Logo
শিরোনাম

কঠিন হয়ে পড়ছে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা

প্রকাশিত:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

দেশে ডলার সংকটের কারণে গত বছর জটিলতায় পড়ে যান বিদেশগামী অনেক শিক্ষার্থী। ওই সময় অনেক ব্যাংক বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি পরিশোধের জন্য স্টুডেন্ট ফাইল খুলতে গড়িমসি করে। ডলারের সে সংকট এখনো কাটেনি। এর মধ্যে নতুন করে ডলারের বিপরীতে টাকার ক্রমাগত অবমূল্যায়ন বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণকে আরো কঠিন করে ‍তুলেছে।

শিক্ষা খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুধু বিদেশে নয়, টাকা অবমূল্যায়নের কারণে যে মূল্যস্ফীতি হচ্ছে, তার প্রভাবে দেশেও শিক্ষার ব্যয় আরো বেড়ে যেতে পারে। 

ইউনেসকোর হিসাব অনুযায়ী, ২০২১ সালে উচ্চ শিক্ষায় বিদেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৫২ হাজার ৭৯৯ জন। কয়েক বছর ধরে এ সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে ২০২১-এর তুলনায় ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৬০ শতাংশ। সাধারণত দেশের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও টিউশন ফিসহ আনুষঙ্গিক খরচ ডলারে পরিশোধ করতে হয়। 

বিদেশে উচ্চ শিক্ষাপ্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা মূলত দেশের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে খরচ পাঠান। ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বিশেষ ব্যাংক হিসাবের (স্টুডেন্ট ফাইল) মাধ্যমে বিদেশে এ অর্থ পাঠান। এছাড়া কয়েকটি দেশের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলার শিক্ষার্থীদের বিশেষ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ফিক্সড ডিপোজিট হিসেবে দেখাতে হয়। ফলে কোনো দেশের মুদ্রার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার বাড়লে ওই দেশের শিক্ষার্থীদের বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যয় বেড়ে যায়।

গত ৮ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনে ডলারের নতুন বিনিময় হার নির্ধারণ করা হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বর্তমানে প্রতি ডলারের দর ১১৭ টাকা। এর আগে মুদ্রাটির বিনিময় হার ছিল ১১০ টাকা। এছাড়া জানুয়ারি ২০২০ থেকে চলতি মাস পর্যন্ত টাকার বিপরীতে ডলারের দর বেড়েছে প্রায় ৩৮ শতাংশ। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে প্রতি ডলারের দর ছিল ৮৪ টাকা ৯০ পয়সা। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বিদেশে উচ্চ শিক্ষা বাবদ গত তিন অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলে লেনদেনের পরিমাণ ১৩০ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। এর মধ্যে ২০২১-২২ অর্থবছরে লেনদেন হয় ৪১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। পরের অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫১ কোটি ৯৯ লাখ (প্রক্ষেপিত) ডলারে। আর চলতি অর্থবছরে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঠানো হয়েছে ৩৭ কোটি ৩ লাখ ডলার।

শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, ডলারের বিনিময় হার বাড়ায় মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোই বেশি চাপে পড়বে। ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিকসের চেয়ারম্যান ও এডুকেশন ওয়াচের চেয়ারপারসন ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ডলারের দর বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদেশে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি বেড়ে যাবে। ফলে শিক্ষার্থীদের ব্যয়ও বেড়ে যাবে। ফলে মধ্যবিত্ত যেসব পরিবারের সন্তান বিদেশে লেখাপড়া করছে তাদের ওপর বেশি চাপ তৈরি হবে। তবে শুধু বিদেশে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেই নয়, ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়ে গিয়ে দেশেও শিক্ষায় খরচ বেড়ে যেতে পারে।

উচ্চ শিক্ষার জন্য বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা যেসব দেশ বেছে নিচ্ছেন তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম। যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের পরিসংখ্যান ওপেন ডোরস রিপোর্ট ২০২২-২৩-এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম। দেশটিতে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩ হাজার ৫৬৩। এর আগে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন ১০ হাজার ৫৯৭ জন।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন আতিকুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে আমেরিকান একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার পেয়েছি। ওই সময়ের হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ফি, টিউশন ফিসহ সব মিলিয়ে যে টাকা ছিল এখন সে তুলনায় প্রায় দেড় লাখ টাকা বেশি প্রয়োজন হবে।

