Logo
শিরোনাম

বার্ড ফ্লু আতঙ্কে জরুরি অবস্থা জারি ক্যালিফোর্নিয়ায়

প্রকাশিত:শুক্রবার ২০ ডিসেম্বর ২০24 | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

বার্ড ফ্লু ভাইরাসের আতঙ্কে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। স্থানীয় সময় বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) অঙ্গরাজ্যটির গভর্নর গ্যাভিন নিউজম এক বিবৃতিতে জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দেন। খবর সিবিএস নিউজের।

গভর্নর গ্যাভিন নিউজম বিবৃতিতে জানান, সরকারি সংস্থাগুলো যাতে বার্ড ফ্লুর প্রাদুর্ভাব রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারে সেজন্য রাজ্যজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন লুইসিয়ানায় প্রথম একজন গুরুতর বার্ড ফ্লু আক্রান্ত ব্যক্তির খবর জানিয়েছে।

ক্যালিফোর্নিয়ার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এখন পর্যন্ত অঙ্গরাজ্যটিতে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়ার কোনো ঘটনা পায়নি বলে জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) জানিয়েছে, দেশটির ১৬টি অঙ্গরাজ্যে মোট ৬১ জনের দেহে বার্ড ফ্লু আক্রান্তের ঘটনা রেকর্ড করেছে-যার ৩৪টিই ক্যালিফোর্নিয়ায়।


আরও খবর

টিউলিপের ১০ বছর জেল হতে পারে!

মঙ্গলবার ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫




গুম কমিশনে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে নেয় ২২ কোটি টাকা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২১ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

নগদ অর্থ ও জমি লিখে নেওয়ার তথ্য ফাঁস করায় ফের গুম করা হয় এক ব্যবসায়ীকে, ১০ বছরেও যিনি ফিরে আসেননি।এদিকে এখন পর্যন্ত গুম কমিশনে এক হাজার সাতশ অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে বেশিরভাগ র‌্যাবের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। গুম, অপহরণে পুলিশও কম হাত পাকায়নি। কেউ এখনো চাকরিতে বহাল আছেন, কেউ হয়েছেন গ্রেফতার। আবার পালিয়ে গেছেন বেশ কয়েকজন। 


গুমসংক্রান্ত কমিশনের সভাপতি হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা ইনকোয়ারি (অনুসন্ধান) অব্যাহত রেখেছি। এটা তো এক দিনের ব্যাপার নয়। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের আমরা তলব করছি, ওদের কথা শুনছি। দরকার হলে যারা অভিযোগ করেছেন তাদের কথাও দ্বিতীয়বার শোনা হবে। অনেক সময় উভয়পক্ষকে মুখোমুখি করছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা অনেক সময় ডিনাই (অস্বীকার) করছে। আমাদের অবশ্যই সত্যটা খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের কাজই হলো সত্য অনুসন্ধ্যান।’ মার্চ বা এপ্রিলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান। 


কেস স্টাডি-১ : গুমসংক্রান্ত কমিশনে ৬ জানুয়ারি অভিযোগ করেন খান মো. আক্তারুজ্জামান নামের এক ব্যবসায়ী। অভিযোগে বলা হয়, পারিবারিকভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত তিনি। গ্রামের বাড়ি মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানায়। বিএনপির স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা ছিল। এ কারণে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের রোষানলে পড়ে শেখ হাসিনার আজ্ঞাবহদের দ্বারা গুমের শিকার হন। 


ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে নেয় ২২ কোটি টাকা

নগদ অর্থ ও জমি লিখে নেওয়ার তথ্য ফাঁস করায় ফের গুম করা হয় এক ব্যবসায়ীকে, ১০ বছরেও যিনি ফিরে আসেননি

