Logo
শিরোনাম

চিকিৎসাসেবার পরিবেশ নিরাপদ রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৩ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, চিকিৎসাসেবার পরিবেশকে নিরাপদ রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর। সাম্প্রতিক সময়ে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হামলা, ভাঙচুর কিংবা চিকিৎসকদের হুমকির মতো দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। সেজন্য সরকার চিকিৎসকদের নিরাপত্তাসহ চিকিৎসার সামগ্রিক পরিবেশকে অনুকূল, নিরাপদ ও জনবান্ধব করতে কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সিভিল সার্জনদের প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আরো জোরদার করতে হবে।

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে দুই দিনব্যাপী (১২-১৩ মে) সিভিল সার্জন সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সিভিল সার্জনদের উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা বলেন, আপনারা সমাজের সবচেয়ে মেধাবী মানুষ। তাই আপনাদের ওপর জনপ্রত্যাশা সবচেয়ে বেশি। জেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যখাতের চালিকাশক্তি হিসেবে আপনাদের প্রতিটি সিদ্ধান্ত, প্রচেষ্টা ও ত্যাগ সরাসরি মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করে, ছুঁয়ে যায়। তাই, আপনারা হচ্ছেন মানুষের আশার আলো, দুঃসময়ে ভরসার আশ্রয়। সেবাকে আরো জনমুখী করতে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, পোস্টমর্টেম সেবাকে থানা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া; মহিলাদের পোস্টমর্টেম মহিলা ডাক্তার দিয়ে করানো; ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে মহিলা ডাক্তার দিয়ে পরীক্ষা করানো, না পাওয়া গেলে মহিলা সেবিকা দিয়ে করিয়ে পুরুষ ডাক্তার দিয়ে প্রতিস্বাক্ষর করা, শিক্ষক ও শিক্ষা উপকরণহীন এবং ভবনকেন্দ্রিক বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো বন্ধ করা, অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল গঠন করে মেডিকেল কলেজগুলোর মান উন্নীতকরণ, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ৬ মাস শহরে ও ৬ মাস গ্রামে করার ব্যবস্থাকরণ ও গ্রামে থাকাকালীন সম্মানী ভাতা বৃদ্ধিকরণ, ইত্যাদি।

তিনি বলেন, এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা গেলে জনগণ দ্রুত সেবা পাবে ও জনদুর্ভোগ হ্রাস পাবে। তাছাড়া মানহীন চিকিৎসক তৈরির হাত থেকে দেশ ও জাতি রক্ষা পাবে।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, মাদকবিরোধী অভিযান ও মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এ সময় থানা বা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সঙ্গে অংশীদার হয়ে মাদক পুনর্বাসন ও কাউন্সেলিং কার্যক্রমকে ফলপ্রসূ করতে সিভিল সার্জনদের আহ্বান জানান।

চিকিৎসকদের প্রতি জনগণের কিছু অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, চিকিৎসা পেশা নিঃসন্দেহে সম্মানজনক। চিকিৎসকদেরই জনগণকে সবচেয়ে বেশি সেবা দেয়ার সুযোগ রয়েছে এবং তারা তা করতে সচেষ্ট আছেন। তথাপিও চিকিৎসকদের প্রতি জনগণের কিছু অভিযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করতে চাই এ অভিযোগগুলো যেন মিথ্যা প্রমাণিত হয়। তিনি আরও বলেন, জনগণের সবচেয়ে বড় অভিযোগ হলো- অনেক সরকারি চিকিৎসক হাসপাতালে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপস্থিত হন না বা পূর্ণ সময় থাকেন না। অনেক উপজেলা বা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীরা ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও চিকিৎসা পান না। এই অনুপস্থিতি স্বাস্থ্যসেবার মানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ও স্বাস্থ্যখাত সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে।

প্রশ্নোত্তর পর্বে উপদেষ্টা সিভিল সার্জনদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। সিজিল সার্জনরা এ সময় উপদেষ্টার নিকট বিভিন্ন দাবি-দাওয়া উত্থাপন করেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- জেলা হাসপাতালগুলোকে কেপিআই স্থাপনার স্বীকৃতি প্রদান ও সেখানে পুলিশ টহল বৃদ্ধিকরণ, জেলার পোস্টমর্টেম সেন্টারকে আধুনিকীকরণ, সিভিল সার্জনদের জন্য গানম্যান প্রদান, ইত্যাদি। উপদেষ্টা যৌক্তিক দাবিগুলো বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী প্রমুখ।


