Logo
শিরোনাম

কওমি উদ্যোক্তার’ পঞ্চম বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:সোমবার ০৩ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

মোহাম্মদ হাছানুজ্জামান :

জমকালো আয়োজনে রাজধানীর কাকরাইল ইনস্টিটিউশন অফ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে হাজারো কওমি আলেম ও বেকারদের ব্যবসার পথ দেখিয়ে সাড়া জাগানো প্রতিষ্ঠান ‘কওমি উদ্যোক্তার’ পঞ্চম বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো গত ২ জুন ২০২৪ (রোববার)। 

পূর্বে রেজিস্ট্রেশনকৃত উদ্যোক্তারা অত্যন্ত শৃঙ্খলার সাথে অংশগ্রহণ করেন।  মূল অনুষ্ঠান সকাল ১০:০০ টায় শুরু হওয়ার সময় থাকলেও দেশের ৬৪ জেলা থেকে পাঁচশতাধিক উদ্যোক্তা অনুষ্ঠান স্থলে আসন গ্রহণ করেন অনুষ্ঠান শুরুর ১ ঘণ্টা আগেই। ২০২০ সালে বৈশ্বিক মহামারী করোনার সময় মসজিদ-মাদরাসা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন যখন স্থবির হয়ে যায় তখন মাওলানা রোকন রাইয়ানসহ কয়েকজন তরুণ আলেমের হাত ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘কওমি উদ্যোক্তা’ নামে একটি গ্রুপ খোলার মাধ্যমে এ প্রতিষ্ঠানের সূচনা হয়। মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে এ গ্রুপে প্রায় ৩ লাখ সদস্য যুক্ত হয়ে নিয়মিত কেনাবেচা করতে থাকেন। পর্যায়ক্রমে তারা বিভিন্ন ক্যাম্পেইন ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আলেম উদ্যোক্তা তৈরিতে বিরাট ভূমিকা রাখেন। হাজারো আলেম উলামা ও বেকার মানুষ ‘কওমি উদ্যোক্তা’র মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শায়খ আহমাদুল্লাহ আলেম উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি যদি একেবারে কম টাকা বিনিয়োগে ব্যবসা শুরু করেন, তাহলে শুরুতে এসব ছোটখাটো পণ্য বিক্রিতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু ভবিষ্যতে প্রায় সব ধরনের পণ্য বিক্রিতে আলেমদের মনোযোগী হতে হবে। শুধু কালোজিরা আর মধু বিক্রি করলে হবে না। যুগোপযোগি সকল হালাল ব্যবসায়ে কওমি আলেমদের এগিয়ে আসতে হবে। এ সময় শায়েখ আহমাদুল্লাহ কওমি উদ্যোক্তার ভূয়সী প্রশংসা করে নিজেও আগামী এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে ব্যবসা শুরুর কথা জানান। 


সম্মেলনে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন এমপি বলেন, আমি এত এত আলেম উদ্যোক্তা দেখে গর্ববোধ করছি। আপনারা দেশকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যান। দেশকে শক্তিশালী করতে পারে তরুণ উদ্যোক্তারা। কারণ তাদের মধ্যে উদ্ভাবনী শক্তি আছে। তাই কেউ বসে থাকবেন না। সাহস নিয়ে নতুন কিছু শুরু করেন। সাকসেস আসবেই। 

স্টোরেক্স এর চেয়ারম্যান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন আগামীতে এই সম্মেলন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দেখতে চাই্। 

কওমি উদ্যোক্তার কো-ফাউন্ডার হাফেজ মুমিনুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, দেশের বেকার তরুনদের পাশে দাড়াইতেই কওমি উদ্যোক্তার প্রতিষ্ঠা। আমরা স্বপ্ন দেখি একটি বেকারমুক্ত বাংলাদেশের। 

কওমি উদ্যোক্তার ফাউন্ডার মাওলানা রোকন রাইয়ান তার বক্তব্যে বলেন, চলমান কার্যক্রম ভবিষ্যতে আরো সুগঠিত ও সুচারুরূপে সারাদেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া হবে এবং সকল উদ্যোক্তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য আরো যুগোপযোগি ও  উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে ইনশাআল্লাহ। 

অনুষ্ঠানের কাণ্ডারি কওমি উদ্যোক্তার ফাউন্ডার মাওলানা রোকন রাইয়ানের সভাপতিত্বে ও লোকমান গাজীর সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আসসুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ, বিশেষ অতিথি ছিলেন আইনজীবী ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এমপি, বিশিষ্ট আলোচক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মাওলানা শরীফ মুহাম্মাদ, বাংলাদেশ আই হসপিটাল মালিবাগের ডিরেক্টর ডা: মাসুদ হাশমী, বিশিষ্ট আলোচক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মাওলানা সাইমুম সাদী, বিজনেস মেন্টর কোচ কাঞ্চন, কন্টেন্ট কিংয়ের ফাউন্ডার মুহাম্মদ ইকরাম, লেখক-সাংবাদিক ও উদ্যোক্তা মাওলানা মিরাজ রহমান, উইট ইনিস্টিউটের ফাউন্ডার নাজিব রাফে, আলেম উদ্যোক্তা ও স্পিকার গাজী সানাউল্লাহ রাহমানী, আওয়ার ইসলাম ২৪ ডটকম সম্পাদক মুফতি হুমায়ুন আইয়ুব, কলরব শিল্পীগোষ্ঠীর নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ বদরুজ্জামান, ইয়েস২০ স্কুলের প্রেসিডেন্ট মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, স্টেডফাস্ট কুরিয়ার লিমিটেডের ফাউন্ডার কে এম রিদওয়ানুল বারী জিওন, আলফ্রেড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ হাছানুজ্জামান মাসউদ সহ আরো উপস্থিত ছিলেন ছোট-বড় পাঁচ শতাধিক উদ্যোক্তা ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।


আরও খবর



মুন্সীগঞ্জে আমাদের বাড়ি…

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২২ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

কাওসার চৌধুরী, লেখক, গবেষক, নির্মাতা :

মুনশিগঞ্জে ‘আমাদের বাড়ি’ হলেও ‘আমার বাড়ি’ কিন্তু মহেশখালির মাতারবাড়িতেই। বিষয়টি একটু গোলমেলে ঠেকছে তো? জ্বী, পরিষ্কার করে দিচ্ছি এক্ষুণি।   

মাতারবাড়িতে আমার জন্ম। আমার চৌদ্দ পুরুষ মাতারবাড়িতে জন্ম নিয়েছেন, মাতারবাড়ির কাদামাটি জল-হাওয়ায় জীবন যাপন করেছেন; অত:পর বিদায় নিয়েছেন। 

অপরপক্ষে, আমাদের এক বন্ধু- তাঁদের জন্মস্থান মুনশিগঞ্জে একটি বাড়ি তৈরি করেছেন ক’বছর আগে। আট ভাইবোনের এই বাড়িটির তারা নাম দিয়েছেন- ‘আমাদের বাড়ি’। বন্ধু-মহাশয়ের নিমন্ত্রণে সেই বাড়িতে গিয়েছিলাম গত শীতের সময়ে- সম্ভবত ১৮ জানুয়ারি (২০২৫) শনিবারে। বন্ধুবরের বাড়ির নামটি এতটাই চমকপ্রদ যে, ‘আমার বাড়ি’ আর ‘আমাদের বাড়ি’ নিয়ে চমৎকার একটি ধাঁধা হয়ে গেলো :-) ! বলিহারি- এই নাম যিনি দিয়েছেন। 

খুবই সুন্দর একটি বাড়ি করেছেন তারা। বেশ দৃষ্টিনন্দন। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধুটি তাঁদের বাড়ি দেখতে নিমন্ত্রণ করে আসছিলেন। কিন্তু তাঁরই সময়ের সীমাবদ্ধতার কারনে আমার আর যাওয়া হচ্ছিলনা! গত বছরের ডিসেম্বরে অনুজপ্রতীম এক বন্ধুর সাথে গিয়েছিলাম মানিকগঞ্জে; তার নাটকের শুটিং উপলক্ষে। ফিরে এসে বেশ মজা করে লিখেছিলাম সারাদিনের অনুভূতি নিয়ে। 


সেটা দেখে আমার এই বন্ধুটি বেশ উদ্দীপ্ত হন, উতলে উঠে তাঁর নিমন্ত্রণের আকাঙ্ক্ষা। সেই নিমন্ত্রণ রক্ষা করতেই সেদিন গিয়েছিলাম তাঁদের বাড়ি- ‘আমাদের বাড়ি’তে। 


কথা ছিল খুব সকালেই যাত্রা করবো ঢাকা থেকে। কিন্তু আমারই আলসেমিতে একটু দেরি হয়ে গেলো যাত্রা করতে। বন্ধুটি তার গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন ধানমণ্ডি ২৭ নম্বর সড়কের মাঝামাঝি, বেঙ্গলের উল্টোদিকে। আমি একটু গজগম্ভীর চালে হেলেদুলে কিছুটা দেরিতেই গিয়ে উঠি তার গাড়িতে। গাড়ি চলতে শুরু করে মুনশীগঞ্জের উদ্দেশ্যে। 


ও হ্যাঁ, আমার বন্ধুটির সাথে আপনাদের পরিচয়্টাই করিয়ে দেওয়া হয়নি এতক্ষণ; মার্জনা করবেন। উনার নাম আব্দুল হালিম খান। চাকুরী, ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যকার সব কম্ম সেরে এখন অবসর জীবন যাপন করছেন অন্য দশজন বাঙালির মতো। তবে উনার সবচেয়ে বড়ো পরিচয়- তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্যালুট হালিম ভাই।  


পরিচয়টা হয়েছিলো বেঙ্গলেই-‘বঙ্গীয়’ সাংষ্কৃতিক সংগঠনের প্রাণ পুরুষ,  লেখক কামরুল ইসলামের মাধ্যমেই। সেই থেকে শুরু। হালিম ভাই বেশ সদালাপী, আড্ডাবাজ এবং মহৎ হৃদয়ের অধিকারী। 


ফিরে আসি আমাদের মুনশিগঞ্জ-যাত্রায়। ভেবেছিলাম মাঝপথে রাস্তার পাশে কোন ছাপরা দোকানে চা-পান করবো এটা-ওটা দিয়ে। কিন্তু হালিম সাহেবের নিষেধে আমরা সরাসরি চলে যাই মুনশিগঞ্জেই। উনি লোভ দেখালেন বাড়ীতে পৌঁছে খেজুর রস আর পিঠাপুলি দিয়ে সকালের নাশ্তা করার। কিন্তু বিধি বাম! কী একটা কারনে সেটা আর হয়ে উঠেনি সেদিন! চা আর বিষ্কুট দিয়েই নাশ্তা-পর্ব সমাপ্ত হলো। 


এবারে বাড়িটি ঘুরে দেখার পালা। 

বাড়িটি যতটা না সুন্দর তার চাইতে দশ গুণ বেশী সুন্দর বাড়ির চারপাশের বিস্তৃত পরিবেশ আর আয়োজন। ফুলের বাগান আর ফল-ফলারের গাছের পাশাপাশি পারিবারিক আড্ডা, বনভোজনের আয়োজন আছে বিশাল এই প্রান্তরে। কয়েক বিঘা জমির উপোরে গড়ে উঠা এই কমপ্লেক্সের অন্যতম আয়োজন হলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একটি পারিবারিক মিলনায়তন এবং অনন্যসাধারণ একটি পাঠাগার। 


এই পাঠাগারের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে অসাধারণ সুন্দর একটি নদী- ইছামতি। যদিও প্রায় শুকনো তখোন- অনেকটাই হাজামজা! কিন্তু চোখ বন্ধ করে একটু অনুভব করার চেষ্টা করলেই বোঝা যায়- বর্ষাকালে এই ইছামতির স্রোতের তেজ আর প্রমত্ত্বতা কতখানি থাকে! নিশ্চয়ই দু’কূল ভাসিয়ে উন্মাদিনীর মতো বয়ে চলে বর্ষাকালে! আহা নদী, আহা বর্ষা; আহা আমার বাংলাদেশ!  


পাঠাগারের পাশে, নদীর কোলঘেঁষেই তৈরি হয়েছে একটি আড্ডা-চত্ত্বর। অনেকটাই শান-বাঁধানো পুকুর ঘাটের আদলে। বাড়ির সমতল উচ্চতা থেকে একটু নিচে- অনেকগুলো সিঁড়ি-ধাপ নেমে গেছে ইছামতিতে, একদম পানির স্তর পর্যন্ত! আশেপাশে বিভিন্ন জাতের ক’টি গাছ আর তার পাশে কিছু লতাগুল্ম- একটি মায়া (illusion) তৈরি করে রেখেছে অলক্ষ্যে! সে এক ‘ভয়ানক সুন্দর’ পরিবেশ! দেখেই মনটা ভরে যায়। ইচ্ছে হলো, থেকে যাই ক’টা দিন! এই ঘাটে বসেই গোধুলি আর সূর্যাস্তটা দেখবো। গভীর রাতে তারাভরা আকাশটা একটু দেখবো প্রাণভরে। কল্পনায় শুনবো ইছামতির ভরা যৌবনের তরঙের ধ্বণি! আর, প্রাণখুলে একটু গান গাইবো বেসুরো গলায়! ……কিন্তু বাসনাটুকু কেন জানি প্রকাশ করতে মন উঠলোনা :-) ! চেপে গেলাম! আহারে মন, অবুঝ মন!   


এই চত্ত্বরে বসলে অনেক দূর পর্যন্ত দৃষ্টি চলে যায়- বিনা বাধায়। ঢাকা শহরে বসে তো জানালায় ফুচকী দিয়ে টুকরো টুকরো ভাঙ্গা ভাঙ্গা আকাশ দেখতে হয়! কিন্তু এই আড্ডা-চত্ত্বরে বসে দৃষ্টি মেলে ধরলেই বোঝা যায়- ‘আকাশ’ আজও তার আগের মাপেই আছে- দিগন্তজোড়া! কোন ‘কাট-ছাট’ করতে পারেনি কেউ; দখল করতে পারেনি এতটুকু! নদী দখলদার কিংবা ভূমি-দস্যুরা এখানটায়, এই আকাশের কাছে এসে- একদম ধরা, caught হয়ে গেছে :-) !  


