Logo
শিরোনাম

ব্যাংকখাত থেকে ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে

প্রকাশিত:সোমবার ২৮ অক্টোবর ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ধনকুবের ও ব্যবসায়ীরা প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সহায়তায় ব্যাংক খাত থেকে ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন। অর্থাৎ সবল ব্যাংকগুলো দখলে নিতে হাসিনার ঘনিষ্ঠ ধনকুবেরদের সাহায্য করেছে ডিজিএফআই, এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

আগস্টে শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব পান আহসান এইচ মনসুর। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে (এফটি) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংক দখলের পর নতুন শেয়ারহোল্ডাররদের ঋণ ও আমদানি খরচ বেশি দেখিয়ে প্রায় ১৬.৭ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা) পাচার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, যেকোনো আন্তর্জাতিক মানদণ্ডেই এটি সবচেয়ে বড় এবং সর্বোচ্চ ব্যাংক ডাকাতি। এই মাত্রায় আর কোথাও ব্যাংক লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি। আর এর পেছনে ছিল রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা। এবং গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা (ব্যাংকের সাবেক সিইওদের) মাথায় বন্দুক না ধরলে এ কাজ করা যেত না।

গভর্নর বলেন, এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম আর তার সহযোগীরা ডিজিএফআইয়ের সহায়তায় ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে অন্তত ১০ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন। প্রতিদিনই তারা নিজেদেরকে ঋণ দিচ্ছিলেন, বলেন তিনি।

তবে এস আলমের পক্ষে আইনজীবী প্রতিষ্ঠান কুইন ইমানুয়েল উরকুহার্ট অ্যান্ড সুলিভান এক বিবৃতিতে বলেছে, এস আলম গ্রুপ গভর্নরের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা দাবি করেছে, মনসুরের অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই।

প্রতিষ্ঠানটি আরও বলেছে, অন্তর্বর্তী সরকার এস আলম গ্রুপ ও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে প্রচারণা চালাচ্ছে।

গভর্নরের অভিযোগকে বিস্ময়কর এবং অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি উল্লেখ করেছে, এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি; ডিজিএফআইয়ের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যায়নি।

টানা দেড় দশকের বেশি সময় বাংলাদেশের ক্ষমতায় ছিলেন শেখ হাসিনা। তবে তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের শাসনামলে ভোট কারচুপি, বিরোধীদের কারাদণ্ড ও দমন-পীড়ন এবং ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে ওঠে বারবার। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান হাসিনা।

নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর লোপাট হওয়া অর্থের সন্ধান পেতে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনের আওতায় আনতে উদ্যোগ নেওয়া হয়।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক কর্মকর্তা আহসান এইচ মানসুর গত মাসে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছিলেন, শেখ হাসিনার সহযোগীদের বিদেশে থাকা সম্পদের তদন্তে যুক্তরাজ্যের সহায়তা চেয়েছেন তিনি।

হাসিনার শাসনামলে শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, হাসিনার শাসনামলে ব্যাংকের পর্ষদ সদস্যদেরকে বাড়ি থেকে তুলে এনে হোটেলসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যেতেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। তারপর বন্দুকের মুখে তাদের ব্যাংকের সমস্ত শেয়ার এস আলমের কাছে বিক্রি করতে এবং পরিচালকের পদ থেকে ইস্তফা দিতে বলতেন। একের পর এক ব্যাংকে তারা এ কাজ করেছে, বলেন গভর্নর।

একটি ব্যাংকের সাবেক সিইও ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, জোরপূর্বক ব্যাংক দখলের অংশ হিসেবে তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। দেশের অন্যতম বৃহৎ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের সাবেক সিইও মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, ২০১৩ সাল থেকে তৎকালীন সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তাকে চাপে রেখেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সুপারিশ করা ব্যক্তিদের পর্ষদ সদস্য করতে তাকে চাপ দেওয়া হয়। এছাড়া সরকারি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত লোকজন ব্যাংকটির একজন বিদেশি পরিচালকের হোটেল রুমে তল্লাশি চালান।

