Logo
শিরোনাম

জাতীয় পরামর্শ সভায় সর্বস্তরের আলেমদের ঐক্যের ডাক

প্রকাশিত:শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

মোহাম্মদ হাছানুজ্জামান মাসউদ :

অনারম্বরপূর্ণ আয়োজনে রাজধানীর জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়ায় (যাত্রাবাড়ী বড় মাদ্রাসা) ২১ সেপ্টেম্বর (শনিবার) সকাল ১০ টায় কওমি মাদরাসাগুলোর সর্বোচ্চ অথরিটি আল-হাইয়াতুল উলয়া লিল-জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’র চেয়ারম্যান, কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ’র সভাপতি, রাজধানীর জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ি’র প্রিন্সিপাল, গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদ ও ঈদগাহ সোসাইটি’র খতিব, মজলিসে দাওয়াতুল হক বাংলাদেশ’র আমীর মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে এ পরামর্শ সভায় দেশের শীর্ষস্থানীয় ১২০ এর অধিক উলামায়ে কেরাম ও ইসলামী চিন্তাবিদরা উপস্থিত ছিলেন। 



কওমের ঐক্য-সংহতি ও সঠিক দিকনির্দেশনার ক্ষেত্রে ওরাসাতুল আম্বিয়া হিসাবে উলামায়ে কেরামের দায়িত্ব আঞ্জাম দেওয়ার নিমিত্তে ‘দেশ ও জাতির চলমান পরিস্থিতি : উলামায়ে কেরাম এবং ইসলামী চিন্তাবিদদের করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 



সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা মাহমুদুল হাসান বলেন, ২০২৪ সাল আমাদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য বছর। গত জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশের একটি পট পরিবর্তন ঘটেছে। যার মূলশক্তি ছিল সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস। দেশবাসী এক হলে বড় কিছু করা যায়। এ সময়ে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার সাথে উলামায়ে কেরামের ঐক্য ছিল লক্ষ্যণীয়। এ পর্যায়ে অভূতপূর্ব জাতীয় ঐক্য সংহতিরও নজির সৃষ্টি হয়েছে। এক পর্যায়ে অন্তবর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তারা রাষ্ট্রসহ মৌলিক অনেক পর্যায়ে সংস্কার সাধন করবেন বলে উদ্যোগী হয়েছেন। 


তিনি বলেন, এ সংস্কার কাজে ইসলামী আদর্শ ও মূল্যবোধ এবং দেশ ও জাতির স্বার্থ সংরক্ষিত হচ্ছে কিনা, সেটা দেখা উলামায়ে কেরামের দায়িত্ব। নতুন গঠিত প্রতিটি কমিশনে শতকরা ৯২ ভাগ মুসলমানের স্বার্থ দেখার দায়িত্ব উলামায়ে কেরামের। বিশেষ করে সংবিধান সংস্কারে ইসলাম বিরোধী কোনো পদক্ষেপ যেন গ্রহণ করা না হয়, সেটা পর্যবেক্ষণ করা এবং সংবিধানসহ প্রতিটি কমিশনে উলামায়ে কেরাম ও ইসলামী চিন্তাবিদদের অংশীদারিত্ব বহাল রাখা একটি কর্তব্য। 


দেশের সর্বস্তরের উলামায়ে কেরামকে ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ধর্মপ্রাণ মানুষ এখন উলামায়ে কেরামের ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্মের জন্য অপেক্ষমান। আপনারা এবার বিচ্ছিন্ন না হয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকলে স্থায়ীভাবে জনগণের মনে স্থান করে নেওয়া সম্ভব হবে। রাষ্ট্রব্যবস্থায় নিঁখুত একটি শক্তি হিসেবে ইসলাম ও মুসলমানের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে। মনে রাখতে হবে, সর্বাবস্থায় আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত, আকাবিরে দেওবন্দ ও বাংলাদেশের শত বছরের শীর্ষ মুরব্বি উলামায়ে কেরামের মত-পথ, নীতি ও আদর্শ সমুন্নত রাখতে হবে। 


ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর সৈয়দ মুফতি রেজাউল করীম বলেন,- 

