Logo
শিরোনাম

দূষণের কারণে কমে যাচ্ছে পুরুষদের শুক্রাণুর মান

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০২ মে 2০২3 | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

সারাবিশ্বেই পুরুষদের বীর্যে শুক্রাণুর মান কমে যাচ্ছে। কিন্তু দম্পতিদের সন্তান না হওয়ার পেছনে এটি এমন একটি কারণ- যা নিয়ে আলোচনা হয় খুবই কম। তবে পুরুষদের এ সমস্যা ঠিক কেন হয়, তা এখন বিজ্ঞানীরা চিহ্নিত করতে শুরু করেছে।

জেনিফার হ্যানিংটনকে ডাক্তার বলেন, আপনার সমস্যাটা সমাধান করা যাবে। চিন্তা করবেন না, আপনাকে আমরা সাহায্য করতে পারব। এরপর জেনিফারের স্বামী কিয়ারানের দিকে ফিরে তিনি বলেন, আপনার জন্য আমরা খুব বেশি কিছু করতে পারবো না।

ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারের বাসিন্দা এই দম্পতি দুবছরের বেশি সময় ধরে সন্তান নেয়ার চেষ্টা করছেন।

তারা জানতেন যে এটা কঠিন হবে। কারণ জেনিফারের পলিসিস্টিক ওভেরিয়ান সিনড্রোম নামে একটি সমস্যা আছে। যা তার উর্বরতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

কিন্তু তারা যার জন্য তৈরি ছিলেন না, তা হলো- কিয়ারানেরও একটি সমস্যা আছে।

পরীক্ষায় দেখা গেছে, কিয়ারানের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কম এবং যা আছে সেগুলোরও নড়াচড়া করার ক্ষমতা কম।

আরো খারাপ খবর হলো যে এর চিকিৎসা করা জেনিফারের সমস্যাটার চাইতেও কঠিন, হয়ত অসম্ভব।

জেনিফারের এখনো মনে আছে, এ কথা শোনার পর তার স্বামীর প্রতিক্রিয়ার কথা।

জেনিফার বলেন, সে স্তম্ভিত, শোকাহত হয়ে পড়ল। আমি কিছুতেই ব্যাপারটা মানতে পারছিলাম না। আমার মনে হচ্ছিল, ডাক্তারই ভুল করেছে।

মানসিক বিপর্যয়
কিয়ারান সবসময়ই চাইতেন সন্তানের বাবা হতে। তিনি বলেন,
আমার মনে হলো আমিই আমার স্ত্রীকে ডুবিয়েছি।

পরের কয়েক বছরে কিয়ারানের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হতে লাগল। তিনি একা একা অনেক বেশি সময় কাটাতে শুরু করলেন। তিনি বিছানায় শুয়ে থাকতেন। শান্তি খুঁজতে শুরু করলেন অ্যালকোহলের মধ্যে।

তারপর একসময় শুরু হলো প্যানিক অ্যাটাক হওয়া। যার লক্ষণ- হঠাৎ শরীর কাঁপতে থাকা, বুক ধড়ফড় করা, মুখ শুকিয়ে যাওয়া, ঘাম হওয়া, মাথা ঘোরানো।

কিয়ারান বলেন, সেটা ছিল এক গভীর সঙ্কটকাল, মনে হলো আমি যেন একটা অন্ধকার গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছি।

পুরুষের অনুর্বরতা নিয়ে কেউ কথা বলতে চান না
দম্পতিদের সন্তান না হওয়ার যত ঘটনা ঘটে, তার প্রায় অর্ধেকই ঘটে পুরুষের অনুর্বরতার কারণে।

কিন্তু নারীদের অনুর্বরতা নিয়ে যত আলোচনা হয়, তার তুলনায় পুরুষদের অনুর্বরতা নিয়ে আলোচনা হয় খুবই কম। এর একটা কারণ হলো যে এ সমস্যাটিকে ঘিরে নানারকম সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রশ্ন আছে, যেন এটা নিয়ে কথা বলাই নিষেধ।

যেসব পুরুষদের উর্বরতার সমস্যা আছে তাদের অধিকাংশের ক্ষেত্রেই এর কারণ কী তার কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না।

