Logo
শিরোনাম

মাভাবিপ্রবির কৃষ্ণচূড়া লেন প্রেম, প্রকৃতি আর প্রশান্তির অনন্য প্রতীক

প্রকাশিত:বুধবার ০৭ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

মো: হ্নদয় হোসাইন, মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি :

গ্রীষ্মকাল মানেই বাংলার প্রকৃতিতে রঙের বিস্ফোরণ। সেই রঙিন উৎসবের প্রাণভোমরা যেন কৃষ্ণচূড়া ফুল। আর এই কৃষ্ণচূড়ার জাদুতে মোড়ানো একটি পথ মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) প্রাণকেন্দ্রে দাঁড়িয়ে আছে ‘কৃষ্ণচূড়া লেন’ নামে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমপ্লেক্স থেকে দ্বিতীয় একাডেমিক ভবনের দিকে যেতে যে পথ ধরে প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী, শিক্ষক আর কর্মচারী চলাচল করেন, সেই পথের দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো যেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জীবন্ত গহনা। লেনটির পাশে বয়ে গেছে শান্ত এক খাল, যার জলে প্রতিবিম্বিত হয় চারপাশের সবুজ আর ফুলের রঙিন ছটা।এখন গ্রীষ্মে গাছগুলোর ডালপালায় লাল-কমলালার এক অভাবনীয় দ্যুতি ছড়িয়ে পড়েছে। মনে হয়, আকাশ ভেঙে যেন আগুনরাঙা ফুলের বৃষ্টি নেমেছে।

এই রাস্তাটির নাম ‘কৃষ্ণচূড়া লেন’ হলেও এর পেছনের গল্প আরও গভীর এবং আবেগঘন। ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অষ্টম ব্যাচের কিছু শিক্ষার্থী নিজেদের উদ্যোগে ও অর্থায়নে রোপণ করেন কৃষ্ণচূড়ার চারা। সময়ের সঙ্গে সেই চারাগুলো বড় হতে থাকে, শাখা ছড়ায়, আর গ্রীষ্মকালের আগমনে ফুটে ওঠে কৃষ্ণচূড়ার ঝাঁকড়া রূপ। ধীরে ধীরে সেই রাস্তাটি রূপ নেয় এক অনন্য প্রাকৃতিক লেনে। শিক্ষার্থীরাই ভালোবেসে রঙিন অক্ষরে লেখেন ‘কৃষ্ণচূড়া লেন’ নামটি, যা আজ মাভাবিপ্রবির সাংস্কৃতিক পরিচয়ের অংশ হয়ে উঠেছে।

প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এই পথে হেঁটে যান, কিন্তু হাঁটার অভিজ্ঞতা কখনও একঘেয়ে নয়। প্রতিটি পদক্ষেপ যেন নতুন এক আবিষ্কার। পাতার ফাঁক গলে সূর্যের সোনালি রশ্মি ঝরে পড়ে ফুলে, রঙিন ছায়ায় ভেসে যায় পথ। এখন গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ওপরে তাকালে মনে হয়, লাল ফুলে মোড়া এক বিশাল তোড়া মাথার ওপর ঝুলে আছে।


টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান রাকিব বলেন, এই পথ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মনে হয়, প্রকৃতি তার নিজস্ব ভাষায় কথা বলছে। এই রঙিন দোল খাওয়া ফুলগুলোর সৌন্দর্য হৃদয়ে প্রশান্তি এনে দেয়।

শুধু শিক্ষার্থীরা নয়, মাভাবিপ্রবির এই কৃষ্ণচূড়া লেন পর্যটকদের কাছেও এক বিশেষ আকর্ষণ। অনেকেই পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে আসেন এখানে। ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা পর্যটক ঊর্মি আক্তার বলেন, আমি যখন প্রথম এই লেন দিয়ে হেঁটে যাই, মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। কৃষ্ণচূড়ার লাল ফুল যেন প্রকৃতিকে এক জীবন্ত ক্যানভাসে রূপ দেয়। আমার কাছে এই ফুল ভালোবাসার প্রতীক, এক রকম আবেগেরও।

অর্থনীতি  বিভাগের শিক্ষার্থী কামাল  বলেন, ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশে নানা ফুল ফুটলেও কৃষ্ণচূড়ার জন্য যে বিশেষ এক প্রতীক্ষা থাকে, তা মনে করিয়ে দেয়। এই গ্রীষ্মে কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙে সেজেছে পুরো ক্যাম্পাস, আমার কাছে এখন মনে হয় উৎসব শুরু হয়েছে প্রকৃতির আপন ঘরে।”

এ যেন শুধুই ফুল নয়, একটি আবেগ, একটি গল্প, এবং প্রকৃতিপ্রেমের প্রতিচ্ছবি। কেউ কেউ বলেন, কৃষ্ণচূড়া লেন হলো ‘ক্যাম্পাসের হৃদস্পন্দন’। বসন্ত শেষে গ্রীষ্ম এসেছে আগমনী বার্তা নিয়ে, কৃষ্ণচূড়া লেন হয়ে উঠেছে ভালোবাসার বার্তাবাহক। এখানে প্রেমিক-প্রেমিকার দেখা হয়, বন্ধুরা বসে আড্ডায় মেতে ওঠে, কেউ হয়তো একা হেঁটে নিজের ভেতরের ক্লান্তিকে প্রকৃতির কোলে রেখে আসে।

পর্যটক ইউসুফ সরকার বলেন, “এই ক্যাম্পাসে আমি মাঝে মাঝে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসি, শুধু এই কৃষ্ণচূড়ার রঙ দেখার জন্য। আমার কাছে এটি শুধু একটা রাস্তা নয়, বরং এটি পুরো মাভাবিপ্রবির সবচেয়ে মুগ্ধকর জায়গা।”

জীবনের ব্যস্ততা, ক্লান্তি আর যান্ত্রিকতার মাঝেও এই পথটি যেন এক নীরব আশ্রয়। কৃষ্ণচূড়ার ছায়ায় হাঁটা মানে প্রকৃতির সঙ্গে আত্মার এক নিবিড় সংযোগ। অনেক শিক্ষার্থীরই প্রিয় স্মৃতি গাঁথা এই লেনকে ঘিরে—ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে হাঁটা, কবিতা লেখা, কিংবা নীরবে কারও অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা।

মাভাবিপ্রবির কৃষ্ণচূড়া লেন আজ আর কেবল কিছু গাছের সমষ্টি নয়, এটি হয়ে উঠেছে একটি  সৌন্দর্যের প্রতীক, যেখানে প্রকৃতি তার শিল্পশৈলীর শ্রেষ্ঠ উদাহরণ গড়ে তুলেছে। ফুলে ফুলে গড়ে ওঠা এই লেন যেন জানিয়ে দেয়—প্রকৃতির কোলে এখনও রয়ে গেছে ভালোবাসা, প্রশান্তি আর কিছুটা স্বপ্নময়তা। আর তাই, মাভাবিপ্রবির কৃষ্ণচূড়া লেন এখন শুধু একটি রাস্তার নাম নয়, এটি হয়ে উঠেছে সৌন্দর্যের এক জীবন্ত নিদর্শন।


আরও খবর



ঝালকাঠিতে বাস-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২

প্রকাশিত:শনিবার ১৪ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

হাসিবুর রহমান, ঝালকাঠি প্রতিনিধি :

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় বাস ও পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। শনিবার (১২ জুন) দুপুরে রাজাপুর-ভাণ্ডারিয়া আঞ্চলিক সড়কের পাকাপুল এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পিকআপটি ভাণ্ডারিয়া থেকে রাজাপুরের দিকে যাচ্ছিল। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা হানিফ পরিবহনের একটি দ্রুতগামী বাস পিকআপটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে পিকআপটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই দুইজন নিহত হন। দুর্ঘটনার পর কিছু সময়ের জন্য ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে রাজাপুর ফায়ার সার্ভিস ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করার চেষ্টা করছে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।

রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন জানান, “ঘটনার পর পরই পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধারের চেষ্টা করছে। নিহতদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


আরও খবর



পুতিন সম্পূর্ণ উন্মাদ হয়ে গেছেন : ট্রাম্প

প্রকাশিত:সোমবার ২৬ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর ‘খুশি নন’। ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আকাশ হামলার পর এমন মন্তব্য করলেন তিনি। ২৬ মে রাতে নিউ জার্সিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় পুতিনকে ‘উন্মাদ’ বলে অভিহিত করেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

ট্রাম্প বলেন, ‘তার কী হয়েছে? তিনি অনেক মানুষ হত্যা করছেন। পুতিন সম্পর্কে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি তাকে অনেকদিন ধরে চিনি, সব সময় তার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এখন সে শহরে রকেট ছুড়ছে এবং মানুষ হত্যা করছে, এটা আমার একদম পছন্দ নয়।

এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টে লেখেন, পুতিন ‘সম্পূর্ণ উন্মাদ হয়ে গেছেন’।

ট্রাম্প আরো বলেন, ‘আমি সব সময়ই বলেছি, সে পুরো ইউক্রেন চায়, কেবল একটা অংশ নয় এবং হয়তো সেটাই প্রমাণিত হচ্ছে, কিন্তু যদি সে সেটা করে, তাহলে সেটি রাশিয়ার পতনের কারণ হবে!