দেশের দ্রুত পরিবর্তনশীল এই সময়ে যাত্রাবাড়ির হযরত একটি সাহসী এবং যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন। স্বাধীনতার পর থেকে ৫৩ বছরে ইসলামকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নেওয়ার সুযোগ আসেনি। ভিন্নমত তো থাকবেই, কিন্তু পরামর্শের ভিত্তিতেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এই সুযোগ হাতছাড়া করা ঠিক হবে না। এ ব্যাপারে উলামায়ে কেরামের যে কোনো সৎ পরামর্শ আমরা মেনে নিতে প্রস্তুত।


পরামর্শ সভার আলোচনায় বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও আলোচক আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী বলেন,-

যতদিন কওমি আলেমরা রাজনৈতিক প্রশ্নে এক প্লাটফর্মে না আসবে, ততদিন তাদের রাজনৈতিক মুক্তি হবে না। যারা কওমি আলেমদের আকীদার নয় তাদের সাথে ঐক্য কোনো সুফল বয়ে আনবে না। 


বেফাকুল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, 

আমি মনে করি, আমাদের এখন আকীদার ভিত্তিতে ঐক্য হয়ে যাওয়া। পরবর্তীতে বিরোধী কারো সাথে ঐক্য হলে যদি ইসলামের বৃহৎ স্বার্থ হাসিল হয় তখন রাজনৈতিক নেতারা সময় অনুযায়ী ভেবে সিদ্ধান্ত নিবেন।



ইসলামী চিন্তাবিদ ও আলোচক মুফতি মুশতাকুন্নবী বলেন, 

আজকের এই মজলিস আমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সূচনা। তরিকতের লাইনে বলি আর উলূমের লাইনেই বলি, আল্লামা মাহমূদুল হাসান সাহেব আমাদের জাতীয় মুরব্বি। তিনি বেফাক ও হাইয়ার ক্রান্তিলগ্নে আমাদের বাঁচিয়েছেন। আমরা যদি আজ তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হতে পারি, তাহলে আগামীর বাংলাদেশে এই দল উলামাদের সঠিক পথ দেখাবে।


এ সময় উলামায়ে কেরাম ও ইসলামী চিন্তাবিদদের করণীয় শীর্ষক জাতীয় পরামর্শ সভায় ৭ দফা প্রস্তাবাবলী গৃহীত হয়।

১। রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে সংবিধান সংস্কারে ইসলাম বিরোধী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না এবং সংবিধানসহ প্রতিটি কমিশনে উলামায়ে কেরাম ও ইসলামী চিন্তাবিদদের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। 

২। শিক্ষা সংস্কার কমিটিতে ইসলামী শিক্ষাবিদ, কারিকুলাম ও সিলেবাস বিশেষজ্ঞ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। 

৩। সংস্কারের সুযোগে পাশ্চাত্য বিভিন্ন মতবাদ, ট্রান্সজেন্ডার, এলজিবিটিকিউ, উগ্র নারীবাদ, সর্বধর্মবাদ ইত্যাদি অনুপ্রবিষ্ট করা যাবে না।

৪। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শান ও মান এবং খতমে নবুওয়াত সমুন্নত রাখার জন্য আইন পাশ করতে হবে। 

৫। রাষ্ট্র, সমাজ ও সরকারের প্রতিটি ক্ষেত্রে শতকরা ৯২ ভাগ মানুষের বিশ্বাস, মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির মূল্যায়ন করতে হবে। 

৬। বাংলাদেশের যাবতীয় দ্বীনি কার্যক্রমের শরীয়াভিত্তিক বিশ্লেষণ ও দিক নির্দেশনা প্রদানের জন্য আল্লামা মাহমূদুল হাসানের নেতৃত্বে একটি কাউন্সিল গঠন করা হবে। 

৭। আজকের জাতীয় পরামর্শ সভা থেকে প্রাপ্ত প্রস্তাবাবলীর আলোকে ইসলামী অঙ্গনে ব্যাপক আকারে ঐক্যের রূপরেখা তৈরি করে আল-হাইয়াতুল উলিয়ায় উপস্থাপন করা হবে।