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের শুধু গুম করেই ক্ষ্যান্ত হননি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা, অনেককে ক্রসফায়ারে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আবার নগদ অর্থ ছাড়াও জমিও লিখে নেন। এছাড়া যারা ছাড়া পেয়ে বিষয়টি প্রকাশ করে বিচার চেয়েছেন তাদের ফের গুম করা হয়। এ রকম অনেকে আজও ফিরে আসেননি। গুম কমিশনের কাছে দেওয়া ভুক্তভোগীদের অভিযোগ থেকে চাঞ্চল্যকর এ রকম তথ্য পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী এবং গুম কমিশন সূত্রে এ বিষয়ে বেশ কয়েকটি কেস স্টাডি পাওয়া গেছে। 


এদিকে এখন পর্যন্ত গুম কমিশনে এক হাজার সাতশ অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে বেশিরভাগ র‌্যাবের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। গুম, অপহরণে পুলিশও কম হাত পাকায়নি। কেউ এখনো চাকরিতে বহাল আছেন, কেউ হয়েছেন গ্রেফতার। আবার পালিয়ে গেছেন বেশ কয়েকজন। 


গুমসংক্রান্ত কমিশনের সভাপতি হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা ইনকোয়ারি (অনুসন্ধান) অব্যাহত রেখেছি। এটা তো এক দিনের ব্যাপার নয়। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের আমরা তলব করছি, ওদের কথা শুনছি। দরকার হলে যারা অভিযোগ করেছেন তাদের কথাও দ্বিতীয়বার শোনা হবে। অনেক সময় উভয়পক্ষকে মুখোমুখি করছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা অনেক সময় ডিনাই (অস্বীকার) করছে। আমাদের অবশ্যই সত্যটা খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের কাজই হলো সত্য অনুসন্ধ্যান।’ মার্চ বা এপ্রিলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান। 


কেস স্টাডি-১ : গুমসংক্রান্ত কমিশনে ৬ জানুয়ারি অভিযোগ করেন খান মো. আক্তারুজ্জামান নামের এক ব্যবসায়ী। অভিযোগে বলা হয়, পারিবারিকভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত তিনি। গ্রামের বাড়ি মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানায়। বিএনপির স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা ছিল। এ কারণে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের রোষানলে পড়ে শেখ হাসিনার আজ্ঞাবহদের দ্বারা গুমের শিকার হন। 



ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘লে. কর্নেল আজাদ ২০১৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর ধানমন্ডি ২৭ নম্বর থেকে আমাকে চোখ বেঁধে তৎকালীন র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধানের নেতৃত্বে একটি কালো গাড়িতে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যান। চোখ বাঁধা থাকায় আমি স্থান চিনতে পারিনি। তবে পরবর্তীতে বুঝতে পারি, র‌্যাব হেডকোয়ার্টার্সের বহুল আলোচিত ‘আয়নাঘরে ৩ দিন বন্দি ছিলাম। সেখানে থাকাবস্থায় ক্রসফায়ারে হত্যার ভয় দেখিয়ে আমার কাছে ৩০ (ত্রিশ) কোটি টাকা ও জমি দাবি করেন র‌্যাবের সংশ্লিষ্ট পদস্থ কর্মকর্তা। এরপর র‌্যাবের নজরদারিতে থেকে কয়েক দফায় নগদ ২২ কোটি টাকা দিয়ে জীবন ভিক্ষা পেয়েছিলাম। আমার কোম্পানির এজিএম অ্যাকাউন্টস মো. শহিদুল্লাহ ও ম্যানেজার মোহাম্মদ আলী শুভকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন ধাপে কোম্পানির ব্যাংক লোন থেকে টাকা তুলে দেই। এছাড়া আমার ও আমার স্ত্রীর নামে থাকা জমি বিক্রি করে টাকাগুলো দিয়েছিলাম। কিন্তু এরপরও তারা থেমে থাকেনি। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে ভয় দেখিয়ে আমার বেশ কিছু জমিও রেজিস্ট্রি করে দিতে বাধ্য করে। সে সময় আমার ওপর চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। আমার শরীরে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়। যার ক্ষত এখনো বয়ে বেড়াচ্ছি। নির্যাতনের যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে নিয়মিত থেরাপি নিতে হচ্ছে।’ র‌্যাব কর্মকর্তাকে টাকা দেওয়ার অডিও রেকর্ড, সিসিটিভি ফুটেজের কিছু তথ্য-প্রমাণ অভিযোগের সঙ্গে যুক্ত করে দিয়েছেন ব্যবসায়ী আক্তারুজ্জামান।


ব্যবসায়ী আক্তারুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, ‘গুমের শিকার হয়ে টাকা দেওয়ার পর থেকে আমার কোম্পানি অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে এবং ব্যাংকের ঋণগুলো খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে কোম্পানি দেউলিয়া হওয়ার পথে। অথচ আমাকে তুলে নেওয়া র‌্যাবের সেই কর্মকর্তার নামে-বেনামে প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে।’ 


কেস স্টাডি-২ : রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী থানা এলাকা থেকে ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি অপহরণ হন ব্যবসায়ী মো. কুদ্দুসুর রহমান চৌধুরী। গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারিতে গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্র জমা দেন ব্যবসায়ী কুদ্দুসের মেয়ে ফারজানা আক্তার টুম্পা। অভিযোগে বলা হয়, ২০১৩ সালে কর্নেল (অব.) পদমর্যাদার এক কর্মকর্তার নেতৃত্বে র‌্যাব-৪ এর একজন কর্নেল, একজন ক্যাপ্টেন চোখ বেঁধে কুদ্দুসুর রহমানকে উঠিয়ে নিয়ে যান। ইলেকট্রিক শক দিয়ে ৪টি গাড়ি, ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকার চেক, ২ লাখ টাকা এবং জমির দলিলে সই নেন। পরবর্তীতে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন কুদ্দুসুর রহমান। হাইকোর্টে রিট পিটিশনও দায়ের করেন তিনি। মামলা চলমান থাকা অবস্থায় ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি মিরপুর জান্নাতুল মাওয়া কবরস্থানের সামনে থেকে সাদা মাইক্রোবাসে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যায় কুদ্দুসুর রহমানকে। এভাবে তুলে নেওয়ার ১০ বছর পার হলেও তিনি আর ফিরে আসেননি। তার ভাগ্যে কী হয়েছে সেটিও পরিবারের সদস্যরা আজও জানতে পারেননি। 


এদিকে ঘটনার ১ মাস পর পল্লবী থানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৬ সদস্যের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন কুদ্দুসুর রহমানের স্ত্রী মোছা. জোসনা বেগম। মামলাটি থানা পুলিশের পর পুলিশের বিশেষায়িত দুটি সংস্থা তদন্ত করে। কিন্তু কোনো হদিস মেলেনি তার। এছাড়া অভিযুক্তদের আইনের আওতায়ও আনা যায়নি।


নিখোঁজ কুদ্দুসুর রহমানের পরিবারের দাবি, রিয়েল এস্টেট কোম্পানির সঙ্গে জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধের জেরে গুম হন কুদ্দুস। আর ওই রিয়েল এস্টেট কোম্পানির মালিকানায় আছেন সাবেক এক প্রভাবশালী সেনা কর্মকর্তা। ফলে মামলা করলেও আওয়ামী লীগ আমলে প্রভাব খাটিয়ে সঠিক তদন্ত করতে দেওয়া হয়নি।


কুদ্দুসুর রহমানের মেয়ে ফারজানা আক্তার টুম্পা বলেন, ‘বাবাকে প্রথমে র‌্যাব তুলে নিয়ে গুম করে নগদ টাকা ও গাড়ি নিয়েছিল। এ বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ করায় ফের গুম হন। আজও বাবাবে খুঁজে পাইনি। আমরা এখনো আশা করছি বাবা বেঁচে আছেন।’ 


