Logo
শিরোনাম

মিঠাপুকুরে মীমাংসায় বাধ্য করতে অপহরণ মামলার হুমকি

প্রকাশিত:বুধবার ১৬ অক্টোবর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image


মিঠাপুকুর প্রতিনিধি ঃ


রংপুরের  মিঠাপুকুরে মীমাংসায় বাধ্য করতে অপহরণ মামলার হুমকির অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।


অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৮ অক্টোবর উপজেলার ভাংনী দক্ষিণপাড়া মাটিয়াখোলা গ্রামের শরিফুল ইসলামের বাড়িতে  রাত আনুমানিক সাড়ে ৮ টার সময় প্রতিবেশী রুবেল মিয়া ও আলমগীর হোসেন জুস ও জিলাপির সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে  শরিফুলের মা শাহিদা বেগম ও ছেলে আরাফাত ইসলাম(৪) কে খাওয়ায়। শরিফুলের স্ত্রী আদুরি আক্তারকে অনেক চেষ্টা করেও জুস খাওয়াইতে ব্যর্থ হয় । 


পরবর্তীতে শরিফুলের মা ও স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়লে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে  শিং দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে রুবেল,আলমগীর ও অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনসহ ওয়ার ড্রপের ভিতরে থাকা জমি ক্রয়ের উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত ৬ লাখ টাকা চুরি করে  নেয় ।এসময় ড্রয়ারের শব্দে গৃহবধূ আদুরির ঘুম ভেঙে গেলে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। তার চিৎকারে দেবর আরিফুল ইসলাম ছুটে আসলে দুষ্কৃতকারীরা কৌশলে পালিয়ে যায়। 



এঘটনায়  ভুক্তভোগী শরিফুল বাদী হয়ে ৯ অক্টোবর মিঠাপুকুর থানায়  একটি অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে  পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনের  পর ১০ অক্টোবর মিঠাপুকুর থানায় একটি এজাহার দায়ের করে শরিফুল। 


এদিকে এজাহার দায়েরের সময় মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদ  ভুক্তভোগীকে জানান, পূজার ডিউটি নিয়ে আমরা খুবই ব্যস্ত। এসময় এর চেয়ে বড় কোন ক্ষতি হলেও আপনার জন্য কিছু করতে পারবো নাহ। পূজার পর ১৪ অক্টোবর এবিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। ১৪ অক্টোবর ভুক্তভোগী যোগাযোগ করলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নাজিবুর পুনরায় আরেকটি এজাহার থানার মুন্সির সামনে স্বাক্ষরের পর  জমা নিয়ে জানায় রাতেই মামলা হবে। ১৫ অক্টোবর সকালে পুনরায় থানায় ডেকে আবারো এজাহারের ফন্টে সমস্যার কথা বলে নতুন করে স্বাক্ষর নিয়ে আরেকটি এজাহার জমা নিয়ে  মামলা একটু পরেই হবে বলে জানায়  এসআই নাজিবুর। এদিকে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে অভিযুক্ত রুবেলকে ঢাকার সাভারে ভুক্তভোগী শরিফুল  কিডনাপ করে মুক্তিপণের দাবি করেছে বলে অভিযোগ তোলে বিবাদী রুবেলের পিতা লালচাঁদ।


বিবাদীর কিডনাপের অভিযোগের পরেই ১৫ অক্টোবর রাতে মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদ বিষয়টি মীমাংসার আদেশ দেন। অন্যথায় দুই পক্ষের মামলাই গ্রহণ করবেন বলে ভুক্তভোগী শরিফুলকে হুমকি প্রদান করেন।


ভুক্তভোগী শরিফুল জানান, আমার মাকে ও সন্তানকে চেতনানাশক খাইয়ে জমি ক্রয়ের জন্য সঞ্চয় করা ৬ লাখ টাকা চুরি করলো। আমার স্ত্রীকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করলো। এখন পুলিশ বলতেছে আমার টাকা হারায়নি।আমি নাকি উল্টা কিডনাপ করছি আসামিকে। আমার অভিযোগ সত্য নাহলে আমাকে মামলা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে গত সাতদিনের মধ্যে ৩ দিনে ৩ বার এজাহার জমা নেয়া কেন হলো ? আসামিরা এলাকায় বলে বেড়াচ্ছে ওরা থানা টাকা দিয়ে ম্যানেজ করছে। মামলা হলে আমার নামেই হবে। ঢাকার সাভারের কিডনাপের ঘটনা উল্লেখ করে মিঠাপুকুর থানা  পুলিশের উল্টো আমার নামে মামলা করার হুমকি প্রমাণ করে এখানে ঘুষের লেনদেন হয়েছে।


