Logo
শিরোনাম

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় শিশু কিশোর ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২৯ মার্চ ২০২৩ | ১০৭জন দেখেছেন

Image

মাহবুবুল আলম রিপন (স্টাফ রিপোর্টার:)

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় শিশু কিশোর ক্রীড়া প্রতিযোগিতা

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশ এর যৌথ আয়োজনে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় অনুষ্ঠিত হলো শিশু কিশোর ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। গড়পাড়া শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ।


বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সুদেব কুমার সাহা। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতিশ্বর পাল।


দিনব্যাপী এই আয়োজনে উপজেলার ৫টি ভেন্যুতে বালক এবং বালিকাদের ফুটবল, ক্রিকেট, কাবাডি, ভলিবল এবং ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। তৃনমূল পর্যায়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য প্রথমবারের মত দেশের ২৭ টি জেলা এবং ৮টি সিটি কর্পোরেশনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সাথে কাজ করছে ইউনিসেফ বাংলাদেশ। এছাড়া খেলাধুলার প্রসারের মাধ্যমে সমাজ থেকে মাদক, ইভটিজিং, মোবাইলে আসক্তিসহ নানা অপকর্ম থেকে নিজেদের দূরে রাখার জন্য শিশুদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে এই প্রতিযোগিতার মাধ্য দিয়ে। দিনব্যাপী এই আয়োজনে সদর উপজেলার ১২টি স্কুলের ২৪০ জন বালক এবং বালিকা অংশ নেয়। আয়োজনের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন মানিকগঞ্জ জেলা ক্রীড়া অফিসার আল-আমিন


আরও খবর



দশমিনায় বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৭ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৮ মার্চ ২০২৩ | ৬৯জন দেখেছেন

Image

মোঃ নাঈম হোসাইন দশমিনা (পটুয়াখালী)

পটুয়াখলী দশমিনা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন কারা হয়। 

দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালনে শুক্রবার সকাল ৯ টায় পরিষদ চত্বরে বঙ্গবন্ধু মুরালে উপজেলা প্রশাসন,  উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠন ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে পরিষদ অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা ও চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাফিসা নাজ নিরার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ডাঃ সামছুন্নাহার খান ডলি,  উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ জাফর আহমেদ,  প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আতিকুর রহমান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প কর্মকর্তা ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মেহেদী হসান, আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ লিটন সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দগন।                       


আরও খবর



কু‌মিল্লার এস‌পি প‌রিচ‌য়ে প্রতারনা ।। ‌তিন প্রতারক গ্রেপ্তার

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০২ মার্চ 2০২3 | হালনাগাদ:রবিবার ২৬ মার্চ ২০২৩ | ৬৩জন দেখেছেন

Image

কুমিল্লা ব্যুরো :

প্রতারকচ‌ক্রটি হ‌্যা‌লো পা‌র্টির মাধ‌্যমে প্রতারণা ক‌রে আস‌ছে ।প্রতারনায় নি‌জে‌কে  প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবার কেউ পুলিশ সুপার। এভাবে নিজের পরিচয় গোপন করে ভূয়া পরিচয়  দিয়ে চাকরি প্রত্যাশিদের চাকরি দেবেন বলে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে তিন প্রতারককে জেলার ডি‌বিপু‌লি‌শের ২‌টি টিম ডিএম‌পি ঢাকা ও মাদা‌রীপুর জেলার বি‌ভিন্ন জায়গায় বি‌শেষ অ‌ভিযান চা‌লি‌য়ে গ্রেপ্তার করেছে।এসময় প্রতারণায় ব‌্যবহৃত মোবাইল ফোন ,সীম ও আত্নসাৎকৃত টাকা উদ্ধার ক‌রে ডি‌বিপু‌লিশ  । সর্বশেষ ১১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত কুমিল্লা জেলার বাংলাদেশ পুলিশ ট্রেনিং রিলুট ক্যাস্টেবল (টিআরসি) পদে জনবল নিয়োগ পাইয়ে দেবার নামে প্রতারণার পর ধরা পড়ে চক্রটি।                     বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) এমন তথ্য জানিয়েছেন, কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বিপিএম (বার)। 

তিন প্রতারক গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ডিএমপি কদমতলী থানায় প্রতারণার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী ও মাদারীপুর জেলার শাখার পাড় মোল্লা বাড়ির মৃত শাহাদাত হোসেন ওরফে শুকুর আলীর ছেলে মেরাজুল ইসলাম ওরপে লায়ন মেরাজ (৪৬)।