গুম কমিশন সূত্র বলছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীদের বর্ণনার সঙ্গে ঘটনার মিল রয়েছে। তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের বিষয়ে চাক্ষুষ প্রমাণ খুব কম পাওয়া যাচ্ছে। নিরপেক্ষ সাক্ষীও পাওয়ার সুযোগ নেই। গুমের সঙ্গে জড়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা কাজটি এমনভাবে করেছেন যাতে এগুলো পরবর্তীতে শনাক্ত করা না যায়। 


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরই প্রকাশ্যে আসতে থাকে গুমের লোমহর্ষক কাহিনী। ফলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি। গুমের অভিযোগ জমার ক্ষেত্রে বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হলেও এখনো একে একে জমা পড়ছে অভিযোগ। সেসব অভিযোগের অনুসন্ধান করছে কমিশন।


এদিকে অভিযোগ পর্যালোচনা ও অনুসন্ধ্যান করে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিশন। ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে বিস্তারিত জানানো হয়েছে প্রধান উপদেষ্টাকে। গুমসংক্রান্ত বেশিরভাগ অভিযোগ উঠেছে এলিট ফোর্স র‌্যাবের বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে গুমসংক্রান্ত কমিশন র‌্যাব বিলুপ্তির সুপারিশও করে। 


গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর গঠিত হয় পাঁচ সদস্যের গুমসংক্রান্ত কমিশন। কমিশনের সভাপতি করা হয়, হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীকে। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুমের ঘটনা তদন্তের জন্য কমিশনের বিবেচনায় আনা হয়েছে। কমিশন গঠনের পর কয়েক দফা অভিযোগ জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ৩১ অক্টোবর অভিযোগ দায়েরের সময় শেষ হয়েছে। তবে এখনো অভিযোগ নিয়ে আসছেন ভুক্তভোগীরা।


আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের শুধু গুম করেই ক্ষ্যান্ত হননি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা, অনেককে ক্রসফায়ারে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আবার নগদ অর্থ ছাড়াও জমিও লিখে নেন। এছাড়া যারা ছাড়া পেয়ে বিষয়টি প্রকাশ করে বিচার চেয়েছেন তাদের ফের গুম করা হয়। এ রকম অনেকে আজও ফিরে আসেননি। গুম কমিশনের কাছে দেওয়া ভুক্তভোগীদের অভিযোগ থেকে চাঞ্চল্যকর এ রকম তথ্য পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী এবং গুম কমিশন সূত্রে এ বিষয়ে বেশ কয়েকটি কেস স্টাডি পাওয়া গেছে। 

ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘লে. কর্নেল আজাদ ২০১৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর ধানমন্ডি ২৭ নম্বর থেকে আমাকে চোখ বেঁধে তৎকালীন র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধানের নেতৃত্বে একটি কালো গাড়িতে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যান। চোখ বাঁধা থাকায় আমি স্থান চিনতে পারিনি। তবে পরবর্তীতে বুঝতে পারি, র‌্যাব হেডকোয়ার্টার্সের বহুল আলোচিত ‘আয়নাঘরে ৩ দিন বন্দি ছিলাম। সেখানে থাকাবস্থায় ক্রসফায়ারে হত্যার ভয় দেখিয়ে আমার কাছে ৩০ (ত্রিশ) কোটি টাকা ও জমি দাবি করেন র‌্যাবের সংশ্লিষ্ট পদস্থ কর্মকর্তা। এরপর র‌্যাবের নজরদারিতে থেকে কয়েক দফায় নগদ ২২ কোটি টাকা দিয়ে জীবন ভিক্ষা পেয়েছিলাম। আমার কোম্পানির এজিএম অ্যাকাউন্টস মো. শহিদুল্লাহ ও ম্যানেজার মোহাম্মদ আলী শুভকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন ধাপে কোম্পানির ব্যাংক লোন থেকে টাকা তুলে দেই। এছাড়া আমার ও আমার স্ত্রীর নামে থাকা জমি বিক্রি করে টাকাগুলো দিয়েছিলাম। কিন্তু এরপরও তারা থেমে থাকেনি। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে ভয় দেখিয়ে আমার বেশ কিছু জমিও রেজিস্ট্রি করে দিতে বাধ্য করে। সে সময় আমার ওপর চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। আমার শরীরে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়। যার ক্ষত এখনো বয়ে বেড়াচ্ছি। নির্যাতনের যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে নিয়মিত থেরাপি নিতে হচ্ছে।’ র‌্যাব কর্মকর্তাকে টাকা দেওয়ার অডিও রেকর্ড, সিসিটিভি ফুটেজের কিছু তথ্য-প্রমাণ অভিযোগের সঙ্গে যুক্ত করে দিয়েছেন ব্যবসায়ী আক্তারুজ্জামান।


