সদরুল আইন, বিশেষ প্রতিবেদক :অনিয়ন্ত্রিত শিল্পকারখানা আর মেগা প্রকল্পের দূষণে ধুঁকছে গাজীপুর নগরী। গবেষণা বলছে, অত্যাধিক ধোঁয়া আর ধুলার কারণে, এখানকার বাতাসে মিলছে স্বাভাবিকের চেয়ে তিনগুণ দূষিত পদার্থ। যা বায়ু দূষণের দিক থেকে গাজীপুরকে রেখেছে ৬৪ জেলার শীর্ষে। ফলে হাসপাতালগুলোতে দিনকে দিন বাড়ছে ফুসফুজনিত রোগীর সংখ্যা
গাজীপুর পরিচয় শিল্প নগরী হলেও, এখন যেনো ধোঁয়া আর ধুলোর জনপদ। কী সকাল, কী রাত...। গোটা শহরের যেখানেই যাওয়া যায়, ধুলোর অত্যাচার থেকে মেলে না রেহাই। বছরের পর বছর ধরে চলা মেগা প্রকল্প আর এলোপাতাড়ি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ধুলো ছড়াচ্ছে চারপাশে। শুষ্ক এই মৌসুমে নগরীর কোথাও যেনো এতটুকু প্রাণ নেই। নাকমুখ চেপে মাইলের পর মাইল পাড় হতে হয় এই পথে চলাচলকারী মানুষনজকে। বিশেষ করে ভোগান্তিতে, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা।
ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য শিল্পকারখানার কালো ধোঁয়া বিষিয়ে তুলছে বাতাস। সম্প্রতি গাজীপুরের বায়ুমান পর্যবেক্ষণ করেছে বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ। যাতে দেখা যায়… টঙ্গীর স্টেশন রোড, কলেজ গেইট, মেইল গেইট, টঙ্গী বাজারসহ বেশ কিছু এলাকার বায়ুতে, প্রতি ঘনমিটারে গড়ে ধূলিকণা ও দূষিত পদার্থের পরিমাণ দুশো থেকে সাড়ে ৫শো মাইক্রোগ্রামে।
গাজীপুর সদরের মির্জাপুরের ব্যবসায়ী আতিক হাসান। শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যাথা নিয়ে কাতরাচ্ছেন শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসক জানান, অত্যধিক বায়ু দূষণের ফলে হাসানের মতো রোগির সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুন।
গাজীপুরের পরিবেশ অধিকার কর্মীদের অভিযোগ… শিল্প কলকারখানা ও নির্মাণকাজে পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে। নগরীর বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে একরকম অসহায়ত্ব ফুটে উঠলো জেলা পরিবেশ কর্মকর্তার কথায়। বলছেন, সীমিত জনবলের কারণে সবসময় অভিযান পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে শিগগিরি শক্ত পদক্ষেপ না নিলে, আরো ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়বে গাজীপুর মহানগরবাসী।