আরও খবর



হাসপাতালগুলোতে ফের করোনা পরীক্ষা শুরু

প্রকাশিত:বুধবার ১১ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

কোভিড সংক্রমণের হার ১৭ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ এবং দীর্ঘ বিরতির পর গত ৫ জুন করোনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে আগামী ১০ দিনের মধ্যে দেশের প্রধান হাসপাতালগুলোতে করোনা পরীক্ষার সুবিধা বাড়াতে কাজ করছে সরকার। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ১০১টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৩ জনের শরীরে করোনা ধরা পড়েছে।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) কোভিড-১৯ নজরদারি ডেটা বিশ্লেষণ অনুযায়ী, মে মাসে সংক্রমণের হার তীব্রভাবে বেড়েছে। মে মাসে পরীক্ষা করা ১ হাজার ৪০৯টি নমুনার মধ্যে ৯.৫১ শতাংশ কোভিড-১৯ পজিটিভ এসেছে, যা জানুয়ারি ২০২৩ এর পর সর্বোচ্চ।

আইসিডিডিআর, বি-ও জানিয়েছে, গত মাসে কোভিড রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। তবে তাদের বিজ্ঞানীরা জোর দিয়ে বলেছেন, বর্তমানে জনসাধারণের বড় ধরনের উদ্বেগের কোনো কারণ নেই এবং কোভিড-১৯ এর সাধারণ সতর্কতাগুলো মেনে চলার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন তারা।

এদিকে আইসিডিডিআর,বি এবং আইইডিসিআরের যৌথভাবে পরিচালিত হাসপাতাল-ভিত্তিক ইনফ্লুয়েঞ্জা নজরদারি গবেষণায় দেখা গেছে, এপ্রিল মাসে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রথমবারের মতো দুটি নতুন ওমিক্রন সাব-ভ্যারিয়েন্ট এক্সএফজি এবং এক্সএফসি শনাক্ত হয়েছে।

গত সোমবার প্রকাশিত আইসিডিডিআর,বি-র এক প্রতিবেদন অনুসারে, গবেষণায় অংশ নেওয়া হাসপাতালগুলোতে পরীক্ষা হওয়া রোগীদের প্রায় ৭ শতাংশের মধ্যে নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস মিলেছে। বছরের শুরুর দিকে যখন সংক্রমণ প্রায় ছিলই না, তার তুলনায় এই হার অনেক বেশি।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক হালিমুর রশীদ বলেন, যেসব হাসপাতালে আরটি-পিসিআর ল্যাব রয়েছে, করোনা পরীক্ষা পুনরায় চালু করার প্রস্তুতি নিতে তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয় কম্পানিগুলো থেকে করোনা পরীক্ষার কিট সংগ্রহ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিদেশ থেকে টেস্ট কিট আনতে সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরস ডিপোকে (সিএমএসডি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা পুনরায় চালু করা যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। 

তিনি যোগ করেন, প্রাথমিক পর্যায়ে শুধু আরটি-পিসিআর সুবিধাসম্পন্ন মেডিকেল কলেজ ও জেলা হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা শুরু হবে। যেসব রোগীর কোভিড-১৯-এর উপসর্গ থাকবে বা যাদের ডাক্তাররা পরীক্ষার পরামর্শ দেবেন, শুধুমাত্র তারাই পরীক্ষা করাতে পারবেন।

এদিকে গত ৬ জুন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশিকা জারি করেছে। এরপর বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষও যাত্রীদের মাস্ক পরার অনুরোধ জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম কোভিড-১৯ শনাক্ত হয় এবং এর ১০ দিন পর প্রথম মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। এরপর থেকে দেশে ২০ লাখ ৫১ হাজারের বেশি আক্রান্ত ও ২৯ হাজার ৪৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে ২০২১ সাল ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী।


আরও খবর



বিআরটিএতে এখনো বহাল দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড শহীদুল্লাহ

প্রকাশিত:রবিবার ১৮ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

দুর্নীতির প্রসঙ্গ এলে যে-সব প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে আসে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে নিম্নপদ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পদধারীর বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যায়। আওয়ামী লীগের আমলে এই প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি না করাই যেন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তেমনি একটি বড় চক্রের নেতৃত্বে ছিলেন বিআরটিএ ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক প্রকৌশলী মো. শহীদুল্লাহ। স্বৈরাচারী সরকারের পতন হলেও বহাল তবিয়তে চেয়ার ধরে রেখেছেন এসব আমলারা। পলাতক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নির্বাচনী ফান্ডে অর্থ যোগানদাতাদের তালিকায় প্রথম দিকেই আছে এই শহীদুল্লাহর নাম।  

বিআরটিএ সূত্র জানায়, সংস্থাটি থেকে ঘুষ ও চাঁদা তুলে ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত নির্বাচনী তহবিল গঠনে বড় ভূমিকা রাখতেন শহীদুল্লাহ। এই সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন উপ-পরিচালক ছানাউল হক, মোরছালিন ও রফিকুল ইসলাম। এদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালনকালে শহীদুল্লাহর বিরুদ্ধে ব্যাপক ঘুষ বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন। চট্টগ্রামে ১৩ হাজার সিএনজি অটোরিকশা প্রতিস্থাপনে প্রতি ইউনিটে ২ লাখ টাকা ও রেজিস্ট্রেশনের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে উৎকোচ আদায়ের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। আর তাতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ছিলেন উত্তরা মোটরসের সাতজন ডিলার। এই হিসাবে, শুধু এ প্রকল্প থেকেই ২৮৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা আদায় হয়।

এ ছাড়া, ভারতে তৈরি চার আসনের ২ হাজার ম্যাগজিমা অটোরিকশাকে বেআইনিভাবে ৭ আসনের অটো-টেম্পু হিসেবে রেজিস্ট্রেশন দিয়ে গাড়িপ্রতি ২ লাখ টাকা করে মোট ৪০ কোটি টাকা ঘুষ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। একইভাবে চট্টগ্রামের ২০ হাজার গ্রামবাংলা সিএনজি অটোরিকশা থেকে গাড়িপ্রতি ৩০ হাজার টাকা করে মোট ৬০ কোটি টাকা গ্রহণের অভিযোগ করা হয়েছে।

সবমিলিয়ে চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালনকালে শহীদুল্লাহ ও তার সিন্ডিকেট ৩৮৭ কোটি ৫০ লাখ টাকার ঘুষ বাণিজ্যে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

ওই সময় তার সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন চট্ট মেট্রো-১ এর এডি তৌহিদ হোসেন। বর্তমানে তিনি পদোন্নতি পেয়ে ময়মনসিংহ বিভাগীয় দপ্তরে কর্মরত রয়েছেন। তৌহিদ হোসেন সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী ও বিআরটিএর সাবেক চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদারের এলাকা নোয়াখালীর পরিচয় দিয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে চট্টগ্রাম বিআরটিএকে উৎকোচ বাণিজ্যের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিলেন। 

একপর্যায়ে সমালোচনার শুরু হলে শহীদুল্লাহকে ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক করে ২০২২ সালে ঢাকায় নিয়ে আসেন ওবায়দুল কাদের, সচিব আমিন উল্লাহ নুরী ও চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার। এখানে এসেও দুর্নীতির ধারা অব্যাহত থাকে।

ঢাকায় দায়িত্ব পালনের শুরু থেকেই অনিয়ম-দুর্নীতিতে ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে পান ফ্যাসিস্ট সরকারের সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জি. মোশারফ হোসেনের কথিত ভাতিজা ও ফরিদপুর-৪ এর সাবেক সাংসদ নিক্সন চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামকে। যাকে সম্প্রতি বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছে।

বিআরটিএতে দালাল সিন্ডিকেট শক্তিশালী করার মূল কারিগরই ছিলেন এই শহীদুল্লাহ ও রফিকুল। এই দুই কর্মকর্তার কারণে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের আমলে দালাল ছাড়া কোনো কাজই হতো না। কারণ দালাল চক্রের মাধ্যমে কাজ করলেই মিলত মোটা দাগের উৎকোচ।

অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা মেট্রো সার্কেল ১, ২, ৩ ও ৪-এ লাইসেন্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ২ হাজার টাকা করে আদায় করা হয়যা শহীদুল্লাহ ও তার ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তারা ভাগ করে নিতেন।

অভিযোগ অনুযায়ী, মাসে প্রায় ১৮ হাজার পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয় এসব সার্কেলে। ফলে মাসে প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা এবং তিন বছরে মোট ১২৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছেযার একটি অংশ সরাসরি যেত সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নির্বাচনী ফান্ডে।

শুধু তাই নয়, জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলন ঠেকাতে সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পিএস ও বিআরটিএর সাবেক চেয়ারম্যান গৌতম চন্দ্র পালের সঙ্গে শহীদুল্লাহর ঘনিষ্ঠতারও অভিযোগ উঠেছে। আন্দোলন নস্যাতের ষড়যন্ত্রে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন বলেও দাবি করা হয়েছে।

সরকারি কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও শহীদুল্লাহর নামে-বেনামে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি। মোহাম্মদপুর বাবর রোডে একটি ডুপ্লেক্স, শ্যামলীতে মার্বেল খচিত বহুতল ভবন এবং গাজীপুরে দুটি বাড়ির কথা অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কোনো কর্মকর্তা এক জায়গায় তিন বছরের বেশি দায়িত্বে থাকতে পারেন না। অথচ শহীদুল্লাহ গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে একই পদে বহাল। বিআরটিএ সদর দপ্তর থেকে তাকে সংযুক্ত করার আদেশ থাকলেও এখনো তিনি ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। সংশ্লিষ্টরা একে সরকারি আদেশ অমান্য বলে আখ্যা দিয়েছেন।

যোগাযোগ করা হলে শহীদুল্লাহ সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এসব চরম মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ। আদেশ হলে না যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আদেশে আমাকে সংযুক্ত করা হয়েছে। নতুন কাউকে দায়িত্ব দিলে আমি সেখানে যোগ দেব।

তিনি বলেন, দুদকে অভিযোগ দিলে কিন্তু তারা গ্রহণ করবে। এটা কোনো প্রশ্ন হলো না। দুর্নীতি করলে লুকানোর কিছু নেই। যারা করছে বা যদি করে থাকে তাহলে যথাযথ কর্তৃপক্ষ এগুলো পেয়ে যাবে।  তিনি পুনরায় দাবি করে বলেন, এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ।

বিআরটিএর এমন অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অনেক প্রতিষ্ঠানেই একই চিত্র। হঠাৎ করে কিছু ব্যক্তির পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু চর্চার পরিবর্তন হয়নি। আর বিআরটিএর মতো সংস্থা তো আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল। বিগত কর্তৃত্ববাদের সময় সেটা আরও বেশি। কাজেই বিভিন্নভাবে এটার সুযোগ-সুবিধা তারা নিয়েছে। সেটিই এখন প্রমাণিত হচ্ছে। দুদককে পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক বা অন্য কারণে যারা এমন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ যাদের বিরুদ্ধে আছে তাদেরকে বহাল রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এটা অনৈতিক। কারণ যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে, সেই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার আগেও তাদের কিন্তু সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার কথা। অভিযোগ হয়ে থাকলে ও তদন্ত শুরু করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং তদন্ত সংস্থাগুলোর উচিত হবে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদেরকে সাময়িক বহিষ্কার করা।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যথাযথ তদন্তের ভিত্তিতে প্রযোজ্য শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিআরটিএর বর্তমান প্রেক্ষিত তো বটেই এই সংস্থা সম্পর্কে সারাদেশের মানুষের যে ধারণা এই ধারণার যে অভিজ্ঞতা সেটার পরিবর্তন লাগবে। পরিবর্তনের সেই সুযোগটা এখনই। দুদকেরও এখনি সেই সুযোগটা নেওয়া উচিত। বিআরটিএর সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষও এর দায় এড়াতে পারে না। কারণ বিআরটিএ যদি তাদের বহাল তবিয়তেই রাখে বা তাদেরকে সুরক্ষা দেয় তাহলে সেটাও কিন্তু দুর্নীতির সহায়ক। এ থেকে বিআরটিএকে সরে আসা উচিত।

