Logo
শিরোনাম

ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

প্রকাশিত:রবিবার ০৯ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। ঢাকাসহ তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মধ্যরাতে শুরু হওয়া বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন নারী শিক্ষার্থীরা। তারা ধর্ষণ এবং নারী নিপীড়নের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচার করার দাবি জানিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ধর্ষণের ঘটনার দ্রুত বিচার এবং শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে আসেন। এর মধ্যে একটি বিশেষ ঘটনায়, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হেনস্তা করার পর, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের একজন কর্মচারীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তবে আদালতে জামিন পাওয়ার পর হঠাৎ করে ‘তৌহিদী জনতা’ নামে এক দল লোক থানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে, এই ঘটনা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিবৃতি দিয়ে অভিযুক্তের শাস্তি দাবি করেন।

ঢাবির রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা প্রথমে মশাল মিছিল বের করেন। তাদের হাতে ছিল নানা স্লোগান ও ব্যানার, যেখানে লেখা ছিল, ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন?’ এবং ‘ফাঁসি ফাঁসি, ধর্ষকের ফাঁসি চাই’। মিছিলটি রোকেয়া হল থেকে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন এলাকা প্রদক্ষিণ করে আবার হলের সামনে ফিরে আসে। এরপর, সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীরা মিছিলে যোগ দেন এবং রাত ১২টার পর তারা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে স্লোগান দেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ এবং অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান। বিশেষ করে, তারা সরকারের কাছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষণের বিচার নিশ্চিত করার আল্টিমেটাম দেন। এরই মধ্যে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, ‘যদি আগামী চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষণের বিচারের ব্যবস্থা না হয়, তাহলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।’

এদিকে, মাগুরায় একটি শিশু নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনাটি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। শিশুটির অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সবাই উদ্বিগ্ন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি, জাহাঙ্গীরনগর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা সমাবেশ ও মিছিল করে ধর্ষণ এবং যৌন নিপীড়নবিরোধী প্রতিবাদ জানায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাত ৯টার দিকে শিক্ষার্থীরা শামসুজ্জোহা চত্বরে সমবেত হয়ে সরকারকে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। তারা বলেন, ‘নারীদের নিরাপত্তা দিতে না পারলে, দেশের শাসনভার চালানোর অধিকার আপনারা হারিয়ে ফেলেছেন।’

এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা আরও ঘোষণা করেছেন, তারা যতদিন না ধর্ষণের বিচার নিশ্চিত হবে, ততদিন তাদের প্রতিবাদ চলবে। তাদের এই আন্দোলন ধর্ষণ এবং নারী নির্যাতনবিরোধী জাতীয় আন্দোলনে পরিণত হতে পারে, যার মাধ্যমে সরকারের প্রতি আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।


আরও খবর



চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার দুর্ঘটনায় নিহত ১০

প্রকাশিত:বুধবার ০২ এপ্রিল 2০২5 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ জনে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজনের মৃত্যু হলে নিহতের সংখ্যা ১০ জনে দাঁড়ায়।

নিহতদের মধ্যে তিনজন নারী, দুজন শিশু ও পাঁচজন পুরুষ। তবে তাদের পরিচয় এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ২ জন।

আজ (বুধবার) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় রিল্যাক্স পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে দুটি মাইক্রোবাসের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে ৭ জন, লোহগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন লোহাগাড়া থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান।

দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বাসযাত্রী মতিন মিয়া জানান, ‘চট্টগ্রামমুখী যাত্রীবাহী রিলাক্স পরিবহনের বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। বেশ কয়েকবার চালক বাসটি থামানোর চেষ্টা করে। এর মধ্যেই বিপরীত দিক থেকে আসা কক্সবাজারমুখী মাইক্রোবাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসের আট যাত্রী ঘটনাস্থলে নিহত হন। আহত হন ৪ জন।

এর আগে একই স্থানে ঈদের দিন সোমবার দুই বাসের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হন। গতকাল মঙ্গলবার একই স্থানে দুইটি মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ৮ জন আহত হন।

দোহাজারী হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল মতিন বলেন, নিহতদের মধ্যে একজনের নাম দিলীপ। তিনি ঝিনাইদহের বোয়ালিয়া এলাকায়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