ডিএমপির বংশাল থানার চাঁদাবাজি মামলার এজাহারভুক্ত আসামী ও মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার সুলতান খন্দকারের ছেলে মো. জামান খন্দকার ওরপে আলীমুজ্জামান (৪৩) ও তাদের সহযোগী মাদারীপুরের সারোয়ার ফকিনার ছেলে মোঃ রিপন ফকির (৩৭)।

পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বি‌পিএম(বার) জানান, ফাহিম নামের এক পুলিশের চাকরি প্রত্যাশির আত্মীয়দের কাছে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব পরিচয় দেয় মেরাজুল ইসলাম ওরপে লায়ন মেরাজ (৪৬)। সেই সঙ্গে জামান খন্দকার ওরফে আলীমুজ্জামান নিজেকে পুলিশ সুপার পরিচয় দেয়। নিজেদের আসল পরিচয় গোপন রেখে তারা চাকরি দেবে বলে ছয় লাখ টাকা দাবী করে। এবং চাকরির আশায় ফাহিমের পরিবারও ছয় লাখ টাকা পরিশোধ করে। যখন ফলাফলের দিন সে উত্তীর্ণ হয়নি তখন তারা বুঝতে পারেন তারা প্রতারিত হয়েছেন। পরে তারা কুমিল্লার মুরাদনগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। 

পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান  জানান, আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা দীর্ঘদিন যাবত হ্যালো পার্টির মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানের অফিসারদের নাম/পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছে। তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলন শেষে পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান চাকরি প্রত্যাশিদের এমন প্রতারণার ফাঁদ থেকে দূরে থাকতে আহবান জানান।


আরও খবর



তিল ঠাঁই নেই মসজিদে হারামে

প্রকাশিত:বুধবার ২২ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৮ মার্চ ২০২৩ | ৭০জন দেখেছেন

Image

পবিত্র রমজান শুরুর আগেই লাখ লাখ ওমরাহ যাত্রী ভিড় করেছেন মক্কা নগরীতে। মক্কার মসজিদে হারামে প্রচণ্ড ভিড় সৃষ্টি হয়। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে লাখো মুসল্লি এখানে জড়ো হয়েছেন ওমরাহ পালন ও তারাবিহর নামাজ আদায় করতে। এতে পবিত্র এই মসজিদে তিল ঠাঁই নেই অবস্থা।

অবশ্য হারাম শরিফের শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ মুসল্লিদের সারিবদ্ধভাবে নামাজ ও বায়তুল্লাহর তাওয়াফের সুযোগ করে দেয়।

আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের বর্তমান সময় পর্যন্ত ৪৮ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান ওমরাহ সম্পন্ন করেছেন। যার মধ্যে ১৫ শতাংশ সৌদি আরবের নাগরিক।

আজই সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পবিত্র রমজানের চাঁদ দেখা যেতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত এই অঞ্চলের কোথাও চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আজ ৩০ শাবান পূর্ণ হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় এখানে রমজানের চাঁদ দেখা যাবে এবং বৃহস্পতিবার থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে রোজা শুরু হবে।

মক্কায় রমজানের সব প্রস্তুতি চলছে। এখানকার আবহাওয়া রয়েছে সহনীয় মাত্রায়। আজ মক্কায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গত কয়েক বছর ধরে হজ ও ওমরাহয় অনেক বিধিনিষেধ ছিল। অনেকে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও রমজানে ওমরাহ পালনে আসতে পারেননি। তবে এবার বিধিনিষেধ না থাকায় রমজানের আগেই ওমরাহ পালনকারীদের প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মক্বায় এই সময়ের ভিড় হজের সময়কেও হার মানিয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ থেকেও হাজার হাজার মুসল্লি ওমরা পালনের জন্য এখন মক্কায় অবস্থান করছেন। অনেকে পুরো রমজান কাটানোর প্রস্তুতি নিয়ে এসেছেন। কেউ কেউ এখানে ইতেকাফও করবেন। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বাংলাদেশের ওমরাহ যাত্রী বেশি। জানা গেছে, হজের খরচ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার ফলে অনেকে হজের ইচ্ছা বাদ দিয়ে ওমরা করতে ভিড় করছেন।

আগামী জুন মাসের শেষ দিকে পালিত হবে এবারের হজ। রমজানেই ওমরার শেষ সময়। শাওয়াল থেকে বিদেশিদের জন্য ওমরার সুযোগ বন্ধ রাখে সৌদি কর্তৃপক্ষ।