এসব বিষয়ে বিআরটিএর বর্তমান চেয়ারম্যানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তার ফোনে কল ও হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠানো হয়। এক সপ্তাহের বেশি পেরিয়ে গেলেও তিনি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি।

তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বাবর রোডে বি-ব্লকের ১৩/এ/১ নম্বর শেলটেক চন্দ্রমল্লিকায় তার রয়েছে আলিশান ডুপ্লেক্স এপার্টমেন্ট। এছাড়াও শ্যামলীর ২ নম্বর রোডে ১২-ঠ-৭ হোল্ডিংস্থ একটি মার্বেল পাথর খচিত বিলাসবহুল বাড়িও রয়েছে। গাজীপুরের জয়দেবপুর ও চন্দনায় রয়েছে দু'টি নজরকাড়া বাড়ি।

 

শুধু তাই নয়, মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরার কাচারিকান্দিতেও নামে বেনামে বিপুল সম্পদ গড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতিবাজ এ কর্মকর্তা মাঝে মধ্যেই দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যেরে দেশগুলোতে পরিবারের সদস্যদের বিলাস ভ্রমণের খবর সবারই জানা। সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের অধীনস্থ বিআরটিএর বিগত সময়ের সিএনজি রিপ্লেস ধান্ধার হোতা মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ঘুষবাজ রক্ষণাবেক্ষণ আরেক লম্বা হস্তের খুশি-খেয়াল মতো ধান্ধায় বেহুশ। তিনি সেই লম্বা হাত মানে-পরিচালক প্রশাসনর নির্দেশে যে কয়জন ওই আন্দোলন ভিন্নখাতে নেয়ার ধ্বংসযজ্ঞের ইন্ধন যুগিয়েছেন-তাদের মধ্যে অন্যতম।

সূত্রটি জানায়, বরাবরই তিনি তার অদৃশ্য লম্বা হাতের ছোঁয়ায় অর্থাৎ পরিচালক প্রশাসনের ক্ষমতা বলে রক্ষাকবজরূপে সব সার্কেলের ঘুষবাজদের সক্রিয় রাখার বিনিময়ে পান মোটা উৎকোচ। এর আগেই ডিডি থাকা অবস্থায় সিএনজির রিপ্লেস ধান্ধাসহ মোটা দাগে লুটপাটের টাকায় বিপুল বিত্ত-বৈভবের মালিকানার সাথে মহাগুরু বনে যান। এরপর ওই তকমায় চিটাগাং থেকে ঢাকায় ফিরে রয়েছেন বহাল তবিয়তে। আর নিয়োগ বদলি বাণিজ্যে তো বরাবরই তার জুড়ি মেলা ভার।

সূত্র আরও জানায়, বিআরটিএর ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক হয়েই অদৃশ্য হাতের ছোঁয়ায় শহীদুল্লাহ বিআরটিএ ঘিরে অদৃশ্য শক্তির বলয় তৈরি করে রেখেছেন। এ খাতের অনিয়ম দেখার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানটির যে বিভাগটি রয়েছে, সেটিও তার হাতের মুঠোয়। বিআরটিএর সব কূটকৌশলের মাস্টারমাইন্ড বলেও রয়েছে তার খ্যাতি। বিভাগীয় পরিচালক শহীদুল্লাহর সর্বোচ্চ পদে আসীনদের সঙ্গেও তার অন্তরঙ্গ ওঠা বসা। এভাবেই নীতির ফেরিওয়ালার বেশে বিগত কয়েক বছরে চতুর শহীদুল্লাহ নামে-বেনামে গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পদ।  

এছাড়া তিনি বিআরটিএর জমিদার বলে বেশ পরিচিত । তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে-শতাধিক গাড়ির শোরুম ম্যানেজারও। আর এসব সখ্যতা ও সুখ্যাতির অক্ষুণ্নতা রক্ষায়ই আলোচিত ছাত্র আন্দোলনকে ভিন্নখাতে নেয়ার অংশীদার হয়ে বিআরটিএর ধ্বংসযজ্ঞের একটি অংশে মূল কয়েক হোতাদের পরেই পরিচালক শহীদুল্লাহর নাম ছড়াচ্ছে। যা চলমান সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন তদন্ত সংস্থার সরাসরি বরাত না মিললেও সংশ্লিষ্ট দফতরেও নানা মুখে ছড়িয়ে পড়ছে। সদ্য বিআরটিএর ওই লম্বা হস্তের সাথে এ শুভানুধ্যায়ীর বে-খবরটিও ঘুরপাকের আভাসে এ থেকে নিজেকে আড়াল করার নানা ফন্দিও তিনি ইতোমধ্যে এঁটে রেখেছেন। তার মানে-ওই সেই কথাঠাকুর ঘরে কে রে? আমি কলা খাই না অর্থাৎ-তিনি ওই আন্দোলনের সময় দেশে ছিলেন না, বলে প্রচার শুরু করেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে বিআরটিএ'র ঢাকা বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।


আরও খবর

৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা

মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫




রাণীনগরে সেনাবাহিনীর একদিনের ফ্রি চিকিৎসা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:রবিবার ২৫ মে 20২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ জুন ২০২৫ |

Image

কাজী আনিছুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ) :

নওগাঁর রাণীনগরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একদিনের বিনামূল্যে চিকিৎসা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে। অধিনায়ক ২৫ফিল্ড এ্যাম্বুলেন্স ১১পদাতিক ডিভিশন বগুড়ার জাহাঙ্গীরাবাদ সেনানিবাসের আয়োজনে  রোববার সকাল ৯টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এই চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। এসময় প্রায় দেড় হাজার বিভিন্ন ধরনের রোগী চিকিৎসা গ্রহন করেন।

২৫ফিল্ড এ্যাম্বুলেন্সের অধিনায়ক লে: কর্ণেল মো: রকিব উদ্দিন মজুমদার এমসিপিএস,ডিএফএম,এএমসি জানান,ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় দেশের সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মানবিক উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছে। এর ধারাবাহিকতায় রোববার রাণীনগর উপজেলার আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ৬জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে মেডিসিন,চক্ষু,গাইনি,শিশু ও চর্ম রোগের চিকিৎসা প্রদানসহ প্রায় ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। এছাড়া জটিল রোগীদের অন্যান্য চিকিৎসাসহ অপারেশনের ব্যবস্থাও রয়েছে। বগুড়া অঞ্চলের তত্ত¡াবধানে এবং ১১পদাতিক ডিভিশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এই মেডিকেল ক্যাম্পে প্রায় দেড় হাজার রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়।

 তমেজ উদ্দীন (৬৫),ফরেজ আলী ফকির (৭২),মেরিনা আক্তার (২৪),সাজ্জাদ হোসেন (৩৫)সহ ক্যাম্পে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা বাংলাদেশ সেনাবাহীনির এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তাদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।


আরও খবর



ইসরায়েলি হামলায় ইরানে ১২৮ জন নিহত, আহত ৯০০

প্রকাশিত:সোমবার ১৬ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

ইসরায়েলি হামলায় দুই দিনে (শুক্রবার ও শনিবার) নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ১২৮ জন নিহত এবং প্রায় ৯০০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইরানি গণমাধ্যমগুলো। ১৫ জুন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে কিছু ইরানি সংস্থা এবং সংবাদমাধ্যম তাদের নিজস্ব পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। তবে এসব তথ্য সঠিকভাবে নিশ্চিত হতে পারেনি বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে শনিবার জানানো হয়েছে, তেহরানের একটি ভবনে ইসরাইলি হামলায় ২০ শিশুসহ ৬০ জন নিহত হয়েছেন।

পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর বলেন, সেখানে ৩১ জন মারা গেছেন, যার মধ্যে ৩০ জন সামরিক কর্মী এবং ইরানি রেড ক্রিসেন্টের একজন সদস্য রয়েছেন।

