Logo
শিরোনাম

ইসলামপন্থীদের কাছে টানতে তৎপর বিএনপি-জামায়াত

প্রকাশিত:সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

আওয়ামী লীগ মাঠে না থাকায় সে মাঠ এখন বিএনপি ও জামায়াতের দখলে। বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ায় আগামী নির্বাচনে ইসলামপন্থী দলগুলোকে নিয়ে মৈত্রী গড়ার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বিএনপিও নির্বাচনী যাত্রায় ইসলামপন্থীদের পাশে রাখকে তৎপরতা শুরু করেছে।

আদর্শিক ভিন্নতা থাকলেও ভোটের লড়াইয়ে এগিয়ে থাকতে চরমোনাই পীরের বরিশালের বাড়ি পর্যন্ত গেছেন জামায়াত আমীর। আর রাজধানীতে দলটির প্রধান কার্যালয়ে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব।

নির্বাচন ঘিরে বিএনপি-জামায়াতের তৎপরতায় ইসলামী দলগুলোর মধ্যে দোটানা ভাব দেখা দিয়েছে। জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন অতীতের তিক্ততা মিটিয়ে ঘনিষ্ঠ হয়েছে। তারা ইসলামপন্থীদের ভোট ‘এক বাক্সে’ দেওয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছে, সেটির সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠছে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ইসলামী শক্তির অভিন্ন বাক্স আমরা নির্বাচনে দিতে চাই। তবে, জামায়াত এবং আমরা আদর্শিক, নীতিগত বা রাজনৈতিকভাবে এক হয়ে গেছি, তা কিন্তু নয়। আমাদের মধ্যে কিছু বিষয় মতপার্থক্য আছে বলেই আমরা আলাদা রাজনীতি করি। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ইসলামিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচনী ঐক্যের সম্ভাবনা বেড়েছে। আমরা সব ইসলামিক দলগুলো নিয়ে কাজ করছি। আমরা মনে করি ইসলামি রাজনৈতিক এলায়েন্স এখন সময়ের ব্যপার মাত্র।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ জানান, ফ্যাসিবাদবিরোধী যেকোনো দলের সাথেই ঐক্য হতে পারে। আর ইসলামী দলগুলোর জন্য যেকোনো ছাড় দিতে প্রস্তুত তারা।

তবে, নির্বাচনী রাজনীতির সরল অঙ্কের গরল ফলাফল এখনই মেলানো সম্ভব নয় বলে মনে করেন দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক দলের নেতারা।


আরও খবর



সবজির দাম বাড়তি, সংকট সয়াবিনের

প্রকাশিত:শুক্রবার ১১ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

ঈদের পর থেকে বাজারের প্রায় সব ধরনের সবজির দামই কম-বেশি বেড়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে, যা আগের তুলনায় প্রায় ২০ টাকা বেশি। আগে ছিল ৪০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। তবে চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এ ছাড়া বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট চলছে। আগের চেয়ে নির্ধারিত দাম না বাড়লেও অনেক দোকানে সয়াবিন তেল নেই। যে কারণে অনেকে বোতলের গায়ের দামের চেয়ে কেজিপ্রতি ৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছেন দোকানিরা। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে বর্তমানে চাহিদার তুলনায় সবজির সরবরাহ কম। শীতের অধিকাংশ সবজি শেষ হয়ে গেছে আর গ্রীষ্মের অনেক সবজি এখনো বাজারে কম। এ কারণে দাম বেড়েছে।

মোহাম্মদপুর টাউনহল মার্কেটে গিয়েও সবজির বাজার বেশি দেখতে পাওয়া যায়। বেসরকারি চাকরি করা মো. বুলবুল জানান, ১০০ টাকা দরে আধা কেজি বরবটি ও করলা কিনেছেন তিনি। বলেন, ঈদের আগে সব সবজি ৬০ টাকার আশপাশে ছিল। ঈদের পরে দাম প্রায় ২০ টাকার মতো বেড়ে গেছে।

এছাড়া খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৫ টাকা বেড়ে ৩৫-৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া আলু, আদা, রসুন, চাল ও আলুর দাম আগের মতোই রয়েছে।

এদিকে বাজারে আবারও সয়াবিন তেলের কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক দোকানেই তেল পাওয়া যাচ্ছে না। কিছু দোকানে পাওয়া গেলেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে। অর্থাৎ কোনো দোকানে ৫ লিটারের বোতলজাত তেল থাকলেও এক-দুই লিটারের বোতল পাওয়া যাচ্ছে না। আবার কোনো কোনো দোকানে প্রতি লিটারে নির্ধারিত দাম ১৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৮০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে।

হাতিরপুল বাজারের বিক্রেতা রাজীব আহসান বলেন, কোম্পানি তেল দেয় না। ঈদের পর থেকে অর্ডার নিচ্ছে না। যে কারণে ৫ টাকা বেশি দিয়ে বাইরে থেকে কিনে আনি।

আরেক বিক্রেতা বলেন, আজ ঈদের পর প্রথম একটা কোম্পানি তেল দিয়ে গেছে। দুই লিটারের মাত্র তিন কাটন তেল। আর বলেছে, দাম বাড়ানোর আগে মাল দেবে না। নতুন রেট এলে তেল পাবেন।


আরও খবর



মেয়েকে উত্তক্তের প্রতিবাদ করায় বাবাকে হত্যা, দু'জন আটক

প্রকাশিত:সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

রাজশাহীতে স্কুল ছাত্রী (এসএসসি পরীক্ষার্থী) মেয়েকে উত্তক্তের প্রতিবাদ করায় ছাত্রীর বাবা আকরাম হোসেনকে হত্যা মামলার প্রধান দু'জন আসামী নান্টু (২৮) ও খোকন মিয়া (২৮) কে মামলা দায়েরের মাত্র ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আটক করেছে র‍্যাবের চৌকস অভিযানিক টিম। শনিবার ১৯ এপ্রিল পূর্বরাত সোয়া ৮টারদিকে নওগাঁ জেলা সদর উপজেলার রামরায়পুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করেন র‍্যাব। আটককৃত নান্টু রাজশাহীর তালাইমারী শহিদ মিনার এলাকার কালু মিয়ার ছেলে ও তার সহযোগী খোকন মিয়া একই এলাকার মৃত আঃ সাত্তারের ছেলে।

এজাহার সুত্রে জানা যায়, আকরাম হোসেন (৫২) পেশায় একজন বাস ড্রাইভার। তার মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী।

ঘটনার দিন বিকাল সারে ৪ টারদিকে তার মেয়ে প্রাইভেট পড়া শেষ করে তালাইমারী শহিদ মিনার এলাকায় অটোরিকশা থেকে নেমে বাসায় যাওয়ার পথে আসামী নান্টু ও তার সহযোগীরা তাকে উত্তক্ত করে। ঘটনাটি বাসায় গিয়ে সে তার বাবাকে জানালে ছাত্রীর বাবা মেয়েকে উত্তক্ত করার বিষয়টি নান্টুর বাবাকে জানায়। এতে নান্টু আরও ক্ষীপ্ত হয়ে গত ১৬ এপ্রিল রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে তালাইমারী শহিদ মিনার এলাকায় ছাত্রীর ভাই ইমাম হোসেন অনন্তকে

নান্টু ও তার সহযোগীরা পথরোধ করে এলোপাথারী মারধর করতে থাকলে তার ডাক-চিৎকারে শুনে ঘটনাস্থলে ছাত্রীর বাবা আকরাম হোসেন এগিয়ে গেলে তাকেও মারধর করার এক পর্যায়ে মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করলে রক্তাক্ত জখম হয়। এসময় এলাকাবাসীর সহায়তায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক আকরাম হোসেনকে মৃত ঘোষনা করেন। এঘটনায় নিহতের ছেলে বাদী হয়ে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় ৭ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ৩-৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের  করেন। এরপর র‌্যাব-৫, রাজশাহী সদর কোম্পানীর একটি আভিযানিক দল লে. কর্ণেল মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ এর নির্দেশনায় অভিযান চালিয়ে তাদের দু'জনকে আটক করেন। র‍্যাব আরও জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা উক্ত ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।তাদেরকে রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে।


আরও খবর



ঈদের ছুটিতেও ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০১ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

ঈদের ছুটিতে লাখ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন। ফলে এখন অনেকটাই জনশূন্য রাজধানী শহরটি। তবে এত মানুষের চলাচল কমে গেলেও বিশ্বের দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় আজ ঢাকা রয়েছে চার নম্বরে। বায়ুমানের স্কোর ১৫৩, যা অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান বিষয় ওয়েবসাইট আইকিউএয়ারে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

