Logo
শিরোনাম

জ্বালানি খাতে খুলছে সম্ভাবনার দুয়ার

প্রকাশিত:শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

দেশের জ্বালানি খাত নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। ব্যর্থতাও রয়েছে ভূরিভূরি। এরই মধ্যে মিলছে সুসংবাদ। শিগগিরিই চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ঢাকায় আসবে ডিজেল।

ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যে ২৫০ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল পরিবহন শুরু হবে। এর মাধ্যমে জ্বালানি পরিবহনে নতুন একটি মাইলফলক স্পর্শ করবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানান, বন্দর নগরীর পতেঙ্গা থেকে রাজধানীর উপকণ্ঠে ফতুল্লা পর্যন্ত প্রথম ভূগর্ভস্থ এই পাইপলাইন চালু হলে প্রতি বছর জ্বালানি পরিবহনে প্রায় ২৩০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। ঢাকাসহ সারা দেশে ডিজেলের সরবারাহ বাড়বে দ্রুতগতিতে। কমবে পরিবহন খরচ। সংশ্লিষ্ট সূত্র এমনটাই নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, জানুয়ারি থেকেই পাইপলাইনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল আনার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত প্রায় ২৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপনের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। এখন পাইপলাইনে তেল সরবরাহ কার্যক্রমের উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে বছরে ৩০ লাখ টন তেল আসবে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপোতে। এতে বিপুল অঙ্কের পরিবহন ব্যয়ের পাশাপাশি সময়ও সাশ্রয় হবে। তেল চুরিসহ সিস্টেম লসের কবল থেকেও বহুলাংশে মুক্তি মিলবে। পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিবহন ব্যয় ও তেল অপচয় ঠেকানোসহ বছরে অন্তত ২৫০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলে বিপিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। জ্বালানি তেল পরিবহনে পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে বিপিসি।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল আসে নদী ও সড়কপথে। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে মাঝেমধ্যেই তেল পরিবহন বাধাগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া নদী ও সড়কপথে তেল পরিবহনের কারণে খরচ যেমন বেশি, তেমনি তেল চুরির অভিযোগও রয়েছে। একই সঙ্গে শুষ্ক মৌসুমে নৌপথে নাব্যতা কমে যাওয়ায় তেল পরিবহন করাও কঠিন হয়ে পড়ে। এসব সংকট নিরসনেই ২০১৮ সালের অক্টোবরে ‘চট্টগ্রাম হতে ঢাকা পর্যন্ত পাইপলাইনে জ্বালানি তেল পরিবহন’ নামের প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়। বিপিসির পদ্মা অয়েল কম্পানির তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন হয়। শুরুতে পাইপলাইন প্রকল্পটির ব্যয় দুই হাজার ৮৬১ কোটি ৩১ লাখ টাকা ধরা হয়। পরে সংশোধিত ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। তবে প্রকল্পটির কাজ আরো দুই বছর আগে শেষ হওয়ার কথা ছিল। নানা জটিলতায় দেরি হয়েছে।

বিপিসির চেয়ারম্যান (সচিব) মো. আমিন উল আহসান বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন প্রকল্পটি আগামী জানুয়ারিতে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এটির মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহ শুরু হলে পরিবহন খরচ ও অপচয় অকেটাই রোধ করা সম্ভব হবে।’ ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন প্রকল্পের পরিচালক আমিনুল হক বলেন, ‘এরই মধ্যে পাইপলাইন স্থাপনের কার্যক্রম শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। কমিশনিংয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। পুরোপুরিভাবে তেল সরবরাহ শুরু হলে যে পরিমাণ পরিবহন ব্যয় ও অপচয় রোধ হবে, তার মাধ্যমে ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যেই প্রকল্পের ব্যয় উঠে আসবে।’

