Logo
শিরোনাম

কোরবানির পশু নির্বাচনে ইসলামের নির্দেশনা

প্রকাশিত:সোমবার ২৬ জুন ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

কোরবানি ইসলামের অন্যতম একটি শিআর বা নিদর্শন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে—‘তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশে নামাজ আদায় করো ও পশু কোরবানি করো।’ (সুরা : কাউসার, আয়াত : ২) কোরবানির রক্ত প্রবাহিত করার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জিত হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না উহার (জন্তুর) গোশত এবং রক্ত, বরং পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া।’ (সুরা : হজ, আয়াত : ৩৭)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকার পরও কোরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছে না আসে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১২৩)

রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলার নিকট কোরবানির দিন মানবজাতির কোরবানি অপেক্ষা অধিকতর পছন্দনীয় কোনো আমল নেই। বিচারদিনে কোরবানির পশুকে তার শিং, পশম ও খুরসহ উপস্থিত করা হবে। পশুর রক্ত জমিনে পড়ার পূর্বেই আল্লাহর কাছে তা বিশেষ মর্যাদায় পৌঁছে যায়, সুতরাং তোমরা আনন্দচিত্তে কোরবানি করো। (তিরমিজি, হাদিস : ১৩৯১)

এসব আয়াত ও হাদিস স্পষ্টতই কোরবানির অপরিহার্য প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব প্রমাণ করে। সুতরাং ইসলামের অন্যতম নিদর্শন এই ইবাদতটি সম্পাদনের মূল উপলক্ষ কোরবানির জন্তু নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের সর্বাধিক সতর্কতা ও সচেতনতা একান্ত কাম্য।

আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা বলেন, ‘আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য কোরবানির নিয়ম নির্ধারণ করে দিয়েছি। জীবনোপকরণ স্বরূপ তাদের যেসব ‘বাহিমাতুল আনআম’ দিয়েছি সেগুলোর ওপর তারা যেন আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।’ (সুরা : হজ, আয়াত : ৩৪)

কোরবানি দিতে হবে শরিয়ত যে ধরনের পশু অনুমোদন করে সেগুলো দিয়ে। যেমন—উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদি দিয়ে। এ ধরনের পশুকে কোরআনের ভাষায় বলা হয় ‘বাহিমাতুল আনআম’ অর্থাৎ ‘অহিংস্র গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু’। এই ছয় প্রকার পশু ছাড়া অন্য কোনো পশু দ্বারা কোরবানি করা যায় না। কোরবানির জন্য ছাগল, ভেড়া ও দুম্বার বয়স এক বছর হতে হবে।

আর গরু ও মহিষের বয়স দুই বছর এবং উটের বয়স পাঁচ বছর হতে হবে। দুম্বার এক বছর পূর্ণ না হলেও যদি এক বছরের মতো হৃষ্টপুষ্ট হয় তাহলে কোরবানি করা যাবে। উল্লিখিত পশুগুলো নর, মাদি বা বন্ধ্যা যা-ই হোক তা দ্বারা কোরবানি শুদ্ধ হবে।

আবু যাহহাক উবায়দ ইবন ফায়রুজ (রহ.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বারা (রা.)-কে বললাম, যে সকল পশু কোরবানি করতে রাসুলুল্লাহ (সা.) নিষেধ করেছেন, তা আমার নিকট বর্ণনা করুন। তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) (খুতবা দিতে) দাঁড়ালেন আর আমার হাত তাঁর হাত অপেক্ষা ছোট। তিনি বললেন, চার প্রকার পশু কোরবানি বৈধ নয়, কানা পশু যার কানা হওয়াটা সুস্পষ্ট, রুগ্ণ পশু যার রোগ সুস্পষ্ট, খোঁড়া পশু যার খোঁড়া হওয়া সুস্পষ্ট; দুর্বল, যার হাড়ে মজ্জা নেই। আমি বললাম, আমি শিং ও দাঁতে ত্রুটি থাকাও পছন্দ করি না। তিনি বলেন, তুমি যা অপছন্দ করো, তা ত্যাগ করো; কিন্তু অন্য লোকের জন্য তা হারাম কোরো না। (নাসায়ি, হাদিস : ৪৩৭০)