বার বার একই এলাকায় দুর্ঘটনার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুদিন আগেও এখানে দুর্ঘটনায় ৫ জন মারা গেছেন। আমার ৩ মাসের অভিজ্ঞতায় বলছি, কক্সবাজারে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা এই সড়ক ব্যবহার করে যাতায়াত করেন। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অপরিচিত চালকরা এই সড়ক দিয়ে গাড়ি চালান। তারা সড়কটি সম্পর্কে জানেন না। পাশাপাশি সড়কে যথাযথ সিগন্যাল নেই। দুর্ঘটনাস্থলের পাশেই একটা বিপজ্জনক বাঁক রয়েছে। অন্য এলাকার চালক হলে এটা কতটুকু বিপজ্জনক বুঝতে পারেন না।


আরও খবর



পর্যটকদের বরণে প্রস্তুত প্রকৃতিকন্যা সিলেট

প্রকাশিত:বুধবার ০৯ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

পর্যটনের আদর্শ স্থান হিসেবে পরিচিত সিলেট। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি খ্যাত এই অঞ্চলে বিশেষ ছুটি ছাড়াও প্রায় সারা বছর দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে। এবারে ঈদে লম্বা ছুটি আর ভারতীয় ভিসা বন্ধের সুযোগে সিলেটে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক সমাগমের আশা সংশ্লিষ্টদের।

পর্যটক বরণে এরই মধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। নিরাপদ ও ভোগান্তিমুক্ত চলাচল নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সিলেট প্রশাসন পর্যটকদের জন্য কন্ট্রোল রুম খোলার কথাও জানিয়েছে।

জানা গেছে, এরই মধ্যে সিলেটের পর্যটন স্পটগুলোতে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। পর্যটক বরণে স্পটগুলোতে শেষ সময়ের প্রস্ততি চলছে। ভ্রমণ পিপাসুদের নজর কাড়তে শেষ হয়েছে ধোয়ামোছা ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ।

এবার জাফলং, ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর, বিছনাকান্দি ও রাতারগুলে পর্যটক ভিড় জমবে। প্রকৃতি কন্যা খ্যাত সিলেটের উঁচু-নিচু পাহাড় আর ঢেউ খেলানো চা-বাগান পর্যটকের আকর্ষণের অন্যতম উপলক্ষ্য।

এছাড়াও হযরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরান (রহ.) মাজার জিয়ারতের জন্য অধিকাংশ পর্যটকের পছন্দের গন্তব্য সিলেট।

এই অঞ্চলের অন্যান্য পর্যটন স্পটের মধ্যে রয়েছে, লালাখাল, শ্রীপুর, পান্তুমাই, মায়াবতি ঝর্ণা, জৈন্তিয়া রাজবাড়ী, ডিবির হাওর, লোভাছড়া, বড়লেখার মাধবকুণ্ড, জকিগঞ্জে তিন নদী সুরমা-কুশিয়ারা-বরাক মোহনা, তাহিরপুরের টেকেরঘাট, শিমুলবাগান, বর্ষার অন্যতম আকর্ষণ টাঙ্গুয়ার হাওর, মৌলভীবাজারের হাকালুকি, শ্রীমঙ্গলের চা বাগান, হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক।

সিলেট নগরে এছাড়াও দেখার মতো অনেক স্থাপনাও রয়েছে। কিনব্রিজ, আলী আমজাদের ঘড়ি, চাঁদনি ঘাটের সিঁড়ি, জিতু মিয়ার বাড়ি, খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান, শাহী ঈদগাহ, রাজা গৌর গোবিন্দের টিলা, লাক্কাতুরা ও মালনীছড়া চা বাগান। শিশুদের বিনোদনের জন্য ওসমানী শিশু উদ্যান ও এম সাইফুর রহমান শিশু পার্কের নগরজুড়ে গড়ে ওঠা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রিজেন্ট পার্কসহ বিভিন্ন পার্কে ভিড় করেন স্থানীয় দর্শনার্থীরা। স্থানীয়দের পর্যটনের নতুন আকর্ষণ হিসেবে যোগ হয়েছে গোলাপগঞ্জের উঁচু-নিচু টিলাভূমিতে বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে তোলা আনারস বাগান।

এবার ঈদের ছুটি সিলেটে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক সমাগমের আশা পর্যটন ব্যবসায়ীদের। তারা বলছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটবে।