তার ওপর যেহেতু পুরুষদের অনুর্বরতা নিয়ে সমাজে নেতিবাচক ধারণা আছে, তাই অনেককে এ জন্য এক নীরব মানসিক যন্ত্রণায় ভুগতে হয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে এ সমস্যা সম্ভবত বাড়ছে।

এতে দেখা যায়, দূষণসহ বিভিন্ন কারণ পুরুষের উর্বরতার ওপর প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয় বীর্যে শুক্রাণুর মানের ওপর। স্বভাবতই ব্যক্তি স্তরে এবং পুরো সমাজের জন্যই এর পরিণাম অত্যন্ত ব্যাপক।

এক গোপন উর্বরতা সঙ্কট?
গত এক শতাব্দীতে সারা বিশ্বে জনসংখ্যা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। মাত্র ৭০ বছর আগেও পৃথিবীর জনসংখ্যা ছিল ২৫০ কোটি। কিন্তু ২০২২ সালে পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮০০ কোটি।

তবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এখন কমে আসছে, যার পেছনে প্রধান কারণগুলো সামাজিক ও অর্থনৈতিক।

বিশ্বজুড়ে শিশু জন্মের হার রেকর্ড পরিমাণ কমে গেছে। পৃথিবীর ৫০ ভাগ মানুষই এখন এমন দেশগুলোতে বাস করে, যেখানে উর্বরতার হার নারীপ্রতি দুটি শিশুরও নিচে। এর ফলে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সংখ্যাই এক সময় কমে আসবে, যদি অভিবাসন না হয়।

জন্মহার কমার কিছু ইতিবাচক কারণ আছে। নারীদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ এখন অনেক বেড়েছে।

নিম্ন উর্বরতার হারের কিছু দেশ আছে, যেগুলোতে অনেক দম্পতিই তাদের যতগুলো সন্তান আছে তার চেয়ে বেশি নিতে চায়, কিন্তু সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণে পারে না।

এরই পাশাপাশি রয়েছে আরো অনেক কারণ। একজন ব্যক্তির সন্তান জন্মদানের শারীরিক সক্ষমতাকে বলা হয় ফিকান্ডিটি। এখন মনে করা হচ্ছে যে এই ফিকান্ডিটির হার বর্তমানে হয়ত কমে যাচ্ছে।

কিছু গবেষণায় আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে বিশেষ করে পুরুষদের মধ্যে প্রজনন-সংক্রান্ত সমস্যার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে আছে বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাওয়া, দেহে টেস্টোস্টেরন নামে হরমোনের মাত্রা কমে যাওয়া, পুরুষাঙ্গের উত্থানজনিত সমস্যা বেড়ে যাওয়া এবং অণ্ডকোষের ক্যান্সার।

দূষণ ঘটাচ্ছে প্লাস্টিক ও অন্য রাসায়নিক পদার্থ
মানুষের ঘরের ভেতরে ব্যবহৃত হয় এমন কিছু রাসায়নিক পদার্থ পুরুষের প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর কী প্রভাব ফেলছে, তা নিয়ে গবেষণা করছেন যুক্তরাজ্যের নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেবেকা ব্ল্যানচার্ড।

এই প্রভাব বোঝার জন্য তিনি কাজে লাগাচ্ছেন গৃহপালিত কুকুরকে। গৃহপালিত প্রাণি হিসেবে সেই কুকুর একই বাড়িতে থাকছে এবং একই দূষণকারী রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আসছে।

রেবেকা গবেষণা করছেন প্লাস্টিক, আগুনরোধী রাসায়নিক ও ঘরের অন্য নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী নিয়ে। এসব রাসায়নিক পদার্থের কিছু কিছু নিষিদ্ধ, কিন্তু পরিবেশে ও পুরোনো জিনিসপত্রের মধ্যে তার অবশেষ রয়ে গেছে।

তার গবেষণায় দেখা গেছে, এসব রাসায়নিক পদার্থ আমাদের হরমোন সিস্টেমকে বিঘ্নিত করতে পারে এবং মানুষ ও কুকুর উভয়ের ক্ষেত্রেই উর্বরতা কমিয়ে দিতে পারে।