আলী (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের আদেশ করেছেন, আমরা যেন কোরবানির পশুর চোখ ও কান উত্তমরূপে দেখে নিই। আর আমরা যেন কানের অগ্রভাগ কাটা, কানের পেছন দিক কাটা, লেজ কাটা এবং কানের গোড়া থেকে কাটা পশু কোরবানি না করি। (নাসায়ি, হাদিস : ৪৩৭৩)

শরিয়তের পরামর্শ হলো, হৃষ্টপুষ্ট, বেশি গোশত, নিখুঁত এবং দেখতে সুন্দর পশু কোরবানি করা। কোরবানির পশু সব ধরনের দোষত্রুটিমুক্ত হওয়া উত্তম। কোনো খুঁত থাকলে সে পশু কোরবানি করা উচিত নয়। যে পশুতে এমন কোনো খুঁত বা অপূর্ণতা রয়েছে যার কারণে এটির উপযোগিতা কমে যায় ও মূল্য হ্রাস পায়, তেমন পশু করবানি করা যাবে না।

ভেড়া, দুম্বা, ছাগল এসব পশু একজনের পক্ষ থেকে কোরবানি করা যাবে। উট, গরু, মহিষ এগুলোর একেকটিতে সর্বোচ্চ সাতজন কোরবানি করতে পারবেন।

একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য শরিয়ত নির্দেশিত মত ও পথে আমাদের সবার কোরবানি বাস্তবায়িত হোক।


আরও খবর



নওগাঁয় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা

প্রকাশিত:বুধবার ২০ নভেম্বর ২০24 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁ জেলা শহরের সুলতানপুর মহল্লায় এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বাড়ির পাশে জমি নিয়ে বিরোধ ও সেই জমিতে রোপন কৃত গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে এই হত্যাকান্ড হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। প্রকাশ্যে কুপিয়ে এই হত্যার ঘটনা ঘটে বুধবার সকালে।

স্থানীয় সুত্র জানান, বাড়ির পাশে একটি জমির সীমানা নিয়ে প্রতিবেশী মান্নানের সাথে নজরুলের দীর্ঘ দিনের দন্দ চলছিলো। বুধবার সকালে নজরুলের রোপন করা কয়েকটি আম গাছ মান্নান কাটলে এনিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ বাধে।  বিবাদের এক পর্যায়ে মান্নান ধারালো ছুড়ি-বটি দিয়ে নজরুল কে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় নজরুল কে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায় নজরুল। নিহত নজরুলের বোন আঞ্জুয়ারা অভিযোগ করে বলেন, দ্বন্দ্বের জেরে মান্নান ও তার পরিবারের লোকজন প্রায়ই নজরুল কে হত্যার হুমকি দিতো। সেই উদ্দেশ্য থেকে তারা পরিকল্পিত ভাবে ঝগড়ায় জড়িয়ে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। এ ঘটনার দৃষ্টান্ত মূলক বিচারও দাবি করেন তিনি।

এহত্যাকান্ডের খবর পেয়ে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান, গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল মান্নান, নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নূরে আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পরই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট অন্তে মৃতদেহ উদ্ধার পূর্বক ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছেন।

নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান জানান, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। হত্যার ঘটনায় নওগাঁ সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করার পস্তুতি চলছে। এছাড়া ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত আটক পূর্বক আইনের আওতায় নিতে পুলিশ কাজ করছে।


আরও খবর



রোজায় বাজার সহনশীল রাখার চেষ্টা করা হবে

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ নভেম্বর 20২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

রমজানকে সামনে রেখে বাজার ব্যবস্থা সহনশীল রাখতে সরকার চেষ্টায় থাকবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, চাহিদা এবং জোগানের বিষয়কে যেন একটা সমানুপাতিক হারে রাখতে পারি। এ জন্য সহযোগিতা এবং দোয়া কামনা করছি। ইতোমধ্যে দেশে চিনি, তেল ও পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে বলেও জানান তিনি।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রয়াত সদস্যদের সন্তানদের মধ্যে শিক্ষাভাতা বিতরণ অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

স্বৈরশাসক হাসিনার সরকারের সমালোচনা করে শেখ বশির বলেন, দেশে বিগত ১৫ বছরে একটি ক্রিমিনালাইজেশন সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। রাষ্ট্রের মধ্যে আমাদের সমাজ অসম্ভবভাবে বিভিক্ত ছিল। ভীতসন্ত্রস্ত ছিল।

তিনি বলেন, আজকে ক্রিমিনালাইজেশন ইজ এভরি সেক্টর, ব্যবসা-ব্যাকিং হোক, সাংবাদিকতা হোক-আমাদের জাতীয় মসজিদের খতিব পালিয়ে গেছে। এমন একটা অবস্থা থেকে ছাত্রজনতার আন্দোলনের ওপর ভিত্তি করে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংগঠিত হয়েছে। উদ্দেশ্যটা হচ্ছে কীভাবে একটা মর্যাদাপূর্ণ সমাজে আমরা রূপান্তরিত করতে পারি।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শুক্কুর আলী শুভর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ।


আরও খবর

দাম বাড়ল সয়াবিন তেলের

সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪




৯ দিনে রেমিট্যান্স এলো ৭ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১২ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাইয়ে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তার পরের মাসগুলোতে কিছুটা করে বেড়েছে রেমিট্যান্সের পরিমাণ। সেপ্টেম্বরের মতো সদস্য বিদায়ী অক্টোবর মাসেও প্রবাসী আয়ের গতি ঊর্ধ্বমুখী ছিল। অক্টোবরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ২৪০ কোটি ডলার।

চলতি মাস নভেম্বরেও রেমিট্যান্সের গতি প্রবাহ ভালো। নভেম্বরের প্রথম ৯ দিনে এসেছে ৬৫ কোটি ৫০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২০ টাকা ধরে) এর পরিমাণ প্রায় ৭ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা। এ সময়ে প্রতিদিন গড়ে এসেছে ৮৭৩ কোটি টাকার বেশি প্রবাসী আয়।

রোববার (১০ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, চলতি মাস নভেম্বরের ৯ দিনে এসেছে ৬৫ কোটি ৫০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে প্রায় ২০ কোটি ডলার। বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩ কোট ১৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৪২ কোটি ১৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এছাড়া ১৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার এসেছে বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে।

তবে এ সময়ের মধ্যে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি এমন ব্যাংকের সংখ্যা ১১টি। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাবাক)। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেনস ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক ও সীমান্ত ব্যাংক। এছাড়া বিদেশি খাতের মধ্যে রয়েছে ব্যাংক আল-ফালাহ, হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।

এর আগে আগের মাস সেপ্টেম্বরের পুরো সময়ে ২৪০ কোটি ৪৮ লাখ ডলার (২.৪০ বিলিয়ন) পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২০ টাকা হিসাবে) ২৮ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকার বেশি। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে ১৯০ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স আসে। এছাড়া জুন মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ মার্কিন ডলার।

তার আগের মাস মে মাসে আসে ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। এছাড়া এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ, মার্চে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ, ফেব্রুয়া‌রি‌তে ২১৬ কো‌টি ৪৫ লাখ এবং জানুয়ারিতে ২১১ কোটি ৩১ লাখ মার্কিন ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

এর আগে দেশের ইতিহাসে একক মাসে সর্বোচ্চ ২৬০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২০ সালের জুলাই মাসে। বছরওয়ারি হিসাবে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে ২০২০-২১ অর্থবছরে। ওই অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স আসে ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার। এছাড়া চলতি বছরের জুন মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে মোট ২৫৪ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় দেশে এসেছে।


আরও খবর

দাম বাড়ল সয়াবিন তেলের

সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪




ঢাকায় হঠাৎ উধাও বোতলজাত সয়াবিন তেল!

প্রকাশিত:শনিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

রাজধানীর বাজারগুলোতে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে বেশ কিছু দিন ধরেই। এবার সেই সংকট আরও বেশি ঘনীভূত হয়েছে। বাজারে এক ও দুই লিটারের বোতল প্রায় ৯০ শতাংশ উধাও। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ক্রেতারা।

বিক্রেতাদের অভিযোগ, চাহিদার মাত্র ১০ শতাংশ তেল দেওয়া হচ্ছে তাদের। বাজারে কয়েকটি কোম্পানি ছাড়া অন্য ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। যা পাওয়া যাচ্ছে, তা পর্যাপ্ত নয়। বিশেষ করে এক ও দুই লিটারের বোতলের সরবরাহ একেবারেই কম।

কারওয়ান বাজারের মুদি দোকনি নোমান বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে চাহিদামতো বোতলজাত সয়াবিন তেল পাচ্ছি না। যার কারণে অন্য মালামাল বিক্রি করতেও সমস্যা হচ্ছে। মূলত দাম বাড়াতেই কোম্পানি ও ডিলাররা মিলে এমন কারসাজি করছে।

বাজারে তেল কিনতে আসা তোফায়েল বলেন, কয়েকটি দোকানে গিয়ে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাইনি। কিছু দোকানে পাওয়া গেলেও বিক্রি করছে না। বাধ্য হয়ে বাড়তি দামে খোলা সয়াবিন কিনতে হচ্ছে।

আমদানিকারক ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি, বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার কারণে তেল সরবরাহ কমেছে। বিশ্ববাজারের হিসাবে লিটারে ১০ থেকে ১৩ টাকা বেড়েছে। চাহিদার তুলনায় আমদানি কমেছে ২০ শতাংশের মতো।

এ বিষয়ে ভোক্তার নির্বাহী পরিচালক মো. খলিলুর রহমান সজল বলেন, মূল্য সংযোজন কর কমানোসহ নানা সুবিধা দেওয়ার পরও সরবরাহকারী কম্পানিগুলো তেলের দাম না কমিয়ে উল্টো সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এখনই ব্যবস্থা না নিলে এবারের রমজানে পরিস্থিতি আরও অস্বস্তিকর হতে পারে।

উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে সয়াবিন ও পাম তেল আমদানিতে দুই দফায় শুল্ক-কর কমায় সরকার। মূলত, কোনো পণ্যের ওপর শুল্ক-কর কমানো মানে ওই পণ্যের আমদানি বাড়বে এবং দাম কমবে। কিন্তু দেশের বাজারে পণ্যটির দাম কমার বিপরীতে উল্টো বাড়তে দেখা যায়।


আরও খবর

ঢাকায় নাগরিক সেবা পেতে ভোগান্তি

শনিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪

ছুটির দিনে বায়ুদূষণের শীর্ষে ঢাকা

শুক্রবার ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪




স্বস্তি ফিরেছে তৈরি পোশাকশিল্পে

প্রকাশিত:শনিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক। সাম্প্রতিক সময়ে এই শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষে কারখানা বন্ধসহ নানা অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়। এই অস্থিরতা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। তবে এসব অস্থিরতার ধকল অনেকটা কাটিয়ে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে দেশের রপ্তানি খাত। এর ফলে বাড়ছে দেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে। 


বাংলাদেশ থেকে শুধু নভেম্বর মাসে ৩৩০ কোটি ৬১ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের নভেম্বরের তুলনায় ৪৭ কোটি ডলার বেশি। আগের বছরের নভেম্বর মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়ে ছিল ২৮৪ কোটি ৪০ ডলার। মাস হিসাবে চলতি বছরের নভেম্বরে এই রপ্তানি বেড়েছে ১৬.২৫ শতাংশ। তৈরি পোশাক ছাড়া অন্য খাতের রপ্তানিও গত নভেম্বরে বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের সামগ্রিক পণ্য রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। 

   

ইপিবি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত পাঁচ মাসে সামগ্রিক পণ্য রপ্তানির ৮১ শতাংশ তৈরি পোশাক খাত থেকে এসেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) তৈরি পোশাক থেকে রপ্তানি আয় হয়েছেহাজার ৬১১ কোটি ৭১ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিলহাজার ৪৩৪ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। এক্ষেত্রে আগের বছরের চেয়ে রপ্তানি বেড়েছে বেড়েছে ১২.৩৪ শতাংশ। এর মধ্যে শুধু নভেম্বরেই ১৭৪ কোটি ডলারের নিট পোশাক রপ্তানি হয়। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ। অন্যদিকে গত মাসে ওভেন পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১৫৭ কোটি ডলারের। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ।