জাতীয় এ পরামর্শ সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনা করেন, হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা সাজিদুর রহমান, ঢালকানগর মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতী জাফর আহমাদ, জামিয়া পটিয়ার মুহতামিম মাওলানা আবু তাহের নদভী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা নূরুল হুদা ফয়েজী, হেফাজতে দ্বীন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মুফতি মুহাম্মদ আলী, জামিয়া গহরপুরের মুহতামিম মাওলানা মুসলেহুদ্দীন গওহরপুরী, বেফাকের প্রধান পরিচালক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা মানুসুরুল হাসান রায়পুরী, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল কাদির, ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি মুফতি মুজিবুর রহমান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল হক কাউসারি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব ড. মহিউদ্দিন ইকরাম, খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নির্বাহী সভাপতি একেএম আশরাফুল হক প্রমুখ। 


জাতীয় পরামর্শ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযা, শিবচর জামিয়াতুস সুন্নাহর মুহতামিম মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ ফরিদী, মাওলানা আব্দুল আউয়াল (নারায়নগঞ্জ), তাওয়াক্কুলিয়া রেঙ্গার মুহতামিম মাওলানা মুহিউল ইসলাম বুরহান, টঙ্গি দারুল উলুমের মুহতামিম মুফতি মাসউদুল করীম, হেফাজত ইসলামের প্রচার সম্পাদক মুফতি কেফায়েতুল্লাহ আজহারী, বসুন্ধরা মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি সোহাইল, চকবাজার শাহী মসজিদের খতিব মাওলানা মিনহাজ, মাদরাসাতু সালমানের মুহতামিম মুফতি রুহুল আমিন, চৌধুরীপাড়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মাহফুজুল হক, মেরাজনগর মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা রশীদ আহমদ, খতমে নবুওয়তের সহ-সভাপতি মুফতি সাঈদ, মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব, মাওলানা সাদেক আহমদ সিদ্দিকী, মাওলানা আবু জাফর কাসেমী, মাওলানা নুরুল ইসলাম (গাজীপুর), মাওলানা আলী আহমাদ (পীর সাহেব চণ্ডিবর্দি), মাওলানা শওকত হোসেন সরকার, মাওলানা বোরহানুদ্দীন রাব্বানী, মাওলানা আনওয়ারুল হক, মুফতি মাওলানা গোলামুর রহমান, শহীদুল আনওয়ার সাদী, মাওলানা আশরাফ আলী, মুফতি মাসুম আহমদ প্রমুখ।


 সভার পরিসমাপ্তিতে জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যেসকল তাজা প্রাণ ঝরেছে তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করা হয় এবং বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদের ও দেশ জাতির কল্যাণ কামনায় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সাহায্য কামনা করা হয়।


আরও খবর



কলকাতা বিমানবন্দরে হাই অ্যালার্ট জারি

প্রকাশিত:শনিবার ১০ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ১৪ মে ২০২৫ |

Image

কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জারি করা হয়েছে হাই অ্যালার্ট। ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ও অসামরিক উড়ান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে দেশের ২০টি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরে, যার মধ্যে অন্যতম কলকাতা বিমানবন্দর।

বিমানবন্দরের সুরক্ষায় নিযুক্ত সিআইএসএফ কর্মীদের সব ছুটি বাতিল করা হয়েছে। যারা ছুটিতে ছিলেন, তাদের দ্রুত কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে। বিমানবন্দর চত্বরে শুক্রবার (৯ মে) সকাল থেকেই কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্নিপার ডগ নিয়ে চলছে তল্লাশি। অ্যারাইভাল ও ডিপারচার গেটে গাড়ি দাঁড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যাত্রী নামিয়েই গাড়িকে সরে যেতে হচ্ছে।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, আজ ৯ মে সিভিল অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি ডিসি ব্যুরোর পক্ষ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। এর আগেই সিআইএসএফ ডিআইজি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন।

এদিকে আন্দামান থেকে ঘুরে আসা কলকাতার বাসিন্দা আকবর আলি জানান, সুরক্ষা কড়াকড়ি রয়েছে ঠিকই, তবে আমাদের কোনো অসুবিধা হয়নি।

বর্ডার পরিস্থিতি ও নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের প্রেক্ষিতে দেশের অন্য বিমানবন্দরগুলোর মতো কলকাতাতেও সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে প্রশাসন। নিরাপত্তা সংক্রান্ত নতুন নিয়ম অনুযায়ী, যাত্রীদের উড়ানের অন্তত তিন ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে।


আরও খবর



ডোপ টেস্ট দিয়ে শাবিপ্রবিতে ভর্তি হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত:শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