মান্নান বলেন, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে বোর্ড সভায় যাওয়ার পথে তাকে তুলে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে একজন সিনিয়র প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করার জন্য পুরো একটি কার্যদিবস বসিয়ে রাখা হয়।

এ বছরের সেপ্টেম্বরে মান্নানকে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ইসলামি ব্যাংক থেকে পদত্যাগের ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন, তারা ভুয়া স্টেশনারি নিয়ে ব্যাংকের চিঠি তৈরি করে। আমাকে একটি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে হয়েছিল।

গত এক দশকে অনেকগুলো ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এস আলম গ্রুপ। এ শিল্পগোষ্ঠীর ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকসহ সাতটি ব্যাংকে তাদের উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ রয়েছে।

আহসান এইচ মানসুর বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে দেউলিয়া হওয়া প্রায় ডজনখানেক ব্যাংকের অডিট শেষ করার পর পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তিনি বলেন, আমরা দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে আদালতে প্রমাণ হিসেবে এই অডিট প্রতিবেদন ব্যবহার করতে চাই।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ব্যাংকগুলোর শেয়ার বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এখন কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা এসব ব্যাংকের শেয়ার ভালো মানের জাতীয় বা আন্তর্জাতিক কৌশলগত বিনিয়োগকারীর কাছে বিক্রি করে ব্যাংকগুলোতে ফের মূলধনের জোগান দেওয়া। ব্যাংকগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবস্থাপনার জন্য একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পরিকল্পনাও করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।



আরও খবর



এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের পাঠকৃত ঘোষণাপত্র

প্রকাশিত:শনিবার ০১ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

জুলাই ২০২৪ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে, আমরা বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা এই মর্মে ঘোষণা করছি—

আমরা হাজার বছরের ঐতিহাসিক পরিক্রমায় বঙ্গীয় বদ্বীপের জনগোষ্ঠী হিসেবে এক সমৃদ্ধ ও স্বকীয় সংস্কৃতি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। প্রায় ২০০ বছরের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের পত্তন ঘটে। তবে শোষণ ও বৈষম্য থেকে এ দেশের গণমানুষের মুক্তি মেলেনি। ফলে দীর্ঘ ২৩ বছরের সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হয়। কিন্তু স্বাধীনতার পর দীর্ঘসময় ধরে বাংলাদেশের জনগণকে বারবার গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে হয়েছে। ১৯৯০ সালে ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে সামরিক স্বৈরাচারকে হটিয়েছে। তথাপি, স্বাধীনতার পাঁচ দশক পেরিয়েও আমরা গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে— এমন একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি করতে পারিনি। বরং বিগত ১৫ বছর দেশে একটি নিষ্ঠুর ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল, যেখানে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থে বেপরোয়া ব্যবহার করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছে। বিরোধী মতের কণ্ঠরোধ, গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও অর্থ পাচারকে একটি রাষ্ট্রীয় সংস্কৃতিতে পরিণত করা হয়েছে।


জুলাই ২০২৪-এ ছাত্র-জনতা বিপুল আত্মত্যাগের মাধ্যমে এক অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ দেড় দশক ধরে জেঁকে বসা ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটিয়েছে। কিন্তু আমাদেরকে স্মরণ রাখতে হবে, হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই নতুন স্বাধীনতা কেবল একটি সরকার পতন করে আরেকটি সরকার বসানোর জন্যই ঘটেনি। জনগণ বরং রাষ্ট্রের আষ্টেপৃষ্ঠে জেঁকে বসা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের মাধ্যমে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আকাঙ্ক্ষা থেকে এই অভ্যুত্থানে সাড়া দিয়েছিলো, যেন জনগণের অধিকারভিত্তিক একটি রাষ্ট্র পুনর্গঠিত হয়। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিচ্ছি। এটি হবে একটি গণতান্ত্রিক, সমতাভিত্তিক ও জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দল।