জানা গেছে, দেশের জ্বালানি তেলের ৯০ শতাংশ পরিবাহিত হয় নৌপথে। তেল বিপণন কম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রায় ২০০টি অয়েল ট্যাংকার এসব জ্বালানি তেল পরিবহন করে। নৌপথে জ্বালানি তেল পরিবহনে সিস্টেম লসের পাশাপাশি বিভিন্ন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের উপমহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) আসিফ মালিক বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে নদীপথে ঢাকায় তেল যেতে অনেক সময় দুদিন লেগে যেত। বিভিন্ন সময় ট্যাংকারে আগুন লাগার মতো দুর্ঘটনা ঘটে। পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিবহন ব্যয় সাশ্রয়ের পাশাপাশি অনেকটাই ঝুঁকিমুক্তভাবে তেল সরবরাহ করা যাবে।’ বর্তমানে চট্টগ্রাম থেকে রেল ও সড়ক ও নৌপথে দেশের অন্যান্য স্থানে ডিজেল পরিবহন করা হয়। পরিবহনের সময় প্রায়ই তেল চুরির ঘটনা ঘটে। এছাড়া শুষ্ক মৌসুমে নৌপথে নাব্যতা সংকটের কারণে জ্বালানি পরিবহনে সমস্যা দেখা দেয়। এতে প্রায়ই জ্বালানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে।

বিপিসির এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪তম ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। এতে খরচ হচ্ছে ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।

প্রকল্প পরিচালক কর্নেল জাহাঙ্গীর হোসেনের মতে, এরই মধ্যে পাইপলাইনে হাইড্রো টেস্ট করা হয়েছে। এর মাধ্যমে পাইপলাইনের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সফলভাবে পানি পাঠানো হয়েছে। পাইপলাইনে ৯টি পাম্পিং স্টেশন রয়েছে এবং এখন স্টেশনগুলোর সরঞ্জাম পরীক্ষা করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ‘আশা করছি ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আমরা পাইপলাইনটি চালু করতে পারব।’

এই পাইপলাইন দিয়ে বছরে ২ দশমিক ৭ থেকে ৩ মিলিয়ন টন ডিজেল পরিবহন করা যাবে। ধাপে ধাপে এর সক্ষমতা পাঁচ মিলিয়ন টনে উন্নীত করা যেতে পারে।

বিপিসির তথ্য অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সারা দেশে নৌপথে ৫ দশমিক ৪ মিলিয়ন টন জ্বালানি পরিবহন করা হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপোতে ২ দশমিক ৭ মিলিয়ন টন তেল পরিবহন করা হয়েছে। বর্তমানে এ রুটে প্রতি মাসে ১১০টি জাহাজ জ্বালানি পরিবহন করে।

দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই পাইপলাইনের দুটি অংশ রয়েছে : একটি ২৪১ দশমিক ২৮ কিলোমিটার ১৬-ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইন। এটি পতেঙ্গা থেকে ফেনী, কুমিল্লা, চাঁদপুর এবং মুন্সীগঞ্জ হয়ে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ডিপো পর্যন্ত তেল পৌঁছাবে। অন্য অংশটি ৮ দশমিক ২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ। এই অংশে ১০-ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইন দিয়ে গোদনাইল থেকে ফতুল্লা পর্যন্ত তেল পরিবহন করা হবে। পতেঙ্গা থেকে গোদনাইল পর্যন্ত ২২টি নদী ও খালের তলা দিয়ে এই পাইপলাইন গেছে।


আরও খবর

ভাতা পাবেন চব্বিশের আহতরা

মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫




ভেনিসে প্রবাস জীবন ও পরকালীন উন্নতি শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:সোমবার ০২ জুন 2০২5 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

পলাশ রহমান :

ইতালির ঐতিহ্যবাহী শহর ভেনিসে অনুষ্ঠিত হয়েছে “মর্যাদাপূর্ণ প্রবাস জীবন ও পরকালীন উন্নতি” শীর্ষক একটি ব্যতিক্রমধর্মী সেমিনার। শনিবার মাদরাসাতুল ইত্তিহাদ মিলনায়তনে শতাধিক বাংলাদেশি প্রবাসীর অংশগ্রহণে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে দেশপ্রেম, সামাজিক দায়িত্ববোধ ও নৈতিক জীবনযাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ও সমাজ বিশ্লেষক ইমতিয়াজ আহমদ সজল। তিনি বলেন, “একজন প্রবাসী শুধু তার মাতৃভূমির জন্য কাজ করেন না, বরং যে দেশে থাকেন, তার প্রতিও রয়েছে দায়বদ্ধতা। প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতির জন্য যেমন অক্সিজেন, একই ভাবে তারা রাজনৈতিক ও সামাজিক সংকটেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন।”


তিনি জুলাই অভ্যুত্থান ইস্যুতে ইতালি প্রবাসীদের সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, “বিভিন্ন দেশে সমাবেশ, বিক্ষোভ ও আন্তর্জাতিক জনমত গঠনে প্রবাসীরা বিশাল ভূমিকা রেখেছেন। এখন সময় এসেছে কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের চিন্তা বাস্তবায়ন করার। প্রবাসীদের চিন্তা ও অভিজ্ঞতা কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে বড় শক্তি হতে পারে।”


সেমিনারের সভাপতি মাওলানা আরিফ মাহমুদ বলেন, “শুধু অর্থ উপার্জনের জন্য প্রবাসে অবস্থান করা সঠিক নয়। একজন মুসলিম হিসেবে পরকালীন মুক্তির চিন্তা করতে হবে। নিজের জীবনকে পরিশুদ্ধ রাখতে হবে। ইসলামে 'হারাম' কাজ থেকে দুরে থাকতে হবে। মদ, জুয়া, সুদ ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে হবে।”


তিনি বলেন, “সুদভিত্তিক অর্থব্যবস্থা মানুষকে প্রতারণামূলক সহজ লোনের মাধ্যমে ফাঁদে ফেলে। এতে মানুষ আত্মিকভাবে ধ্বংস হয়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের বিভিন্ন জটিল রোগের মধ্যে অন্তত ৫ শতাংশের পেছনে মদ দায়ী। এটি আত্মমর্যাদা নষ্ট করে, সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, সড়ক দুর্ঘটনার হার ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয় এবং পরিবার ভেঙে দেয়।”


তিনি আরো বলেন, “একটি পাখি তার বাচ্চার মুখে ভালো খাবার তুলে দিতে দূর দূরান্তে উড়ে যায়, অথচ অনেক বাবা-মা হালাল-হারামের তোয়াক্কা না করে বাজার থেকে যা-তা কিনে সন্তানের মুখে তুলে দেন। এটি একজন মুসলিম অভিভাবকের জন্য খুবই দায়িত্বহীন আচরণ। পরকালীন ধ্বংশের পথ”


সেমিনারে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে আলোচনা করেন ডাক্তার সাজ্জাদ তিশাদ। তিনি বলেন, “ইতালিতে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আইন থাকলেও অনেক সময় তা মানা হয় না। শ্রমিকরা প্রয়োজনীয় সেফটি সরঞ্জাম ব্যবহার না করে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন, আবার মালিক পক্ষেরও রয়েছে অবহেলা। কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার শিকার হলেও অনেকে যথাযথভাবে হাসপাতালে যান না বা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করেন না। ফলে পরবর্তীতে তাদের জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।”


তরুণ গবেষক আবদুল্লাহ সম্রাট বলেন, “ইতালিয় শিক্ষা ব্যবস্থায় কয়েকটি ধাপ রয়েছে, যা জানা প্রতিটি অভিবাসী অভিভাবকের জন্য জরুরি। সন্তানের স্কুলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা, শিক্ষকের পরামর্শ নেওয়া এবং নৈতিক শিক্ষার প্রতি মনোযোগী হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। কারণ, এই সময়ের শিক্ষা ব্যবস্থা নৈতিকতার চেয়ে টেকনিক্যাল দক্ষতায় বেশি গুরুত্ব দেয়। সুতরাং পরিবার থেকেই সন্তানকে নৈতিক শিক্ষায় গড়ে তুলতে হবে।”


তিনি বলেন, “আজকের অনেক বাবা-মা সন্তানদের নৈতিক ভবিষ্যৎ গড়ার বিষয়ে উদাসীন, যা তাদের অন্ধকারে ঠেলে দেয়। একজন অভিভাবকের উচিত সন্তানের চরিত্র গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখা।”


ইতালির নাগরিক সেবা ও কমার্শিয়াল অ্যাসিস্টেন্ট কামরুল হাসান বলেন, “পৃথিবীর সব সম্পর্কেই দেওয়া-নেওয়ার বিষয় রয়েছে। অভিবাসীরা শ্রম দেন, ট্যাক্স দেন, বিনিময়ে রাষ্ট্র তাদের সুরক্ষা ও সুযোগ দেয়। এজন্য রাষ্ট্র ও অভিবাসীদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়া থাকা জরুরি।”


তিনি বলেন, “যদি কেউ ব্যবসায়ী হতে চান, তাহলে সাধারণ ব্যবসায়ী নয়, বরং এক্সপার্টদের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে হবে। আইন-কানুন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। 


কামরুল বলেন, ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, মুসলিম অভিবাসীরা কোথাও সমাজ বা রাষ্ট্রের জন্য বোঝা হয়নি। বরং স্পেনে মুসলিম আগমনের পরই ইউরোপ জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত হয়।”


তিনি আরো বলেন, “প্রত্যেক মুসলিম প্রবাসীর উচিত নিজেকে সব সময় আপডেট রাখা, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দক্ষতা অর্জন করা এবং নৈতিকতা থেকে বিচ্যুত না হওয়া।”


অনুষ্ঠানের আয়োজকরা জানান, প্রবাসীদের জীবন মান, নৈতিকতা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে নিয়মিত এমন অনুষ্ঠান আয়োজন অব্যাহত থাকবে।


আরও খবর



হাজিদের ফিরতি ফ্লাইট শুরু

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১০ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ২২ জুন ২০২৫ |

Image

পবিত্র হজের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। এখন হাজিরা সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আজ মঙ্গলবার (১০ জুন) থেকে শুরু হয়েছে বাংলাদেশি হাজিদের ফিরতি ফ্লাইট। চলবে ১০ জুলাই পর্যন্ত।

মিনায় শয়তানকে কঙ্কর নিক্ষেপ এবং কাবা ঘরে ফরজ তাওয়াফ শেষে মিনায় ফিরছেন হাজিরা। ফেরার পথে অনেকে পথ হারিয়ে আশ্রয় নেন মক্কার হজ মিশনে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে এ বছর ৮৭ হাজার ১৫৭ জন হজ পালন করেছেন। এর মধ্য ১৯ জন হজ যাত্রী মৃত্যুবরণ করেন। চলতি হজ মৌসুমে সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৪৩৬টি ভুয়া হজ এজেন্সি বন্ধ করে দিয়েছে এবং ৪৬২ জনকে আইন ভঙ্গ করায় গ্রেপ্তার করেছে।

এদিকে চলতি বছর পবিত্র হজ পালন করতে সৌদি আরবে গিয়ে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ১৮৮ বাংলাদেশি। এ ছাড়া ১৯ জন দেশটির সরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

এবার হজ অনুষ্ঠিত হয় ৫ জুন। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রার প্রথম ফ্লাইট ছিল ২৯ এপ্রিল আর হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রার শেষ ফ্লাইট ছিল ৩১ মে।


আরও খবর



ঝালকাঠিতে দেশীয় অস্ত্রসহ জমি দখলের চেষ্টা, এলাকায় চরম উত্তেজনা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১২ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

হাসিবুর রহমান,ঝালকাঠি প্রতিনিধি :

