Logo
শিরোনাম

দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ শেষে চলছে গণনা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

বিডি টু ডে ডিজিটাল ডেস্ক:

কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। এখন চলছে গণনা। মঙ্গলবার (২১ মে) বিকেল ৪টার দিকে ভোটগ্রহণ শেষ হয়।

সকাল ৮টা থেকে দেশের ১৫৬ উপজেলার ১৩ হাজার ১৬টি ভোটকেন্দ্রে দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এর মধ্যে ২৪টিতে ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এবং বাকিগুলোতে ব্যালট পেপারে ভোট হয়।

তবে তফসিল ঘোষণার পর বিভিন্ন কারণে পাঁচটি উপজেলার ভোট স্থগিত রয়েছে।
সকাল থেকে কেন্দ্রে আসতে থাকেন ভোটাররা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতিও বাড়ে। পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন তারা।

সকাল ৮টায় দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬ উপজেলায় শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ বিরতিহীনভাবে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এরমধ্যে ২৪ উপজেলায় ইভিএমে ভোট হয়। বাকি ১৩২ উপজেলায় ভোট নেয়া হয় ব্যালট পেপারে।

দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে তিনপদে এক হাজার ৮২৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্য চেয়ারম্যান পদে ৬০৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬৯৩ জন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৯৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। সেই সঙ্গে তিন পদে ২২ প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন।

দুই উপজেলায় তিনপদে সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় লাভ করেছেন।

এবার দেশের ৪৯৬ উপজেলার মধ্যে ৪৭৬টি উপজেলা নির্বাচনে চার ধাপে তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলায় তফসিল দিলেও নানা জটিলতায় গত ৮ মে ভোট হয় ১৩৯টিতে।

প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন ২৮ জন প্রার্থী (চেয়ারম্যান আট জন, সাধারণ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ১০ জন করে)। আগামী ২৯ মে তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় এবং ৫ জুন চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।


আরও খবর



তাপমাত্রার পারদ নামল ৯ ডিগ্রিতে, আরও কমবে

প্রকাশিত:শনিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

উত্তরের জেলা নওগাঁয় জেঁকে বসেছে শীত। তাপমাত্রা কমার পাশাপাশি হিম বাতাস আর ঘন কুয়াশা শীতের তীব্রতা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় নওগাঁয় ৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি বছর এখন পর্যন্ত এই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। সামনে তাপমাত্রা আরও কমবে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।

নওগাঁর বদলগাছী কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, সকাল ৯টায় জেলায় ৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

গতকাল একই সময়ে সর্বনিম্ন ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। সেই হিসেবে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে এই জেলার তাপমাত্রা কমেছে ২ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। হিমেল হাওয়ায় শীত আরও বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।

স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যার পর শীতের প্রকোপ একটু বেশি থাকছে। সেই সঙ্গে হিমেল হাওয়া শীতের তীব্রতা কয়েকগুণ বাড়িয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকেই গরম কাপড় পরে চলাফেরা করছেন মানুষ। রাত থেকে ভোর পর্যন্ত কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকছে চারপাশ। সকাল ১০টার পর কুয়াশা ভেদ করে সূর্য উঁকি দিলেও বিকেল চারটার পর আবার হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করে।

শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ছিন্নমূল আর খেটে খাওয়া মানুষদের দুর্ভোগ বাড়ছে। গরম কাপড়ের অভাবে খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষ অনেক কষ্টে দিন পার করছেন। শীতের কারণে কাজে যেতে না পারায় অনেকের সংসার চালাতেও কষ্ট হচ্ছে। অনেক এলাকায় আগুন জ্বালিয়ে শীত থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন কেউ কেউ।

সকালে সদর উপজেলার সামনে কথা হয় রিকশা চালক কুরবান আলীর সঙ্গে। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, সারাদিন যতক্ষণ গরম থাকে তখন যাত্রী পাওয়া যায়। রিকশাও ভালোভাবে চালানো যায়। কিন্তু সন্ধ্যার পর কিংবা খুব সকালে যাত্রী তেমন পাওয়া যায় না। শীতের কারণে রিকশা ঠিকভাবে চালানো যায় না। ফলে আয় উপার্জন কমে গেছে।

এদিকে শীত বাড়ায় জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই বেশি। এসব রোগীর মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধ মানুষের সংখ্যা বেশি। হাসপাতালে প্রতিদিন রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। যারা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তারাই কেবল হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।