বায়ুদূষণের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে নেপালের কাঠমান্ডু (স্কোর ২৫৬)। অর্থাৎ সেখানকার বাতাস খুবই অস্বাস্থ্যকর। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি। এই শহরটির দূষণ স্কোর ১৯২ অর্থাৎ এই শহরের বায়ু অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রয়েছে। তৃতীয় তালিকায় রয়েছে থাইল্যান্ডের চিয়ান মাই (স্কোর ১৬৪) যা অস্বাস্থ্যকর। তালিকায় পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ভিয়েতনামের হ্যানয় (১৫১), চীনের উহান (১৪৭)।

একটি শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, তার লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক জানিয়ে থাকে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। প্রতিষ্ঠানটির মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে বায়ুর মান ভালো বলে বিবেচিত হয়।

আর ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি বা সহনীয় ধরা হয় বায়ুর মান। সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়। এ ছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে তা দুর্যোগপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।


আরও খবর

চেনা রূপে ফিরেছে রাজধানী

রবিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৫




নওগাঁয় জুয়ার আসর থেকে মদ্যপ অবস্থায় ৪ জন আটক

প্রকাশিত:বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁ জেলা সদর উপজেলায় বৈশাখী মেলা থেকে সেনা বাহিনীর অভিযানে জুয়ার আসর থেকে মদ্যপ অবস্থায় ৪ জন হাতেনাতে আটক।বুধবার পূর্বরাত সাড়ে ১২টারদিকে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃত ৪ জন হলেন, নওগাঁ সদর থানাধীন বরুনকান্দি গ্রামের খাদিমুলের ছেলে মোহাম্মদ মিজানুর রহমান (৫৪), লকাইজানী গ্রামের মৃত খুদা বক্সের ছেলে পিন্টু (৪৪), একই গ্রামের পিন্টু হোসেনের ছেলে তামিম (১৮) ও কুসাডাঙ্গা গ্রামের মৃত চেরু মন্ডলের ছেলে কলিম উদ্দিন (৬৮)।

জানা যায়, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে নওগাঁ সদর উপজেলার লখাই জানি বাজারের পাশে বৈশাখী মেলা চলছিল। এ মেলায় প্রশাসনের অগোচরে নিসিদ্ধ জুয়া খেলা চলচ্ছিল। ডিজি এফ আইয়ের এমন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নওগাঁ সেনাবাহিনীর ক্যাম্প থেকে মেলায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় সেনাবাহিনীর সদস্যদের দেখে বেশ কয়েক জন পালিয়ে গেলেও ৪ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়। এ সময় জুয়া খেলার সামগ্রীসহ তাদেরকে মদ্যপান অবস্থায় আটক করে নওগাঁ সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এবিষয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের আটক করে থানায় সোপার্দ করেছেন তবে কেউ বাদী না হওয়ায় আটককৃতদের ৫৪ ধারায় আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আরও খবর



চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসা নয়, চলছে পরীক্ষার প্রহসন

প্রকাশিত:শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

আমি পপি আক্তার—একজন সংবাদকর্মী। কিন্তু আজ আমি কোনো চায়ের কাপ হাতে টেবিলে বসে রিপোর্ট লিখছি না। লিখছি বিছানায় শুয়ে, ব্যথায় কাতর শরীর নিয়ে। জায়গাটা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। আজ আমি রোগী। আমার কণ্ঠে আজ হাজারো রোগীর আর্তনাদ, যাদের চিকিৎসা না পেয়ে চোখে জল, মনে ক্ষোভ, মুখে নীরবতা। গত এক সপ্তাহ ধরে আমি গুরুতর অসুস্থ। ভর্তি হয়েছি চট্টগ্রাম মেডিকেলের জরুরি বিভাগে। প্রথমদিন সাংবাদিক ভাই মো. কামাল উদ্দিন হাসপাতালে এসে আমাকে দেখে সেবা নিশ্চিত করার অনুরোধ করেন। কর্তৃপক্ষ তার উপস্থিতিতে কিছুটা সাড়া দেয়, কয়েকজন ডাক্তার-প্রফেসরও আমাকে পরীক্ষা করেন। কিন্তু তারপর? নীরবতা, উপেক্ষা, উদাসীনতা। আজও আমার চিকিৎসা সুনির্দিষ্ট নয়। এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে ঠেলাঠেলি, এক পরীক্ষা থেকে আরেক পরীক্ষায় পিষে যাওয়া আমার মতো শত শত রোগীর গল্প একই। পরীক্ষাই যেন এখানে একমাত্র চিকিৎসা। শুধু টেস্ট, আর টেস্ট। ওষুধ নেই, পরিকল্পনা নেই, করুণা নেই।

