কাতালান ক্লাব বার্সেলোনা থেকে পিএসজিতে এসে ঝড় তুলবেন লিওনেল মেসি। এমনটিই ধারণা করেছিলো সবাই। ‘ঝড়’ তুলতে হয়তো পারেননি আর্জেন্টাইন তারকা, কিন্তু খারাপ যে খেলেছেন, সে কথা বলা যাবে না মোটেও। কিন্তু তিনি কি সত্যি সত্যি ‘বার্সেলোনার মেসি’র মতো খেলতে পেরেছেন? এ ব্যাপারে উত্তর দিতে দ্বিধায় পড়ে যাবেন বেশির ভাগ মানুষ।
পিএসজিতে এসেই চোটের সঙ্গে লড়তে হয়েছে তাকে। কিন্তু চোট কাটিয়ে তিনি যখন মাঠ ফিরলেন, তখন তার কাছ থেকে পিএসজি আগুনটা পেল না। তিনি মাঠজুড়ে খেলেছেন ঠিকই, গোল করিয়েছেন অন্যকে দিয়ে। কিন্তু নিজে? আগের মৌসুমেই বার্সেলোনার জার্সিতে যেখানে মৌসুমজুড়ে ৩০টির বেশি গোল করেছিলেন, সেখানে এ মৌসুমে পিএসজির জার্সিতে তার গোল মাত্র ৮টি। ২৯টি ম্যাচে ৮ গোল! তিনি মোটেও বার্সেলোনার মেসি হয়ে উঠতে পারেননি। এই ৮ গোলের ৫টি চ্যাম্পিয়নস লিগে, ৩টি ফরাসি লিগে। গোটা মৌসুমে পিএসজির হয়ে তার গোলে সহায়তা ১৩টি।
মৌসুমের এই সময়ে এসে ফরাসি গণমাধ্যম ধীরে ধীরে মেসিকে নিয়ে লাভ-ক্ষতির অঙ্ক কষা শুরু করেছে। পিএসজি বছরে ৩০ মিলিয়ন ইউরো ব্যয় করেন মেসির পেছনে। একটি গণমাধ্যম হিসাব করেছে তবে কি লিগ ওয়ানে মেসির প্রতিটি গোলের জন্য ১০ মিলিয়ন ইউরো ব্যয় পিএসজির? মৌসুমে পিএসজির জার্সিতে তার ৮টি গোলের প্রতিটির পেছনে ব্যয় তাহলে পৌনে ৪ মিলিয়ন ইউরো।
লাভ-ক্ষতির হিসাব যা-ই হোক না কেন, মেসি এবার সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি। চ্যাম্পিয়নস লিগে আরও একটি ব্যর্থতা সঙ্গী হয়েছে তার। লিগ এ জয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা পিএসজির জন্য সেটি বড় ধাক্কাই। এবার মেসিকে দলে নিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের ব্যাপারে তাদের প্রত্যাশাটা যে ছিল আকাশছোঁয়াই। এ মৌসুমে গোল সহায়তার কাজটা মেসি বেশি করলেও পিএসজি তার কাছে গোল চায়। প্রত্যাশা মেটাতে আরও একটি মৌসুম পাবেন তিনি। ২০২৩ পর্যন্ত পিএসজির সঙ্গে মেসির চুক্তি।
সম্প্রতি স্পেনের মুন্দো দেপোর্তিভো মেসি বার্সায় ফেরত যাচ্ছেন, এমন একটা গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। পিএসজিতে খেলে তিনি সন্তুষ্ট নন, অচিরেই বার্সায় ফেরত যেতে চান—প্রতিবেদনটির মূল নির্যাস ছিল এমনই। কিন্তু মেসি নিজেও এই প্রতিবেদনে নাকি অবাক হয়েছেন। তিনি যে পিএসজি ছাড়ার কথা ভাবনাতেও আনেননি, সেটি স্পষ্ট করেছেন। চুক্তির আরও এক বছর এখনো বাকি তার, সেটি শেষ করেই ভাবতে চান অন্য কিছু।