আরও খবর



রাণীনগরে পুলিশের অভিযানে মাদক কারবারীসহ গ্রেপ্তার-১০

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:সোমবার ২৭ মার্চ ২০২৩ | ৮২জন দেখেছেন

Image

কাজী আনিছুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ) :

নওগাঁর রাণীনগরে পৃথক অভিযান চালিয়ে একজন মাদক কারবারীসহ মোট ১০জনকে গ্রেপ্তার করেছে থানাপুলিশ । বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের শুক্রবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন,বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় বিভিন্ন মামলায় আদালতের পরোয়ানামূলে উপজেলার সরিয়া গ্রামের সুলতান হোসেন (৪৩),এনামুল মন্ডল (৪৫),সফুর মন্ডল (৪২),মামুন মন্ডল (২৫),নুরনবী মন্ডল (৩৭),নুহ মন্ডল (৩৬) এবং উপজেলার মধ্যরাজাপুর গ্রামের জুয়েল শেখ(২২),আসলাম মন্ডল (৩২) ও আব্দুল জলিল শেখ(৩৬) কে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া একই রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার কাশিমপুর সাহানাপাড়া গ্রামের অভিযান চালিয়ে ওই গ্রামের আহাদ আলীর ছেলে আকরাম সাহানা ওরফে বোলেন (৫০) কে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকালে তার নিকট থেকে ৭০গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। এঘটনায় রাতেই তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের শুক্রবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।


আরও খবর



বিশ্ব জলবায়ুর নেতিবাচক আচরণ

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৭ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৮ মার্চ ২০২৩ | ৮৩জন দেখেছেন

Image

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আগামীর বাংলাদেশে ব্যাপক অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, অসময়ে প্রবল বন্যা, মরুময়তা, ঘূর্ণিঝড়, নিম্নচাপ, খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্র্যোগের সম্ভাবনা ইতোমধ্যে লক্ষ করা গেছে। সম্প্রতি আমাজনের জঙ্গলের তীব্র আগুন এবং বাহামা দ্বীপপুঞ্জে প্রবল ঘূর্ণিঝড় বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের বিধ্বংসী প্রভাবের প্রমাণ। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশগত সমস্যা পৃথিবীর অনেক দেশের চেয়ে প্রকট।

 

ভৌগোলিক অবস্থান, ঘন জনবসতি, জীবিকার জন্য প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীলতা এবং দারিদ্র্যসহ নানা কারণেও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশের জনসংখ্যার ঘনত্বের বিচারে দক্ষিণাঞ্চলের বিস্তীর্ণ উপকূলীয় এলাকা, পূর্বাঞ্চলের হাওর-বাঁওড়, উত্তরাঞ্চলের খরাপ্রবণ এলাকা বিশ্বের সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ।


জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতেও শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ হিসেবেও বাংলাদেশের নাম রয়েছে সর্বাগ্রে। ভূ-গর্ভ থেকে অতিরিক্ত পানি উত্তোলনের ফলে পানির স্তর ক্রমশ নিচে নেমে যাচ্ছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের তথ্যানুসারে, ঢাকা শহরের পানির স্তর বর্তমানে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৭০ ফুটের অধিক নিচে। বিগত ৫০ বছরে ধ্বংস হয়ে গেছে বাংলাদেশের ৫২০টি নদী। এক আন্তর্জাতিক গবেষণার তথ্য মতে, ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। জলবায়ুর আমূল পরিবর্তনের কারণে বন্যা ও খরার প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। উত্তাপ বাড়ার কারণে হিমবাহের গলন আরও বাড়বে। হিমালয় অঞ্চলে তৈরি হবে অসংখ্য হিমবাহ লেক।

এসব লেকে বিস্ফোরণ হলে মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বাংলাদেশ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ব-দ্বীপ বাংলাদেশ, এখানে জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিজনিত বিভিন্ন হুমকি ও চ্যালেঞ্জের ঝুঁকি অধিক। সেক্ষেত্রে জলবায়ুর চরমভাবাপন্ন বৈরী আচরণ এবং পরিবেশের অবনমন টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনে চ্যালেঞ্জস্বরূপ।

জলবায়ু বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্যানেলের (আইপিসি) সম্প্রতি রিপোর্টে উল্লিখিত জাতিসংঘের বিজ্ঞানীদের একটি প্যানেল হুঁশিয়ার করেছে, মানুষের নানা কর্মকাণ্ডের পরিণতিতে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে দ্রুত সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে এবং প্রতিনিয়ত বরফ গলছে। মেরু অঞ্চলের বরফের আচ্ছাদন বিলীন হওয়ার কারণে কার্বণ নিঃসরণের মাত্রাও বেড়ে চলছে। বিভিন্ন জীবজন্তুর আবাসস্থল বদলাচ্ছে। এই শতকের শেষ ভাগে যদি বিশ্বের তাপমাত্রা ১.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায় তবে তার পরিণতি কী হতে পারে সে বিষয়ে বিজ্ঞানীরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

