Logo
শিরোনাম

লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে নওগাঁর কুজাইল বাজারে দু' দিনব্যাপী গ্রামীণ মেলা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৮ অক্টোবর ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২০ এপ্রিল ২০25 |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

একেকটা নৌকায় একেক রকমের সাজানো। ঢাক-ঢোল আর সাউন্ড বক্স ও মাইকের সাউন্ডে মুখরিত চারেদিক। সনাতন ধর্মাবলম্বী বিভিন্ন বয়সের ছেলে-মেয়ে, শিশু, কিশোর, কিশোরী, যুবক-যুবতী সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের নাচানাচি। আর সেই দৃশ্য উপভোগ করতে নদীর দু’পারে ভিড় করেন হাজারো মানুষ। এমনই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য ফুটে উঠেছে নওগাঁর রাণীনগরে লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে ছোট যমুনা নদীতে শত শত নৌকার নৌবহরে। এ পূজা উপলক্ষে শুক্রবার উপজেলার কুজাইল বাজারে বসে গ্রামীণ মেলা। শত বছরের ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ এ মেলা এখনো ধরে রেখেছে ঐতিহ্য।

লক্ষ্মী মানে শ্রী সুরুচি। লক্ষ্মীকে ধন সম্পদ আর সৌন্দর্যের দেবী বলে মনে করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। তাই লক্ষ্মী পূজা হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। শারদীয় দুর্গোৎসবের কয়েক দিন পর পূর্ণিমা তিথিতে লক্ষ্মী পূজার আরাধনা করা হয়। নারী-পুরুষ উভয়েই এ পূজায় অংশ গ্রহণ নেয়। বুধবার লক্ষ্মীপূজা শুরু হয়। এরপর শুক্রবার ছোট যমুনা নদীতে লক্ষ্মী প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে পূজার সমাপ্তি হয়।

স্থানীয়রা তাদের শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রতিমা বিসর্জনের দিন থেকে লক্ষ্মী পূজা উপলক্ষে কুজাইল বাজারে দু' দিনব্যাপী গ্রামীণ মেলার আয়োজন করে থাকেন। মেলায় বসে হরেক রকমের দোকানপাট। মেলার প্রথম দিন শুক্রবার মূল আর্কষণ নৌবহর। দ্বিতীয় দিন হয় বউ মেলা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রানীণগর উপজেলার কাশিমপুর রাজবাড়ির রাজবাহাদুর শ্রী. অন্নদা প্রসন্ন লাহিড়ীর রাজত্ব পরিচালনার আগে থেকে লক্ষ্মী পূজা উপলক্ষে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রায় দুই’শ বছর থেকে লক্ষ্মী প্রতিমা বিসর্জনের দিন থেকে এ মেলা শুরু হয়। ঐতিহ্যবাহী এ মেলার বিশেষ আর্কষণ লক্ষ্মী প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে ছোট যমুনা নদীতে নৌবহর। ঐদিন দুপুরের পর থেকে রাণীনগর, আত্রাই, মান্দা, নওগাঁ সদরসহ কয়েকটি উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নৌকায় চড়ে আসতে থাকে। পাশাপাশি মেলা ও নৌবহর উপভোগ করার জন্য নৌকায় ঘুরে বেড়ান অন্যান্য ধর্মের মানুষও। সাউন্ড বক্স, মাইক আর ঢাকের তালে তালে নৌকায় বিনোদন প্রেমীদের নৃত্যে মুখরিত হয়ে উঠে ছোট যমুনা নদী। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মিলনমেলায় পরিণত হয় নদীর দু’পার। শুক্রবার প্রায় তিন শতাধিক নৌকা নদীতে নৌবহরে মেতে উঠে। চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এরপর নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।

