন কথা। 

সদর থানার ওসি মোসলে উদ্দিন জানান, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের দেশীয় অস্ত্রনিয়ে দৌড়ে যাওয়ার ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে তা কোন শিক্ষার্থীই ব্যবহার এমকি পরিবহনও করা বে-আইনী। অপরদিকে এ ঘটনায় কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি এমনকি থানায় কেউ মামলা করতেও আসে নাই। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। 


আরও খবর



সাংবাদিক কামরুল ইসলাম আর নেই

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ মে ২০২৩ | ৮৪জন দেখেছেন

Image

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী (৬৩) মারা গেছেন। মঙ্গলবার (২ মে) রাত ৮টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কামরুল ইসলাম চৌধুরী প্রায় এক মাস ধরে বিএসএমএমইউতে ভর্তি ছিলেন। তার লিভার সিরোসিস ছিল, যা পরে ক্যানসারে রূপ নেয়।

কামরুল ইসলাম দৈনিক সংবাদ ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় (বাসস) দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেছেন। সবশেষ তিনি বাসসের বার্তা সম্পাদক হিসেবে অবসরে যান। তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

বুধবার (৩ মে) নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার আইচাপাড়া পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।


আরও খবর



তীব্র তাপপ্রবাহ গ্রাস করছে এশিয়াকে

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৯ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ মে ২০২৩ | ৮৪জন দেখেছেন

Image

বিশ্বের বৃহত্তম মহাদেশ এশিয়ার বিভিন্ন অংশে যেভাবে ফোস্কাপড়া তাপ প্রবাহ শুরু হয়েছে, তাতে চলতি ২০২৩ সাল পৃথিবীর উষ্ণতম বছর হতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন জলবায়ুবিদরা।

এল নিনো ধরনের আবহাওয়ার প্রভাবে ২০২৩ সালের শীত শেষ হতে না হতেই তাপমাত্রার পারদ যেভাবে চড়ছে, তা বিশ্বের উত্তর গোলার্ধের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর জন্য রীতিমতো অশনি সংকেত বলে মত বিশ্বের জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের।

রোববার ভিয়েতনামের গড় তাপমাত্রা ছিল ৪৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দেশটির ইতিহাসে এটি সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। তাপমাত্রার প্রভাবে বিদ্যুতের চাহিদায় আকস্মিক উল্লম্ফন এবং তার জেরে ভিয়েতনামে প্রায় ভেঙে পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। প্রতিবেশী দেশ লাওসেও এ দিন রেকর্ডভাঙা তাপমাত্রা ছিল। দক্ষিণপূর্ব এয়িশার অপর দেশ ফিলিপাইনে প্রায় প্রতিদিন তাপমাত্রার সূচক বিপজ্জনক পর্যায়ে থাকায় স্কুলের সময়ঘণ্টা কমাতে বাধ্য হয়েছে সরকার।

তাপপ্রবাহ থেকে থেকে মুক্তি পাচ্ছেনা ফিলিপাইনের দুই প্রতিবেশী থাইল্যান্ড-মালয়েশিয়াও। গত সপ্তাহে প্রতিদিনই থাইল্যান্ডের উত্তর ও মধ্যাঞ্চালে তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর। তাপপ্রবাহের কারণে স্বাভাবিকভাবেই বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদাও। থাই জলবায়ুবিদরা সরকারের উদ্দেশে সতর্কবার্তা দিয়ে জানিয়েছেন, সামনের তিন বছর দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে খরা দেখা দিতে পারে; সরকারের উচিত আসন্ন এই দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রাখা।

খরার আশঙ্কায় আছে মালয়েশিয়াও। দেশটির আবহাওয়া দপ্তর এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে, চলতি বছর মালয়েশিয়ায় বৃষ্টিপাত কমে যেতে পারে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত। যদি সত্যিই এমন হয়, সেক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ পাম ওয়েল উৎপাদনকারী এই দেশটির ভোজ্যতেলের মূল কাঁচামাল পামের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বৈশ্বিক জলবায়ুবিদদের মতে, ২০২৩ সালের মাঝামাঝি থেকে শুরু হতে যাওয়া এল নিনো আবাহাওগত প্যাটার্ন এই দীর্ঘস্থায়ী তাপপ্রাবাহের জন্য মূলত দায়ী এবং একে আরও অসহনীয় করে তুলছে মানবসৃষ্ট কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ব্যাপারটি।