ব্যবসায়ী আক্তারুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, ‘গুমের শিকার হয়ে টাকা দেওয়ার পর থেকে আমার কোম্পানি অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে এবং ব্যাংকের ঋণগুলো খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে কোম্পানি দেউলিয়া হওয়ার পথে। অথচ আমাকে তুলে নেওয়া র‌্যাবের সেই কর্মকর্তার নামে-বেনামে প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে।’ 


কেস স্টাডি-২ : রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী থানা এলাকা থেকে ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি অপহরণ হন ব্যবসায়ী মো. কুদ্দুসুর রহমান চৌধুরী। গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারিতে গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্র জমা দেন ব্যবসায়ী কুদ্দুসের মেয়ে ফারজানা আক্তার টুম্পা। অভিযোগে বলা হয়, ২০১৩ সালে কর্নেল (অব.) পদমর্যাদার এক কর্মকর্তার নেতৃত্বে র‌্যাব-৪ এর একজন কর্নেল, একজন ক্যাপ্টেন চোখ বেঁধে কুদ্দুসুর রহমানকে উঠিয়ে নিয়ে যান। ইলেকট্রিক শক দিয়ে ৪টি গাড়ি, ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকার চেক, ২ লাখ টাকা এবং জমির দলিলে সই নেন। পরবর্তীতে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন কুদ্দুসুর রহমান। হাইকোর্টে রিট পিটিশনও দায়ের করেন তিনি। মামলা চলমান থাকা অবস্থায় ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি মিরপুর জান্নাতুল মাওয়া কবরস্থানের সামনে থেকে সাদা মাইক্রোবাসে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যায় কুদ্দুসুর রহমানকে। এভাবে তুলে নেওয়ার ১০ বছর পার হলেও তিনি আর ফিরে আসেননি। তার ভাগ্যে কী হয়েছে সেটিও পরিবারের সদস্যরা আজও জানতে পারেননি। 


এদিকে ঘটনার ১ মাস পর পল্লবী থানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৬ সদস্যের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন কুদ্দুসুর রহমানের স্ত্রী মোছা. জোসনা বেগম। মামলাটি থানা পুলিশের পর পুলিশের বিশেষায়িত দুটি সংস্থা তদন্ত করে। কিন্তু কোনো হদিস মেলেনি তার। এছাড়া অভিযুক্তদের আইনের আওতায়ও আনা যায়নি।


নিখোঁজ কুদ্দুসুর রহমানের পরিবারের দাবি, রিয়েল এস্টেট কোম্পানির সঙ্গে জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধের জেরে গুম হন কুদ্দুস। আর ওই রিয়েল এস্টেট কোম্পানির মালিকানায় আছেন সাবেক এক প্রভাবশালী সেনা কর্মকর্তা। ফলে মামলা করলেও আওয়ামী লীগ আমলে প্রভাব খাটিয়ে সঠিক তদন্ত করতে দেওয়া হয়নি।


কুদ্দুসুর রহমানের মেয়ে ফারজানা আক্তার টুম্পা বলেন, ‘বাবাকে প্রথমে র‌্যাব তুলে নিয়ে গুম করে নগদ টাকা ও গাড়ি নিয়েছিল। এ বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ করায় ফের গুম হন। আজও বাবাবে খুঁজে পাইনি। আমরা এখনো আশা করছি বাবা বেঁচে আছেন।’ 


