Logo
শিরোনাম

মেট্রোরেলের যাত্রীসেবায় ভ্যাট মওকুফ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ মে 20২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

মেট্রোরেলের যাত্রীসেবার ওপর মূল্য সংযাজন কর (ভ্যাট) অব্যাহতি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এ অব্যাহতি কার্যকর থাকবে।

সম্প্রতি রাজস্ব বোর্ডের এক বিশেষ আদেশে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।

আদেশে বলা হয়, মেট্রোরেল বাংলাদেশের প্রথম সর্বাধুনিক গণপরিবহন। মেট্রোরেল যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি কর্মঘণ্টা সাশ্রয়ে বিরাট ভূমিকা পালন করবে। মেট্রোরেল চালু হওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে এ জাতীয় গণপরিবহনকে অধিক জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে এ গণপরিবহনে যাতায়াত ব্যয় সাশ্রয়ী করা প্রয়োজন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ (২০১২ সালের ৪৭ নং আইন) এর ধারা ১২৬ এর উপ-ধারা (৩)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মেট্রোরেল সেবার ওপর আরোপণীয় মূল্য সংযোজন কর ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত অব্যাহতি প্রদান করা হলো। এ আদেশ ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর হতে কার্যকর হয়েছে মর্মে গণ্য হবে।

গত মার্চে যাত্রীদের কোনো শ্রেণিবিন্যাস না থাকায় মেট্রোরেলের যাত্রীসেবার ওপর কোনো মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট প্রযোজ্য নয় উল্লেখ করে ভ্যাট ছাড় চায় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। এমন অবস্থায় ডিএমটিসিএল থেকে ভ্যাট আদায়ে রাজস্ব বোর্ডের দিকনির্দেশনা চায় কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা (দক্ষিণ)।

এনবিআরের আইন অনুযায়ী তাপানুকূল (এসি) ও নন-এসি রেলওয়ে সার্ভিসের ওপর ১৫ শতাংশ হারে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট প্রযোজ্য রয়েছে। তবে ডিএমটিসিএলের দাবি ছিল মেট্রোরেল এবং মেট্রোরেলের যাত্রীদের কোনো শ্রেণিবিন্যাস না থাকায় যাত্রীসেবার ওপর কোনো ধরনের মূসক প্রযোজ্য হবে না।


আরও খবর

বঙ্গবাজারে চলছে উচ্ছেদ অভিযান

মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪

উৎসবের রঙে রঙিন রাজধানীর সড়ক

রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪




নাবিকদের নিয়ে আমিরাতের বন্দরে এমভি আবদুল্লাহ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

সোমালিয়ান জলস্যুদের হাতে জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার ৯ দিন পর অবশেষে সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়া বন্দরে নোঙর করেছে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। সোমবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে ভেড়ে জাহাজটি।

এসময় নাবিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফর। এছাড়াও ১৫ সদ্যের প্রতিনিধি দলে আছেন কেএসআরএম (কবির) গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর শাহরিয়ার জাহান আরাফাত।

এর আগে, রোববার (২১ এপ্রিল) এমভি আবদুল্লাহ ওই বন্দরের বহির্নোঙরে নোঙর করেছিল। কিন্তু বন্দরে জায়গা না থাকায় জাহাজটির বন্দরে পৌঁছাতে বিলম্ব হয়।

কেএসআরএম গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২৩ নাবিকের সবাই সুস্থ আছেন। কিন্তু এই মুহুর্তে তারা চাইলে বাইরে আসতে পারবেন না। কারণ, আরব আমিরাতে প্রবেশের জন্য এখনও তাদের ভিসা হয়নি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের ভিসার জন্য আবেদন করা হবে।

জাহাজের মালিকপক্ষ জানায়, এখন জাহাজের কয়লা খালাসের প্রক্রিয়া শুরু হবে। এরপর নতুন করে কার্গো ভর্তি করার পর দেশে ফেরার প্রস্তুতি নেওয়া হবে।

এদিকে প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দেশটির আজমান প্রদেশে বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন কেএসআরএম গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর শাহরিয়ার জাহান।

উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে পড়ে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। জলদস্যুরা জাহাজে ‍উঠে নাবিকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে দস্যুদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় নিয়ে যেতে বাধ্য করে। একপর্যায়ে সুবিধাজনক স্থানে জাহাজটি নোঙর করায় দস্যুরা। এরপর মুক্তিপণের বিষয়ে দেনদরবার শুরু হয়। শনিবার (১৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় বিকেলে ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি তারা ছেড়ে দেয়।


আরও খবর



বন্ধুত্বের বাঁধনে এক হচ্ছেন তাহসান-মিথিলা

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

তাহসান খান ও রাফিয়াত রশীদ মিথিলা দুই তারকাই নিজেদের কাজের জন্য জনপ্রিয়। একসময়ের জনপ্রিয় তারকা জুটিও ছিলেন তারা। দীর্ঘদিনের প্রেমের পর ২০০৭ সালের ৩ আগস্ট বিয়ে করেছিলেন জনপ্রিয় এই দুই তারকা। তারপর কেটে গেছে ১১ বছর। একসঙ্গে জুটি বেধে অভিনয়ও করেছেন। আমার গল্পে তুমি, মিস্টার অ্যান্ড মিসেস, ল্যান্ডফোনের দিনগুলোতে প্রেম, মধুরেন সমাপয়েত নাটকসহ বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেন এই জুটি। নাটক ছাড়াও এ জুটি একসঙ্গে গানও গেয়েছেন। মূলত এসব কারণে বিয়ের পর তরুণদের কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছিলেনতারা। তবে বিয়ের ১১ বছর পর ভক্তদের মন ভেঙ্গে যায়। কারণ, ২০১৭ সালের মে মাসে আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ হয় তাহসান এবং মিথিলার।

তারপর দুজন দুদিকে। ২০১৯ সালের শেষ দিকে মিথিলা পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় পরিচালক সৃজিত মুখার্জি বিয়ে করে সংসার করছেন কলকাতায়। অন্যদিকে তাহসান বিয়ে না করলেও ব্যস্ত আছেন তার গান এবং অভিনয় নিয়ে। অবশ্য তাহসান এবং মিথিলা একমাত্র মেয়ে আইরা তেহরীম খানকে নিয়ে দুজনের বন্ধুত্ব এখনো অটুট। বিচ্ছেদের পরেও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের জন্য তারা প্রশংসিত। তবে এর পর দুজনকে আর কখনোই একসঙ্গে দেখা যায়নি। এবার তাহসান এবং মিথিলা তাদের ভক্তদের জন্য দিলেন নতুন সুখবর। ফের এক হতে যাচ্ছেন এই দুই তারকা। আবারো তাদের একসঙ্গে দেখা যাবে।

একটি ওয়েব সিরিজে অভিনয় করছেন এই জুটি। সাত পর্বের এই ওয়েব সিরিজে দেখা যাবে তাদের। তবে এখনো এ নিয়ে নির্মাতা, অভিনয়শিল্পী কেউই মুখ খোলেননি।

অন্যদিকে গত ৩১ মার্চ পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পেয়েছে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অভাগীর স্বর্গ গল্প অবলম্বনে সিনেমা ও অভাগী। এটি নির্মাণ করেছেন অনির্বাণ চক্রবর্তী। কলকাতার এ সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। সিনেমাটিতে অভিনয় করে প্রশংসা পেয়েছেন মিথিলা।


আরও খবর



বুয়েটে ছাত্র রাজনীতির দাবিতে মাভাবিপ্রবি ছাত্রলীগের মানববন্ধন

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ |

Image

মো: হ্নদয় হোসাইন মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি:

বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বির আবাসিক হলে সিট ফিরিয়ে দেয়া, বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি চালু করা, স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে বাধাদানকারী বুয়েট শিক্ষার্থীদের বিচারের আওতায় আনা এবং বুয়েটসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে মৌলবাদী-জঙ্গীবাদী তৎপরতার মূলোৎপাটন করার দাবিতে দাবিতে মানববন্ধন করেছে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের পাশের রাস্তায় এ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন তারা। 

এতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মানিক শীল  ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির উপস্থিত ছিলেন । 

বক্তব্যে তারা বলেন, ছাত্ররাজনীতি বন্ধের নামে মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের আস্ফালন মেনে নেয়া হবে না। মৌলবাদী গোষ্ঠীর কালোছায়া থেকে মুক্ত করে বুয়েটের নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি ফিরিয়ে দিতে হবে। ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ সম্পূর্ণ  অসাংবিধানিক, মানবাধিকার পরিপন্থী ও শিক্ষা বিরোধী সিদ্ধান্ত ছাড়া নচেৎ কিছুই নয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতাকর্মীরাও মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন। 

প্রসঙ্গত, এর আগে ১ এপ্রিল বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে আনতে  এক বিজ্ঞপ্তিতে দেশব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।


