Logo
শিরোনাম

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পৌনে ৮ লাখ শিশু

প্রকাশিত:শুক্রবার ২১ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সৃষ্ট বন্যায় ইতোমধ্যে ২০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৭ লাখ ৭২ হাজারের বেশি শিশু।শুক্রবার (২১ জুন) এসব তথ্য জানায় জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক জরুরি শিশু তহবিল-ইউনিসেফ।

বাংলাদেশে সংস্থাটির প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেছেন, বন্যাদুর্গত এসব শিশুদের জন্য জরুরি সহায়তার প্রয়োজন। বন্যার পানি বাড়ার সময় শিশুরাই সবচেয়ে বেশি অরক্ষিত হয়ে পড়ে। ডুবে মারা যাওয়া, অপুষ্টি ও মারাত্মক পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়া, বাস্তুচ্যুতির আতঙ্ক এবং জনাকীর্ণ আশ্রয়কেন্দ্রে নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ে শিশুরা।

ইউনিসেফ বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে জানিয়ে শেলডন ইয়েট বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও মাঠপর্যায়ের অংশীদের সঙ্গে সমন্বয় ও অংশীদারিত্বে আমরা গত পাঁচ দিনের মধ্যে প্রায় এক লাখ বন্যাকবলিত মানুষের কাছে নিরাপদ পানি বিতরণ করেছি। ১০ লিটার ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ৩ হাজারের বেশি পানির পাত্র বিতরণ করেছি। পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেলে তা মোকাবিলায় আমরা বিভিন্ন গুদাম থেকে জরুরিভিত্তিতে অতিরিক্ত জরুরি সরঞ্জাম আনছি।

ভারি বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদনদীর পানি বেড়ে সৃষ্ট বন্যায় নাজেহাল সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণার মানুষ। তবে নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায় কমতে শুরু করেছে এসব নদ-নদীর পানি। সিলেটের ১৩টি উপজেলায় ৬৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬১ আশ্রয়কেন্দ্রে ২১ হাজার ৭৮৬ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

ইউনিসেফের বিবৃতিতে বলা হয়, সিলেট বিভাগে ৮১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যার পানিতে ডুবেছে। ৫০০ প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এ ছাড়া প্রায় ১৪০টি কমিউনিটি ক্লিনিক বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কঠিন এই সময়ে সম্ভাব্য সহিংসতা নিরসনে এবং আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে শিশুদের সহযোগিতা করতে শিশু সুরক্ষা সমাজকর্মীরা পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছে।


আরও খবর

৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা

মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫




নওগাঁয় একই মোটরসাইকেলে বাড়িতে ফেরার পথে সড়কে ঝরলো ৩শিক্ষার্থীর প্রাণ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৫ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁয় একই মোটরসাইকেল যোগে বাড়িতে ফেরার পথে সড়কে ঝরলো ৩ জন তরুন শিক্ষার্থীর প্রাণ।

মর্মান্তিক এ সড়ক দূর্ঘটনাটি ঘটে গত মঙ্গলবার সন্ধার পূর্ব মহূর্তে নওগাঁ টু জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কের নওগাঁ জেলাধীন পত্নীতলা উপজেলার পার্বতীপুর মোড় নামক স্থানে।