জেনেছি, একাত্তরে এই নদী দিয়েই যাতায়াত করেছে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ। কখনো এখান থেকে ওখানে; আবার কখনোবা গিয়েছে কোন অপারেশনে। হালিম ভাইয়ের বোনের মুখে শুনেছি- একাত্তরে উনি নিজেই নাকি ৮/১০টি মুরগী রান্না করে, প্রচুর পরিমানে রুটি সেঁকে রেখে দিতেন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য। রাতের কোন এক প্রহরে মুক্তি-সেনা কিংবা তাদের লোকজন এসে নিয়ে যেতো সেসব খাবার। উনাদের মা দু’হাত তুলে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করতেন মুক্তিফৌজের নিরাপত্তা আর সাফল্যের জন্য।  


উনাদের পরিবারের অনেকেই কোন না কোনভাবে যুক্ত ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। আমি উনাদের সবাইকে অভিবাদন জানাই। কিন্তু হালিম ভাই এই চ্যাপ্টারটা কেনো জানি একটু ‘চেপে যেতে’ চান কখনো-সখনো! কী কারনে এটা করেন- জানি না, বুঝিনা! হয়তো আমার সাথে ‘মজা’ করেন; কিংবা আমায় একটু বাজিয়ে দেখেন এই বিষয়ে :-) ! 


কেনো এত ভয়, কীসের এতো ভয়, কাকে এতো ভয়- আমি বুঝতে পারিনা! মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে একাত্তরে ‘শপথ’ গ্রহনের সময়, নিজের জীবনটা আগাম ‘উৎসর্গ’ করেই তো যুদ্ধে গিয়েছিলো প্রতিটি যোদ্ধা। যুদ্ধের মাঠেই তো চলে যেতে পারতো ‘প্রাণ’! সে ক্ষেত্রে, স্বাধীনতা পরবর্তী বিগত ৫৩ বছর তো বরং আমাদের extended life, অতিরিক্ত কিংবা সম্প্রসারিত জীবন কেটেছে- বলতে হবে! 


কতো বড়ো সৌভাগ্যবান আমরা! শুধু এইটুকুর জন্যই তো দেশের মাটি এবং মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা জানানো উচিৎ! উচিৎ, মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে হাজারো কৃতজ্ঞতা জানানো।  


আচ্ছা বলুন তো, এই গ্রহের ক’খানা দেশ ‘যুদ্ধ’ করে স্বাধীন হয়েছে? খুবই অল্পক’টা মাত্র! এই সাতচল্লিশের কথাই ধরুণ না। ১৪ আগস্টে, আপোষে বৃটিশের পতাকা নেমেছে আর পাকিস্তানের পতাকা উঠেছে। ১৫ আগস্টে বৃটিশের পতাকা নেমেছে আপোষে, আর ভারতের পতাকা উড়েছে আকাশে। এরপরে দুই দেশের সাথে হ্যাণ্ডশেক করে বৃটিশরা তাদের রাজতরীতে চড়ে পাড়ি দিয়েছে নিজদেশে। এইতো কাহিনী!


কিন্তু একাত্তরে আমরা আপোষ করে দেশ নেইনি। যুদ্ধ করে জিতেছি। নয় মাসের যুদ্ধে বিজয় অর্জন করেই পেয়েছি স্বাধীনতা। কিন্তু তিরিশ লক্ষ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে এই জন্যে। দুই লক্ষ মা-বোন ধর্ষণের শিকার হয়েছে! এক কোটি মানুষ শরণার্থীর জীবন যাপন করেছে ভারতে। লক্ষ লক্ষ মানুষ গৃহহারা হয়েছে দেশের ভেতরেই। বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ শহীদ হয়েছে। দেশের মানুষ নির্যাতনের শিকার হয়েছে, মানবতা বিরোধী কর্মকাণ্ডের শিকার হয়েছে তারা- দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী আর রাজাকার আলবদরদের হাতে! 


** এত ত্যাগ তিথিক্ষার পরেই তবে আমরা অর্জন করেছি কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। অর্জন করেছি আমাদের মানচিত্র, আমাদের সঙ্গীত আর লাল-সবুজ পতাকা। আমরা দাম দিয়ে কিনেছি বাংলাদেশ, কারো দানে নয়। 


আমার দৃঢ বিশ্বাস- হালিম ভাই হয়তোবা আমাকে একটু উষ্ণ করবার জন্যই আমাকে খুঁচিয়েছেন প্রসঙ্গটি ওভাবে উত্থাপন করে! যাক। 