আরও খবর



গ্যাস সিলিন্ডারে বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি

প্রকাশিত:শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ব্যবহারের কারণে প্রতি বছরই অসংখ্য দুর্ঘটনা ঘটছে। ফুটপাত, চায়ের দোকান থেকে শুরু করে যেখানে সেখানে ব্যবহার হচ্ছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার। এতে ঘরে ঘরে মৃত্যুঝুঁকি তৈরি হয়েছে। দিন দিন বেড়েই চলেছে অগ্নিকাণ্ড। বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটার পরে বের হচ্ছে নানা কারণ। তাৎক্ষণিক প্রশাসন নরেচরে বসলেও কিছুদিন যেতে না যেতেই আবার পূর্বের মতো অবস্থা। প্রতি বছর বেশিরভাগ অগ্নিকাণ্ড ঘটছে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ ও বিদ্যুৎ থেকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন আগে থেকে সচেতনতা ও কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে এসব বড় বড় অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে।

পরিসংখ্যান বলছে বেশিরভাগ অগ্নিকাণ্ড ঘটছে বিদ্যুৎ গোলযোগ, সিলিন্ডার বিস্ফোরণ কিংবা জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণজনিত কারণে। ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানিয়েছে, ২০২৩ সালে ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ২৭ হাজার ৬২৪টি অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে ঘটেছে ৯ হাজার ৮১৩টি দুর্ঘটনা। এছাড়া গ্যাস সরবরাহ লাইনে আগুন থেকে ঘটেছে ৭৭০টি, স্থির বিদ্যুৎ থেকে ১১টি, গ্যাস ইলেক্ট্রিক ও মাটির চুলা থেকে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে চার হাজার ১৭৫টি। তার আগের বছর ২০২২ সালে ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ২৪ হাজার ১০২টি অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে ঘটেছে নয় হাজার ২৭৫টি দুর্ঘটনা। এছাড়াও গ্যাস সরবরাহ লাইনে আগুন থেকে ঘটেছে ৭৯৫টি, স্থির বিদ্যুৎ থেকে ১৯টি, সিলিন্ডার ও বয়লার বিস্ফোরণ থেকে ঘটেছে ৯৪টি অগ্নিকাণ্ড। চুলা থেকে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে তিন হাজার ৩৬৮টি। যার অধিকাংশই গ্যাস ও ইলেকট্রিক চুলা থেকে।

সম্প্রতি রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে লাগা আগুনে ৪৬ জন নিহতের ঘটনা ঘটে। গেল ২৯ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে এই আগুন লাগে। ভবনটিতে থাকা একটি রেস্টুরেন্টে এলপিজি সিলিন্ডার থেকেই এই আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হয়। আগুন মুহূর্তের মধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় সেখানে। তার কয়েক দিন পরেই গত ১৩ মার্চ গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ১৭ জনের মৃত্যু হয়।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার তেলিরচালা এলাকায় শফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ী জমি ভাড়া নিয়ে কলোনি তৈরি করে ঘর ভাড়া দিয়েছেন। একটি ঘরের সিলিন্ডারের গ্যাস শেষ হয়ে যায়। তিনি পাশের দোকান থেকে একটি সিলিন্ডার কিনে আনেন। সিলিন্ডার লাগানোর সময় চাবি খুলে গিয়ে পাশের চুলা থেকে আগুন ধরে যায়। এ সময় আশপাশের উৎসুক নারী, পুরুষ ও শিশুদের শরীরে আগুন লেগে যায়।

গেল বছরও বেশ কয়েকটি বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ২০২৩ সালের ৭ মার্চ বিকেল পৌনে ৫টার দিকে গুলিস্তানে বিআরটিসির বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারে সাততলা একটি ভবনে বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় ২৩ জনের মত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছিলেন দেড় শতাধিক মানুষ। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা গ্যাসের লাইনের কারণে হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটি।সিদ্দিকবাজারের ক্যাফে কুইন ভবনের নিচে ছিল গ্যাসের লাইন। সেখানে পর্যাপ্ত ভেন্টিলেশন ছিল না। তাই লাইনের লিকেজ থেকে বের হওয়া গ্যাস জমা হয়। সেই গ্যাস থেকেই শর্টসার্কিট বা দিয়াশলাইয়ের কাঠি জ্বালানোর মধ্য দিয়ে হয় বিস্ফোরণের সূত্রপাত।

তারও মাত্র দুই দিন আগে ৫ মার্চ রাজধানীর ধানমন্ডির সায়েন্স ল্যাব এলাকায় একটি ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী চারজনের মৃত্যু হয়। এছাড়াও এ ঘটনায় আহত হন অন্তত ৪০ জন। জমে থাকা গ্যাস থেকেই সায়েন্স ল্যাব এলাকার ভবনটিতে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে জানায় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল।