মিঠাপুকুর থানার এসআই নাজিবুর জানান, জুস খাওয়ানোর কথাটি সত্য হলেও টাকা চুরির বিষয়টি মিথ্যা বলে মনে হয়েছে। অপরদিকে বিবাদীদের করা অপহরণের অভিযোগটিও মিথ্যা। ওসি স্যার বলেছেন দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে দিতে। টাকা চুরির বিষয়টি মিথ্যা হলে জুসের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে কেন ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যকে খাওয়ানো হলো ও বিবাদী তার মুঠোফোন ঘটনাস্থলে রেখে কেন পালালো?এই প্রশ্নের কোন জবাব পাওয়া যায়নি পুলিশের এই কর্মকর্তার কাছে।


এবিষয়ে মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদ মুঠোফোনে জানান, দুই পক্ষ থেকে দুটি অভিযোগ এসেছে। ভুক্তভোগী শরিফুলের দায়ের করা অভিযোগে বিবাদীদের বিরুদ্ধে  জুস খাওয়ানোর অভিযোগ সত্য হলেও ৬ লাখ টাকা চুরির বিষয়টি মিথ্যা। আমি দুইপক্ষের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়ার জন্য বলেছি। বাদী শরিফুলের টাকা চুরির অভিযোগ মিথ্যা হলে বিষয়টি তদন্তের পর মামলা গ্রহণের কেন আশ্বাস দেয়া হলো ও এক সপ্তাহ পরে শরিফুলের বিরুদ্ধে ঢাকার কিডনাপের ঘটনায় বিবাদীদের করা  অভিযোগ মিঠাপুকুর থানায় গ্রহণ করে বাদী শরিফুলকে উল্টো অপহরণ মামলার হুমকি  থানা পুলিশের বিরুদ্ধে  উৎকোচ গ্রহণ করার অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণ করে কিনা এমন অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন শেষ করার আগেই মুঠোফোনের সংযোগ কেটে দেন ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ।


আরও খবর



আমাদের মফস্বল সাংবাদিকতা ও কিছু কথা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

শরীফ আহমেদ সুমন, সংবাদকর্মী :

একটা সময় সাংবাদিকতার প্রতি প্রবল আগ্রহ কাজ করতো। আজ আমার ইংরেজি পত্রিকার নবায়নকৃত কার্ড হাতে পেয়ে সে আগের উচ্ছ্বাস কাজ করছেনা। প্রথম যেদিন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় আমার লোকালিটির বাজারে পিরানহা মাছ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়, সেদিন রাত ১২ টা বাজার অপেক্ষা করছিলাম, কখন অনলাইনে দেখবো আমার নিজের করা প্রতিবেদন! সেদিনের সে উচ্ছ্বাস আজ আর পাইনা। সাংবাদিকতাকে কিছু মানুষ আজ এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে সাধারণ মানুষের অনেকে হাস্যরস করেও বলে ফেলে "সাং'ঘাতিক"। নিজের পেশার প্রতি এমন শব্দ আসলে আমার যেমনি কাম্য নয়, বোধকরি কারোরই কাম্য নয়। তবে মফস্বলে সাংবাদিকতার সাথে সংশ্লিষ্ট থেকে সত্যি নিজের ভিতরেও এক ধরণের হীনমন্যতা কাজ করে এখন। 

আসুন কিছু বিষয় জেনে নেয়া যাক:

মফস্বলে সাংবাদিকতা একটু বেশীই চ্যালেঞ্জিং। কেনোনা উপজেলায় একজন প্রতিনিধি থাকে। একই প্রতিনিধি তার উপজেলার উন্নয়ন, অবক্ষয় সব কিছুর প্রতিবেদন করতে হয়। স্টাফ রিপোর্টারদের মতো কাজ ভাগ করা থাকেনা। এখন স্পট নিউজের বাইরে গিয়ে অনুসন্ধানী কোনো প্রতিবেদন করতে গেলে দেখা যায় সেটা কোনো ব্যক্তি বা গোত্রের বা কোনো দলের বিপক্ষে যেতে পারে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আসলে একজন মফস্বল সাংবাদিক বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে নিজের এলাকার কারও বিপক্ষে সংবাদ প্রকাশ করে কতোটা নিরাপদ। কারণ তার বাড়ি যেমনি চেনা তেমনি তারি আদি-অন্ত সবই স্থানীয়দের চেনা ও জানা। তবু বৃত্তের বাইরে গিয়ে যদি কেউ অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করেও সেখানে তা  অনেক চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়ায়। তবে সবার প্রতি অনুরোধ থাকবে যদি কোনো সাংবাদিকের প্রতিবেদন আজ আপনার বিপক্ষে যায় তা  মেনে নিতে শিখুন। কারণ আজ আপনার ক্ষমতা থাকলেও কাল আপনি মজলুম হতে পারেন, তখন এই সাংবাদিক যেনো আবার আপনার পক্ষে কোনো ক্ষমতার বিপক্ষে লিখতে পারে সে পথটুকু খোলা রাখুন। 

এবার আসা যাক অপসাংবাদিকতার বিষয়ে - 

মফস্বলে সাংবাদিকতা অনেকটাই সম্মানী নির্ভর। যাদের সংশ্লিষ্ট সংবাদ প্রকাশ করা হয় তাদের সম্মানী ছাড়া আসলে মফস্বল সাংবাদিকের সংবাদ সংশ্লিষ্ট কোনো আয় নেই। উপজেলা পর্যায়ে বিজ্ঞাপন খুবই কম। তাই বিজ্ঞাপনের কমিশনের উপর নির্ভর করারও কোনো উপায় নেই। তাই মফস্বলে সাংবাদিকতায় আসতে হলে এটাকে কেবল প্যাশন থেকেই নেয়া যেতে পারে, আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে নয়। ইদানিং কেউ কেউ এটাকে আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে নিতে গিয়েই বাঁধছে যতো বিপত্তি। আমি ব্যক্তিগত ভাবে এক সাংবাদিকের সাম্প্রতিক ঘটনা আজ শেয়ার করছি, এটা সাংবাদিকতা নাকি অপসাংবাদিকতা তা  ভেবে নেয়াটুকু পাঠকের উপর ছেড়ে দিলাম। 

সম্প্রতি এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সকাল সোয়া নয়টায় এক সাংবাদিক আসেন। তিনি এসে দেখেন একজন শিক্ষক আসতে ১৫ মিনিট সময় বেশি নিয়েছেন। তাতে তিনি প্রশ্ন করেন এবং সেই শিক্ষক তাকে জানান তার ছোট বাচ্চা অসুস্থ তাই তিনি তাকে ডাক্তার দেখিয়ে আসতে একটু সময় লেগেছে। যাই হোক সেই সাংবাদিক মহোদয় যদি দায়িত্বে অবহেলা প্রত্যক্ষ করে থাকেন তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বক্তব্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করতে পারতেন। তিনি সেটা না করে তিনি উপস্থিত শিক্ষকবৃন্দকে বলেছেন "আমি শিক্ষা অফিসারকে বলে আপনাদের শোকজ করবো"। কথা হলো সাংবাদিকের কাজ কি শোকজ করানো নাকি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বক্তব্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা। তিনি তা করেননি। তিনি ২ দিন অপেক্ষা করেছেন শিক্ষকদের কেউ তার সাথে যোগাযোগ করেন কিনা। আর বোধকরি যোগাযোগের মানে পাঠকগণ অবগত আছেন। পরবর্তীতে শিক্ষা অফিস সেই স্কুলের শিক্ষকদের ডেকে পাঠান। এবং ২ হাজার টাকা সেই সাংবাদিক মহোদয়কে ঠান্ডা পানীয় পান করে ঠান্ডা হওয়ার জন্য প্রদান করার মাধ্যমে তাকে ঠান্ডা করা হয়। এমন কিছু ঘটনার কারণে আজ সাংবাদিকতার মতো মহান পেশাটি কলু'ষিত। আমরা নিজেদের সীমারেখা ভুলে গেছি। আর ভার্চুয়ালিটির এই সময়ে এসে কিছু ফেসবুক পেইজ খুলে এমন সাংবাদিকতা আরও সহজ হয়ে গেছে। কারণ এখানে কিছু লিখতে বলতে সম্পাদক পর্যায়ের কোনো সেন্সরশিপের মধ্য দিয়ে যেতে হয়না, শুধু স্ক্যা'ন্ডাল চাই। এদের অনেকে আবার নানান সময়ে নানান রাজনীতিক কিংবা প্রভাবশালী মহলের সাথে অন্তরঙ্গ ছবি প্রকাশ করে এলাকায় নিজেকে বড় সাংবাদিক হিসেবে জাহির করে এলাকার খাস জমি, ভূমি অফিসে খারিজের সুপারিশ নামের দালালি, থানায় লবিং করার দালালী করে রাতারাতি ভাগ্যের পরিবর্তন করছেন। এমন কিছুর সংখ্যা কম হলেও মানুষের মনে এগুলো দাগ কেটে থাকে বলেই হয়তো আমাদের আজকাল মানুষ হাস্যরসের ছলে সাং'ঘাতিক বলে আখ্যায়িত করে থাকেন। 

