Logo
শিরোনাম

জামায়াতে ইসলামী জুলুম করবে না

প্রকাশিত:শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

বিচারের নামে অন্য কাউকে জুলুম করা হোক, তা চাই না উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গত ১৬ বছর ধরে চালানো অত্যাচারের রেশ এখনো রয়ে গেছে। মাঝেমধ্যে নতুন নতুন সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। আমাদের ওপর জুলুম করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের নবনির্বাচিত আমিরের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী কারো ওপর কোনো ধরনের জুলুম করবে না। সবরকম প্রতিহিংসা থেকে বিরত থাকবে। তবে যারা হত্যার মতো অপরাধ করেছে, তাদের অবশ্যই বিচার করতে হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষ কষ্ট রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতেই হবে। সরকার উদ্যোগ নিলে জনগণ পাশে থেকে সাহায্য করবে বলেও জানান তিনি।

ভিন্ন দল-মত থাকলেও জাতীয় ইস্যুতে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা বিচারের নামে কারো ওপর জুলুম চাই না। বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত ও মানবিক সমাজ গড়তে যুবকদের হাতে দেশ তুলে দিতে চাই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য সিন্ডিকেটকে দায়ী করে আমিরে জামায়াত বলেন, সব ধরনের সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। এ সময় শ্রমিক আন্দোলনের নামে কেউ যাতে বাড়াবাড়ি না করে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।


আরও খবর



সমাজতন্ত্রের যখন অধপতন হয় তখন গণতন্ত্র হয়: অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান

প্রকাশিত:শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি :

টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) তে আজ শনিবার সকাল ১১ টায় "গনতন্ত্র, সার্বভৌমত্ব ও মওলানা ভাসানী" শীর্ষক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ এর অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাভাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ, প্রবন্ধ উপস্থাপক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মওলানা ভাসানী গবেষক সৈয়দ ইরফানুল বারী, স্বাগত বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেমিনার উপকমিটির আহবায়ক ও আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. সাজজাদ ওয়াহিদসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, চেয়ারম্যান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।


প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন,

সমাজতন্ত্রের যিনি গড়ে তুলার স্বপ্ন দেখেন তিনি গণতন্ত্র আন্দোলন গড়ে তুলতে পারে না। কিন্তু মওলানা ভাসানী ছিলেন এক উজ্জ্বল এবং ব্যতিক্রমী মানুষ। গনতন্ত্র আর সমাজতন্ত্র অনেকের ধারণা আছে আবার অনেকের  ভুল ধারণা আছে।  একজন শাসকের শাসন ব্যবস্থা যদি ভালো  হয় সেটা রাজশাসন আর খারাপ হলে স্বৈরাশাসন। এরিস্টটলের মতে অনেক জন মিলে যখন শাসন করে তাকে সমাজতন্ত্র বলে। মাওলানা ভাসানী সমাজতন্ত্র জন্য কাজ করেছেন এবং গণতন্ত্র জন্য আন্দোলন করেছেন। গনতন্ত্র মানে শুধু পাচ বছর পর পর ভোট দেওয়া না।  গনতন্ত্র মানে আপনার ইচ্ছা মত সকল কাজ করতে পারা,  সকল মৌলিক অধিকার সমাজ তাকে দিবে সেটাই গণতন্ত্র। সমাজতন্ত্রের যখন অধপতন হয় তখন গণতন্ত্র হয়।


 মওলানা ভাসানী ইসলামের মর্মটা বুজেছিলেন।  ধর্মের একটা মর্ম আছে, সেটা হচ্ছে ন্যায়বিচার। এই ন্যায়বিচারকে আপনি গণতন্ত্র বললেও বলতে পারেন, সমাজতন্ত্র বললেও বলতে পারেন। মওলানা ভাসানী শুধু রাজনীতিবিদ ছিলেন না, তিনি বাস্তবজ্ঞান দার্শনিকও ছিলেন। আমি মনে করি , মওলানা ভাসানীর পায়ের নখ থেকে মাথার চুল পর্যন্ত রাজনীতিবিদ ছিলেন। রাজনীতি মানে গোটা রাজ্যবাপী যে নীতি। নীতির রাজা হিসেবে রাজনীতি। 

উল্লেখ্য, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮ তম ওফাত বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে "গণতন্ত্র, সার্বভৌমত্ব ও মওলানা ভাসানী " শীর্ষক আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।


আরও খবর



এখন দরকার নানারকম শীতের পোশাক

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১২ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