রেবেকা ব্ল্যানচার্ড বলছেন, আমরা মানুষ ও কুকুর উভয়েরই শুক্রাণুর নড়াচড়ার ক্ষমতা কমে যাওয়ার তথ্য পেয়েছি। তাছাড়া তার ডিএনএ ভেঙে যাওয়ার পরিমাণ বেড়ে যেতে দেখেছি।

ডিএনএ ভেঙে যাওয়া বলতে তিনি বোঝাচ্ছেন, যেসব জিনগত-সামগ্রী দিয়ে শুক্রাণু তৈরি, তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বা ভেঙে যাওয়া। এর ফলে গর্ভধারণের পরও নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।

রেবেকা ব্ল্যানচার্ড বলছেন, ডিএনএ ভেঙে যাওয়ার পরিমাণ যদি বেড়ে যায়, তাহলে গর্ভধারণের প্রথম কয়েক মাসের মধ্যে মিসক্যারেজ বা ভ্রুণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

তার এ তথ্যের সাথে অন্য গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যের মিল রয়েছে। ওই গবেষণাগুলোতে দেখা গেছে যে প্লাস্টিক, বিভিন্ন সাধারণ ওষুধ, খাদ্য ও বাতাসে উপস্থিত রাসায়নিক পদার্থ উর্বরতার ক্ষতি ঘটাতে পারে।

এগুলো শুধু পুরুষ নয়, নারী ও শিশুদের দেহেও বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

কার্বন ও কখনোই নষ্ট হয় না এমন কিছু রাসায়নিক পদার্থের অস্তিত্ব গর্ভস্থ শিশুর দেহেও পাওয়া গেছে।

জলবায়ু পরিবর্তন ও পুরুষের উর্বরতা
জলবায়ু পরিবর্তনও পুরুষের উর্বরতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। বেশ কিছু প্রাণির ওপর চালানো জরিপে আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি বিশেষ করে শুক্রাণুর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

দেখা গিয়েছে যে তাপপ্রবাহ কীটপতঙ্গ ও মানুষের শুক্রাণুর ক্ষতি করে।

২০২২ সালের একটি জরিপে দেখা গেছে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে গরম পরিবেশে বা উচ্চ তাপমাত্রায় কাজ করলে শুক্রাণুর মানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

নিম্নমানের খাদ্য, মানসিক চাপ ও অ্যালকোহল
পরিবেশগত বিভিন্ন কারণের পাশপাশি ব্যক্তিগত নানা সমস্যাও পুরুষদের উর্বরতা কমিয়ে দিতে পারে। এর মদ্যে রয়েছে নিম্নমানের খাদ্য, দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকতে হয় এমন জীবনযাপন, মানসিক চাপ, অ্যালকোহল পান ও মাদকসেবন। বর্তমানে অনেক দম্পতিই অপেক্ষাকৃত বেশি বয়সে সন্তানের মা-বাবা হচ্ছে।

তবে নারীদেরকে তাদের জীবনের সবচেয়ে উর্বর সময়কাল বা বায়োলজিকাল ক্লকের কথা যতটা মনে করিয়ে দেয়া হয়, তার বিপরীতে পুরুষদের উর্বরতার ক্ষেত্রে বয়স কোনো ব্যাপার নয়- এমনটাই আগে মনে করা হতো। কিন্তু সেই ধারণার এখন পরিবর্তন হচ্ছে।

বেশি বয়সে মা-বাবা হওয়ার ক্ষেত্রে শুক্রাণুর সংখ্যা ও উর্বরতা কমে যাওয়ার সম্পর্ক দেখা যাচ্ছে।

এখন বলা হচ্ছে যে পুরুষদের অনুর্বরতাকে আরো ভালোভাবে বুঝতে হবে এবং এ সমস্যা নিরুপণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টিভঙ্গী দরকার। একই সাথে দূষণ রোধের জরুরি প্রয়োজনের ব্যাপারে সচেতন হতেও বলা হচ্ছে।

রেবেকা ব্ল্যানচার্ড বলছেন, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ও ব্যায়াম দিয়ে শুরু করাটা ভালো, কারণ এর সাথে শুক্রাণুর মান উন্নত হওয়ার সম্পর্ক দেখা গেছে।

