আগের বারের মতোই ২০২৫ সালে বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনকে হজ করার সুযোগ দিচ্ছে সৌদি আরব, তবে এবার খরচ কমিয়েও বাড়ছে না হজযাত্রী।
খরচা বেড়ে যাওয়ায় ২০২৪ সালে প্রায় ৩৩ শতাংশ কোটা পূরণ হয়নি, হজে গিয়েছিলেন ৮৫ হাজার ২৫৭ জন। এবার প্রাথমিক নিবন্ধনই সেরেছেন ৮৩ হাজার ৫২৭ জন, যা চূড়ান্ত নিবন্ধনে আরো কমতে পারে। তার মানে এবার হজযাত্রী কমছে অন্তত ১ হাজার ৭৩০ জন।
আগামী বছরের হজের প্রাথমিক নিবন্ধনের সময় গত বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। এর আগে দফায় দফায় সময় বাড়ানো হলেও নতুন করে আর সেই সুযোগ দিচ্ছে না ধর্ম মন্ত্রণালয়।
হজ অনুবিভাগের উপসচিব মামুন আল ফারুক বলেন, ২০২৫ সালের জন্য হজের প্রাক, প্রাথমিক নিবন্ধনের সময়সীমা আর বাড়ছে না। আমাদের শিগগির সৌদি সরকারকে কোটা (নিবন্ধিতদের তালিকা) পাঠিয়ে দিতে হবে।
হজ পোর্টালের তথ্যানুযায়ী, এবারের হজের জন্য যে ৮৩ হাজার ৫২৭ জন প্রাথমিক নিবন্ধন সেরেছেন, তার মধ্যে সরকারি মাধ্যম বেছে নিয়েছেন ৪ হাজার ৯৮০ জন। বাকি ৭৮ হাজার ৫৪৭ জন বেসরকারি মাধ্যমে হজে যেতে চান।
গত ২৫ আগস্ট ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, হজের প্রাথমিক নিবন্ধন ১ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে শেষ হবে ৩০ নভেম্বর। এর মধ্যে সময়সীমা কমিয়ে-বাড়িয়ে শেষ পর্যন্ত তা ২৬ ডিসেম্বর বলে ঠিক করা হয়।
যারা প্রাথমিক নিবন্ধন সেরেছেন, তাদের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে চূড়ান্ত নিবন্ধন সম্পন্ন করতে বলেছে সরকার।
হজের কোটা পূরণ না হওয়ার বিষয়ে হজ এজেন্সিস অব বাংলাদেশের (হাব) মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার বলেন, হজে মূলত তারাই যান, যার জন্য ফরজ, যার সঙ্গতি আছে। সেক্ষেত্রে এরকম লোক যদি কম হয়, সেটা তো আর বাড়ানোর সুযোগ থাকে না।
তিনি বলেন, তবে এ বছর হজযাত্রী যা আছেন, তারা সবাই প্রকৃত হজযাত্রী। কেননা অন্যবারের মতো পলিটিক্যাল হাজি নেই এবার। তারপর যারা অবৈধভাবে টাকা-পয়সা কামিয়েছেন, তাদের মধ্যে অনেকে বারবার হজে যেতেন, তারা এবার যাচ্ছেন না। আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা তাই বলে।
খাবার খরচ যুক্ত করে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ঘোষিত সাধারণ হজ প্যাকেজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার টাকা আর বিশেষ হজ প্যাকেজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। এর সঙ্গে কোরবানি বাবদ ৭৫০ রিয়ালের সমপরিমাণ অর্থ সঙ্গে নিতে হবে।
অন্যদিকে এবার উড়োজাহাজ ভাড়া প্রায় ২৭ হাজার টাকা কমিয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজের মূল্য কমানো হয়েছে। তবে এবার খাবার খরচ হজ প্যাকেজে ধরা হয়নি।
সরকারিভাবে এবার প্যাকেজ-১-এর সর্বনিম্ন খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা। আর যারা সাধারণ প্যাকেজ-২ নেবেন, তাদের সর্বনিম্ন খরচ দিতে হবে ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা।
এর সঙ্গে খাবার বাবদ আরো ৪০ হাজার টাকা এবং কোরবানি বাবদ ৭৫০ সৌদি রিয়ালও গুনতে হবে। সেই হিসাবে হজ প্যাকেজের খরচ আগের চাইতে খুব একটা হেরফের হয়নি। তা ছাড়া প্যাকেজ-১-এ খরচ কমানো হলেও আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে মক্কা ও মদিনা থেকে অনেকটা দূরে।
এভাবে সুবিধা কমিয়ে প্যাকেজমূল্য কমানোর বিপক্ষে হাবের মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার। তার ভাষ্যে, হজের বিমানভাড়া একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি দিয়ে আরো যৌক্তিক করা যেত। ভাড়া কমানো গেলে হয়তো আরো কিছু হজযাত্রী বাড়ার সুযোগ থাকত।