শীতের পোশাক অবশ্যই ফ্যাশনেবল এবং আরামদায়ক হতে হবে। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজ ও শপিংমলে পাওয়া যাচ্ছে নানা ডিজাইনের শীতের পোশাক

শীতের পোশাক সুতি কাপড়ের, ফ্লানেল কাপড়ের হলে শিশুরা পরে খুব আরাম পায়। তাই তাদের শীতের পোশাকের নিচে বিশেষ করে উলের পোশাকের নিচে পাতলা সুতি কাপড়ের পোশাক পরিয়ে দেওয়া উচিত। তবে হালকা শীতে শিশুকে খুব মোটা কিংবা খুব বেশি গরম কাপড় পরানো উচিত নয়। বেশি গরম কাপড় পরালে গরমে ঘেমে ঠাণ্ডা লাগার আশঙ্কা থাকে

শপিংমলে পাবেন নানা রং, নকশা আর মোটিফের শীতের পোশাক। মেয়েশিশুর শীতের পোশাকে রয়েছে দারুণ সব ডিজাইনের ছোঁয়া। ফুল, লতাপাতা, কার্টুন চরিত্র, নানা উপকরণ ব্যবহার করে শিশুদের শীতের পোশাকগুলো করা হয়েছে আকর্ষণীয়। তবে এসব পোশাকের বোতাম এবং আলাদাভাবে বসানো উপকরণে শিশুদের নরম ত্বকে ব্যথা পাচ্ছে কি না সেদিকটিও খেয়াল রাখতে হবে। শিশুরা রঙিন পোশাক পছন্দ করে। শিশুদের জন্য পাবেন ডেনিমের বর্ণিল রঙের প্যান্ট ও হুডি।  হুডি ছাড়া রেকসিন, চামড়ার লং জ্যাকেটও আছে। তবে স্কুলে যাওয়ার জন্য শিশুর শীতের পোশাক কিনলে তা খুব বেশি কালারফুল হওয়া উচিত নয়। সে ক্ষেত্রে কালো, নীল, সাদা রংগুলো বেছে নিতে পারেন। কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য রঙিন আর নকশা করা শীতের পোশাক কিনতে পারেন।

রকম-সকম

বিভিন্ন মার্কেটে এবার শীতের পোশাকে জিন্সের ফ্রক, স্কার্ট, উলের সেট, বেবিকিপার, রেকসিনের জ্যাকেট, ওভারকোট, কার্ডিগান, উল ও ক্যাশমেয়ার বেশি চোখে পড়ছে। এ ছাড়া শিশুদের বৈচিত্র্যময় মাফলার, নতুন ডিজাইনের কানটুপি এসেছে । ছোট ছোট মাফলারে নানারকম ঝুল বেশ আকর্ষণীয় করে তুলেছে পোশাকগুলোকে। সুতির স্কার্ফও আরামদায়ক ও আকর্ষণীয় শিশুর জন্য। এ ছাড়া আছে ডোরেমন, স্পাইডারম্যান, ব্যাটম্যান, হ্যারি পটার, আয়রনম্যান, পোকেমন কার্টুনের ডিজাইন করা আকর্ষণীয় শীত পোশাক।

আছে হুডি

আজকাল বাজারে শিশুদের জন্যও হুডিযুক্ত পোশাক পাওয়া যায়। তাই শিশুদেরও এমন পোশাক কিনে দিতে পারেন। বিশেষ করে যে শিশুরা আলাদা টুপি ব্যবহার করতে চায় না তাদের জন্য এমন পোশাকই সেরা

সাহেবি পোশাক

 বাজারে বিক্রি হচ্ছে স্যুট-কোট । এসবের সঙ্গে টাইও কিনতে পাবেন। মেয়ে শিশুদের জন্য পাবেন ব্লেজার

শার্ট ও জ্যাকেট

 শীতের বাজারে বিভিন্ন বয়সের জন্য রয়েছে শার্ট ও জ্যাকেট। ফুলহাতা শার্ট, সোয়েট শার্ট কিংবা পোলো শার্ট যেমন পাবেন আবার পাবেন জিনসের তৈরি জ্যাকেট।

সোয়েটার

এ সময় বিভিন্ন ধরনের সোয়েটার পাবেন। বিভিন্ন রঙের যেমন- লাল, বেগুনি, কমলা, গোলাপি সোয়েটার পাবেন ওদের জন্য

লেগিংস ও ট্রাউজার : শীতে লেগিংসও ট্রাউজার কিনে দিতে পারেন। বাজারে ফুল দিয়ে ডিজাইন করা রঙিন লেগিংস পাওয়া যাচ্ছে

টুপি এবং মোজা : বাজারে এখন রংবেরঙের টুপি আর মোজা পাওয়া যাচ্ছে। চাইলে এ সময়ে বাজার থেকে পা-ঢাকা জুতাও কিনে দিতে পারেন

কোথায় পাবেন

শীতের পোশাক কিনতে পারেন বসুন্ধরা সিটিমল, যমুনা ফিউচার পার্ক, রাপা প্লাজা, সানরাইজ প্লাজা, আড়ং, ইস্টার্ন প্লাজা, পলওয়েল মার্কেট, গুলশান পিংক সিটি, কর্ণফুলী গার্ডেনসহ বিভিন্ন শপিংমলে। তবে একটু কম দামে ভালো মানের শীতের পোশাক কিনতে চাইলে যেতে

পাবেন আজিজ সুপার মার্কেট, মৌচাক মার্কেট, ঢাকা কলেজের বিপরীতে, নিউমার্কেট, গাউছিয়াসহ বিভিন্ন মার্কেটে। গুলশান-১, নিকেতনের ‌বেবি ব্লু অর পিংক বার্ড দোকানটিতে পাবেন শিশুদের মোজা আর পা ঢাকা জুতার খোঁজ।

দরদাম :  সোয়েটার পাওয়া যাবে ২০০ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে, রেকসিনের জ্যাকেট পাওয়া যাবে ৮০০ -২০০০ টাকার মধ্যে, চামড়ার জ্যাকেট ১৫০০-৪০০০ টাকা, জিন্সের জ্যাকেট পাওয়া যাবে ৪০০ - ১৫০০ টাকার মধ্যে, কানটুপি ১০০-৪০০ টাকা, মাফলার ৬০-২০০ টাকা, হুডি জ্যাকেট ২০০-১৫০০ টাকা, হাত ও পা মাজার সটের দাম পড়বে ১৫০ -৩০০ টাকার মধ্যে, ডেনিমের প্যান্ট ৩০০ -১০০০ টাকার মধ্যে


আরও খবর

শীতে বিয়ের কনের স্কিন কেয়ার রুটিন

মঙ্গলবার ১২ নভেম্বর ২০২৪

নখ সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর রাখার উপায়

মঙ্গলবার ১২ নভেম্বর ২০২৪




শুল্ক কমলেও কমেনি পণ্যের দাম

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৫ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

নিত্যপণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক-কর কমানোর পরও বাজারে পণ্যের দাম সহনীয় না হওয়ায় আফসোসের কথা জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির বড় অভাব রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, অনেক কর ও শুল্ক কমিয়েছি। তারপরও দাম কমেনি, এটি আমার আফসোস। ডিমের দাম কমছে না, পেঁয়াজের দাম কমছে না।

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, প্রাইভেট কমার্শিয়াল ব্যাংকসহ ১৭টি ক্যাটাগরিতে ৪৬টি সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠানকে ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস্ অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) বেস্ট করপোরেট অ্যাওয়ার্ড-২০২৩ প্রদান উপলক্ষে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অর্থনীতিতে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ আছে। সেগুলো ঠিক করার উপায়ও আছে। তিনি ব্যবসায়ীদের সরকারের ওপর ভরসা রাখার আহ্বান জানান।

শুধু শুল্ক-কর কমিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়—এমন ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, সাপ্লাই চেইনের অনেক দিক আছে। ব্যাড সিস্টেম আছে। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের ওপর ভরসা রাখুন। আমরা আপনাদের সবরকম সাহায্য করব। আমরা অনেক ট্যাক্স কমিয়েছি।



আরও খবর

দাম বাড়ল সয়াবিন তেলের

সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪




সংস্কার শেষে নির্বাচন কোনো যৌক্তিক কথা নয়

প্রকাশিত:বুধবার ২০ নভেম্বর ২০24 | হালনাগাদ:রবিবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

সংস্কার শেষে নির্বাচন কোনো যৌক্তিক কথা নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান। তিনি বলেন, ‘সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া এটি কখনো থেমে থাকে না। শুধুমাত্র সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন ততটুকু করে নির্বাচন দেওয়া উচিত। সংস্কার শেষে নির্বাচন কোনো যৌক্তিক কথা নয়।

রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে ঢাকা বিভাগের বিএনপির নেতাদের এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রশ্ন তুলে মঈন খান বলেন, সংস্কারের রূপরেখা দুই বছর আগেই ঘোষণা করেছে বিএনপি। আজকে যারা সংস্কারের কথা বলছেন তারা আগের আন্দোলন সংগ্রামে সময় কোথায় ছিলেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের কর্তৃত্ব একক কোনো দলের নয় এ বিপ্লবে সবার সমর্থন ছিল।