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার চরশুক্তাগড় এলাকায় দেশীয় অস্ত্রসহ শতাধিক লোক নিয়ে জমি দখলের চেষ্টার ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ রয়েছে, জমি দখলের সময় একটি পরিবারকে ঘিরে রেখে বাড়ির বাইরে বের হতে বাধা দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্র ও ভুক্তভোগীদের ভাষ্য মতে, চরশুক্তাগড় এলাকার বাসিন্দা জাফর আলী হাওলাদারের পৈত্রিক ও ক্রয়কৃত প্রায় ৫০ একর জমিতে একদল লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র—রামদা, বল্লম, লাঠিসোটা, হকিস্টিক ও লোহার রড নিয়ে প্রবেশ করে। এরপর তারা রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে জমিতে জোরপূর্বক ট্রাক্টর চালিয়ে চাষাবাদ শুরু করে। ঘটনাস্থলে নেতৃত্ব দেন স্থানীয় মাদ্রাসা শিক্ষক মাসুদুর রহমান, খায়রুল ইসলাম, আব্দুল হাই এবং আলতাফ।

জাফর আলী হাওলাদারের ছেলে রাকিব হোসেন অভিযোগ করে বলেন, “ওরা আমাদের বাড়ি ঘিরে ফেলে এবং হুমকি দেয়, আমরা যদি বাইরে যাই, তবে মেরে ফেলা হবে। সম্পূর্ণ বৈধভাবে মালিকানাধীন জমি তারা জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। এমনকি তারা গতকাল আমাদের তিনটি ছাগলও নিয়ে গেছে।”

অভিযুক্ত শিক্ষক মাসুদুর রহমান এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এই জমির প্রকৃত মালিক আমরা এবং আমাদের সঙ্গে এলাকার আরও অনেকে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে জাফর আলী আমাদের জমি জবরদখল করে রেখেছেন। আমরা আমাদের জমিতেই চাষাবাদ করছি।”

ঘটনার বিষয়ে রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা জানান, যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। তারা দ্রুত প্রশাসনের কার্যকর হস্তক্ষেপ কামনা করেছি।


আরও খবর



অন্তর্বর্তী সরকার ভালো কাজ করছে

প্রকাশিত:রবিবার ২২ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের মধ্যে লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অনুপ্রাণিত ও আশ্বস্ত হয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, বৈঠকে দুজনে কতগুলো বিষয়ে একমত হয়েছেন। নিঃসন্দেহে আমাদের সবার কাছে এটি অত্যন্ত আশার বাণী। আমরা আশা রাখছি, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে।

সেই সঙ্গে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভালো কাজ করছে। নিঃসন্দেহে তারা এরইমধ্যে অনেক ভালো কাজ করেছে এবং আমাদের পথ দেখাচ্ছে। আমরা আশা করব, যেসব রাজনৈতিক দল ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে ছিলাম, সবাই মিলে তাদের সহযোগিতা করব।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সংগ্রাম, জনগণের সংগ্রাম বলতে পারি- প্রাথমিকভাবে সফল হয়েছে। জনগণকে আমরা স্বপ্ন দেখাতে সক্ষম হয়েছি বাংলাদেশের একটি গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করার। জনগণের কাছে আমাদের এটাই ছিল প্রতিশ্রুতি। এই প্রতিশ্রুতি পালনে আমরা কাজ করে যাব। বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামোতে জনগণের স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব নয়। তাই আমরা ৩১ দফা দিয়েছি সবার সঙ্গে আলোচনা ভিত্তিতে। যাতে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ,সামাজিক আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসা যায়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত ১০ মাসে বাংলাদেশে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, তাতে আমরা একটু সন্দিহান হয়ে পড়েছিলাম যে শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়াবে। যখন আমরা দেখলাম এ আন্দোলনের প্রধান দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের একটা সভা হলো তখন আমরা অত্যন্ত অনুপ্রাণিত হয়েছি, আশ্বস্ত হয়েছি। আশা রাখছি সামনের ফেব্রুয়ারি মাসে একটা নির্বাচন হবে। এর মধ্য দিয়ে আমাদের আশাগুলো পূরণের সুযোগ হবে।