হালিম ভাইদের বাড়ীতে সবচাইতে ঋদ্ধ যে বিষয়টি আমার নজরে এসেছে- সেটা হলো উনাদের পাঠাগার। খুবই সমৃদ্ধ একটি পাঠাগার এটি। হালিম ভাইয়ের কাছেই জেনেছি- এই পাঠাগারের জন্ম ১৯৬৯ সালের ১৪ এপ্রিল (১ বৈশাখ, ১৩৭৬ বঙ্গাব্দ)। সেই থেকে আজ অব্দি এই পাঠাগারে বই সঞ্চিত হয়েছে প্রায় ছয় হাজার। বাংলা সাহিত্যের হেন কোন কবি-লেখক বাকী নেই- যার বই এই পাঠাগারে স্থান পায়নি।  


কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম থেকে শুরু করে বঙ্কিম, শরৎচন্দ্র, জীবনানন্দ, পঞ্চকবি, পঞ্চ পাণ্ডব- সবার বই-ই আছে এই পাঠাগারে। তারাশংকর বন্দোপাধ্যায়, শীর্শেন্দু, বুদ্ধদেব বসু, বুদ্ধ দেব দাস গুপ্ত, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, জয় গোস্বামী- কার গ্রন্থ নেই ওখানে! আমাদের দেশের শওকত ওসমান, সৈয়দ শামসুল হক, নির্মলেন্দু গুণ, মহাদেব সাহা, ইমদাদুল হক মিলন, হুমায়ূন আহমেদ, হাসান হাফিজ, আবুল হাসান, রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, শওকত আলী, আকতারুজ্জামান ইলিয়াস, মুহম্মদ জাফর ইকবালসহ প্রায় প্রতিটি লেখকের বই এই পাঠাগারকে করেছে সমৃদ্ধ। বাংলাদেশী লেখকদের অধিকাংশরাই কিন্তু নিজেদের উদ্যোগেই এই পাঠাগারে তাদের বইয়ের 'সেট' প্রদান করেছে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।  


এমন সমৃদ্ধ একটি পাঠাগার নিয়ে আমার একটি অভিমান আছে, অনুযোগ আছে হালিম ভাইদের কাছে। এমন একটি পাঠাগার- সীমাবদ্ধ হয়ে আছে সপ্তায় মাত্র দুই দিনের মধ্যে! অর্থাৎ হালিম ভাইদের কেউ সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অর্থাৎ শুধুমাত্র শুক্র-শনিবারে বাড়িতে গেলেই কেবল এই পাঠাগারটি খোলা হয়ে থাকে। ভাইদের মধ্যে কেউ না গেলে ওই দুই দিনসহ পুরো সপ্তাহ-ই বন্ধ থাকে পাঠাগারটি! 


অথচ উনাদের গ্রামে আছে ছয়টি স্কুল এবং একটা কলেজ। এখানকার শিক্ষার্থীরা এই পাঠাগারের ‘উপকার’ থেকে বঞ্চিত থাকে সপ্তায় প্রায় পুরো সাত-দিনই। তথাকথিত ‘গ্লোবালাইজেশনের’ নামে, ‘ডিজিটালাইজেশনে’র নামে আমাদের তরুণরা এমনিতেই বই থেকে দূরে! সারাক্ষণ পড়ে থাকে মোবাইল ফোন কিংবা ইন্টারনেটে! সে জায়গায় এতবড়ো সুযোগ থাকার পরেও শুধুমাত্র যথাযথ উদ্যোগের অভাবে এত সমৃদ্ধ পাঠাগারটি নির্জীব হয়ে আছে; পড়ে আছে মৃত!  

তারওপরে, ওখানে যেতে হলে উনাদের বাড়ির ‘প্রাইভেসী’ ভেঙ্গে যেতে হয় লাইব্রেরীতে। কারন, লাইব্রেরীর লোকেশনটাই হয়েছে ওভাবে। এই প্রাইভেট লোকেশন ওখানে ‘পাঠক-সাধারণে’র অভিগম্যতা বিঘ্ন করেছে নিদারুনভাবে। 

হালিম ভাইয়ের প্রতি আমার বিনীত অনুরোধ থাকবে- সর্ব সাধারণের জন্য, বিশেষত গ্রামের স্কুল এবং কলেজের শিক্ষার্থীদের অভিগম্যতা নিশ্চিত করার জন্য যা করা প্রয়োজন- সেটা করবেন। নইলে এতবড়ো, মহান এই আয়োজন হয়ে পুড়বে নিষ্প্রাণ নির্জীব এবং অর্থহীন! আমি আশা করবো, আমার বিনীত অনুরোধটি হালিম ভাই আন্তরিক বিবেচনায় রাখবেন। 


এই পাঠাগারের সবচেয়ে মূল্যবান সংগ্রহটি হলো- আমাদের বাহাত্তরের সংবিধানের একটি কপি। যাদের জানা নেই তাদের জন্য বলছি, বাহাত্তরের সংবিধান কিন্তু ছাপানো কোন সংবিধান/গ্রন্থ নয়! বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে শিল্পী আব্দুর রউফ এই পুরো সংবিধানটি হাতেই লিখেছিলেন। 