২০১৯-২০ সেশন থেকে ষষ্ঠবারের মতো ডোপ টেস্টের মাধ্যমে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন সামাজিক বিজ্ঞান ভবনে এ ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, অনেক শিক্ষার্থীর রক্তের গ্রুপ জানা থাকে না। সেজন্য প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠন সঞ্চালন রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের পরীক্ষা করছে। এরপর ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। এ টেস্টে কোন শিক্ষার্থী পজিটিভ হলে তাকে কাউন্সেলিং করা হবে।

এবার ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে স্বয়ংক্রিয় ওয়ান স্টপ সার্ভিস পদ্ধতিতে। ভর্তি কার্যক্রমে সাতটি ধাপের মধ্যে রক্ত পরীক্ষা, ডোপ টেস্ট, স্বাক্ষর যাচাই, তথ্য যাচাই ও রেজিস্ট্রেশন, ভর্তি ফি প্রদান, চূড়ান্ত রেজিস্ট্রেশন যাচাই এবং হল সংযুক্তিসহ আবাসন আবেদন রয়েছে।

এদিকে প্রথমদিন ইউনিটে (বিজ্ঞান) উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে মেধাক্রম ১ থেকে ৫০০ পর্যন্ত ডাকা হয়েছে। দ্বিতীয় দিন বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলবে ইউনিটের ভর্তি কার্যক্রম। এদিন ৫০১ থেকে ৯৫৫তম শিক্ষার্থীদের ডাকা হয়েছে। একই দিনে স্থাপত্য বিভাগে ১ থেকে ৩০তম শিক্ষার্থীদের ডাকা হয়েছে।

ভর্তির তারিখ ও ফি পরিবর্তন

১৭ এপ্রিল বি ইউনিটের (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য অনুষদ) ভর্তি কার্যক্রম অনিবার্য কারণে পরিবর্তন করে ২২ এপ্রিল পুননির্ধারণ করা হয়েছে। এবার কোটাসহ ২৮টি বিভাগে এবার মোট আসন এক হাজার ৬৭১টি।

অন্যদিকে গত শুক্রবার (১১ এপ্রিল) এক জরুরী একাডেমিক কাউন্সিলে ২০২৪-২৫ সেশনে ভর্তি ফি পুনর্বিবেচনা করে ১৪ হাজার ৯০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা এর আগে ছিল ১৭ হাজার টাকা। ২০২৩-২৪ সেশন ভর্তি ফি ছিল ১৮ হাজার টাকা। ফলে এবার ভর্তি ফি কমেছে ৩ হাজার ১০০টাকা।


আরও খবর



গজারিয়ার ভাটেরচর দেওয়ান আব্দুল মান্নান উচ্চ বিদ্যালয়

বেঞ্চে বসা নিয়ে সংঘর্ষ: ২শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ১৪ মে ২০২৫ |

Image

সৈয়দ মোহাম্মদ শাকিল: গজারিয়ার ভাটেরচর দেওয়ান আব্দুল মান্নান উচ্চ বিদ্যালয়ে মারামারির ঘটনায় নবম শ্রেণির ২ শিক্ষার্থীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে স্কুল পরিচালনা কমিটি।

ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির এক জরুরি সভায় সর্বসম্মতভাবে রায়হান ও ইমন নামের ২ ছাত্রকে আজীবনের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহজাহান শিকদার।

স্কুল সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে স্থানীয় আনারপুরা গ্রামের রায়হান ও ইমন বহিরাগতদের সহায়তায় তাহিন (১৬), জোবায়ের (১৫), মো. আবদুল্লাহ (১৫) ও সাইফুল ইসলাম (১৭) নামের ৪ শিক্ষার্থীকে মারধর করে আহত করে। আহতদের গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রোববার ক্লাস রুমে দুইদল ছাত্রের মধ্যে কথাকাটাকাটির জের ধরে এই ঘটনা ঘটে। আহত ছাত্রদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। এ বিষয়ে আহত এক ছাত্রের মা গজারিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

উল্লেখ্য গতকাল ২০,০৪,২০২৫  রোববার বেঞ্চে বসাকে ঘটনা কেন্দ্র করে উক্ত বিদ্যালয়ের ছাত্রদের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচ জন আহত হয়েছেন। আহত ৫ ছাত্রকে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। এ ঘটনা গজারিয়া থানায় দু'পক্ষ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। 