২০২২ সালের ৫ জুন সীতাকুণ্ড উপজেলার কদমরসুল এলাকায় সীমা অক্সিজেন কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। এ ঘটনায় প্রায় অর্ধশত মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।আহত হন অনেক। বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কারখানার আশপাশের অন্তত এক বর্গকিলোমিটার এলাকা। বিস্ফোরণস্থল থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূর পর্যন্ত উড়ে যায় লোহার পাত। ২০২০ সালে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকায় বাইতুস সালাত জামে মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ভয়াবহ এ বিস্ফোরণে শিশুসহ ৩৪ মুসল্লির মৃত্যু ঘটে। এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ, বিদ্যুৎ বিভাগ ও জেলা প্রশাসন পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তে তিতাস সংযোগ লাইনের লিকেজে মসজিদের ভেতর গ্যাস জমা এবং হঠাৎ বিদ্যুৎ স্পার্কিংয়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটার বিষয়টি সামনে চলে আসে।

এই ধরনের দুর্ঘটনা হরহামেশাই ঘটে চলছে। দুর্ঘটনার পরে বেরিয়ে আসে নানা ধরনের অসঙ্গতির তথ্য। দুর্ঘটনা ঘটার পরে দায় নিতে চায় না কেউ। বিদ্যুৎ গ্যাস বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান, সিলিন্ডার প্রস্তুতকারী, রাজউক, সিটি করপোরেশন, বিস্ফোরক অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো একে অপরকে ঠেলাঠেলি করে। তবে দায় সাধারণ মানুষেরও কম নয়। এই দুর্ঘটনাগুলোতে যেমন বহু মানুষ হতাহত হচ্ছে তেমনি হচ্ছে আর্থিক ক্ষতিও। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, শুধু ২০২৩ সালেই অগ্নিদুর্ঘটনায় ৭৯২ কোটি ৩৬ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। ২০২২ সালে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৩৪২ কোটি ৫৮ লাখ ৫১ হাজার ৩৮৯ টাকা। এছাড়াও ২০২১ সালে ২১৮ কোটি ৩১ লাখ ৯৭ হাজার ৪০৩ টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে পান দোকান, মুদি দোকান, ওষুধের দোকানসহ বিভিন্ন অনিরাপদ স্থানে গ্যাস সিলিন্ডার ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের তদারকি না থাকায় লাইসেন্স ছাড়া নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে দেদারছে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। শুধু যেখানে সেখানে বিক্রিই নয়, নিয়মনীতির তোয়াক্কা ছাড়াই বিভিন্ন ফুটপাত, চায়ের দোকান, রেস্তোরাঁয় এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহার হচ্ছে দেদারছে।

২০০৯ সালে পাইপলাইনে গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো নতুন সংযোগ বন্ধ করে দেয়। ফলে বেড়েছে এলপি-নির্ভরতা। এলপিজি গ্রাহকের একটি বড় অংশই গ্রামাঞ্চলের। এ মুহূর্তে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৩০টি কোম্পানির অন্তত দুই কোটি সিলিন্ডার বাজারে রয়েছে। বিস্ফোরক পরিদফতরের তথ্য বলছে, গত এক বছরে এলপিজি সিলিন্ডার আমদানি করা হয়েছে ছয় লাখের বেশি। এলপিজি ছাড়া অন্যান্য সিলিন্ডার আমদানি করা হয়েছে তিন লাখের বেশি। পাশাপাশি দেশেও সিলিন্ডার নির্মাণের জন্য তিনটি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান বাজারজাত করেছে দেশে নির্মিত সিলিন্ডার। কিন্তু এসব সিলিন্ডারের মান পরীক্ষার জন্য অনুমোদিত কোনো পরীক্ষা কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি।