এই সংবিধানের প্রতিটি পাতায় কিন্তু আলপনা করা আছে। এই সংবিধানের অঙ্গসজ্জা করেছিলেন শিল্পী হাশেম খান। পুরো কর্মটির তত্ত্বাবধানে ছিলেন শিল্পী জ্যনুল আবেদীন। অংকনের কাজটি করেছিলেন শিল্পী জুনাবুল ইসলাম, সমরজিৎ রায় চৌধুরী এবং আবুল বারাক আলভী। 


আরো চমকপ্রদ বিষয় হলো- এই সংবিধানে- তিয়াত্তরে নির্বাচিত ৩০০ (তিন’শ) জন সংসদ সদস্যের স্বাক্ষর খচিত আছে। আগ্রহীরা এর একটি কপি নিজের সংগ্রহে রাখতে পারেন। এটা বাজারে পাওয়া যায়। 


কথায় কথায় লেখাটি অনেক বড়ো হয়ে গেলো। জানিনা, সবাই পুরো লেখাটি পড়তে আগ্রহী হবেন কীনা। তারপরেও বলছি- এই পর্যন্ত যারা দাঁতে দাঁত চেপে পড়ে ফেলেছেন- তাঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। য়ামি তাঁদের অভিবাদন জানাই।


অনেক ভালো থাকুন বন্ধুগণ। তবুও ভালো থাকুন সবাই। 

হালিম ভাইকে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই- ‘আমাদের বাড়িতে’ নিয়ে যাবার জন্যে। আপনাদের জয় হোক হালিম ভাই। 

বাঙালির জয় অবশ্যম্ভাবী। 

জয় বাংলা। শুভরাত্রি। 

-----------------------------------

আমার নিজের ছবিগুলো বাদে বাকী ছবিগুলো আমারই তোলা।


আরও খবর



ঈদযাত্রা নিরাপদ করার লক্ষ্যে সেতু বিভাগের নির্দেশনা

প্রকাশিত:বুধবার ২১ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের স্থাপনা ব্যবহার করে চলাচলকারী যাত্রীসাধারণের যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে সেতু বিভাগের সম্মেলন কক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ। জুম অনলাইন প্ল্যাটফর্মে যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন সাইট অফিসের কর্মকর্তারা, সাইট অফিসসংশ্লিষ্ট জেলার প্রশাসন, রেঞ্জ পুলিশ, সিএমপি ও সংশ্লিষ্ট হাইওয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

সভায় সচিব ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রাপথে সেতুর উভয় প্রান্তে ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ইটিসি) সিস্টেম অর্থাৎ ইটিসি টোল বুথ চালু রাখার নির্দেশনা প্রদান করেন, যাতে ইটিসি কার্ডধারী গাড়িগুলো নির্বিঘ্নে দ্রুত সেতু পার হতে পারে। এছাড়া সেতু বিভাগের অধীন সব সেতু/স্থাপনায় সার্ভিল্যান্স সিস্টেমের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারসেকশনগুলোর ট্র্যাফিক পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক তদারকি এবং মনিটরিং-এর জন্য টোল প্লাজা ও টোলবুথে সিসিটিভি ক্যামেরা চালু রাখার জন্য নির্দেশনা দেন।

বর্ণিত বিষয়ে গত ১২ মে সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সভাপতিত্বে সভার গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো অনুযায়ী জনসাধারণের ঈদযাত্রা নিরাপদ, স্বস্তিদায়ক, নির্বিঘ্ন, আনন্দদায়ক ও দুর্ঘটনামুক্ত করার বিষয়ে সচিব সভায় গুরুত্ব আরোপ করেন। বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোর কাজের জন্য যেন সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেজন্য অতিরিক্ত জনবল নিযুক্ত করে যথাযথভাবে ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনা এবং ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ও যানবাহনে অতিরিক্ত যাত্রী বহন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে তৎপর হওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন।

সচিব দ্রুত টোল পরিশোধের সুবিধার্থে টোল বুথে প্রয়োজনীয় অংকের ভাংতি টাকার সংস্থান রাখা এবং ঈদযাত্রায় ফিটনেসবিহীন/লাইসেন্সবিহীন গাড়ি সেতু/স্থাপনাতে ও সড়কে চলাচল করার কারণে যেন যানজট সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে গাড়ির মালিক, গাড়িচালক ও যাত্রীসাধারণের সহযোগিতা কামনা করেন।

সভায় সিমেন্ট, রড, পাথর ও বালু বহনকারী ট্রাকগুলো ঈদুল আজহার আগে ও পরে সাত দিন চলাচল সীমিত রাখা এবং তিন দিন আগে থেকে চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়। তবে খাদ্যদ্রব্য, ওষুধ, জ্বালানি, পচনশীল নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহনকারী গাড়িগুলোর পণ্য পরিবহন এবং নির্মাণকাজে যেন বিঘ্ন না ঘটে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সচিব নির্দেশনা দেন।