ইপিবি বলছে, গত পাঁচ মাসে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি আয় এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। দেশটিতে রপ্তানি হয়েছে ৩৫৭ কোটি ২৬ লাখ ডলারের পণ্য। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা জার্মানিতে রপ্তানি হয়েছে ২১০ কোটি ৮৭ লাখ ডলারের পণ্য। এরপর রয়েছে যুক্তরাজ্য, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ইত্যাদি দেশ।

জানা গেছে, দেশের তৈরি পোশাক খাতে ন্যূনতম মজুরির দাবিতে চলেছে অস্থিরতা। এখনো এই অস্থিরতা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। বিভিন্ন দাবিতে এখন ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরে চলছে শ্রমিক অসন্তোষ কর্মবিরতি। এসব সমস্যার পরও রপ্তানির ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে পোশাক খাত। 

পোশাক শিল্পমালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ গত ১৯শে অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর পোশাক শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে অন্তত ৪০ কোটি ডলারের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। 

ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, জুলাই-আগস্টে ব্যবসা-বাণিজ্যে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছিল। সেখান থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য এখন অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। পণ্য রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।


ভাইস চেয়ারম্যান আরো বলেন, পণ্য বহুমুখীকরণ নিয়ে কাজ হচ্ছে। তবে কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। নীতি সহায়তা ব্যবসার কিছু ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণে বিভিন্ন খাতের রপ্তানি বাড়ানোর সম্ভাবনা থাকলেও তা কাজে লাগাতে পারছে না বাংলাদেশ। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভালো করছে। নিয়ে তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের সময় কারখানায় গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটের মধ্যেও শ্রমিক-মালিকরা উৎপাদন চালু রেখেছেন। মূলত তাদের কঠোর পরিশ্রমে রপ্তানিতে ভালো ফল এসেছে। তা ছাড়া এখন রপ্তানিরপিক সিজন সামনে খ্রিষ্টানদের বড়দিনসহ বিভিন্ন উৎসব রয়েছে। ছাড়া বিগত সময়ের ক্রয়াদেশগুলোও সময় সম্পন্ন হয়েছে। সব কারণে রপ্তানি বেড়েছে। 

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে। শিল্প এলাকায় যৌথবাহিনী মোতায়েন থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এসব উদ্যোগ রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রভাব রেখেছে। যদিও কয়েকটি কারখানায় শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধিসহ নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন হয়েছে। 

নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আমাদের ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এরপরও রপ্তানি আয় বাড়ায় আমরা খুশি। তবে আমাদের অর্ডার কিন্তু কমছে। জানি না আগামী মাসগুলোতে কী হবে। তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিরতার মধ্য দিয়ে গেছে। আমাদের হিসাবে জুলাই মাসের মধ্যে এক সপ্তাহেই পোশাক শিল্পে ক্ষতি হয়েছেবিলিয়ন ডলারের উপরে। আর ব্যাংক বন্ধ থাকায় তো রপ্তানির উপর সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এই অস্থিরতা-অনিশ্চয়তা না থাকলে আমাদের রপ্তানি আরও বাড়তো। 

রিজার্ভ বাড়ছেরপ্তানি আয় রেমিট্যান্স বাড়ায় রিজার্ভও বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) ১লা হাজার ১১৩ কোটি ৭৩ লাখ (১১.১৪ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স এসেছে দেশে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৬.৪৪ শতাংশ বেশি। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন) হিসাবে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ১৮.৭৩ বিলিয়ন ডলার।গ্রসহিসাবে ছিল ২৪.৪৫ বিলিয়ন ডলার।

এক সপ্তাহ আগে ২০শে নভেম্বর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১৮.৫০ বিলিয়ন ডলার।গ্রসহিসাবে রিজার্ভ ছিল ২৪.২৭ বিলিয়ন ডলার। দুই সপ্তাহ আগে ১৪ নভেম্বর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ১৮.৪৪ বিলিয়ন ডলার।গ্রসহিসাবে ছিল ২৪.১৭ বিলিয়ন ডলার। হিসাবে দেখা যাচ্ছে, সপ্তাহের ব্যবধানে বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ বেড়েছে ২৩ কোটি ডলার। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ৩০ কোটি ডলার।

 


আরও খবর