মঈন খান বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে পরিণত হয়েছিল। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।


আরও খবর



নির্মাণ মৌসুমেও কমছে রড-সিমেন্টের দাম

প্রকাশিত:শনিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

চলতি বছরের শুরুর দিকে অবকাঠামো নির্মাণের প্রধান পণ্য রড-সিমেন্টের দাম হঠাৎ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। গত আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ডলার ব্যাংকে তারল্য সংকটের পাশাপাশি ঋণপত্র (এলসি) খুলতে অনীহাসহ বিভিন্ন কারণে এলসি মার্জিন সুবিধা কমে যায়। এতে ব্যাহত হয় আমদানি বাণিজ্য। এদিকে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে সরবরাহ উৎপাদন। তবে পর্যাপ্ত আমদানি সত্ত্বেও চাহিদা না থাকায় দাম নিম্নমুখী রয়েছে। চলতি নির্মাণ মৌসুমে সংকট কাটিয়ে বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরার আশা থাকলেও সরকারি নির্মাণ প্রকল্পে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় সংকটে পড়েছে ইস্পাত সিমেন্ট খাত।

গত দুই সপ্তাহে দেশের বাজারে রডের দাম টনপ্রতি - হাজার টাকা কমেছে। সর্বশেষ গত দুই দিনে কমেছে প্রায় হাজার টাকা। রডের পাশাপাশি সিমেন্টের দামও বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) ১০-১৫ টাকা কমেছে। চাহিদা না বাড়লে রড-সিমেন্টের দাম আরো কমবে বলে আশঙ্কা করছেন মিল মালিকরা।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের অবকাঠামো খাত সবচেয়ে নাজুক সময় পার করছে। চলমান প্রকল্পের কাজে ধীরগতির পাশাপাশি বিগত ছয় মাসে নতুন কোনো মেগা প্রকল্পের অনুমোদন হয়নি। আগের প্রকল্পগুলোয় বিক্রি করা পণ্যের দামও মেটাতে পারছে না অনেক প্রতিষ্ঠান। আগস্ট-পরবর্তী প্রেক্ষাপটে অনেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের খোঁজ মিলছে না। আবার সরকারি প্রকল্পের বিল আটকে থাকায় পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বকেয়া পরিশোধ করতে পারছেন না অনেকে।

এদিকে গত এক বছর ডলারের মূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধির কারণে বাড়তি দামে কাঁচামাল সংগ্রহ করতে হচ্ছে। অথচ দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে কম দামে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন উৎপাদকরা। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত ইস্পাত শিল্পকে নিয়ে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া না হলে এর সঙ্গে যুক্ত বিনিয়োগকারীরা বড় ধরনের সংকটে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানতে চাইলে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মেসার্স ডালিয়া ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. সাহাদাত হোসাইন বলেন, ‘শীত মৌসুমে মূল্যবৃদ্ধির কথা থাকলেও গত ১০ দিনের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের রডের দাম টনপ্রতি - হাজার টাকা পর্যন্ত কমেছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার টনপ্রতি দাম কমেছে হাজার টাকা। মিল মালিকরা সরবরাহ বাড়ানোর কারণে মিলগেট থেকে সংগ্রহ মূল্য টনপ্রতি হাজার টাকা কমিয়েছেন।দাম আরো কমে যাওয়ার আশঙ্কায় অনেক ব্যবসায়ী সংগ্রহ মজুদ কমিয়ে দিচ্ছেন। এতে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন তিনি।

জানা গেছে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশে নির্মাণ খাতে ধস নেমেছে। আওয়ামী লীগসংশ্লিষ্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম একেবারে স্তিমিত হয়ে গেছে। মিল-কারখানাগুলো কোনো রকমে উৎপাদন চালু রাখলেও নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ কার্যত বন্ধ রয়েছে। ব্যক্তি পর্যায়ে ভবন নির্মাণে জড়িত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজেও মন্দা ভাব দেখা দিয়েছে। তাছাড়া বিগত এক বছর দেশে সরকারি বড় অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন কম থাকায় রড-সিমেন্টের বাজারে মন্দা ভাব দেখা দিয়েছে। আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বর্তমান সরকার বেছে বেছে সরকারি প্রকল্পের অনুমোদন দিচ্ছে।