আরও খবর



ঠোঁট ফাটার সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায়

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১২ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

শীত এলে আমাদের ত্বক আর চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয় সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে ঠোঁট ফাটার সমস্যা হয় প্রায় সবারই। অনেক সময় নানা উপকরণ ব্যবহার করেও ঠোঁট ফাটার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না। ব্যবহার কিছুক্ষণ পরই আবার ঠোঁট শুকিয়ে যায়। অনেক সময় ঠোঁট ফেটে রক্তও বের হতে পারে। এ ধরনের সমস্যা এড়াতে ব্যবহার করতে পারেন ঘরোয়া উপাদান। চলুন জেনে নেওয়া যাক ঠোঁট ফাটা দূর করার ঘরোয়া উপায়-

মাখন ব্যবহার

মাখন কেবল খেতেই সুস্বাদু নয়, এর রয়েছে অনেক উপকারিতাও। বিশেষ করে ফাটা ঠোঁটের সমস্যায় মাখন বেশ উপকারী। তাই সুযোগ পেলেই ঠোঁটে মাখন মাখতে পারেন। এভাবে নিয়মিত ঠোঁটে মাখন ব্যবহার করলে তা ঠোঁট ফাটার সমস্যা দূর হতে সাহায্য করবে। এছাড়া মাখন সামান্য গরম করে ঠোঁটে হালকা হাতে ম্যাসাজ করতে পারেন। এতেও আরাম পাবেন।

মধু ব্যবহার

রূপচর্চায় দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে মধু। এটি কাজে লাগাতে পারেন আপনার ঠোঁটের যত্নেও। ঠোঁটে নিয়মিত মধু মাখতে পারেন। মধু ফাটা ঠোঁট সারিয়ে তুলতে কাজ করে। প্রতিদিন গোসলের আগে হাতে মধু নিয়ে ম্যাসাজ করুন। ৫ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত করলে ঠোঁট ফাটার সমস্যা দূর হবে।

দুধের সর ব্যবহার

আমাদের ত্বকের যত্নে আরেকটি কার্যকরী উপাদান হতে পারে দুধের সর। প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে দুধের সর মেখে রাখতে পারেন। এই উপাদান ত্বক হাইড্রেটেড করতে দারুণ সাহায্য করে। এটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে। তাই এভাবে নিয়মিত ব্যবহার করলে দূর হবে ঠোঁট ফাটার সমস্যা।

অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার

ত্বকের পরিচর্যায় এর আগেও অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করেছেন নিশ্চয়ই? এটি চুল ভালো রাখতেও কাজ করে। তবে এবার আপনি অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন ঠোঁটের যত্নে। প্রথমে অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে নারিকেল তেল মিশিয়ে নিন। এরপর ঠোঁটে লাগিয়ে নিন। এতে ঠোঁট মোলায়েম হবে ও ফাটা ত্বক নিমেষে দূর হবে।

অলিভ অয়েল ব্যবহার

শীতে আপনার ঠোঁট ভালো রাখতে অন্যতম সঙ্গী হতে পারে অলিভ অয়েল। এই তেল আপনার ঠোঁটের ফাটা সারিয়ে তুলতে কাজ করবে। সেইসঙ্গে ত্বককে হাইড্রেটেড করবে যাতে ত্বক শুষ্ক হয়া না পড়ে। নিয়মিত অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে ত্বকের অনেক সমস্যা দূর হয়।


আরও খবর

এখন দরকার নানারকম শীতের পোশাক

মঙ্গলবার ১২ নভেম্বর ২০২৪

শীতে বিয়ের কনের স্কিন কেয়ার রুটিন

মঙ্গলবার ১২ নভেম্বর ২০২৪




কুয়াশায় নৌ চলাচলে বিঘ্ন

প্রকাশিত:সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

রাজধানীতে এখনও শীতের আমেজ অনুভূত হয়নি। তবে দেশের উত্তরাঞ্চলে জেকে বসতে শুরু করেছে শীত, সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশা। কনকনে ঠান্ডায় শ্রমজীবী মানুষের, বিশেষত চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের বেশি কষ্ট হচ্ছে। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন তারা। শীতজনিত অসুখবিসুখ বাড়ছে। গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় বাড়ছে। এদিকে ঘন কুয়াশায় ফেরি চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ০৯ টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপটি বিরাজমান রয়েছে। এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারী ধরনের কুয়াশা পড়তে পায়ে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

চাঁদপুর : ঘন কুয়াশার কারণে চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌপথে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা বন্ধ ছিল ফেরি চলাচল। কুয়াশা বেড়ে যাওয়ায় সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ভোর ৪টায় সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় হরিণা ও নরসিংহপুর আলুবাজার ঘাটের ফেরি চলাচল। পরে আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ায় সকাল ৯টায় ফেরি চলাচল শুরু হয়। সোমবার দুপুর ১২টায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডাব্লিউটিসি) হরিণা ফেরিঘাটের ম্যানেজার (বাণিজ্য) ফয়সাল আলম চৌধুরী বলেন, রবিবার রাতে কুয়াশা বেড়ে যায়। ফলে চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌপথে ফেরি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। দুর্ঘটনা এড়াতে ভোররাত ৪টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়।

রাজশাহী ব্যুরো : শীত ও ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজশাহীসহ আশেপাশের অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা। সোমবার ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে আছে রাজশাহী অঞ্চলের আকাশ। দুপুর ১২টায় এই রিপোর্ট লেখার সময়ও রাজশাহীতে সূর্যের দেখা মেলেনি। ঘন কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে সড়ক-মহাসড়কে। সোমবার দিনের প্রথমভাগে রাজশাহীর শাহমখদুম বিমানবন্দরে কোনো ফ্লাইট ওঠানামা করেনি। ঘন কুয়াশার কারণে নদীতে নৌকা চলাচল বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে বৈরি আবহাওয়ার কারণে শ্রমজীবী মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। ঘনকুয়াশায় ফসলের ক্ষতি হবে কিনা-জানতে চাইলে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক উম্মে ছালমা জানান, মাঠে মাঠে আলু বীজ রোপনের কাজ করছেন চাষিরা। এক-দুদিনের কুয়াশায় তেমন ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তবে কুয়াশা ও ঠান্ডা আবহাওয়া দীর্ঘায়িত হলে আলু বীজ অঙ্কুরোদম হতে দেরি হবে।

ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁওয়ের গ্রামাঞ্চল থেকে শহরের সড়কগুলো সকাল ১০টা পর্যন্ত কুয়াশায় ঢাকা থাকছে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টির মতো ঝিরঝির করে পড়তে থাকে কুয়াশা। সেই সঙ্গে কনকনে ঠান্ডা। শীত উপেক্ষা করেই শ্রমজীবীরা নিজ নিজ কাজে যাচ্ছেন। ঘন কুয়াশায় ধীরগতিতে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে সকল প্রকার যানবাহন।কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ঠাকুরগাঁও কার্যালয় স্থানীয় তাপমাত্রার হিসাব রাখে। এই দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে জেলার তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলার জন্য ৮০ হাজার শীতবস্ত্রের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি কিছু দপ্তর থেকে ১ হাজার কম্বল পেয়েছি। খুব শীঘ্রই বিতরণ করা হবে।

হিলি (দিনাজপুর) : দিনাজপুরের হিলিতে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। সেই সঙ্গে পড়েছে ঘন কুয়াশা। যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। শীত উপেক্ষা করে কাজে নামছেন শ্রমিকেরা। সোমবার বেলা ১২ টা পর্যন্ত রোদের দেখা মিলেনি।দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, এক সপ্তাহ ধরে দিনাজপুর জেলায় ১০ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠা-নামা করছে। সোমবার সকাল ৯ টায় জেলায় সর্বনিন্ম ১৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে।

এদিকে হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইলতুত মিশ আকন্দ বলেন, হাসপাতালে বাড়ছে বিভিন্ন শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিন বর্হি বিভাগ হতে ১৫০ থেকে ১৬০ জন রোগী সর্দি, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট জনিত রোগের চিকিৎসা নিচ্ছেন।

বদলগাছী (নওগাঁ) : নওগাঁর বদলগাছীতে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত পড়ছে জনজীবন। সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে গেলে মেলেনি সূর্যের দেখা।সোমবার সকালে বদলগাছী আবহওয়া অফিস সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করে। ঘন কুয়াশার জন্য গাড়ির হেড লাইট জালিয়ে রাস্তার যানবাহন চলাচল করছিলো। লোক সমাগম বেড়েছে চা দোকানে।স্থানীয় বয়স্ক কৃষক পলাশ বলেন, শীতের কারণে আজ ক্ষেতে যেতে পারিনি। ঘর থেকে বাইরে বের হওয়া কষ্টকর। আমাদের মতো বয়স্কদের কাছে শীত বেশি মনে হয়। বরো ধানের বীজতলা তৈরি এবং চারা গজানো নিয়ে বিপাকে আছি।