স্থানীয় মেম্বার ও মেলা কমিটির কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শত শত বছরের এই মেলায় আমরা হিন্দু মুসলিম একে অপরকে সহযোগিতা করি। এই মেলায় অনেক দুর থেকে নৌকা নিয়ে এসে নৌ-বহরে যুক্ত হয়। যা হাজার হাজার নারী পুরুষ উপভোগ করে। এছাড়া এই মেলায় প্রায় দুই শত দোকান বসে যেখানে অর্ধকোটির বেশি বেচাকেনাও হয়ে থাকে।


আরও খবর



তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১০.৮৪ শতাংশ

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ২০ এপ্রিল ২০25 |

Image

চলতি অর্থবছরের (২৪-২৫) জুলাই-মার্চ মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ মাসের দেশভিত্তিক রপ্তানি তথ্য থেকে বিষয়টি জানা গেছে।

জানা গেছে, এই সময়ে ৩০ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। যা পোশাক খাতের স্থিতিস্থাপকতা এবং সম্ভাবনা তুলে ধরে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

তথ্য থেকে জানা যায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের মোট রপ্তানির ৪৯ দশমিক ৮২ শতাংশই রপ্তানি হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নে। যার মোট বাজার মূল্য ১৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।

এরপরেই রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজার। এ বাজারে মোট রপ্তানি হয়েছে ৫ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক। যা মোট রফতানির ১৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ। যেখানে কানাডার মোট বাজার অংশ ছিল ৯৬৩ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলার। যার বাজার অংশ ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। যুক্তরাজ্যের বাজারও গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যার রপ্তানি মূল্য ৩ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। যা বাংলাদেশের মোট তৈরি পোশাক রপ্তানির ১১ দশমিক ১০ শতাংশ ।

প্রবৃদ্ধির দিক থেকে ইইউতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বছরের পর বছর ধরে উল্লেখযোগ্যভাবে ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখিত সময়ে যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৭ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং কানাডা ১৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, যুক্তরাজ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ এর একটি সামান্য প্রবৃদ্ধির হার প্রদর্শন করেছে।

ইইউর মধ্যে, জার্মানি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে দাঁড়িয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ ৩ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার, স্পেন ২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার, ফ্রান্স ১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার, ইতালি ১ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার, পোল্যান্ড ১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার এবং নেদারল্যান্ডস ১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার।

প্রবৃদ্ধির হার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল- জার্মানি (১০ দশমিক ৭২ শতাংশ), ফ্রান্স (১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ), নেদারল্যান্ডস (২৩ দশমিক ১৫ শতাংশ), পোল্যান্ড (১০ দশমিক ৩২ শতাংশ), ডেনমার্ক (১২ দশমিক ৮০ শতাংশ) এবং সুইডেন (১৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ) ।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতেও অপ্রচলিত বাজারে প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, সামগ্রিকভাবে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে মোট রফতানি ৫ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশের মোট রফতানির ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ দখল করেছে।

এই বাজারগুলোর মধ্যে জাপান মোট ৯৬০ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন ডলার আমদানি করে শীর্ষে রয়েছে, তারপরে অস্ট্রেলিয়া ৬৫৩ দশমিক ৬৪ মিলিয়ন ডলার এবং ভারত ৫৩৫ দশমিক ১৫ মিলিয়ন ডলার আমদানি করে।

তুরস্ক এবং মেক্সিকোর মতো দেশগুলোতেও উল্লেখযোগ্য রফতানি হয়েছে। তুরস্কে ৩৫৭ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার এবং মেক্সিকোতে ২৫১ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার, যা প্রশংসনীয়। উল্লেখিত সময়ে ভারতে ২০ দশমিক ৪৫ শতাংশ, জাপান ১০ দশমিক ০৬ শতাংশ, মেক্সিকো ২৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং তুরস্কের ৩২ দশমিক ৫৪ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

রিপোর্টে দেখা গেছে, এই সময়কালে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, তুরস্ক এবং মেক্সিকোতে প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক থাকলেও রাশিয়া, কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মালয়েশিয়ায় রফতানি হ্রাস পেয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া এবং কোরিয়ায় নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি এই বাজারগুলোতে আরও গুরুত্বসহকারে রফতানি বাজার দেখা দরকার।

