Logo
শিরোনাম

এইচএসসির ফল প্রকাশ, কমেছে জিপিএ-৫

প্রকাশিত:রবিবার ২৬ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ১৩ অক্টোবর ২০২৪ |

Image

চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষাবোর্ডে গড় পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় গড় পাসের হার ছিল ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ। সেই হিসেবে এবার পাসের হার ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ কমেছে।

রবিবার বেলা ১১টায় ওয়েবসাইট ও স্ব-স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফল প্রকাশ করা হয়। ফলাফলে দেখা গেছে, সব শিক্ষাবোর্ড মিলিয়ে পরীক্ষায় মোট পাস করেছেন ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫২ জন পরীক্ষার্থ। শুধু ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৭৫ দশমিক ৯ শতাংশ।

এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফলাফলের সারসংক্ষেপ তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও বোর্ড চেয়ারম্যানরা।

পূর্বসিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেলা ১১টায় শিক্ষার্থীরা ফলাফল পাওয়া শুরু করেছেন। প্রত্যাশিত ফল পেয়ে অনেক অভিভাবক ফেসবুকে খুশির খবর শেয়ার করছেন। বেলা ২টায় রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ফলাফলের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

গত ১৭ আগস্ট শুরু হয়েছিল এ বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। অবশ্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চট্টগ্রাম এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা কিছুদিন পর শুরু হয়েছিল। এবার পুনর্বিন্যাস করা পাঠ্যসূচি অনুযায়ী একটি ছাড়া সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে পরীক্ষা হয়েছে। শুধু তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) পরীক্ষা শেষ সময়ে এসে ১০০ নম্বরের পরিবর্তে ৭৫ নম্বরে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।


আরও খবর



সরকারি বরাদ্দ বিতরণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১২ অক্টোবর ২০২৪ |

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক :

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা ও সাবেক রাষ্ট্রদূত জনাব সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মূল উদ্দেশ্য হলো সকল প্রকার বৈষম্য দূর করা, সকলের জন্য মানবাধিকার উন্নীত করা এবং সমতা ও ন্যাবিচারের উপর ভিত্তি করে সংস্কার করা। তিনি বলেন, সরকারি বরাদ্দ বিতরণে কোনো প্রকার দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না। তিনি সাম্প্রতিক সহিংসতায় পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের জন্য সরকারি বরাদ্দের উপকরণসমূহ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতসহ সঠিকভাবে সঠিক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দেন।

আজ রাজধানীর বেইলি রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স ভবনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত আগস্ট ২০২৪ মাসের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি সংক্রান্ত পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশ দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।

উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা মঞ্জুরিকৃত অর্থ উত্তোলনের ক্ষমতা জেলা প্রশাসককে প্রদান করার  জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যবহারে বিগত ২০০২ থেকে ২০০৬ সালে জারিকৃত এ সংক্রান্ত সকল পরিপত্রের শর্তাদি যথাযথভাবে প্রতিপালনের নির্দেশ প্রদান করেন।

সাবেক রাষ্ট্রদূত উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, বিশেষ করে সামাজিক সুরক্ষা ও দারিদ্র্যবিমোচনে সরকারি বরাদ্দগুলো যথাযথ উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণের সময় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উপযুক্ত প্রতিনিধি দ্বারা যে কোন মুহূর্তে পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানসহ সার্বিক মনিটরিং এর ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন উপদেষ্টা।

উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার নির্দেশের প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে গত ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিশেষ প্রকল্প কর্মসূচি হতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য খাদ্য শস্য বরাদ্দ প্রদান করা হয়। প্রেক্ষিতে খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলায় সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের ১৫০ জনের প্রতি জনকে ৪০ কেজি হিসেবে ৬ মে. টন চাল, হতদরিদ্র ২০০ জন-এর মধ্যে প্রতি জনকে ২০ কেজি হিসেবে ৪ মে.টন চাল, খাগড়াছড়ি শহরে রাস্তার পাশে দরিদ্র অস্থায়ী দোকানদার এবং হতদরিদ্র ৫০০ জন মানুষের মধ্যে জন প্রতি ২০ কেজি হিসেবে ১০ মে.টন চাল এবং রাঙ্গামাটি শহরে রাস্তার পাশে দরিদ্র অস্থায়ী দোকানদার এবং হতদরিদ্র ৫০০ জনের প্রতি জনকে ২০ কেজি হিসেবে ১০ মে.টন চাল মোট ৩০ মে.টন চাল জেলা প্রশাসক খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি বরাবর বরাদ্দ দেওয়া হয়। এছাড়া খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দিঘীনালা উপজেলায় সাম্প্রতিক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য ১৫০ জনের মধ্যে জন প্রতি ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল, জন প্রতি ৫ কেজি মসুর ডাল বাবদ ২ লাখ ২০ হাজার ৫ শত টাকা বরাদ্দের মঞ্জুরী প্রদান করা হয়।

মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মালেকা পারভীন স্বাক্ষরিত পত্রে বিশেষ প্রকল্প কর্মসূচি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্য (চাল) পার্বত্য এলাকার সাম্প্রতিক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্থ ও হতদরিদ্র মানুষের জন্য বিতরণের পরবর্তী অগ্রগতি প্রতিবেদন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের নির্দেশনা রয়েছে। বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্য ব্যবহারে বিশেষ প্রকল্প কর্মসূচি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত এই মন্ত্রণালয় কর্তৃক সর্বশেষ গত ১৯ অক্টোবর ২০০৬ তারিখ জারিকৃত নীতিমালার প্রতিটি শর্ত যথাযথভাবে অনুসরণ করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্যের হিসাব নিরীক্ষার জন্য যথোপযুক্তভাবে সংরক্ষণ করতে হবে এবং খাদ্যশস্য ব্যবহার সংক্রান্ত প্রতিবেদন যথাসময়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করতে হবে এবং বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্য স্থানীয় গুদাম হতে যথাসময়ে উত্তোলন করতে হবে।  

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম শামিমুল হক ছিদ্দিকীর সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব ও তিন পার্বত্য জেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর



টিকারবিলায় পূজা উদযাপনে সহায়তার আশ্বাস

প্রকাশিত:বুধবার ০২ অক্টোবর 2০২4 | হালনাগাদ:রবিবার ১৩ অক্টোবর ২০২৪ |

Image

আসন্ন দূর্ঘাপূজা উপলক্ষে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য মাগুরা টিকারবিলা বাজারে আলোচনা করেন আমলসার ইউনিয়নের কৃষক দলের সদস্য সচিব নিউটন ও ষুবদল নেতা সজীব, সালাম, রাজাসহ অন্যান অনেকে উপস্থিত ছিলেন। সভায় পূজা উদযাপন করার বিষয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সার্বিক সহায়তা করার জন্য সবাই একমত প্রকাশ করেন। 



আরও খবর



বিশ্বের প্রভাবশালী মুসলিম তালিকায় ড. ইউনূস

প্রকাশিত:সোমবার ০৭ অক্টোবর ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৩ অক্টোবর ২০২৪ |

Image

বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ৫০০ জন মুসলিম ব্যক্তিত্বের তালিকায় শুরুর দিকেই রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম।

সম্প্রতি ২০২৫ সালের বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ৫০০ মুসলিম ব্যক্তিত্বের তালিকা আম্মানের দ্যা রয়েল ইসলামিক স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ সেন্টার প্রকাশ করে

প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী মুসলিমদের প্রভাব ও অবদান পর্যালোচনা করে প্রকাশিত হয় দ্য মুসলিম ৫০০: দ্য ওয়ার্ল্ডস ৫০০ মোস্ট ইনফ্লুয়েনশিয়াল মুসলিমস, যা ১৬ বছর আগে থেকে প্রকাশ করা হচ্ছে। এ তালিকায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম ৫০ নম্বরে স্থান পেয়েছে

প্রতিবছর প্রকাশিত এই তালিকায় পাঁচটি ক্যাটাগরিতে প্রভাবশালী মুসলিমদের নির্বাচন করা হয়। এই ক্যাটাগরিগুলো হলো: ধর্মীয়, রাজনৈতিক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, শিল্প ও সংস্কৃতি এবং ক্রীড়া ও বিনোদন। প্রতিটি ক্যাটাগরিতে সেসব মুসলিম ব্যক্তিত্বকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যারা তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন

শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি দীর্ঘদিন ধরে মাইক্রোফাইন্যান্স ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত। এবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তালিকায় স্থান পেয়েছেন। তার অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান এবং বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানে নেতৃত্ব তাকে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। তিনি বিশ্বের শীর্ষ প্রভাবশালী মুসলিমদের তালিকায় বাংলাদেশ থেকে অন্যতম মুখ

২০২৫ সালের প্রকাশিত তালিকার নারী বিভাগের Woman of the Year হয়েছেন জর্ডানের রানী রানিয়া আল-আবদুল্লাহ, যিনি দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা ও সমাজের উন্নয়নে কাজ করছেন

এই তালিকায় আরও অনেক আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব যেমন, জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ ইবন আল-হুসেইন, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি, এবং ইরানের আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিসহ শীর্ষস্থানীয় মুসলিম ব্যক্তিত্বরা স্থান পেয়েছেন


আরও খবর



বৈষম্যের বোঝা মাথায় নিয়ে নওগাঁয় বিশ্ব শিক্ষক দিবস উৎযাপন

প্রকাশিত:শনিবার ০৫ অক্টোবর ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১২ অক্টোবর ২০২৪ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

বৈষম্যের বোঝা মাথায় নিয়ে সারা দেশের ন্যায় আজ নওগাঁয় বিশ্ব শিক্ষক দিবস উৎযাপন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা অফিসের আয়োজনে এ আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মাহফুজা খাতুনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল। 

এবারের শিক্ষক দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় "শিক্ষকের কণ্ঠস্বর: শিক্ষায় নতুন সামাজিক অঙ্গীকার" এর আলোকে জেলা পরিষদ চত্ত্বর থেকে সকাল ১০টায় র‍্যালী বের হয়ে সাড়ে ১০ টায় উপজেলা পরিষদ চত্তরে এসে শেষ হয়ে উপজেলা অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা ও শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। 

সাংবাদিক কায়েস উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থায় পাহাড়সম বৈষম্য রয়েছে। আমাদের বাসা ভাড়া দেওয়া হয় ১ হাজার টাকা, চিকিৎসা ভাতা দেওয়া হয় ৫ শ টাকা এবং শিক্ষকদের উৎসব ভাতা দেওয়া হয় মূল বেতনের ২৫ শতাংশ আর কর্মচারীদের দেওয়া হয় ৫০ শতাংশ। এর বাহিরে আমরা আর কোন ভাতা পাই না। আমাদের ন্যায্য দাবী নিয়ে রাস্তায় নামলে পূর্বে বিভিন্ন সরকার শিক্ষকদের উপর নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়েছে। এর থেকে আমরা মুক্তি চাই।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, শিক্ষকরা হলেন মানুষ গড়ার কারিগর। আমি জানি পাশ্ববর্তী দেশগুলোর শিক্ষকদের বেতনের সাথে আমাদের শিক্ষকদের বেতনের কথা বলতে গেলে আমাদের লজ্জা লাগে। তার পরেও দেশের স্বার্থে আপনাদের কাজ করে যেতে হবে। আপনাদের হাতেই তৈরি হয় এই দেশের সুনাগরিক। আপনারা আপনাদের দায়িত্ব ঠিক মতো পালন করে যান একসময় দেখবেন আপনাদের এই অবস্থা আর থাকবে না। 

উক্ত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন জেলা পুলিশ সুপার মো. কুতুব উদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সোহেল রানা, নওগাঁ সরকারি ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান, নামাজগড় গাউসুল আযম কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পি এম আদম আলী, ফয়েজ উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আইয়ুব আলী প্রমুখ।


আরও খবর



একজন মানুষকে তাঁর পরিবারের কাছে পৌঁছানোর কাজটি অনেক কঠিন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১০ অক্টোবর ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১২ অক্টোবর ২০২৪ |

