Logo
শিরোনাম

জার্মানির অপরচুনিটি কার্ড ভিসা: একটি সংক্ষিপ্ত গাইড

প্রকাশিত:রবিবার ০৬ অক্টোবর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

ফরহাদুজ্জামান ভূইয়া :

✒️ জার্মানি দক্ষ কর্মী আনার জন্য নতুন "অপরচুনিটি কার্ড" বা Chancenkarte চালু করেছে, যা প্রবাসীদের সহজে কাজ খুঁজে পেতে এবং সেখানে বসবাস করার সুযোগ দিচ্ছে। এটি মূলত একটি পয়েন্ট-ভিত্তিক সিস্টেমের উপর ভিত্তি করে। দক্ষ পেশাজীবী, যেমন—প্রোগ্রামার, ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, আইটি বিশেষজ্ঞ ইত্যাদি পেশার লোকদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ।

💧 পয়েন্ট সিস্টেম:

আপনার শর্ত অনুযায়ী ৬ পয়েন্ট অর্জন করতে হবে, যা নিম্নলিখিত ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করে:

1. শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি বা পেশাগত প্রশিক্ষণ।

2. কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা: গত ৭ বছরে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে ৩ পয়েন্ট, ২ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে ২ পয়েন্ট।

3. ভাষাগত দক্ষতা: B2 স্তরের জার্মান জানলে ৩ পয়েন্ট, B1 স্তর জানলে ২ পয়েন্ট, A2 স্তর জানলে ১ পয়েন্ট।

4. বয়স: ৩৫ বছরের কম বয়স হলে ২ পয়েন্ট, ৪০ বছরের কম হলে ১ পয়েন্ট।

5. অতিরিক্ত পয়েন্ট: জার্মানিতে ৬ মাস থাকা থাকলে, বা সঙ্গী সহ আবেদন করলে ১ অতিরিক্ত পয়েন্ট।

💧 ভিসার বৈশিষ্ট্য:

- এটি প্রাথমিকভাবে ১ বছরের জন্য বৈধ থাকে এবং ২ বছর পর্যন্ত বাড়ানো যায়।

- চাকরি খুঁজতে গেলে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দেখাতে হবে, অর্থাৎ বছরে প্রায় €১২,৩২৪ ব্লকড অ্যাকাউন্টে রাখতে হবে।

- চাকরি খোঁজার সময়ে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত পার্ট-টাইম কাজের সুযোগ আছে।  

💧 চাকরির সুযোগ ও সীমাবদ্ধতা:

অপরচুনিটি কার্ড আপনাকে সরাসরি জার্মানিতে প্রবেশ করে চাকরি খোঁজার সুযোগ দেবে। তবে চাকরি পাওয়ার পরই আপনি দীর্ঘমেয়াদী বসবাসের অনুমতি পাবেন। 

💧 যে কাজের জন্য উপযুক্ত:

ডেটা সায়েন্স, আইটি, প্রকৌশল, চিকিৎসা ও গবেষণা ইত্যাদি উচ্চ চাহিদা সম্পন্ন ক্ষেত্রগুলিতে দক্ষ পেশাজীবীদের জন্য এটি বিশেষভাবে কার্যকর। তবে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হবে, যেমন—যোগ্যতা ও পেশাগত অভিজ্ঞতা।

এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে, এখানে দেখুন:

- WEPSA https://www.wepsa.de

- Talents2Germany https://www.talents2germany.de

- Handbook Germany https://www.handbookgermany.de

এটি বিশেষ করে দক্ষ কর্মীদের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ যারা জার্মানিতে কাজ এবং ভবিষ্যৎ গড়তে ইচ্ছুক।


আরও খবর



ড. ইউনূসের ভিশনের দিকে তাকিয়ে যুক্তরাজ্য

প্রকাশিত:রবিবার ১৭ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ যাত্রায় যুক্তরাজ্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভিশনের দিকে তাকিয়ে আছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরবিষয়ক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট।

রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।

যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ যাত্রায় অন্তর্বর্তী সরকার কী ধরনের সহায়তা চায়, সেই অনুযায়ী পরবর্তী পর্যায়ে বাংলাদেশের জনগণকে সমর্থন করার চেষ্টা করবে যুক্তরাজ্য।