এদিকে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকার পূর্বাভাসও দিয়েছে সিলেট আবহাওয়া অফিস। সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসাইন বাসসকে জানিয়েছেন, এবার আবহাওয়া অনেকটা পর্যটকদের অনুকূলে থাকবে। 

ঈদ পরবর্তী এক সপ্তাহ সিলেটে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তবে, তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।

হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে অগ্রিম বুকিং দিতে শুরু করেছেন পর্যটকরা। এরই মধ্যে ৫০ ভাগ হোটেল অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। এপ্রিলে ৮-৯ তারিখ পর্যন্ত কেউ কেউ বুকিং দিয়ে রাখছেন।

সিলেট নগরের হোটেল মেট্রো ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজার আবু তাহির জানান, এরই মধ্যে সাড়া পাচ্ছেন তারা। এপ্রিলের ২ তারিখ থেকে বুকিং কনফার্ম করেছেন অনেকে। কেউ কেউ যোগাযোগ করে হোটেলের সুযোগ-সুবিধা ও ভাড়া জেনে নিচ্ছেন। তিনি আশা করছেন, তার হোটেলের কোনো কক্ষ খালি থাকবে না।

সিলেট হোটেল এন্ড গেস্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি সুমাত নূরী জুয়েল বলেন, সবসময়ই ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের পছন্দের গন্তব্য সিলেট। কক্সবাজারের এবং সিলেটকে বেছে নেন সারাদেশের পর্যটকরা। তবে, বড় একটি অংশ ভারতের কলকাতা কিংবা সেভেন সিস্টার্সের দিকে ঝুঁকে থাকেন। এবার ভারতীয় ভিসা বন্ধ থাকা এবং সরকারি লম্বা ছুটির কারণে এইসব পর্যটক সিলেট কিংবা কক্সবাজারে যাবেন। তাই, অন্য যে কোনো বছরের চেয়ে এবার সিলেটে পর্যটক বেশি হবে বলে আশা আমাদের।

সিলেট চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও রেইনবো হোটেল এন্ড গেস্ট হাউজের স্বত্বাধিকারী খন্দকার সিপার আহমদ বলেন, আমার জানামতে এরই মধ্যে বেশির ভাগ হোটেলের ৫০ ভাগ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। অনুকূল পরিবেশ থাকলে এবার সিলেটে রেকর্ডসংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটবে।

আগত পর্যটকদের জন্য কী সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা যায় তা নিয়ে প্রশাসনও উদ্যোগী হয়েছে। গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রতন কুমার অধিকারী বাসসকে বলেছেন, অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও জাফলংয়ে পর্যটকদের সমাগম বেশি হবে। আগের তুলনায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় সেখানে কয়েক লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটবে বলে আশা করছি।

এছাড়া পর্যটকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান। 

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহার বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা-পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা একযোগে তৎপরতা চালাবেন। পর্যটকরা যাতে হয়রানির শিকার না হন সেজন্য উপজেলায় পরিবহণ, ঘাট ইজারাদার ও পর্যটন কেন্দ্রের ফটোগ্রাফারদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক হয়েছে। সে ব্যাপারে তাদেরকে সচেতন করা হয়েছে।

দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ফয়েজ হাসান ফেরদাউস বলেন, এবার লম্বা ছুটি হওয়াতে অন্য বছরের তুলনায় বেশি সংখ্যক পর্যটক সমাগম হবে। ভারতের ভিসা বন্ধ থাকায় এবার চাপ আরো বাড়বে।

তিনি বলেন, এরই মধ্যে হোটেল-মোটেলগুলো ৬০-৭০ শতাংশ বুক হয়ে গেছে। আশা করছি এবার ভালো ব্যবসা হবে। এতে করোনা পরবর্তী বিগত বছরগুলোর ক্ষতি পুষিয়ে ওঠতে পারবেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

ট্যুরিস্ট পুলিশ সিলেট অঞ্চলের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) গোলাম দস্তগীর আহমেদ বলেন, সিলেটে ব্যাপক পর্যটক উপস্থিতির বিষয়টি মাথায় রেখে নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। পোশাকধারী ছাড়াও সাদাপোশাকেও তৎপরতা চালাবে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

সিলেট জেলা পুলিশের মিডিয়া ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা মো. সম্রাট তালুকদার জানান, এবার ঈদে পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রতিটি স্পটে থাকবে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ট্যুরিস্ট পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে জেলা পুলিশ। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়েন করতে হবে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, ইতোমধ্যে পর্যটন এলাকাগুলোয় প্রশাসনের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। পর্যটকদের নির্বিঘ্নে যাতায়াত ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ট্যুরিস্ট পুলিশ একযোগে কাজ করবে।

তিনি বলেন, প্রতিবছর সিলেটে পর্যটকদের আগমন ঘটে। ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে সাইন বোর্ড লাগানো হয়েছে। পর্যটন এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে।

শের মাহবুব মুরাদ আরো বলেন, আবাসিক হোটেল ও রেস্টুরেন্টে যাতে অতিরিক্ত টাকা না নেয় সেজন্য নিদের্শনা প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি পর্যটকরা যাতে এই এলাকায় নকল পণ্য ও কসমেটিকস কিনে প্রতারিত না হয় সেজন্য অভিযান পরিচালনা করা হবে। বিভিন্ন বিষয়ে সমন্বয় রক্ষার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসময়ে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হবে।


আরও খবর



অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহারে ঝুঁকি বাড়ছে

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৫ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

২০২২ সালে সারা বিশ্বে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে ৩০ লাখের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ সংখ্যা আগের তুলনায় অন্তত দশ গুণ বেশি। করোনাভাইরাস মহামারীর সময় ও পরে অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত এবং ভুল ব্যবহারের কারণে এ পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তারা বলছেন, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স বা এএমআর আজ আর শুধু চিকিৎসাবিদ্যার সংকট নয়, এটি হয়ে উঠেছে মানবসভ্যতার অস্তিত্ব রক্ষার চ্যালেঞ্জ।

অস্ট্রেলিয়ার মুরডক চিলড্রেন্স রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং ক্লিনটন হেলথ অ্যাকসেস ইনিশিয়েটিভের যৌথ গবেষণায় দেখা যায়, আফ্রিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শিশুরা এ সংকটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গবেষকরা একে বলছেন, শিশুদের জন্য চুপিসারে এগিয়ে আসা এক বৈশ্বিক বিপর্যয়। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ইউরোপিয়ান সোসাইটি অব ক্লিনিক্যাল মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড ইনফেকশিয়াস ডিজিজেস জার্নালে।

এএমআর বা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স তখনই তৈরি হয়, যখন সংক্রমণ সৃষ্টি করা জীবাণু অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। ফলে সাধারণ সংক্রমণও প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আগেই একে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যের অন্যতম বড় হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। কিন্তু শিশুদের ক্ষেত্রে এ প্রভাব এতটা ভয়াবহ হবে, তা এতদিন স্পষ্টভাবে বোঝা যায়নি।

গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৯-২১ সালের মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ওয়াচ অ্যান্টিবায়োটিকস-এর ব্যবহার বেড়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বেড়েছে ১৬০ শতাংশ আর আফ্রিকায় ১২৬ শতাংশ। এগুলো এমন ওষুধ, যেগুলো সাধারণত গুরুতর সংক্রমণের জন্য রাখা হয়, যাতে অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার এড়িয়ে যাওয়া যায়।

আরো ভয়াবহ হলো রিজার্ভ অ্যান্টিবায়োটিকস, যেগুলো একেবারে শেষ ভরসা হিসেবে ব্যবহার হয়। এর ব্যবহার ৪৫ শতাংশ বেড়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। আফ্রিকায় বেড়েছে ১২৫ শতাংশ।

গবেষকরা বলছেন, এ প্রবণতা চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতেই বহু সংক্রমণের আর কোনো কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি থাকবে না। তারা মনে করছেন, কভিড-১৯ মহামারীর সময় অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত এবং ভুল ব্যবহার এ পরিস্থিতিকে আরো ঘনীভূত করেছে। ভাইরাস সংক্রমণে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ না করলেও বহু ক্ষেত্রেই সেগুলো ব্যবহার হয়েছে প্রতিষেধক হিসেবে।

গবেষণা দলের প্রধান প্রফেসর হার্ব হারওয়েল বলেন, ‘‌এটি একটি বৈশ্বিক সংকট, যা সবাইকে প্রভাবিত করছে। এককভাবে এর সমাধান করা সম্ভব নয়। অ্যান্টিবায়োটিক শুধু চিকিৎসায় নয়খাদ্য, পরিবেশ এমনকি পশু পালনেও ব্যবহার হয়, ফলে এদের প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্রুত বেড়ে যায়।