গুম কমিশন সূত্র বলছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীদের বর্ণনার সঙ্গে ঘটনার মিল রয়েছে। তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের বিষয়ে চাক্ষুষ প্রমাণ খুব কম পাওয়া যাচ্ছে। নিরপেক্ষ সাক্ষীও পাওয়ার সুযোগ নেই। গুমের সঙ্গে জড়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা কাজটি এমনভাবে করেছেন যাতে এগুলো পরবর্তীতে শনাক্ত করা না যায়। 


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরই প্রকাশ্যে আসতে থাকে গুমের লোমহর্ষক কাহিনী। ফলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি। গুমের অভিযোগ জমার ক্ষেত্রে বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হলেও এখনো একে একে জমা পড়ছে অভিযোগ। সেসব অভিযোগের অনুসন্ধান করছে কমিশন।


এদিকে অভিযোগ পর্যালোচনা ও অনুসন্ধ্যান করে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিশন। ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে বিস্তারিত জানানো হয়েছে প্রধান উপদেষ্টাকে। গুমসংক্রান্ত বেশিরভাগ অভিযোগ উঠেছে এলিট ফোর্স র‌্যাবের বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে গুমসংক্রান্ত কমিশন র‌্যাব বিলুপ্তির সুপারিশও করে। 


গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর গঠিত হয় পাঁচ সদস্যের গুমসংক্রান্ত কমিশন। কমিশনের সভাপতি করা হয়, হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীকে। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুমের ঘটনা তদন্তের জন্য কমিশনের বিবেচনায় আনা হয়েছে। কমিশন গঠনের পর কয়েক দফা অভিযোগ জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ৩১ অক্টোবর অভিযোগ দায়েরের সময় শেষ হয়েছে। তবে এখনো অভিযোগ নিয়ে আসছেন ভুক্তভোগীরা।


আরও খবর



যাত্রীদের জিম্মি করে কর্মসূচি দুঃখজনক

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৮ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

যাত্রীদের জিম্মি করে বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মসূচি দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, এতে সাধারণ মানুষই বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ট্রেন চলাচল বন্ধের পর সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন করতে এসব কথা বলেন তিনি।

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, স্টাফদের দাবির বিষয়ে আমাদের আলোচনার দরজা সব সময় খোলা রয়েছে। প্রয়োজনে আমরা তাদের সঙ্গে আবারও আলোচনা করব এবং অর্থ বিভাগেও তাদের এই দাবি দাওয়া নিয়ে আলোচনা করব।

তিনি বলেন, যাত্রীদের ভোগান্তি যাতে কম হয় সেজন্য ইতোমধ্যে গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছি। এরপরও কোনো যাত্রী যদি স্টেশনে আসেন তাদের সুবিধা বিবেচনা করে আমরা বিআরটিসি বাসের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। যাতে করে রেলের যে রুট গুলো আছে সেখানে যাত্রীরা যেতে পারে।

রেলপথ উপদেষ্টা বলেন, স্টাফদের যে দাবি মাইলেজ অ্যালাউন্সের দাবি, তা দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। তাদের এই দাবির অনেক অংশ আমরা ইতোমধ্যে পূরণ করেছি। বাকি দাবিগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করতে প্রস্তুত আছি। রেলতো কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি না, এখানে আলোচনার সুযোগ আছে। রেল বন্ধের ফলে কিন্তু সরকারের অসুবিধা হচ্ছে না, অসুবিধা সাধারণ যাত্রীদের হচ্ছে। আমরা চাই এর সমাধান দ্রুত হোক। কারণ সামনে ইজতেমা আছে।

এসময় বিআরটিসির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, কমলাপুর ও এয়ারপোর্ট স্টেশনে যাত্রীদের জন্য দশটি করে মোট ২০টি গাড়ি প্রস্তুত আছে। প্রয়োজন হলে বাস আরও বাড়ানো হবে।