রাজনৈতিক সমঝোতার বিষয়ে ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেন, প্রফেসর ইউনূস বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করবেন আর সেটা উন্মোচিত হওয়ার আশা রাখছি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা পৃথক কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করিনি। তবে আমরা সরকারকে সমর্থন করতে চাই। কারণ, এখন একটা ক্রান্তিকাল চলছে।

এটা বাংলাদেশে আমার দ্বিতীয় সফর জানিয়ে ক্যাথরিন বলেন, গত ১১ বছর পর ইন্দো-প্যাসিফিক মন্ত্রী হিসেবে এখানে আসতে পেরে আমি খুব খুশি। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শান্তি ও শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চায় এবং জাতীয় পুনর্মিলনকে এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আর এ বিষয়ে আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি উন্নত গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের সংকল্পকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। এ দেশের জনগণের সঙ্গে আমাদের অত্যন্ত দৃঢ় বন্ধুত্ব রয়েছে, তাই আমরা শক্তিশালী সম্পর্ক গড়তে চাই। আমরা অর্থনীতি, বাণিজ্য, নিরাপত্তা, অভিবাসন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলো নিয়ে কীভাবে একসঙ্গে কাজ করতে পারি, তা নিয়ে কথা বলেছি।


আরও খবর



উৎপাদন বাড়লেও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয় বাংলাদেশ

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

স্বাধীনতার পর থেকে উৎপাদন বেড়েছে কয়েকগুণ, তবুও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশ। বাজারে নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক দামে নাকাল অবস্থা মধ্য ও নিম্নবিত্তের।

বিশ্লেষকরা বলছেন, একদিকে কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি পুরোপুরি ব্যবহার শুরু করা যায়নি। অন্যদিকে বাজার চলে গেছে সিন্ডিকেটের কবজায়।

দেশে পণ্যের দাম একবার বাড়লে আর কমার লক্ষণ থাকে না। বিশ্বের দাম বৃদ্ধির এমন বিরল চিত্রের দেখা মিলবে বাংলাদেশে। এতে বঞ্চনার শিকার কেবল সাধারণ মানুষ। শুধু তাই নয়, সরকারি কাগজে-কলমে মূল্যস্ফীতি গত কয়েক বছরে যে হিসাব দেখানো হয়েছে, বাস্তবে তার পরিমাণ অনেক বেশি।

বিভিন্ন পরিসংখ্যান বলছে, স্বাধীনতার পর থেকে দেশের ধানের উৎপাদন বেড়েছে সাড়ে তিনগুণ, ১০ গুণ বেড়েছে গম উৎপাদন। সবজি ও মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৪ থেকে ৭ গুণ। তারপরও কেন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারছে না বাংলাদেশ?

এ বিষয়ে সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, আমাদের সমসাময়িক দেশগুলো যেভাবে কৃষির উৎপাদনশীলতা বাড়িয়েছে, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনও অনেক পিছিয়ে।

বিআইআইএসএসের গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবির বলেন, আমাদের বাজারব্যবস্থা পুরোপুরি সিন্ডিকেটভিত্তিক হওয়ায় এবং তাদের ব্যাপক প্রভাব থাকার কারণে আমরা সুফল পাচ্ছি না। কৃষকরা দাম পাচ্ছেন না। তারা ঋণের জালে আবদ্ধ হয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে যারা কৃষি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, খাদ্যপণ্যের ব্যবসা যারা করছে তারা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে যাচ্ছেন। তারা অর্থ পাচার করছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং কারসাজিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন তারা।


আরও খবর

দাম বাড়ল সয়াবিন তেলের

সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪




মূল্যস্ফীতির অভিঘাত খাদ্যে, ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