নিটওয়্যার খাত মোট ১১ দশমিক ২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। ওভেন সেক্টরেও ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে প্রবৃদ্ধি ধীর হলেও অপ্রচলিত বাজারে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পয়েছে।

রফতানির চলমান প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল। যা বাংলাদেশের প্রধান বাজার হিসেবে অব্যাহত রয়েছে। যা এই ক্ষেত্রগুলির মধ্যে আরও সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়।

বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘এটি আমাদের মোট রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে প্রধান ঐতিহ্যবাহী বাজারের তাৎপর্য প্রদর্শন করে।’ তিনি আরও বলেন, অপ্রচলিত বাজারে মাঝারি প্রবৃদ্ধি এই বিভাগে আরও গবেষণা এবং মনোযোগের গুরুত্বকে তুলে ধরে, কারণ এর যথেষ্ট প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে, যা ঐতিহ্যবাহী বাজারের ওপর নির্ভরতা ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করবে।

রুবেল বলেন, স্থায়ী বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা ক্রমাগত বৈশ্বিক পরিবেশকে পুনর্গঠন করছে। এমন সুযোগ তৈরি করছে যা বাংলাদেশ সুবিধা নিতে পারে।

সূত্র : বাসস


আরও খবর

এবার পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা

বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫




২৬ মার্চ বন্ধ থাকবে ঢাকার যেসব সড়ক

প্রকাশিত:সোমবার ২৪ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ২০ এপ্রিল ২০25 |

Image

ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৫ উপলক্ষে ২৬ মার্চ বঙ্গভবনের আশপাশের এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবে।

মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, আগামী ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা, দেশি-বিদেশি কূটনীতিক এবং সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

এ অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের যানবাহনে সুষ্ঠুভাবে চলাচলের জন্য বঙ্গভবনের আশপাশ এলাকায় চলাচলরত অন্যান্য গাড়ি চালকদের জন্য ২৬ মার্চ দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কিছু নির্দেশনা অনুসরণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো:

১। সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্স (গুলিস্তান) হতে ইত্তেফাক মোড় পর্যন্ত (টয়েনবী সার্কুলার রোডে) সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।

২। অ্যালিকো গ্যাপ হতে দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা ও রাজউক ক্রসিং পর্যন্ত (ডিআইটি রোডে) সকল প্রকার গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।

৩। পার্ক রোডের উত্তর প্রান্ত হতে ইত্তেফাক মোড় (টয়েনবী সার্কুলার রোড) অভিমুখী কোন প্রকার যানবাহন চলাচল করবে না।

৪। শাপলা চত্ত্বর ও দৈনিক বাংলা হতে রাজউক-গুলিস্তানগামী সকল বাস দৈনিক বাংলা, ইউবিএল, প্রেসক্লাব হয়ে চলাচল (আসা-যাওয়া) করবে কিংবা অন্য কোন সুবিধাজনক বিকল্প রাস্তায় চলাচল করবে।

৫। দৈনিক বাংলা হতে রাজউক অভিমুখী কোন বাণিজ্যিক গাড়ি চলাচল করবে না।

উল্লিখিত নির্দেশনাগুলো বঙ্গভবনে আগত আমন্ত্রিত অতিথিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

উল্লিখিত রাস্তাগুলো পরিহার করে অন্য কোনো সুবিধাজনক বিকল্প রাস্তায় চলাচল করার জন্য গাড়ি চালকদের অনুরোধ করা হলো। এ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার ফলে রাস্তা ও এলাকায় যানবাহন চলাচল সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটায় ডিএমপি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে।


আরও খবর

চেনা রূপে ফিরেছে রাজধানী

রবিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৫




উখিয়ায় বিএনপি নেতার নেতৃত্বে সাংবাদিকের বাড়ি দখলের চেষ্টা

প্রকাশিত:বুধবার ০৯ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৮ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

কক্সবাজার প্রতিনিধি :

কক্সবাজারের উখিয়ায় একটি পরিকল্পিত, বর্বর ও সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও পরিচ্ছন্ন সাংবাদিকতার প্রতীক জসিম আজাদ। ভূমিদস্যু ও চাঁদাবাজদের একটি সংঘবদ্ধ চক্র রবিবার (৬ এপ্রিল) বিকেলে তার রত্নাপালং ইউনিয়নের টেকপাড়াস্থ বসতবাড়িতে ঢুকে তাকে ও তার স্ত্রীকে মারধর করে এবং বাড়ি থেকে জোর করে উচ্ছেদের চেষ্টা চালায়। নেতৃত্বে ছিলেন কুখ্যাত চাঁদাবাজ ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাফুজ উদ্দিন বাবু।


স্থানীয় সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন ধরে বাবু ও তার দলবল জসিম আজাদের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে আসছিল। জসিম আজাদ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে ও তার স্ত্রীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে, প্রাণনাশের হুমকি দেয়, এমনকি জমি ও বসতঘর দখল করে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় “জমি আমাদের, তুই এখানে থাকতে পারবি না” বলে চিৎকার করতে থাকে হামলাকারীরা।


জসিম আজাদ জানান, “বাবু নিজে এসে বলে, পাঁচ লাখ টাকা দিলে তোকে থাকতে দিব, না দিলে জোর করে বাড়ি থেকে তুলে দেব। আমি অপারগতা জানালে ওরা আমার স্ত্রীর গায়ে হাত তোলে, আমাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়।”


তিনি এ ঘটনায় বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২০২৩ সালের ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন’-এ মামলা দায়ের করেছেন। এতে অভিযুক্ত করা হয়েছে রত্নাপালংয়ের মৃত মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে তাইমুন উদ্দিন (২৮), তাইফুর উদ্দিন (৩৬), মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে মাহাফুজ উদ্দিন বাবু (৪২), হলদিয়া পালংয়ের মৃত মীর কাশেম চৌধুরীর ছেলে আলা উদ্দিন চৌধুরী (৫৮) এবং অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জন সন্ত্রাসীকে।


অভিযুক্ত বিএনপি নেতা বাবু নিজের দায় অস্বীকার করে বলেন, “আমি নিরপেক্ষ বিচারকের ভূমিকায় ছিলাম।” এটি একধরনের হাস্যকর, ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য ছাড়া কিছু নয়। একজন মানুষ বাড়ি দখল, চাঁদা দাবি এবং নারীর ওপর হামলার সময় “বিচারক” হয়ে উপস্থিত থাকে—এই কথা বিশ্বাসযোগ্য নয়। বরং বাবুর এই বক্তব্যই প্রমাণ করে, সে পুরো ঘটনার নেপথ্যের মাস্টারমাইন্ড।


স্থানীয়রা বলছে, উখিয়ায় বিএনপির একাংশ এখন চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও সন্ত্রাসীদের আশ্রয়দাতা। কেউ মুখ খুললেই তার উপর নেমে আসে হামলা, মিথ্যা মামলা কিংবা হত্যার হুমকি। এই ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে, জসিম আজাদকে ঠাণ্ডা মাথায় টার্গেট করা হয়েছে, কারণ তিনি মাদক, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কলম ধরেছেন।


এটি শুধুমাত্র একজন সাংবাদিকের উপর হামলা নয়, এটি মুক্ত সাংবাদিকতা, সত্য প্রকাশ এবং জনস্বার্থে কাজ করা সকল মানুষের উপর সশস্ত্র আগ্রাসন। যারা এই হামলায় জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার, গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছে সাংবাদিক সমাজসহ সকল বিবেকবান নাগরিক।


তাদের প্রশ্ন, প্রশাসন কি নীরব দর্শক হয়ে থাকবে? নাকি এই ভূমিদস্যু-চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে প্রমাণ করবে যে রাষ্ট্র এখনো আইনের শাসনে বিশ্বাস করে?