সর্বোপরি সংবাদ মাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। এটাকে কলুষিত না করে এর যথার্থ প্রয়োগের মাধ্যমে জনগণের কল্যাণে সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা হিসেবে অনন্তকাল বেঁচে থাক এই প্রত্যাশা করি। আর কাউকে এমন ঠান্ডা না খাইয়ে সাধারণের পর্যায় থেকে ২ টাকার অফসেট কাগজে আমরাও জবাব দিতে শিখি।


আরও খবর

স্বামী কত প্রকার? ---- স্বামীপেডিয়া

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪




নির্মাণ মৌসুমেও কমছে রড-সিমেন্টের দাম

প্রকাশিত:শনিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

চলতি বছরের শুরুর দিকে অবকাঠামো নির্মাণের প্রধান পণ্য রড-সিমেন্টের দাম হঠাৎ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। গত আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ডলার ব্যাংকে তারল্য সংকটের পাশাপাশি ঋণপত্র (এলসি) খুলতে অনীহাসহ বিভিন্ন কারণে এলসি মার্জিন সুবিধা কমে যায়। এতে ব্যাহত হয় আমদানি বাণিজ্য। এদিকে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে সরবরাহ উৎপাদন। তবে পর্যাপ্ত আমদানি সত্ত্বেও চাহিদা না থাকায় দাম নিম্নমুখী রয়েছে। চলতি নির্মাণ মৌসুমে সংকট কাটিয়ে বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরার আশা থাকলেও সরকারি নির্মাণ প্রকল্পে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় সংকটে পড়েছে ইস্পাত সিমেন্ট খাত।

গত দুই সপ্তাহে দেশের বাজারে রডের দাম টনপ্রতি - হাজার টাকা কমেছে। সর্বশেষ গত দুই দিনে কমেছে প্রায় হাজার টাকা। রডের পাশাপাশি সিমেন্টের দামও বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) ১০-১৫ টাকা কমেছে। চাহিদা না বাড়লে রড-সিমেন্টের দাম আরো কমবে বলে আশঙ্কা করছেন মিল মালিকরা।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের অবকাঠামো খাত সবচেয়ে নাজুক সময় পার করছে। চলমান প্রকল্পের কাজে ধীরগতির পাশাপাশি বিগত ছয় মাসে নতুন কোনো মেগা প্রকল্পের অনুমোদন হয়নি। আগের প্রকল্পগুলোয় বিক্রি করা পণ্যের দামও মেটাতে পারছে না অনেক প্রতিষ্ঠান। আগস্ট-পরবর্তী প্রেক্ষাপটে অনেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের খোঁজ মিলছে না। আবার সরকারি প্রকল্পের বিল আটকে থাকায় পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বকেয়া পরিশোধ করতে পারছেন না অনেকে।

এদিকে গত এক বছর ডলারের মূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধির কারণে বাড়তি দামে কাঁচামাল সংগ্রহ করতে হচ্ছে। অথচ দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে কম দামে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন উৎপাদকরা। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত ইস্পাত শিল্পকে নিয়ে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া না হলে এর সঙ্গে যুক্ত বিনিয়োগকারীরা বড় ধরনের সংকটে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানতে চাইলে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মেসার্স ডালিয়া ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. সাহাদাত হোসাইন বলেন, ‘শীত মৌসুমে মূল্যবৃদ্ধির কথা থাকলেও গত ১০ দিনের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের রডের দাম টনপ্রতি - হাজার টাকা পর্যন্ত কমেছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার টনপ্রতি দাম কমেছে হাজার টাকা। মিল মালিকরা সরবরাহ বাড়ানোর কারণে মিলগেট থেকে সংগ্রহ মূল্য টনপ্রতি হাজার টাকা কমিয়েছেন।দাম আরো কমে যাওয়ার আশঙ্কায় অনেক ব্যবসায়ী সংগ্রহ মজুদ কমিয়ে দিচ্ছেন। এতে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন তিনি।

জানা গেছে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশে নির্মাণ খাতে ধস নেমেছে। আওয়ামী লীগসংশ্লিষ্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম একেবারে স্তিমিত হয়ে গেছে। মিল-কারখানাগুলো কোনো রকমে উৎপাদন চালু রাখলেও নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ কার্যত বন্ধ রয়েছে। ব্যক্তি পর্যায়ে ভবন নির্মাণে জড়িত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজেও মন্দা ভাব দেখা দিয়েছে। তাছাড়া বিগত এক বছর দেশে সরকারি বড় অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন কম থাকায় রড-সিমেন্টের বাজারে মন্দা ভাব দেখা দিয়েছে। আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বর্তমান সরকার বেছে বেছে সরকারি প্রকল্পের অনুমোদন দিচ্ছে।

বিএসআরএম স্টিল লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন সেনগুপ্ত প্রসঙ্গে বলেন, ‘দেশের ইস্পাত খাত সংকটময় সময় পার করছে। বৃহৎ উৎপাদন সক্ষমতার প্লান্ট স্থাপনে বিশাল বিনিয়োগ করলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে উৎপাদন কমাতে বাধ্য হচ্ছে কারখানাগুলো। এতে পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার চাহিদা না থাকায় কম দামে পণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে। অবস্থা থেকে দ্রুত উত্তরণ ঘটাতে না পারলে ইস্পাত খাতের উদ্যোক্তারা বড় ধরনের লোকসানের মধ্যে পড়বেন বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।

সিমেন্ট খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রেড ওয়ানভুক্ত কোম্পানিগুলোর সরবরাহ করা সিমেন্টের বস্তাপ্রতি দাম ছিল ৫০০ টাকা। তবে গত কয়েক দিন সিমেন্ট ক্রয়ে ডিলারদের বিশেষ ছাড় দিচ্ছে উৎপাদকরা। যার কারণে বস্তাপ্রতি দাম ১০-১৫ টাকা কমে লেনদেন করতে পারছেন পাইকারি খুচরা বিক্রেতারা। তবে দেশে উৎপাদিত অন্যান্য কোম্পানির সিমেন্ট ৪৬০-৪৭০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। চাহিদা কম থাকায় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে দাম আরো নিম্নমুখী হতে পারে বলেও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

চট্টগ্রামভিত্তিক ডায়মন্ড সিমেন্টের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হাকিম আলী বলেন, ‘সিমেন্ট খাতের উৎপাদন সরকারি নির্মাণ প্রকল্পের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। দেশের বিভিন্ন মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ। যেসব প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে, সেগুলো গত আগস্টের পর থেকে বন্ধ রয়েছে। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে সিমেন্ট খাতে।বিশ্ববাজার থেকে আমদানি, ডলার সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা কেটে গেলেও ব্যবহারজনিত চাহিদা বৃদ্ধি না পেলে খাত ঘুরে দাঁড়াতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

উৎপাদকরা বলছেন, এতদিন ঋণপত্র (এলসি) খুলতে ব্যাংকে ব্যাংকে ধরনা দিতে হতো। ডলার সংকটে অনেকে বাধ্য হয়ে ছোট আকারের এলসি খুলতেন। বর্তমানে চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত ডলার সরবরাহের কারণে পর্যাপ্ত আমদানি হচ্ছে। যার কারণে দেশে রড-সিমেন্ট উৎপাদনে কাঁচামালের সংকট নেই। বরং বাড়তি আমদানির কারণে স্ক্র্যাপের বাজারও কমে গেছে। উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বাড়লেও চাহিদা কম থাকায় দামে প্রভাব পড়েছে।

বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যানুসারে, দেশের ইস্পাত কোম্পানিগুলোর রড উৎপাদনে সক্ষমতা কোটি ২০ লাখ টন। বছরে সর্বোচ্চ ৬৫ লাখ টনের চাহিদা রয়েছে। যার মধ্যে ৬০ শতাংশই ব্যবহার হয় সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পে। বাকি ৪০ শতাংশ বেসরকারি উদ্যোক্তা ব্যক্তিগত অবকাঠামো নির্মাণে ব্যবহার হয়। বর্তমানে চাহিদা কমে ৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেছে। সবচেয়ে বেশি চাহিদা কমেছে সরকারি প্রকল্পে। নির্মাণকাজে ধীরগতির কারণে রডের চাহিদা ২০ শতাংশেরও নিচে নেমে আসায় দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে।

বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রানী রি-রোলিং স্টিল মিলসের নির্বাহী পরিচালক সুমন চৌধুরী বলেন, ‘দেশে ইস্পাত পণ্যের প্রধান ক্রেতা সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাসহ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে সরকারি প্রকল্পের অনুমোদন কার্যত বন্ধ রয়েছে। চলমান প্রকল্পগুলোর কাজের গতিও শূন্যের কোঠায়। যার ফলে রডের বাজারে ক্রেতা চাহিদা ৫০ শতাংশেরও বেশি কমেছে। অবকাঠামো নির্মাণ খাতের উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকার চেষ্টা করছে। উদ্যোক্তারা বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগের পরও সংকটময় পরিস্থিতিতে বিল পাচ্ছেন না। ফলে নানামুখী সংকটের কবলে পড়েছে দেশের ইস্পাত সিমেন্ট খাত।

 


আরও খবর



অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এই মুহূর্তে সহযোগিতা করা উচিৎ

প্রকাশিত:সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি :

জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, ‘আমাদের জায়গা থেকে আমরা মনে করি অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারকে তিন, চার, পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার কথা বলছি না। আবার কেউ যদি বলে ছয় মাস, এর মতো অযৌক্তিক কোন কথা হতে পারে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ১০০ দিনে যে প্রত্যাশা ছিল, তা পূরণ হয়নি, তবে রাজনৈতিক দলগুলো সহযোগিতা করলে এই সরকারের অবস্থান আরও ভাল হতো। সকল রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এই মুহূর্তে সহযোগিতা করা উচিৎ। তারা যদি সরকারকে সহযোগিতা করে তাহলে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে। নির্বাচন দ্রুত হবে। রবিবার (১৭ নভেম্বর) রাতে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানাতে এসে সাংবাদিকদের সাথে তিনি এসব কথা বলেন।


সারজিস আলম বলেন, এই সংস্কার সিস্টেমের প্রত্যেকটি জায়গায় রাজনৈতিক দলগুলো দেশের কথা, দেশের মানুষের কথাকে প্রায়োরিটি না দিয়ে কিভাবে ব্যক্তির স্বার্থ প্রাধান্য পায়, দলীয় স্বার্থ প্রাধান্য পায়, কিভাবে নিজের দলের মানুষকে একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো যায়। এগুলো নিয়ে তারা ব্যস্ত হয়ে গেছে। বাজারে গেলে সাধারণ মানুষ চাহিদা মতো কেনা-কাটা করতে পারে না। বাজার সিন্ডিকেটগুলো হাত বদল হয়েছে।


তিনি আরও বলেন, দুই হাজার মানুষ পরিবারের সদস্যদের কথা চিন্তা না করে জীবন দিয়েছে শুধু মাত্র একটি নির্বাচনের জন্য নয়। তাহলে বিগত ১৬ বছরে সকল মানুষ এক সাথে রাজপথে নেমে যেতো। এই মানুষগুলো এক সাথে নেমেছে যখন খুনি হাসিনার করাপটেড প্রত্যেকটি সিস্টেম ধ্বংশ হয়ে গিয়েছিল। মানুষ প্রত্যেকটি জায়গায় মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছিল। সাধারণ মানুষের সেবা পেতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাচ্ছিল। মানুষকে টাকা দিতে হতো, সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি ছিল, তখন এই সামগ্রিক সিস্টেমগুলোর বিরুদ্ধে ছাত্র জনতা এক সাথে রাজ পথে নেমেছিল। ১৬ বছরে যে সমাধানটি রাজনৈতিকভাবে হওয়ার কথা ছিল, সেই খুনি হাসিনার পতন হয়েছে ছাত্র জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।