তিনি আরো বলেন, ‘‌আমাদের দেশে বেশির ভাগ পরিবার মধ্যবিত্ত এবং এখন অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারও সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কষ্ট করে হলেও বিদেশে পড়ালেখা করতে পাঠাচ্ছে। ডলারের এ মূল্যবৃদ্ধির জন্য এমন পরিবারগুলো সমস্যায় পড়বে।

যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্যান্য দেশেও বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। চলতি বছরের জানুয়ারির তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৯ হাজার ৬৮৩, যা ২০২৩ সালের জানুয়ারির তুলনায় ৭৪ শতাংশ বেশি। এছাড়া ব্রিটিশ কাউন্সিলের এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেশটিতে শিক্ষার্থী পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে রাইজিং স্টার হিসেবে চিহ্নিত করেছে। দ্য আউটলুক ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট মবিলিটি: অ্যামিড আ চেঞ্জিং ম্যাক্রোইকোনমিক ল্যান্ডস্কেপ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে জিডিপি বৃদ্ধির সঙ্গে বিদেশগামী শিক্ষার্থী সংখ্যা বৃদ্ধির সম্পর্কও তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদেশে উচ্চ শিক্ষার সঙ্গে ভর্তি ফি, টিউশন ফিসহ অর্থনৈতিক বিষয়গুলো জড়িত থাকায় যেসব দেশে জিডিপি বৃদ্ধির হার এবং অর্থনৈতিক অবস্থা তুলনামূলক ভালো সেসব দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের প্রবণতাও বেশি। প্রতিবেদনটিতে বিদেশে শিক্ষার্থী প্রেরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে সার্বিক ব্যয় বেড়ে গেছে বলে জানান অস্ট্রেলিয়াগামী শিক্ষার্থী ফাহিম উল্লাস। তিনি বলেন, ‘‌আমি মাত্র এক সপ্তাহ আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি প্রদান করেছি, নয়তো অতিরিক্ত ৯০ হাজার টাকা দিতে হতো। তবে ফি জমা দিলেও ডলারের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় দেশ ত্যাগের ক্ষেত্রে আনুষঙ্গিক খরচ বেশ বেড়ে যাবে। এছাড়া যদি ডলারের বিনিময় হার না কমে তাহলে ডিগ্রি অর্জন পর্যন্ত ব্যয়ও কয়েক লাখ টাকা বেড়ে যাবে। সব মিলিয়ে ডলারের মূল্যবৃদ্ধি আমাদের মতো বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের প্রতি বেশ নেতিবাচক একটি প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে।

ডলারের বিনিময় হার বেড়ে যাওয়ায় বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ বাড়বে বলে মনে করেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমানও। তিনি বলেন, ‘‌ডলার সংকটের কারণে বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্ট খুলতে সমস্যা হচ্ছিল। অনেকে কার্ব মার্কেট থেকে ডলার কিনে কিংবা অন্য মাধ্যমে ডলার সংগ্রহ করে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এমন অবস্থায় ডলারের মূল্যবৃদ্ধি শিক্ষার্থীদের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করবে।

তিনি বলেন, ‘‌এতদিন ডলারের ঘোষিত মূল্য ১১০ টাকা থাকলেও শিক্ষার্থীদের ১১৫-১৭ টাকায়ই ডলার কিনতে হতো। ব্যাংক যদি এখন এটা নিশ্চিত করতে পারে যে শিক্ষার্থীরা ১১৭ টাকায়ই ডলার কিনেতে পারবে, তাহলে হয়তো চাপটা তুলনামূলক কম বাড়বে। তবে ডলারের বাজার যদি অস্থিতিশীলই থাকে তাহলে সংকট আরো তীব্র হয়ে উঠবে। আগামী এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি স্পষ্ট হবে।

বিদেশে উচ্চ শিক্ষা কঠিন হওয়া প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক সদস্য এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘‌ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে বিদেশে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাব্যয় বাড়বে। বিষয়টি শিক্ষার্থীর ওপর কতটা প্রভাব ফেলবে সেটি নির্ভর করবে তার বা তার পরিবারের আর্থিক অবস্থার ওপর। তবে আমাদের এখন উচিত দেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের বিষয়ে উৎসাহিত করা। দেশে অনেক সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বেশ সুনামও কুড়িয়েছে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আন্তর্জাতিক মানের করে তোলার ক্ষেত্রে আমাদের আরো সচেষ্ট হতে হবে।

 


আরও খবর

৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা

মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫




অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থনের অঙ্গীকার নরওয়ের

প্রকাশিত:বুধবার ২১ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন নরওয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক স্টেট সেক্রেটারি স্তিনে রেনাতে হোহেইম। মঙ্গলবার (২০ মে) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তিনি বাংলাদেশের প্রতি নরওয়ের অব্যাহত সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

সাক্ষাতকালে নরওয়েজীয় স্টেট সেক্রেটারি প্রধানমন্ত্রী জোনাস গার স্তোরের শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেন এবং বাংলাদেশের সঙ্গে নরওয়ের দীর্ঘদিনের সম্পর্কের বিষয়ে আলোকপাত করেন। তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, আপনি নরওয়েতে খুব পরিচিত একজন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই আপনার প্রশংসা করেন। আপনাদের সম্পর্ক বহুদিনের।

অধ্যাপক ইউনূস দুই দেশের গভীর ও ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে নরওয়ে সবসময় বাংলাদেশের পাশে ছিল। আমাদের উন্নয়ন যাত্রায় আপনাদের ভূমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই।

হোহেইম বহুপাক্ষিক সহযোগিতা এবং গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রতি নরওয়ের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রুপান্তর প্রক্রিয়াকে সমর্থন জানাতে আমরা এখানে এসেছি। আপনার কাঁধে অনেক বড় দায়িত্ব এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশাও অনেক।

অধ্যাপক ইউনূস সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশের মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জগুলোর কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে অনেক প্রাণ ঝরে গেছে, আমাদের অর্থনীতি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগের সরকারের সময়ে প্রতি বছর প্রায় ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার হয়েছে। ব্যাংকের ঋণকে উপহার হিসেবে বিবেচনা করা হতো, আর আমরা বিশাল পরিমাণ বকেয়া বিলের বোঝা পেয়েছি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এখন এই কঠিন সময় অতিক্রম করা সত্ত্বেও বিশ্বের আস্থা বাংলাদেশের প্রতি ক্রমেই বাড়ছে। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিডা সম্মেলনে নরওয়ের কিছু প্রতিষ্ঠানসহ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অনেক কোম্পানি —আমাদের পরিস্থিতি সরাসরি দেখার জন্য এসেছিল। তারা কেবল দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে নয়, বরং কৌতূহল ও বিশ্বাস থেকেই এসেছিল, এখানে সম্ভাবনা রয়েছে।’

প্রধান উপদেষ্টা মানবিক ক্ষেত্রে বিশেষ করে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ব্যাপারে বাংলাদেশের প্রতি নরওয়ের সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এরাও মানুষ যারা স্বপ্ন নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে। রোহিঙ্গা তরুণদের আশা দেখাতে হবে। তরুণদের অনেকে সাত বা ১০ বছর বয়সে এসেছিল, এখন তারা কিশোর। তারা ক্যাম্পেই বেড়ে উঠেছে। প্রতিদিন আরও শিশু জন্ম নিচ্ছে—একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে। তারা বাড়ি ফিরতে চায়, কিন্তু এখন এক অস্থিরতায় আটকে আছে। আমরা তাদের ভুলে যেতে পারি না।’

হোহেইম এই মানবিক সংকটের ভয়াবহতা স্বীকার করেন এবং নরওয়ের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যেভাবে এই সংকট মোকাবিলায় নেতৃত্ব দিয়েছে, তা আমরা গভীরভাবে শ্রদ্ধা করি। আমরা উন্নয়ন সহযোগিতার বাইরেও সম্পর্ককে আরও বিস্তৃত এবং গতিশীল অংশীদারিত্বে রূপান্তর করতে চাই।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. মোশারফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর

৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা

মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫




রাণীনগরে জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উদযাপন

প্রকাশিত:শুক্রবার ৩০ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ১৪ জুন ২০২৫ |

Image

কাজী আনিছুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ) :

নওগাঁর রাণীনগরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এর ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

রাণীনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো: এছাহক আলীর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা লেঃ কর্ণেল (অবসরপ্রাপ্ত) আব্দুল লতিফ খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোসারব হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মেজবাউল হক লিটন।অন্যদের মধ্যে, উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মোজাক্কির হোসেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মতিউর রহমান উজ্জল, সদস্য সচিব মাহমুদুল হাসান বেলাল, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জাহিদ হাসান শিমুল, সদস্য সচিব নওশাদুজ্জামান, উপজেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন টনিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। এছাড়া সভায় উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর



সর্বোচ্চ সংখ্যক যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দিলো ইউক্রেন-রাশিয়া

প্রকাশিত:শনিবার ২৪ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৫ জুন ২০২৫ |

Image

গত সাড়ে তিন বছরের যুদ্ধের ইতিহাসে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ সংখ্যক যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। শুক্রবার উভয় দেশই ৭৮০ জন যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। এদের মধ্যে সামরিক-বেসামরিক উভয় ধরনের বন্দি রয়েছে।

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শুক্রবার ছাড়া পাওয়া এই যুদ্ধবন্দিদের অর্ধেক অর্থাৎ ৩৯০ জন ইউক্রেনের, বাকি অর্ধেক রাশিয়ার। উভয় দেশই ২৭০ জন করে সামরিক এবং ১২০ জন করে বেসামরিক বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে।

সম্প্রতি তুরস্কে দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধিদের মধ্যে হওয়া সংলাপে মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে যেসব সমঝোতা হয়েছে, সেসবের আওতায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এই যুদ্ধবন্দিদের। তুরস্কের বৈঠকে উভয় দেশের ৫০০ জন করে মোট ১ হাজার যুদ্ধবন্দির মুক্তির ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল রাশিয়া ও ইউক্রেন। তাদের মধ্যে শুক্রবার মুক্তি পেলেন ৭৮০ জন। আজ শনিবার ও আগামীকাল রোববার বাকি ২২০ জনকে ছেড়ে ও দেওয়া হবে।

গতকাল যে ৩৯০ জন ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে মস্কো, তাদের একজন ওলেক্সান্দার নেহির ইউক্রেনীয় বাহিনীর একজন সেনা সদস্য। তার স্ত্রী এ সময় উপস্থিত ছিলেন। মুক্তির পর ইউক্রেনের সুমি শহরের বাসিন্দা নেহির রয়টার্সকে বলেন, “আমাকে যে আজ মুক্তি দেওয়া হচ্ছে—আমার স্ত্রীকে জানানো হয়নি। এমনিতে কারা কর্তৃপক্ষ প্রতি শুক্রবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ করতে দেয়। সে আমার সঙ্গে আজ ওই সাপ্তাহিক সাক্ষাৎ করতেই এসেছিল।”

“এসে যখন দেখল যে আমি মুক্তি পেয়েছি, সে খুশিতে প্রায় বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে। বিষয়টি ঠিক কেমন—আপনি যদি কখনও এ ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে না যান, তাহলে আপনাকে তা বলে বোঝানো কঠিন। আমি শুধু এটুকু বলতে পারি, কখনও বিশ্বাস হারানো চলবে না, নিরাশ বা হতাশ হওয়া চলবে না।”

৯ মাস আগে ইউক্রেনের খেরসন প্রদেশে দেশটির সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি হয়েছিলেন রুশ বাহিনীর সেনাসদস্য ওলেকসান্দার তারাসোভ। শুক্রবার যে ৩৯০ জন রুশ যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে তাদের মধ্যে তারাসোভও একজন। রয়টার্সকে তারাসোভ বলেন, “আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না যে আমি মুক্তি পেয়েছি।”

যুদ্ধবন্দিদের মুক্তিদানের ব্যাপারটিকে স্বাগত জানিয়েছেন এ যুদ্ধের প্রধান মধ্যস্থতাকারী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। শুক্রবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা এক বার্তায় ট্রাম্প বলেন, “মস্কো-কিয়েভ উভয়পক্ষের সমঝোতাকে স্বাগত। এই সমঝোতা কি অদূর ভবিষ্যতে আমাদেরকে বড় কোনো সুসংবাদের দিকে নিয়ে যাবে?” সূত্র : রয়টার্স


আরও খবর



সরকারের ভেতরে-বাইরে অস্থিরতা দৃশ্যমান

প্রকাশিত:রবিবার ১৮ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ১৬ জুন ২০২৫ |

Image

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আবারও আহ্বান জানিয়ে বলবো— পরিস্থিতি অযথা ঘোলাটে না করে জাতীয় নির্বাচনের সুস্পষ্ট তারিখ ঘোষণা করুন। জনগণের ভোটে, জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার প্রতিষ্ঠা না করা গেলে পতিত স্বৈরাচারকে মোকাবিলা করা সহজ হবে না। লোভ-লাভের প্রলোভন থেকে মুক্ত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে বাংলাদেশে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দায়িত্ব পালন করবে এই আশা করছি বলে মন্তব্য করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে এনডিএম-এর অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, বিএনপিসহ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে তাদের পরিকল্পনা-কর্মপরিকল্পনা নিয়ে একটি রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে আসছে। সকল কিছু বিবেচনা করলে আমরা দেখতে পাই— সরকার কিন্তু সেই আহ্বানে সাড়া দেয়নি। সরকার জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণাকে সুকৌশলে অল্প সংস্কার-বেশি সংস্কার এরকম একটি অভিনব শর্তের বেড়াজালে বলা যায় আটকে দিয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে জনগণ অন্ধকারে থাকায় দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা বাড়ছে। আমরা প্রতিদিন দেখছি— কোনও না কোনও দাবি নিয়ে মানুষ রাস্তায় নামছে। মাত্র ১০ মাসের মাথায় সরকারের ভেতরে এবং বাইরে কিন্তু এক ধরনের অস্থিরতা দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। সরকার জনগণের ভাষা-আশা-আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হলে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়তেই থাকবে। আমরা মনে করি, অস্থিরতা এভাবে বাড়তে থাকলে এই সরকারের পক্ষে সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। সুতরাং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তাদের সক্ষমতা সম্পর্কে আরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই। গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলো মিলে দীর্ঘ দেড় দশক ধরে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে আমরা একসঙ্গে রাজপথে ছিলাম, আমাদের অবস্থান থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শক্তি ও সামর্থ্যের প্রতি নেতিবাচক মন্তব্য করিনি। তবে আমরা চুপ থাকলেও জনমনে এই সরকারের প্রতি প্রশ্ন উঠছে।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যের ওপর ভিত্তি করে এবং জুলাই আন্দোলনে হাজারো মানুষের প্রাণের বিনিময়ে বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক বৈধতার ভিত্তি রচিত হয়েছে। অথচ জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে কতজন শহীদ হয়েছেন, কতজন আহত হয়েছেন, দশ মাসেও কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শহীদদের তালিকা ও সংখ্যা চূড়ান্ত করতে পারেনি। অথচ যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় কতজন মানুষ শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন, এই মুহূর্তে যদি গুগলে সার্চ করা যায় তাহলে হতাহত মানুষের পরিসংখ্যান পাওয়া যাবে। অথচ এখন যদি কেউ জুলাই-আগস্টের শহীদদের হতাহতদের তথ্য জানতে চান তাহলে কি নির্দিষ্ট সেই তথ্য পাওয়া যাবে? এ ব্যাপারে কিন্তু বিরাট সন্দেহ বা প্রশ্ন রয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে গণঅভ্যুত্থানের সরকার রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকে দশ মাসেও যদি জুলাইআগস্টের শহীদদের তালিকা চূড়ান্ত না করতে পারে, তাহলে সেটা সরকারের সক্ষমতা বহন করে কিনা এই প্রশ্নটি রেখে যাচ্ছি। এখানে আরেকটি প্রশ্ন এসে যায়— সরকার কি হতাহতদের ব্যাপারে উদাসীন নাকি ক্ষমতার মোহে আচ্ছন্ন? এটি দেশের বহু মানুষের বড় জিজ্ঞাসা।

বর্তমান সরকার জবাবদিহিমূলক নয় মন্তব্য করে বিএনপির এই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমরা আবারও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই, করিডোর কিংবা বন্দর দেওয়া না দেওয়ার সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজ নয়। এই সিদ্ধান্ত নেবে জনগণের ভোটে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ বা জনগণের সরকার। বর্তমান সরকারের আইনগত ও রাজনৈতিক বৈধতা নিয়ে হয়তো প্রশ্ন নেই। তবে এই সরকার কোনভাবেই জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার নয়। সুতরাং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জনগণের জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠায় অগ্রাধিকার হতে হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরে সংস্কার প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, এনবিআর সংস্কার নিয়ে তেমন কোনও দ্বিমত নেই। তবে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা না করে তড়িঘড়ি করে সংস্কার শুরু করায় হিতে বিপরীত হয়েছে। নিয়মিত রাজস্ব আদায় কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে চলতি বছরের হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, এনডিএম কোনও ড্রয়িং রুমে জন্মগ্রহণ করেনি, আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জনসেবা করাই আমাদের লক্ষ্য। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলনেও রাজপথে থেকে ভূমিকা রেখেছে নেতা-কর্মীরা।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন— এনডিএমের মহাসচিব মমিনুল আমিন, উচ্চ পরিষদ সদস্য পারভেজ খান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, গণঅধিকার পরিষদের নেতা রাশেদ খানসহ বিদেশি অতিথি ও দলটির নেতাকর্মীরা।


আরও খবর



সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বহুদলীয় গণতন্ত্রের মৌলিক উপাদান

প্রকাশিত:সোমবার ১৬ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বহুদলীয় গণতন্ত্রের মৌলিক উপাদান। গণতন্ত্রের নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব দিতে হলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।১৬ জুন সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে গতকাল মধ্যরাতে বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. রুহুল কবির রিজভীর গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো দিবস। এদিনে তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী সব দল বাতিল করে চরম কর্তৃত্ববাদী একদলীয় বাকশাল কায়েম করে তাদের অনুগত ৪টি সংবাদপত্র রেখে গোটা জাতিকে নির্বাক করে দিয়েছিলো। ফলে বিভিন্ন সংবাদপত্রে কর্মরত অসংখ্য সংবাদ কর্মী বেকার হয়ে পড়েছিলো। তাদের রুজিরোজগার ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ চরম নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেয়া হয়।

বাণীতে বলা হয়, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনা ছিল বাংলাদেশের ভৌগোলিক স্বাধীনতা অর্জন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। চিরায়ত গণতন্ত্রে মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত হয় এবং যার মূল শর্ত হচ্ছে বাক, চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা। সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ থাকায় রাষ্ট্র ও সমাজ জবাবদিহিতার আওতায় আসে এবং দেশের সরকার গঠনে নাগরিক ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে। কিন্তু স্বাধীনতাত্তোর ক্ষমতাসীনরা স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলাকে স্তব্ধ করে দিয়ে একদলীয় বাকশাল ব্যবস্থা কায়েম করে।

বাণীতে আরও বলা হয়, পরবর্তীকালে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এ দেশের কাঙ্ক্ষিত বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেন।

বাকশাল সরকারের সকল প্রকার অগণতান্ত্রিক কালাকানুন বাতিল করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ মূলত চিন্তা ও বিবেককে বন্দী রাখা। শেখ মুজিবুর রহমানের মতো তার মেয়ে শেখ হাসিনাও একই পথ ধরে তাদের প্রকৃত দর্শন একদলীয় ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন করেছিল নতুন আঙ্গিকে। নানা কালাকানুন প্রণয়ন করে সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের ওপর অব্যাহত জুলুম চালিয়েছে তারা। বাংলাদেশে গণমাধ্যমেরস্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল।

সত্য উচ্চারণ করলেই নেমে আসত নির্যাতনের খড়গ। বাংলাদেশের গণমাধ্যম কর্মীসহ সকল পর্যায়ের মানুষকে সার্বক্ষণিক শঙ্কিত থাকতে হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো একের পর এক ড্রাকোনিয়ান আইন প্রণয়ন করে সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ভয়াল দুর্গে বন্দী করা হয়েছিল।

বাণীতে তারেক রহমান বলেন, বিগত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর গণমাধ্যম কিছুটা স্বাধীনতা ভোগ করলেও এখনও ফ্যাসিবাদ শক্তির হাত থেকে গণমাধ্যম পুরোপুরি মুক্ত নয়। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বহুদলীয় গণতন্ত্রের মৌলিক উপাদান। গণতন্ত্রের নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব দিতে হলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে, বলেন তারেক রহমান।


আরও খবর