ইরানি রেড ক্রিসেন্ট পশ্চিম আজারবাইজান প্রদেশে একটি অ্যাম্বুলেন্সে হামলায় দুইজন নিহত হওয়ার খবর জানায়। এছাড়া শনিবার জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত বলেছিলেন, ইসরায়েলি হামলায় ৭৮ জন নিহত এবং ৩২০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

ইরানের সরকারের মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি জানান, গত তিন দিনে কমপক্ষে ৩০ জন নারী ও শিশু নিহত হয়েছে। তবে তিনি মোট মৃত্যুর সংখ্যা জানাননি। এছাড়া ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, শুক্রবার আইআরজিসি এরোস্পেস ফোর্সের কমান্ডারসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ডস কর্পস (আইআরজিসি) এর কমপক্ষে ১৮ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। আলাদা হামলায় সাতজন পরমাণু বিজ্ঞানীও নিহত হন।

এদিকে টানা তৃতীয় দিনের মতো ইরানে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। রবিবার বিকালের পর দেশটির রাজধানী তেহরানে নতুন করে বিস্ফারণের শব্দ শোনা গেছে। তেহরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে শাহরাক-ই-গারব এবং সাদাত আবাদ এলাকায় বিকট আকারে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এছাড়াও ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় শহর ইসফাহানে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দফতর লক্ষ্য করেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তবে, ওই হামলায় এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে ইসরায়েলের তেল আবিব ও আশপাশের শহরগুলোতে শনিবার (১৪ জুন) রাতভর ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইরান। এই হামলায় বহু ভবন বিধ্বস্ত হয়ে কমপক্ষে ১১ ইসরায়েলি নিহত এবং প্রায় ২৪০ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া বেশ কয়েকজন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল।


আরও খবর



সব পক্ষকে সংযত আচরণের আহ্বান জামায়াত আমিরের

প্রকাশিত:শনিবার ২৪ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

দেশে বর্তমানে রাজনৈতিক যে অস্থিরতা বিরাজ করছে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তার সমাধান বেরিয়ে আসবে বলে মনে করছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এজন্য সব পক্ষকে সংযত আচরণের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। দলের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে এই অধিবেশন শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জামায়াত আমির।

ডা. শফিকুর রহমান বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, একটি দায়িত্বশীল সংগঠন হিসেবে এই পরিস্থিতিতে জামায়াতে ইসলামী চুপ করে থাকতে পারে না৷ ইতোমধ্যে আপনারা লক্ষ্য করেছেন, আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে দলীয় নির্বাহী পরিষদের সভায় বসেছি। দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। বৈঠক শেষে আমরা বলেছি, সংঘাত এবং কাদা ছোড়াছুড়ির মধ্য দিয়ে জাতিকে আর অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া কোনো অবস্থাতেই সমীচীন হবে না। এ সংস্কৃতির অবসান হওয়া উচিত। এজন্য প্রয়োজন অর্থবহ ডায়ালগ। এই দায়িত্বটা মূলত বর্তমান সরকারকেই নিতে হবে। তাদের এ অর্থবহ ডায়ালগের ব্যবস্থা করে নিতে হবে। সমস্যা যত বড়ই হোক আমরা বিশ্বাস করি আলোচনার মধ্য দিয়ে সন্তোষজনক সমাধানে পৌঁছা সম্ভব।

জামায়াত আমির বলেন, জামায়াতে ইসলামী তার নিজস্ব অবস্থান থেকে ইতোমধ্যে কতিপয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমরা নির্বাহী পরিষদের বৈঠক থেকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে আমরা আশা করি সেই বৈঠকে ভালো কিছু বের হয়ে আসবে। অতীতেও আমরা লক্ষ্য করেছি এ ধরনের পরিস্থিতিতে দেশ ও জনগণ যখন মুখোমুখি হয়েছে তখন আলোচনার উদ্যোগও সফল হয়েছে। আমরা আশাবাদী আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যা সমাধান সম্ভব।

এদিকে জামায়াতে ইসলামী আজ সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় পেয়েছে। দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় যাবে বৈঠক করতে। এদিন বিএনপির সঙ্গেও প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।


আরও খবর