ইয়াশফি রহমান : বড় সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিলো সাকিববাহিনী। জাগিয়েছিল জয়ের আশাও। তবে ১৯তম ওভারেরই হার নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের। শেষ ওভারের আনুষ্ঠানিকতায় এসে তেমন ভালো কিছু করতে পারেননি মেহেদি হাসান। ফলে ২ উইকেটের হারে বিদায় নিলো বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেওয়া ১৮৪ রানের লক্ষ্য লঙ্কানরা ছুঁয়ে ফেলেছে ৪ বল অক্ষত রেখে।
১৮৩ রানের সংগ্রহ নিয়ে মোটামুটি জয়ের
স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। আর এবাদতের বোলিংয়ে সেই স্বপ্ন যেন ধীরে ধীরে দৃশ্যমান
হচ্ছিল। কিন্তু কীসে যে কী হয়ে গেলো বোঝা গেলো না। হঠাৎ ফিল্ডিং মিস, ক্যাচ মিসের মহড়া শুরু হলো। ওয়াইড নো
সমানে দিতে থাকেন বোলাররাও। মিরাজের হাত ফসকে ক্যাচ পড়ে যাওয়ার মতো টাইগারদের হাত
গলে বেরিয়ে গেছে জয়। নিতে হয়েছে বিদায়।
লঙ্কান ইনিংসের তখন ১৮ তম ওভার। গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়ে
থাকা দাসুন শানাকা মেহেদী হাসানের চতুর্থ বলে মারেন বাউন্ডারি। পরের বলে উঠিয়ে
মারতে গিয়ে ধরা পড়েন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের হাতে। লঙ্কান অধিনায়কের বিদায়ের পর
মনে হচ্ছিল ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের মুঠোয়।
কিন্তু
ইবাদত হোসেনের ব্যয়বহুল ১৯ তম ওভারেই ম্যাচ আবার চলে যায় টুর্নামেন্টের আয়োজন
স্বত্ত্ব পাওয়া শ্রীলঙ্কা দখলে। ইবাদত ১৭ রান দেন ওই ওভারে। চামিকা করুণারত্নকে
সাকিব রানআউট করে ফেরালেও ম্যাচটা হাতছাড়া করতে দেননি ‘লেজের’ ব্যাটার আসিথা ফার্নান্দো।
শেষ
ওভারে ৮ রানের প্রয়োজনে প্রথম বল থেকে আসে ১ রান। মেহেদীর পরের বলে নিজের দ্বিতীয়
বাউন্ডারি মেরে দেন আসিথা। পরের বলে লং অনে ফেলে দুই রান নেওয়ার পর দেখা যায় বল
হয়েছে নো। খেলা শেষ! উল্লাসে মাতোয়ারা তখন লঙ্কান ক্যাম্প। ড্রেসিং রুমের গেটে
দাঁড়িয়ে চামিকা করুণারত্নে ফিরিয়ে আনেন সেই ‘নাগিন
নাচ’।
পুরো
ইনিংসে শ্রীলঙ্কা যেখানে একটিও ওয়াইড কিংবা নো বল দেয়নি, বাংলাদেশ সেখানে দিয়েছে ১২ টি!
অতিরিক্ত খাতের এই রান যেন খাদেই ফেলে দিয়েছে সাকিবের দলকে।
বাংলাদেশকে
পেলেই জ্বলে ওঠা কুশল মেন্ডিসের পুরোনো অভ্যাস। আজও শ্রীলঙ্কাকে পথ দেখিয়েছেন
তিনি। তবে বাংলাদেশিদের ‘বোকামির
বদন্যতায়’ বেঁচে গেছেন চার-চার বার। ৩৭ বলে
৬০ রান করা কুশলই হয়েছেন ম্যাচসেরা। তাতে ম্লান হয়ে গেছে অভিষেকে ইবাদতের শুরুর ৩
উইকেট আর তাসকিন আহমেদ দুর্দান্ত স্পেল (২ / ২৪) ও মনে রাখার মতো দুটি ডাইভিং
ক্যাচ।
বাংলাদেশের
শুরুটা হয়েছিল দারুণ। ব্যর্থ দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ও এনামুল হক বিজয়কে একাদশ
থেকে ছেঁটে ‘মেকশিফট’ দুই ওপেনার নামিয়ে দেয় টিম
ম্যানেজমেন্ট। সাব্বির রহমান-মেহেদী হাসান মিরাজ নেমেই দেখান অভিপ্রায়। সাব্বির এক
চারে আউট হয়ে গেলেও মিরাজ পাওয়ার প্লে কাজে লাগান দারুণভাবে।
১৮৪ রানের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নিয়ে খেই
হারিয়ে ফেলে লঙ্কানরা। টি-টুয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে অভিষিক্ত এবাদত হোসেনের গতিতে
লঙ্কান টপঅর্ডারে নামে ধস। কিন্তু কুশল মেন্ডিস ও দাসুন শানাকার কাছে পরাস্ত হয়েছে
টাইগাররা।