উপজেলা কৃষি অফিসার সাবাব ফারহান জানান, এ রকম কুয়াশা ও ঠান্ডা আর কয়কদিন থাকলে বোরো ধানের বীজতলা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ঠান্ডাজনিত রোগের ব্যপারে জেলা সিভিল সার্জন ড. নজরুল ইসলাম জানান, শীতে শিশুদে ও বয়স্কদের জন্য বিশেষ যত্ন নেওয়া দরকার। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব আলম জানান, বদলগাছীতে শীতের প্রকোপ একটু বেশি। ত্রান ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তার সঙ্গে শীতার্তদের জন্য গরম কাপড় বরাদ্দের ব্যপারে কথা বলেছি। আমরা দ্রুতই ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষের জন্য গরম কাপড় বিতরণ করবো।

সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে। সোমবার শীত আর ঘন কুয়াশায় দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। দুপুর পর্যন্ত সূর্য্যের দেখা মেলেনি। ক্ষেত খামারের মজুররা পড়েছেন বিপাকে। চরাঞ্চলের বাসিন্দারা শীতে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। শহরের ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় বেড়েছে।

সদর উপজেলার চরবনবাড়িয়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম (৫১) বলেন, ঠান্ডা বাতাস ও তীব্র শীত উপেক্ষা করে বেগুন ও কাচা মরিচ খেতের পরিচর্য়া করতে হচ্ছে। কাওয়াকোলা ইউনিয়নের কাটাঙ্গা চরের নৌকার মাঝি হানিফ বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে নদী দিক ঠিক রাখা যায় না। অনেক সময় দিক ভুল হয়ে নৌকা চরে গিয়ে আটকে যায়। এই ঘাট থেকে শহরের মতি সাহেবের ঘাটে যেতে আগে সময় লাগতো ৪০ মিনিট। এখন সময় লাগে প্রায় ২ ঘন্টা। বড় বাজার,হকার্স মার্কেট, নিউ মার্কেট এলাকার পুরাতন কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। পুরান কাপড় কিনতে আসা রিক্সা চালক জ জব্বার আলী (৬০) বলেন, কঠিন ঠান্ডা পড়েছে ভাই, পেটের জ্বালায় রিক্সা নিয়ে বের হতে হচ্ছে।

কালাই (জয়পুরহাট) : উত্তরের জেলাগুলোর মধ্যে জয়পুরহাটেও শীতের প্রকোপ বেড়েই চলছে। সীমান্ত ঘেঁষা জেলাগুলোর মধ্যে এ জেলাতেও গত তিনদিন ধরে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। দিনের বেলায় যেমনতেমন রাতের বেলায় ঠান্ডা বাতাসে শীতের তীব্রতা বেড়েই চলছে। গত দুইদিন যেমনতেমন সূর্য্যের দেখা মিললেও আজ সোমবার একেবারেই দেখা মেলেনি। রাস্তায় হেড-লাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলছে যানবাহন। শীতের প্রভাব পড়েছে জনজীবনে। বিপাকে পরেছে স্বল্প আয়ের অসহায় খেটে খাওয়া মানুষগুলো।

বদলগাছী আবাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, আজ সোমবার জয়পুরহাটসহ পার্শ্ববর্তী নওগাঁর বদলগাছীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দুইদিন গত শনিবার ও রবিবার তাপমাত্রা ছিল ৯.৮ এবং ১০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দুইদিন ঘন কুয়াশার মধ্যে রোদের দেখা মিললেও সোমবার সকাল থেকেই সূর্য়ের দেখা মেলেনি। সাথে উত্তরের হিমেল বাতাস অব্যাহত থাকায় শীতের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে।

