Logo
শিরোনাম

হবিগঞ্জের মাধবপুরে প্রশাসনকে 'ম্যানেজ' করে কাটা হচ্ছে ফসলি জমির মাটি

প্রকাশিত:শনিবার ০৫ অক্টোবর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি::

হবিগঞ্জের মাধবপুরে নিয়ম-নীতির কোনো তোয়াক্কা না করে ফসলি জমি খনন করে বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে এক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে। 

উপজেলার ছাতিয়াইন ইউনিয়নের দাশপাড়া কৃষিজমি থেকে বালু মাটি তুলছেন প্রভাবশালী সাহেদ আলী নামের এক ব্যক্তি। উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই তিনি মাটি তুলছেন বলে দাবি তাঁর।

জানা যায়, দিনরাত অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলন করায় কৃষকের ফসলি জমি পুকুরে পরিণত হচ্ছে। ফলে অসহায় হয়ে পড়েছে ওই এলাকার কৃষকরা। খননযন্ত্রের মাধ্যমে তোলা সেই মাটি দীর্ঘ পাইপলাইনের মাধ্যমে ফেলা হচ্ছে ইনোভেটিভ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানে। যা বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেও নীরব রয়েছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষয়টি জানেন এবং কিছুদিন আগে বন্ধ করেছিলেন। এরপর গোপন দেনদরবার করে আবার তা চালু হয়েছে-এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকের জমি পুকুর খননের নামে সেলু মেশিন ও ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলন করে দীর্ঘ পাইপলাইনে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ইনোভেটিভ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানে ফেলা হচ্ছে। অল্প দামে বালু মাটি কিনে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে হাতিয়ে নেয় কোটি কোটি টাকা।

নাম প্রকাশে ওই এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, সাহেদ আলী বিগত কয়েক বছর ধরে কম দামে মাটি বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন কোম্পানীর কাছে বিক্রি করে থাকেন । এর ফলে আমরা বাড়িঘর, ফসলি জমি হারাতে বসেছি। এর কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না।’

তিনি আরো বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী অফিসার কয়েক দিন আগে বন্ধ করে গেছে। এরপর গোপন দেনদরবারের মাধ্যমে তা আবার চালু হয়েছে। আমরা প্রতিবাদ করতে গেলেই সাহেদ আলী ও তার লোকজন বলেন প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই বালু মাটি তুলছি। আপনারা চিল্লাইয়ে কোনো কাজ হবে না।’ এলাকাবাসী আরও  বলেন, ইউএনও স্যার মাঝে মাঝে আসেন, দেখেন, বন্ধও করে চলেন যান। আবার আগেই মতো চলে।’ ‘স্যারের যাওয়া-আসার মধ্যেই হয়তো কোনো কিন্তু আছে। তা ছাড়া অবৈধ কাজ চলে কী করে?’

সম্প্রতি ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এলাকার নিরীহ কৃষকের জমির মাটি কেটে নিয়ে পুকুরে পরিণত করছেন উপজেলার ছাতিয়াইন ইউনিয়নের মোহাম্মদ আলীর ছেলে সাহেদ আলী। ড্রেজার মেশিন ও প্রকল্পের আশপাশে ঘেরাও করে বসে আছে সাহেদ আলীর সাঙ্গপাঙ্গরা। তারা লাঠিসোটা নিয়ে আড্ডা দেন। কেউ প্রতিবাদ করলেই নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এর সত্যতা যাচাইয়ে নোভেটিভ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানের পাশে গেলে কয়েকজন যুবক এসে প্রতিবেদককে ভিডিও ছবি না করার জন্য বাঁধা প্রদান করেন। 

সোহাগ মিয়া নামে এক যুবক বলেন, সাহেদ আলী নিষেধ করেছন ওই এলাকার আশেপাশে কোন ছবি বা ভিডিও না করার জন্য। করলে মোবাইল ক্যামেরা রেখে দেয়া হবে। প্রকল্পের আশপাশে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। 

সোহাগ মিয়াসহ এই কর্মযজ্ঞের চারপাশে পাহারায় নিয়োজিত আছেন আরো সাত থেকে আটজন। তাদের জিজ্ঞেস করলে বলেন, আমরা কয়েকজন এটি দেখভাল করি। কেউ ছবি ভিডিও তুলতে এলে বাঁধা দেই। সাংবাদিক পরিচয় পেলে সাহেদ আলীকে খবর দিলে তিনি এসে তাদের আপ্যায়ন করেন এবং খরচাপাতি দিয়ে শেষ করেন।