নিহত ৩ জন শিক্ষার্থী হলেন, নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের মাষ্টারপাড়া মহল্লার বেথুল আশরাফ ওরফে বাবুর ছেলে সুনিবর আশরাফ (১৭), আখরারুজ্জামানের ছেলে হৃদয় (১৭) ও শাহজান আলীর ছেলে সাদনান সাকিব (১৭)। একই দূর্ঘটনায় একই এলাকায় বসবাসকারী ৩ জন শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় নিহতদের পরিবার সহ স্বজন ও এলাকাবাসীর মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছাঁয়া। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, নিহত ও আহত ৩ জন শিক্ষার্থীই হলেন বন্ধু। তারা বাড়ি থেকে পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর বাজারে বেড়াতে যান এবং সেখান থেকে ফেরার পথে পত্নীতলা উপজেলার পার্বতীপুর মোড় নামক স্থানে পৌছার পর তাদের মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হাড়িয়ে সড়কের ধারে দাঁড়িয়ে রাখা একটি বাসের পেছনে ধাক্কা লাগে মোটরসাইকেলটি বাসের বাঙ্কার ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে যায়। এতে দূর্ঘটনাস্থলেই সুনিবর আশরাফের মৃত্যু হয়। সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মিরা নিহত আশরাফসহ আহতদেরকে উদ্ধার করে পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন। সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুনিবর আশরাফকে মৃত ঘোষণা করেন এবং অপর দু' জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে নিয়ে যাওয়ার সময় পথে হৃদয় হোসেন মারা যায়। এবং আহত সাদনানকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার শারীরিক অবনতি হলে রাত ১১ টার দিকে তাকে আইসিইউ তে নেওয়া হয়। এরপর রাত আড়াইটার দিকে তার মৃত্যু হয়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পত্নীতলা থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ মোঃ এনায়েতুল বলেন, সুনিবর আশরাফ ঘটনাস্থলেই মারা যায়। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না থাকায় এবং তাদের অনুরোধে মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এবং আহত হৃদয় হোসেনকে রাজশাহী নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয় ও চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে সাদনানেরও মৃত্যু হয়।


আরও খবর



ছয় দিন মহাসড়কে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-লরি চলাচল বন্ধ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৫ জুন ২০২৫ |

Image

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৪ থেকে ৬ জুন এবং ১২ থেকে ১৪ জুন মোট ৬ দিন মহাসড়কে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও লরি চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে পশুবাহী যানবাহন, নিত্যপ্রয়োজনীয় গৃহস্থালি ও খাদ্যদ্রব্য, পচনশীল দ্রব্য, গার্মেন্টসসামগ্রী, ওষুধ, সার ও জ্বালানি বহনকারী যানবাহন এর আওতামুক্ত থাকবে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত ঈদযাত্রা ও পশুর হাটকেন্দ্রিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢাকা মহানগর থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাত্রা করবেন। ১ কোটির বেশি মানুষ ঢাকা মহানগর ত্যাগ করেন এবং প্রায় ৩০ লাখ মানুষ ঢাকায় প্রবেশ করেন। ঘরমুখী মানুষের ঈদযাত্রা এবং কোরবানির পশুর হাটসংলগ্ন যানবাহনের চলাচল নির্বিঘ্ন করার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এমন অবস্থায় নিম্নবর্ণিত নির্দেশনা অনুসরণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।

রুট পারমিটবিহীন বাস কোনোক্রমেই চলাচল করতে পারবে না। আন্তজেলা বাসগুলোকে টার্মিনালের ভেতরে যাত্রী উঠিয়ে সরাসরি গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই টার্মিনালের বাইরে সড়কের ওপর বাস দাঁড় করানো যাবে না। অনুমোদিত কাউন্টার ছাড়া রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানো ও নামানো যাবে না।


আরও খবর

৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা

মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫




বিশ্বব্যাপী কমেছে খাদ্যের দাম, জানাল এফএও

প্রকাশিত:সোমবার ০৯ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ১৬ জুন ২০২৫ |

Image

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) জানিয়েছে, মে মাসে বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম ০.৮ শতাংশ কমেছে। সবচেয়ে বেশি কমেছে উদ্ভিজ্জ তেল ও চিনি জাতীয় পণ্যের দাম।

৬ জুন প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের বরাতে সিনহুয়া জানায়, খাদ্যমূল্য সূচকের সবচেয়ে বড় উপাদান—শস্য ও খাদ্যশস্যের দাম মে মাসে ১.৮ শতাংশ কমেছে। এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলে ভালো ভুট্টার ফলন এবং বৈশ্বিকভাবে গমের চাহিদা কমেছে।

তবে ইন্দিকা চালের চাহিদা ও মার্কিন ডলারের মূল্য পতনের কারণে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। তা সত্ত্বেও সামগ্রিক সূচকের ওপর তা প্রভাব ফেলেনি।

মে মাসে মাংসের দাম বেড়েছে ১.৩ শতাংশ। গরু, খাসি ও শূকরের মাংসের চাহিদা বাড়ায় এই প্রবণতা দেখা গেছে।

বিশেষ করে জার্মানিতে পা ও মুখের রোগের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় দেশটির বাজারে চাহিদা বাড়লে শূকরের মাংসের দাম বেড়ে যায়। তবে বার্ড ফ্লু সংক্রমণের শঙ্কায় মুরগির মাংসের চাহিদা কমেছে।

এদিকে দুগ্ধজাত পণ্যের দাম বেড়েছে ০.৮ শতাংশ। এশিয়ার চাহিদার কারণে মাখনের দাম রেকর্ড উচ্চতায় রয়েছে, ফলে পনির ও গুঁড়া দুধের দামও বেড়েছে। সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এসেছে উদ্ভিজ্জ তেল ও চিনির দামে।

উদ্ভিজ্জ তেলের দাম কমেছে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ, যদিও এটি এখনো গত বছরের তুলনায় ১৯.১ শতাংশ বেশি। পাম, রেপসিড, সয়াবিন ও সূর্যমুখী তেলের দাম কমে গেছে—এর পেছনে উৎপাদন বৃদ্ধি এবং যুক্তরাষ্ট্রে চাহিদা কমে যাওয়াকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে এফএও।

এদিকে খাদ্য ও পানীয় প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে চাহিদা কমে যাওয়ায় এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিস্থিতি অনিশ্চিত থাকায় চিনির দাম কমেছে ২.৬ শতাংশ। সূত্র : ইউএনবি


আরও খবর



ইরানের হামলার ভয়ে খাবার মজুত করছে ইসরায়েলিরা

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৩ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

তেহরানে হামলার জবাবে ইরানও ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালাতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে জেরুজালেমের সুপারশপগুলোয় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে খাদ্য ও পানি। মজুত করার জন্য মানুষ এখন এগুলো হুমড়ি খেয়ে কিনছে।

গত রাত ৩টার দিকে সাইরেনের শব্দ ও মোবাইলের সতর্কবার্তায় ঘুম ভাঙে ইসরায়েলের জনগণের। দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে মানুষকে জানানো হয়, তাদের সামনে একটি গুরুতর হুমকি রয়েছে। তাই, সবাই যেন আশ্রয়কেন্দ্রের কাছাকাছি স্থানে অবস্থান করে।

ইসরায়েলের জরুরি সেবা বিভাগ জানিয়েছে, সারা দেশে রক্ত সংগ্রহের কার্যক্রম জোরদার করা হচ্ছে এবং যেসব রোগী বাড়ি ফিরে যাওয়ার মতো কিছুটা সুস্থ, তাদেরকে ছেড়ে দিচ্ছে ইসরায়েলের হাসপাতালগুলো।

অন্যদিকে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পশ্চিম তীরে সব ফিলিস্তিনি শহরে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

এইসব প্রস্তুতির মূল কারণ পাল্টা হামলার আশঙ্কা। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইরান থেকে প্রায় ১০০টি ড্রোন ইতোমধ্যে ইসরায়েলের নিক্ষেপ করা হয়েছে। 

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে বাধা দিতে ইরানে অপারেশন রাইজিং লায়ন নাম দিয়ে হামলা চালিয়েছে ইসরাযেল। রাতভর চলা এই হামলায় ইরানের একাধিক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। এই হামলার মাত্রা, ব্যাপকতা ও সময়কাল এমনভাবে পরিকল্পিত যে এটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের ইঙ্গিত বলেই মন্তব্য করছেন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। ইতিমধ্যে পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরান। শতাধিক যুদ্ধড্রোন দিয়ে ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে তারা। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এখনো ক্ষয়ক্ষতির কোনো তালিকা পাওয়া যায়নি। 