তিনি আরও বলেন, এখন সংস্কার কাজ এগিয়ে চলেছে। কতগুলো বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি, কতগুলো বিষয়ে একমত হচ্ছে না। যতগুলো বিষয়ে আমরা একমত হব সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করব। আর যেগুলোতে একমত হওয়া যাচ্ছে না, সেগুলো নিয়ে নির্বাচনের পরে আলোচনা করব। সেগুলোতে আমরা একমত হব।

রোববার (২২ জুন) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদনের জমার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তাদের প্রতি আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। এই তরুণেরা, যারা বিগত আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন, যাদের সহকর্মীরা, কমরেডরা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছেন- আমরা বিশ্বাস করি তাদের নেতৃত্ব আমাদের লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, মিজানুর রহমান, ডেএসডির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ উদ্দিন স্বপন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।


আরও খবর

ইসির নিবন্ধন চায় ১৪৭টি দল

মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫




প্রধান শিক্ষিকা ও তার স্বামীকে হত্যার হুমকির অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে

প্রকাশিত:শুক্রবার ৩০ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ২৩ জুন ২০২৫ |

Image

হাসিবুর রহমান, ঝালকাঠি প্রতিনিধি :

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় এক প্রধান শিক্ষিকা ও তার স্বামীকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতা ও সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. শহিদ খানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ওই শিক্ষিকা ও তার পরিবার।

ভুক্তভোগী পশ্চিম সুবিদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা বেগম গত ২৭ মে (মঙ্গলবার) নলছিটি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, শহিদ খান দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজের বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থ আত্মসাতের অপচেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন।

সম্প্রতি বিদ্যালয়ের উন্নয়নে পাওয়া ২৯ হাজার টাকা খরচের পর ২১ মে বিকেল ৩টার দিকে শহিদ খান বিদ্যালয়ে এসে উক্ত টাকার হিসাব চান। তবে তিনি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য না হওয়ায় প্রধান শিক্ষিকা তার কাছে হিসাব দেওয়ার যৌক্তিকতা জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তখন অন্যান্য শিক্ষকদের উপস্থিতিতে শহিদ খান তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন।

পরদিন বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের জানালে তা বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এরপর ২৩ মে দুপুর দেড়টার দিকে শহিদ খান ৩০-৪০ জন লোক নিয়ে বিদ্যালয়ের সামনে গিয়ে শিক্ষিকার নাম ধরে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। সেদিন শিক্ষিকা ছুটিতে থাকলেও তিনি উপস্থিত লোকজনের সামনে শিক্ষিকা ও তার স্বামীকে হত্যার হুমকি দেন এবং চাকরিচ্যুত করার হুমকিও প্রদান করেন বলে অভিযোগে বলা হয়।

শিক্ষিকা খাদিজা বেগম জানান, শহিদ খান ও তার অনুসারীদের হুমকির কারণে তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এবং তারা ঘর থেকে বের হতে সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরেও লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি শহিদ খানের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা মো. শহিদ খান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এসব অনিয়মের প্রতিবাদে স্থানীয়রা ২৫ মে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।

নলছিটি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুস সালাম বলেন, “প্রধান শিক্ষিকা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, এর আগেও শহিদ খানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও ত্রাণের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগ কেন্দ্রীয় মহাসচিবসহ দলের বিভিন্ন দপ্তরে পৌঁছালেও এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এতে স্থানীয় বিএনপির অনেক নেতাকর্মীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

তাদের দাবি, একজন দায়িত্বশীল নেতার এমন কর্মকাণ্ড দলীয় ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। অবিলম্বে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এর দায় দলকে বহন করতে হতে পারে।


আরও খবর