এ অবস্থায়ও থেমে নেই স্বল্প আয়ের মানুষগুলোর কর্ম। পরিবারের জন্য এমন কনকনে শীত উপেক্ষা করে ঘরের বাহিরে ছুটতে হচ্ছে তাদের। প্রয়োজনের তাগিদে শীত নিবারনের কাপড় ছাড়াই কোনোমতে বাড়ির বাহিরে এসে তারা নিজ কর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। জয়পুরহাট-বগুড়া মহাসড়কে যাত্রীবাহি বাস চালক কেরামত আলী বলেন, কুয়াশার কারনে দিনের বেলায় হেড লাইট জালিয়ে ধীর গতিতে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। আর ঠান্ডায় যাত্রীও কম। এ অবস্থা চলতে থাকলে অল্পদিনের মধ্যে গাড়ী চলাচল বন্ধ রাখতে হবে।

কথা হয় পুনট এলাকার চায়ের দোকানদার আক্কাস আলীর সাথে। তার দোকানের উপরে কয়েকটি টিনের ছাউনি আর চারদিকে খোলা। অনবরত তাকে পানি নাড়াচড়া করতে হচ্ছে। পশ্চিম দিক থেকে আসা ঠান্ডা বাতাসে তার শরীর হিম হয়ে ওঠেছে। আক্কাস আলী বলেন, একদিন দোকান বন্ধ থাকলে সবাইকে না খেয়ে থাকতে হবে। পরিবারের তাগিদে এমন শীতে আমাকে দোকান খোলা রাখতে হচ্ছে। যখন কুলাতে পারছিনা তখন খড়কুটা জালিয়ে শীত কাটাচ্ছি।

পাঁচশিরা বাজারে অটোভ্যান চালক বালা মিয়া বলেন, হারকাপানো এই শীতে সবাই ঘরে রয়েছে, আমাকে পেটের দায়ে ভ্যান নিয়ে রাস্তায় বের হতে হয়েছে। ভ্যান চালিয়ে সারাদিনে যেটুকু পাই, তা দিয়ে সংসার চালাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। শীত নিবারনের গরম কাপড় কি দিয়ে কিনবো। শুনতে পাচ্ছি অনেকেই কম্বল আবার কেউ জ্যাকেট পেয়েছে। কই আমি সারাদিন রাস্তায় পড়ে আছি, কেউ একটি কম্বল বা জ্যাকেটও দেয়নি আমাকে।


আরও খবর



নির্বাচিত হয়ে আসলে জাতীয় সরকার গঠন করবো

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

নির্বাচিত হয়ে আসলে আমরা একা দেশ চালাবো না। আমরা একটি জাতীয় সরকার গড়ে, যারা আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে ছিল তাদের নিয়ে দেশ চালাবো। তাহলে সমস্যাটা কোথায়? সন্দেহটা কোথায়? সন্দেহ কিন্তু আপনাদের ওপর আসতে শুরু করেছে। আমরা তো চাই, সরকার সাফল্য অর্জন করুক, তাদের সাফল্য মানে আমাদের সাফল্য। তারা ব্যর্থ হলে আমরা ব্যর্থ হবো। আমরা চাই না— শেখ হাসিনা আবার ফিরে আসুক। আমরা চাই না, আওয়ামী লীগের দুঃশাসন আবার ফিরে আসুক, বললেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের প্রায়োরিটি হচ্ছে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করা, গণতন্ত্রের জন্য স্পেস তৈরি করা। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনা মাধ্যমেই তো আমরা সংস্কারের ৩১ দফা তুলে ধরেছি। এখন নতুন যারা আসছেন তারা একেকজন একেক কথা বলে যাচ্ছেন। অন্তর্বর্তী সরকারে যারা আছেন, তারা তো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন। তাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাও নেই। আসলে রাজনীতি তো একটি সায়েন্স, এজন্যই তো বলা হয় পলিটিক্যাল সায়েন্স। বিএনপি কী ক্ষমতার জন্য নির্বাচনের কথা বলছে? না, দ্রুত নির্বাচন দিলেই দেশের অনেক সমস্যায় সমাধান হয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার পার্লামেন্টারি গভর্নমেন্ট ঘোষণার মধ্য দিয়েই স্বৈরাচার এরশাদকে সরানো গেছে। শেখ হাসিনা যখন কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট বাতিল করলো, তখন আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারিনি। এটা কী অসত্য? কেন পারলাম না? ১৫ বছর লড়াই-সংগ্রাম করে আমরা তাকে সরাতে পারিনি। তবে ফাইনাল গোলটা কিন্তু ছেলেরা দিয়েছে। এটা তো স্বীকার করতেই হবে আমাদেরকে।’

তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের গতকালের (সোমবার) আন্দোলন প্রসঙ্গে মহাসচিব বলেন, ‘সরকারের ইন্টেলিজেন্সের ভেতরে কী কোনও তথ্য ছিল না? তারা কী এর ব্যবস্থা আগে নিতে পারতেন না? আসলে গভর্নমেন্টটা এখনও স্ট্যাবল হতে পারেনি। তাই বলছি, নির্বাচন কমিশন ঠিক করে নির্বাচন দেন, একটি রোড ম্যাপ ঘোষণা দেন, কবে কী করবেন জানান। তাহলে মানুষের মনে আস্থা আসবে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে অনেকে হতাশ হয়ে পড়েছেন, অনেকে বলাবলি করেন— এজন্যই কি সংগ্রাম করেছি? এতে করে আমাদের শত্রুরা সুযোগ নেবে।’

সরকার থেকে বিভিন্ন কথা বলা হচ্ছে। তবে আমি বলতে চাই, যেকোনও একদিকে ফোকাস দিন। পুলিশ প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিন।’ বাকি সংস্কারগুলো নির্বাচিত হয়ে যারা আসবেন তারা করবে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় এই নেতা।

দেশের শিক্ষা কাঠামোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৩ বছরে আমরা কী সাফল্য অর্জন করেছি শিক্ষা খাতে? বিশ্বের এক হাজার ইউনিভার্সিটির তালিকার মধ্যে আমাদের একটি ইউনিভার্সিটির নামও আসে না। এর কারণ আমরা ঐক্যবদ্ধ জাতি না। আর দেশের সবচেয়ে ক্ষতি করেছে শেখ হাসিনা। দেশের সব অর্জন ১৫ বছর শেষ করেছে সে। এখন আমাদের দরকার ইস্পাত কঠিন ঐক্য।


আরও খবর



চার মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে প্রায় ৩৫%

প্রকাশিত:শনিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে দেশের রফতানি বেড়েছে শতাংশের বেশি। আর রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে প্রায় ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত। তবুও সময়ে অব্যাহত থেকেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ক্ষয়। সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ কমেছে প্রায় দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বিদেশী হিসাবে (নস্ট্রো অ্যাকাউন্ট) ডলার স্থিতি কমেছে প্রায় দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। সব মিলিয়ে মোট রিজার্ভ হ্রাস পেয়েছে বিলিয়ন ডলারের বেশি।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রিজার্ভে হাত না দিয়েই সরকার প্রায় বিলিয়ন ডলারের বিভিন্ন ধরনের স্বল্প দীর্ঘমেয়াদি দায় পরিশোধ করেছে। এর মধ্যে জ্বালানি আমদানির দায়, আদানির বিদ্যুৎ বিল এবং সার খাদ্য আমদানির মতো বিষয়গুলো রয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার রিজার্ভে হাত না দেয়ার কথা বললেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার বহির্মুখী অন্তর্মুখী প্রবাহ বিশ্লেষণেই প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাবে। আর বিদেশী ঋণের প্রবাহ কমে এলেও আগের বিভিন্ন দায় পরিশোধ করতে হচ্ছে সরকারকে। আবার দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ এবং প্রবৃদ্ধি কমে আসার প্রভাবও পড়েছে রিজার্ভের ওপর। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি না হলে রিজার্ভ স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে যাবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব মতে, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের সময় গত আগস্ট আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী (বিপিএম৬) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। সর্বশেষ ডিসেম্বর তা নেমে এসেছে ১৮ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলারে। সে অনুযায়ী চার মাসের ব্যবধানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ কমেছে দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত চার মাসে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর রিজার্ভও ক্রমাগত কমে এসেছে। গত জুলাইয়ে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর নস্ট্রো অ্যাকাউন্টে ডলার রিজার্ভ ছিল দশমিক শূন্য বিলিয়ন। কিন্তু অক্টোবর শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারে। অর্থাৎ চার মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে প্রায় দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মোট রিজার্ভ হ্রাসের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে প্রায় দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলারে।

দেশের সার্বিক অর্থনীতি এখন স্বস্তির পর্যায়ে আছেএমনটা বলা যাবে না বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ . মুস্তফা কে মুজেরী। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ কমে গেছে। তাই প্রবৃদ্ধিও শ্লথ হয়ে এসেছে। অর্থনীতি সচল না হলে বৈদেশিক হিসাবের চিন্তা থেকেই যাবে। একটির সঙ্গে আরেকটি সম্পর্কিত। তাই সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি না হলে রিজার্ভ স্বস্তিদায়ক অবস্থায় যাবে না।