চলতি বছরের নভেম্বরে বেড়েছে মূল্যস্ফীতি। বিশেষ করে খাদ্যপণ্যে এই মূল্যস্ফীতি হয়েছে বেশি। এর মারাত্মক অভিঘাত পড়েছে গরিবের ওপর। এতে সংসার চালাতে হিমমিশ খাচ্ছেন কম আয়ের মানুষ। এই উচ্চ দামের অভিঘাতে তাদের প্রকৃত আয় কমে গেছে। ক্রয় ক্ষমতা পেয়েছে হ্রাস। বাজার বিশ্লেষক দেশি-বিদেশি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্য-উপাত্ত যাচাই এবং অর্থনীতিবিদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ মাসে খাদ্য পণ্যে মূল্যস্ফীতি ১ দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশে যা প্রায় ১৪ শতাংশ। বাংলাদেশে পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যানুসারে, গত মাসে দেশের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। অক্টোবরে দেশের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংকোচনমূলক পদক্ষেপ ও রাজস্ব নীতির সমন্বয়ের কারণে আগামী বছরের মে-জুন মাসে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামতে পারে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

বিবিএসের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নভেম্বরে দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ। এ ছাড়া খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ। আগের মাস অক্টোবরে যা ছিল যথাক্রমে ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ ও ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। গত বছরের অর্থাৎ ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল যথাক্রমে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ ও ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ।

দেউলিয়াত্ত থেকে ফিরে আসা দ্বীপদেশ শ্রীলংকায় মূল্যস্ফীতি প্রায় তিন মাস ধরে ঋণাত্মক পর্যায়ে। কিন্তু বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্য সংকোচন না হওয়ায় মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। গত বছরের একই সময়ে দেশের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৮৯ শতাংশ। এছাড়া, নভেম্বরে মজুরির হার কিছুটা বেড়েছে ৮.১০ শতাংশ হয়েছে যা অক্টোবরে ছিল ৮.০৭ শতাংশ।

নভেম্বরে দেশের গ্রামাঞ্চলের মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৫৩ শতাংশ, অক্টোবরে যা ছিল ১১ দশমিক ২৬ ভাগ। গত বছরের একই সময়ে অর্থাৎ নভেম্বরে দেশের গ্রামাঞ্চলের মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৬২ শতাংশ। নভেম্বরে গ্রামাঞ্চলের খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে যথাক্রমে ১৩ দশমিক ৪১ ও ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। চলতি বছরের অক্টোবরে যা ছিল যথাক্রমে ১২ দশমিক ৭৫ ও ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং গত বছরের নভেম্বরে যা ছিল যথাক্রমে ১০ দশমিক ৮৬ ও ৮ শতাংশ। নভেম্বরে শহরাঞ্চলের মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশ; অক্টোবরে যা ১০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ২০২৩ সালের নভেম্বরে যা ছিল ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ। নভেম্বরে শহরাঞ্চলের খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে যথাক্রমে ১৪ দশমিক ৬৩ ও ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ। ২০২৪ সালের অক্টোবরে যা ছিল যথাক্রমে ১২ দশমিক ৫৩ ও ৯ দশমিক ০৬ শতাংশ এবং ২০২৩ সালের নভেম্বরে যা ছিল যথাক্রমে ১০ দশমিক ৫৮ ও ৮ দশমিক ১৭ শতাংশ।

দেশে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে মূল্যস্ফীতির হার দুই অঙ্কের কাছাকাছি। বিবিএসের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত দেশের গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ২২ শতাংশ। তার আগের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত দেশের গড় চলন্ত মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ।

বাজার তদারকি করা হলেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সাফল্য আসছে না। প্রতিনিয়ত অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দাম বাড়ছে। উৎপাদন ও আমদানিকারক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে একটি বড় সরবরাহ চেইন রয়েছে। সেখানেও সংকট কাজ করছে। সবমিলিয়ে দ্রুত এসব পরিস্থিতির উন্নতি না হলে মূল্যস্ফীতি টেনে ধরা যাবে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক শফিকুজ্জামান এ বিষয়ে প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতির কারণে বাজারে বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। এটাই মূল্যস্ফীতি। এতে খালি হয়েছে স্বল্প আয়ের মানুষের পকেট। তাদের প্রকৃত আয় কমেছে। এই মূল্যস্ফীতির মারাত্মক অভিঘাতে সংসারের খাবার জোগাতেই সর্বশান্ত হয়েছে বড় আয়তনের পরিবারগুলো। এই দুঃসহ অবস্থা থেকে মানুষকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। আমার সুদিনের আশা করছি।’