আমরা মনে করি জুলাই ২০২৪ গণঅভ্যুত্থান আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার লড়াই সূচনা করেছে। একটি গণতান্ত্রিক নতুন সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে আমাদেরকে সাংবিধানিক স্বৈরতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সকল সম্ভাবনার অবসান ঘটাতে হবে। আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন আমাদের অন্যতম প্রাথমিক লক্ষ্য। আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিকে জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষায় শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। ভেঙে পড়া রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় গড়ে তোলা ও তাদের গণতান্ত্রিক চরিত্র রক্ষা করা হবে আমাদের রাজনীতির অগ্রাধিকার। এর মধ্য দিয়েই কেবল আমরা একটি পরিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হতে পারবো। 


আমরা এমন একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিকাশ চাই যেখানে সমাজে ও রাষ্ট্রের সর্বস্তরে বিভেদের বদলে ঐক্য, প্রতিশোধের বদলে ন্যায়বিচার এবং পরিবারতন্ত্রের বদলে মেধা ও যোগ্যতার মানদণ্ড প্রতিষ্ঠিত হবে। আমাদের রাজনীতিতে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কোনো স্থান হবে না। 


আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিকে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বরকে মূলধারায় তুলে আনা হবে। আমাদের রিপাবলিকে সাধারণ মানুষ, একমাত্র সাধারণ মানুষই হবে ক্ষমতার সর্বময় উৎস। তাদের সকল ধরনের গণতান্ত্রিক ও মৌলিক অধিকারের শক্তিশালী সুরক্ষাই হবে আমাদের রাজনীতির মূলমন্ত্র। আমরা রাষ্ট্রে বিদ্যমান জাতিগত, সামাজিক, লিঙ্গীয়, ধর্মীয় আর সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ ও বৈচিত্র্য রক্ষার মাধ্যমে একটি বহুত্বপূর্ণ ও সমৃদ্ধ সমাজ বিনির্মাণ করতে চাই। আমাদের রিপাবলিক সকল নাগরিককে দারিদ্র্য, বৈষম্য ও ক্ষমতার অপব্যবহার থেকে শক্তিশালী সুরক্ষা প্রদান করবে। আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিকে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর কোনো অংশকেই অপরায়ন করা হবে না। বরং রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিককে সমান গুরুত্ব প্রদান ও সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।


অর্থনীতিতে, আমরা কৃষি-সেবা-উৎপাদন খাতের যথাযথ সমন্বয়ের মাধ্যমে এমন একটি জাতীয় অর্থনীতি গড়ে তুলতে চাই যেটি হবে স্বনির্ভর, আয়-বৈষম্যহীন ও প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশের প্রতি সংবেদনশীল। আমাদের অর্থনীতিতে সম্পদ একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর হাতে পুঞ্জীভূত হবে না, বরং সম্পদের সুষম পুনর্বণ্টন হবে আমাদের অর্থনীতির মূলমন্ত্র। আমরা বেসরকারি খাতের সিন্ডিকেট ও গোষ্ঠীস্বার্থ নিয়ন্ত্রণে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ভোক্তা ও জনস্বার্থ সংরক্ষণ করবো। অর্থনৈতিক অগ্রগতির মাধ্যমে এই অঞ্চলের একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে মাথা উঁচু করে দাড়াতে আমরা আঞ্চলিক সহযোগিতা ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করবো এবং বিজ্ঞান-প্রযুক্তি খাতে জোর দিয়ে উদ্ভাবনী সংস্কৃতি গড়ে তোলার মাধ্যমে একটি টেকসই, আধুনিক অর্থনীতি গড়ে তুলবো।  