কিংস কলেজ লন্ডনের মাইক্রোবায়োলজির জ্যেষ্ঠ লেকচারার ডা. লিন্ডসে এডওয়ার্ডস বলেন, ‘‌এ গবেষণার ফলাফল অত্যন্ত উদ্বেগজনক। যদি এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়া হয়, তাহলে শিশুস্বাস্থ্যে গত কয়েক দশকের অগ্রগতি ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।

এ সংকট মোকাবেলায় বিশেষজ্ঞরা টিকাদান, নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা এবং অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিচ্ছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, টিকা গ্রহণের মাধ্যমে ৪০-৫০ শতাংশ ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব। এছাড়া হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং চিকিৎসকদের সঠিক নির্দেশনা মেনে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার নিশ্চিত করাও জরুরি।

খবর বিবিসি।


আরও খবর



সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলার আসামী বাবুর বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

প্রকাশিত:বুধবার ০৯ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

জামালপুর প্রতিনিধি :

জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউপির বহিস্কৃত চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলম বাবুর জামিন বাতিল করে গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার দুপুরে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। বিক্ষোভ মিছিল শেষে পরে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে নাদিম হত্যা মামলার প্রধান আসামী আলম বাবুর জামিন বাতিল করে গ্রেফতারের দাবি জানান।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সাধুরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গাজীউর রহমান মোল্লা, সহ-সভাপতি রাশেদুজ্জামান সোনা মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন খান ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আনার আলী প্রমূখ। মানববন্ধনে নাদিমের বাবা, স্ত্রী ও সন্তানরাসহ এলাকার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন খান বলেন,মাহমুদুল আলম বাবুর ভাই পুলিশের বড় কর্মকর্তা ছিলেন। তার দাপটে নানা অপকর্ম করেছেন খুনী বাবু। এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। আবারও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ার দখলের পাঁয়তারা করছেন। দ্রুত বাবুকে গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানান তিনি।

উল্লেখ্য,২০২৩ সালের ১৪ জুন পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে রাত আনুমানিক ১০টার দিকে নিজ বাসায় ফিরছিলেন সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম। পথে বকশীগঞ্জ পৌর শহরের পাটহাটি এলাকায় তাঁর ওপর হামলা হয়। তাঁকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে হামলাকারীরা। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে জামালপুর সদর হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। জামালপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ জুন বিকেল ৩ টার দিকে মারা যান সাংবাদিক নাদিম। এ ঘটনায় ১৭ জুন ২২ জনের নামে থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম। অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয় ২০ থেকে ২৫ জনকে। মামলার প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউপির বরখাস্ত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু।


আরও খবর



স্মার্ট কার্ড সেবা থেকে বঞ্চিত সাড়ে ৬ কোটি মানুষ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৩ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা দিতে দেশের নাগরিকদের স্মার্ট কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিতরণ কর্মসূচি শুরুর পর প্রায় সাড়ে আট বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো স্মার্টকার্ড পাননি সাড়ে ছয় কোটির মতো নাগরিক।

ইসির সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ২৭৪ জন। এখন পর্যন্ত স্মার্ট কার্ড পেয়েছেন ৭ কোটি ১৯ লাখ ৩৪ হাজার নাগরিক। অর্থাৎ স্মার্ট কার্ড হাতে পায়নি এমন ভোটারের সংখ‌্যা ৬ কোটি ৬৬ লাখ ১ হাজার ১৫৩ জন, যার মধ্যে বিতরণের অপেক্ষায় আছে ১ কোটি ৪৮ লাখ ৩ হাজার ২৭১টি।

২০১৬ সালের ৩ অক্টোবর স্মার্ট কার্ড বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে নির্বাচন কমিশন। সে হিসাবে আট বছর পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও সব নাগরিকের হাতে স্মার্ট কার্ড পৌঁছে দিতে পারেনি নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সংস্থাটি।