সর্বশেষ গত অক্টোবরে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ আর অক্টোবরে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি কমাতে সরকার কয়েক দফায় নীতি সুদহার বাড়িয়েছে। তাতে বেড়েছে ঋণ ও আমানতের সুদও।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, অনেক দিন ধরে চলা উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে আইএমএফ মিশন উদ্বেগ জানিয়েছে। আইএমএফের পরামর্শে সুদহার বাড়ানো হলে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে আবার বাড়তে শুরু করে। এর কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছেন, অনেক আগেই মুদ্রানীতি আধুনিকায়নের পরামর্শ দেওয়া হলেও যথাসময়ে তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। তাই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিনিধি দলটি দ্রুত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতি ও মুদ্রাবিনিময় হারের স্থিতিশীলতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে আইএমএফ। এ ছাড়াও ব্যাংকে বেনামে শেয়ার ধারণ বন্ধ ও খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে বিভিন্ন পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে প্রতিনিধি দল।

আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি শুরু হয় ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি। এরপর তিন কিস্তিতে সংস্থাটি থেকে প্রায় ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০২৬ সাল নাগাদ পুরো অর্থ পাওয়ার কথা রয়েছে। আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশকে প্রতিটি কিস্তি পেতে বেশ কিছু শর্ত পরিপালন করতে হচ্ছে। চতুর্থ কিস্তির জন্য গত জুনভিত্তিক দেওয়া বিভিন্ন শর্তের মধ্যে কর-রাজস্ব সংগ্রহ ছাড়া সব শর্ত পূরণ হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংকোচনমূলক পদক্ষেপ ও রাজস্ব নীতির সমন্বয়ের কারণে আগামী বছরের মে-জুনে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামতে পারে। মূল্যস্ফীতি কমলে সংকোচনমূলক ব্যবস্থা থেকে সরে আসব, তখন সুদহার কমবে। গত মে থেকে বাংলাদেশে মুদ্রানীতির সংকোচন শুরু হয়। আর বর্তমানে যে অর্থনৈতিক অবস্থা বিরাজ করছে, সে আলোকে বলতে পারি, আগামী মে-জুনে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামতে পারে। তারপর কয়েক মাসের মধ্যে তা ৬ শতাংশের নিচে নামতে পারে। সেটি হলে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি থেকে সরে আসব।

আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমার লক্ষণ দেখা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, দেশে খাদ্যবহির্ভূত (নন-ফুড) মূল্যস্ফীতি এরই মধ্যে টানা তৃতীয় মাসের মতো কমেছে। তবে খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখনো বেশি। এর কারণ এই সময়ের মধ্যে আমাদের দেশে দুটি বন্যা হয়েছে। একই সঙ্গে দীর্ঘ সময় বৃষ্টি ছিল। ফলে শীতকালীন সবজি ও অন্যান্য স্থানীয় খাদ্যপণ্য বাজারে আসতে দেরি হয়েছে। গভর্নর জানান, দেশে শ্রমিক বিক্ষোভসহ বিভিন্ন অস্থিরতার মধ্যেও রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি রয়েছে। গত চার মাসে ১০ শতাংশ রপ্তানি বেড়েছে। আর জুলাই থেকে নভেম্বরে প্রবাসী আয় ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে।


আরও খবর



অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এই মুহূর্তে সহযোগিতা করা উচিৎ

প্রকাশিত:সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি :

জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, ‘আমাদের জায়গা থেকে আমরা মনে করি অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারকে তিন, চার, পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার কথা বলছি না। আবার কেউ যদি বলে ছয় মাস, এর মতো অযৌক্তিক কোন কথা হতে পারে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ১০০ দিনে যে প্রত্যাশা ছিল, তা পূরণ হয়নি, তবে রাজনৈতিক দলগুলো সহযোগিতা করলে এই সরকারের অবস্থান আরও ভাল হতো। সকল রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এই মুহূর্তে সহযোগিতা করা উচিৎ। তারা যদি সরকারকে সহযোগিতা করে তাহলে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে। নির্বাচন দ্রুত হবে। রবিবার (১৭ নভেম্বর) রাতে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানাতে এসে সাংবাদিকদের সাথে তিনি এসব কথা বলেন।


সারজিস আলম বলেন, এই সংস্কার সিস্টেমের প্রত্যেকটি জায়গায় রাজনৈতিক দলগুলো দেশের কথা, দেশের মানুষের কথাকে প্রায়োরিটি না দিয়ে কিভাবে ব্যক্তির স্বার্থ প্রাধান্য পায়, দলীয় স্বার্থ প্রাধান্য পায়, কিভাবে নিজের দলের মানুষকে একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো যায়। এগুলো নিয়ে তারা ব্যস্ত হয়ে গেছে। বাজারে গেলে সাধারণ মানুষ চাহিদা মতো কেনা-কাটা করতে পারে না। বাজার সিন্ডিকেটগুলো হাত বদল হয়েছে।


তিনি আরও বলেন, দুই হাজার মানুষ পরিবারের সদস্যদের কথা চিন্তা না করে জীবন দিয়েছে শুধু মাত্র একটি নির্বাচনের জন্য নয়। তাহলে বিগত ১৬ বছরে সকল মানুষ এক সাথে রাজপথে নেমে যেতো। এই মানুষগুলো এক সাথে নেমেছে যখন খুনি হাসিনার করাপটেড প্রত্যেকটি সিস্টেম ধ্বংশ হয়ে গিয়েছিল। মানুষ প্রত্যেকটি জায়গায় মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছিল। সাধারণ মানুষের সেবা পেতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাচ্ছিল। মানুষকে টাকা দিতে হতো, সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি ছিল, তখন এই সামগ্রিক সিস্টেমগুলোর বিরুদ্ধে ছাত্র জনতা এক সাথে রাজ পথে নেমেছিল। ১৬ বছরে যে সমাধানটি রাজনৈতিকভাবে হওয়ার কথা ছিল, সেই খুনি হাসিনার পতন হয়েছে ছাত্র জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।


এ সময় উপস্থিত ছিলেন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নাতি মাহমুদুল হক সানু, সমন্বয়ক মো. মাহিম সরকার, টাঙ্গাইলের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আল আমিন, মো. কামরুল ইসলাম, আল আমিন সিয়াম প্রমুখ।


আরও খবর



বেতন পেলেন শ্রমিকরা, আগামীকাল খুলবে কারখানা

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৫ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

টিএনজেড গ্রুপের পোশাক শ্রমিকরা বেতনের দাবিতে টানা তিনদিন গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিলেন। এ নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল। এবার সরকারের সহায়তায় গ্রুপের পাঁচটি কারখানার তিন হাজার ৬২০ শ্রমিক এবং ১২০ জন স্টাফ বকেয়া এক মাসের বেতন পেয়েছেন। এতে খুশি শ্রমিকরা। কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছে যথারীতি শনিবার (১৬ নভেম্বর) থেকে কারখানাগুলো পুনরায় চালু হবে।

টিএনজেড অ্যাপারেলস গ্রুপের চেয়ারম্যান হেদায়তুল হক জানান, প্রথম দফায় শ্রমিকদের বকেয়া আট কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শ্রমিকদের বিকাশ অ্যাকাউন্টে এই বেতন পরিশোধ করা হয়। এর ফলে শ্রমিকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

বেতন পেয়ে কারখানার শ্রমিক রোকসানা আক্তার বলেন, আগামী রোববারের মধ্যে বেতন দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমরা বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বেতন পেয়ে গেছি। আমাদের মালিকপক্ষ কথা দিয়ে কথা রেখেছেন। আমরা সবাই খুশি।

টিএনজেড গ্রুপের চেয়ারম্যান হেদায়াতুল হক জানিয়েছেন, শনিবার থেকে কারখানাগুলো পুনরায় চালু হবে। তিনি আশা করছেন, শ্রমিকরা কাজে ফিরবেন এবং উৎপাদন শুরু করে মালিকপক্ষের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সহায়তা করবেন।

টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড, বেসিক ক্লথিং লিমিটেড ও অ্যাপারেল আর্ট লিমিটেডে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ শ্রমিকের অক্টোবর ও সেপ্টেম্বর মাসের বেতন বকেয়া ছিল। এছাড়া এক্সপো কার্টুন ও এমএনএস ইয়ার্ণ ডায়িং কারখানায় স্টাফদের বেতন ও সার্ভিস বেনিফিট বকেয়া রয়েছে।

এরপর ৯ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে টিএনজেড গ্রুপের শ্রমিকরা বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে ভয়াবহ যানজট দেখা দেয় মহাসড়কে। সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েন এবং পণ্য পরিবহন বাধাগ্রস্ত হয়। টানা তিনদিনের বিক্ষোভের পর শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম শফিকুজ্জামান ঘোষণা দেন যে, শ্রমিকদের বেতন পরিশোধে উদ্যোগ নেবে সরকার।

গত সোমবার রাতে শ্রম ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে টিএনজেড গ্রুপের ৩১ শ্রমিক প্রতিনিধি, বিজিএমইএ এবং শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সমঝোতা চুক্তি সই হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয় যে, ১৭ নভেম্বরের মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসের এবং ৩০ নভেম্বরের মধ্যে অক্টোবর মাসের বেতন পরিশোধ করা হবে।

টিএনজেড অ্যাপারেলস গ্রুপের চেয়ারম্যান হেদায়তুল হক বলেন, আমরা বড় বিনিয়োগ করেছি এবং ব্যাংকের সুদ পরিশোধে আমাদের অর্থ সংকট হয়েছে। এক্সপোর্ট বিপ্ল আপ ফান্ড থেকে শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার চেষ্টাও করেছিলাম, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি।

তিনি আরও বলেন, সরকারের সহায়তায় নির্ধারিত সময়ের আগেই গত বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের বেতন বাবদ ৮ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। শ্রমিকরা কোনো কাজ না করেই এই অর্থ পেয়েছেন। আগামী কিস্তির অর্থও তারা কাজ ছাড়াই পাবেন।

ব্যাংক লোন প্রাপ্তিতে জটিলতার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, আমরা সাড়ে ৩০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করেছি। ব্যাংক ইন্টারেস্ট বাবদ দেড়শ কোটি টাকা পরিশোধ করেছি। ব্যাংক থেকে ৮ কোটি টাকার একটি লোন অনুমোদন করানো হলেও, টাকা না পাওয়ায় শ্রমিকদের বেতন দিতে সমস্যা হয়।

হেদায়তুল হক আরও বলেন, আমাদের এক্সপোর্ট বিপ্ল আপ ফান্ড থেকে ১১-১২ কোটি টাকা তুলে শ্রমিকদের বেতন দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। আমাদের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো সহযোগিতা করলে এই সংকট হতো না। কয়েকবার তারিখ দিলেও তা রক্ষা করতে পারিনি।

শ্রম সচিব শফিকুজ্জামানের সহায়তায় শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে পদক্ষেপ নেওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। এছাড়া অতিরিক্ত সচিব সবুর হোসেন, বিজিএমইএ’র রফিকুল ইসলাম, গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীনের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান।

তিনি বলেন, প্রায় শত কোটি টাকার ব্যক্তিগত সম্পত্তির দলিল নিয়ে সহযোগিতার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। কিন্তু সচিব শফিকুজ্জামান ছাড়া কেউ এগিয়ে আসেননি।

শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের বিষয়ে আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, সরকারের সহযোগিতায় শ্রমিকরা তাদের পাওনা টাকাগুলো সময় মতো পাবেন। আমরা আশা করি, শ্রমিকরাও এ পরিস্থিতি বিবেচনা করে কারখানার উন্নয়নে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবেন।


আরও খবর

দাম বাড়ল সয়াবিন তেলের

সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