পাশাপাশি কোরবানির পশু বহনকারী গাড়িগুলোকে Weighing Scale Machine-এর আওতামুক্ত রাখা এবং রাস্তায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির ঘটনা বিবেচনায় কোরবানির পশু ব্যবসায়ী ও যাত্রী সাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের বিভিন্ন বিভাগের সহযোগিতা কামনা করেন।



আরও খবর

৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা

মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫




ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীতে ফিরছেন মানুষ

প্রকাশিত:শনিবার ১৪ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

পরিবারের সঙ্গে ঈদুল আজহা উদযাপন শেষে রাজধানী ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবী মানুষ। নৌ, সড়ক ও রেলপথে গত দুদিন ধরেই যাত্রীদের চাপ দেখা গেছে। আগামীকাল রবিবার থেকে অফিস-আদালত খুলে যাবে। ছুটির শেষদিন আজ শনিবার বেশিরভাগ মানুষ ঢাকায় প্রবেশ করছেন।

কমলাপুর রেলস্টেশনে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। কেউ এসেছেন সপরিবার, কেউ একা। তবে গত দুই দিনের তুলনায় আজ যাত্রীর ভিড় ছিল বেশি।

কমলাপুর রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, ঈদ-পরবর্তী আমাদের যে কর্মসূচি ছিল তা এখনো অব্যাহত রয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, যাতে সময়মতো ট্রেন আসা-যাওয়া নিশ্চিত করা যায়। এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেনি।

এছাড়া সড়ক পথে গুলিস্তান, গাবতলী, ফুলবাড়িয়া, সায়েদাবাদ, ধোলাইরপাড় ও রায়েরবাগ এলাকায় দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। কাপড়ের ব্যাগ ও কোরবানির মাংস হাতে ঢাকায় ফিরছেন চাকরিজীবী, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

গুলিস্তানে দেখা গেছে, বাস ও মাইক্রোবাস থেকে শত শত মানুষ নামছেন। তারপর রিকশা, অটোরিকশা বা লোকাল বাসে করে যাচ্ছে নিজ গন্তব্যে।

বাংলাদেশ বাস মালিক সমিতির সদস্য তোফায়েল হোসেন বলেন, প্রতি ঈদের আগে-পরে বাসে মানুষের চাপ বাড়ে। এবার ছুটি লম্বা হওয়ায় অনেকেই দেরিতে ফিরছেন। অতিরিক্ত বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যাত্রীসংখ্যা এত বেশি, সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

এদিকে সকালে দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে যাত্রী বোঝাই করে সদরঘাটে ভিড়তে থাকে লঞ্চগুলো। ভাড়া নিয়ে কোনো অভিযোগ না থাকলেও অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাদের। ভ্যাপসা গরম আর পরিবহন সংকটে কেউ কেউ হয়রানির শিকার হলেও এবারের ঈদে লম্বা ছুটি থাকায় যাত্রীদের তেমন ভোগান্তি হয়নি।


আরও খবর

৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা

মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫




ইরানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতায় লিপ্ত মুসলিম দেশগুলো

প্রকাশিত:রবিবার ১৫ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ছোড়া ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিজেদের আকাশসীমায় ভূপাতিত করছে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশ জর্ডান। এছাড়াও ইরানের হামলা চালানোর জন্য ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলোকে নিজেদের আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতিও দিয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বেশিরভাগ আরব রাষ্ট্র যখন ইরানের প্রতি সংহতি জানাচ্ছে জর্ডান কেন এর বিপরীত।

প্রকৃতপক্ষে, জর্ডানের জনসংখ্যার ২০ থেকে ৫০ শতাংশ ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত, যার মধ্যে দেশটির রানী রানিয়াও রয়েছেন- যিনি গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের স্পষ্ট বিরোধী ছিলেন। তবুও বেশিরভাগ আরব দেশের বিপরীতে, জর্ডান ঠিক বিপরীতভাবে কাজ করছে। জর্ডানের বিমান বাহিনী তাদের আকাশসীমা অতিক্রম করে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তুতে অভিমুখে আসা ইরানি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে বাধা দিচ্ছে এবং গুলি করে ভূপাতিত করছে বলে জানা গেছে।

জর্ডান প্রকৃতপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রধান নন-ন্যাটো মিত্র। ২০২১ সালের শুরুতে জর্ডান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী সামরিক প্রশিক্ষণ, অনুশীলন কৌশল এবং ট্রানজিটের মতো বিভিন্ন কার্যকলাপের জন্য মার্কিন সামরিক কর্মীদের জন্য জর্ডানে নিরবচ্ছিন্ন প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে এতে জর্ডানের যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে কোনো সামরিক অভিযানে সহায়তার কোনো প্রতিশ্রুতি নেই।

