প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন
নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবিতে ইসরায়েলজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। বিশেষ করে
রাজধানী তেল আবিব বিক্ষোভ উত্তাল। এতে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন। ইহুদিবাদী নেতা
নেতানিয়াহুকে ‘চুক্তির পথে বাধা’ বলে উল্লেখ করে তাকে ক্ষমতাচ্যুত
না করা পর্যন্ত বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
এর আগেও এমন বিক্ষোভ
হয়েছে। তবে নেতানিয়াহু জানিয়েছেন তিনি পদত্যাগ করবেন না।
গাজায় হামলা ঘিরে
সাধারণ মানুষ ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রবল চাপে রয়েছে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক জোট।
গাজায় জিম্মিদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও সংহতি জানিয়েছে এসব আন্দোলকারী।
গত শনিবার শুরু হওয়া
বিক্ষোভ ছড়িয়েছে তেল আবিব, জেরুজালেম, হাইফা, বেয়ার শেভা, সিজারিয়া এবং অন্যান্য
শহরে। প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাস্তায় নেমে আসা হাজারও বিক্ষোভকারী। তারা গাজায় এখনও
বন্দি থাকা ইসরায়েলিদের মুক্তির দাবি জানান।
বিক্ষোভে অংশ নিয়ে
জিম্মি লিরি আলবাগের মা শিরা আলবাগ বলেন, ‘আমার ছেলে এবং অন্য জিম্মিরা কী অবস্থায়
আছে, সেই চিন্তা ও ভয়ে ১৭৬ দিন ধরে অন্য কিছু ভাবতে পারি না।’
তিনি বলেন, জিম্মি
বিনিময় চুক্তিতে যে-ই বাধা হয়ে দাঁড়াবে, তাকে ইসরায়েলের জনগণ ক্ষমা করবেন না। এখন
আর কোনো অজুহাত চলবে না।
বিক্ষোভে অংশ নেন
প্রায় ৫৪ দিন আগে মুক্তি পাওয়া জিম্মি রাজ বেন-আমি। বিক্ষোভকারীরা ‘জিম্মি
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়’, ‘তারা সবাই
বাড়ি ফিরে না আসা পর্যন্ত থামব না’বলে স্লোগান দেয়।
বিক্ষোভ দমাতে কঠোর
অবস্থানে রয়েছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরই মধ্যে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে
জলকামান ব্যবহার করেছে পুলিশ।
গত ৭ অক্টোবর
ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস।
হামলায় ১২শ’র বেশি মানুষ নিহত হয়। জিম্মি করে নিয়ে যায় আরও ২৪২ জনকে।
ওই দিন থেকে পাল্টা আক্রমণে তীব্র আক্রোশে গাজার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ইসরায়েলি বাহিনী।
গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার দেশটি। ইসরায়েলি এই
হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত
বা ধ্বংস হয়ে গেছে। হামলায় পুরো গাজা ভূখণ্ড প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
প্রায় ছয় মাসের মতো
ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ৩২ হাজার ৭০৫ ফিলিস্তিনি। আর আহত হয়েছেন ৭৫
হাজার ১৯০ জন। ঘরবাড়ি হারিয়ে গাজার বাসিন্দারা প্রায় সবাই উদ্বাস্তু হয়ে গেছে।
কঠোর অবরোধ ও অবিরাম
হামলার মধ্যে থাকা গাজাবাসীরা অনাহারে ভুগতে ভুগতে দুর্ভিক্ষের প্রান্তে চলে গেছে।
ইতোমধ্যেই অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় শিশুসহ অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষুধায় বেপরোয়া
হয়ে ওঠা লোকজন ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে।