Logo
শিরোনাম

ডিবি থেকে হারুনকে বদলি

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০১ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

মো: আবুল খায়ের (বিশেষ প্রতিনিধি):

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশীদকে গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) দায়িত্ব থেকে বদলি করা হয়েছে। তাঁকে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস)–এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।



 বুধবার (৩১ জুলাই) ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ বদলির তথ্য জানানো হয়েছে।



একই আদেশে হারুনের স্থলে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) প্রধানের পদে নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার আশরাফুজ্জামান। এর আগে তিনি ডিএমপি লজিসটিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট বিভাগে কর্মরত ছিলেন।



আরও খবর



হাসিনার শাসনামল ছিল স্বৈরতন্ত্র,দুর্নীতিতে পরিপূর্ণ

প্রকাশিত:সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশের ক্ষমতায় এসেছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সোমবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎকারভিত্তিক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুরোপুরি সক্রিয় হতে পারেনি। পুলিশের নীতি-নির্ধারক পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তা সরকার পতনের পর থেকে এখনও কাজে যোগ দেননি।

পুলিশের যথাযথ সক্রিয়তার অভাবে বাংলাদেশের সর্বত্র সব সবধরনের অপরাধ বাড়ছে, গোষ্ঠীবদ্ধ অপরাধও (গ্যাং ক্রাইম) বাড়ছে ব্যাপক হারে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহম্মদ ইউনূসের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থী-জনতার ব্যাপক অভ্যুত্থানের মুখে টিকতে না পেরে গত বছরের ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা; এখনও সেখানেই আছেন তিনি।

তার বিদায়ের মধ্যে দিয়ে পতন ঘটে বাংলাাদেশে ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের। হাসিনার দেশত্যাগের ৩ দিন পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন বিশ্বখ্যাত বাংলাদেশি অর্থনীতিবিদ ড. মুহম্মদ ইউনূস, যিনি ‘দরিদ্রদের স্বাবলম্বী করতে ক্ষুদ্রঋণ’ প্রকল্পের ধারণা আবিষ্কার ও প্রয়োগের জন্য ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল জয় করেছেন।

৮ আগস্ট যখন তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন, তখনও অভ্যুত্থানের ধকলে বিবর্ণ বাংলাদেশ। সড়ক-মহাসড়ক রক্তে ভেজা; হাসপাতালের মর্গে পড়েছিল ১ হাজারের বেশি মানুষের লাশ, যারা শেখ হাসিনার নেত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে জীবন দিয়েছেন।

দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করেছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তারপরও বরাবরই তাকে রাজনৈতিক হুমকি বলে মনে করতেন শেখ হাসিনা। এ কারণে বছরের পর বছর ধরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের হয়রানি-অপমান-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তিনি। গত ১৫ বছরের বেশিরভাগ সময়ই অবশ্য বাংলাদেশের বাইরেই কাটিয়েছেন ইউনূস।

কিন্তু বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা যখন তাকে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হওয়ার আর্জি জানান, তিনি তাতে সম্মতি জানান। ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বিগত ১৫ বছরে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা বিশাল এবং অভূতপূর্ব। বিগত সরকার দেশকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফেলেছে। বাংলাদেশ এখন আরেকটি গাজা। বিগত সরকার এই দেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠান, নীতি, জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে ধ্বংস করে ফেলেছে।

প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার গত ১৫ বছরের শাসনামল ছিল স্বৈরতন্ত্র, সহিংসতা এবং দুর্নীতিতে পরিপূর্ণ। বিশেষ করে শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থান দমন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে যে ১ হাজার ৪ শতাধিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে, সেজন্য জাতিসংঘও তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করেছে। হাসিনা অবশ্য সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন।

মুহম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হওয়ার পর অনেকেই আশা করেছিলেন, বাংলাদেশে একটি নতুন যুগের সূচনা ঘটতে চলেছে। কিন্তু আজ ছয় মাস পর আপনি যদি ঢাকার সড়কে হাঁটেন, তাহলে অনুভব করবেন যে দেশটি ফের খাদের দিকে ধাবিত হচ্ছে। বাংলাদেশে যদিও ইউনূসের প্রতি ব্যাপক শ্রদ্ধা ও গ্রহণযোগ্যতা এখন পর্যন্ত রয়েছে, কিন্তু সেই সঙ্গে এও সত্য যে অপরাধ দমন ও শান্তি রক্ষায় তার নেতৃত্বাধীন সরকারের ক্ষমতা নিয়ে ওঠা প্রশ্ন দিন দিন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।

এর একটি বড় কারণ, শেখ হাসিনার শাসনামলে যারা বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ ও নীতি নির্ধারক পর্যায়ের কর্মকর্তা ছিলেন, তাদের মধ্যে কয়েকজন ধরা পড়েছেন এবং বাকিরা সবাই আত্মগোপনে আছেন। ফলে সার্বিক চেইন অব কমান্ডে একধরনের ফাঁকা ভাব বা শূন্যতা দেখা দিয়েছে, যা নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির জন্য দায়ী। ঢাকার রাস্তাঘাটে ব্যাপকভাবে বাড়ছে সংঘবদ্ধ অপরাধ বা গ্যাং তৎপরতা। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে সোমবার অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কুশপুত্তলিকা পুড়িয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা।

অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও বর্তমানে নবগঠিত রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির (এনসিপি) প্রধান নাহিদ ইসলাম দ্য গার্ডিয়ানকে বলেছেন, ‘‘বর্তমানে দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে অবস্থা, তাতে শিগগিরই একটি অবাধ ও মুক্ত নির্বাচন হওয়া অসম্ভব।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্ক্ষলা রক্ষার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী। গত সপ্তাহে এক অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান বলেছেন, ‘‘দেশ নৈরাজ্যের দিকে চলছে’’ এবং যদি এটি অব্যাহত থাকে, তাহলে বাংলাদেশের ‘‘স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সংকটের মুখে পড়বে।

গার্ডিয়ানকে অবশ্য ইউনূস বলেছেন, সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার সম্পর্ক ‘খুবই ভালো’ এবং সেনাপ্রধানের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত তার কাছে ‘কোনো চাপ আসেনি।


আরও খবর



৭ মাস পর বাবা হলেন ঝালকাঠীর শহীদ সেলিম

প্রকাশিত:রবিবার ০৯ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

হাসিবুর রহমান, ঝালকাঠি প্রতিনিধি:

হাসপাতালে নবজাতকের কান্নার সঙ্গে সঙ্গে আত্মীয় স্বজন সবাই কেঁদে উঠলেন। নবজাতক জন্মের পরে আনন্দের পরিবর্তে শোকার্ত আহাজারি ও বিলাপে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। সবাই স্মৃতিচারণ করে শহীদ সেলিম তালুকদারের অনুপস্থিতি স্মরণ করেন। ছাত্রজনতার আন্দোলনে নলছিটির শহীদ সেলিম তালুকদারের (২৮) স্ত্রী সুমী আক্তারের ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়েছে শনিবার (৮ মার্চ) রাত ৮টার দিকে। ঝলকাঠি শহরের একটি ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান দুনিয়ার আলো দেখতে পায়। নলছিটি উপজেলার মল্লিকপুর এলাকার বাসিন্দা সেলিম তালুকদার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৩১ জুলাই নিহত হন। অথচ এর তিনদিন পরই ছিল (৪ আগস্ট) প্রথম বিবাহবার্ষিকী। ৮ আগস্ট পরীক্ষায় ধরা পড়ে সেলিমের স্ত্রী সুমী আক্তার অন্তঃসত্ত্বা। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে সুমী আক্তারের শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে শহরের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান দুনিয়ার আলো দেখতে পায়, কিন্তু সন্তানের মুখ দেখে যেতে পারেননি সেলিম। মৃত্যুর সাত মাস সাতদিন পর সেলিমের উত্তরাধকিার আসল পৃথিবীতে। সেলিম একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই রাজধানীর মধ্যবাড্ডায় গুলিবিদ্ধ হন। ৩১ জুলাই রাতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ২ আগস্ট সকালে জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয় সেলিমকে। সেলিম নলছিটি উপজেলার মল্লিকপুর এলাকার সুলতান হোসেন তালুকদারের ছেলে। তিনি বিজিএমই ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে আড়াই বছর আগে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। পরে নারায়ণগঞ্জে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সহকারী মার্চেন্ডাইজার পদে চাকরি শুরু করেন। তারা তিন বোন ও এক ভাই। সেলিম ছিলেন মেজ। সেলিমের স্ত্রী সুমী জানান, ওইদিন সকালে বাড্ডা লিংক রোডের কুমিল্লাপাড়ার বাসা থেকে বের হয়ে আন্দোলনে যোগ দেন সেলিম। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষের মধ্যে আটকে পড়েন তিনি। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুলিবিদ্ধ হন। সুমী আক্তার বলেন, আমার স্বামী শহীদ হয়েছেন। তার স্মৃতি হিসেবে এই সন্তানই আমার কাছে থাকবে। আমার একটাই চাওয়া আমার সন্তানকে যেন কারও কাছে হাত পাতা না লাগে। আমি যতদিন বাঁচব শহীদ সেলিমের স্ত্রী হিসেবে বাঁচব। সন্তানকে তার পরিচয় দেব।

ছেলের শোকে এখনো কাতর মা সেলিনা বেগম। তিনি বলেন, এখন যদি সেলিম বেঁচে থাকত তাহলে প্রথম সন্তান, কত আনন্দ পেত। তাও সেলিমের ভাগ্যে নেই। সেলিনা বেগম আরও বলেন, আমার ছেলের চিকিৎসার পেছনে প্রায় ১৮ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। ধারদেনা করে এসব টাকা জোগাড় করেছি। সেই টাকা এখনো পরিশোধ করতে পারিনি। তিনি  ছেলের জন্য রাষ্ট্রীয় সম্মাননা চান। 


আরও খবর



প্রথম রোজা থেকেই সারাদেশে ভেজালবিরোধী অভিযান

প্রকাশিত:বুধবার ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৪ মার্চ ২০২৫ |

Image

আর কদিন বাদেই পবিত্র মাহে রমজান শুরু। এ মাসের প্রথম দিন থেকেই ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করবে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। এই অভিযানে রাজধানীতে প্রতিদিন ৩টি এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ১টি করে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হবে।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অন্তর্বর্তী সরকারের শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

তিনি বলেন, অভিযানের সময় ভোক্তা অধিকার ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।

শিল্প উপদেষ্টা বলেন, বিএসটিআই গত কিছুদিনে খোলা বাজার থেকে ইফতার ও সেহরির ৭৩৭টি নমুনা সংগ্রহ করে। এর মধ্যে ৫৫৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে সেখান থেকে ৪৭টি নিম্নমানের পণ্য পাওয়া গেছে। এসব মানহীন পণ্যের তালিকায় আছে প্রাণিজ ঘি, ফ্রুটস ড্রিংক, লবণ, সরিষার তেল, মুড়ি, লাচ্ছা সেমাই ও মসলা।

তিনি আরও বলেন, গত চার মাসে ৪৭১টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়েছে। এতে ৪২৮টি মামলা হয়েছে এবং তিনজনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সিলগালা করা হয়েছে ২৩টি প্রতিষ্ঠান।

অভিযানটি দেশের ভোক্তাদের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেও এ সময় মন্তব্য করেন শিল্প উপদেষ্টা।


আরও খবর

অস্থির চালের বাজার

রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫

বাড়তে পারে গরম

রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫




আরেফিন স্যারের জানাজা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে না হওয়া অন্যায়