Image

শরিফুল হাসান, অভিভাষণ বিশ্লেষক :

এ যেন নাটক-সিনেমার কোন দৃশ্য! দীর্ঘ ২৫ বছর পর বাবার সঙ্গে সন্তানদের দেখা। সন্তানের সঙ্গে বাবার। ওপরওয়ালার কাছে কৃতজ্ঞতা। কৃতজ্ঞতা গণমাধ্যমসহ আপনাদের সবার প্রতি। কৃতজ্ঞতা ব্র্যাকে আমাদের সব সহকর্মীকে। দেশে ফেরার পর যে মানুষটি পরিবারই খুঁজে পাচ্ছিলেন না অবশেষে চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকা থেকে আমরা তাঁর পরিবারের সন্ধান পেয়েছি। আজ বিকেলে আবুল কাশেম নামের ওই বৃদ্ধকে তাঁর পুত্র ও কণ্যাসহ পরিবারের সদস্যদের কাছে আমরা হস্তান্তর করতে পেরেছি। 


আপনারা যারা আমার আগের স্ট্যাটাস দেখেছেন তারা জানেন, গত শুক্রবার দিবাগত রাতে সৌদি আরব থেকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমেছিলেন এই বৃদ্ধ। কিন্তু তিনি নিজের ঠিকানা বলতে পারছিলেন না। তাঁর কাছে পাসপোর্টও ছিলো না। অনেক কিছু ভুলে গিয়েছেন। ইমিগ্রেশন পুলিশের তথ্য অনুযায়ী এই বৃদ্ধ সম্ভবত শুক্রবার দিবাগত রাতে জেদ্দা থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমেছেন। তাঁর কাছে কোন পাসপোর্ট ছিল না। তিনি ট্রাভেল পাস নিয়ে এসেছেন। 


বিমাবন্দরের এপিবিএনর সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল হান্নান রনি আমাদের ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ম্যনেজার আল আমিন নয়ন ভাইকে ফোন দিয়ে ঘটনা জানান। আমাদের সহকর্মী শাকিল বিমানবন্দরে গিয়ে বিমানবন্দরের উল্টো দিকে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারে নিয়ে আসেন। শনিবার থেকে তিনি সেখানেই ছিলেন। 


আমাদের সেন্টারে আসার পর আমাদের সাইকোসোসাল কাউন্সিলর মাহমুদা ও মাশকুরা দীর্ঘক্ষণ তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। আমাদের কাউন্সিলিরা জানান, শারিরীকভাবে সুস্থ মনে হলেও তিনি ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত। এ কারণেই তিনি সঠিকভাবে তাঁর ঠিকানা বলতে পারছিলেন না। তবে তিনি জানাচ্ছিলেন তাঁর নাম আবুল কাশেম। আমাদের ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ম্যনেজার আল আমিন নয়ন, কেস ম্যানেজার রায়হান, ঢাকা সেন্টারের ম্যানেজার অনোয়ার ভাই, নয়ন ভাই, আখি আপা, নজরুল ভাই, নীলা আপাসহ সবাই লোকটার যত্ন নিতে থাকেন। 


শুনলে অবাক হবেন তাকে যখন পাই তিনি শারীরিকভাবেও অসুস্থ। কয়েকবার তিনি মলমূত্র ত্যাগ করে ভাসিয়েছেন। আমাদের সহকর্মীরা নিজের বাবার মতো করে খেয়াল রেখেছেন। এর আগেও এই ধরনের ঘটনা আমারও আগেও পেয়েছি। প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক, এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ, সিভিল এভিয়েশনসহ সবার সহযোগিতায় আমরা অতীতেও এ ধরনের কাজ করেছি। তবে এবার কোনভাবে আগাবো ঠিক নিশ্চিত ছিলাম না। বুঝতে পারছিলাম না কীভাবে লোকটাকে তাঁর পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেব। 