এ বিষয়ে কথা হয় অভিযুক্ত সাহেদ আলীর সঙ্গে। প্রথমে অস্বিকার করলেও পরে স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই মাটি তুলি, আপনারা পত্রিকায় লিখেও কিছু করতে পারবেন না।’

তিনি প্রতিবেদককে আরও বলেন, আপনি ফোন দিছেন, আসেন টাকা নিয়ে যান। আপনার মত অনেকেই ফোন দিয়ে দেখা করে টাকা নিয়ে যায়। চিল্লা চিল্লি না করে বলেন কত টাকা লাগবে। তার কথায় প্রতিবেদক রাজি না হলে অকট্য ভাষা ব্যবহার করেন সাহেদ আলী। 

ছাতিয়াইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিনহাজ উদ্দিন চৌধুরী কাসেদ বলেন, অবৈধভাবে মাটি উত্তোলনের দায়ে ইউএনও স্যার বন্ধ করে গেছেন। কিন্তু কিভাবে আবার চালু হলো তা আমি জানি না। সাহেদ আলী সম্পুর্ণ অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলন করছে।

ইউপি সদস্য সুবোধ বলেন, আমার জানামতে আলী মিয়ার জমি থেকে সাহেদ আলী মাটি কিনে কোম্পানীতে বিক্রি করছেন। ময়মনসিংহ থেকে ডেজার মেশিন এনে প্রায় ১মাস যাবৎ এই মাটি তুলছেন। কিছুদিন আগে ইউএনও স্যার এসে বন্ধ করে আমাকে দায়িত্ব দিছেন কিন্তু এখন কিভাবে মাটি উত্তোলন করছে তা আমি জানি না। 

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.কে.এম ফয়সাল জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মামলাসহ সাহেদ আলীকে জরিমানা করা হয়েছে। কিছুদিন আগে ড্রেজার মেশিন জব্দ করে স্থানীয় ইউপি সদস্য সুবোধ এর জিম্মায় দিয়ে আসছিলাম। এখন যদি ইউপি সদস্য আইন অমান্য করে ড্রেজার মেশিন দিয়ে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কৃষি জমি অকৃষি কাজে ব্যবহার ভূমি ব্যবস্থাপনা আইন মানা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি জানান, ইনোভেটিভ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পক্ষে এখন পর্যন্ত কেউ কোন আবেদন করেনি। এবিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।



আরও খবর



আগের মতোই দখলদারি-চাঁদাবাজি শুরু হ‌য়েছে

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ নভেম্বর 20২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর ব্যক্তি পরিবর্তন হয়েছে, বন্ধ হয়নি চাঁদাবাজি। ওসি বদলি হয়, ডিসি বদলি হয়; কিন্তু চাঁদার সিস্টেম থেকেই গেছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। শুক্রবার বিকালে ভোলা সরকারী স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত গণ-সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে এ সব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, লুটরাজ বন্ধ করতে হলে ইসলামী শাসন কায়েম করতে হবে। যতদিন ইসলামী শাসন কায়েম না হবে, ততদিন এ দুর্নীতিবাজকে দমন করা যাবে না। সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, ভোলা-বরিশাল সেতু বাস্তবায়ন ও ভোলার গ্যাস ভোলাসহ বরিশাল বিভাগে ব্যবহারে নিশ্চিত করতে হবে। আর যদি তা না হয় তাহলে ভোলার মানুষদের সাথে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ এবং শান্তির প্রতিক হাতপাখা। তাই সকলকে হাত পাখায় সমর্থন দেওয়ার আহ্বান করেন নায়েব আমীর। ফয়জুল করীম বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন যদি ভোটের অধিকার নিশ্চিত না করে তাহলে অতীতের কমিশনের মত তাদেরও অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে। এ দেশের জনগণ ছাড় দিবে না।

ভোলার আবাসনে গ্যাস সংযোগ, ইন্ট্রাকোর সাথে অবৈধ চুক্তি বাতিল, ভোলা-বরিশাল সেতু বাস্তবায়ন, ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে সংঘটিত গণহত্যার বিচার, দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তার, অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও তাদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে গণ-সমাবেশে ভোলা জেলা (উত্তর) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সভাপতি মাওলানা আতাউর রহমান মোমতাজীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ইউসুফ আদদানের যৌথ সঞ্চালনায়