পরিশেষে, আমরা একটি ন্যায্যতা ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় আমাদের সংকল্প আবারও পুনর্ব্যক্ত করতে চাই। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, জুলাই ২০২৪ গণঅভ্যুত্থান কেবল একটি ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধেই বিজয় নয়, এটি আমাদের ভবিষ্যৎ নির্মাণেরও শপথ। চলুন আমরা একসঙ্গে, হাতে হাত রেখে, এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলি যেখানে প্রতিটি নাগরিকের কণ্ঠস্বর প্রতিধ্বনিত হবে, যেখানে  ন্যায় প্রতিষ্ঠা, মানুষের অধিকারের সংগ্রামই হবে রাজনীতির অন্যতম লক্ষ্য। যেখানে সাম্য ও মানবিক মর্যাদা হবে রাষ্ট্রের ভিত্তি। এখনই সময়—নতুন স্বপ্ন দেখার, নতুন পথচলার, এবং একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার! 

এই নতুন বাংলাদেশ গড়ায় আমরা সবাই প্রত্যেকে যার-যার অবস্থান থেকে শপথ করি। ঐক্যবদ্ধ হই। এবং আমাদের কাঙ্ক্ষিত সেকেন্ড রি


আরও খবর



গঙ্গা চুক্তিতে ইতিবাচক হলেও তিস্তায় সম্মতি নেই ভারতের

প্রকাশিত:সোমবার ০৩ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যেকার গঙ্গা চুক্তি বিষয়ক যৌথ কমিটির ৮৬তম বৈঠক সোমবার (০৩ মার্চ) থেকে পশ্চিমবঙ্গে শুরু হতে যাচ্ছে। পাঁচ দিনের এই বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে অংশ নিচ্ছেন ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সম্পর্কের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বৈঠকটিকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে গঙ্গা চুক্তি নিয়ে বৈঠকে বসলেও তিস্তা চুক্তি নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনা করতে রাজি নয় দিল্লি। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত এ নিয়ে আলোচনা চায় না দিল্লি।

বস্তুত গতবছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পলায়নের মাধ্যমে রাজনৈতিক পালাবদলের পর থেকেই ঢাকা ও দিল্লির এক সময়ের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক শীতল হতে শুরু করে। এরই মধ্যে গত ডিসেম্বরের শুরুতে ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে উগ্র ভারতীয়দের হামলা সেই সম্পর্ক আরও তলানিতে নিয়ে ঠেকায়।

কূটনৈতিক চ্যানেলে ভারত এটাও পরিষ্কার করে দিয়েছে যে বাংলাদেশে কোনো ‘অনির্বাচিত’ বা ‘অন্তর্বর্তী’ সরকারের সঙ্গে তারা পূর্ণ এনগেজমেন্টে যেতে আগ্রহী নয় এবং মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের সঙ্গে তারা এমন কোনো সমঝোতায় যাবে না, যেখানে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রশ্ন আছে।

এই পটভূমিতেও যে গঙ্গা চুক্তি নিয়ে দু'দেশের যৌথ কমিটি মুখোমুখি বৈঠকে বসছে এবং সরেজমিনে ফারাক্কা ব্যারাজ পরিদর্শন করতে পারছে– এটাকে পর্যবেক্ষকদেরও অনেকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন।

বিবিসি জানতে পেরেছে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বৈঠকের ব্যাপারে ‘রাজনৈতিক সবুজ সংকেত’ (পলিটিক্যাল ক্লিয়ারেন্স) দেওয়ার পরেই এই বৈঠকের প্রস্তুতি নেওয়া হয়, বাংলাদেশেকে আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং যাবতীয় কর্মসূচি ঠিক করা হয়।

এর প্রধান কারণ হলো, ১৯৯৬ সালে স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক গঙ্গা চুক্তির তিরিশ বছরের মেয়াদ ২০২৬-র ডিসেম্বরেই শেষ হবে– ফলে কোন শর্তে চুক্তিটির নবায়ন করা হবে, সেটি ঠিক করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ওই চুক্তির নবায়নের জন্য মাত্র বছর দেড়েকের মতো সময় হাতে আছে বলেই এই বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠকটিকে স্থগিত করতে চায়নি কোনো পক্ষই, দু'দেশের কূটনৈতিক মহলের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা যাচ্ছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি পদস্থ সূত্র বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, গঙ্গা চুক্তির বিষয়টি আলাদা। এখানে টেকনিক্যাল কমিটির বিশেষজ্ঞরা বৈঠকে বসছেন কারণ আমাদের হাতে চুক্তি রিনিউ করার জন্য হাতে খুব বেশি সময় নেই।