অন্যদিকে ১৯৯৪ সালের ইসরায়েলের সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তি করে জর্ডান, তবে দুটি দেশের মধ্যে একে অপরকে সামরিকভাবে সমর্থন করার কথা উল্লেখ নেই।

মধ্যপ্রাচ্য-ভিত্তিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার ক্ষেত্রে জর্ডানের সিদ্ধান্তের পিছনে অন্যান্য কারণও রয়েছে। কিছু ড্রোন, অথবা ব্যালিস্টিক এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, ইসরায়েলের ওপর না পড়ে জর্ডানের ভূখণ্ডে পড়েতে পারে। আম্মানের যুক্তি তারা ইসরায়েলকে সমর্থন করার চাইতে ইরানের ভুলভাবে ছোড়া ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র থেকে নিজস্ব ভূখণ্ডকে রক্ষা করছে।

জর্ডানের সেনাবাহিনী বলছে, তারা মূল্যায়ন করেছে ইরানের ছোড়া কোন ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাতে পারে এবং কোনগুলো জর্ডানে অবতরণ করতে পারে।

তবে ইরানের আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষায় জর্ডানের অংশগ্রহণের কারণ যাই হোক না কেন, তা ইসরায়েল এবং তার বন্ধুদের সম্মিলিত প্রতিরক্ষামূলক প্রচেষ্টাকে সাহায্য করেছে- যার ফলে ইসরায়েলের দিকে ছোড়া বোশর ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন তাদের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে ব্যর্থ হয়েছে। এর জন্য, ইসরায়েল জর্ডানের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ।


আরও খবর



জরুরী সতর্কতা: আসুন আমরা আবার মাস্ক পরা শুরু করি

প্রকাশিত:বুধবার ১১ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

কারণ করোনা তথা  COVID-Omicron XBB আগের ভ্যারিয়েন্টগুলোর তুলনায় ভিন্ন ও বিপজ্জনক। এটি সহজে শনাক্তও হয় না, তাই সবার মাস্ক পরা অত্যন্ত জরুরি।

১. COVID-Omicron XBB এর নতুন উপসর্গগুলো:

i) কাশি নেই।

ii) জ্বর নেই।

বেশিরভাগ উপসর্গ হলো—

iii) অস্থিসন্ধিতে ব্যথা।

iv) মাথাব্যথা।

v) গলাব্যথা।

vi) পিঠে ব্যথা।

vii) নিউমোনিয়া।

viii) ক্ষুধা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়া।


২. এই ভ্যারিয়েন্টটি ডেল্টার চেয়ে ৫ গুণ বেশি বিষাক্ত এবং মৃত্যুহারও বেশি।


৩. উপসর্গগুলো খুব অল্প সময়েই মারাত্মক আকার ধারণ করে এবং কখনও কখনও কোনো স্পষ্ট উপসর্গ না দেখিয়েই অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে।


৪. তাই আরও বেশি সতর্ক থাকা প্রয়োজন।


এই ভ্যারিয়েন্টটি নাসোফ্যারেঞ্জিয়াল (নাকের গভীর অংশ) অঞ্চলে পাওয়া যায় না, বরং সরাসরি ফুসফুসের “উইন্ডো” অংশে আঘাত করে এবং নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়।


৫. কিছু রোগীর মধ্যে জ্বর বা ব্যথা না থাকলেও এক্স-রে করলে মৃদু নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এছাড়া নাক দিয়ে নেয়া স্যাম্পলে (সোয়াব) পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল আসছে, যা পরীক্ষায় ভুল রিপোর্ট (ফলস নেগেটিভ) এর সংখ্যা বাড়াচ্ছে। এ কারণে এই ভাইরাসকে ‘ধূর্ত’ বলা হচ্ছে।


এর মানে হলো— এটি সহজেই ছড়িয়ে পড়ে, সরাসরি ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়, ভাইরাল নিউমোনিয়া সৃষ্টি করে এবং তীব্র শ্বাসকষ্ট তৈরি করে। এই কারণে COVID-Omicron XBB এত বেশি ছোঁয়াচে ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে।


৬. যতটা সম্ভব ভিড় এড়িয়ে চলুন, খোলা জায়গাতেও অন্তত ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখুন, সঠিকভাবে মাস্ক পরুন, এবং নিয়মিত হাত ধুয়ে ফেলুন—even যদি কাশি বা হাঁচি না থাকে।


এই COVID-Omicron XBB "ওয়েভ" প্রথম COVID-19 মহামারির চেয়েও ভয়াবহ।

সতর্কতা, সচেতনতা ও বৈচিত্র্যময় সুরক্ষা ব্যবস্থাই আমাদের রক্ষা করতে পারে।


আরও খবর