রোকসানা মনোয়ার : আধুনিক গণপরিবহন সেবার একটি অংশ ই-টিকেটিং। সম্প্রতি ঢাকা শহরে এই সেবা চালু করা হয়েছে। ই-টিকেটিংয়ের কারণে বন্ধ হয়েছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়। তবে মালিকরা কমিয়ে দিয়েছেন বাস। যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এমনটি দাবি করছেন।
শুরুতেই ই-টিকেটিং নিয়ে যাত্রী ও বাস মালিক-শ্রমিকের মধ্যে নানা মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। ই-টিকেটিং চালুর পর বিভিন্ন রুটে বাসের সংখ্যা কমিয়ে দেন মালিকরা। এছাড়া বাসে দূরত্বের ব্যবধানে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ করেন নগরীর যাত্রীরা।
তবে ই-টিকেটিং ব্যবস্থাকে স্বাগত জানিয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির নেতারা বলছেন, পরিবহন খাতে দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি এই খাতের আমূল সংস্কার করা না গেলে ই-টিকেটিং সিস্টেমে সিটিবাস সার্ভিস ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।
তারা বলছেন, ই-টিকিটে দূরত্ব অনুযায়ী ভাড়া আদায় নিশ্চিত করায় যাত্রী ভাড়া কমে আসছে, ফলে বাসমালিকের আয়ও কমে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় গণপরিবহনে অদৃশ্য খরচ বন্ধ করা না গেলে অনেক পরিবহন মালিককে লোকসান দিয়ে বাস চালাতে হবে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, দীর্ঘদিন পর নগরীর সিটি সার্ভিসের বাসে ই-টিকেটিং সেবা চালু করায় ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের ধন্যবাদ। প্রতিটি টিকিটে বাসের নাম, বাসের নিবন্ধন নম্বর, যাত্রা ও গন্তব্যের নাম, দূরত্ব, ভাড়ার অঙ্ক, ভ্রমণ তারিখ ও অভিযোগ কেন্দ্রের নম্বর থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে ই-টিকেটিং ব্যবস্থায় এসব পূর্ণাঙ্গ তথ্য নেই। কোনো কোনো টিকিটে শুধু ভাড়ার অঙ্ক লেখা রয়েছে। ফলে এসব টিকিট দিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হলে যাত্রীদের প্রতিকার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে দাবি করেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বলেন, ই-টিকেটিং উন্নত বিশ্বে আগে চালু হলেও গত চার বছর আগে বাংলাদেশে চালু হয়। রাজধানীর বাসভাড়া নৈরাজ্য দূরীকরণে এটা চালু করা হয়েছে। ফলে ওয়েবিলের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধের পাশাপাশি বাসে বাসে অসম প্রতিযোগিতা বন্ধ হবে। রাজধানীতে ৩০ নভেম্বরের পর থেকে লক্কড়-ঝক্কড় বাস বন্ধ হয়ে যাবে। সব বাস সার্ভিস দৃষ্টিনন্দন করা হবে।