এর আগে সাম্প্রতিক রুশ হামলা নিয়ে ওয়াশিংটনের ‘নীরবতা’ পুতিনকে উৎসাহিত করছে বলৈ মন্তব্য করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি মস্কোর ওপর ‘জোরালো চাপ’ বা আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আহ্বান জানান।

এমন কথা বলায় জেলেনস্কিকে নিয়েও কঠোর মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি যেভাবে কথা বলছেন, তাতে তিনি নিজের দেশের কোনও উপকার করছেন না।

জেলেনস্কি সম্পর্কে ট্রাম্প আরো বলেন, ‘তার মুখ থেকে যা কিছু বের হয়, তা সমস্যার কারণ হয়। আমি এটা পছন্দ করি না এবং এটা বন্ধ হওয়া উচিত।


আরও খবর



যিলহজ্ব, হজ্ব ও কুরবানী

প্রকাশিত:সোমবার ০৯ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

কুরবানী ইসলামের বিশেষ ইবাদত। এটা আদম আ.-এর যুগ থেকে বিদ্যমান ছিল। সূরা মাইদায় (আয়াত ২৭-৩১) আদম আ.-এর দুসন্তানের কুরবানীর কথা এসেছে। তবে প্রত্যেক নবীর শরীয়তে কুরবানীর পন্থা এক ছিল না। ইসলামী শরীয়তে কুরবানীর যে পদ্ধতি নির্দেশিত হয়েছে তার মূল সূত্র মিল্লাতে ইবরাহীমীতে বিদ্যমান ছিল। কুরআন মজীদ ও সহীহ হাদীস থেকে তা স্পষ্ট জানা যায়। এজন্য কুরবানীকে সুন্নতে ইবরাহীমী নামে অভিহিত করা হয়।

 

ফার্সী, উর্দু ও বাংলা ভাষায় কুরবানী শব্দটি আরবী কুরবান শব্দের স্থলে ব্যবহৃত হয়। কুরবান শব্দটি    

মূলধাতু (যার অর্থ হচ্ছে, নৈকট্য) থেকে নির্গত। তাই আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের জন্য শরীয়তসম্মত পন্থায় বান্দা যে আমল করে তাকে আভিধানিক দিক থেকে তাকে কুরবান বলা যেতে পারে। তবে শরীয়তের পরিভাষায় কুরবান শব্দের মর্ম তা-ই যা উপরে উল্লেখিত হয়েছে।

 

ইসলামী শরীয়তে এই পারিভাষিক অর্থে দু ধরনের কুরবানী রয়েছে।

 

১. যা হজ্বের মওসুমে হজ্ব ও উমরা কারীগণ নির্ধারিত (মক্কা ও মিনায়) স্থানে  আদায় করে থাকেন। এর বিভিন্ন প্রকার রয়েছে। যথা-কিরান বা তামাত্তু হজ্ব আদায়কারীর ওয়াজিব কুরবানী, ইফরাদ হজ্বকারীর নফল কুরবানী, সঙ্গে করে নিয়ে আসা হাদি (কুরবানীর পশু) দ্বারা কুরবানী, হজ্ব আদায়ে অক্ষম হওয়ার কারণে বা কোনো নিষিদ্ধ কর্মের জরিমানারূপে অপরিহার্য কুরবানী, মানতের কুরবানী কিংবা দশ যিলহজ্বের সাধারণ কুরবানী।

এ কুরবানীর বিধান মৌলিকভাবে সূরা হজ্ব আয়াত ২৭-৩৭, সূরা বাকারা আয়াত ১৯৬, সূরা মাইদা আয়াত ২, ৯৫-৯৭, সূরা ফাতহ আয়াত ২৫-এ এসেছে। আর হাদীস শরীফে তা উল্লেখিত হয়েছে বিস্তারিতভাবে।

 

২. সাধারণ কুরবানী, যা হজ্ব-উমরার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এবং যার স্থানও নির্ধারিত নয়। তবে সময় নির্ধারিত। যে তারিখে হজ্ব আদায়কারীগণ মিনা-মক্কায় কুরবানী করে থাকেন সে তারিখে অর্থাৎ যিলহজ্বের দশ, এগারো, বারো তারিখে এ কুরবানী হয়ে থাকে। পৃথিবীর সকল মুসলিম পরিবারের জন্য; বরং প্রত্যেক আকেল-বালেগ মুসলমানের জন্য এই কুরবানীর বিধান এসেছে। তবে কারো জন্য তা ওয়াজিব, কারো জন্য নফল।