আমি চট্টগ্রামে বড় হয়েছি এবং চট্টগ্রামের ভাষা নিজে গিয়ে যখন লোকটার সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বললাম। চট্টগ্রামের ভাষা শুনে কাশেম চাচা আমাকে বোধহয় তাঁর আত্মীয় ভেবেছিলেন। তাই তিনি অনেক কথা বলতে থাকলেন। তিনি জানালেন তাঁর বাবার নাম নাম ফজেল আহমেদ। মা সাবানা। স্ত্রীর নাম বলছেন আমেনা। 


তবে নিজের ঠিকানা তিনি কখনো বলছেন চট্টগ্রামের নয়াবাজার। কখনো রাউজানের পাহাড়তলী ইউনিয়নের গরিশংকরহাটের কথাও বলছেন। আবার বলছেন, চট্টগ্রামের নতুন বাজার হালিশহরের কাছে, ঈদগাহের মাঠ বউ বাজার এলাকায় তাঁর ছেলের তরকারির দোকান আছে। আমরা তাঁর বাড়ি কোথায় নিশ্চিত হতে না পারলেও ভাষা শুনে এটুকু বুঝতে পেরেছিলাম তার বাড়ি চট্টগ্রাম অঞ্চলে। 


আবুল কাশেম দাবি করছিলেন, তাঁর ৬ মেয়ে ও ৩ ছেলে রয়েছে। তাঁর তিন ছেলের নাম মান্নান, নূর হাসান, এনামুল হাসান। এর মধ্যে নূর হাসানের তরকারির দোকান আছে। ছোট ছেলে এনামুল হাসান দুবাই থাকেন। মান্নান সৌদি থাকেন বলে দাবি তাঁর। ৮-১০ জন নাতি নাতনি আছেন। কিন্তু যেহেতু দীর্ঘ ২৫ বছর দেশে নেই সঠিকভাবে সব বলতে পারছিলেন না। সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। কথা বলেছি পুলিশের বিশেষ শাখায়। কিন্তু তাঁর কোন পরিচয়পত্র না কাগজ পাচ্ছিলাম না যেটি তাঁর ঠিকানা নিশ্চিত করে। 


আমি তখন পুরো ঘটনা জানিয়ে দুদিন অগেই ফেসবুকে পোস্ট দেই। অসংখ্য মানুষ পুরো ঘটনা শেয়ার করেছেন। যেহেতু তিনি চট্টগ্রামের ভাষায় কথা বলছিলেন কাজেই আমরা চট্টগ্রামের পুলিশসহ নানা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করি। আমরা তাঁর পরিবারের সন্ধানে গণমাধ্যম কর্মীদের সহায়তা চাই। অনেকেই তাঁর বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন। এরপরও আমরা পরিবারের সন্ধান পাচ্ছিলাম না। 


বিকল্প ভাবছিলাম তখন। ওই বৃদ্ধ কখনো চট্টগ্রামের হালিশহর, কখনো হাটহাজারী, নয়াবাজারসহ বেশ কিছু ঠিকানা বলছিলেন। তিনি যখন যেসব এলাকার কথা বলছিলেন আমাদের চট্টগ্রামের ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মীরা সেসব এলাকায় গিয়ে খোঁজ নিচ্ছিলেন। ওই বৃদ্ধ বলছিলেন চট্টগ্রামের নয়াবাজার এলাকায় তাঁর ছেলে তরকারি বিক্রি করে। তখন একটা বিকল্প চিন্তা শুরু করলাম সেই পুরোনো আমলের চিন্তা। আমাদের চট্টগ্রাম টীমকে বললাম পরিবারের সন্ধান চাই শিরোনামে ছবিসহ শত শত পোস্টার বানানা। চট্টগ্রামে বিলি করে বেড়ান। 


আমাদের চট্টগ্রামের সহকর্মী মং, আনিকা, নানজীবাসহ সবাই এরপর চট্টগ্রাম শহরের হালিশহর, নয়াবাজার, বউবাজার, ঈদগাহ, পাহাড়তলী সহ আরো বেশ কয়েকটি স্থানে দেয়ালে দেয়ালে আমরা পোস্টার লাগান। আমরা বিশ্বাস রেখেছিলাম গণমাধ্যমকর্মীসহ সবার সহযোগিতায় আমরা তাঁর পরিবারকে খুঁজে বের করবোই। এসব পোস্টার দেয়ালে লাগানো ও বিতরণ করার পর গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামের আমাদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র (২৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর) আব্দুস সবুর লিটন ও তাঁর সহযোগী মুন্না যোগাযোগ করেন। তিনি জানান, পোস্টারের ছবির লোকটিকে তিনি চিনতে পেরেছেন। 


এরপর আমাদের চট্টগ্রামের সাইকোসোসাল কাউন্সিলর নানজীবা ও আরেক সহকর্মী মং তাঁর অফিসে যান। তাঁদের সহযোগিতায় আমরা তাঁর ছেলে সবজি ব্যবসায়ী জনাব নূর হাসানের খোঁজ পাই। পরবর্তীতে কাউন্সিলর অফিসে নুর হোসেনকে আসতে বলে বুঝতে পারি জানতে পারি আবুল কাশেম তাঁর বাবা। আমরা এরপর তাঁর বাড়িতে যাই। তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র দেখেও আমরা বিষয়টি নিশ্চিত হই। 


নুর হাসানের কাছ থেকে আমরা পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলি। দুবাইতে থাকা তাঁর এক ছেলের সঙ্গেও কথা বলি। এরপর বৃদ্ধ আবুল কাশেমের ছোট মেয়ে রুমা বেগম ও তার স্ত্রী আমেনা বেগমের সাথে ঢাকা থেকে ভিডিও কলে কথা বলিয়ে দেই। এ সময় যে আবেগঘণ পরিবেশের সৃষ্টি হয় সেটি ভাষায় বলা কঠিন। এরপরই আমাদের লোকজনের সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা তাকে নিতে ঢাকায় রওয়ানা হন। আজকে সকালে তাঁরা ঢাকায় এসে পৌঁছান। 


আজকে উত্তরায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারে যখন বাবার সঙ্গে ছেলে-মেয়েদের দেখা হলো যেন স্বর্গ দেখলাম নিজ চোখে।আবুল কাশেমের বড় ছেলে নূর হাসান বাবাকে ফিরে পেয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ব্র্যাকসহ আপনাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞতা। অনেকদিন ধরে বাবার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ছিল না। আমরা জানতাম না তিনি সৌদি আরবের কোথায় আছেন। তিনি যে দেশে এসেছেন সেটাও আমরা জানতাম না। পোস্টার দেখে ও স্থানীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে ব্র্যাকের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হেয়। আমরা তার পরিবারের সদস্য হয়েও যা করতে পারিনি ব্র্যাক আমার বাবার জন্য তার চেয়ে বেশি কিছু করেছে। 


দীর্ঘদিন পর পরিবারকে পেয়ে আবুল কাশেম তাঁর সন্তানদের বারবার জড়িয়ে ধরছিলেন। তাঁকে নিতে আসা কন্যা পারভীন আক্তার বলেন, আমার বাবা যখন ২৫ বছর আগে সৌদি আরবে যায় অমার ছোট বোন রূমা তখন মায়ের পেটে। বাবার সঙ্গে আমাদের স্মৃতি খুব কম। আমরা এখন বাবাকে ফেরত পেলাম। আমাদের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। 

পরিবারকে হস্তানের সময় এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউল হক, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক স্কোয়াড্রন লিডার মোঃ রাসেল তালুকদার, সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান রনি এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহকারী পরিচালক মোঃ ফখরুল আলম উপস্থিত ছিলেন। আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ। আমরা যা করছি আপনাদের সবার সহযোগিতায় করতে পেরেছি। 

আমি এই সুযোগে আমাদের ব্র্যাকের সব সহকর্মীকে ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ গণমাধ্যমকে। ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে। ১৭ কোটি মানুষের এই দেশে ঠিকানাহীন একজন মানুষকে তাঁর পরিবারের কাছে পৌঁছানোর কাজটি কতো কঠিন সেটা আমরা যারা এমন কাজ করি তারাই বুঝতে পারি। কিন্তু আপনাদের সবার সহযোগিতায় অসম্ভব সেই কাজটাও আমরা করতে পেরেছি। 


আরও খবর