দেশের সর্ব উত্তরের জেলার লালমনিরহাট। তিস্তা ও ধর্মসহ ছোট-বড় নদ নদী দ্বারা বেষ্টিত এ জেলাটি। এই জেলার ঠিক উত্তরে ভারতের সীমান্ত। সেই লালমনিরহাট জেলাতেই উদ্বোধন হলো দেশের প্রথম বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘর।
বুধবার লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা থানা চত্বরেই জাদুঘরটির উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি বেনজির আহমেদ।
১৯১৬ সালে নির্মিত একটি পাকা পরিত্যক্ত প্রাচীন এই ভবনের ঐতিহ্য রক্ষার্থে এই ভবনে জাদুঘরটি হচ্ছে। ১০০ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক এ ভবনকে জাদুঘরে রূপান্তর করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন লালমনিরহাটের এসপি আবিদা সুলতানা।
২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি জেলার এসপি হিসেবে যোগ দেন আবিদা সুলতানা। জাদুঘর নির্মাণে পূর্বের কিছু অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এসপি আবিদা সুলতানার হাতীবান্ধা থানার পরিত্যক্ত ভবনে বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘর স্থাপনের কাজ হাতে নেন ।
দীর্ঘ এক বছর ১৬/১৭ জন কর্মীকে কাজে লাগিয়ে জাদুঘরের ফার্নিচার সহ ডিজাইন তৈরি করেন। তবে এই জাদুঘর উদ্বোধন পর্যন্ত কি পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি। বঙ্গবন্ধুর পারিবারিক গ্যালারি সহ বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘর মোট ৭টি গ্যালারি আছে। প্রতিটি গ্যালারিতে রাখা নিদর্শনগুলো দর্শক ও গবেষকদের সামনে তুলে ধরতে কাচের আবরণ ও আলোর ব্যবস্থা রয়েছে।
এই জাদুঘরে বিভিন্ন সময়ে পুলিশ বাহিনী নানা স্মারক ও তথ্য সবার জন্য উপস্থাপন করা হয়।গ্যালারিগুলোতে সুলতানি আমল ও মোগল আমল, ব্রিটিশ আমল, ভারতীয় উপমহাদেশে পুলিশের উদ্ভব ও বিকাশ নিঁখুতভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন । গ্যালারি দুইয়ে থাকছে ব্রিটিশ আমল, আধুনিক পুলিশের যাত্রা। তিন নম্বর গ্যালারিতে রয়েছে স্বাধীনতাযুদ্ধ, ভারতীয় উপমহাদেশ ও বাংলাদেশ স্বাধীনতাযুদ্ধে পুলিশ।
গ্যালারি চারে রয়েছে ডার্করুম, গ্যালারি। পাঁচে রয়েছে মুক্তাঞ্চলে মুক্তি পুলিশ। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালে ৬ নম্বর সেক্টরের হেডকোয়ার্টার ছিল জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে। সে সময় গঠন করা হয়েছিল মুক্তাঞ্চলের মুক্তি পুলিশ। তাদের সে সময়ের কর্মকাণ্ড তুলে ধরাসহ কিছু নিদর্শন থাকছে এই গ্যালারিতে।
গ্যালারি ছয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী। গ্যালারি সাতে বাংলাদেশ পুলিশ গ্যালারি, আধুনিক সময়কাল।
জেলার এসপি আবিদা সুলতানা সহ বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যের পরিশ্রমের ফসল বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘর।
এসপি আবিদা সুলাতানা জানান, দুই বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম, আমার পুলিশ সদস্য ও জেলাবাসীর সহযোগীতায় দেশের প্রথম পুলিশ জাদুঘর তৈরির কাজ সম্পন্ন। জাদুঘরটি উদ্বোধন করেন।
তবে উক্ত অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ কে উপস্থিত দেখা যায়নি।
এছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লালমনিরহাট জেলার অন্যতম বীর মুক্তিযুদ্ধা বাবু শৈলেন্দ্র কুমার রায় সহ বেশ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
এদিকে এই জাদুঘরটি উদ্বোধন হওয়ায় বিশিষ্ট ব্যক্তি প্রাপ্ত উত্তরবঙ্গ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা আব্রাহাম লিংকন জানান একটা জাদুঘর জাতির দর্পন।