মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ রাখাইনে সশস্ত্র সরকারবিরোধী রাজনৈতিক গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন অন্তত ২৮ জন পুলিশ ও ১০ জন সেনা সদস্য। মঙ্গলবার এএ যোদ্ধাদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত এক যুদ্ধ শেষে এই পুলিশ ও সেনা সদস্যরা তাদের অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছে বলে জানা গেছে।
মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন অবশ্য সেদিনই এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্যকে ‘প্রোপাগান্ডা’ বলে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, তারা পুরো দেশকে ধ্বংস করে দিতে চাইছে এবং এ কারণেই এসব প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। তবে এ ঘটনার পরের দিন বুধবার রাখাইনের রাজধানী সিটওয়েতে কারফিউ জারি করেছে জান্তা। সিটওয়ের বিভিন্ন সড়কে ট্যাংক চলাচল করেছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
আরাকান আর্মি বহু বছর ধরে রাখাইনের আঞ্চলিক স্বায়ত্বশাসনের জন্য যুদ্ধ করছে আরাকান আর্মি। গত মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী জোট ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (নাগ) অন্যতম সদস্য এই গোষ্ঠীটি। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে সেনা ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে লড়াই শুরু হয়েছে নাগের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর। এসব গোষ্ঠীর মধ্যে আরাকান আর্মিও রয়েছে।
তিন সপ্তাহের এই সংঘাতে মিয়ানমারের কিছু শহর এবং সামরিক স্থাপনা দখল করেছে জান্তাবিরোধী জোট নাগের বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী, যা ২০২১ সালে অভুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা আসা জান্তাকে সবচেয়ে বড় পরীক্ষার মধ্যে ফেলেছে।
মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে জাও মিন তুন জানান, বর্তমানে মিয়ানমারের শান, রাখাইন ও কায়াহ রাজ্যে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই চলছে সেনা ও পুলিশ সদস্যদের। সেসব লড়াইয়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদ্রোহী যোদ্ধা নিহত হয়েছেন বলেও দাবি করেছেন জান্তা মুখপাত্র।
বাস্তব পরিস্থিতি অবশ্য তার দাবিকে তেমন সমর্থন করছে না। কারণ চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে দেশটির উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী প্রদেশ চিনে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের সঙ্গে যুদ্ধের এক পর্যায়ে রণে ভঙ্গ দিয়েছেন মিয়ানমারের সেনবাহিনীর সদস্যরা।
শুধু তা ই নয়, এই সেনা সদস্যদের মধ্যে অন্তত ৪৩ জন সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের মিজোরাম রাজ্যে পালিয়ে গেছেন।