সোমবার (২১ এপ্রিল) সকালে উপজেলার টেঙ্গারচর ইউনিয়নের ভাটেরচর বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- তাহিন (১৬), জোবায়ের (১৫), মো. আবদুল্লাহ (১৫) ও সাইফুল ইসলাম (১৭) । এরা সকলেই বড়ইকান্দি ভাটেরচর গ্রামের বাসিন্দা এবং মো. সাঈদ মিয়া ভবেরচর ইউনিয়নের আনারপুরা গ্রামের বাসিন্দা।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভাটেরচর দেওয়ান আব্দুল মান্নান উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী স্থানীয় আনারপুরা ও বড়ইকান্দী ভাটেরচর গ্রামের বাসিন্দা দুইদল ছাত্রের মধ্যে গতকাল রোববার বিদ্যালয়ের ক্লাস রুমে টেবিলে বসা ও শুয়ে থাকা নিয়ে কথাকাটি হয়। ওই ঘটনার জের ধরে সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আনারপুরা গ্রামের কয়েকজন শিক্ষার্থী বহিরাগতদের সহযোগিতায় বড়ইকান্দী ভাটেরচর গ্রামের বাসিন্দা ৪ ছাত্রকে হকিস্টিক ও কাঠের ডাসা দিয়ে পিটিয়ে আহত করে।

আহত শিক্ষার্থী মো. সাঈদ জানান, সে ক্লাসের বেঞ্চে শুয়ে ছিলো, আমি তাকে উঠতে বললে সে আমাকে বকাঝকা শুরু করে। তাদের গ্রামে স্কুল সে কারণে এরা দূর এলাকার ছাত্রদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। 

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার আলম আজাদ জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দুইপক্ষই অভিযোগ করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।


আরও খবর



মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে বাড়ছে ভোগ্যপণ্যের দাম

প্রকাশিত:শুক্রবার ০২ মে 2০২5 | হালনাগাদ:বুধবার ১৪ মে ২০২৫ |

Image

শুধু ব্যবসা নয়, শস্যভাণ্ডার হিসেবেও খ্যাত বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। জেলার ১৫ উপজেলার প্রতিটিতে আবাদ হয় প্রচুর ধান-চাল, ডাল, সবজি ও ফল-ফলাদি। লবণ ও মাছ উৎপাদনের প্রাকৃতিক উৎসও চট্টগ্রাম। আবার ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, গমসহ নানা ভোগ্যপণ্যের আমদানি আসে এই চট্টগ্রামে।

কিন্তু চট্টগ্রামে এসব ভোগ্যপণ্যের দাম মোটেও স্বাভাাবিক নয়। এমনকি দেশের কোনো কোনো এলাকার চেয়ে এসব ভোগ্যপণের দাম অনেক বেশি চট্টগ্রামে। এর মূলে সরবরাহে কারসাজি। যার কারিগর মধ্যস্বত্বভোগীরা। যাদের বেড়াজালে এসব ভোগ্যপণ্য উৎপাদনকারী কৃষক যেমন প্রতিনিয়ত ছিড়ে চ্যাপ্টা হচ্ছে, তেমনি চ্যাপ্টা হচ্ছে ভোক্তাও।

এমন অভিযোগ শুধু উৎপাদনকারী কৃষক, আমদানিকারক বা ভোক্তা নয়, খোদ বাজার মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকা বেসরকারি সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) নেতারাও করেছেন। বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে মধ্যস্বত্বভোগী অসাধু ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের কারসাজির প্রমাণও সামনে নিয়ে এসেছেন ক্যাব নেতারা।

ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু বলেন, চট্টগ্রামে আমদানি করা ভোগ্যপণ্য পাইকারি দরে বিক্রি হয় চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে। পাইকারি চাল বিক্রি হয় পাহাড়তলী বাজারে। সবজি বিক্রি হয় রিয়াজুদ্দিন বাজারে। দেখা যায়, এসব বাজারে হাজার হাজার বেপারির অবস্থান। যাদের সঙ্গে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের ২০ থেকে ২৫ জনের আড়তদারের চুক্তি থাকে।