তিনি আরো বলছেন, অরগ্যানিক খাবার খাওয়া ও বাইফেনল-এ বা বিপিএ-বিহীন প্লাস্টিক ব্যবহার করার কথা। এই বিপিএর সাথে নারী ও পুরুষ উভয়েরই অনুর্বরতার সম্পর্ক রয়েছে।

হ্যানিংটন দম্পতি শেষ পর্যন্ত ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ) পদ্ধতিতে দুটি সন্তানের মা-বাবা হয়েছেন।

কিয়ারান হ্যানিংটন বলেন, আমি প্রতিদিনই আমার সন্তান দুটির জন্য কৃতজ্ঞতা বোধ করি। অতীত দিনগুলোর কথা আমি ভুলিনি।

সূত্র : বিবিসি

 


আরও খবর

তীব্র তাপপ্রবাহে সুস্থ থাকার উপায়

মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪

ঈদে বালুচর এর পাঞ্জাবি

রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪




ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পথে ইউরোপের তিন দেশ

প্রকাশিত:শনিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ |

Image

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপের তিন দেশ আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে এবং স্পেন। শুক্রবার নরওয়ের রাজধানী অসলোতে এক বৈঠকে বসেছিলেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ, আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিমোন হ্যারিস এবং নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গার স্টোর। সেখানে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাদ্রিদ ফিলিস্তিনকে যত শিগগির সম্ভব স্বীকৃতি দিতে আগ্রহী। নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী বলেন, অসলোও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত।

আর আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ডাবলিন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়ে চায় এবং সেই সঙ্গে আশা করে, ইউরোপের অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোও এই পথ অনুসরণ করবে।

শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে আয়ার‌ল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিমোন হ্যারিস বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের জন্য একটি রাষ্ট্র এবং সার্বভৌমত্বের দাবি জানিয়ে আসছেন। বিশ্বের প্রতিটি স্বাধীন জাতি যে সম্মান-মর্যাদা ভোগ করছে, ফিলিস্তিনের জনগণের জন্যও তা প্রাপ্য।

আমরা আজকের বৈঠকে ফিলিস্তিনকে (স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে) স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছি এবং এ ইস্যুতে সম্মিলিতভাবে এগোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

আর স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এবং নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গার স্টোর বলেছেন, তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত, তবে এই মুহূর্তে এক্ষেত্রে তারা কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করতে চান না। পরিস্থিতি অনুকূলে এলেই এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নেবেন তারা।

প্রসঙ্গত,গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের অতর্কিত হামলার জবাবে সেই দিন থেকেই উপত্যকায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। গত প্রায় ৭ মাসের অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩৩ হাজারেরও বেশি মানুষ, আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৭৫ হাজার জন। এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর বোমায় বাড়িঘর হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।

এর আগে ৭ অক্টোবর গাজার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে হামলা চালিয়ে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল হামাস যোদ্ধারা। তাতে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। পাশাপাশি ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরেও নিয়ে গিয়েছিল হামাস।

সেই জিম্মিদের মধ্যে থেকে এ পর্যন্ত ১৩২ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বাকি ১০৮ জন এখনও রয়েছেন হামাসের কব্জায়। তাদের মুক্তির জন্য গাজায় ছয় সপ্তাহের একটি যুদ্ধবিরতি আহ্বানে আলোচনা চলছে।

যদিও এই আটক জিম্মিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কতজন বেঁচে আছেন তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।

স্পেন, আয়ারল্যান্ড এবং নরওয়েসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি সদস্যরাষ্ট্র ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতিপ্রবণ এবং ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে আগ্রহী। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর বিষয়টি আরও গতিশীল হয়েছে।


আরও খবর



ইসরায়েলে দুই শতাধিক ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ |

Image

অবশেষে ইসরায়েলে হামলা শুরু করেছে ইরান। দেশটি প্রথমে ড্রোন হামলা চালায়। পরে ছুড়ে ক্রুজ ও ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। ইতোমধ্যে ইরান দুই শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে বলে দাবি করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি। খবর বিবিসির।

মুখপাত্র দাবি করেন, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এবং এ অঞ্চলে থাকা মিত্ররা ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্রের বেশিরভাগই আটকে দিয়েছে। ইসরায়েলি ভূখণ্ডের বাইরে সেগুলো ভূপাতিত করা হয়েছে বলে দাবি তার।

ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, এ পর্যন্ত একজনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কয়েকটি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলে পড়ার পর একটি সামরিক স্থাপনা হালকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সামরিক স্থাপনাটির বিষয়ে বিস্তারিত কোনো কিছু বলেননি তিনি।

এর আগে ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস জানায়, আরাদ অঞ্চলের বেদুইন এলাকায় পড়ন্ত ধ্বংসাবশেষের টুকরোর আঘাতে আহত ১০ বছর বয়সী এক শিশুকে চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

এর আগে শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে সিরিয়ায় তেহরানের কনস্যুলেটে হামলার প্রতিশোধে অপারেশন ট্রু প্রমিজ পরিচালনার কথা জানায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডস-আইআরজিসি। গভীর রাতে ইসরায়েলের রাজধানী তেলআবিবসহ দেশটির বিভিন্ন এলাকায় শোনা যায় সতর্কতামূলক সাইরেন। ইরানের রেভোল্যুশনারি গার্ডের বরাত দিয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে সে দেশের গণমাধ্যম।

ইরানের এ হামলার পরপরই লেবানন, জর্ডান ও ইরাক তাদের আকাশ পথ বন্ধ করে দিয়েছে। ইরান ও ইসরায়েলও সামরিক উড়োজাহাজ বাদে বাকি সব উড়োজাহাজের জন্য তাদের আকাশপথ বন্ধ করে দিয়েছে।

ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ইরানের ড্রোন নিক্ষেপের পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, যেকোনো পরিস্থিতির জন্য সেনাবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।

নেতানিয়াহু বলেন, আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত আছি। আর সেটা আত্মরক্ষা ও আক্রমণ-উভয় দিক দিয়েই। ইসরায়েল রাষ্ট্র শক্তিশালী। আইডিএফ শক্তিশালী। দেশের জনগণ শক্তিশালী।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ১৩ জনকে হত্যা করে ইসরায়েল। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন জেনারেলসহ ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের সাতজন সদস্য রয়েছেন। এই হত্যাকাণ্ডের বদলা নিতে ইসরায়েলে হামলা চালানো হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল ইরান। দেশটি প্রথমবারের মতো ইসরায়েলে সরাসরি হামলা করল।


আরও খবর



ঈদে বাড়ি ফেরা হলোনা তাদের

প্রকাশিত:বুধবার ১০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ |

Image

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : ময়মনসিংহ সদরের ল্যাংড়াবাজার এলাকায় ঈদে বাড়ি ফেরার পথে বাসচাপায় স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। তারা পরিরবারের সঙ্গে ঈদ করতে মাহিন্দ্র করে বাড়ি ফিরছিলেন।

নিহত লুৎফর রহমান (৩০), তার স্ত্রী শাহনাজ বেগম (২৫) ভালুকা উপজেলার মাস্টারবাড়ি এলাকায় পোশাক কারাখানায় চাকরি করতেন।

মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার ল্যাংড়াবাজার এলাকায় টাঙ্গাইলগামী প্রান্তিক সুপার বাস মাহিন্দ্রাটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাদের শিশু সন্তান মাহিতের (২) মৃত্যু হয়।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন বলেন, শিশুটি ঘটনাস্থলেই মারা যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তার বাবা-মাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। লুৎফর রহমান ও তার স্ত্রী শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার দিঘীরপাড় গ্রামের বাসিন্দা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে ভালুকা থেকে মাহিন্দ্রা গাড়িতে করে ময়মনসিংহ সদরে আসছিলেন লুৎফর। ল্যাংড়াবাজার এলাকায় পৌঁছালে তাদের বহনকারী মাহিন্দ্রাকে চাপা দেয় টাঙ্গাইলগামী যাত্রীবাহী বাস। এতে লুৎফর, তার স্ত্রী-সন্তান এবং মাহিন্দ্রাচালক গুরুতর আহত হন। এর মধ্যে শিশুটি ঘটনাস্থলেই মারা যায়। মাহিন্দ্রাকে চাপা দেওয়া বাসটি পালিয়ে গেছে। দুর্ঘটনার বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে পুলিশ।

এদিকে, ত্রিশাল ও তারাকান্দায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় আরও দুই জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা বলেন, জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। তাদের মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা আছে।