তিনি আরও জানাচ্ছেন, তবে অভিন্ন নদী তিস্তার জল ভাগাভাগি নিয়ে ভারত কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনায় যাচ্ছে না। কারণ সেখানে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রশ্ন আছে এবং ভারত মনে করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সেই আলোচনা চালানোর কোনো ‘ম্যান্ডেট’ নেই!

কী হবে বিশেষজ্ঞদের বৈঠকে : ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যেকার যৌথ নদী কমিশনের অন্যতম সদস্য মুহাম্মদ আবুল হোসেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল গঙ্গা চুক্তি নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেবেন।

গঙ্গা চুক্তিতেই বলা আছে, দু'দেশের বিশেষজ্ঞরা পর্যায়ক্রমিকভাবে ভারতে গঙ্গার ওপর ফারাক্কা ব্যারাজ পয়েন্টে ও বাংলাদেশে পদ্মার ওপর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে জলের প্রবাহ ও অন্যান্য বিষয়ে যৌথ পরিদর্শন করতে পারবেন।

সেই অনুযায়ী, ৮৬তম বৈঠকের অংশ হিসেবে দুই দেশের প্রতিনিধিরাই কলকাতা থেকে ট্রেনযোগে ফারাক্কা পয়েন্টের উদ্দেশে রওনা হয়ে যাবেন। তেসরা ও চৌঠা মার্চ ফারাক্কা ব্যারাজের বিভিন্ন অংশে যৌথ পরিদর্শন অনুষ্ঠিত হবে। ৫ মার্চ (বুধবার) যৌথ কমিটির সদস্যরা আবার কলকাতায় ফিরে আসবেন।

৬ই মার্চ কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলে অনুষ্ঠিত হবে গঙ্গা চুক্তি নিয়ে দু'দেশের 'টেকনিক্যাল কমিটি'র বিশেষজ্ঞদের বৈঠক। পরদিন (৮ই মার্চ) বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।

ভারতের জলসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন, এটি এমনিতে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের রুটিন বৈঠক হলেও যেহেতু গঙ্গা চুক্তির নবায়নের সময় এগিয়ে আসছে তাই এটির ‘আলাদা গুরুত্ব’ আছে।

গঙ্গায় ফারাক্কা পয়েন্টের আগে ও পরে শুষ্ক মৌসুমে জলের প্রবাহ কতটা বজায় আছে, সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান কী বলছে, গঙ্গার জলপ্রবাহের কতটা পদ্মায় আর কতটা ভাগীরথী (হুগলী) নদীতে যাচ্ছে– এই বিষয়গুলো নিয়ে টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠকে চুলচেরা আলোচনা হয়ে থাকে।

আগামী বছর গঙ্গা চুক্তি নবায়নের সময় বাংলাদেশ নতুন ফর্মুলায় জল ভাগাভাগির ওপর জোর দিতে চাইছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, ফলে সে দিক থেকেও এই বৈঠকের আলাদা গুরুত্ব আছে। আর এই বৈঠকের রাজনৈতিক গুরুত্ব হলো, মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের আমলেও ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলকে এই সফরে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

তিস্তায় না, কিন্তু গঙ্গাতে হ্যাঁ : গত বছরের ৮ আগস্ট বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার কিছুদিন পরেই ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআইকে একটি সাক্ষাৎকার দেন। সেই সাক্ষাৎকারে আরও নানা বিষয়ের সঙ্গে তিনি বলেছিলেন, তার সরকার ভারতের কাছে অভিন্ন নদী তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যাও দাবি করবে। ওই সাক্ষাৎকারের বক্তব্য স্পষ্টতই ভারতের মনঃপূত হয়নি এবং তারা সেটা ঢাকাকে বুঝিয়েও দিয়েছিল।

