মইনুল ইসলাম মিতুল : জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়ানোর সঙ্গে সমন্বয় করে ঢাকা মহানগরীসহ সারাদেশে গণ-পরিবহনের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। তবে গতকালও সড়কে বাড়েনি বাসের সংখ্যা। এতে শনিবার, রবিবার কর্মব্যস্ত রাজধানীতে মানুষের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। সরকারিভাবে বাস ভাড়া বাড়ানোর পরও যানবাহন কম দেখা গেছে সড়কে। এর নেপথ্যের কারণ দুটি বলে বিভিন্ন ব্যক্তি ও বাস শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপে জানা গেছে। গণ-পরিবহন ও দূরপাল্লার বাস ভাড়া বাড়ানোর পাশাপাশি শ্রমিকদের বেতনভাতা বাড়ানোর ইস্যুতে এ কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে। এ দিকে ড্রাইভার ও কনডাকটারদের মজুরি না বৃদ্ধি করায় গতকাল অনেকেই কাজে যোগ দেননি।
সূত্র বলছে, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অর্থরিটির (বিআরটিএ) সঙ্গে ভাড়া সমন্বয় করতে শনিবার রাতে বৈঠকে বসেছিল সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতা ও পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। ওই বৈঠকেও বাসা ভাড়া বাড়ানো ও শ্রমিকদের বেতনভাতা সমন্বয় করতে বিতর্কে জড়ায় তারা। এই বিতর্কের বলি এখন সাধারণ মানুষ।
বাসযাত্রী আল ইমরান বলেন ‘‘বাসের ভাড়া আদায়কারীরা সরকারের বেধে দেওয়া ভাড়ার রেট মানছেন না। তারা ইচ্ছামত ১০ টাকার ভাড়া বিশ টাকা এবং বিশ টাকার ভাড়া ৪০-৫০ টাকা আদায় করছে। এবং বেশি ভাড়া দিতে না চাইলে যাত্রীর অপমান করছে। বাস থেকে নামিয়ে দিচ্ছে।’’
গত শুক্রবার জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়ানো হয়। শনিবার রাজধানীতে সড়কে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছিল গণপরিবহন। পরিবহন সংকটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছিল সাধারণ মানুষ। এ দিন হাতে গোনা কিছু বাস চললেও বেশিরভাগই নামেনি সড়কে। বিআরটিএ ও পরিবহন মালিকদের বৈঠক থেকে ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয় শনিবার রাত সাড়ে ১০টায়। গতকাল রবিবার থেকে নতুন ভাড়া কার্যকর হয়েছে। বর্ধিত এই ভাড়া ঢাকায় ১৬ শতাংশ এবং দেশের অন্য স্থানে ২২ শতাংশ বাড়ানো হয় । এতেও খুশি নন বাস-ট্রামের মালিকরা। তারা এই দুমূল্যের বাজারে বাস ড্রাইভার ও কনডাকটরদের মজুরি বাড়াতে রাজি নন। এ কারণে গতকালও দুর্ভোগ পোহাতে হয়ে সাধারণ মানুষের।
এই দূর্ভোেগের বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতুল্লাহ গণ-পরিবহনের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, কোথাও এ সংকট নেই। জ্বালানি তেলের উর্ধ্বগতির কারণে অনেক মালিক বাস নামায়নি। এ পেছনে অসৎ কোনো উদ্দেশ্যে নেই। দু-একদিন গেলেই এ সংকটও দূর হবে।
শ্রমিকদের বেতনভাতা বাড়ানো প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ খোকন বলেন, বাস ভাড়া বাড়ালে শ্রমিকদের বেতনভাতার প্রসঙ্গটি আসে। অতত্রব সব ক্ষেত্রে সমন্বয় হওয়া জরুরি। তারা জানিয়েছেন, বাস মালিকপক্ষের কাছ থেকে গতকাল পর্যন্ত বেতন বাড়ানোর কোনও আশ্বাস তারা পাননি। এ কারণে অনেক শ্রমিক কাজে যোগ দেয়নি। রাজধানীর সড়কে বাস ও যানবাহন কম থাকার এটাও একটা কারণ।