এদিকে রিজার্ভ পতন অব্যাহত থাকলেও রফতানি রেমিট্যান্স প্রবাহ ক্রমেই বাড়ছে। রেমিট্যান্সের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চার মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার। আর গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলার। সে অনুযায়ী, চার মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স বেশি পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত বছরের তুলনায় এবার রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

একইভাবে রফতানির ক্ষেত্রেও প্রবৃদ্ধি হয়েছে শতাংশের বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-অক্টোবর) দেশে রফতানির পরিমাণ ছিল ১৩ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। আর চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রফতানির পরিমাণ ছিল ১৪ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ রফতানি খাতে গত চার মাসে দশমিক শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। যেখানে তৈরি পোশাক খাতের রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক শতাংশ।

রফতানি রেমিট্যান্স বাড়লেও বিদেশী উন্নয়ন সহায়তার গতি কমে আসায় রিজার্ভে টান পড়ছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ . মুস্তফা কে মুজেরী। তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন সহায়তার পাশাপাশি যেসব বাজেট সহায়তা আসার কথা সেগুলোও এখনো পাওয়া যায়নি। কিন্তু সরকারকে বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতের আগের দায় মেটাতে হচ্ছে। তাই রিজার্ভে হাত না দেয়ার কথা বলা হলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ডলারের অন্তর্মুখী বহির্মুখী প্রবাহের হিসাবটাই আসল কথা।

এদিকে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) দেশে যে পরিমাণ বিদেশী ঋণ এসেছে, পরিশোধ করতে হয়েছে তার চেয়ে বেশি। অন্যদিকে সময়ে নতুন করে বিদেশী সহায়তার প্রতিশ্রুতিও তেমন একটা মেলেনি বলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

ইআরডির তথ্যানুসারে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে বাংলাদেশের অনুকূলে ১২০ কোটি ২০ লাখ ডলারের বিদেশী ঋণের অর্থ ছাড় করা হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২৬ শতাংশ কম। আবার চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ১৪৩ কোটি ৭৯ লাখ ডলারের বিদেশী ঋণ পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। যেখানে গত বছরের একই সময়ে পরিশোধ করা হয়েছিল ১১০ কোটি ১৫ লাখ ডলার। সময়ে বিদেশী ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ৩০ দশমিক ৫৪ শতাংশ। অর্থাৎ অর্থছাড়ের চেয়ে ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে বেশি পরিমাণে। চলতি অর্থবছরের পুরো সময়েই ঋণ পরিশোধের চাপ বজায় থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, ‘রেমিট্যান্স বাড়লেও তা সরাসরি রিজার্ভে যোগ হয় না। ব্যাংকগুলোয় এটা আসে। তারা একটি নির্দিষ্ট সময় পর বাংলাদেশ ব্যাংকে ডলার বিক্রি করে, তখন তা রিজার্ভে যুক্ত হয়। তাই রেমিট্যান্সের ডলার রিজার্ভে যুক্ত হতে সময় লাগে। আর রফতানি আয় থেকেও ব্যাংকের নিজস্ব ডলারের অনেক চাহিদা থাকে, সেগুলো মেটায় তারা।

রিজার্ভ কমার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মূলত দেড় বিলিয়ন ডলারের একটি বড় দায় পরিশোধ করতে হয়েছে সরকারকে। সম্প্রতি এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মাধ্যমে আগের দায় পরিশোধ করতে গিয়ে রিজার্ভ কিছুটা কমে গেছে। আমরা রিজার্ভ থেকে অন্য কোনো ব্যয় করিনি। তাহলে তা আরো কমত। দায় পরিশোধের পর থেকে রিজার্ভ আর না কমে বরং কিছুটা বাড়ছে।

ডিসেম্বরের পর রিজার্ভ আরো বাড়বে বলেও প্রত্যাশা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা।

প্রতি দুই মাস পর পর আকুর দায় পরিশোধ করতে হয় বাংলাদেশ ব্যাংককে। সর্বশেষ সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দেড় বিলিয়ন ডলারের দায় নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পরিশোধ করা হয়েছে। আর নভেম্বর-ডিসেম্বরের দায় পরিশোধ হবে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে।


আরও খবর

দাম বাড়ল সয়াবিন তেলের

সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