শুধু যত্রতত্র এলপিজির ব্যবহারই নয়, যেখানে সেখানে রয়েছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ। তিতাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ছয় লাখ দুই হাজার ৮৮৪টি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এসব অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়ে রীতিমত ইঁদুর বেড়াল খেলা চলে। কর্তৃপক্ষ একদিকে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে, অন্যদিকে দুষ্কৃতিকারীরা সংযোগ দিয়ে দেয়। চুরি করে সংযোগ দেওয়ায় থাকে না কোনো নিয়ম নীতির বালাই। এতে দেখা দেয় দুর্ঘটনা। এছাড়াও সারাদেশে জালের মতো ছড়িয়ে আছে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগও। বিভিন্ন বস্তি ঘনবসতি এলাকা ও ফুটপাতে যেখানে সেখানে রয়েছে এসব অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ। সম্প্রতি জাতীয় সংসদে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ৪০ হাজার ৯২টি অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন এ দুর্ঘটনাগুলো মূলত গ্যাস লিকেজ থেকেই ঘটে।সিলিন্ডারের হোসপাইপ, রেগুলেটর, গ্যাস ভালভের মতো গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের ত্রুটির কারণে গ্যাস লিক হয়। সেই লিকেজ থেকে গ্যাস বেরিয়ে বাইরে কোথাও জমতে থাকে। পরে তা সামান্য আগুন, এমনকি স্ফুলিঙ্গের সংস্পর্শে আসতেই জমে থাকা সেই গ্যাস ভয়াবহ বিস্ফোরণ সৃষ্টি করে। সিলিন্ডারের মধ্যে এলপি গ্যাস যে চাপ তৈরি করে, মানসম্পন্ন সিলিন্ডারে তারচেয়ে চারগুণ বেশি চাপ সহ্য করার সক্ষমতা রয়েছে। ফলে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা কম। নজিরও তেমন নেই। গাজীপুরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়নি। লিকেজ থেকে গ্যাস বের হয়ে আগুন ধরে যায়। এজন্য সিলিন্ডারের সঙ্গে যে রেগুলেটর, হোসপাইপ, চুলাসহ অন্যান্য জিনিস ব্যবহৃত হয়, সেগুলো মানসম্মত হতে হবে।এই অনুষঙ্গগুলো সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করায় লিকেজ থেকে গ্যাস বেরিয়ে অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটছে। গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে রুলস অ্যান্ড রেগুলেশন কঠোরভাবে মানার বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বলছে, ২০০৯ সালে দেশে এলপিজির চাহিদা ছিল ৬৫ হাজার টন। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ১৪ লাখ টন। ২০০৯ সালে এলপিজি ব্যবহারকারী ছিল দুই লাখ ২৫ হাজার, বর্তমানে তা ৪০ লাখ। এসব এলপিজির ৮৪ শতাংশ রান্নার কাজে, ১২ শতাংশ শিল্পে এবং চার শতাংশ ব্যবহৃত হচ্ছে যানবাহনে।

এ বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ম তামিম বলেন, এসব ক্ষেত্রে যেমন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়বদ্ধতা আছে তেমনি বড় দায়বদ্ধতা হচ্ছে কনজ্যুমারদের। গ্যাস দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে যেসব বাসায় গ্যাস ব্যবহার করা হয় সেসব বাসা-বাড়িতে ভেন্টিলেশন থাকতে হবে। যেখানে গ্যাসের চুলা আছে সেখানে ভালো ভ্যান্টিলেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। উপরে খোলামেলা থাকতে হবে যেন গ্যাস লিকেজ গলে সেটা বের হয়ে যায়। এসব দেখভাল করার দায়িত্ব তিতাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। একটা দুর্ঘটনা ঘটার পরে অনেক ধরনের কথা হয় কিন্তু আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

এই জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বলেন, বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় দেখা যায়, দোকানপাটে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হচ্ছে যেখানে বৈদ্যুতিক তারের যতটুকু সক্ষমতা তার থেকে বেশি ভোল্টেজ ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব বিষয় তো দায় সবারই। যে অবৈধ সংযোগ নিচ্ছে তারও। আবার যারা দিচ্ছে তাদেরও। ভোক্তা পর্যায়ে সবকিছু সঠিকভাবে হচ্ছে কি না সেটা দেখার দায়িত্ব বিদ্যুৎ বিভাগের। মূল কথা আগে থেকে সবাই সচেতন হলে এসব দুর্ঘটনা এরানো সম্ভব।

কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, দেশজুড়ে অসংখ্য গ্যাস বিদ্যুতের অবৈধ সংযোগ রয়েছে। এসব দুর্ঘটনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে, দেশের গ্যাস সরবরাহ ও সংযোগ কতটা ভঙ্গুর ও ঝুঁকিপূর্ণ। এতে ঘটছে দুর্ঘটনা-প্রাণহানি।


আরও খবর

তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা

বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪




দেশের বিভিন্ন অংশে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ

প্রকাশিত:শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ |

Image

দেশের বিভিন্ন অংশে বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। শুক্রবার নিয়মিত বুলেটিনে সকাল ৯টা থেকে পরের ২৪ ঘণ্টার বার্তায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, মৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, ফেনী ও বান্দরবানসহ বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

এছাড়া, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এতে আরও বলা হয়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে আবহাওয়া অফিস জানায়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

গতকালকের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় রাঙ্গামাটিতে এবং আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় দিনাজপুরে।


আরও খবর

তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা

বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