সরকার পরিবর্তনের পর রাজধানীতে অবৈধ যানবাহনের সংখ্যা
বেড়েছে। এছাড়া বিভিন্ন দাবি-দাওয়া ও অস্থিরতার কারণে সড়কের শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ায়
বেড়েছে যানজট,
বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.)
মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স ট্রাফিক
পক্ষ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদ সরকারের পতনের পর ঢাকাসহ সারা দেশের ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। দেশের আপামর জনগণের কথা বিবেচনা করে ছাত্র-জনতা কিছুদিন সুশৃঙ্খলভাবে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করে সড়ক ও পরিবহনের শৃঙ্খলা বজায় রাখে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পুলিশের সঙ্গে ছাত্র-জনতাসহ সমাজের নানা শ্রেণিপেশার লোকজনের কায়িক শ্রম ও মূল্যবান পরামর্শে ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নয়নের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বেআইনি যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে ট্রাফিক বিভাগ।
তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অবকাঠামো বৃদ্ধি পেলেও পরিবহন ব্যবস্থার সুশৃঙ্খল ও আধুনিকায়ন উল্লেখযোগ্যভাবে হয়নি। শহরের জনগণের জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে সাশ্রয়ী ও আরামদায়ক যানবাহন উল্লেখযোগ্যভাবে দেওয়া সম্ভব হয়নি। পাশাপাশি একই সড়কে রিকশা ঠেলাগাড়িসহ অসংখ্য অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল করে। মানুষ তার প্রয়োজনে এসব যানবাহনের দারস্ত হচ্ছে। ফলে ঢাকা মহানগরীতে সুশৃঙ্খল ও কাঠামোগত ট্রাফিক ব্যবস্থা বাস্তবায়ন কঠিন হচ্ছে। অপরদিকে সময়ে সময়ে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া ও অস্থিরতার কারণে সড়কের শৃঙ্খলা ভেঙে যাচ্ছে। বৈধ-অবৈধ যানবাহনের অধিক্যের কারণে যানজটের আকার দিন দিন অসহনীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের সদস্যদের চেষ্টা সত্ত্বেও ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন আশানুরূপ হয়নি। ট্রাফিক সিগন্যালে দেশিয় প্রযুক্তি চালু করার জন্য একটি গবেষক দল কাজ করছে। আশা করি, স্বল্প সময়ের মধ্যে এটা চালু হবে। এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাকে সম্পৃক্ত করে ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নে বর্তমান সরকার কাজ করছে। শুধু সরকার কিংবা পুলিশের কাজ করার মাধ্যমে ঢাকা মহানগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থা আশানুরূপ উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। এ জন্য প্রয়োজন নগরীর প্রতিটি মানুষকে সম্পৃক্ত করা। রাস্তায় চলাচলের ক্ষেত্রে গাড়ির চালক ও ট্রাফিক পুলিশের যেমন দায়িত্ব রয়েছে, তেমনই নগরীর অধিবাসীদেরও ট্রাফিক আইন মেনে চলা একান্ত কর্তব্য।
এবারের ট্রাফিক পক্ষ উদযাপনে ছাত্র-জনতা যোগ দিয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম অবস্থায় ৩০০ জন ছাত্র এই ট্রাফিক সপ্তাহে কাজ করবেন। পরে এই সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। এ জন্য তাদের আমরা একটা সম্মানী দেবো।
নগরবাসীর প্রতি আহ্বান রেখে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘ছাত্র-জনতাসহ নগরে বসবাসকারী জনসাধরণকে সচেতন ও সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে ট্রাফিক শৃঙ্খলা উন্নয়ন সম্ভব। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ঢাকা মহানগর পুলিশ ১৫ দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এর ফলে ঢাকা মহানগরীর ট্রাফিক বিভাগের কাজে যেমন গতি আসবে, তেমনই ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে জনভোগান্তি কমে আসবে।
এর আগে ট্রাফিক পক্ষ-২০২৪ উদ্বোধন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য
শোভাযাত্রা,
র্যালি ও বেলুন উড়ানো হয়। অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল
হাসানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয়
সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ,
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও পুলিশ মহাপরিদর্শক
(আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম।