আমিনুল ইসলাম কাসেমী :
বায়তুল্লাহ। আল্লাহর ঘর। এর প্রেম মানুষকে বদলে দেয়। কেননা ঘর তো আল্লাহর। তার ঘরের সাথে প্রেম মানে তার সাথেই প্রেম। আর আল্লাহর সাথে ভালবাসা মানেই দুনিয়া - আখেরাতের কামিয়াবী। এভাবেই একজন মানুষ বদলে যায়। বদলে যায় তার দেহমন- হৃদয়। ভালবাসা সর্বোচ্চ শিখরে পৌছে যায়। ঈমান- ইসলামের শিখরে অবস্হান করতে শেখে।
মক্কায় অবস্হিত বায়তুল্লাহ। আল্লাহতায়ালা এ ঘর কে সর্বোপ্রথম বানিয়েছেন। যেটাকে করেছেন বরকতময়। সেই বরকতময় ঘরের সাথে লটকে আছে লক্ষ- কোটি মুমিন- মুসলমানের হৃদয়। সেই ঘরের প্রতি সকল মুমিন- মুত্তাকীদের অপরিসীম ভালবাসা। প্রতিনিয়ত সে প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে অজস্র ঈমানদার মানুষ। আর এটা এমন প্রেম এমন ভালবাসা, যে একবার এ সুধা পান করেছে তার পিপাসা আরো বেড়ে যায়। বারবার পান করতে চায় সেই আল্লাহ প্রেমের শরাব।
বহু হজ ওমরা পালনকারীদের ব্যাপারে আমার জানা আছে, এ জায়গাতে বারবার আসছেন, বারবার এ ঘর তাওয়াফ করছেন, তারপরেও তাদের যেন পিপাসা মেটেনা। বরং আরো বেশী ইশকের আগুন জ্বলে ওঠে। শত ব্যস্ততার মধ্যে বায়তুল্লাহ - তে এসে পড়ে। লুটে পড়ে মহান রবের দরবারে। ফরিয়াদ করতে থাকে তাঁর কাছে। দুনিয়ার সকল কর্মযজ্ঞের অবসান ঘটিয়ে মহান আল্লাহর প্রেমে মাতুয়ারা হয়ে ওঠে।
বায়তুল্লাহ এমন এক ঘর যার উপর প্রতিদিন ১২০ চি রহমত নাজিল হয়। তাওয়াফকারীদের উপর ৬০ টি রহমত, অন্যান্য ইবাদতকারীদের উপর ৪০ টি রহমত এবং যারা ঘরের প্রেমে পাগল হয়ে তাকিয়ে থাকে তাদের প্রতিও ২০ টি রহমত নাজিল হয়। মোটকথা খোদাপ্রেমিকগণ মোটেও বঞ্চিত নন এখানে। খালি হাতে কেউ ফেরে না এ জায়গাতে। বরং এই বায়তুল্লাহপ্রেমিকগণ তৃপ্ত হৃদয় এবং মহান রবের অনুকম্পা নিয়েই বাড়ি ফেরে।
তাই তো বদলে যায় বায়তুল্লাহর মুসাফিরগণ। পূর্বের অভিশপ্ত জীবনের ইতিটেনে নতুন স্বপ্নের বাসা বুনতে থাকে।। নতুন জীবন পা রেখে ঈমানী তাকাতে উজ্জীবিত হতে থাকে। দিনে দিনে বদলে যায় তার জীবন। বায়তুল্লাহ প্রেমে পাগল হয়ে আবারো ছুটে চলে মক্কার পানে। তেমনি এক বায়তুল্লাহ প্রেমিকের দেখা হল। বারবার তিনি ছুটে যান সেখানে। এভাবে নিজের জীবনকে রাঙিয়ে দিচ্ছেন।
আল্লাহতায়ালা সকল মুমিন বান্দাকে তাঁর ঘরের প্রেমে পাগল হয়ে সেখানে হাজিরি দেওয়ার তাওফিক দান করেন। আমিন।
লেখক : শিক্ষক ও কলামিস্ট