ডেস্ক রিপোর্ট: সারাদেশে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ - ২০২৩ উদযাপিত হয়েছে তারই ধারাবাহিকতায় গজারিয়া উপজেলায় কলেজ পর্যায়ে উপজেলার শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক (কারিগরি) নির্বাচিত হওয়ার পর এবার কলেজ পর্যায়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা পর্যায়েও শ্রেষ্ঠ শ্রেণি-শিক্ষক (কারিগরি) নির্বাচিত হয়েছেন গজারিয়া ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির জিস্ট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের চিফ ইন্সট্রাক্টর (ইলেকট্রিক্যাল) রিফাত শিকদার।
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, কারিগরি শিক্ষায় কলেজ পর্যায়ে তিনি জেলার শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন। অভিজ্ঞতা, শিক্ষার মান উন্নয়ন, দক্ষতা, শিক্ষাবান্ধব ও উদ্ভাবনী উৎকর্ষসহ নানা ক্যাটাগরি বিবেচনায় তাঁকে জেলার শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক (কারিগরি) নির্বাচিত করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রিফাত শিকদার মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের সাতকাহনিয়া গ্রামে ০২ আগষ্ট ১৯৯৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন।স্থানীয় ব্যবসায়ী সেলিম শিকদার এর একমাত্র ছেলে রিফাত শিকদার। ছেলেবেলা থেকেই প্রকৌশল বিদ্যা নিয়ে পড়ার ইচ্ছে পোষণ করেন। ছোটবেলায় ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে ঘাটাঘাটির পর প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন বুনেন। বর্তমানে নিজেকে গবেষণার সাথে সম্পৃক্ত করতে চান, হতে চান একজন সফল গবেষক। রেখে যেতে চান মানুষের জন্য রাত জাগা ভালোবাসা অর্থাৎ কষ্টার্জিত গবেষণা। অধম্য পরিশ্রমী এবং মেধাবী এই শিক্ষক নিজের স্বপ্ন গুলো বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে এসএসসির পরিক্ষায় উর্ত্তীন হওয়ার পর ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (ইলেকট্রনিক্স বিভাগ) এবং বিএসসি-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগ) সফলতার সাথে সম্পন্ন করেন।
গুণী এই শিক্ষকের সাথে একান্ত আলাপ কালে তিনি বলেন, পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম আমার বাবার পূর্ণ সমর্থন না থাকলে আমার এ পর্যন্ত আসা হয়তো সম্ভব হতো না। ছেলেবেলা থেকেই আমার বাবা আমাকে অনুপ্রেরণা দিতেন মানুষের কল্যাণে কাজ করার জন্য এমনকি নিজের ক্ষুদ্র জীবনকে মানুষের কল্যাণেই নিবেদন করার জন্য বলতেন। সে থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেকে শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত করে নিয়েছি। আমি মনে করি, শিক্ষকতা পেশায় থেকে মানুষের জন্য কল্যাণমূলক কাজ যতটা করা যায়, অন্য পেশায় থেকে অতটা সম্ভব হয়ে উঠে না। আমি শিক্ষকতার পাশাপাশি এখন গবেষণায় মন দিতে চাচ্ছি।
তিনি আরও জানান, শিক্ষকতা পেশায় আসার পর থেকেই গবেষক হওয়ার ইচ্ছেটা ঝুঁকে বসেছে। বই পড়া ও বই সংগ্রহের প্রতি অনেক ঝোঁক রয়েছে এই শিক্ষকের। তাই অবসর সময়ে তিনি বই পড়তে পছন্দ করেন। সেজন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাসায় বইয়ের পাঠাগার বানাচ্ছেন। সংগ্রহ করছেন গবেষণা সম্পর্কিত বই পুস্তক। গবেষণার ধরণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানে ব্যবহৃত যন্ত্রসমূহ উন্নয়ন নিয়ে গবেষণা করবেন যদি ভবিষ্যতে বিস্তর গবেষণা করার সুযোগ পায়।
এই বিষয়ে জিস্ট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের রেজিস্টার ইঞ্জিঃ সৈয়দ মোহাম্মদ শাকিল বলেন রিফাত শিকদার জিস্ট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে যুক্ত হওয়ার পরপরই কারিগরি শিক্ষার মান উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন অবিরত। একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কারিগরি শিক্ষাকে কিভাবে অগ্রগামী করা যায় সেই লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন এই শিক্ষক। ৪র্থ শিল্প বিপ্লবকে সামনে রেখে কারিগরি শিক্ষাকে সম্মুখ ভাগের শিক্ষায় উন্নিত এবং কারিগরি শিক্ষার হার বৃদ্ধির লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিচ্ছেন তিনি।
এই বিষয়ে জিস্ট পলিটেকনিকের অধ্যক্ষ ইঞ্জিঃ মামুন শরীফ বলেন শিক্ষক হিসাবে রিফাত শিকদার অত্যন্ত বিনয়ী এবং পরিশ্রমী। এই গুণী শিক্ষক সমাজ ও মানুষের কল্যাণে নিজেকে পরিবেশিত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। রিফাত শিকদার কলেজ পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক (কারিগরি) নির্বাচিত হওয়ায়, তাঁর সহকর্মী শিক্ষকগণ তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এছাড়াও দক্ষকতার বিচারে এবং প্রতিষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতা ও শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয় এ শিক্ষক নির্বাচিত হওয়ায় আমরা সবাই সেই সাথে জেল উপজেলার বিভিন্ন মহল তাঁকে অভিনন্দন ও শুভ কামনা জানিয়েছে।