সূরা আনআমের ১৬১-১৬৩ আয়াতে এবং সূরা কাউসারের ২ আয়াতে এই কুরবানী উল্লেখিত হয়েছে। বিস্তারিত বিধি-বিধান রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহতে  রয়েছে।

 

৪. সূরা আনআমে এসেছে-

قُلْ اِنَّنِیْ هَدٰىنِیْ رَبِّیْۤ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍ ۚ۬ دِیْنًا قِیَمًا مِّلَّةَ اِبْرٰهِیْمَ حَنِیْفًا ۚ وَ مَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِیْنَ۝۱۶۱ قُلْ اِنَّ صَلَاتِیْ وَ نُسُكِیْ وَ مَحْیَایَ وَ مَمَاتِیْ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِیْنَۙ۝۱۶۲ لَا شَرِیْكَ لَهٗ ۚ وَ بِذٰلِكَ اُمِرْتُ وَ اَنَا اَوَّلُ الْمُسْلِمِیْنَ۝۱۶۳

 আপনি বলে দিন, আমার প্রতিপালক আমাকে পরিচালিত করেছেন সরল পথের দিকে-এক বিশুদ্ধ দ্বীনের দিকে, অর্থাৎ একনিষ্ঠ ইব্রাহীমের মিল্লাত (তরীকা), আর তিনি মুশরিকদের      অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। আপনি বলুন, নিঃসন্দেহে আমার সালাত, আমার নুসুক, আমার জীবন, আমার মৃত্যু সবকিছুই রাববুল আলামীন আল্লাহর জন্য। তাঁর কোনো শরীক নেই।  আমাকে এই আদেশই করা হয়েছে, সুতরাং আমি হলাম প্রথম আত্মসমর্পণ কারী।

এ আয়াতে নুসূক শব্দটি বিশেষভাবে লক্ষণীয়। এটি নাসীকাহ শব্দের বহুবচন, যার অর্থ, আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিলের জন্য আল্লাহর নামে জবাইকৃত পশু। আর কুরবানীর স্থানকে আরবী ভাষায় এবং শরীয়তের পরিভাষায় মানসাক বলা হয়। দুটো শব্দের মূল ধাতু অভিন্ন। আরবী ভাষার যেকোনো অভিধানে এবং লুগাতুল কুরআন, লুগাতুল হাদীস ও লুগাতুল ফিকহের যেকোনো নির্ভরযোগ্য কিতাবে নুসুক শব্দের উপরোক্ত অর্থ পাওয়া যাবে।

 

(দেখুন : আসসিহাহ খ. ৪ পৃ. ১৬১২; লিসানুল আরব খ. ১৪ পৃ. ১২৭-১২৮; তাজুল আরূস খ. ৭ পৃ. ২৮৭; আলমুফরাদাত ফী গারীবিল কুরআন পৃ. ৮০২; আননিহায়া ফী গারীবিল হাদীসি ওয়াল আছার খ. ৫ পৃ. ৪৮; মাজমাউ বিহারিল আনওয়ার খ. ৪ পৃ.৭১৪-৭১৫; আলমিসবাহুল মুনীর ফাইয়ুমী পৃ. ৩১১; আলমুগরিব, মুতাররিযী খ. ২ পৃ. ৩০০)

 

উপরোক্ত আয়াতের অর্থ পরিষ্কার। আল্লাহ তাআলা হযরত ইবরাহীম আ.কে যে বিশুদ্ধ তাওহীদ ও সরল পথের সন্ধান দিয়েছিলেন তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতিও নাযিল করেছেন এবং আদেশ করেছেন যে, বলুন, আমার নামায, আমার কুরবানী, আমার জীবন, আমার মরণ সব আল্লাহ তাআলার জন্য।

সূরা বাকারার ১৯৬ নং আয়াতেও নুসূক শব্দ এই অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।

 

উল্লেখ্য আরবী ভাষায় নুসুক ইবাদত অর্থেও ব্যবহৃত হয়। এজন্য ইবাদতকারীকে নাসেক ও ইবাদতের পদ্ধতিকে মানসাক বলা হয়। উল্লেখিত আয়াতে নুসুক শব্দের অর্থ যদি ইবাদতও করা হয়, তবুও তাতে কুরবানী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কেননা কুরবানীও একটি ইবাদত। রাসূল কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল আযহার কুরবানীকে একাধিক হাদীসে নুসুক বলেছেন। কুরবানীর পশু যবেহ করার যে দুআ হাদীসে এসেছে তাতেও ওই আয়াত রয়েছে। পূর্ণ হাদীস লক্ষ করুন।

 

জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদের দিন দুটি দুম্বা যবেহ করেছেন। যবেহর সময় সেগুলোকে কিবলামুখী করে বলেছেন-

اِنِّیْ وَجَّهْتُ وَجْهِیَ لِلَّذِیْ فَطَرَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ حَنِیْفًا وَّ مَاۤ اَنَا مِنَ الْمُشْرِكِیْنَ  اِنَّ صَلَاتِیْ وَ نُسُكِیْ وَ مَحْیَایَ وَ مَمَاتِیْ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِیْنَ  لَا شَرِیْكَ لَهٗ ۚ وَ بِذٰلِكَ اُمِرْتُ وَ اَنَا اَوَّلُ الْمُسْلِمِیْنَ ، بِسْمِ اللهِ وَاللهُ أَكْبرُ، اَللّهُمَّ مِنْكَ وَلَكَ عَنْ مُحَمَّدٍ وَّأُمَّتِهِ.

-সুনানে আবু দাউদ ৩/৯৫, হাদীস : ২৭৯৫; মুসনাদে আহমদ ৩/৩৭৫ হাদীস : ১৫০২২; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৮৯৯

কুরবানীর শুরুতে তাঁর এই আয়াত ও দুআ পড়া থেকে যেমন প্রমাণ হয় কুরবানী খালিছ ইবাদত তেমনি একথাও প্রমাণ হয় যে, উল্লেখিত আয়াতে নুসুক শব্দের অর্থ ঈদুল আযহার কুরবানী অথবা কুরবানী তাতে অবশ্যই শামিল রয়েছে।

 

অন্য আয়াতটি হল সূরা কাউসারের দ্বিতীয় আয়াত। ইরশাদ হয়েছে-

اِنَّاۤ اَعْطَیْنٰكَ الْكَوْثَرَؕ۝۱ فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَ انْحَرْؕ۝۲ اِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الْاَبْتَرُ۠۝۳

এখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এবং তাঁর মাধ্যমে গোটা উম্মতকে সালাত (নামায) ও নাহ্র (কুরবানীর) আদেশ দেওয়া হয়েছে। নাহর শব্দের মূল অর্থ উট যবেহ করা, তবে সাধারণ ব্যবহারে যেকোনো পশু যবেহ করাকেই নাহর বলে। আয়াতে এমন যবেহ উদ্দেশ্য, যা  ইবাদত হিসেবে করা হয়। সেটা হচ্ছে হজ্ব ও উমরার কুরবানী এবং ঈদুল আযহার সাধারণ কুরবানী।

 

এ কুরবানীর সময় তিন দিন : যিলহজ্বের দশ, এগারো ও বারো তারিখ। তবে উত্তম হল দশ তারিখ। সাধারণত এ তারিখেই অধিকাংশ কুরবানী হয়ে থাকে। এজন্য দশ যিলহজ্বের ইসলামী নাম ইয়াওমুন নাহর। -সহীহ বুখারী হাদীস ৫৫৫০

আয়াতে নামাযের যে আদেশ এসেছে তাতে ঈদের নামাযও শামিল রয়েছে। উপরোক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা যে বিধান দান করেছেন তা পালন করার পদ্ধতি নবীজী  তাঁর সুন্নাহর মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন। একটি হাদীস লক্ষ করুন।

সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম ও অন্যান্য হাদীসের কিতাবে বহু সনদে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল আযহার দিন নামায পরবর্তী খুতবায় বলেছেন, এই দিনের প্রথম কাজ হল সালাত আদায় করা এরপর নহর (কুরবানী) করা। যে সালাত আদায়ের পর নুসুক (কুরবানী) করল তার নুসুক পূর্ণ হল এবং সে মুসলিমদের পথ অনুসরণ করল। আর যে সালাতের আগে যবেহ করল সেটা তার গোশতের প্রয়োজন পূরণ করবে, কিন্তু নুসুক হিসেবে গণ্য হবে না।

 

এই হাদীস বহু সহীহ সনদে বিভিন্ন হাদীসের কিতাবে উল্লেখিত হয়েছে। কোথাও বিস্তারিতভাবে, কোথাও সংক্ষিপ্তভাবে।