ভীতিকর দিক হচ্ছে, তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সমুদ্র এবং বরফে আচ্ছাদিত অঞ্চলের বরফ দ্রুত গলার ফলে প্রাণিজগতের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। মানুষের নানা কর্মকাণ্ডে পরিবেশে যে বাড়তি তাপ তৈরি হচ্ছে তার ৯০ শতাংশই শুষে নেয় সাগর। ১৯৯৩ সাল থেকে শুষে নেওয়ার এই মাত্রা দ্বিগুণ বেড়েছে। একই সঙ্গে গলছে অ্যান্টার্কটিকা এবং গ্রিনল্যান্ডের বরফও। দেখা গেছে, ২০০৭ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত যে হারে অ্যান্টার্কটিকার বরফ গলছে তা তার আগের ১০ বছরের তুলনায় তিনগুণ।

জানা যায়, সারা বিশ্বে ১ লাখ ৭০ হাজার হিমবাহ রয়েছে, যা পৃথিবীর ৭ লাখ ৩০ হাজার বর্গকিলোমিটার জায়গাজুড়ে বিদ্যমান। এ থেকে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির হার ৭ সেন্টিমিটার। বিশেষ করে, আন্দিজ, মধ্য ইউরোপ ও উত্তর এশিয়ায় যেসব হিমবাহ রয়েছে, সেগুলোর বরফ ২১০০ সাল নাগাদ ৮০ শতাংশ গলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর এসব বরফগলা পানি গিয়ে পড়বে সাগরে। ফলে সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা সহজেই অনুমেয়। আইপিসির শেষ রিপোর্টে জানা যায়, সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা ১.১ মিটার পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে যা আগের ধারণার চেয়ে ১০ সেন্টিমিটার অধিক। আর তা হলে মারাত্মক পরিবেশ ঝুঁকির মধ্যে পড়বে বিশ্বের এক ডজনের বেশি বড় বড় শহর। পরিবেশবাদীদের আশঙ্কা, সাগরের উচ্চতা বাড়লে নিচু উপকূলীয় এলাকার ৭০ কোটি মানুষ বিপদে পড়বে। সাগরের তাপমাত্রা বাড়লে আবহাওয়াও দিন দিন বিরূপ আচরণ শুরু করবে।

জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়ও বেড়ে যাবে। ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের বেশকিছু জায়গায় বড় ধরনের জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কাও করছেন বিজ্ঞানীরা। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্তি নেই স্থলভাগের খুব ভেতরের বসবাসরত মানুষগুলোর। বন্যায় ক্ষতির মাত্রা বেড়ে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ হয়ে যেতে পারে। সাগরের ৯০ শতাংশ প্রবাল বিলীন হতে পারে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে। মাছের শরীরে পারদের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, জলজ প্রাণীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বাড়তি তাপ। সাগরের তাপমাত্রা কমিয়ে রাখতে রয়েছে বেশকিছু করণীয়। তার জন্য কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমপক্ষে ৪৫ শতাংশ কমাতে হবে ২০৩০ সালের মধ্যে।

বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় পরিবেশবান্ধব অর্থনীতি নিশ্চিতকরণের জন্য জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা, কার্বন নিঃসরণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ, জ্বালানি নিরাপত্তা এবং সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ কমানোর কোনো উদ্যোগ লক্ষ করা যায়নি। অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ বন্ধে এবং ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা দিতে অর্থ বরাদ্দে আজও তেমন সাফল্য অর্জিত হয়নি। আইনি কাঠামো বাস্তবায়নে তেমন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্যে আসেনি অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলো। অথচ প্যারিস সম্মেলনে ২০১৫ সালের মধ্যে বৈশ্বিক উষ্ণতা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি না বাড়ার বাধ্যতামূলক চুক্তিরও সিদ্ধান্ত ছিল।

