Logo
শিরোনাম

চিকিৎসাখাতে শৃঙ্খলা ও জবাবদিহিতা প্রয়োজন

প্রকাশিত:সোমবার ১২ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বললেন, চিকিৎসকদের নিজের দায়িত্ব, সৃজনশীলতা, মননশীলতা ও সক্ষমতা নিয়ে চিকিৎসাসেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে সিভিল সার্জন সম্মেলন-২০২৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন । জেলা সিভিল সার্জনদের নিয়ে দুই দিনব্যাপী সম্মেলন সোমবার শুরু হয়েছে। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বাস্থ্যসেবা যে স্বাস্থ্যহীন সেটা আমরা সবাই বুঝি এবং একে অপরকে দোষ দেই। কিন্তু দোষ দিলে তো স্বাস্থ্যহীনতা দূর হয়ে যাবে না। এটার প্রতিকার করতে হবে যাতে করে আমরা স্বাস্থ্যসেবা ঠিক করতে পারি। দুনিয়ার যত দেশ আছে, যত জাতি আছে তারা যদি নিজ নিজ স্বাস্থ্যসেবা আমাদের চাইতে ভালো করতে পারে তাহলে আমাদের মধ্যে কী গাফেলতি আছে, কী অভাব আছে যে কারণে আমরা পারছি না? নিজেদের কাছে আত্মজিজ্ঞাসা করতে হবে যে, কীভাবে আমরা এটা ঠিক করতে পারব।

তিনি বলেন, আমাদের যতটুকু চিকিৎসা সরঞ্জাম বা সুযোগ সুবিধা রয়েছে, এই পরিস্থিতির মধ্যে যদি আমরা পরিবর্তনের জন্য নিজের মন ঠিক করতে পারি তাহলে আমি নিশ্চিত বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার ২৫ শতাংশ উন্নতি হয়ে যাবে।

সম্মেলনে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম কোভিড মহামারি ও জুলাই আন্দোলনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা করায় চিকিৎসদের অভিনন্দন জানান।

স্বাস্থ্যসেবায় সিভিল সার্জনরা মূল কান্ডারি উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, স্বাস্থ্যখাতে আমাদের যথেষ্ট সাফল্য থাকলেও ওষুধ খাত, যন্ত্রপাতিসহ জনবলের ঘাটতি প্রকট থাকায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত এখনো অনেকটাই পেছনে। কিন্তু সিভিল সার্জনরা তাদের মেধা-মনন ও দায়িত্বশীলতাকে কাজে লাগিয়ে চিকিৎসাখাতকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

সাত হাজার সুপার নিউমারারি (অতিরিক্ত) পদ সৃষ্টি করে পদোন্নতির কাজ চলমান আছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। শুধু চিকিৎসক নয়, নার্সও নিয়োগ করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড. সাইয়েদুর রহমান বলেন, পদোন্নতি, পদায়ন, বাজেট এবং ওষুধের অপ্রতুলতা সমস্যার সমাধান হলেই স্বাস্থ্যখাতের উন্নতি সম্ভব। স্বাস্থ্যখাত পুনর্গঠনের জন্য ইউনিক হেলথ কার্ড করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. জিল্লুর রহমান ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. মো. আবু জাফর।


আরও খবর



সরকার নগদ পরিচালনায় স্বতন্ত্র বোর্ড গঠন করবে

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান নগদ পরিচালনায় স্বতন্ত্র বোর্ড গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রোববার সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের পর এ নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর দুই জনই কথা বলেন। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত সরকারের আমলে নগদে যত অনিয়ম যা হয়েছে, ইতোমধ্যে তা বের করা হয়েছে। এর মধ্যে হঠাৎ করে আরেকটা গ্রুপ ঢুকে নগদের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, যাদের নামে মামলা রয়েছে। তারা কেউ নগদে ঢুকতে পারবে না। সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চলেছে।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, নগদকে পুনর্গঠন করে আলাদা স্বতন্ত্র বোর্ডের কাছে দেওয়া হবে। এটা বাংলাদেশ ব্যাংক ও ডাক বিভাগ পরিচালনা করবে না। পুরোপুরি স্বতন্ত্র বোর্ড পরিচালনা করবে। অর্থ উপদেষ্টার মতে, নগদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার ভূমিকা গ্রহণকারী মো. শাফায়েত আলমকে পদত্যাগ করতে হবে। কারণ তারা অবৈধভাবে এটি দখল করেছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক যার নামে মামলা করেছে তাকেই আবার নগদের সিইও করা হয়েছে- সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন কথা বলা হলে ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বিচারাধীন থাকায় এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলা ঠিক নয়। তবে সরকার তা মানবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক তার (সাফায়েত আলমের) বিরুদ্ধে মামলা করেছে, তা চলমান। তাহলে কি ডাক বিভাগের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরোধ সৃষ্টি হবে? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কোনো বিরোধ হবে না।

গভর্নর বলেন, তার (সাফায়েত আলমের) সিইও পদে থাকার কোনো অধিকার নেই। অবশ্যই উনি জালিয়াতি করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী শুনানির দিন উপস্থিত হননি। এর কারণ কী? এমন প্রশ্নে আহসান এইচ মনসুর বলেন, কারণ বাংলাদেশ ব্যাংককে এ বিষয়ে জানানো হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশাসক নিয়োগে আট সপ্তাহের জন্য যে, স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে, তা ছিল হাতে লেখা।

এর আগে গতকাল শনিবার জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকে নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, নগদের আগের বোর্ডে যারা ছিলেন তারা বিপুল আর্থিক অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। যেহেতু প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে কোটি কোটি জনগণের সম্পৃক্ততা আছে এবং শত শত কোটি টাকার আমানত এখানে জড়িত- তাই বাংলাদেশ ব্যাংক সাময়িক প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব নেয়।

আরিফ হোসেন খান বলেন, নগদে অর্থ তছরুপের ঘটনায় যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়, তাঁদের মধ্যে একজন আসামিকে প্রধান নির্বাহী নিয়োগ করা হয়। তাঁকে নগদের পরিচালনা পর্ষদ নিয়োগ দেয়নি, নিয়োগ দিয়েছেন পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধান নির্বাহী। তাঁরা দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের যাঁরা কাজ করছিলেন, তাঁদের সব ধরনের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেন। ফলে গ্রাহকেরা ঝুঁকিতে পড়ে যাচ্ছেন। এ জন্য দ্রুত এই মামলার নিষ্পত্তি হওয়া দরকার। ১৯ মে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।


আরও খবর



গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পেল ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৩ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত বা সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আদালতের পরোয়ানা ছাড়াই আসামি গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) তদন্ত সংস্থা। এমন ক্ষমতা দিয়ে ২০১০ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কার্যপ্রণালী বিধিমালায় সংশোধন আনা হয়েছে।

সংশোধিত আইসিটি আইনে তদন্ত সংস্থাকে এ ক্ষমতা দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার, সদস্য এম মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী ও মো. শফিউল আলম মাহমুদের আদেশে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার এ এস এম রুহুল ইমরান এই প্রজ্ঞাপন জারি করেন।

এতে ট্রাইব্যুনাল কোনো আসামি বা আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট প্রসিকিউটরও পরোয়ানাভুক্ত আসামি বা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারবেন।

এর আগে অভিযোগ ছিল, এতদিন এই ক্ষমতা না থাকায় পরোয়ানার তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ায় অনেক আসামিই পালিয়ে গেছে। তদন্ত সংস্থা এই ক্ষমতা পাওয়ায় এখন থেকে আর এ সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ট্রাইব্যুনালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরোয়ানা জারির পরপরই জেনে যাচ্ছেন আসামি পুলিশ কর্মকর্তারা। এখন পর্যন্ত কর্মস্থল ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছেন ১৫ থেকে ২০ পুলিশ কর্মকর্তা। আইসিটির ২৩ মামলায় এখন পর্যন্ত ১৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে ৯৪ জনকেই গ্রেপ্তার করা যায়নি।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সঙ্গে পর্যায়ক্রমে যুক্ত থাকে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা, চিফ প্রসিকিউটরের অফিস, ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার অফিস, আদালতের এজলাস, আইজিপি অফিস ও আসামির সংশ্লিষ্ট থানা। প্রসিকিউশন জানায়, সরকারি এসব অফিসের কেউ না কেউ তথ্য পাচার করে আসামিদের পালাতে সাহায্য করছে।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের কার্যপ্রণালী বিধিমালার ২৪টি বিধিতে সংশোধন আনা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি বিধি একেবারেই বিলুপ্ত এবং বাকি ১৯টি বিধি আংশিক বা পুরোপুরি বিলুপ্ত করে নতুন কার্যপ্রণালী বিধি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।


আরও খবর



রাণীনগরে আগুন দিয়ে খড়ের পালা পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১০ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

নওগাঁর রাণীনগরে পূর্ব বিরোধের জ্বের ধরে খড়ের পালায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ভস্মিভূত করার অভিযোগ ওঠেছে। এসময় প্রায় ২২লাখ টাকা দামের একটি ট্রাক্টরও পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে দূর্বৃত্তরা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কালীগ্রাম ওঝাওজি পাড়া গ্রামে।

ওই গ্রামের মৃত আব্বাস আলী শেখের ছেলে জাহের আলী শেখ জানান,সোমবার রাত অনুমান পৌনে ১২টা নাগাদ বাড়ী সংলগ্ন বাগানে পূর্ব বিরোধের জ্বের ধরে কে বা কাহারা দুটি খড়ের পালায় আগুন ধরে দেয়। কিন্তু স্থানীয় লোকজন আগুন দেখতে পেয়ে দৌঁড়ে আসে। এসময় স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় একটি পালার আগুন নিভাতে পারলেও প্রায় ৫বিঘার একটি পালা সম্পন্ন ভস্মিভূত হয়ে যায়। তিনি দাবি করে বলেন,তার খলিয়ানে রাখা প্রায় ২২লাখ টাকা দামের একটি ট্রাক্টরে অকটেন ছিটিয়ে দেয় দূর্বৃত্তরা। কিন্তু লোকজন ছুটে আসায় তারা আর হয়তো আগুন দিতে পারেনি। এঘটনায় তিনি আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন।  

রাণীনগর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মসলেম উদ্দীন বসুনিয়া জানান,এঘটনায় কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরও খবর



চাঁদপুরে অর্ধশতাধিক গ্রামে ঈদুল আজহা উদযাপন

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবার শরীফসহ জেলার প্রায় অর্ধশত গ্রামে আজ শুক্রবার পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার দরবার শরিফের পীরজাদা মাওলানা মুফতি আরিফ চৌধুরী এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র সৌদি আরব নয়, কোরআন ও হাদিসের আলোকে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে আমরা রোজা পালন, ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা উদযাপন করে থাকি। এ উপলক্ষে কুরবানির পশু ক্রয়সহ আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ ও মতলব উত্তর উপজেলায়ও আজ সকালে ঈদ উদযাপন হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ১৯২৮ সাল থেকে সাদ্রা দরবার শরীফের মরহুম পীর মাওলানা ইসহাক (রহ.) সৌদি আরবসহ অন্য আরব দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদযাপনের প্রথা চালু করেন। তার অনুসারী মুসল্লিরা চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় একই সঙ্গে ঈদুল আযহা উদযাপন করেন।

হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, সমেশপুর, অলিপুর, বলাখাল, মনিহার, প্রতাপুর, বাসারা, ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর, কামতা, গল্লাক, ভুলাচোঁ, সোনাচোঁ, উভারামপুর, উটতলি, মুন্সিরহাট, কাইতাড়া, মূলপাড়া, বদরপুর, আইটপাড়া, সুরঙ্গচাইল, বালিথুবা, পাইকপাড়া, নূরপুর, সাচনমেঘ, শোল্লা, হাঁসা, গোবিন্দপুর, মতলব উপজেলার দশানী, মোহনপুর, পাঁচানী এবং কচুয়া ও শাহরাস্তি উপজেলাসহ অর্ধশত গ্রামে আজ ঈদুল আজহা উদযাপন হচ্ছে। 


আরও খবর



বর্ষা-সাহিত্যে জীবনের জলছবি

প্রকাশিত:রবিবার ১৫ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

মাজহারুল ইসলাম মাসুম, সিনিয়র সাংবাদিক, লেখক, গবেষক :

ঋতুরাজ যদি হয় বসন্ত তাহলে ঋতুর রানি অবশ্যই বর্ষা। ঋতুচক্রে রানির মতো তার বিরাজ। সৃষ্টির শাশ্বত সুর বুকে নিয়ে সে সমৃদ্ধ করে চলেছে আমাদের জীবন ও সাহিত্য। বর্ষা ছাড়া সাহিত্য কিংবা জীবন অনেকটাই কষ্ট-কল্পনা। তাই বর্ষার কাছে আমরা চিরঋণী।

আকাশে মেঘের আনাগোনা আর বৃষ্টি জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে বর্ষার আগমন। বর্ষার আগমন যেন স্বস্তি-শান্তি ও আনন্দের। তীব্র গরমে নগরবাসীর জীবনে আনন্দের বার্তা হয়ে এলো বর্ষা। তপ্ত ধরণীর বুকে বৃষ্টির পানি ঢেলে এই ঋতু প্রকৃতির রূপও বদলে দেয়। ‘আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদর দিনে... জানি নে, জানি নে... কিছুতে কেন যে মন লাগে না…’। রবীন্দ্রনাথের এই গান যেন আরও মধুর করে তোলে এই ঋতুকে। ঋতুর পালাবদলে নদ-নদীতে যেমন নতুন করে প্রাণ আসে, তেমনি গাছে ফোটে কদম, বকুল নানা রকমের ফুল। কদমকে তো আষাঢ়ের প্রতীকই ভাবা হয়।

রবিবার (১৫ জুন) পহেলা আষাঢ়। বাংলা ক্যালেন্ডারে আষাঢ়-শ্রাবণ দুই মাস নিয়ে বর্ষাকাল। বর্ষা নিয়ে কবি-সাহিত্যিকদের রচনায় আছে হাজারো ছোঁয়া। বর্ষার প্রথম দিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভেসে বেড়ায় রবীন্দ্রনাথের গান, বর্ষার ছবি, আর স্মৃতির বর্ণনা। বর্ষায় শুধু বকুল-কদমই ফোটে না, বেলি, জুঁই, দোলনচাঁপা, গন্ধরাজ, হাসনাহেনাসহ প্রায় সব সাদা ফুলের ঘ্রাণে ভরে ওঠে চারপাশ।

বাঙালি সাহিত্যিকদের লেখায়ও বর্ষা যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। রবি ঠাকুরের ভাষায়— ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশও ছেয়ে... আসে বৃষ্টিরও সুবাসও বাতাসও বেয়ে...’।

তবে বর্ষা যেমন আনন্দের, বর্ষার নির্মম নৃত্য তেমনই হঠাৎ বিষাদে ভরিয়ে তোলে জনপদ। যেমন—হঠাৎ করে আসা বৃষ্টি যেমন নগরবাসীকে স্বস্তি এনে দেয়, আবার জলাবদ্ধতার কারণে সেই বৃষ্টিই হয়ে দাঁড়ায় দুর্ভোগের কারণ। তবুও বর্ষা বাঙালি জীবনে নতুনের আবাহন। সবুজের সমারোহে, মাটিতে নতুন পলির আস্তরণে আনে জীবনেরই বারতা। সুজলা, সুফলা, শস্য শ্যামলা বাঙলা মায়ের নবজন্ম এই বর্ষাতেই। সারা বছরের খাদ্য-শস্য-বীজের উন্মেষতো ঘটবে বর্ষার ফেলে যাওয়া অফুরন্ত সম্ভাবনার পলিমাটি থেকেই।

এদিকে আষাঢ়ের প্রথম দিন উন্নয়নের নামে চলমান প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি নিয়ে প্রতি বছরের মতো এ বছরও বর্ষা ঋতুকে বরণ করে নিতে ‘বর্ষা উৎসব’ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। রবিবার (১৫ জুন) বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। সকাল সাড়ে ৭টায় সুর-সংগীতে প্রকৃতি-বন্দনার মধ্য দিয়ে শুরু হবে উৎসবের কর্মসূচি।

মৌসুমি বায়ু কারণে আগেই বর্ষা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে থেমে থেমে গত কিছুদিন ধরেই বৃষ্টির দেখা মিলেছে। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, এ বৃষ্টিপাত আগামী কয়েক দিন আরও বাড়তে পারে। বৃষ্টির এই সময়ে গরমের তাপদাহ কমে আসায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে সবাই। তবে এতে ভোগান্তিও হয়, যখন শহরে রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে যায়।

আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।

বর্ষার প্রথম দিন অর্থাৎ রবিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়—রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

পরদিন সোমবারের পূর্বাভাসে বলা হয়—রংপুর, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পাশাপাশি দিনের তাপমাত্রা এক থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। একইভাবে মঙ্গলবার ও বুধবারের পূর্বাভাসেও বৃষ্টির খবর দেওয়া হয়েছে।

বর্ষাকে নিয়ে নানা মিথ রয়েছে, বিশেষ করে দেশের নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে। কক্সবাজারের রাখাইন সম্প্রদায় বর্ষাকে বরণ করে ভিন্ন রকমভাবে। প্রতিবছর তারা কক্সবাজরর সমুদ্র সৈকতে মাসব্যাপী বর্ষাবরণ উৎসবের আয়োজন করে থাকে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকেরা এ বর্ষাবরণ উৎসবে যোগ দেন।

বর্ষা ঋতু তার বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বতন্ত্র। বর্ষা ঋতু কাব্যময়, প্রেমময়। বর্ষার প্রবল বর্ষণে নির্জনে ভালোবাসার সাধ জাগে, চিত্তচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। শত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার ভিড়েও কোথায় যেন মেলে এক চিলতে বিশুদ্ধ সুখ। কদম ফুলের মতো তুলতুলে নরম, রঙিন স্বপ্ন দুই চোখের কোণে ভেসে ওঠে, ঠিক যেমন করে আকাশে সাদা মেঘ ভেসে বেড়ায়। পুষ্প-বৃক্ষে, পত্র-পল্লবে, নতুন প্রাণের সঞ্চার করে, নতুন সুরের বার্তা নিয়ে সবুজের সমারোহ নিয়ে এসেছে বর্ষা। গ্রীষ্মের ধুলোমলিন জীর্নতাকে ধুয়ে ফেলে গাঢ় সবুজের সমারোহে প্রকৃতি সাজবে পূর্ণতায়। আষাঢ়ের প্রথমদিনে আজও রয়েছে আকাশেও মেঘের ঘনঘটা।


আরও খবর