দিল্লিতে সরকারি কর্মকর্তাদের বক্তব্য ছিল, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার যেহেতু গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কোনো সরকার নয় তাই তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক কোনো আলোচনাতে যাওয়ারও প্রশ্ন ওঠে না। ফলে গত সাত মাসে তিস্তা চুক্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হয়নি।

এমনকি শেখ হাসিনার বিদায়ের মাত্র দিনকয়েক আগে যে 'তিস্তা মহাপরিকল্পনা'য় ভারতের সক্রিয় যোগদানের সম্ভাবনা নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছিল, সেটাও যথারীতি হিমঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তিস্তার ক্ষেত্রে ভারত এক ধরনের অনমনীয় মনোভাব দেখালেও গঙ্গা চুক্তি নিয়ে কিন্তু দিল্লির দিক থেকে এক ধরনের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ওই চুক্তি নবায়নে তাগিদ যে ভারতের দিক থেকেও আছে, সেটা ঘটনাপ্রবাহ থেকেও স্পষ্ট।

ঢাকায় ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিনাকরঞ্জন চক্রবর্তী অবশ্য এর মধ্যে অসুবিধার কিছু দেখেন না।

তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, “গঙ্গা চুক্তি প্রায় তিন দশক ধরে ‘টেস্টেড অ্যান্ড ট্রাস্টেড’ – মানে ভরসা আর সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। এর মাঝে বাংলাদেশে এমন সরকারও এসেছে যারা ভারতের প্রতি ততটা বন্ধুত্বপূর্ণ নয়, কিন্তু তাতে চুক্তির বাস্তবায়নে কোনো সমস্যা হয়নি। ফলে এই চুক্তিটাকে যে দুই দেশই নবায়ন করতে চাইবে, এটাই তো স্বাভাবিক।

তিনি আরও বলেন, কিন্তু অন্য দিকে তিস্তার পানি ভাগাভাগি নিয়ে আমরা কিন্তু এখনও কোনো চুক্তিই করে উঠতে পারিনি। ফলে গঙ্গা আর তিস্তার বিষয়টা সম্পূর্ণ আলাদা চোখে দেখতে হবে।

আর যেহেতু ঢাকায় বর্তমান সরকারের সঙ্গে দিল্লি কোনো দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি বা সমঝোতায় যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাই তিস্তা নিয়ে আলোচনা না এগোলেও গঙ্গা নিয়ে বৈঠক কিন্তু ঠিকই হচ্ছে—বলেন, সাবেক হাই কমিশনার পিনাকরঞ্জন চক্রবর্তী।


আরও খবর

অস্থির চালের বাজার

রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫

বাড়তে পারে গরম

রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫




শাপলা চত্বরে গণহত্যা হাসিনাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা

প্রকাশিত:বুধবার ১২ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বুধবার (১২ মার্চ) এই আদেশ দেন আদালত।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর, গনজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, এবং বেনজির আহমদ।

এছাড়া, অপর মামলায় কারাগারে থাকা সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সাবেক আইজিপি শহিদুল হক, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান এবং সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোল্লা নজরুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় আরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, আগামী ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য।

এটি ছিল হেফাজতে ইসলামের দায়ের করা একটি মামলা, যা গত ২৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়। মামলায় ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল। হেফাজতে ইসলামের অভিযোগ ছিল, ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবিতে এক বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবেশে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং ক্ষমতাসীন সরকারের পক্ষ থেকে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে পরবর্তী সময়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণহত্যা ঘটিয়েছিলেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা রাত ১১টার দিকে শাপলা চত্বরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেন, ফলে রাতের আঁধারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সমাবেশকারীদের ওপর হামলা চালায়। মাদরাসা ছাত্র এবং পথচারীদের ওপর নৃশংসভাবে আক্রমণ চালানো হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে শতাধিক মানুষ নিহত হয় বলে দাবি করা হয়। এর পর, নিহতদের লাশ সিটি করপোরেশনের গাড়িতে করে গুম করা হয়। নিহতদের পরিবার থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ তাদের অভিযোগ গ্রহণ করেনি।