আরও খবর



ঈদের ছুটিতেও ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০১ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ২০ এপ্রিল ২০25 |

Image

ঈদের ছুটিতে লাখ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন। ফলে এখন অনেকটাই জনশূন্য রাজধানী শহরটি। তবে এত মানুষের চলাচল কমে গেলেও বিশ্বের দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় আজ ঢাকা রয়েছে চার নম্বরে। বায়ুমানের স্কোর ১৫৩, যা অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান বিষয় ওয়েবসাইট আইকিউএয়ারে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

বায়ুদূষণের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে নেপালের কাঠমান্ডু (স্কোর ২৫৬)। অর্থাৎ সেখানকার বাতাস খুবই অস্বাস্থ্যকর। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি। এই শহরটির দূষণ স্কোর ১৯২ অর্থাৎ এই শহরের বায়ু অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রয়েছে। তৃতীয় তালিকায় রয়েছে থাইল্যান্ডের চিয়ান মাই (স্কোর ১৬৪) যা অস্বাস্থ্যকর। তালিকায় পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ভিয়েতনামের হ্যানয় (১৫১), চীনের উহান (১৪৭)।

একটি শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, তার লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক জানিয়ে থাকে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। প্রতিষ্ঠানটির মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে বায়ুর মান ভালো বলে বিবেচিত হয়।

আর ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি বা সহনীয় ধরা হয় বায়ুর মান। সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়। এ ছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে তা দুর্যোগপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।


আরও খবর

চেনা রূপে ফিরেছে রাজধানী

রবিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৫




আশার আলো দেখছেন রোহিঙ্গারা

প্রকাশিত:শনিবার ০৫ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয়ে থাকা আট লাখ রোহিঙ্গার তালিকা থেকে আংশিক যাচাই-বাছাইয়ে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য যোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করার কথা জানিয়েছে মিয়ানমার সরকার। আরও ৭০ হাজার রোহিঙ্গার চূড়ান্ত যাচাই-বাছাইয়ের অংশ হিসেবে ছবি ও নাম মিলিয়ে দেখার কাজ চলছে। ওই তালিকার বাকি সাড়ে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গার যাচাই-বাছাই কাজও দ্রুত সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মিয়ানমার।

এদিকে, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে ক্যাম্পের অধিকাংশ রোহিঙ্গা আশার আলো দেখছেন। দীর্ঘদিন পর নিজের জন্মভূমিতে ফেরার তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে স্বপ্ন বুনছেন তারা। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার খবরে ইতোমধ্যে অধিকাংশ ক্যাম্পে হুলুস্থুল কাণ্ড বয়ে যাচ্ছে, অনেকে আনন্দ উল্লাসে মেতেছে। তবে উদ্বিগ্ন ও ভয়ের কারণও দেখছেন অনেক রোহিঙ্গা। এছাড়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিজ দেশে ফেরানোর ক্ষেত্রে জটিল সমীকরণও দেখছেন বিশ্লেষকরা।

কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা ফয়েজ উল্লাহ বলেন, দীর্ঘদিন পর একটা সুসংবাদ পেলাম। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে আরাকানে ফিরে যেতে। আরাকান আমাদের দেশ আমাদের চিরস্থায়ী বসবাস সেখানে হবে৷ রোহিঙ্গা ফয়েজ উল্লাহ আরও বলেন, আমাদের সম্মানজনক প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।

রোহিঙ্গা বাসিন্দা আব্দুল মালেক জানান, জন্মভূমি আরাকানে ফিরতে পারবো খবরটি শুনে খুব ভালো লেগেছে। জানি না কবে সেটি কার্যকর হবে। তবে দাবি থাকবে আরাকানে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। জীবন জীবিকার নিশ্চয়তা দিতে হবে। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে আজকেই আমরা (রোহিঙ্গা) মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাই।

রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা সালাউদ্দিন বলেন, আরাকান আমাদের জন্মভূমি, সেখানে ফিরতে পারলে আমাদের সকলের জন্যে ভালো। কিন্তু এই প্রত্যাবাসন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে কি না! সেটিও ভাবতে হচ্ছে। বর্তমানে আরাকান আর্মি ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে লড়াই তীব্র আকার ধারণ করেছে। ইতিমধ্যে মিয়ানমারের অনেক রাজ্য আরাকান আর্মি দখলে নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের (রোহিঙ্গা) প্রত্যাবাসন সঠিক প্রক্রিয়ায় হবে কি না সেটি নিয়েও ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে।

উখিয়া-টেকনাফের স্থানীয় নাগরিকেরা জানান, অনেক হয়েছে এবার রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়া উচিত। তাদের কারণে স্থানীয়রা অনেক হয়রানি, বিড়ম্বনা ও ঝুঁকির মধ্যে আছে। এসব রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজারের বনভূমি, কৃষিজমি, শ্রম বাজার নষ্ট হয়ে গেছে। বেড়ে গেছে খাদ্য পণ্যের দাম। রোহিঙ্গাদের বর্জ্যের কারণে শত শত একর কৃষিজমি অনাবাদি পড়ে আছে। রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রা জন্মসনদ ও জাতীয়তা সনদ নিতে হিমশিম খাচ্ছেন। স্থানীয় এবং দেশকে ঝুঁকিমুক্ত করতে রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমার ফেরত পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।

উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এত সহজ হবে না। কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এই প্রক্রিয়াটি আলো'র মুখ দেখতে পারে। অধিকাংশ রোহিঙ্গা আরাকানে ফিরতে ইচ্ছুক। তবে কিছু এনজিও সংস্থার 'প্রেসক্রিপশন' এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া থামিয়ে দিতে পারে। এতদিন রোহিঙ্গাদের ভুলভাল বুঝিয়ে কিছু এনজিও সংস্থা ফায়দা নিয়েছিল। কারণ রোহিঙ্গারা যতদিন বাংলাদেশে থাকবে, ততদিন তাদের (এনজিও) লাভ। দেশ এবং কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ রক্ষায় দ্রুত সময়ে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হোক। তারা যতদিন থাকবে, ততদিন বাংলাদেশ ঝুঁকির মধ্যে থাকবে বলে মনে করেন এই জনপ্রতিনিধি।

বাংলাদেশের একজন সাবেক কূটনীতিক মুন্সী ফয়েজ আহমদ জানান, রোহিঙ্গা ইস্যুতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ইতিবাচক অগ্রগতি। তবে, এখনই কোনো উপসংহারে পৌঁছানো উচিত হবে না বলে মনে করছেন তিনি। নিঃসন্দেহে এটি একটি পজিটিভ ডেভেলপমেন্ট। কিন্তু, এর মধ্য দিয়ে কনক্লুসিভ ডেভেলপমন্টে পৌঁছানো সহজ হবে না। কারণ রোহিঙ্গাদের আবাসভূমি ও রাখাইনের বর্তমান পরিস্থিতি এখন ভিন্ন। সময়টা একটু জটিল। রাখাইন এখন প্রধানত আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। সেখানে জান্তা সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে। ফলে, জান্তার তৎপরতার পাশাপাশি অন্যদের সম্পৃক্ততা জরুরি। যেহেতু এক লাখ আশি হাজার রোহিঙ্গার একটা আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি মিললো, আজ হোক কাল হোক প্রত্যাবাসনের জন্য একটা প্রামাণ্য দলিল হিসেবে কাজ করবে এই স্বীকৃতি। তবে, রাখাইনে জান্তা বাহিনী নিয়ন্ত্রণ ফিরে না পেলে, সেগুলো নিছকই দলিল হয়েও থেকে যেতে পারে। আর যদি জান্তা বাহিনী বা কেন্দ্রীয় সরকার কখনো নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়ও, স্থানীয় প্রশাসনে রাখাইনদের আধিপত্য থাকবেই। সেক্ষেত্রে, তাদের সঙ্গেও একটা বোঝাপড়া কিংবা আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে বলে মনে করেন সাবেক এই কূটনীতিক।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব নয়। রাখাইনের পরিস্থিতি অত্যন্ত অস্থিতিশীল, যেখানে নিরাপত্তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। সম্প্রতি জাতিসংঘের মহাসচিবও বলেছেন, রাখাইনে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই প্রত্যাবাসনের কথা বিবেচনা করা হবে। এখন সেখানে রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য বাড়িঘর নেই। দ্বিতীয়ত, যেসব এলাকায় রোহিঙ্গাদের বসতি ছিল, সেসব এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে? কখন, কীভাবে, কার ক্লিয়ারেন্সে তা সম্ভব হবে এসবই অনিশ্চিত।

