মইনুল ইসলাম মিতুল :
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে চলছে অনুমোদনহীন ইটভাটা। ইটভাটা তৈরিতে নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন, নেই জেলা প্রশাসনের অনুমোদন। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকার পরেও থেমে থাকেনি তাদের কার্যক্রম। কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়াই গজারিয়াতে নামে বেনামের ইটভাটার মালিকরা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন ।ভাটায় দেখা গেছে,কয়লার পাশাপাশি কাঠ মজুদ করে রাখা হয়েছে আর নতুন ইট তৈরির কাজ দেদারছে চালিয়ে যাচ্ছেন মালিক পক্ষ। ইটভাটার ধোঁয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে শিশুরা । প্রশাসনকে জানিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী । না দেখার ভান করছে পরিবেশ অধিদপ্তর ।
গজারিয়া উপজেলা ভাটেরচর ইউনিয়নের ভাটেরচর গ্রামে কৃষি জমিতে গড়ে উঠেছে এন, এন, এম ব্রিক্- ফিল্ড নামের একটি ইটভাটা । এর একশ' গজের ভেতর ভাটেরচর দেওয়ান আব্দুল মান্নান উচ্চবিদ্যালয় ।গজারিয়া জেনারেল হাসপাতাল । ভাটায় ইট পোড়ানোর কালো ধোঁয়া আর উড়ে আসা ধুলাবালি বিদ্যালয় ভবনে প্রবেশ করে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে। দিন দিন শিক্ষার্থীরা এতে মারাত্মক ঝুঁকি এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) ২০১৯ অনুযায়ী, বিশেষ কোনো স্থাপনা, রেলপথ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান কিংবা অনুরূপ কোনো স্থান বা প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে এক কিলোমিটার দূরে ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। তবে সেই আইনের কোনো তোয়াক্কা করা হচ্ছে না।
ইটভাটার ১০০ ফুটের মধ্যে বসবাস করা এক নারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ইট পোড়ানোর ধোঁয়ায় আমরা শ্বাসকষ্টে ভুগছি। আমাদের বাড়িতে কোনো গাছে ফল ধরে না। আমরা এখন ভাতের সঙ্গে ধুলা খাই। ইটের ধুলায় আমাদের বাড়ি নষ্ট হচ্ছে। আমরা ভাত খাই না ইটের লাল ধুলা খাই।
সরকারি বিধানের আলোকে যদি এই ইটভাটার কোনো লাইসেন্স এবং পরিবেশ ছাড়পত্র থাকে, তা হলেও ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
অনুমোদন ছাড়াই ইটভাটা তৈরির কথা স্বীকার করেন এন, এন, এম ব্রিক্- ফিল্ড স্বত্বাধিকারী স্বীকার করে বলেন,জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে অনুমোদন পেতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়া ইটভাটায় আগুন লাগানোর বিষয়ে তিনি জানান,এখানে অনেক ইটভাটা আছে তাদের প্রশাসনের কোন অনুমোদন নেই। তবে কি ভাবে অনুমোদন ছাড়া বিশ বছর যাবৎ ইট তৈরি করছেন এমন প্রশ্নের জবাব তিনি এড়িয়ে যান ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব ইটভাটা বন্ধ করতে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন। পরিবেশ অধিদপ্তর বলতে গজারিয়া বা মুন্সীগঞ্জে কিছু আছে কিনা জানা নেই ।
ইটভাটার ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট, হাপানি, এলার্জিসহ নানা রকম রোগ হতে পারে বলে জানান হাসপাতালের চিকিৎসকরা।