আরও খবর

কয়েকটি এলাকায় শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা

শুক্রবার ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫




আসলে জীবনটা কী? অনেকটা সময় নিয়ে ভাবলাম

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

শামীমা নাছরিন, সিনিয়র সাংবাদিক :

ভেবে মনে হলো, জীবনটা আসলে যুদ্ধ। টিকে থাকার লড়াইয়ে হাজার রকমের প্রচেষ্টার সমন্বয়। একটা যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগেই আরেকটা যুদ্ধের দামামা বাজতে শুরু করে। যেন সিনেমার সিকোয়েন্স। 

অবশ্য, বাবা-মার সামর্থ্য থাকলে ছোটবেলায় লড়াইটা কম করতে হয়। কিন্তু জীবনে যখন একা চলার প্রয়োজন হয় বা নিজের মতো করে গড়ে তুলতে হয় তখনই যুদ্ধটা শুরু হয়। শুধুমাত্র সময়ের সঙ্গে এর ধরণটা বদলে যায়।

শিক্ষা জীবনে পড়ালেখায় ভালো করা নিয়ে যুদ্ধ শুরু হয়। পরীক্ষায় কে কার চেয়ে ভালো ফল করতে পারবে এ নিয়েই মূলত যুদ্ধ। শিক্ষা জীবন শেষে চাকুরির জন্য যুদ্ধ। তবে, চাকুরির পাশাপাশি পরিবারের চাপে বিয়ে না করা ইস্যুতে যুদ্ধ করে মেয়েরা। যেসব মেয়েরা চাকুরি-সংসার দুটোই সামলান তারা জড়িয়ে পড়ে মহাযুদ্ধে। ঘর-বাহির করতে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা হলেও  জিতে যায় বিবাহিত মেয়েরা। তবে, নতুন যুদ্ধ শুরু হয় মা হওয়ার পর। বাচ্চার দেখভাল করতে গিয়ে সংসার ও চাকরি নিয়ে রীতিমতো যুদ্ধে নামে মায়েরা। এ সময় পরাজিত হয়ে চাকুরি ছেড়ে দেয় অনেকে। চাকরি ছাড়লেও যুদ্ধ কিন্তু শেষ হয় না। কাঁধে দায়িত্ব চাপে সংসার ও সন্তানের। সন্তানের সুস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে খারার তৈরি এবং স্কুল-কোচিং বা অন্যান্য শিখন কার্যক্রমে পুরোপুরি যুক্ত হয়ে পড়ে মায়েরা। তিন বেলা স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সন্তানকে আনা নেওয়ার জন্য সময়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে তারা। এক সময় সন্তান বড় হয়ে গেলে যুদ্ধ হয় নিজের শরীরের সঙ্গেই। জীবন পরিক্রমায় শরীরটাই যেন যুদ্ধক্ষেত্র হয়। আজ এ রোগ তো কাল সে রোগ। এভাবেই যুদ্ধ করতে করতে একসময় ক্লান্ত হয়ে মৃত্যুর কাছে হেরে যায় মানুষ।

তাই দুইদিনের জীবনে এতো প্যারা নিয়ে লাভ নেই। আল্লাহ আমাদের জন্য যা কিছু নির্ধারণ করে রেখেছেন তাই হবে। আমরা শুধু সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা রেখে দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক রাখতে পারি।


আরও খবর

আমাদের মফস্বল সাংবাদিকতা ও কিছু কথা

মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪




আমি একজন শিল্পী আমি কী ভূমি দস্যু ?