(দেখুন : সহীহ বুখারী, হাদীস, ৯৫১, ৯৫৫, ৯৬৫, ৯৬৮, ৫৫৪৫, ৫৫৪৬; সহীহ মুসলিম হাদীস ১৯৬১, ৪, ৬, ৭; মুসনাদে আহমদ ৪/২৮১-২৮২, ৩০৩; জামে তিরমিযী হাদীস ১৫০৮, সুনানে নাসায়ী হাদীস ৪৩৯৪-৪৩৯৫; সহীহ ইবনে হিববান হাদীস ৫৯০৭, ৫৯১০, ৫৯১১)

 

এই হাদীসে সূরাতুল কাউসারের ব্যাখ্যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমল থেকে পাওয়া গেল, যার সারমর্ম এই যে, সালাত আদায় করুন শব্দে ঈদের নামায এবং কুরবানী করুন শব্দে ঈদুল আযহার কুরবানীও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। একথাও স্পষ্ট হয়ে গেল যে, ঈদুল আযহার কুরবানী হচ্ছে নুসুক, যা সূরা আনআমের ১৬২ নং আয়াতে উল্লেখিত হয়েছে। এর উদ্দেশ্য গোশত ভক্ষণ করা বা গোশতের প্রয়োজন পূরণ করা নয়। এটা একটা ইবাদত। তবে কুরবানী হয়ে যাওয়ার পর আল্লাহ তাআলা সে পশুর গোশত কুরবানীদাতার জন্য হালাল করেছেন এবং দশ যিলহজ্ব থেকে মোট চার দিন রোযা রাখতে নিষেধ করে যেন তাঁর মেহমানদারী কবুল করার আদেশ দিয়েছেন।

 

ঈদুল আযহা মুসলমানদের আনন্দের দিন। আরাফা দিবসের ব্যাপক মাগফিরাত, আল্লাহর দরবারে কুরবানী পেশ করার সৌভাগ্য এবং আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়া কুরবানী থেকে মেহমানদারী লাভ ওই আনন্দের কারণ। বলাবাহুল্য, এই তাৎপর্য অনুধাবন করার জন্য অন্তরে প্রয়োজন ঈমানের মিষ্টতা এবং খালিক ও মালিকের মহববত ও ভালোবাসা। বস্ত্তবাদী ও যুক্তিপূজারী হৃদয় দুঃখজনকভাবে এ নিয়ামত থেকে শূন্য।

 

সুন্নাহর আলোকে কুরবানী

কুরবানী বিষয়ক সহীহ ও হাসান হাদীস একত্র করা হলেও একটি দীর্ঘ কিতাব তৈরি হতে পারে। এখানে আরো কয়েকটি হাদীস পেশ করছি।

 

১. উম্মে সালামা রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে কুরবানীর ইচ্ছা রাখে সে যেন যিলহজ্বের চাঁদ দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর থেকে কুরবানী করা পর্যন্ত তার নখ, চুল ইত্যাদি কর্তন না করে।

-সহীহ মুসলিম হাদীস ১৯৭৭/৩৯-৪২; তিরমিযী হাদীস ১৫২৩; আবু দাউদ, হাদীস ২৭৯১; নাসায়ী হাদীস ৪৩৬২-৪৩৬৪, সহীহ ইবনে হিববান হাদীস ৫৮৯৭, ৫৯১৬, ৫৯১৭

 

২.আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত এক দীর্ঘ হাদীসে এসেছে যে, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে দ্বীন বিষয়ে জানতে এসেছিল। ফিরে নিয়ে যাওয়ার সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডাকলেন এবং বললেন, আমাকে ইয়াওমুল আযহার আদেশ করা হয়েছে (অর্থাৎ, এ দিবসে কুরবানী করার আদেশ করা হয়েছে।) এ দিবসকে আল্লাহ এ উম্মতের জন্য ঈদ বানিয়েছেন। লোকটি বলল, আমার কাছে যদি শুধু পুত্রের দেওয়া একটি দুধের পশু থাকে আমি কি তা-ই কুরবানী করব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না, বরং তুমি সেদিন তোমার মাথার চুল কাটবে (মুন্ডাবে বা ছোট করবে) নখ কাটবে, মোচ কাটবে এবং নাভির নিচের চুল পরিষ্কার করবে। এটাই আল্লাহর কাছে তোমার পূর্ণ কুরবানী বলে গণ্য হবে।

-মুসনাদে আহমদ ২/১৬৯; হাদীস ৬৫৭৫; সহীহ ইবনে হিববান হাদীস ৭৭৩, ৫৯১৪; আবু দাউদ হাদীস ২৭৮৯; নাসায়ী হাদীস ৪৩৬৫

 

৩. আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যার সামর্থ্য আছে তবুও সে কুরবানী করল না (অর্থাৎ কুরবানী করার সংকল্প তার নেই) সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছেও না আসে। -মুসনাদে আহমদ ২/৩২১; মুসতাদরাক হাকিম ৪/২৩১, হাদীস ৭৬৩৯