স্প্যানিশ ভাষার দুই শব্দ এল নিনো এবং লা নিনার আক্ষরিক বাংলা অর্থছোটো খোকা ও ছোটো খুকী। তবে গত কয়েকশ বছর ধরে এই শব্দ দুটি দিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব উপকূলের জলবায়ুগত অবস্থা বা চক্রকে বোঝানো হয়। এই চক্রের একটি অংশের নাম এল নিনো অপরটির নাম লা নিনা

কোনো কোনো বছর প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বাঞ্চলীয় দেশ পেরু, ইকুয়েডর ও চিলির উপকূলে উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে এক প্রকার উষ্ণ সমুদ্র স্রোতের প্রবাহ লক্ষ্য করা যায়। গড়ে প্রতি ৬ থেকে ৭ বছর অন্তর অন্তর বিশেষ এই ব্যাপারটি ঘটে।

এই উষ্ণ স্রোতের কারণে দক্ষিণ থেকে উত্তরমুখী শীতল সামুদ্রিক স্রোতের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে প্রশান্ত মহাসাগরের বিভিন্ন অঞ্চলের সমুদ্রে বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়, উদ্ভিদ প্ল্যাংকটনের পরিমাণ হ্রাস পায় এবং মাছের উৎপাদন কমে যায় এবং স্থলভাগের তাপমাত্রা বাড়ে।

এল নিনোর প্রভাবে প্রশাসন্ত মহাসাগরের উপকূলবর্তী বিস্তীর্ণ অঞ্চলে খরা বা অনাবৃষ্টি দেখা দেয়। কোনো কোনো অঞ্চলে অতিবর্ষণও ঘটে থাকে।

সাধারণত ২ থেকে ৪ বছর স্থায়ী হয় এল নিনো। তারপরই আসে লা নিনা। সে সময় এল নিনোর বিপরীত অবস্থা দেখে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলবর্তী বিভিন্ন দেশ।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের জলবায়ু মডেলগুলোর তথ্য অনুযায়ী, গত তিন বছর প্রশান্ত মহাসাগরে লা নিনা আবহাওয়া প্যাটার্ন ছিল। ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের চাপ থাকা সত্ত্বেও খানিকটা কম ছিল বৈশ্বিক তাপমাত্রা; কিন্তু চলতি বছরের মাঝামাঝি বা তার কিছু পর থেকে লা নিনা শেষ হবে, শুরু হবে এল নিনো প্যাটার্ন।

গত প্রায় তিন বছর ধরে খরা চলছে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশভুক্ত আর্জেন্টিনা ও যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাংশে। বৈশ্বিক জলবায়ুবিদদের মতে, এল নিনোর প্রভাবে হয়ত চলতি বছরই এই খরার অবসান হবে, কিন্তু একই সময়ে তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়তে থাকবে দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়াসহ অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল।

আর এসব জায়গায় টানা ও দীর্ঘমেয়াদী তাপপ্রবাহের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কফি, চিনি,পাম তেল ও কোকোয়ার মতো কৃষিপণ্যের উৎপাদন।


আরও খবর



সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির আভাস

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৫ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ মে ২০২৩ | ৮২জন দেখেছেন

Image

বঙ্গোপসাগরে আজ অথবা আগামীকালের মধ্যে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এছাড়া এটি আরো ৩ থেকে ৪ দিবস পরে আরো ঘনীভূত হতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

পূর্বাভাসে আরো বলা হয়েছে, সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা (১-২) ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

গতকাল রাতে তিনি আরো জানান, দুদিনের মধ্যে দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এবং আগামী ৫ দিনে এটি আরো ঘনীভূত হতে পারে।

গত ২৪ ঘণ্টায় যশোরে সর্বোচ্চ ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ভোলায় ২১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল বান্দরবানে ৩৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীর তাপমাত্রা ছিল ৩২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


আরও খবর