Logo
শিরোনাম
লালমনিরহাটে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে ১৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের প্রধান গ্রেফতার নওগাঁয় ইটভাঙ্গা মেশিনের চাপায় সিএনজি যাত্রী নিহত হাতীবান্ধায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ; সাংবাদিকের ক্যামেরা ভাংচুর- আহত ১০ আলোকিত সেরা নারীর সম্মাননা পেলেন মাধবদীর আমেনা বেগম জোৎস্না রামগড় সীমান্তে দেড় লক্ষ টাকার ভারতীয় মাদকদ্রব্য জব্দ অর্থ সংকটের কারণ দেখিয়ে আন্ত:বিশ্ববিদ্যালয় ভলিবল টুর্নামেন্টে দল পাঠাচ্ছেনা নোবিপ্রবি চামড়া খাতে ন্যূনতম মজুরি ২২ হাজার টাকার প্রস্তাব পাঁচ জেলায় সড়ক দুঘটনায় ১২ জনের মৃত্যু বাইডেনের মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিল জাপান যারা সরকার পরিচালনা করেন তারা সবাই ফেরেশতা নয়

চাঁদপুরে অর্ধশত গ্রামে উদযাপিত হলো ঈদুল ফিতর

প্রকাশিত:বুধবার ১০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ |

Image

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুরের বিভিন্ন উপজেলার অর্ধশত গ্রামে ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল ৯টায় হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরিফ মাঠে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

এ জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা জাকারিয়া চৌধুরী। অন্যদিকে সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল মাদরাসা মাঠে সকাল সাড়ে ৯টায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন মাওলানা আরিফুল্লাহ চৌধুরী।

এদিকে, সকাল ৯টায় জেলার ফরিদগঞ্জ টোরামুন্সিরহাট বাজার জামে মসজিদেও মাওলানা মাহবুবুর রহমান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, সমেশপুর, অলিপুর, বলাখাল, মনিহার, প্রতাপুর, বাসারা, ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর, কামতা, গল্লাক, ভুলাচোঁ, সোনাচোঁ, উভারামপুর, উটতলি, মুন্সিরহাট, কাইতাড়া, মূলপাড়া, বদরপুর, আইটপাড়া, সুরঙ্গচাইল, বালিথুবা, পাইকপাড়া, নূরপুর, সাচনমেঘ, শোল্লা, হাঁসা, গোবিন্দপুর, মতলব উত্তর উপজেলার দশানী, মোহনপুর, পাঁচানী এবং কচুয়া ও শাহরাস্তি উপজেলার আরও কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা এ ধর্মীয় উৎসবে সামিল হোন।

এর আগে গত ১১ মার্চ সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে পবিত্র রোজা পালন শুরু করেন এসব মানুষ।

চাঁদপুরে হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরীফের পীরজাদা পীর ড. বাকীবিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী জানান, এ দেশে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও দুই ঈদ পালনের প্রবর্তক মরহুম মাওলানা ইসহাক (রহ.)। ১৯২৮ সাল রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদযাপনের নিয়ম চালু করেন। তারপর থেকে সেই ধারা দেশের বিভিন্ন দরবার শরীফের পীরের অনুসারি এবং সচেতন মুসল্লিরা পালন করছেন।

উল্লেখ্য, বিগত ১৯২৮ সালে জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবার শরীফের মরহুম পীর মাওলানা ইসহাক (রহ.) প্রথমে তার নিজ গ্রামে এবং পরে তার অনুসারীরা এমন নিয়ম মেনে রোজা রাখা শুরু করেন। সেই ধারাবাহিকতায় ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা উদযাপন করছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, শাহরাস্তি এবং মতলব উত্তর উপজেলা মিলিয়ে প্রায় অর্ধশত গ্রামে প্রায় শতাব্দিকাল ধরে এভাবে রোজা এবং ঈদ উদযাপন হচ্ছে।


আরও খবর



শূন্য থেকে কোটিপতি যাত্রী কল্যাণের মোজাম্মেল

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ |

Image

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব সংগঠনের নামে প্রভাব বিস্তার করে গোপনে নিজে গড়েছেন টাকার পাহাড়। কিনেছেন কোটি টাকার সম্পত্তি। রয়েছে পরিবহন ব্যবসা। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির নামে লাইসেন্সবিহীন সিএনজি অটোরিকশার রমরমা ব্যবসা ছাড়াও সাংবাদিক পরিচয়ে করেছেন অঢেল সম্পত্তি। তিনি মোজাম্মেল হক চৌধুরী। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে অর্থ, সম্পদ ও ব্যবসার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ জমা পড়েছে। সেই সঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে গতকাল সোমবার আদালতে হয়েছে মামলা। জানা গেছে, বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামবে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পৈতৃক বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের ইমামুল্লাহ চরের পূর্ব পাড়ায়। বাড়িতে দুটি ঘর, এর মধ্যে বড় ঘরটির চারপাশে মাটির দেয়াল, ওপরে টিনের ছাউনি। সামনে ছোট দুই কক্ষের একটি ঘর। সেই ঘরের চারপাশে কাঠ দিয়ে দেওয়া হয়েছে বাঁশের বেড়া। স্বাভাবিক জীবনযাপন করা মোজাম্মেল গত এক যুগ ধরে পরিবহনের যাত্রীদের অধিকার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে সোচ্চার আছেন। যাত্রীদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে করেন আন্দোলন। তবে এই যাত্রী কল্যাণ সমিতির আড়ালে গুছিয়েছেন নিজের আখের। বিভিন্ন দপ্তরে তদবির বাণিজ্য, সড়কে নিয়ম ভেঙে সুবিধা আদায়, বিআরটিএর মিরপুরসহ বিভিন্ন অফিসে দালালি, জমি কেনাবেচায় দালালি, নামসর্বস্ব পত্রিকায় সাংবাদিক পরিচয়ে সরকারি বিজ্ঞাপন আদায়, লাইসেন্সবিহীন সিএনজি অটোরিকশার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়েছেন। যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব পরিচয়ে খাটান প্রভাব।

২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মিরপুর থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়ের হওয়া একটি মামলায় মোজাম্মেল গ্রেপ্তার হলে ওই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে তার স্ত্রী রিজু আক্তার চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, তার স্বামী (মোজাম্মেল হক চৌধুরী) একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে অল্প টাকা বেতনে কাজ করেন। সেই টাকা দিয়ে সংসার চালানো বেশ কষ্টকর।

মাত্র ৬ মাসে কিনেন কোটি টাকার জমি :মোজাম্মেল হক চৌধুরীর গোপন সম্পত্তির অনুসন্ধান করে প্রতিদিনের সংবাদ। হাতে আসে বেশ কয়েকটি জমির দলিল। তাতে বেরিয়ে আসে কোটি টাকার সম্পত্তির তথ্য। দেখা যায়, মোজাম্মেলের অর্থের বেশিরভাগই ব্যয় হয়েছে জমি ক্রয়ে। চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার হাশিমপুর মৌজায় দেড় কোটি টাকায় ৩৪৫ শতক জমি কিনেছেন মোজাম্মেল। দলিলে মৌজা অনুযায়ী, জমির যে দাম দেখানো হয়েছে প্রকৃতপক্ষে সেই জমির আনুমানিক মূল্য ৮ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

মোজাম্মেল হক চৌধুরীর নামে রেজিস্ট্রি হওয়া জমির দলিলে দেখা গেছে, মোজাম্মেল চার দফায় ৪টি দলিলের মাধ্যমে হাশিমপুর মৌজায় বিভিন্ন দাগে ৩৪৫ শতক জমি কিনেন। রেজিস্ট্রি দলিলে ওই জমির মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে ১ কোটি ৪৯ লাখ ৪২ হাজার টাকা। তবে স্থানীয়দের দাবি, মোজাম্মেলের কেনা জমির প্রকৃত বাজারমূল্য তার কয়েকগুণ বেশি।

দলিলে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ২৩ জুন চন্দনাইশের গাছবাড়িয়া সাব রেজিস্ট্রার অফিসে মোজাম্মেলের নামে প্রথম দলিলটি রেজিস্ট্রেশন (নম্বর ১৬৬২) করা হয়। ওই দলিলে ১ একর ৬০ শতাংশ (চার কানি) জমি কেনেন মোজাম্মেল। যার দাম দেখানো হয়েছে ১ কোটি ৯ লাখ টাকা। এরপর একই বছরের ২৩ জুলাই ১৫ শতক জমির দ্বিতীয় দলিলটি রেজিস্ট্রি (দলিল নং ১৯০৮) করা হয় মোজাম্মেলের নামে। দলিলে জমির দাম উল্লেখ করা হয় ১০ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

এর মাত্র এক মাসের মাথায় ১৬ সেপ্টেম্বর তৃতীয় দলিল রেজিস্ট্রেশন (নম্বর ২৪৪১) করা হয় তার নামে। জমির পরিমাণ ৩৭ দশমিক ৫০ শতক। দলিলে এই জমির দাম দেখানো হয়েছে ৪ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। চতুর্থ দফায় ৮ দিন পর ২৩ সেপ্টেম্বর আরেকটি জমি কিনেন মোজাম্মেল হক চৌধুরী। রেজিস্ট্রেশন (নম্বর ২৫৩৮) হওয়া জমির পরিমাণ ১৩২ দশমিক ৫০ শতক। জমিটির দাম উল্লেখ করা হয়েছে ২৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

মোট হিসাবে দেখা যায়, চার দফায় ৪টি দলিলে ৩৪৫ শতক জমি কিনেছেন মোজাম্মেল হক এবং দলিলে এই জমির মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে ১ কোটি ৪৯ লাখ ৪২ হাজার টাকা। অথচ আরো কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি রাখা হয়েছে গোপনে। ঢাকায় নিজেকে পরিচয় দেন গোবেচারা হিসেবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, আগে মোজাম্মেলের অবস্থা ছিল শোচনীয়। ২০০৯ সালের দিকে তৎকালীন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাকারিয়ার পাওনা টাকা না দেওয়ায় মোজাম্মেলকে আটকে রেখেছিলেন। পরে টাকা পেতে স্ট্যাম্পে লিখিত দিয়ে ছাড়িয়ে আনা হয়। তারপর থেকে মোজাম্মেলকে এলাকায় দেখা যেত না।

অটোরিকশা নিবন্ধন দালালিতে আয় কোটি টাকা

অনুসন্ধানে জানা যায়, চট্টগ্রামে রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্লেট ছাড়া প্রায় ২ শতাধিক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলে বাংলাদেশ উন্নয়ন সাংবাদিক সমিতির নামে। প্রতিটি গাড়িতে সাঁটানো হয়েছে সমিতির ব্যানার। ওই ব্যানারে সাংবাদিক মোজাম্মেল হক চৌধুরীর নাম ও ফোন নম্বর রয়েছে। তবে তিনি কোন পত্রিকার বা অনলাইনের সাংবাদিক সে পরিচয় ব্যানারে উল্লেখ করা হয়নি।

অভিযোগ রয়েছে, রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্লেট ছাড়া সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলে মোজাম্মেলের ইশারায়। সেখান থেকে মাসিক চাঁদা আসে তার পকেটে। স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু মানুষের সহযোগিতায় রাজ্য গড়েছেন মোজাম্মেল। তার অপকর্মের বিরোধিতার জবাব হিসেবে কয়েকজনকে হুমকি দেওয়ারও তথ্য পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ উন্নয়ন সাংবাদিক সমিতির ব্যানারে সেখানেও রয়েছে তার প্রভাব। নিজে কোন পত্রিকার সাংবাদিক তা প্রকাশ না করলেও ওঠাণ্ডবসা মূলধারার সাংবাদিকদের সঙ্গে। বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিতে সাংবাদিক ঘেঁষা হিসেবেই নিজেকে গড়ে তুলেছেন মোজাম্মেল।

স্থানীয়রা বলছেন, মোজাম্মেল হক চৌধুরী অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছেন। প্রভাবশালী মানুষদের সঙ্গে করেন ওঠাণ্ডবসা। নিজেকে পরিচয় দেন সাংবাদিক ও পরিবহন সমিতির নেতা হিসেবে। কোটি টাকার সম্পত্তির তথ্য গোপন রাখতেই সাধারণ জীবনযাপন করেন মোজাম্মেল। তবে পাল্টে গেছে তার কথার ধরন।

জানা যায়, টাকার বিনিময়ে মোজাম্মেল সিএনজি অটোরিকশার নম্বর পাইয়ে দেন। যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রভাব খাটিয়ে বিআরটিএতে দালালি করেই তিনি এত টাকার মালিক হয়েছেন। আর সেই টাকায় কিনেছেন কোটি টাকার সম্পত্তি। মোজাম্মেল হক বর্তমানে জমি বেচাকেনা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ঢাকাতে রয়েছে একটি প্রাইভেট কার যার আনুমানিক মূল্য ১২-১৫ লাখ, একটি নোহা গাড়ি যার আনুমানিক মূল্য ২৫ লাখ ও চট্টগ্রামে একটি অত্যাধুনিক প্রাইভেট কার রয়েছে যার আনুমানিক দাম প্রায় অর্ধকোটি টাকার কাছাকাছি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোজাম্মেলের স্ত্রী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মেম্বার পদে প্রার্থী হয়ে ৩০ ভোট পেয়েছিলেন। মোজাম্মেল নিজেও উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে খুব অল্প ভোট পেয়েছিলেন। তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।

সেতুমন্ত্রীকে নিয়ে মন্তব্য, থানায় জিডি ও মামলা

সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে মানহানিকর মন্তব্য করার অভিযোগে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ খোকন। গত মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার শাহবাগ থানায় জিডি করেন তিনি।

জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২০ এপ্রিল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এই সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ২০ বছর ধরে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনি পরিবহন সেক্টরে কোনো কাজ করেন নাই। যেহেতু আমাদের দেশে পদত্যাগের সংস্কৃতি নেই। সেহেতু মন্ত্রী ইচ্ছা করলে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে পারেন।

জিডিতে শ্রমিক লীগ নেতা মোহাম্মদ হানিফ বলেন, বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি যাত্রীদের কল্যাণ করবে এটাই তাদের কাজ। কিন্তু সুপরিকল্পিতভাবে মোজাম্মেল হক চৌধুরী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এতে মন্ত্রীর সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে। কারণ বর্তমান সরকার টানা চতুর্থবারের মতো দেশের ক্ষমতায় আছেন। এখন সরকারের ক্ষমতা থাকার বয়স ১৫ বছর ৩ মাস। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী সেখানে ২০ বছর মন্ত্রী থাকেন কীভাবে? মোজাম্মেল হক চৌধুরী সুপরিকল্পিতভাবে মন্ত্রী ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন। এই মিথ্যাচারের বক্তব্যগুলো দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। তার এই মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ণ ও মন্ত্রীর মানহানি হয়েছে। তাই বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য জিডি করে রাখা একান্ত প্রয়োজন।

জানা গেছে, মোজাম্মেল হক চৌধুরী সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রকে নিয়ে মন্তব্য করায় জিডির পরে সিএমএ আদালতে মামলা করেছেন মোহাম্মদ হানিফ খোকন। ৫৫১ নাম্বার মামলায় ৫০০, ৫০১ ও ৫০৬ তিনটি ধারা উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন মোহাম্মদ হানিফ খোকন। মামলার তদন্তে নেমেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

বিস্তর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, আমি জমির দালালি করি। ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সেই টাকায় জমি কিনেছি। দেশের কোন আইনে জমি কিনতে মানা আছে নাকি?


আরও খবর



গরমে হাঁসফাঁস, হাসপাতালে রোগীর চাপ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ |

Image

রোকসানা মনোয়ার : ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৬ দিন ধরে ভর্তি আছেন ঝালকাঠি জেলার নলছিটির কবীর হোসেন (৪২)। বেড পাননি, ঠাঁই হয়েছে মেঝেতে। একটু দূরে একটা ফ্যান থাকলেও বাতাস আসে না। তাই হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছেন তার স্ত্রী তাসলিমা বেগম।

কবীর হোসেনের মস্তিষ্কে পানি জমেছে। তাসলিমা বলেন, আমার স্বামী গরমে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, বাতাসের অভাবে হাঁসফাঁস করছেন।

তাপপ্রবাহ চলছে। তীব্র গরমে কাহিল মানুষ-প্রাণী। বেসরকারি হাসপাতালে রয়েছে কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা (সেন্ট্রাল এসি)। সরকারি হাসপাতালে এ ব্যবস্থা নির্দিষ্ট কয়েকটি বিভাগে থাকলেও ওয়ার্ডগুলোতে নেই। আলো-বাতাস প্রবাহের সমস্যাও রয়েছে। ফ্যানই একমাত্র ভরসা। সেগুলোও চলে না ঠিকঠাক।

সরেজমিন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে গতকাল এমনটাই দেখা গেছে।

আলো ও বাতাসের পর্যাপ্ত প্রবাহ নেই : ২৬শ বেডের হাসপাতাল ঢাকা মেডিক্যাল চিকিৎসা দিচ্ছে দ্বিগুণের বেশি রোগী। বেড না পাওয়া রোগীদের চিকিৎসা চলছে বারান্দা, মেঝে এবং সিঁড়িতে। বাইরের আলো-বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা নেই। সেন্ট্রাল এসির ব্যবস্থাও নেই।

বুকে আঘাত নিয়ে ২১ এপ্রিল ভর্তি হয়ে ঢাকা মেডিক্যালের ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছেন ১৯ বছরের সজীব। গতকাল সেখানে গিয়ে দেখা যায়, মাথার ওপর ফ্যান থাকলেও তীব্র গরমে অস্থির সজীব।

তার দাদা আতিকুর রহমান বলেন, ফ্যান থেকে লাভ কী? ঘোরেই না। বাধ্য হয়ে রোগীদের ফ্যান কিনে আনতে হয়েছে। প্রতিটি বেডে সব রোগীরই একই অবস্থা।

সুস্থরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন : ঢাকা মেডিক্যালের কেবিনেও এসি নেই। নেই পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা। ফলে চিকিৎসা নিতে গিয়ে অনেকে আরও অসুস্থ পড়ছেন।

পিত্তথলির অস্ত্রোপচারের জন্য পাঁচদিন ধরে সি-৫৮ নম্বর কেবিনে আছেন উত্তম কুমার (৫৫)। তার স্ত্রী বলেন, আমার স্বামীর ডায়াবেটিস আছে। এখানে আসার পর আরও বেড়েছে। কেবিনে ঠিকমতো আলো-বাতাস ঢোকে না। ফ্যান ঠিকমতো চলে না। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হয় রাতে।

চরম বিপাকে বেড না পাওয়া রোগীরা : যারা বেড পাননি তারা চরম সংকটে রয়েছেন। বিশেষ করে সিঁড়ি ও বারান্দার রোগীদের থাকতে হচ্ছে প্রচ- গরমে।

সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত কুমিল্লার মুরাদনগরের জাহাঙ্গীর আলম (৩৯) বেড পাননি, সিঁড়িতে থাকছেন। তার বোন সেলিনা বলেন, এই গরমে ভাইয়ের অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে।

মিটফোর্ড হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে গত রবিবার ভর্তি হয়েছেন মনি বেগম (৪০)। প্রথম দিন বারান্দায়, পরে ওয়ার্ডের মেঝেতে জায়গা পেয়েছেন।

গতকাল দেখা যায়, ওয়ার্ডটি ১৮ শয্যার হলেও চিকিৎসা নিচ্ছেন দ্বিগুণ রোগী। মনির স্বামী জাহাঙ্গীর বলেন, রোগীদের গাদাগাদিতে খুবই করুণ অবস্থা। চিকিৎসা নিতে এসে এখন অসুস্থ হয়ে পড়ার অবস্থা।

বাইরে থেকে আনা ফ্যানে বড় দুর্ঘটনার শঙ্কা : হাসপাতাল দুটি ঘুরে দেখা গেছে, ৯০ ভাগ রোগী বাইরে থেকে আনা ফ্যান ব্যবহার করছেন। হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুতের তারে সংযোগ দিয়ে ফ্যান চালাচ্ছেন তারা।

এ বিষয়ে ঢাকা মেডিক্যালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, হাসপাতালের করিডোরে অনেক রোগী আছেন। নিয়ম অনুসারে সেখানে ফ্যান লাগাতে পারি না। রোগীরা ফ্যান নিয়ে এসে চালাচ্ছেন, যা থেকে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সঠিক লাইন থেকে সংযোগ দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

কেন্দ্রীয় শীতাতপের ঝুঁকি হাসপাতালজুড়ে : ঢাকা মেডিক্যালের পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান আরও বলেন, বিশেষ কিছু বিভাগ কেন্দ্রীয় শীতাতপের আওতায় এসেছে। কিন্তু পুরো হাসপাতালে এটা সম্ভব নয়। পুরনো হওয়ায় যে লোড হবে তা নিতে পারবে না হাসপাতাল। এ জন্য তিন হাজার চিকিৎসক থাকলেও অনেকের কক্ষেই এসির ব্যবস্থা নেই। ইতোমধ্যে এ হাসপাতাল অনেকটা ঝুঁকিতে রয়েছে।

মিটফোর্ড হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মফিজুর রহমান বলেন, পুরো হাসপাতাল কেন্দ্রীয় শীতাতপের আওতায় আনতে গেলে অনেক পরিকল্পনা করতে হবে। এটি আমাদের কাজ নয়। মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টরা ভাবতে পারে। ইতোমধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন।


আরও খবর



দাবদাহে ‘কপাল পোড়ার’ শঙ্কায় কৃষক

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ |

Image

প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে তীব্র থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে সারা দেশে পথ-ঘাট-মাঠ সবকিছুই উত্তপ্ত এর বিরূপ প্রভাব দেখা যাচ্ছে ফসলের মাঠেও

কৃষকরা বলছেন, তীব্র রোদের প্রভাবে মাঠের ধান গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে, মরছে সবজির গাছ। সেচের জন্য প্রয়োজনীয় পানিও মিলছে না গভীর নলকূপে। এতেকরে একদিকে ফলন কমে যাবার আশঙ্কা অন্যদিকে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকরা

অতিরিক্ত তাপে রাজশাহী, রংপুর খুলনা অঞ্চলের বেশিরভাগ ক্ষেতে ধান গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন জমিতে পানি দিতে হিমসীম খেয়ে যাচ্ছে কৃষক। তাদের মনে শঙ্কাও তৈরি হয়েছে এমন রোদ আর গরমে যেন ধান নষ্ট হয়ে না যায়

রংপুররে পীরগঞ্জের আলমপুরের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ধানের ভিওত পানি ধরে থোয়া যাচ্ছেনা। কিছু কিছু জমির ধান লাল হয়ে মরে যাচ্ছে। এখনতো পানির লেয়ারও অনেক নিচে। এলাকার টিউবলেও ঠিকমতো পানি ওঠে না, মেশিনেও কম পানি ওঠে, যাদের অবদা(ডিপটিউবয়েল) আছে তারা পানি দিবার পারচে(দিতে পারছে) এতো রোদের কারণে এবার ধানত চিটা হওয়ার ভয়ে আছি। আর সবজির ভিউয়ের(ক্ষেত) সবজি রোদে-পুড়ে মরে যাচ্ছে।

তাপে পোড়ার শঙ্কা, সেচে বাড়তি খরচ ফলন কমার আশঙ্কা :

চলতি মৌসুমে সারাদেশে তীব্র তাপাদহের কারণে ধান ছাড়া বাকি সফলী জমি খেত ফেটে চৌচির। রোদে পুড়ছে রোপণ করা বোরো ধান। দিতে হচ্ছে বাড়তি সেচ। বৃষ্টি না হওয়ায় পানির অভাবে ধানের ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছে, এই তাপদাহে ক্ষেতের ফসল বাঁচাতে অন্য বারের তুলনায় দ্বিগুন বেশি সেচ দিতে হচ্ছে, যার ফলে উৎপাদন খরচ বাড়বে

রংপুরের পীরগঞ্জের শরীফ নেওয়াজ গভীর নলকূপ দিয়ে নিজের জমিতে পানি দেওয়ার পাশাপাশি অন্যর জমিতেও পানি বিক্রি করনে। তিনি সংবাদকে বলেন,আমার মোটর ২৪ ঘন্টা চলে। গতবছর এই সময়ে দুইদিন পর পর একটা জমিতে পানি দিতে হতো। এবার দিতে হচ্ছে একদিন পর পর। এতে আমার খরচ বেড়ে যাচ্ছে।

ওই উপজেলার চতরা এলাকার কৃষক প্রদীপ চন্দ্র বলেন, বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছি। বছর ধান পাতান (চিটা) হওয়ার আশঙ্কা করছি।

তিনি আরো বলেন, সার, বীজ, তেল শ্রমিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় এমনিতেই প্রতিমণ ধান উৎপাদন খরচ বাড়ছে এখন বাড়তি সেচও দেওয়ার কারণে খরচ আরো বেড়ে গেল।

ময়মনসিংহের কৃষি উদ্যোক্তা . আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে চাইলেও সেই পানির প্রবাহ ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে ধানের ফুল পলিনেশন করতে পারছে না, অনেক ফুল ঝরে যাচ্ছে। একারণে ধান চাষে ক্ষতির মুখে পড়বে কৃষক।

তীব্র তাপ প্রবাহের কারণে আম, লটকন, মাল্টা, অ্যাভাকাডার মতো গাছের গুটি ঝরে যাওয়ার কথাও জানান তিনি। তিনি বলেন, আমার যে ফলের বাগান আছে সে বাগান থেকে বৃষ্টির অভাবে গাছ পুষ্টি না পাওার কারণে ফল ফুল ঝরে পড়ছে, যখন বৃষ্টি হবে তখন গাছ পরিপুষ্ট হতে আরো ১৫ দিন সময় নিবে কিন্ত মাঝে যে সময় গেল সেটা তো ফিরে পাওয়া সম্ভবনা। এছাড়া, ক্ষেতে যে কৃষি শ্রমিকরা কাজ করে তারাও তো তাড়াতাড়ি হাপিয়ে ওঠে এতো আমার শ্রমের অপচয় হচ্ছে।

সার্বিকভাবে বলা চলে, বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকেই চলে যাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি

তিনি আরো বলেন, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অন্তত ৩০ শতাংশ কম পানি উঠছে পাম্পগুলোতে। আবার দীর্ঘক্ষণ চালানোর কারণে বিল ঠিকই বাড়ছে, কিন্তু ওই পরিমাণ পানি পাওয়া যাচ্ছে না। আবার পানি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুকিয়ে যাচ্ছে, গাছ শোষণ করতে পারছে না। সব মিলিয়ে কৃষকদের একটা বাজে অবস্থা।

সংশ্লিষ্টরা যা বলছেন:

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক . মো. শাহজাহান কবীর সংবাদকে বলেন, এবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গা ৪১ দশমিক ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠেছে। এখন ধানের জন্য ক্রিটিক্যাল টেম্পেরেচার ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর উপরে যদি তাপমাত্রা উঠে এবং এসময় যদি ফুল ফোটে সেগুলো শুকিয়ে যেতে পারে।

তবে, তিনি ধানের দুইটা বিষয়ের কথা উল্লেখ করেন। যেমন; হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে। সেখানে এখন যেমন রোদ আছে সেই রোদটা খুবই দরকার। আবার কোন কোন অঞ্চল আছে যেখানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস অতিক্রম করে যাচ্ছে। সেখানে আমরা যে আশঙ্কায় আছি- ফুল ফোটা পর্যায়ে যদি টেম্পারেচার বেশি থাকে তবে ধানের চিটা হয়ে যেতে পারে। এমন একটা আশঙ্কার মধ্যে আছি।

বিশেষ করে যেসব এলাকার তাপমাত্রা খুব বেশি সেসব এলাকার ধান নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সব কৃষককে পরামর্শ দিচ্ছি টেম্পারেচার বেশী থাকলেও যেন তারা সবসময় পানি ধরে রাখে। পানি ধরে রাখলে চিটা হওয়ার সম্ভবনা কম থাকে।

যেসব এলাকায় ধান পেকে গেছে সেসব এলাকায় আমরা ধান তাড়াতাড়ি কেটে ফেলার পরমর্শও তার

কৃষিতে বিরুপ প্রভাব মোকাবেলায় লিফলেট অ্যাপসের মাধ্যমে চাষিদের পরামর্শ দেওয়ার কথা জানালেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক(ডিজি) বাদল চন্দ্র বিশ্বাস। তিনি সংবাদকে বলেন, যেসব এলাকায় ধান দেরিতে আসে সেসব এলাকায় আমরা বলেছি, ধানের গোড়ায় যেন পানি থাকে, সেই পানিটা যেন ধান গাছের শিকড় সহজে টানতে পারে


আরও খবর



বছরে ৪ বার বাড়বে বিদ্যুতের দাম

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ |

Image

ভর্তুকি কমিয়ে আনতে বছরে চারবার বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করবে সরকার পর্যায়ক্রমে আগামী তিন বছর এভাবেই বাড়ানো হবে সচিবালয়ে আইএমএফের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগ কথা জানিয়েছে

সমন্বয়ের নামে মূলত বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার খরচ কমিয়েও ভর্তুকি সমন্বয় করতে পারে। অনিয়ম, দুর্নীতি, অপচয় রোধ করে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কমানোর দিকে সরকারের মনোযোগ নেই। বরং চাহিদা না থাকলেও দরপত্র ছাড়া একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে খাতের খরচ আরও বাড়াচ্ছে

আইএমএফের প্রতিনিধিদল বৃহস্পতিবার জ্বালানি খনিজ সম্পদ বিভাগ, পেট্রোবাংলা, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়ম করপোরেশনের (বিপিসি) সঙ্গেও বৈঠক করেছে

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, পেট্রোবাংলা বিপিসি প্রায় একইভাবে আইএমএফকে জানিয়েছে, গ্যাস জ্বালানি তেলে নতুন করে ভর্তুকির চাপ নেই। তেলের দাম নিয়ে স্বয়ংক্রিয় যে পদ্ধতি (আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়লে দেশে বাড়বে, কমলে কমবে) চালু করার কথা আইএমএফ বলেছিল, তা হয়েছে। প্রতি মাসে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করা হচ্ছে। এতে জ্বালানি তেলে আর কখনো ভর্তুকি দিতে হবে না। প্রথম দুই দফায় দাম কিছুটা কমানো হলেও শেষ দফায় দাম বেড়েছে। তিন মাস ধরে চর্চা করা হচ্ছে

বিষয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বছর বিদ্যুতের মূল্য আরও কয়েক দফা সমন্বয় করা হবে। এভাবে আগামী তিন বছর চলবে। তবে কোন মাসে সমন্বয় করা হবে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি

জ্বালানি তেলের মূল্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে সমন্বয় করা হবে। তবে আমার কাছে মনে হচ্ছে সমন্বয় করা হলেও জ্বালানি তেলের মূল্য খুব বাড়বে না। তবে পরিবর্তন হলে সেটি নির্ভর করবে বৈশ্বিক বাজারের ওপর

জানা গেছে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা আসার পর পর্যন্ত বিদ্যুতের মূল্য বেড়েছে ১৩ বার


আরও খবর



পাঁচ জেলায় সড়ক দুঘটনায় ১২ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ |

Image

দেশের পাঁচ জেলায় ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে সড়ক দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো বেশ কয়েকজন। শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে শনিবার সকাল সাড়ে আটটার মধ্যে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার দুর্ঘটনায়। রাত আড়াইটার দিকের ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে একই পরিবারের তিনজনের। এছাড়া গাজীপুরের শ্রীপুরে ট্রাক-পিকআপ সংঘর্ষে দুই নির্মাণ শ্রমিক, নওগাঁর আত্রাইয়ে ইটভাঙা মেশিনের চাপায় এক এনজিও কর্মী ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হয়েছেন। বিস্তারিত প্রতিদিনের সংবাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে।

মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে লরিচাপায় একই পরিবারের তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুইজন।

শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার বাউশিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- আলমগীর, তার ছেলে জহির এবং আলমগীরের মামি রাহেলা বেগম। তাদের বাড়ি চাঁদপুরে। দুর্ঘটনায় আহত দুইজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজীব খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গাজীপুর: শনিবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে জেলার শ্রীপুর উপজেলায় ট্রাক-পিকআপ সংঘর্ষে দুই নির্মাণ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১১ শ্রমিক।

শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. কুদ্দুস দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহতরা হলেন- সুনামগঞ্জের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রাসেল মিয়া (২৫), আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ের স্বামী আবু সুফিয়ান (২৫)।

শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার বেলাল আহমেদ জানান, একটি পিকআপে করে মিক্সার মেশিন নিয়ে ১৩ শ্রমিক ঢালাইয়ের কাজ করতে শ্রীপুর থেকে মাওনা যাচ্ছিলেন। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে পিকআপটি শ্রীপুর-মাওনা আঞ্চলিক সড়কের ভাংনাহাটি কাউন্সিলরের বাড়ির সামনে পৌঁছলে পেছন থেকে একটি ড্রাম্প ট্রাক সেটিকে ধাক্কা দেয়। এতে পিকআপটি উল্টে গেলে মিক্সার মেশিনের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই রাসেল মিয়া নিহত হন। আহত হন ১২ জন। তাদের উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু সুফিয়ানকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত অন্যদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এসআই মো. কুদ্দুস জানান, দুর্ঘটনার পর ট্রাকটি জব্দ করা হলেও এর চালক পালিয়ে গেছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নওগাঁ: শনিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে নওগাঁর আত্রাইয়ে ইটভাঙা মেশিনের চাপায় সঞ্জয় কুমার নামে সিএনজিচালিত অটোরিকশার এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। তিনি এনজিও কর্মী। আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। উপজেলার সাহাগোলা-শিমুলিয়া রাস্তার রেলক্রসিংয়ে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহত সঞ্জয় আত্রাইয়ের আইডিএফ এনজিওতে ফিল্ড অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি রাজশাহী বাঘা উপজেলায়।

নিহত সঞ্জয় কুমারের সহকর্মী শামীম জানান, সঞ্জয় কুমার আইডিএফ এনজিওর আত্রাই শাখায় ফিল্ড অফিসার হিসেবে কাজ করতেন। সকালে বাড়ি থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে অফিসে যাচ্ছিলেন। এ সময় ওভারটেক করার সময় একই দিক থেকে আসা একটি ইটভাঙার মেশিন অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যায়। আহত হন আরও কয়েকজন।

আত্রাই থানার ওসি জহুরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হচ্ছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

নোয়াখালী : নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন লক্ষীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার লতিফপুর গ্রামের মো. রহমত উল্যাহ ভূঁইয়া (৬৫), সেনাসদস্য ফজলুল করিম (৫০) ও লক্ষ্মীপুরের আমানিয়া গ্রামের মো. আলাউদ্দিন (৪৫) । এ ছাড়া আরও একজনের পরিচয় জানা যায়নি।

শনিবার (৪ মে) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ পূর্ব বাজার এলাকার লক্ষ্মীপুর টু নোয়াখালী সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন। তিনি বলেন, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে একটি যাত্রীবাহী সিএনজি লক্ষ্মীপুর থেকে বেগমগঞ্জের দিকে যাওয়ার সময় বেগমগঞ্জের চন্দ্রগঞ্জ পূর্ব এলাকায় পৌঁছালে ট্রাক ও যাত্রীবাহী সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় সড়ক থেকে ১৫ ফিট নিচে ট্রাক ও সিএনজি খালে পড়ে যায়। এতে সিএনজি চালকসহ ৪ জন নিহত হয়।

মাদারীপুর :মাদারীপুরের রাজৈরে বদরপাশা এলাকায় গাছ বোঝাই ট্রাক আর ইজিবাইকের সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন এঘটনায় আরো জন গুরুতর আহত হয়েছেন সকাল ৯টার দিকে কাঠায়িলা বিজ্রের পাশে দুর্ঘটনা ঘটে নিহতরা হলেন হোসেন মুন্সী এবং ধলু হাওলাদার । স্থানীয়রা জানান, নিহতরা ইজিবাইকে করে রাজৈর যাচ্ছিলেন এসময় উল্টোদিক থেকে আসা গাছ বোঝাই একটি ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়


আরও খবর