আলমগীর হোসেন ঃ
আলোড়ন ডেস্ক :- মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সর্বোচ্চ সেনাপ্রদাকারী দেশ। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর দুই হাজার তিনশত সাতানব্বই জন নারী শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছে এবং বর্তমানে পাঁচশত উনআশি জন নারী বিভিন্ন মিশনে নিয়োজিত আছে। এই বাইরেও দক্ষিণ সুদান ও সোমালিয়ায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের চারজন নারী বিচারক দায়িত্ব পালন করছে।বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের, “সবার সাথে বন্ধুত্ব এবং কারও সাথে বিদ্বেষ নয়” বৈদেশিক নীতি অনুসরণ করে আসছে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমকে জোরালোভাবে সমর্থন করেন। বাংলাদেশ ১৯৮৮ সালে প্রথম জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে এবং নারী শান্তিরক্ষীরা ২০০০ সাল থেকে মিশনে অংশগ্রহণ করে আসছে।
তিনি বলেন, সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে নারী, শিশু ও সাধারণ মানুষ নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হয়ে শান্তিরক্ষী বাহিনীর নিকট থেকে সহায়তা প্রত্যাশা করে। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী সংঘাতপূর্ণ ও অস্থিতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে নারী শান্তিরক্ষী প্রেরণ করে নারীর ক্ষমতায়ন এবং জেন্ডার সমতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশ ২০১৬ সালে আইভরিকোস্টে জাতিসংঘের ইতিহাসে প্রথম দেশ হিসেবে নারী সামরিক কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মোতায়েন করে। নারী শান্তিরক্ষীদের উপস্থিতি স্থানীয় জনগণের আস্থা অর্জন জেন্ডার ভায়োলেন্স রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তারা বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা, নারীর সুরক্ষা, শান্তি ও নিরাপত্তা এবং গণতান্ত্রিক নির্বাচন পরিচালনাসহ আইন-শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা ২৮ নভেম্বর লন্ডনে কুইন এলিজাবেথ সেন্টারে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত দুদিন ব্যাপী “প্রিভেন্টিং সেক্সুয়াল ভায়োলেন্স ইন কনফ্লিক্ট ইনিশিয়েটিভ কনফারেন্স (পিএসভিআই) ২০২২” এ বেস্ট প্রাকটিস ইন ডিফেন্স অন প্রিভেন্টিং এন্ড রেসপন্ডিং টু কনফ্লিক্ট রিলেটেড সেক্সুয়াল ভায়োলেন্স সেশনে এ কথা বলেন।
যুক্তরাজ্যের আর্মড ফোর্সেস মন্ত্রী জেমস হিয়াপী (James Heappey ) এর সভাপতিত্বে এ সেশনে আলোচক ছিলেন ন্যাটোর মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি ইরেন ফেলেন (Irene Fellin) যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মেজর চারমেইনে গেলডেনহুয়েজ ( Major Charmaine Geldenhuys), জেনেভা সেন্টার ফর সিকিউরিটি সেক্টর গভর্নেন্সের ড. মেগান বাসটিক (Dr. Mrgan Bastick) এবং বিপিএসটি’র জেন্ডার এ্যাডভাইজার ড সেল্লাহ কিং ওরো (Dr. Sellah King’oro).
এসময় উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: হাসানুজ্জামান কল্লোল। এ কনফারেন্সে বিশ্বের সত্তরটির বেশী দেশের প্রতিনিধি, শান্তি রক্ষা মিশনের প্রতিনিধি ও সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করছে। প্রথম “প্রিভেন্টিং সেক্সুয়াল ভায়োলেন্স ইন কনফ্লিক্ট ইনিশিয়েটিভ কনফারেন্’ অনুষ্ঠিত হয়ে ২০১২ সালে। দশম বর্ষ পুর্তি হয়েছে এ কনফারেন্সের আয়োজন করছে যুক্তরাজ্য। ‘স্ট্রেনদেনিং গ্লোবাল রেসপন্স টু কনফ্লিক্ট রিলেটেড সেক্সুয়াল ভায়োলেন্স’, ‘প্রিভেন্টিং কনফ্লিক্ট রিলেটেড সেক্সুয়াল ভায়োলেন্স’, ‘স্ট্রেনদেনিং একাউনটেবিলিটি এন্ড জাস্টিস এবং সার্পোটিং সাইভাইভার্স’ এন্ড ‘চিল্ড্রেন বর্ন অব ভায়োলেন্স ইন কনফ্লিক্ট’ চারটি থিমের উপর কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা আরো বলেন, শান্তি রক্ষা মিশনে বিপুল সংখ্যক নারীর অংশগ্রহণ জেন্ডার বৈষম্য ও যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে। শান্তি রক্ষা মিশনের উচ্চপদে নারীদের পদায়ন, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সমান সুযোগ এবং সংঘাতময় পরিস্থিতি মোকাবেলায় তাদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে। নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন ১৩২৫ বাস্তবায়ন এবং একটি শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে পরিবার, কমিউনিটি এবং সমাজে সকল পরিস্থিতিতে নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।