পেশার মেশিনও নেই, খাবার আসে বিকেলে- বলেন তো, একটা সরকারি হাসপাতালের ওয়ার্ডে যদি পেশার মেশিনই না থাকে, তাহলে উচ্চ রক্তচাপের রোগী কিভাবে বাঁচবে? পেশার মাপতে বললে আয়ারা বলেন—মেশিন নাই! গায়ে জ্বর, মাথা ঘোরে, বুক ধড়ফড় করে—তবুও সাড়া নেই। দুপুরের খাবার আসে ৩টা বা ৪টায়। সেই খাবারও রোগীর নয়—বিনাভাবে অভিভাবক খায়, কারণ রোগী এতক্ষণে অজ্ঞান বা নি:শেষ।

নারী ওয়ার্ডে পুরুষদের অনুপ্রবেশ, রাতে ঘুমায় পাশেই! সবচেয়ে লজ্জাজনক ঘটনা, মহিলা ওয়ার্ডেও রক্ষা নেই। পুরুষরা দিনের বেলায় যেমন ঘোরাঘুরি করে, রাতেও এসে পাশেই শুয়ে পড়ে। নারীর ব্যক্তিগত সুরক্ষা এখানে এক ভিন্নরকম ব্যঙ্গ। হাসপাতালের নিরাপত্তা যেন নিছক কল্পকাহিনি। বাথরুমে আলো নেই, কল ভাঙা, পানি পড়ে না। নারী ওয়াশরুমেও পুরুষ! ওয়াশরুমের অবস্থা বর্ণনাতীত। একটামাত্র আলো, তাও কাঁপছে। পানির কল সব ভাঙা। গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসে। নারী ওয়াশরুমেও পুরুষের অবাধ প্রবেশ, যেন নারীত্বের লজ্জা কেউ দেখে না, বোঝেও না।ডাক্তাররা থাকেন সকালে—তারপর নিখোঁজ- সকাল বেলা হয়তো দু’একজন ডাক্তার আসেন। কিন্তু তারপর গোটা দিন ওয়ার্ড যেন জনশূন্য। রোগী অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকে, জ্বর গায়ে উঠে, ব্যথায় কাতরায়—কিন্তু চিকিৎসা নেই, চিকিৎসক নেই, কেবল দয়া-ভিক্ষার ভরসা। টেস্ট করতে হয় টাকার বিনিময়ে, সিরিয়াল ভেঙে, তাও চিকিৎসা মেলে না

আল্ট্রাসোনোগ্রাফি, এক্স-রে—প্রতিটি পরীক্ষার পেছনে টাকা গুনতে হয়। সিরিয়ালের তোয়াক্কা না করে ডাক্তাররা বলেন, ‘ইমারজেন্সি’। দেরি হলে ফাইল ফেলে দেন। একজন রোগী তো বলেই ফেললেন—"সিস্টেম নাই, আল্লাহর উপর ভরসা রাখেন!" এই কি আমাদের রাষ্ট্রের স্বাস্থ্যব্যবস্থা? আমি লিখছি, কারণ আমি সাংবাদিক। কিন্তু আমার পাশের বেডে যে নারীটি শুয়ে আছেন, যিনি চট্টগ্রামের কোনো প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলশিক্ষিকা, তার কণ্ঠ নেই, কলম নেই। তার চিৎকার কে শুনবে? আজ আমি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

মাননীয় উপদেষ্টা Asif Mahmud Shojib Bhuyain স্যার, আপনি দেখুন এই হাসপাতালে কী ভয়াবহ পরিস্থিতি চলছে।

চিকিৎসা নয়, এখানে মানুষ শুধু প্রহসনের শিকার হচ্ছে। এখানে শুয়ে থেকে আমি দেখেছি, কিভাবে মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে মরে যাচ্ছে, আর কর্তৃপক্ষ নীরব দর্শক।

এই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কি মৃত্যুর এক কারখানা হয়ে যাচ্ছে?

একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে, একজন নারী হিসেবে, একজন রোগী হিসেবে এবং একজন সংবাদকর্মী হিসেবে আমি অনুরোধ জানাই—এই অব্যবস্থাপনার পরিবর্তন হোক। মানুষ যেন অন্তত সরকারি হাসপাতালে এসে সুস্থ হওয়ার আশায় মরতে না হয়। আমি চাই, এই লিখন একটি জবাব পাক। শুধু আমার জন্য নয়, আমার মতো হাজারো কণ্ঠহীন রোগীর জন্য। চট্টগ্রাম মেডিকেলের প্রতিটি অসংগতি যেন আজ সরকারের চোখে পড়ে।


আরও খবর