স্মার্ট কার্ড বিতরণে ধীরগতির কারণ জানতে চাইলে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এস এম হুমায়ুন কবীর ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আমাদের এখন প্রায়োরিটি কাজগুলো হচ্ছে আমরা যে ভোটার নিবন্ধন করছি সেটি সংশোধনের যেসব আবেদন করা হচ্ছে, সেগুলো নিষ্পন্ন করা এবং ইসির প্রতিদিনের যেসব কাজ থাকে সেটা। এসব কাজের কারণে আমরা কিন্তু স্মার্ট কার্ড বিতরণ করতে পারছি না। নিবন্ধনের কাজ শেষ হয়ে গেলে তখন আমরা স্মার্ট কার্ড বিতরণে মনোযোগ দিতে পারব। এছাড়া সকলকে স্মার্ট কার্ড দেওয়ার লক্ষে আমরা নতুন স্মার্ট কার্ড কেনার প্রক্রিয়া চলমান রেখেছি।’

জানা গেছে, ভোটার তালিকার ভিত্তিতে নাগরিকদের উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ২০১১ সালে আইডিইএ (স্মার্টকার্ড) প্রকল্পটি হাতে নেয় কমিশন। তারপর দীর্ঘ চার বছর নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে স্মার্টকার্ড তৈরির দিকে এগোয় সংস্থাটি। এক্ষেত্রে ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান অবার্থার টেকনোলজিসের সঙ্গে ওই সময়ের ৯ কোটি ভোটারের জন্য নয় কোটি ব্ল্যাংক স্মার্টকার্ড তৈরি করে দিতে ২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি চুক্তি করে ইসি। যার মেয়াদ ছিল ১৮ মাস। কিন্তু মেয়াদ বাড়ানোর পরেও ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত চুক্তিতে উল্লেখিত কার্ড সরবরাহ করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। ফলে সে বছরের শেষের দিকে অবার্থারের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, অবার্থার ১ দশমিক ৫১ ডলার দরে ৭ কোটি ৭৩ লাখ কার্ড সরবরাহ করতে পেরেছিল। সেই মোতাবেক আগের ১ কোটি ২৭ লাখ নাগরিকের কার্ড ঘাটতি ছিল। এই কয়েক বছরে ভোটার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ২৭৪ জন। সব মিলিয়ে আরও প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটির মতো ব্ল্যাংক কার্ড তৈরি এবং তাতে নাগরিকের তথ্য সংযুক্ত করে বিতরণে যেতে হবে। এজন্য ইতিমধ্যে আইডিইএ দ্বিতীয় প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আর ১ হাজার ৮০৫ কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে তিন কোটি কার্ড দেওয়ার কথা থাকলেও ডলারের দাম বাড়ায় ২ কোটি ৩৬ লাখ ৩৩ হাজার ৭২০টি কার্ড দেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি-বিএমটিএফ। অবশিষ্ট কার্ডগুলো প্রকল্পের মেয়াদ শেষে রাজস্ব খাত হতে ক্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। তবে নতুন প্রকল্প থেকে কার্ড তৈরি ও বিতরণেও তেমন অগ্রগতি নেই। ১১৪ উপজেলার ভোটারের স্মার্টকার্ড ছাপানোই হয়নি বলে জানিয়েছেন অনেক কর্মকর্তা।

ইসির স্মার্ট কার্ড বিতরণের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এ পর্যন্ত মোট স্মার্ট কার্ড প্রিন্ট হয়েছে ৮ কোটি ৬৭ লাখ ৩৭ হাজার ৬৬৩টি। বিতর‌ণ করা হয়েছে ৭ কোটি ১৯ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯২টি। আর বিতরণের অপেক্ষায় আছে ১ কোটি ৪৮ লাখ ৩ হাজার ২৭১ টি।

নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে. (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, এনআইডির (স্মার্ট কার্ড) যে ব্লাংক কার্ড, এটা একটা ক্রাইসিস তৈরি হয়েছে বেশ কিছু দিন ধরে। তিন কোটি কার্ড কেনার জন্য সেনাবাহিনীর সঙ্গে চুক্তি হয়। কিন্তু ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে সেনাবাহিনী আমাদের দিতে পারছে না মর্মে চিঠি দেয়। পরে এটা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয়, তারা ১৭২ টাকা করে আমাদের কার্ড দেবে। কিন্তু সে সময় সেনাবাহিনী রাজি ছিল না। পরে এটা নিয়ে একটা ওপেন টেন্ডারে যাওয়ার পরিকল্পনা হয়েছিল। এরপর সেনাবাহিনী ১৭২ টাকা করে দিতে রাজি হয়। সে অনুযায়ী কমিশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৪০৬ কোটি টাকায় যতগুলো কার্ড হয় সেগুলো তাদের কাছ থেকে নেওয়ার।


আরও খবর