এ ছাড়াও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন প্রতিরোধে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার লক্ষ্য নির্ধারণে ধনী দেশগুলো ২০২০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ শতকরা ৪০ ভাগ কমিয়ে আনার কথা ছিল। চুক্তিতে আইনি বাধ্যবাধকতার মধ্যে এনে কোপেনহেগেন গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড গঠনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এসব উদ্যোগ উষ্ণায়ন রোধে তেমন কার্যকর ভূমিকা রাখেনি। সেই চুক্তির ফলে কার্বন নির্গমন ২০৫০ সালের মধ্যে কার্যত শূন্যে নামিয়ে বিভিন্ন দেশকে এই মুহূর্তে কার্বন নির্গমন ব্যাপক হারে কমানো জরুরি হয়ে পড়েছে। কার্বন নিঃসরণ কার্যকরভাবে বন্ধ বা হ্রাস করা সম্ভব না হলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব বর্তমান শতাব্দীতে তীব্রতর হতে থাকবে।
 
ভবিষ্যতে কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং যেসব অঞ্চলে পর্যাপ্ত ক্ষতি হয়েছে সেখানে অভিযোজন ব্যবস্থা গ্রহণে বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসতে হবে ।

প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী উন্নয়নশীল বা অনুন্নত দেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অভিযোজন প্রক্রিয়ায় এবং বিকল্প জ্বালানির সন্ধানে সহায়তার লক্ষ্যে উন্নত বা তুলনামূলক ধনী দেশ ২০২০ সাল থেকে প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তা এবং এই অর্থের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধির যে প্রস্তাব রয়েছে তা বাস্তবায়ন আবশ্যক। বর্তমান জ্বালানি ব্যবস্থার কাক্সিক্ষত পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে জ্বালানি সংরক্ষণ, গতানুগতিক জ্বালানি চাহিদা হ্রাস, বিদ্যমান যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি দক্ষতার উন্নয়ন, জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার জোরদার করাও জরুরি। বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাব প্রতিরোধ নিশ্চিত করে সামষ্টিক উন্নয়নে সাহায্য-সহযোগিতা বিনিময়, উন্নত বিশ্বের কার্বন নিঃসরণ, জীবাশ্ম জ্বালানি নিয়ন্ত্রণসহ পরিবেশবান্ধব টেকসই উন্নয়ন অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।

 বাংলাদেশে খরাসহিষ্ণু কৃষিপণ্য উৎপাদন, আধুনিক পদ্ধতিতে শস্য ও বীজ সংরক্ষণসহ কৃষিজমি রক্ষার্থে বনভূমি উজাড়, জলাধার ভরাট বন্ধ করা ভিন্ন কোনো বিকল্প নেই। ব-দ্বীপ হিসেবে বাংলাদেশের জন্য প্রকল্পিত দীর্ঘ মেয়াদি ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০, নীতি এবং অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ডেল্টা ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ্রোচ গ্রহণ পরিবেশের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে হবে।

চরম ঝুঁকির মধ্যে থাকা মানুষের জীবন ও জীবিকার ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় চ্যালেঞ্জ। জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা মানুগুলোকে বাঁচাতে না পারলে বিশ্বসভ্যতাই হুমকির মুখে পড়বে। ইন্টারন্যাল ডিসপ্লেসমেন্ট মনিটরিং সেন্টারের হিসাব অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গত ৬ বছরে বাংলাদেশের ৫৭ লাখ মানুষ গৃহহারা হয়েছে। ঢাকার বস্তি এলাকায় বাসবাসকারীদের প্রায় ৭০ শতাংশ পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে স্থানান্তরিত হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএমও। জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের সম্মুখীন হন বাংলাদেশের নারীরা।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষের ৮০ শতাংশই নারী। জলবায়ু, খাদ্য উৎপাদন ও নারী- তিনটি একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ১৯ জেলাধীন ১৪৭ উপজেলায় ২০১১ সালের আদমশুমারির ৩ কোটি ৪৮ লাখ মানুষের মধ্যে ৪৯ শতাংশ নারী। নিমজ্জিত নিম্নাঞ্চলে লবণাক্ত পানি বৃদ্ধির কারণে সেখানে বসবাসরত জনগোষ্ঠী পরিবেশগত, অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্যগতসহ জীবন-জীবিকাজনিত নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন। ফলে ঘটছে তাদের পেশার পরিবর্তন। কর্মস্থানের খোঁজে ত্যাগ করছে পুরান আবাসভূমি। বাড়ছে কর্মস্থানহীনতা, পরিবর্তন হচ্ছে তাদের জীবন ও জীবিকা এবং পেশার ধরন।

আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ও রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ২০১৫ সালে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (ন্যাপ) রোডম্যাপ চূড়ান্ত করে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় নারী ও শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় নারী ও শিশুর সামাজিক সুরক্ষাকরণ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও আন্তর্জাতিকভাবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিযোজনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে বাংলাদেশ।


আরও খবর