আরও খবর



ঘূর্ণিঝড় ‘ফিনজালে’ উত্তাল সাগর

প্রকাশিত:শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থারত ঘূর্ণিঝড় ফিনজাল উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এর প্রভাবে দেশের চার সমুদ্র বন্দরকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আবহাওয়া অফিসের দেওয়া ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ফিনজাল শনিবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৬০৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫০৫ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫১৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে দুপুরের দিকে উত্তর তামিলনাড়ু উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। এ অবস্থায় দেশের চার সমুদ্রবন্দরকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থান করা সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের সর্বশেষ পূর্বাভাসে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হওয়ার আভাস দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে বলে সরকারি সংস্থাটির পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।


আরও খবর



অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ চার বছরেরও কম

প্রকাশিত:সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ চার বছরের কম হবে, এমনকি আরও কম হতে পারে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল–জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই তথ্য জানান।

আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনের (কপ২৯) ফাঁকে ড. ইউনূস আল–জাজিরাকে এই সাক্ষাৎকার দেন। রোববার সম্প্রচারিত ওই ভিডিও সাক্ষাৎকারে তিনি বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশ যে সংকটগুলো মোকাবিলা করছে, সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়া, আগামী নির্বাচন, কূটনৈতিক সম্পর্কের পরিবর্তিত চিত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন।

ড. ইউনূসের কাছে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের সঠিক সময় সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "না, আমার মাথায় এমন কিছু নেই।" তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচনের সময়সূচি নির্ধারণের ক্ষেত্রে তার কোনো পরিকল্পনা নেই।

এছাড়া, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ কতদিন হবে—এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকার, স্থায়ী সরকার না। নিয়মিত সরকারের মেয়াদ ৫ বছর হয়ে থাকে। নতুন সংবিধানে সম্ভবত সরকারের মেয়াদ চার বছর হতে পারে, কারণ মানুষ সরকারের মেয়াদ কম চায়। সুতরাং, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ অবশ্যই চার বছরের কম হবে, এটি নিশ্চিত। এটা আরও কমও হতে পারে, তবে পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে মানুষের কী চাহিদা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর কী মতামত তার ওপর।

তিনি আরও বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো মনে করে যে, সংস্কার প্রক্রিয়া ভুলে গিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া উচিত, তাহলে সেটাও করা হবে।

ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি কি অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান হিসেবে চার বছর দায়িত্বে থাকবেন? এর উত্তরে তিনি বলেন, আমি চার বছর থাকার কথা বলিনি। আমি বলেছি, এটা সর্বোচ্চ মেয়াদ হতে পারে, তবে আমাদের উদ্দেশ্য তা নয়। আমাদের উদ্দেশ্য যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করা।

চলমান সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, পুরো সরকার ব্যবস্থা সংস্কার হবে। মানুষ নতুন কিছু চায়, আর সেখানে সব ক্ষেত্রেই সংস্কার করা হবে। এমনকি সংবিধানও সংস্কার হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এই উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। বর্তমানে দুটি প্রক্রিয়া একসাথে চলছে—একটি হচ্ছে নির্বাচনের প্রস্তুতি, আর অন্যটি হচ্ছে সকল সংস্কার কার্যক্রম শেষ করার প্রস্তুতি।

ড. ইউনূস বলেন, সারাদেশ নতুন কিছু চায়, আর নতুন বাংলাদেশ শুধু নির্বাচনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমরা বাংলাদেশের মানুষের কাছে জানতে চাইছি, তারা কি এখনই নির্বাচনে যেতে চায় নাকি সংস্কার প্রক্রিয়া শেষ হওয়া আগে নির্বাচন চান। তিনি নিশ্চিত করেন যে, সমস্ত সিদ্ধান্ত জনগণের মতামত এবং রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শের ভিত্তিতে নেওয়া হচ্ছে।

সাক্ষাৎকারে ভারতের কাছে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার প্রসঙ্গও ওঠে। এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন। সেখান থেকে তিনি বাংলাদেশের মধ্যে বিক্ষোভের ডাক দিচ্ছেন। এগুলো বাংলাদেশের জন্য ভালো নয়। তাই ভারতকে এসব বিষয়ে বলার প্রয়োজন আছে। ভারত তাকে আশ্রয় দিয়েছে, কিন্তু যদি এই ধরনের ঘটনা অব্যাহত থাকে, তাহলে তাদের কাছে আবার অভিযোগ করা হবে।

তিনি বলেন, ১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের বিবৃতিতে শেখ হাসিনাকে ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। এর জবাবে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা নিজেকে যতই কিছু বলতে পারেন, বাস্তবতা কিন্তু অন্য কথা বলে। এমনকি ভারতও তাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছে। তাই আশ্রয়দাতাও তাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আর কিছুই বলছে না।