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভীন পপির বিরুদ্ধে তার মা মরিয়ম বেগম ও বোন ফিরোজা পারভীন জমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন। এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভিডিও বার্তায় মুখ খুলেছেন সাদিকা পারভীন পপি।

ভিডিও বার্তায় সাদিকা পারভীন পপি বলেন, ‘আমি একজন শিল্পী আমি কী ভূমি দস্যু? প্রতিটা মানুষের জীবনে সুন্দর একটা সময় থাকে নিজের জীবন উপভোগ করার জন্য। সে সময়টা আমি তাদের (ভাই-বোনদের) জন্য ব্যয় করেছি।’

ভাই বোনদের কথা উল্লেখ করে পপি বলেন, ‘তারা আমার বাবা-মায়ের সন্তান আমার সন্তান না, আমার দায়িত্ব না। তারপরও আমি আমার ভাই-বোনদেরকে নিজের সন্তান হিসেবে লালনপালন করেছি। নিজের ভবিষ্যতের ভালো লাগা মন্দ লাগা অনেক কিছুই বাদ দিয়েছি। শুধু আমার ভাই বোনদেরকে মানুষ করার জন্য।’

‘কিন্তু এখন এসে দেখলাম তারা মানুষ তো হয়নি। হিংস্র কিছু বলবো না, পশুদের মাঝে তো কৃতজ্ঞতা থাকে এদের মধ্যে সেই কৃতজ্ঞতা বোধটুকু নেই। উপরের দিকে থুথু ফেললে তো নিচের দিকে আসে। কাদের নামে অভিযোগ দিবো, অভিযোগ তো করে বাইরের লোকদের নামে।’

তার কথায়, ‘আমি যেহেতু আমার ভাই-বোনদের কে আমার মা-বাবাকে অনেক ভালোবাসি যার কারণে আমার জীবনে অনেক ‍কিছু ফেস করেছি তাদের দ্বারা নির্যাতিত, লাঞ্ছিত, অপমানিত হয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এতো বছর ইন্ড্রাষ্টিতে যা আয় করেছি, তারা আমার সঙ্গে বেইমানি করে, আমার সমস্ত অর্থ নিয়ে নিয়েছে। আমার টাকা দিয়ে কেনা সম্পত্তি কোনো কিছু আমার নামে ছিল না আমার ভাই-বোনের নামে ছিল। আমার অ্যাকাউন্ট পুরো শূন্য ছিল আমার দেহটা ছাড়া আমার কোনো কিছুই আমার ছিল না। সবকিছুই তাদের আয়ত্তে ছিল, আমিও তাদের আয়ত্তে ছিলাম।’

পপির ভাষ্য, ‘একটা পর্যায়ে এসে মানুষের জীবনে বেঁচে থাকার জন্য কিছু না কিছুর প্রয়োজন হয়। বেঁচে থাকার জন্য শুধু আমার প্রাণটা ছিল হয়ত। একটা পর্যায়ে এসে যখন আমি জানতে পারলাম আমার পরিবার আমার সাথে বেইমানি করেছে, আমাকে ঠগিয়েছে আমার সবকিছু কেড়ে নিয়েছে।’

শেষে বলেন, ‘এগুলো জানার পর আমি চুপ ছিলাম। আমি যাদের কোলে পিঠে মানুষ করেছি দুই হাত দিয়ে, আমি তাদের দ্বারা অনেক বেশি নির্যাতিত হয়েছি। তারা আমাকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করেছে। আমার টাকা চুরি করে আমাকে মারার পরিকল্পনা করেছে । আমাকে খুন করে ফেলার জন্য টাকা দিয়েছে খুনিকে


আরও খবর

মুক্তি পেল অনুদানের দুই সিনেমা

শুক্রবার ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫




পরীমণির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

প্রকাশিত:রবিবার ২৬ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের করা হত্যাচেষ্টা মামলায় নায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

রবিবার (২৬ জানুয়ারি) ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তার সময় আবেদন নামঞ্জুর করে এ পরোয়ানা জারি করেন।

পরীমণির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আজ এ মামলার চার্জ শুনানি ছিল। অসুস্থ থাকায় পরীমণি আদালতে হাজির হতে পারেননি। অপর আসামি জিমির পক্ষেও সময় আবেদন করা হয়। আদালত সময় আবেদন নামঞ্জুর করেন। তাদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আদেশ দেন একই সঙ্গে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেন।


আরও খবর

অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না

শুক্রবার ৩১ জানুয়ারী ২০২৫