এ সময় উপস্থিত ছিলেন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নাতি মাহমুদুল হক সানু, সমন্বয়ক মো. মাহিম সরকার, টাঙ্গাইলের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আল আমিন, মো. কামরুল ইসলাম, আল আমিন সিয়াম প্রমুখ।


আরও খবর



সরবরাহ বাড়লেও দাম চড়া, শীতের সবজির

প্রকাশিত:শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

মৌসুমি বাহারি সব সবজিতে পরিপূর্ণ বাজার। তবে হাতের নাগালে নেই দাম। বাড়তি দরে পণ্য কিনতে কিনতে ত্রাহি দশা সাধারণ মানুষের। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৬০ থেকে ৮০ টাকার নিচে কোনো সবজি মিলছে না।

রাজধানীর নয়াবাজার, রামপুরা বাজার ও কারওয়ান বাজারসহ বেশকটি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সবজি বাজারে থরে থরে টাটকা নানা রকমের শীতকালীন সবজি সাজিয়ে রাখা আছে। ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, সিম, বেগুনসহ নানা সবজি দেখা যায় খুচরা ও পাইকারি বাজারে। তবে তুলনামূলক তেমন কোনো ক্রেতাদের উপস্থিতি দেখা যায়নি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহের তুলনায় শিম, মুলা, বেগুনসহ বেশ কয়েকটি সবজির দাম প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। শীত বেশি এলে আরও কমবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বিক্রেতারা।

গত সপ্তাহের ১০০ টাকার শিম ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, ৬০ টাকার মুলা ৫০, শালগম ২০ টাকা কমে ১০০ থেকে ৮০ টাকা, আমদানি করা টমেটো ১০ টাকা কমে ১৫০, দেশি টমেটো ২০ টাকা কমে ২০০ টাকা, কাঁচামরিচ ১৬০, কম ঝাঁজালো কাঁচামরিচ ১২০, গোল বেগুন ১০ টাকা কমে ১০০, লম্বা বেগুন ৮০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের মতো পেঁপে ৫০, গাজর ১৫০, করলা ৮০ থেকে ১০০, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৫০, মিষ্টি কুমড়া ও পটল ৬০ ও ৮০ টাকা, কচুরমুখী ২০ টাকা বেড়ে ১০০, ঢ্যাঁড়শ, ঝিঙা, ধুন্দল ও শশা প্রতি কেজি ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লেবুর হালি ১৫ থেকে ২৪ টাকা, পুঁইশাক ৩৫, পালং, লাল শাক ১৫ টাকা আঁটি বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা রুকন বলেন, শীতকালীন সবজি বাজারে আসতে শুরু করেছে। ফলে শিম, বেগুন, কপি ও মুলার দাম কিছুটা কমেছে। অন্যদিকে কচুরমুখীর দাম বেড়েছে। তবে আশা করা যায়, ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে সবজির দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আসবে।

নিউমার্কেটে বাজার করতে আসা শাহরিয়ার বলেন, এক মাস ধরে বেশিরভাগ সবজির দাম ৬০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। ভেবেছিলাম ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে সব সবজি চলে আসবে; কিন্তু দু-একটি ছাড়া বেশিরভাগ নাগালের বাইরে।

দেশের ইলিশের বাজার এখন অস্থির। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সুস্বাদু এ রুপালি মাছ। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ৪০০-৫০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২২০০ টাকায়। এ ছাড়া দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ৩০০০ টাকা, ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৯০০ টাকা হারে, আর ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৪০০ টাকা ও ৩০০-৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জন্য গুনতে হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত।

বাজারে অন্য মাছের দামও কিছুটা বেড়েছে। বাজারে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, কোরাল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪৫০, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং নদীর পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়।