আরও খবর



নওগাঁয় জাল সনদে চাকরির অভিযোগ উঠা সেই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার মালশন গিরিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় এর বাংলা বিষয় এর শিক্ষক মোছাঃ ময়না খাতুন এর বিরুদ্ধে জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদে চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে। তিনি এই সনদ দিয়ে নিয়োগ নেওয়ার পর এক যুগ ধরে সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলন করে যাচ্ছেন। এ ঘটনায় বিভিন্ন অনলাইন ও পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর ঐ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম। 

গত সোমবার "নওগাঁয় জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদে বারো বছর চাকরির অভিযোগ" শিরোনাম সংবাদ প্রকাশ হয়। এর আগে ঐ শিক্ষিকার শিক্ষক নিবন্ধন সনদের কোন তথ্য নওগাঁ জেলা শিক্ষা অফিসের রেজিস্ট্রারে না থাকায় অনুসন্ধানী এই সংবাদটি প্রকাশ করেন সাংবাদিকরা। সেই সংবাদটি রাণীনগর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের নজরে এলে তিনি ওই শিক্ষিকার সনদ গুলো যাচাইয়ের জন্য আগামী ২৬ এপ্রিলের মধ্যে তার শিক্ষক নিবন্ধন সনদ সহ সকল কাগজপত্র উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরে জমা দেওয়ার জন্য আজ বৃহস্পতিবার একটি চিঠি করেন।

চিঠি প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) উজ্জ্বল কুমার সরকার।

এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রকাশিত সংবাদটি আমার নজরে আসার পর আমি অভিযুক্ত শিক্ষককেসহ ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে আগামী ২৬ তারিখের মধ্যে সকল প্রকার সনদ সহ অন্যান্য কাগজপত্র অফিসে জমা দিতে বলেছি। এরপর কাগজ পত্র যাচাইয়ের জন্য এনটি আর সিএ দপ্তরে প্রেরণ করা হবে। সেখান থেকে সনদ যাচাই প্রতিবাদ পাওয়ার পর পত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।


আরও খবর



মোরেলগঞ্জে সিকিউরিটি গার্ডকে মারপিট

প্রকাশিত:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

বাগেরহাট প্রতিনিধি:

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে মহিলা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউটের সাবেক সিকিউরিটি ম্যানকে আলতিবুরুজ বাড়িয়া গ্রামের মো. নিজাম উদ্দিন শেখকে মারপিট করেছে একই প্রশিক্ষনের ফিসারী কর্মী সোহাগ মোল্লা। এ ঘটনায় মোরেলগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আহত নিজাম উদ্দিন মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লের্ক্সে ভতি করা হয়েছে।  

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মো. নিজাম উদ্দিন শেখ বলেন, আমি প্রাইড সিকিউরিটি কোম্পানির গার্ড হিসেবে ৪ বছর চাকুরি করি। চাকুরির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে “গফফার সিকিউরিটি সার্ভিস কোম্পানি আমাকে দুই মাসের জন্য অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেন। মহিলা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউট থেকে আমি চলে আসার ৮ মাস পরে গত ১৯ মার্চ একটি কারণ দর্শানো নোটিশে উল্লেখ করে সংস্থার ৪ হর্স ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বৈদ্যিুতিক মটর টুরি হয়ে গেছে। মটরটি চুরির বিষয় আমি কিছুই জানি না মর্মে ৩১ মার্চ সকাল সাড়ে ৯টায় নোটিশের লিখিতভাবে জবাব দিতে দিতে গেটে গিয়ে আমি আমার জবারের নোটিশখানা বিবাদীদ্বয়ের হাতে দিলে খামটি খুলে জবাব পড়ার পরে বিবাদীগন আমাকে অশ্লীন ভাষায় গালিগালাজ করে বলেন, তুই যে এ ধরনের কথাবার্তা কেন লিখে এনেছ সোহাগ মোল্লা ও জিয়াউর মোল্লা উত্তেজিত হয়ে চর ছাপ্পর, বুকে পিঠে মাথায় শরীরের বিভিন্নস্থানে কিল ঘুষি মারে। আমি এ ঘটনার প্রশাসনের প্রতি ন্যায় বিচার দাবি করছি।


আরও খবর