এছাড়া, মামলার বাদী পক্ষের দাবি, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা একযোগে এই অপরাধ সংঘটন করেন। বাদী পক্ষ আরও অভিযোগ করেছেন, ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত না করে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

এই ঘটনায়, বিভিন্ন গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজ এবং মানবাধিকার সংগঠনরা সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানায়।


আরও খবর



সারা দেশে বাড়বে রাতের তাপমাত্রা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৫ ফেব্রুয়ারী 20২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ১৫ মার্চ ২০২৫ |

Image

সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সে সঙ্গে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) আবহাওয়াবিদ ড. মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য দেওয়া হয়। পূর্বাভাসে বলা হয়, মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

এ অবস্থায় মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, আগামী ৫ দিনে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।


আরও খবর

অস্থির চালের বাজার

রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫

বাড়তে পারে গরম

রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫




নওগাঁয় পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত-১, আহত-৬

প্রকাশিত:বুধবার ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ১৫ মার্চ ২০২৫ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁয় পৃথক স্থানে সড়ক দূর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ও সিএনজি চালিত অটো-বাইক চালক ও মোটরসাইকেল আরোহী ৬ জন আহত হয়েছেন। মাত্র ১৪ ঘন্টার ব্যবধানে পৃথক ৩টি স্থানে দূর্ঘটনাগুলো ঘটে। বুধবার ২৬ ফেব্রুয়ারী সকালে নওগাঁর ধামুরহাট উপজেলার বিহারিনগর মোড়ে পিকনিকের যাত্রীবাহী বাসের চাপায় কামাল হোসেন (৪০) নামে মোটরসাইকেল চালকের মৃত্যু হয়। 

প্রত্যক্ষদর্শী সুত্র জানাগেছে, সকাল সারে ৭টারদিকে ধামুরহাট উপজেলা পরিষদ মার্কেটের ফটোস্ট্যাট দোকান ব্যবসায়ী কামাল হোসেন নিজেই একটি মোটরসাইকেল চালিয়ে নওগাঁ যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে ধামইরহাট টু পত্নীতলা সড়কের বিহারীনগর মোড় নামক এলাকায় পৌছালে এসময় জয়পুরহাট অভিমুখি পিকনিকের যাত্রীবাহী একটি বাস মোটরসাইকেলকে চাপাদিলে দূর্ঘটনাস্থলেই কামাল হোসেনের মৃত্যু হয়।

নিহত কামাল হোসেন ধামইরহাট উপজেলার উত্তর চকযদু গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াদ আলীর ছেলে বলে প্রাথমিকভাবে পরিচয় পাওয়া যায়। মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে ধামইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ রাইসুল ইসলাম বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং মৃতদেহ পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। অপরদিকে বুধবার সকাল সারে ১০ টারদিকে নওগাঁ টু রাজশাহী মহাসড়কের চৌমাশিয়া বাজার এলাকায় বিপরীত মুখি প্রাইভেটকার ও অটো-বাইক মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। স্থানিয়রা জানান,  প্রাইভেটকার ও অটো-বাইক মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় অটো-বাইক চালক সহ ৩ জন আহত হোন। আহতদের মধ্যে  অটো-বাইক চালকের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে তবে আহতদের নাম-পরিচয় জানাতে পারেন নি স্থানিয়রা। এরপূর্বে মঙ্গলবার সন্ধার পর নওগাঁ টু রাজশাহী মহাসড়কের চেয়ারম্যানের মোড় নামক এলাকায় অটো-বাইক ও মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় মোট ৩ জন আহত হোন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শিরা।


আরও খবর