আরও খবর



৩৮ বছর বয়সে বোয়িং ৭৭৭–৩০০ইআর-এর ক্যাপ্টেন শারহান

প্রকাশিত:সোমবার ২৬ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

এ বি এম রওশন কবীর : মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ)

ইঞ্জিন হয়তো একটি বিমানের হৃদয়, কিন্তু সত্যিকারের আত্মা হলো পাইলট নিজেই।—ওয়াল্টার র‍্যালে

এই কথাগুলো একেবারে মিলে যায় ক্যাপ্টেন শারহান আলীর অসাধারণ যাত্রার সঙ্গে। আকাশে ওড়ার স্বপ্ন নিয়ে শুরু করা সেই পথচলা আজ পৌঁছেছে এক গৌরবময় অধ্যায়ে। মাত্র ৩৮ বছর বয়সে তিনি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর-এর অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন—বাংলাদেশে সবচেয়ে কম বয়সে এই মর্যাদাপূর্ণ পদের অধিকারী। তার এই সাফল্য শুধু একজন পাইলটের অর্জন নয়, এটি আমাদের এভিয়েশন ইতিহাসে এক সাহসী এবং প্রেরণাদায়ক অধ্যায়।

এভিয়েশন শুধু একটি শিল্প নয়, এটি সাহসী স্বপ্নগুলোর বাস্তব প্রতিচ্ছবি। ক্যাপ্টেন শারহানের জন্য এই যাত্রা শুরু হয়েছিল ঐতিহ্য ও উচ্চাকাঙ্ক্ষার মিশেলে। আকাশের সঙ্গে তার এই গভীর সম্পর্ক জন্ম নেয় এক চিরন্তন উত্তরাধিকার থেকে—দাদার পর বাবা, আর এবার তিনিও। আকাশকে জয় করার ইচ্ছা শুধু রক্তে পাওয়া নয়, বরং তার নিজের অদম্য ইচ্ছা ও স্বপ্নও তাকে তাড়িয়ে নিয়ে গেছে আরও উচ্চতায়, আরও দূরে।

১৯৮৬ সালের ২৯ জুলাই জন্ম নেওয়া ক্যাপ্টেন শারহানের ককপিটে পৌঁছানোর পথ শুধু হাজার হাজার ঘণ্টার আকাশে ওড়ার অভিজ্ঞতা আর কঠোর প্রশিক্ষণেই গড়া নয়—এর পেছনে রয়েছে এক গর্বিত পারিবারিক ঐতিহ্য, যা গভীরভাবে এভিয়েশনের সঙ্গে জড়িত। তিনি একজন তৃতীয় প্রজন্মের পাইলট। তাঁর দাদা ক্যাপ্টেন সিকান্দার আলী ছিলেন পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের ক্যাপ্টেন, যিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ হন। তাঁর বাবা, ক্যাপ্টেন শোয়েব আলী, নিরলস নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করেছেন। আজ ক্যাপ্টেন শারহান সেই গৌরবময় উত্তরাধিকার বয়ে নিয়ে চলেছেন দৃপ্ত পায়ে।

ক্যাপ্টেন শারহানের আকাশপথে যাত্রা শুরু হয়েছিল বাংলাদেশ ফ্লাইং ক্লাবে, যেখানে তিনি সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের (CAAB) অধীনে CPL ও ATPL লাইসেন্স অর্জন করেন। এখন পর্যন্ত তাঁর নামের পাশে যুক্ত হয়েছে ৯,৩০০ ঘণ্টারও বেশি ফ্লাইট অভিজ্ঞতা। তার অভিজ্ঞতার ঝুলিতে রয়েছে Dash-8, Fokker-28, Airbus-310 এবং Boeing 737 ও 777—এইসব আধুনিক বিমান পরিচালনার দক্ষতা। ২০০৮ সালে একটি প্রাইভেট এয়ারলাইন্সে পেশাগত ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। আর মাত্র ২৪ বছর বয়সে, মাত্র ৫০০ ঘণ্টার ফ্লাইট সময় নিয়ে তিনি যোগ দেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে—যেখান থেকে শুরু হয় এক অনন্য উত্থানের গল্প।

