
রোকসানা মনোয়ার : গত দুই বছরের তুলনায় এ বছর ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু রোগীর হার বেশি। ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুতে মৃত্যুও বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিতে সারাদেশের হাসপাতালগুলোকে চিঠি দেওয়া, ডেঙ্গু শনাক্তে টেস্টিং কিট সরবরাহ করা, ডাক্তারদের রোগী ম্যানেজমেন্টের ট্রেনিং দিলেও ডেঙ্গু পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে মশা মারতে উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৬ সালে দেশে ডেঙ্গু রোগীর ৯৯ শতাংশই ছিল ঢাকায় এবং মাত্র ১ শতাংশ ছিল ঢাকার বাইরে। ২০১৭ সালে ঢাকায় রোগী ছিল ৯৬ শতাংশ ও ঢাকার বাইরে ৪ শতাংশ। পরের বছর ২০১৮ সালে শতভাগ রোগীই ছিল ঢাকায়। ২০১৯ সালে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়, সে বছর ঢাকায় রোগী ছিল ৫১ শতাংশ ও ঢাকার বাইরে ৪৯ শতাংশ। এরপর থেকেই ঢাকার বাইরে রোগী বাড়তে থাকে। ২০২০ সালে ঢাকার ডেঙ্গু রোগী ছিল ৮৭ শতাংশ ও ঢাকার বাইরে ১৩ শতাংশ এবং ২০২১ সালে ঢাকায় ৮৩ শতাংশ ও ঢাকার বাইরে ১৭ শতাংশ। কিন্তু চলতি বছর এরই মধ্যে ঢাকায় ৮০% ও ঢাকার বাইরে ২০% ডেঙ্গু রোগী।
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, 'এ বছর ঢাকার
বাইরে অনেক বেশি ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যাচ্ছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশন,
পৌরসভাকে মশা মারতে উদ্যোগ নিতে হবে। বাড়িতে, টবে
পানি জমতে দেয়া যাবে না। কেউ যদি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় তাহলে ডাব, স্যালাইন, পানি খেতে হবে। প্যারাসিটামল ছাড়া কোন
ধরণের ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া যাবে না। ডেঙ্গুতে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন নেই।
জ্বর বেশি হলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াই ভালো, তবে ডেঙ্গুতে
অধিকাংশ রোগীর প্লাটিলেট বা ব্লাড দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। তাই ডেঙ্গু হলেই আতঙ্কিত
হয়ে প্লাটিলেট দিতে হবে না।
এদিকে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, 'ঢাকা ও ঢাকার
বাইরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। স্বাস্থ্য সেবা দিতে পারি, আমরা
সেটা করছি। কিন্তু প্রতিরোধ জরুরি। সারাদেশে মশার উপদ্রব রয়েছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে
স্বাস্থ্য বিভাগ, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন সবাইকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে।