Logo
শিরোনাম

বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা হয়েছে ১৮ কোটি টাকার সালফিউরিক এসিড

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ জুলাই ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২১ মে ২০২৫ |

Image

আনোয়ার হোসেন - নিজস্ব প্রতিবেদক যশোর::


গতকাল মঙ্গলবার (১৬ জুলাই)  দুপুরে বেনাপোল বন্দরের ৩৮ নম্বর শেড থেকে এ চালানটি আটক করা হয়।

এ চালানটির আমদানি কারক চট্টগ্রামের রিফ লেদার লিমিটেড নামে একটি আমদানি কারক প্রতিষ্ঠান। এছাড়া বেনাপোল বন্দর থেকে সু কৌশলে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে এ চালানটি  খালাস নিতে কাস্টমসে কাগজপত্র দাখিল করেছিল মোশারফ ট্রেডিং নামে সিএন্ডএফ এজেন্সি একটি প্রতিষ্ঠান।

বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের তথ্যমতে তাদের কাছে খবর আসে বেনাপোল স্হল বন্দরের ৩৮ নম্বর শেডে ১৬৪২৫ কেজি ফরমিক এসিড ঘোষণা দিয়ে সালফিউরিক এসিড আমদানি করেছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে তারা সিএন্ডএফ এর ঘোষণা অনুযায়ী কাস্টমসের ল্যাবে ফরমিক এসিডের নমুনা পরীক্ষা করা হয়।


এসময় ল্যাবে পরীক্ষার করলে সেটি সালফিউরিক এসিড বলে জানতে পারে তারা।

সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মোশারফ ট্রেডিংয়ের মোশারেফ হোসেন জানান, তিনি পণ্য চালানটি ছাড় করানোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন।


মিথ্যা ঘোষণায় আমদানির অভিযোগে কাস্টমস কেমিকেল চালানটি প্রাথমিক পরীক্ষা করে সালফিউরিক এসিড পেয়েছেন। বিষয়টি তিনি আমদানিকারক কে জানিয়েছেন। তবে আমদানিকারক কাস্টমসের এ অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে পুনরায় পরীক্ষার দাবি জানিয়েছে বলে তিনি জানান।  

এদিকে এ বিষয়ে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার সাফায়েত হোসেনকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করেনি।



আরও খবর



জাল টাকা ও টাকা ছাপানোর সরঞ্জাম সহ আটক ঝালকাঠির নাইম

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 |

Image

হাসিবুর রহমান, ঝালকাঠি প্রতিনিধি :

রাজাপুরের যুবকসহ দুজন আটক, বিপুল পরিমান জাল টাকার নোট ও ছাপানোর সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে র‌্যাপিট এ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব-৮) এর সদস্যরা। 

বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিকেল পৌনে চারটার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব- ৮ এর মিডিয়া অফিসার সিনিয়র সহকারী পরিচালক অমিত হাসান। এর আগে বুধবার বরিশাল বন্দর থানাধীন কর্নকাঠী ও চরকাউয়া এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ওই দুইজনকে আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলো- বরিশাল মেট্রোপলিটনের বন্দর থানাধীন চরকাউয়া ইউনিয়নের ময়দান এলাকার লাল মিয়ার ছেলে মিজান হাওলাদার (১৯) ও ঝালকাঠির রাজাপুর থানার লেবুবুনিয়া এলাকার ফরিদ হোসেনের ছেলে নাঈম হোসেন (২৫)।

র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, কর্নকাঠি গ্রামের মোল্লা বাড়ি সংলগ্ন সড়কে জাল টাকার নোট ক্রয়-বিক্রয়ের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব সদস্যরা অভিযান চালায়। এসময় র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে মিজান ও নাঈম পালানোর চেষ্টাকালে র‌্যাব সদস্যরা তাদের আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিজান জানায়, সে নগদ ২০ হাজার টাকায় ১ লাখ জাল টাকার নোট নাঈমের কাছে বিক্রির জন্য ঘটনাস্থলে আসে। এরপর মিজানের সাথে থাকা স্কুল ব্যাগ থেকে ১ লাখ টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়।

সূত্রে আরও জানা গেছে, জাল নোট উদ্ধারের পর মিজান হাওলাদার জানায় সে নিজ বাড়িতে জাল টাকা উৎপাদন করেন। এমন তথ্যের ভিত্তিতে বন্দর থানাধীন চরকাউয়া গ্রামে মিজানের ঘরে অভিযান চালায় র‌্যাব সদস্যরা। ওই অভিযানে আরও ১ লাখ ৮৫ হাজার ৩১৫ টাকার জাল নোট উদ্ধারের পাশাপাশি জাল টাকা ছাপানোর কাজে ব্যবহৃত একটি প্রিন্টার, একটি ল্যাপটপ, চার বোতল প্রিন্টারের কালি, একটি মডেম, তিন প্রকার আঠার কৌটা, কয়েকটি ক্যাবলসহ কয়েক প্রকার সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক অমিত হাসান জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে বরিশাল বন্দর থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।


আরও খবর



জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট পদে লড়বে বাংলাদেশ

প্রকাশিত:শনিবার ১৭ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২১ মে ২০২৫ |

Image

প্রায় ৪০ বছর পর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এই মর্যাদাপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তাকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই পদে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে।

২০২৬ সালের জুনে অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনের জন্য কূটনৈতিক কৌশল ও প্রচারণার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নির্বাচিত হলে তৌহিদ হোসেন ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৭ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮১তম অধিবেশনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

এই পদে নির্বাচিত হলে তিনি দ্বিতীয় বাংলাদেশি হবেন, যিনি সাধারণ পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন। এর আগে ১৯৮০-এর দশকে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় সংসদের স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী এই পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা প্রচারণা শুরু করেছি। এটি বিভিন্ন পর্যায়ে পরিচালিত হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জাতিসংঘে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকা, শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ এবং প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতার কারণে আমরা আশাবাদী, এই নির্বাচনে জয়ী হতে পারবো।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অংশগ্রহণ কেন : এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নয়, বরং এটি পূর্ববর্তী সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতা। ২০২০ সালে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতির পদে নির্বাচনের আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং ২০২৬ সালে এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রুপ থেকে বাংলাদেশের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি জাতিসংঘে জানানো হয়।

জাতিসংঘে মোট পাঁচটি আঞ্চলিক গ্রুপ রয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে প্রতিটি গ্রুপ থেকে সভাপতি নির্বাচিত হয়। বর্তমানে এই পদে রয়েছেন ক্যারিবিয়ান অঞ্চলভুক্ত একজন প্রতিনিধি।

তৌহিদ হোসেন কে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বিসিএস ১৯৮১ ব্যাচের কর্মকর্তা। ১৯৮২ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগদানের পর তিনি প্রশাসন, প্রটোকল ও ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। বিদেশে তিনি দিল্লি, কলকাতা ও দক্ষিণ আফ্রিকায় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে ছিলেন। রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী তৌহিদ হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে পড়াশোনা করেছেন।

তিন প্রতিদ্বন্দ্বী : বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ছাড়াও এই পদে প্রার্থী হয়েছেন জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং সাইপ্রাসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পার্মানেন্ট সেক্রেটারি। যদিও সাইপ্রাস ইউরোপের দেশ, তবে এটি এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রুপের অংশ হিসেবেই গণ্য হয়।

সাধারণত এই পদে কনসেনসাসের ভিত্তিতে প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে থাকলেও এবার তিন জন প্রার্থী থাকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্র হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব : ১৯৮০-এর দশকে যখন হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী এ পদে ছিলেন, তখন বছরের কয়েক মাস নিউ ইয়র্কে অবস্থান করেই দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এই পদ এখন ফুল-টাইম দায়িত্বে পরিণত হয়েছে।

সাবেক একজন কূটনীতিক জানান, বর্তমানে কাজের পরিধি, জটিলতা ও আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতির প্রেক্ষাপটে এই দায়িত্ব অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তাই প্রেসিডেন্টকে বছরের পুরো সময় নিউ ইয়র্কে থাকতে হয়।

তিনি আরও বলেন, যদি বাংলাদেশি প্রার্থী নির্বাচিত হন, তাহলে জাতিসংঘে দেশের অবস্থান আরও জোরদার হবে এবং এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় কূটনৈতিক অর্জন হবে।


আরও খবর



সাইবার স্পেসেও নিষিদ্ধ হলো আ.লীগের কার্যক্রম

প্রকাশিত:রবিবার ১১ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 |

Image

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হলেও সাইবার স্পেস ব্যবহারের মাধ্যমে দলটি এতদিন তার রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। এবার সেটিও বন্ধ করে দিল অন্তর্বর্তী সরকার। সাইবার স্পেসেও নিষিদ্ধ হয়েছে আ.লীগের সকল কার্যক্রম।

রোববার সাইবার স্পেসে আ.লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগামধ্যমে পোস্ট দিয়ে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

উপদেষ্টা আসিফ তার ফেসবুকে লিখেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচার কার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেস-সহ আওয়ামী লীগ এর যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।’

এর আগে, ফ্যাসিবাদবিরোধী তীব্র আন্দোলনের মুখে গতকাল শনিবার (১০ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক শেষে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আ.লীগের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত জানায় সরকার। এবার সাইবার স্পেস ব্যবহারেও নিষিদ্ধ হলো দলটি।


আরও খবর



চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড

প্রকাশিত:বুধবার ১৪ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 |

Image

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের বন্দরে উন্নীত করতে অন্তর্বর্তী সরকার বিশ্বের খ্যাতিসম্পন্ন বন্দর ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

প্রধান উপদেষ্টার চট্টগ্রাম সফরের প্রথম কর্মসূচি হিসেবে বুধবার চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালে বন্দরের সক্ষমতা সম্পর্কে তার কাছে ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, যদি সরকারের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত হয়, তাহলে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতি বদলাতে হলে চট্টগ্রাম বন্দরই আমাদের আশা। এটি ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড। কিন্তু যদি হৃৎপিণ্ড দুর্বল হয়, কোনো ডাক্তারই তা আর ভালো করতে পারে না। তাই একে বিশ্বমানের করতে হবে।

বন্দর ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত বৈশ্বিক পর্যায়ের শীর্ষ সংস্থাগুলোকে আগেও ডাকা হয়েছিল, কিন্তু কার্যকর কোনো অগ্রগতি হয়নি।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এই হৃৎপিণ্ডকে আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। এজন্য আমি নেপাল ও ভারতের সাতটি উত্তর-পূর্ব রাজ্যের (সেভেন সিস্টার্স) কথা বলেছি। যদি তারা এতে যুক্ত হয়, তারা উপকৃত হবে, আমরাও হবো। যারা যুক্ত হবে না, তারা পিছিয়ে পড়বে।

চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে নিজের শৈশবস্মৃতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সফরের জন্য আমি অপেক্ষা করছিলাম। চট্টগ্রাম বন্দর আমার জন্য নতুন কিছু নয়। আমি শৈশব থেকেই এর সঙ্গে পরিচিত। এটি অনেক বদলেছে, তবে দুঃখের বিষয় হলো পরিবর্তন ধীর গতির। আমি যখন সুযোগ পেলাম, তখন থেকেই ভেবেছি কী করা যায়।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বিশ্ব অনেক এগিয়ে গেছে, আর আমরা অনেক পিছিয়ে পড়েছি। কেউ গুরুত্ব দেয় না। এজন্য আমি পরিবর্তনের জন্য চাপ দিচ্ছি। আমি বলেছি বন্দরের পরিচালনার দায়িত্ব বিশ্বের শীর্ষ অপারেটরদের হাতে তুলে দিতে। আশা করি সবাই একদিন বুঝবে।


আরও খবর



রাজধানীবাসী ৯ বছরে ৩১ দিন নির্মল বাতাস পেয়েছে

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৫ এপ্রিল 20২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 |

Image

গত নয় বছরে তিন হাজার ১১৪ দিনের মধ্যে মাত্র ৩১ দিন নির্মল বা ভালো বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে পেরেছে রাজধানীর মানুষ। অর্থাৎ বছরের মাত্র এক শতাংশ সময় ঢাকাবাসী বিশুদ্ধ বাতাস পাচ্ছে। অন্যদিকে বছরের অর্ধেকের বেশি সময় অস্বাস্থ্যকর, চরম অস্বাস্থ্যকর বা দুর্যোগপূর্ণ বাতাস ফুসফুসে টেনে নিচ্ছে ঢাকাবাসী।

'বিশ্ব ধরিত্রী দিবস ২০২৫: বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, 'বায়ুদূষণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বৃদ্ধ ও শিশুরা। আমরা বৃদ্ধরা তো কয়েকদিন পর মরেই যাব। কিন্তু আগামী দিনের নাগরিক শিশুদের অবস্থাটা কি হবে? আমাদের বর্তমান পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছেন।তিনি (অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে) দায়িত্ব নেওয়ার শুরুতে যে ভাষায় কথা বলতেন, এখন কিন্তু তা পারছেন না। এটা বাস্তবতা।'

নুর মোহাম্মদ বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির কথা দীর্ঘদিন থেকে বলা হচ্ছে। এটা কারা করতে দিচ্ছে না, কেন করতে দিচ্ছে না? সৌরবিদ্যুৎ ক্ষেত্রে বাধা আসছে।

বাধা দিচ্ছেন যারা বিদ্যুত (ব্যবসা) নিয়ন্ত্রণ করেন। তারা এদেশের সবচেয়ে বড় পুঁজিপতি। যারা পরিবর্তন করতে দিতে চান সেই সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। এজন্য বৃহত্তর আন্দোলন দরকার।

সংবাদ সম্মেলনের বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে নবায়নযোগ্য জ্বালানীর ভূমিকা নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার যুগ্ম সম্পাদক ও ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।

প্রবন্ধে তিনি ঢাকার আমেরিকান দূতাবাস থেকে প্রাপ্ত ২০১৬ হতে ২০২৪ সালের বায়ুমানসূচক (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স-একিউআই) ও তথ্য‌-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে রাজধানীর বায়ুদূষণের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।

পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৬ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত নয় বছরের তিন হাজার ১১৪ দিনের মধ্যে ঢাকাবাসী মাত্র ৩১ দিন নির্মল বায়ু সেবন করতে পেরেছে। এসময় রাজধানীতে সহনীয় বা গ্রহণযোগ্য মানের বাতাস ছিল ৬২৪ দিন যা মোট দিনের ২০ শতাংশ। ২৮ শতাংশ সময়জুড়ে অর্থাৎ, ৮৭৮ দিন রাজধানীর বাতাস ছিল সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর।

গত নয় বছরে ৮৫৩ দিন অস্বাস্থ্যকর ও ৬৩৫ দিন খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাস ছিল রাজধানীতে যা মোট সময়ের ৪৮ শতাংশ। এসময় ঢাকার বাসিন্দারা সবচেয়ে খারাপ অর্থাৎ দুর্যোগপূর্ণ বাতাস সেবন করেছে ৯৩ দিন যা মোট দিনের ৩ শতাংশ। ২০২৩ সালে ৩৬৫ দিনের মধ্যে ১৪ দিন ছিল অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর বা দুর্যোগপূর্ন যা ২০২৪ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ দিনে।

প্রসঙ্গত, বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে তা ভালো বা বিশুদ্ধ বাতাস। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে সহনীয় বা গ্রহণযোগ্য। সূচক ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর ধরা হয়। ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালেই সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ বিবেচিত।

সংবাদ সম্মেলনে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার-এর বরাত দিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশ বায়ুদূষণে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর একটি। ২০২১ ও ২০২৩ সালে বায়ুদূষণে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল প্রথম। গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় ও দূষিত শহর হিসেবে ঢাকার অবস্থান ছিল তৃতীয়।

বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে বায়ু দূষণের কারণে ২ লাখ ৩৬ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার (সিআরইএ) এর গবেষণা বলছে, বায়ুদূষণে দেশে প্রতিবছর ৫ হাজার ২৫৮ শিশুসহ এক লাখ ২ হাজার ৪৫৬ জনের অকালমৃত্যু ঘটে। এক‌ই সঙ্গে তা পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।

নবায়নযোগ্য জ্বালানীর ব্যবহার নিয়ে অধ্যাপক কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, 'জীবাশ্ম জ্বালানির ক্ষতিকর প্রভাব রোধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানীর শতভাগ নিশ্চিত করতে পারলেই নির্মল বায়ু নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি বলতে বোঝায় সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জলবিদ্যুৎ, ভূ-তাপীয় শক্তি ও বায়োমাস শক্তির মতো প্রাকৃতিক উৎস থেকে প্রাপ্ত শক্তি, যা পুনরায় ব্যবহারযোগ্য এবং পরিবেশবান্ধব। জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বাড়ে, যা গ্রিনহাউস প্রভাব সৃষ্টি করে এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি করে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করলে কার্বন নিঃসরণ প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব।'

বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক এম ফিরোজ আহমেদ বলেন, যানবাহনের ধোঁয়া বা অন্যান্য স্থানীয় উৎস ছাড়াও বায়ুদূষণের একটি বড় উৎস আন্তদেশীয় দূষণ। এই দূষণের পরিমাণ অনেক বেশি। এর ওপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। বাংলাদেশে দূষণের সব উৎস বন্ধ করলেও এটা থেকে মুক্তি নেই। এর জন্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

বর্তমান পরিবেশবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান যখন পরিবেশ আন্দোলনকর্মী হিসেবে সক্রিয় ছিলেন তখন যে গতি ছিল, এখন তা দেখা যাচ্ছে না কেন- এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বাপার সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর কবির বলেন, 'খাঁটি বাংলায় বললে, আমরা একটা গ্যাঁড়াকলের মধ্যে আছি। আমরা (পরিবেশ উপদেষ্টার সঙ্গে) দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর রাজপথে একসঙ্গে এই ইস্যুগুলো নিয়ন্ত্রণের কথা বলেছি। ফলে আমরা বলছি, রিজ‌ওয়ানা আপাকে ব্যর্থ হ‌ওয়া যাবে না। কারণ, উনি আবার যখন (পরিবেশ আন্দোলনকর্মী হিসেবে) ফিরে আসবেন তখন আমাদের কথা মানুষ শুনবে না। (মানুষ বলবে) আপনি তো ছিলেন ক্ষমতায়, আপনি তো পারেননি।'

এসময় সংবাদ সম্মেলন থেকে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রতি আটটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। উল্লেখযোগ্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে মেয়াদউত্তীর্ণ ও ফিটনেসবিহীন যানবাহন বন্ধ করে বৈদ্যুতিক ও হাইব্রিড যানবাহনের ব্যবহার বাড়ানো, ইটের বিকল্প হিসেবে পরিবেশবান্ধব ব্লকের ব্যবহার বাড়ানো, বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ ও বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করা। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা, বিদ্যমান জ্বালানি নীতিগুলো সংশোধন ও নির্মল বায়ু আইন প্রণয়ন করা, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও শিল্প কারখানায় বিশ্বমানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নিঃসরণমান নির্ধারণ ও এর প্রয়োগ নিশ্চিত করা।


আরও খবর