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৪ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

শরিফুল হাসান, সিনিয়র সাংবাদিক :

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইবারের সাবেক উপাচার্য যিনি প্রায় পাঁচ দশক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটিয়েছেন, অধ্যাপনা করেছেন আজকে তাঁর জানাজা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে না হওয়া অন্যায়, এক ধরনের ফ্যাসিজম। যে কারণেই হোক যাদের কারণেই হোক এই যে স্যারকে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা হলো না তাতে স্যারের কিছু যায় আসে না কারণ স্যার সবকিছুর উর্ধ্বে। এই ঘটনায় ছোট হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছোট হয়েছে। 

আরেফিন স্যারের পরিবার বলেছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ে তার সহকর্মীরা চাইলে মর্যাদার সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জানাজা হোক। যাদের কারণে যাদের ব্যর্থতায় যাদের প্রত্যক্ষ পরোক্ষ বাধায় সেটি হলো না এবং একটি খারাপ উদাহরণ তৈরি হলো আল্লাহ তাদের বোধ দিক! 

যারা বলছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বাধা ছিল না তাদের কাছে প্রশ্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেন পরিবারকে বললো না আমরা চাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জানাজা হোক। এখনো দাফন হয়নি। তারা বলুক আরেকটা জানাজা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হোক। অন্তত দাফনের আগে দায়িত্ব নিয়ে তারা শেষবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে এনে সম্মান দিক! কেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের সাবেক উপাচার্যের জন্য তা করছে না? 

সাংবাদিকরা যখন বর্তমান উপাচার্যকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলেন কেন তিনি উত্তর না দিয়ে চলে গেলেন? আমি নিশ্চিত করে বলছি গত এক সপ্তাহ ধরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রায় সবার সাথে কথা হয়েছে। কেউ দায়িত্ব নেননি বরং নানাভাবে এড়িয়ে গিয়েছেন।

যাই হোক, এসব কথা বলে লাভ নেই। স্যারের পরিবার ভীষণ বিনয়ী। আরেফিন স্যরের জানাজার নামাজ বাদ জু'মা ধানমন্ডি ঈদগাহ মসজিদে ( সড়ক ৬/এ) হবে। এখানেই বিভাগ, অ্যালামনাই, বিভিন্ন সংগঠন এবং বিভাগের ব্যাচগুলোর পক্ষ থেকে স্যরের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এর আগে স্যরের পারিবারিক বাড়ির (১, নর্থ রোড) কাছে, ভুতের গলি বাইতুল আকসা মসজিদে  সকাল এগারোটায় আরেকটি জানাজার কর্মসূচি হয়েছে।

আপনাদের মনে করিয়ে দিই, ব্যক্তি আরেফিন স্যার উপাচার্য থাকাকালে সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমদ কিংবা মনিরুজ্জামান মিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে জানাজা পড়াসহ সব ধরনের ব্যবস্থা করেছিলেন। ভিন্নমতের মানুষসহ সবার প্রতি তিনি অমায়িক ছিলেন। সবার পাশে থাকতেন। 

এই দেশে এমন মানুষ পাওয়া বিরল যিনি বলতে পারবেন আরেফিন স্যার কারো সাথে কোনদিন কারো সাথে খারাপ আচরণ করেছেন। আমি তো বলবো শুধুমাত্র অমায়িক ব্যবহার বা ভালো আখলাকের কারণে আরেফিন স্যার আল্লাহর রহমতে জান্নাতবাসী হবেন। 

আবারো বলি, গত ২৪ বছর ধরে স্যারকে দেখেছি। এমন বিনয়ী শিক্ষার্থী বান্ধব উপাচার্য শিক্ষক এই দেশে খুব বেশি আছে বলে দেখিনি। দিন রাত সবসময় একজন শিক্ষক হিসেবে তাঁর দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল হোক তিনি যেই আদর্শের। এমন কোন মানুষ নেই যার সংকটে তিনি পাশে থাকেননি। 