শেখ হাসিনার দেশে প্রত্যাবর্তন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আইনি প্রক্রিয়া চলছে। যদি তিনি দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে তার প্রত্যাবর্তন চাওয়া হবে।

ভারতের সঙ্গে মিলিতভাবে অভিন্ন নদীগুলোর পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে ড. ইউনূস বলেন, আমরা চাই, ভারতসহ আমাদের অভিন্ন নদীগুলোর পানি ব্যবস্থাপনা যৌথভাবে করা হোক।

শেষে, ড. ইউনূস বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে বলেন, গত ১৬ বছরে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ছিল। আমাদের সরকার চেষ্টা করছে, দেশের দুর্নীতি থেকে বের হয়ে আসতে এবং একটি স্বচ্ছ সরকার ব্যবস্থা তৈরি করতে।


আরও খবর



আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অধ্যাদেশ ২০২৪' অনুমোদন

রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করতে পারবে ট্রাইব্যুনাল

প্রকাশিত:বুধবার ২০ নভেম্বর ২০24 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করতে পারবে—এমন বিধান রেখে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অধ্যাদেশ ২০২৪’-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।

বুধবার (২০ নভেম্বর) সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠকে উপস্থিত একজন উপদেষ্টা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ তথ্য জানিয়েছেন।

১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) আইন সংশোধন করে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ এই অধ্যাদেশ এনেছে।

মঙ্গলবার খসড়া অধ্যাদেশের বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের জানান, আদালত যদি মনে করেন তাহলে অপরাধী রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করতে পারবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আছে, নির্বাচন কমিশন আছে। আদালত যদি মনে করেন তারা সেটা করতে পারবেন। তবে শাস্তি দেবেই, এমন নয়। এমন প্রস্তাবনা অধ্যাদেশে রয়েছে।

উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন পেলে বৃহস্পতিবারের মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অধ্যাদেশ জারি করা হবে বলেও জানিয়েছিলেন আইন উপদেষ্টা।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম বৈঠক বসে সচিবালয়ে। এতে যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা। দায়িত্ব নেওয়ার পর এটিই প্রধান উপদেষ্টার প্রথম সচিবালয়ে অফিস। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক এবং প্রধান উপদেষ্টা আসায় সচিবালয়ে নেওয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।


আরও খবর

জয় বাংলা' এখন থেকে জাতীয় স্লোগান নয়

মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

জামিন পেলেন এসপি বাবুল আক্তার

বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪




শীতের তীব্রতা বেড়েছে , তাপমাত্রা ১৫.৬ ডিগ্রি

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ নভেম্বর 20২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

কুড়িগ্রামে তাপমাত্রা আরও কমে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে পথঘাট ও প্রকৃতি। গত এক সপ্তাহ ধরে ১৭ ডিগ্রি থেকে ১৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠানামা করছে তাপমাত্রা।

রবিবার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৭টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দিনের বেলা তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঠান্ডা অনুভূত হতে থাকে। এ সময় ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকে বিস্তীর্ণ এলাকা। শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে বিলম্বে যাতায়াত করছে। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

অন্যদিকে, কুয়াশা ও শীতের কারণে ক্ষেতমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো বিপাকে পড়েছে। তারা সময়মতো কাজে যেতে পারছে না। শীতের কবলে পড়েছে নদ-নদী তীরবর্তী চর ও দ্বীপ চরের হতদরিদ্র মানুষগুলো।

কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের আবু সাঈদ বলেন, ৫-৬ দিন থেকে শীত ও ঠান্ডা অনেক বাড়ছে। রাতে বৃষ্টির মতো পড়তে থাকে কুয়াশা। ঠান্ডা ও শীতের কারণে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। তারপরেও সকালে কাজের জন্য বের হয়েছি। কাজ না করলে তো আর সংসার চলবে না।

ওই এলাকার দিনমজুর নামদেল বলেন, আজ খুব কুয়াশা পড়ছে। মানুষ ঘুম থেকে না উঠতেই আমরা কাজের জন্য বের হয়েছি। যতই শীত বা ঠান্ডা হোক না কেন, কাজ ছাড়া কোনো উপায় নাই আমাদের।

কুড়িগ্রাম আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, চলতি মাসের শেষে অথবা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে হিমেল বাতাস বইতে পারে। তখন ঠান্ডার তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


আরও খবর