আবার এসব বেপারি চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকদের কাছে অগ্রিম টাকা দিয়ে ফসলি জমি কিনে রাখেন। পরে ওই জমিতে উৎপাদিত ফসল আড়তদারদের কাছে পৌঁছে দেন। এই আড়তদাররাই জমি কেনার টাকা দেন ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের। আর বিনিময়ে আড়তদাররা সব ধরনের সবজিতে কেজিপ্রতি ৬ টাকা ৪ আনা কমিশন পান। আড়তদারদের কাছ থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা কিনে নেন। সেখান থেকে ভোক্তাপর্যায়ে পৌঁছায়। এভাবে হাতবদলের কারণে সবজির দাম কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

বিষয়টি স্বীকার করেছেন রিয়াজুদ্দিন বাজারের আড়তদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক শিবলীও। তিনি বলেন, কৃষকরা সরাসরি আমাদের কাছে সবজি বিক্রি করতে পারেন না। বেপারির মাধ্যমে বিক্রি করতে হয়। বেপারিরা চট্টগ্রামের সবজি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে নিয়ে যায়। এতে সংকটও সৃষ্টি হয়। গ্রীষ্মকাল এলে যখন ফলন কমে যায় বা গরমে নষ্ট হয় তখন সবজির দাম অত্যধিক বেড়ে যায়।

তিনি বলেন, বর্তমানে চট্টগ্রামে সবজির বাজার একেবারে অস্থির। কাঁকরোল, ঝিঙা কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার ওপরে। কচুরলতি ৯০ টাকা এবং পটল, করলা, ঢেড়শ, বরবটি ও চিচিঙ্গা কিনতে গুনতে হচ্ছে কেজিতে ৭০ টাকার বেশি। অথচ ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা উৎপাদনকারী কৃষক থেকে ৩০-৩৫ টাকার নিচে কিনেছে সব সবজি।

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার কৃষক আবু হানিফ বলেন, আমি ২০ শতক জমিতে কাকরোল চাষ করেছি। ফলনও হয়েছে ভালো। কিন্তু দাম পাচ্ছি না। বাজারে ১২০ টাকা কেজিতে কাকরোল বিক্রি হলেও আমরা পাই কেজিপ্রতি ৩০ টাকা। বেপারিদের কাছ থেকে নেওয়া অগ্রিম টাকায় চাষ করায় তাদের ইচ্ছার ওপর কোনো রকম কথা বলা সম্ভব হয় না বলে জানান তিনি।

একই অবস্থা পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও। দেশীয় পেঁয়াজ এখন খুচরায় বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৫৪ টাকায়। যা কৃষক পর্যায়ে দাম মিলছে ১৪ থেকে ১৫ টাকায়। চট্টগ্রামে আবার তেমন পেঁয়াজ উৎপাদন হয় না। মেহেরপুর, রাজবাড়ী, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মধ্যস্বত্বভোগীরা কৃষকের কাছ থেকে কম দামে পেঁয়াজ কিনে মজুত করে রেখেছেন। এখন তা বেশি দামে বাজারে ছাড়ছেন। এর প্রভাব পড়ছে ভোক্তাপর্যায়ে। অন্যদিকে ভারতীয় পেঁয়াজ খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৫৮ টাকায়। যা ক্রয় পর্যায়ে ২৪-২৫ টাকায় কিনছে আমদানিকারকরা।

একসময় মধ্যস্বত্বভোগীর ভূমিকা কম ছিল, এখন বেড়েছে। পাকিস্তান আমল থেকে এর চর্চা হয়ে আসছে।

হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস বলেন, মধ্যস্বত্বভোগীর অস্তিত্ব নতুন কিছু নয়। সেই পাকিস্তান আমল থেকে এর চর্চা হয়ে আসছে। একসময় মধ্যস্বত্বভোগীর ভূমিকা কম ছিল, এখন বেড়েছে। আর তাদের ছাড়া কৃষকের কোনো পণ্যই বিক্রি করার সুযোগ নেই। গাড়ি ভাড়া বৃদ্ধিও পণ্যের দাম বাড়ার জন্য কিছুটা দায়ী।

এদিকে মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজি জিরাশাইল চালের দাম ১৪ টাকা বেড়ে ৮৪ টাকা, নাজিরশাইল ১২ টাকা বেড়ে ৮৮ টাকা, কাটারি সেদ্ধ চাল ১৪ টাকা বেড়ে ৮৬ টাকা, মিনিকেট আতপ চাল ১০ টাকা বেড়ে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মোটা চাল, গুটি স্বর্ণা, ভারতীয় সেদ্ধ চাল, পাইজাম ও বেতি চাল বিক্রি হচ্ছে আগের দরে। প্রতি কেজি মোটা চাল ৪৬ টাকা, গুটি স্বর্ণা ৫০, ভারতীয় সেদ্ধ চাল ৫৫, পাইজাম ৫৬ ও বেতি চাল ৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম নিজামউদ্দিন বলেন, মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে চালের দাম বেড়ে যায়। ভরা মৌসুমে ধান মজুত করে পরে চড়া দামে বিক্রি করেন তারা। বাজারেও এর প্রভাব পড়ে। বোরো ধান মাত্র উঠতে শুরু করেছে। আশা করা যায়, ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে চালের দাম কমে আসবে।

এদিকে কয়েক মাস আগেও খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরায় মুরগির ডিম (বাদামি) ডজনপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার জানান, বর্তমানে একটি ডিম উৎপাদন করতে ১০ টাকার ওপর খরচ পড়ে। কিন্তু বিক্রি করতে হচ্ছে ৮ টাকায়। কারণ ডিম উৎপাদন করলেও কোনো খামারি ডিমের দাম নির্ধারণ করতে পারেন না। মধ্যস্বত্বভোগীরাই দাম নির্ধারণ করে কিনে নেন। তারাই পরে তা পাইকারের কাছে বিক্রি করেন। সেখান থেকে খুচরা পর্যায়ে যায়। এটা একটা সিস্টেমে পরিণত হয়েছে। এর ওপর বড় ফার্মগুলো মুরগির বাচ্চা বাড়তি দরে বিক্রি করছে। এ কারণে মুরগির বাজারদরটাও বাড়তি।

ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ার পেছনে পাইকারি ব্যবসায়ীরাও দায়ী। এ কারণে কৃষক লবণের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। চাক্তাই, মাঝিরঘাট ও বাংলাবাজার এলাকার পাইকারি লবণ বিক্রেতারা প্রতি কেজি লবণে ২ টাকা বাড়িয়ে ৯ টাকায় বিক্রি করছেন। বস্তাপ্রতি (৭৪ কেজি) ১৪০ টাকা দাম বাড়িয়ে ৬৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। দাম বাড়ানোর পেছনে দেখিয়েছেন সরবরাহ সংকটের অজুহাত।

বিশ্ববাজারে গমের দাম কমে এসেছে। কিন্তু পাইকারি ব্যবসায়ীরা সরবরাহ সংকটের অজুহাতে প্রতি কেজি গমে ৩ টাকা বাড়িয়ে ৩৪ টাকায় বিক্রি করছেন। বস্তা ১১০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ টাকায়।

এদিকে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে খাতুনগঞ্জে প্রতি লিটার পাম অয়েলে ১২ টাকা ৬ পয়সা বেড়ে ১৩৯ টাকা ৮৭ পয়সা এবং লিটারপ্রতি ৭ টাকা ২৩ পয়সা বেড়ে সয়াবিন তেল ১৫১ টাকা ৯২ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে। মণপ্রতি হিসাবে, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পাম অয়েলে ৫০০ টাকা ও সয়াবিনে ৩০০ টাকা বেড়েছে। অথচ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খুচরা পর্যায়ে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৮৯ টাকায়, খোলা সয়াবিন তেল ১৬৯ টাকায় বিক্রি করার কথা। কিন্তু বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা ও খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ১৮০ টাকারও বেশি দামে।

খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের আইনবিষয়ক সম্পাদক এবং চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন দাবি করেন, খাতুনগঞ্জে অধিকাংশ ভোগ্যপণ্যের দাম নিম্নমুখী। তবে বিশ্ববাজারে দাম বাড়লে এখানে বেড়ে যায়। বিশ্ববাজারে কমে গেলে এখানেও কমে। এখানে মধ্যস্বত্বভোগীর হাত নেই বলে দাবি করেন তিনি।

কিন্তু তার এই দাবির সঙ্গে একমত নন ক্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন। তিনি বলেন, এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়, মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণেই বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ছে। বিশ্ববাজারে কোনো একটা পণ্যের দাম কমলে আমাদের ব্যবসায়ীরা আর সে পণ্যের দাম কমান না। এখন খুচরা ব্যবসায়ীরাও অতি মুনাফালোভী হয়ে উঠেছেন। এসব ব্যাপারে সরকারকে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কঠোরভাবে বাজার তদারকি করতে হবে। ব্যবসায়ীদেরও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক ফয়েজ উল্যাহ বলেন, আমাদের জনবল সীমিত। তবু আমরা বিভিন্ন বাজার তদারকি করছি। কারসাজি পেলেই জরিমানা ও সতর্ক করছি। বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছি। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।


আরও খবর



সিন্ধু নদে বাঁধ দিলে হামলা করবে পাকিস্তান

প্রকাশিত:শনিবার ০৩ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ১৪ মে ২০২৫ |

Image

পাকিস্তানে সিন্ধু নদের পানিপ্রবাহ বন্ধ করতে ভারত যদি তার সীমানায় এই নদের ওপর বাঁধ বা এ জাতীয় কোনো স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নেয়, সেক্ষেত্রে সামরিক হামলা চালাবে পাকিস্তান। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহম্মদ আসিফ এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন।

শুক্রবার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের ‘নয়া পাকিস্তান’ টেলিভিশন প্রোগ্রামে অতিথি হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন খাজা আসিফ। সেখানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “শুধু বন্দুকের গুলি বা কামানের গোলা ছুড়লেই আগ্রাসন হয় না। বহুভাবে আগ্রাসন চালানো যায়। যেমন সিন্ধু নদের পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া বা পানিপ্রবাহকে ভিন্নপথে চালিত করাও একপ্রকার আগ্রাসন। কারণ এর ফলে ক্ষুধা ও তৃষ্ণার কারণে মৃত্যু হবে লাখ লাখ মানুষের।”

“তাই সিন্ধু নদের পানিপ্রবাহ আটকাতে যদি তারা (নয়াদিল্লি) বাঁধ বা এই জাতীয় স্থাপনা নির্মাণ শুরু করে— সেক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবেই আমরা আঘাত করব এবং সেই স্থাপনা ধ্বংস করব।”

“তবে আপাতত আমরা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে বিষয়টি (সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি) নিয়ে আলোচনা করছি এবং নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।”

গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে ভারতের জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের পেহেলগাঁও জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে পর্যটকদের ওপর হামলা চালায় কাশ্মিরভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বার উপশাখা দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট।

স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে হামলাকারীরা অন্তত ২৬ পর্যটককে গুলি করে হত্যা করে, আহত হন আরও বেশ কয়েকজন। নিহতরা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মিরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা।

ভয়াবহ এই হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত এবং তাৎক্ষণিকভাবে সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত, দূতাবাস থেকে কূটনীতিকদের ফিরিয়ে আনা, ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিলসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় নয়াদিল্লি।

এদিকে পেহেলগামের হামলার সঙ্গে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করে ইসলামাবাদ। তবে নয়াদিল্লির শাস্তিমূলক পদক্ষেপের পাল্টা জবাব হিসেবে ভারতের জন্য নিজেদের স্থল ও আকাশসীমা বন্ধ, পাকিস্তানে অবস্থানরত ভারতীয়দের ভিসা বাতিল, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্থগিতসহ একাধিক পদক্ষেপ নেয় পাকিস্তানও।

এ হামলাকে ঘরে গত ১১ দিন ধরে তীব্র উত্তেজনা শুরু হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দুই চিরবৈরী প্রতিবেশী দেশেল মধ্যে। গত মঙ্গলবার ভারতের শীর্ষ সেনা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাতের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই বৈঠকে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে পাকিস্তান হামলার জন্য সবুজ সংকেত তিনি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

ভারতীয় সেনাবাহিনী এখনও কোনো সামরিক পদক্ষেপ নেয়নি, তবে খাজা আসিফ মনে করেন— এখনও দু’দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

“যুদ্ধের হুমকি আমরা এড়িয়ে যেতে পেরেছি— এখনও এমনটা ভাবার সময় আসেনি”, জিও নিউজকে বলেন খাজা আসিফ।


আরও খবর