স্যারকে প্রথম দেখি ২০০১ সালের মার্চে। এরপর গত ২৪ বছরে কখনো স্যারের সরাসরি ছাত্র, কখনো সাংবাদিক, কখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক, কখনো অভিভাবক হিসেবে স্যারকে পেয়েছি‌।‌ স্যারের সেই সেন্ট্রাল রোডের বাসা থেকে শুরু করে টিচার্স ক্লাব, উপাচার্য কার্যালয়, উপাচার্য বাংলো, টিএসসি নানা জায়গায় নানা পরিচয়ে স্যারকে দেখেছি‌। সবসময় সবাইকে তিনি মানুষ হবার কথা বলতেন!

দেখেন এক জীবনে তো কম মানুষ দেখলাম না। উপাচার্য বলেন, শিক্ষক বলেন, মানুষ বলেন, অভিভাবক বলেন  এই যুগে শিক্ষার্থীদের জন্য এমন অন্তঃপ্রাণ শিক্ষক বিরল! সত্যি বলতে তাঁর ব্যক্তিগত কোন জীবন ছিলো না। বলতে গেলে পুরো জীবনটা অন্যের জন্য কাটিয়েছেন।‌ যে কেউ যে কোন সংকট নিয়ে গেলে তিনি শুনতেন।‌ সমাধানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতেন। 

স্যারের ছাত্র ছাত্রী কিংবা স্যারকে সামনাসামনি দেখেছে এমন মানুষদের জিজ্ঞেস করলেই জানবেন কতোটা শিক্ষার্থী অন্তঃপ্রাণ তিনি ছিলেন। আমার সাথে স্যারের সম্পর্কটা সবসময় দারুণ ছিলো কারণ সম্পর্কটা নিঃস্বার্থ ছিলো।‌ আমি বলবো, এই দেশে তাঁর চেয়ে ভালো একাডেমিসিয়ান থাকতে পারেন কিন্তু শিক্ষার্থী বান্ধব এমন শিক্ষক এমন অভিভাবক এমন উপাচার্য বিরল! আমি অন্তত পাইনি। 

আমাদের সেই স্যার গতরাতে চলে গেলেন। আজকে বাদ জুমা জানাজার নামাজ শেষে স্যরের মরদেহ রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে মা-বাবার কবরে দাফন করা হবে। আল্লাহ আমাদের স্যারকে জান্নাতবাসী করুন। অনেক অনেক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা স্যার আপনার জন্য! আপনি বেঁচে থাকবেন হাজারো শিক্ষার্থীর হৃদয়ে।


আরও খবর

আজকের শিশু আছিয়াদের আর্তনাদ

রবিবার ০৯ মার্চ ২০২৫




ঝালকাঠিতে আছিয়ার গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৪ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

হাসিবুর রহমান, ঝালকাঠি প্রতিনিধি :

মাগুরায় ধর্ষণের ঘটনায় নিহত শিশু আছিয়ার গায়েবানা জানাজা ঝালকাঠিতেও অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৪ মার্চ) জুম্মা নামাজ শেষে  কেন্দ্রীয় ঈদগাহ জামে মসজিদ মাঠে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঝালকাঠি জেলার আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, যুগ্ম আহবায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ , সদস্য সচিব রাইয়ান বিন কামাল,যুগ্ম সদস্য সচিব ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতিসহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। জানাজায় অংশ নেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহবায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, আমরা এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাই না। ধর্ষকদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকাশ্যে শাস্তি দিতে হবে, যাতে কেউ আর এ ধরনের অপকর্ম করার সাহস না পায়। উল্লেখ্য, গত ৫ মার্চ রাতে মাগুরায় বোনের বাড়িতে আট বছরের শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও নিপীড়নের শিকার হয়। ৮ মার্চ তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ মার্চ দুপুরে তার মৃত্যু হয়।


আরও খবর