এদিকে সোনালি ও ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমলেও স্থিতিশীল রয়েছে অন্যান্য মাংস ও ডিমের দাম। কেজিতে ১০ টাকা কমে প্রতিকেজি সোনালি মুরগি ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগি ১৭৫-১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া প্রতি কেজি দেশি মুরগি ৫৫০-৬০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৩০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকায়।

মুরগি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সরবরাহ বাড়ায় কমেছে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম। রাজধানীর কারওয়ানবাজারের মুরগি ব্যবসায়ী হাকিম বলেন, বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। এতে দাম কমেছে। তবে ইতোমধ্যে বিয়ের মৌসুম শুরু হয়ে গেছে; দাম কতদিন কম থাকবে বলা যাচ্ছে না। চাহিদা বাড়লে দামও বেড়ে যেতে পারে।

এদিকে শুল্ক ছাড়ের এক মাস পর কমতে শুরু করেছে চিনি ও ডিমের দাম। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ১৯ কোটি ডিম আমদানির খবরে ৫ টাকা কমে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকায়। প্রতি কেজি চিনি ১২০-১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেট চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়।

ব্যবসায়ীরা বলেন, ডিম আমদানির পর থেকে আড়ত মালিকরা কমদামে ডিম বিক্রি করতে শুরু করেছেন। অন্যদিকে চিনির আমদানিতে শুল্ক কমানোয় মিলে চিনির দাম কমেছে। ফলে বাজারেও এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে।

এদিকে সপ্তাহজুড়ে ১৩০ টাকা কেজিতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হলেও ৫ টাকা কমেছে এ পণ্যের দাম। বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১২৫ এবং ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকা। তবে নতুন আলু বাজারে এলেও দাম কমেনি এ পণ্যটির। আগের মতো পুরান আলু ৭৫-৮০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি নতুন আলু ১০০ থেকে ১২০ টাকা।

চালের বাজার ঘুরে দেখা যায়, নতুন পাইজাম ও আটাশ চাল বাজারে আসতে শুরু করেছে। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে না আসায় বাজারে তেমন প্রভাব পড়েনি, আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল।


আরও খবর

দাম বাড়ল সয়াবিন তেলের

সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪




আইনজীবী সাইফুলের জানাজায় মানুষের ঢল

প্রকাশিত:বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

চট্টগ্রাম আদালত চত্বরের ঘটনায় ইসকন অনুসারীদের নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে। জানাজার সময় লাখো মানুষ উপস্থিত থেকে এই তরুণ আইনজীবীকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। জানাজায় অংশগ্রহণ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, নাগরিক কমিটির সদস্য সারজিস আলমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

সাইফুল ইসলামের জানাজার সময় উপস্থিত সবাই গভীর শোক ও শ্রদ্ধার সঙ্গে তাকে বিদায় জানান। তার অকাল মৃত্যুতে, লাখো মানুষের চোখে অশ্রু ছিল এবং চট্টগ্রাম শহর যেন শোকের মেঘে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল। সাইফুলের মৃত্যুর শোক, যেন সবার হৃদয়ে চিরস্থায়ী হয়ে গিয়েছিল। এই শোকাবহ মুহূর্তে, তার শেষ বিদায়ে উপস্থিত সকলের মন একত্রে ভারাক্রান্ত হয়ে উঠেছিল।

এর আগে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে সাইফুল ইসলামের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেও আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। জানাজার আগে আইনজীবী নেতারা বক্তব্য রাখেন এবং সাইফুলের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। প্রথম জানাজার পর, সাইফুল ইসলাম আলিফের মরদেহ নগরের জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে তার দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তার বাবা ছিলেন জালাল উদ্দিন। ২০১৮ সালে তিনি জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন এবং পরবর্তীতে হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধন পান।

এদিকে, সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন আইনজীবীরা। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) জেলা আইনজীবী সমিতির জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত পাঁচজনসহ অন্তত ২০ জনকে আটক করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত। পরে, তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পথে ইসকন সদস্য ও চিন্ময়ের অনুসারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তারা আদালত চত্বরে অবস্থিত মসজিদে ভাঙচুর চালায়। একপর্যায়ে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ তাদের বাধা দেন। পরে, সাইফুলকে ধরে নিয়ে আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীতে রঙ্গম টাওয়ারের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে তাকে কুপিয়ে ও গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।


আরও খবর