চ্যালেঞ্জ এসেছে বারবার, কিন্তু প্রত্যেকটিকে জয় করেই সামনে এগিয়েছেন ক্যাপ্টেন শারহান। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে ক্যাপ্টেন হিসেবে পদোন্নতি পান শারহান, যদিও বৈশ্বিক মহামারির ধাক্কা না থাকলে এই অর্জন আরও আগে আসতে পারত। আর ৩৮ বছর বয়সে বোয়িং ৭৭৭-এর ক্যাপ্টেন হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে তিনি শুধু নিজের ক্যারিয়ারেই নয়, বাংলাদেশের এভিয়েশন ইতিহাসেও স্থায়ীভাবে জায়গা করে নিয়েছেন।

তাঁর ক্যারিয়ারের উল্লেখযোগ্য অধ্যায়গুলো সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। বোয়িং ৭৭৭-এ ফার্স্ট অফিসার হিসেবে ভিভিআইপি ফ্লাইট পরিচালনা, ভিয়েতনাম থেকে মিশর পর্যন্ত ১২ ঘণ্টার টানা ফেরি ফ্লাইট সফলভাবে সম্পন্ন করা, কিংবা সিত্রাং ও রেমাল-এর মতো ঘূর্ণিঝড়ের সময়ও সাহসিকতার সঙ্গে উড়োজাহাজ পরিচালনা—প্রতিটি অভিজ্ঞতা তাঁর দক্ষতা, শৃঙ্খলা ও অধ্যবসায়ের উজ্জ্বল প্রতিচ্ছবি। প্রতিটি ফ্লাইটই যেন তাঁর পাইলট জীবনের মাইলফলক, যেখানে ফুটে ওঠে কঠোর প্রশিক্ষণ আর নিখুঁত পেশাদারিত্বের ছাপ।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৭৭–৩০০ইআর-এর ক্যাপ্টেন হিসেবে ক্যাপ্টেন শারহানের প্রথম যাত্রা শুধু এয়ারলাইন্সের জন্য নয়, বরং পুরো জাতি এবং আন্তর্জাতিক এভিয়েশন জগতের জন্যও এক গর্বের মুহূর্ত। এই অর্জন আগামীর স্বপ্নদ্রষ্টা পাইলটদের জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা দেয়—স্বপ্ন দেখো বড় করে, পরিশ্রম করো নিষ্ঠার সঙ্গে, আর সুযোগ আসলে আত্মবিশ্বাসের ডানায় ভর করে আকাশ ছুঁয়ে ফেলো।

তার গল্প বাংলাদেশে বিশেষ করে তরুণ স্বপ্নদ্রষ্টাদের জন্য এক বিশাল আশা এবং প্রেরণার উৎস, যারা হয়তো ভাবতে পারেন এমন উচ্চতা তাদের জন্য অসম্ভব। তিনি প্রমাণ করেছেন, আকাশ আর সীমা নয়—এটি শুধু শুরু।

যখন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এই ঐতিহাসিক সাফল্য উদযাপন করছে, তখন একযোগে তারা তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছে—একটি ভবিষ্যতের জন্য যা গড়ে উঠবে উৎকর্ষ, নতুনত্ব, এবং সুযোগের উপর। ক্যাপ্টেন শারহান আলীর যাত্রা শুধু ব্যক্তিগত বিজয় নয়; এটি দেশের সাহস, দূরদৃষ্টি এবং ধৈর্যের এক জাতীয় প্রতীক।

আসুন এই গল্প হোক আরও অনেক উৎকর্ষতার অধ্যায়ের সূচনা।

লেখক : মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ)


আরও খবর