বিএসআরএম স্টিল লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন সেনগুপ্ত প্রসঙ্গে বলেন, ‘দেশের ইস্পাত খাত সংকটময় সময় পার করছে। বৃহৎ উৎপাদন সক্ষমতার প্লান্ট স্থাপনে বিশাল বিনিয়োগ করলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে উৎপাদন কমাতে বাধ্য হচ্ছে কারখানাগুলো। এতে পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার চাহিদা না থাকায় কম দামে পণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে। অবস্থা থেকে দ্রুত উত্তরণ ঘটাতে না পারলে ইস্পাত খাতের উদ্যোক্তারা বড় ধরনের লোকসানের মধ্যে পড়বেন বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।

সিমেন্ট খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রেড ওয়ানভুক্ত কোম্পানিগুলোর সরবরাহ করা সিমেন্টের বস্তাপ্রতি দাম ছিল ৫০০ টাকা। তবে গত কয়েক দিন সিমেন্ট ক্রয়ে ডিলারদের বিশেষ ছাড় দিচ্ছে উৎপাদকরা। যার কারণে বস্তাপ্রতি দাম ১০-১৫ টাকা কমে লেনদেন করতে পারছেন পাইকারি খুচরা বিক্রেতারা। তবে দেশে উৎপাদিত অন্যান্য কোম্পানির সিমেন্ট ৪৬০-৪৭০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। চাহিদা কম থাকায় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে দাম আরো নিম্নমুখী হতে পারে বলেও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

চট্টগ্রামভিত্তিক ডায়মন্ড সিমেন্টের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হাকিম আলী বলেন, ‘সিমেন্ট খাতের উৎপাদন সরকারি নির্মাণ প্রকল্পের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। দেশের বিভিন্ন মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ। যেসব প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে, সেগুলো গত আগস্টের পর থেকে বন্ধ রয়েছে। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে সিমেন্ট খাতে।বিশ্ববাজার থেকে আমদানি, ডলার সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা কেটে গেলেও ব্যবহারজনিত চাহিদা বৃদ্ধি না পেলে খাত ঘুরে দাঁড়াতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

উৎপাদকরা বলছেন, এতদিন ঋণপত্র (এলসি) খুলতে ব্যাংকে ব্যাংকে ধরনা দিতে হতো। ডলার সংকটে অনেকে বাধ্য হয়ে ছোট আকারের এলসি খুলতেন। বর্তমানে চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত ডলার সরবরাহের কারণে পর্যাপ্ত আমদানি হচ্ছে। যার কারণে দেশে রড-সিমেন্ট উৎপাদনে কাঁচামালের সংকট নেই। বরং বাড়তি আমদানির কারণে স্ক্র্যাপের বাজারও কমে গেছে। উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বাড়লেও চাহিদা কম থাকায় দামে প্রভাব পড়েছে।

বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যানুসারে, দেশের ইস্পাত কোম্পানিগুলোর রড উৎপাদনে সক্ষমতা কোটি ২০ লাখ টন। বছরে সর্বোচ্চ ৬৫ লাখ টনের চাহিদা রয়েছে। যার মধ্যে ৬০ শতাংশই ব্যবহার হয় সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পে। বাকি ৪০ শতাংশ বেসরকারি উদ্যোক্তা ব্যক্তিগত অবকাঠামো নির্মাণে ব্যবহার হয়। বর্তমানে চাহিদা কমে ৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেছে। সবচেয়ে বেশি চাহিদা কমেছে সরকারি প্রকল্পে। নির্মাণকাজে ধীরগতির কারণে রডের চাহিদা ২০ শতাংশেরও নিচে নেমে আসায় দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে।

বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রানী রি-রোলিং স্টিল মিলসের নির্বাহী পরিচালক সুমন চৌধুরী বলেন, ‘দেশে ইস্পাত পণ্যের প্রধান ক্রেতা সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাসহ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে সরকারি প্রকল্পের অনুমোদন কার্যত বন্ধ রয়েছে। চলমান প্রকল্পগুলোর কাজের গতিও শূন্যের কোঠায়। যার ফলে রডের বাজারে ক্রেতা চাহিদা ৫০ শতাংশেরও বেশি কমেছে। অবকাঠামো নির্মাণ খাতের উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকার চেষ্টা করছে। উদ্যোক্তারা বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগের পরও সংকটময় পরিস্থিতিতে বিল পাচ্ছেন না। ফলে নানামুখী সংকটের কবলে পড়েছে দেশের ইস্পাত সিমেন্ট খাত।

 


আরও খবর