সরকার প্রধানের দফতর জানিয়েছে, শুক্রবার ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে এক বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সঙ্কট ও সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমানকে এ তথ্য জানান মিয়ানমারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উ থান শিউ। বাংলাদেশ ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ছয়টি ধাপে ওই আট লাখ রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারকে দিয়েছিল।

প্রধান উপদেষ্টার দফতর বলছে, মিয়ানমার প্রথমবারের মতো ‘প্রত্যাবাসনের যোগ্য’ রোহিঙ্গাদের এমন তালিকা দিল, যা দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গা ঢলের শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট। এরপর কয়েক মাসের মধ্যে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে ওই এলাকার ক্যাম্পে বসবাস করছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।

বাংলাদেশ সীমান্ত খুলে দেওয়ার পর থেকে কক্সবাজার ও উখিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বাঁশ আর প্লাস্টিকের খুপড়ি ঘরে বসবাস শুরু করে রোহিঙ্গারা। উখিয়ার কুতুপালং পরিণত হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে।

আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০১৭ সালের শেষ দিকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয় মিয়ানমারের অং সান সু চি সরকার। ওই বছর সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতেও সই করে।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা চলার এক পর্যায়ে ২০১৯ সালে দুই দফায় প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু মিয়ানমার সরকারের প্রতিশ্রুতিতে রোহিঙ্গারা আস্থা রাখতে না পারায় সেই চেষ্টা ভেস্তে যায়।

এরপর আসে কোভিড মহামারী; রোহিঙ্গাদের ওপর থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগেও ঢিল পড়ে। বিশ্বজুড়ে সেই সংকটের মধ্যেই ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সু চির সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেন সামরিক জান্তা জেনারেল মিন অং হ্লাইং। তাতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় আসে নতুন ধাক্কা।

এর মধ্যে চীনের মধ্যস্থতায় ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগের অংশ হিসেবে কয়েকবার রোহিঙ্গাদের ফেরানোর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের যুদ্ধের তীব্রতার মধ্যে প্রত্যাবাসনের আলোচনা কমে আসে। উল্টো রাখাইনে যুদ্ধের কারণে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরু হয়।

এর মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে আরও ৮০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের তথ্য দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

মিয়ানমারের জাতিগত সশস্ত্র সংঘাতের মধ্যে বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া সব এলাকা বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি দখলে চলে যাওয়ার মধ্যে নেপিদোর সঙ্গে যোগাযোগেও ভাটা পড়ে ঢাকার।

এর মধ্যে গত ১৪ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কক্সবাজারে গিয়ে রোহিঙ্গাদের কষ্ট নিজের চোখে দেখেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে তিনি সেদিন ইফতারও করেন।

প্রত্যাবাসনই যে রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র সমাধান, সে কথা তুলে ধরে জাতিসংঘ প্রধান সেদিন বলেন, “শেষমেষ মিয়ানমারেই সমাধান পেতে হবে আমাদের। এখানে থাকা সব শরণার্থীর স্বেচ্ছা, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ তৈরি না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্ষান্ত হব না।


আরও খবর