৪. আলী রা. বলেন, আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদেশ করেছেন আমরা যেন (কুরবানী পশুর) চোখ ও কান ভালো করে দেখে নিই এবং কান কাটা বা কান ফাড়া ও কানে গোলাকার ছিদ্র করা পশুর দ্বারা কুরবানী না করি। -মুসনাদে আহমদ ১/৮০; ১০৮, ১৪৯; সহীহ ইবনে খুযাইমা হাদীস ২৯১৪-২৯১৫; আবু দাউদ হাদীস ২৮০৪; নাসায়ী হাদীস ৪৩৭৩-৪৩৭৪

 

৫. বারা ইবনে আযিব রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, চার ধরনের পশুর দ্বারা কুরবানী করা যায় না। যে পশুর চোখের জ্যোতি ক্ষতিগ্রস্ত, যে পশু অতি অসুস্থ, যে পশু খোঁড়া আর যে পশু অতি শীর্ণ। -মুয়াত্তা মালিক ২/৪৮২; সহীহ ইবনে হিববান হাদীস ৫৯১৯; নাসায়ী হাদীস ৪৩৭০-৪৩৭১; তিরমিযী হাদীস ১৪৯৭

 

৬. আম্মাজান আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানী করার জন্য একটি দুম্বা আনতে বললেন, যার শিং রয়েছে, যার পা কালো, পেটের চামড়া কালো এবং চোখ কালো। এ রকম একটি দুম্বা আনা হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আয়েশা, আমাকে ছুরি দাও। আরো বললেন, একটি পাথরে ঘষে ধারালো করে দাও। তিনি ধারালো করে দিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুম্বাটি মাটিতে শায়িত করলেন। এরপর বিসমিল্লাহ বলে যবেহ করলেন এবং বললেন-

 

ইয়া আল্লাহ! মুহাম্মাদের পক্ষ থেকে, মুহাম্মাদের পরিবারের পক্ষ থেকে এবং মুহাম্মাদের উম্মতের পক্ষ থেকে কবুল করুন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৯৬৭, সহীহ ইবনে হিববান হাদীস ৫৯১৫; আবু দাউদ হাদীস ২৭৯২

অন্য হাদীসে এসেছে যে, কুরবানীর পশু যবেহ করার সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দুআ পড়েছেন-

بِسْمِ اللهِ اَللّهُمَّ مِنْكَ وَلَكَ، اَللّهُمَّ عَنْ مُحَمَّدٍ.

আল্লাহর নামে। ইয়া আল্লাহ! তোমার নিকট থেকে এবং তোমার উদ্দেশ্যে। ইয়া আল্লাহ! মুহাম্মাদের পক্ষ থেকে কবুল করুন। -আলমুজামুল কাবীর, তবারানী হাদীস ১১৩২৯; মাজমাউয যাওয়াইদ ৪/২১

নবীজীর কথায়-ইয়া আল্লাহ! তোমার নিকট থেকে এবং তোমারই উদ্দেশ্যে চিন্তা-ভাবনা করলে খুব সহজেই বোঝা যায়, কুরবানীর হাকীকত কী। আল্লাহ-প্রদত্ত রিযক এবং আল্লাহর নেয়ামত আমরা লাভ করেছি আর আল্লাহর হুকুমে তা কুরবানী রূপে তাঁর দরবারে পেশ করার সৌভাগ্য লাভ করেছি। আবার তা আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে মেহমানদারী হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশনা পেয়েছি।

 

অতএব পূর্ণ তাওহীদ ও ইখলাসের সঙ্গে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাহ অনুযায়ী কুরবানী করা কর্তব্য। কুরবানী নামায-রোযার মতো ফরয আমল নয়, তবে অন্যান্য সুন্নতে মুয়াক্কাদার চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব আমল। সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়মিত কুরবানী করেছেন, কোনো বছর বাদ দেননি

(আল ইসতিযকার, ইবনে আব্দিল বার ১৫/১৬৩-১৬৪) কখনো কখনো কুরবানী করার জন্য সাহাবীদের মধ্যে কুরবানীর পশু বণ্টন করেছেন। -সহীহ বুখারী হাদীস ৫৫৫৫

 

হযরত আলী রা.কে আদেশ করেছেন যেন (ইন্তেকালের পরেও) তাঁর পক্ষ থেকে কুরবানী করা হয়। হযরত আলী রা. প্রতি বছর নিজের কুরবানীর সঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকেও কুরবানী করতেন। -মুসনাদে আহমদ হাদীস ৮৪৩, ১২৭৮, আবু দাউদ হাদীস ২৭৮৭

 

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগ থেকে আজ পর্যন্ত উম্মতের মধ্যে এই ইবাদত তাওয়ারুছ ও তাওয়াতুরের সঙ্গে চলমান রয়েছে এবং প্রতিবছর শিয়াররূপে (ইসলামের একটি প্রকাশ্য ও সম্মিলিতভাবে আদায়যোগ্য ইবাদত হিসেবে) তা আদায় করা হয়েছে। 

 


আরও খবর

আগামী ২৫ বছর গরমকালে হজ হবে না

মঙ্গলবার ১০ জুন ২০২৫




নওগাঁয় মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় দুই বন্ধু নিহত, এক বন্ধু আহত

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁর নজিপুর  থেকে মোটরসাইকেলের যোগে নিজ বাসায় ফেরার পথে দূর্ঘটনায় সুনিবর আশরাফ (১৭) ও হৃদয় (১৭) নামে দু'জন বন্ধুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও একজন বন্ধু। মর্মান্তিক এ সড়ক দূর্ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার সন্ধার পূর্ব মহূর্তে নওগাঁ টু জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কের পত্নীতলা উপজেলার পার্বতীপুর মোড় নামক স্থানে।।

নিহত সুনিবর আশরাফ নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার মাস্টার পাড়া এলাকার বেথুল আশরাফ ওরফে বাবু'র ছেলে এবং হৃদয় আখতারুজ্জামানের ছেলে। আর আহত বন্ধু হলেন, একই এলাকার শাহাজান আলীর ছেলে সাদনান সাকিব (১৭)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত ও আহতরা ৩ জন বন্ধু। তারা বাড়ি থেকে নজিপুর বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে নিজ বাসায় ফেরার পথে পার্বতীপুর মোড় এলাকায় পৌছার পরই তাদের মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হাড়িয়ে সড়কের ধারে দাঁড়িয়ে রাখা একটি বাসের পেছনে ধাক্কা লেগে

সুনিবর আশরাফের দূর্ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মিরা নিহত দূর্ঘটনাস্থলে পৌছে সুনিবর আশরাফ এর মৃতদেহ ও  আহত দুই জনকে উদ্ধার করে পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন। দায়িত্বরত চিকিৎসক আহত দুই জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে রেফার্ড করেন। রাজশাহীতে নেওয়ার পথে হৃদয়ের মৃত্যু হয়। সড়ক দূর্ঘটনায় নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করে পত্নীতলা থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ মোঃ এনায়েতুল বলেন, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না থাকায় এবং তাদের অনুরোধে মৃতদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।


আরও খবর



রাণীনগরে সেনাবাহিনীর একদিনের ফ্রি চিকিৎসা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:রবিবার ২৫ মে 20২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

কাজী আনিছুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ) :

নওগাঁর রাণীনগরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একদিনের বিনামূল্যে চিকিৎসা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে। অধিনায়ক ২৫ফিল্ড এ্যাম্বুলেন্স ১১পদাতিক ডিভিশন বগুড়ার জাহাঙ্গীরাবাদ সেনানিবাসের আয়োজনে  রোববার সকাল ৯টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এই চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। এসময় প্রায় দেড় হাজার বিভিন্ন ধরনের রোগী চিকিৎসা গ্রহন করেন।

২৫ফিল্ড এ্যাম্বুলেন্সের অধিনায়ক লে: কর্ণেল মো: রকিব উদ্দিন মজুমদার এমসিপিএস,ডিএফএম,এএমসি জানান,ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় দেশের সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মানবিক উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছে। এর ধারাবাহিকতায় রোববার রাণীনগর উপজেলার আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ৬জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে মেডিসিন,চক্ষু,গাইনি,শিশু ও চর্ম রোগের চিকিৎসা প্রদানসহ প্রায় ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। এছাড়া জটিল রোগীদের অন্যান্য চিকিৎসাসহ অপারেশনের ব্যবস্থাও রয়েছে। বগুড়া অঞ্চলের তত্ত¡াবধানে এবং ১১পদাতিক ডিভিশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এই মেডিকেল ক্যাম্পে প্রায় দেড় হাজার রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়।

 তমেজ উদ্দীন (৬৫),ফরেজ আলী ফকির (৭২),মেরিনা আক্তার (২৪),সাজ্জাদ হোসেন (৩৫)সহ ক্যাম্পে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা বাংলাদেশ সেনাবাহীনির এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তাদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।


আরও খবর